সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে ১০ দিন রিমান্ডে চায় পুলিশ

দিনের ভোট রাতে করা ও জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আজ শুক্রবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার এসআই শামসুজ্জোহা সরকার এ আবেদন করেন। রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানির জন্য নূরুল হুদাকে আজ বেলা আড়াইটার পর আদালতে আনা হয়। এই মামলায় গত সোমবার নূরুল হুদার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছিল পুলিশ। সেদিন শুনানি নিয়ে তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এর আগে, গত রোববার সন্ধ্যার দিকে ‘মব’ (উচ্ছৃঙ্খল জনতার বিশৃঙ্খলা) তৈরি করে নূরুল হুদাকে হেনস্তার পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে পুলিশ জানায়, বিএনপির করা একটি মামলায় নূরুল হুদাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে গত রোববারই ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন খান। মামলায় ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে তৎকালীন সিইসি কে এম নূরুল হুদা ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে তৎকালীন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আসামি করা হয়। এ মামলায় হাবিবুল আউয়ালকে গত বুধবার গ্রেফতার করা হয়। মামলায় তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে গতকাল বৃহস্পতিবার আদেশ দেন আদালত।

স্বীকার করছি, আমি ডামি নির্বাচন করেছি: হাবিবুল আউয়াল

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ডামি নির্বাচন আয়োজন করেছেন বলে স্বীকার করেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে রিমান্ড শুনানিকালে এ কথা বলেন তিনি। এদিন ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের ওপর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের শুনানি শেষে তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। এদিন দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয় কাজী হাবিবুল আউয়ালকে। দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে এজলাসে আসেন বিচারক। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা শুনানি করেন। এসময় আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, ‘আমি স্বীকার করেছি- ডামি নির্বাচন করেছি। রাজনৈতিক সমঝোতার অভাবে একতরফা নির্বাচন হয়েছে। তবে এখানে আমাকে পয়সা দেওয়ার কোনো প্রশ্ন আসেনি। আমার জীবনে আমি অর্থ আত্মসাৎ বা দুর্নীতি করিনি।’ এসময় আদালত বলেন, ‘আপনার কাছে জাতির প্রত্যাশা ছিল অনেক। কিন্তু বিতর্কমুক্ত নির্বাচন করতে পারেননি।’ এ প্রসঙ্গে সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন বিতর্কিত হয়নি? ১৯৭২ এর ডিসেম্বরে সংবিধান রচনার তিন মাস পর ৭৩ এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে শেখ মুজিবের মতো নেতা নির্বাচনে কারচুপি করেছেন। ক্ষমতার যে লোভ এটা ভয়ানক। দেশে এক হাজার বছরেও নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। সেটা করার জন্য সংস্কার লাগবে।’ আদালত বলেন, ‘সাধারণত নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হতো। কিন্তু এই নির্বাচনে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়। এমনটি হওয়ার কারণ কী?’ তবে এ প্রশ্নের জবাবে নিজের দায় এড়িয়ে যান কাজী হাবিবুল আউয়াল। রাতের বেলার ভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যখন রাতের বেলায় ভোট হয়, তখন আমি গভীর নিদ্রায় নিমগ্ন।’ ‘বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের (চরমোনাই) সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিমের ওপর হামলার প্রসঙ্গ রাষ্ট্রপক্ষ থেকে উত্থাপন করা হলে আমি বলেছি- ‘তিনি কি ইন্তেকাল করেছেন?’ আমার এ কথাটিকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।’ এ সময় তার দীর্ঘ বক্তব্যে বিরক্তি প্রকাশ করেন পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী। হাবিবুল আওয়াল বলেন, ‘জাস্টিফাই করার সুযোগ না দিলে একটা জীবনকে মেরে ফেলেন।’ পরে পাবলিক প্রসিকিউটর বলেন, ‘এখানে সাধু সাজার সুযোগ নেই। আপনার নিজের অপরাধ ঢাকার সুযোগ নেই। অন্যরা অন্যায় করেছে এসব না বলে আপনি কী করেছেন সেটা বলেন।’ এসময় পাশ থেকে এক আইনজীবী বলে ওঠেন, ‘এতগুলো ছেলেমেয়ে মারা গেছে আপনার জন্য।’ এর উত্তরে হাবিবুল আউয়াল পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আমার জন্য এতগুলো ছেলেমেয়ে মারা গেছে?’ এদিন রিমান্ড শুনানিকালে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনের আগে তিনি (আসামি) শেখ হাসিনাকে বলেন, সমস্যা নেই। আমি আপনাকে বিজয়ী ঘোষণা করে দেবো। আর আপনি যে টাকা দেবেন, তা পকেটে ঢুকিয়ে নিবো।’ পিপি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনী কর্মকর্তাদের টাকা দেয় এই আসামি তার হিসাব দেয়নি। এছাড়া সে নির্বাচনী বরাদ্দের টাকার হিসাব পেশ করেনি এবং এ টাকাগুলো সে আত্মসাৎ করেছে। এ ধরনের ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে হবে, যাতে আগামীতে আর এমন জঘন্য নির্বাচন কমিশনার এদেশে জন্মগ্রহণ না করে।’ আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘তিনি ৭০ বছর বয়স্ক লোক। ফ্যাসিস্ট হটাতে গিয়ে আমরা যেন ফ্যাসিস্ট না হয়ে যাই। আমি আসামির রিমান্ড বাতিল ও জামিন প্রার্থনা করছি।’ পরে আসামির জামিন নামঞ্জুর করে তিনদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন বিচারক। বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর মগবাজার থেকে হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গত ২২ জুন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করে উল্টো ভয়ভীতি দেখিয়ে জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে মামলা করে বিএনপি। সংগঠনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন খান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। পরবর্তীতে গত ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়। এ মামলায় শেখ হাসিনা এবং সাবেক ১৫ নির্বাচন কমিশনারসহ মোট ২৪ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে।

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল ৩ দিনের রিমান্ডে

রাষ্ট্রদ্রোহ ও অন্যায় প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন দেয়ার অভিযোগে রাজধানীর শেরে বাংলা থানার মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বেলা ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে তাকে ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হয়। এসময় তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার এ আবেদন করেন। শুনানিকালে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে তোলা হয়। রাষ্ট্র পক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। আসামি পক্ষে আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন। এদিকে আওয়ালের সঙ্গে সাবেক সিইসি নুরুল হুদাকে ফের দশ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হয়েছে। প্রসিকিউশন শাখার এক কর্মকর্তা জানান, চার দিনের রিমান্ডে থাকা নুরুল হুদাকে আগামীকাল আদালতে তোলা হবে। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আসামি করে মামলা করে বিএনপি। মামলায় মোট ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। গত রোববার (২২ জুন) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহউদ্দিন খান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।এছাড়া সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজির আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়েছে এই মামলায়। পরবর্তীতে গত ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ওই তিন নির্বাচনে 'গায়েবী মামলা, অপহরণ, গুম খুন ও নির্যাতনের’ ভয় দেখিয়ে, বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘গণগ্রেপ্তার’ করে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়। সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে থাকা সত্বেও সংবিধান লঙ্ঘন, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন, সরকারি কর্মচারী হয়েও অবৈধভাবে ভোটে হস্তক্ষেপ, ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটের কাজ সম্পূর্ণ করা ও জনগণের ভোট না পেলেও সংসদ সদস্য হিসেবে মিথ্যাভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

নূরুল হুদাকে হেনস্তা: জামিন পেলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের তিন নেতা

মব সৃষ্টি করে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে হেনস্তার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার উত্তরা পশ্চিম থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফকে জামিন দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় আত্মসমর্পণ করা প্রধান আসামি ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোজাম্মেল হক ঢালী ও উত্তরা পূর্ব থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কাইয়ুমকেও জামিন দেওয়া হয়। আজ বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্যাহ এই তিন আসামিকে জামিন দেন বলে নিশ্চিত করেছেন আদালতের উত্তরা পশ্চিম থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা আতিকুর রহমান। মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার সাবেক সিইসি নূরুল হুদার উত্তরার বাসায় ঢুকে একদল লোক তাঁকে বাইরে বের করে আনেন। এরপর তাঁকে জুতার মালা পরানো হয়, জুতা দিয়ে আঘাত করা হয় এবং ডিম নিক্ষেপ করা হয়। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে। গতকাল মঙ্গলবার উত্তরা পশ্চিম থানা-পুলিশের পরিদর্শক (এসআই) সজীব হাসান বাদী হয়ে এ ঘটনায় মামলা করেন। মামলায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়। তাঁরা হলেন ঢাকা মহানগর উত্তর সেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোজাম্মেল হক ঢালী, ঢাকা মহানগর উত্তর সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শেখ ফরিদ, উত্তরা পশ্চিম থানা সেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ, উত্তরা পূর্ব থানা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কাইয়ুম, তুরাগ থানা সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি দুলাল ও উত্তরা পশ্চিম থানা সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. সেলিম। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। গত সোমবার রাতে মো. হানিফকে সেনাবাহিনী আটক করে উত্তরা পশ্চিম থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তাঁকে পরদিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। তাঁর জামিনের আবেদন শুনানির জন্য আজ দিন ধার্য ছিল। মামলার আসামি মোজাম্মেল হক ঢালী ও মো. কাইয়ুম আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। শুনানি শেষে আদালত তিনজনকে জামিন দেন।

শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত নতুন আইনজীবী আমির হোসেন

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আলম বুলবুলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী (স্টেট ডিফেন্স কাউন্সেল) নিয়োগ পেয়েছেন আমির হোসেন। বুধবার (২৫ জুন) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেল তাকে নিয়োগ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। গত ১৯ জুন শেখ হাসিনা ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শাকিল আকন্দ বুলবুলের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আমিনুল গনি টিটুকে স্টেট ডিফেন্স (রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী) নিযুক্ত করা হয়েছিল।শেখ হাসিনার পক্ষে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তাকে নিয়ে নানা সমালোচনা তৈরি হয়। অভিযোগ ওঠে, আমিনুল গনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে শেখ হাসিনার ফাঁসি চেয়েছিলেন। বুধবার ট্রাইব্যুনালে শুনানির সময় আমিনুল গনি দায়িত্ব থেকে নিজেকে প্রত্যাহারের আবেদন জানান। ট্রাইব্যুনাল তার আবেদনে সম্মতি দেন। আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার ও প্রসিকিউটর আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও গাইবান্ধার আওয়ামী লীগ নেতা শাকিল আহমেদের মধ্যে কথোপোকথনের অডিও ভাইরাল হলে গত ৩০ এপ্রিল তাদের বিষয়ে ব্যাখ্যা চান ট্রাইব্যুনাল। তাদের হাজির হয়ে বা আইনজীবীর মাধ্যমে কথোপোকথনের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছিল। ২৫ মে নির্ধারিত তারিখে তারা হাজির হননি কিংবা আইনজীবীর মাধ্যমেও ব্যাখ্যা দেননি। পরে দুই আসামি স্বশরীরে হাজির হয়ে জবাব দেওয়ার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। নির্দেশ অনুযায়ী দুটি সংবাদপত্রে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এরপরও তারা হাজরি হননি। গত ৩০ এপ্রিল ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সারাদেশে ২২৭টি মামলা হয়েছে। শেখ হাসিনা গাইবান্ধার আওয়ামী লীগ নেতা সাকিল আহমেদের সঙ্গে কথোপোকথনে বলেছেন, ‘‘যারা মামলা করেছে তাদের মারার লাইসেন্স পেয়েছি।’’ তিনি বলেন, এদের বাড়িুঘর ভাঙচুরের জন্য তিনি নির্দেশ দেন। পুলিশ কর্মকর্তাদেরও হুমকি দেন। কথোপোকথনের মাধ্যমে তদন্ত সংস্থার কাছে স্পষ্ট হয়েছে এরা দুজন (শেখ হাসিনা ও শাকিল আহমেদ) সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। বিচারপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ করার চেষ্টা করেছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা মনে করেছেন এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে ভয় পাবেন। পরে পদক্ষেপ নিতে আবেদন করলে আদালত অবমাননার নোটিশ ইস্যু করা হয়। একই ট্রাইব্যুনালে ‘২২৭ হত্যার লাইসেন্স পেয়েছি’ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে করা মামলা শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

এনসিপিকে ‘শাপলা’ প্রতীক বরাদ্দ দিতে কোনো আইনি বাধা নেই

নির্বাচন কমিশন থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) ‘শাপলা’ প্রতীক বরাদ্দ দিতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেনসহ ১০১ জন আইনজীবী। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আমিনা আক্তার লাভলী এবং লাবাবুল বাসার স্বাক্ষরিত বিবৃতিটি জানানো হয় এই মত। বিবৃতিতে বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪(৩) এবং অন্যান্য বিদ্যমান আইন অনুসারে এনসিপির শাপলা প্রতীক বরাদ্দ পেতে কোনো আইনগত বাধা নেই বলে উল্লেখ করে বলা হয়, ১৯৭২ সালের অর্ডারের তৃতীয় তফসিল এবং ১৯৭২ সালের বিধিমালার পরিশিষ্ট-ক তে জাতীয় প্রতীকের নকশা অংকিত আছে। নকশা অনুযায়ী জাতীয় প্রতীক হচ্ছে লালচে এবং হলুদ রঙের যুগল বৃত্তের ভেতরে লালচে এবং হলুদ রঙে অংকিত পানির ওপর ভাসমান শাপলা ফুল, দু’পাশে দুটি ধানের শীষ, উপরে তিনটি সংযুক্ত পাট পাতা যার ঠিক দুই পাশে দুটি করে চারটি তারকার সন্নিবেশ ও সামষ্টিক রূপ। অর্থাৎ জাতীয় প্রতীকের নকশা এবং রঙ ১৯৭২ সালের অর্ডারের ৩য় তফসিল ও বিধিমালার পরিশিষ্ট-ক দ্বারা সুনির্দিষ্ট। তাছাড়া জাতীয় প্রতীকের শাপলাটি পানিতে ভাসমান কিন্তু এনসিপি ‘ভাসমান শাপলা’ প্রতীক হিসেবে চায়নি। একাধিক রাজনৈতিক দলের প্রতীকে হিসেবে জাতীয় প্রতীকের উপাদান বরাদ্দ দেওয়ার নজির উপস্থাপন করে বিবৃতিতে বলা হয়, ধানের শীষ, শাপলা, পাটপাতা এবং তারকা আলাদা আলাদা করে চারটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়। আর এই চারের সমষ্টিই হচ্ছে জাতীয় প্রতীক, যা দুই রঙের দুটি বৃত্ত দ্বারা পরিবেষ্টিত। জাতীয় প্রতীকের উপাদানের মধ্যে দুইটি উপাদান ইতোমধ্যে দুইটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতীক হিসেবে বরাদ্দকৃত। সুতরাং প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণসাপেক্ষে এনসিপির নিবন্ধিত হবার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন আইন মোতাবেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে এবং প্রতীকের তালিকায় সংযোজনপূর্বক শাপলা প্রতীকটি এনসিপিকে বরাদ্দ দিবে বলে বিবৃতিদাতা আইনজীবীরা আশা প্রকাশ করেন।

সাইফুল আলম ও তার স্ত্রীর বিদেশি সম্পদ ক্রোকের আদেশ

বহুল বিতর্কিত এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের নামে বিদেশে থাকা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৪ জনু) ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন। দুদক সূত্র জানিয়েছে, আজ আদালতে সাইফুল আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের সাইপ্রাস ও ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তালিকা উপস্থাপন করা হয়। এরপর এসব সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করার আবেদন করে দুদক। শুনানি শেষে আদালত সাইফুল আলম ও তার স্ত্রীর নামে বিদেশে থাকা দোতলা একটি ভবন ও ২৫টি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন। এর আগেও একাধিক দফায় এস আলম গ্রুপ ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্টদের বিপুল সম্পদ ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দেন আদালত। চলতি বছরের ১৭ জুন সাইফুল আলমের নামে থাকা ১৮০ কোটি টাকার জমি, ২৭ এপ্রিল ৫৫৯ কোটি টাকার জমি, ৯ এপ্রিল ৬৬টি ব্যাংক হিসাব এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি ৮ হাজার ১৩৩ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়। তিন দফায় প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবরুদ্ধ করা হয়েছে। গত ১৪ জানুয়ারি সাইফুল আলম ও তার পরিবারের নামে গুলশান, বসুন্ধরা, ধানমন্ডি ও উত্তরাসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে থাকা ২০০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৬৮টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর আগেই ১৯ ডিসেম্বর তাদের নামে থাকা ১২৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছিল।দুদক জানিয়েছে, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছেন এবং তা আত্মসাৎ করেছেন। এসব অর্থ দেশ-বিদেশে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দুদক জানতে পেরেছে, সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস, সাইপ্রাসসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলার পাচারের অভিযোগ রয়েছে। সেই অর্থ হস্তান্তরের আশঙ্কায় পর্যায়ক্রমে এসব সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হচ্ছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর মোহাম্মদ সাইফুল আলম, তার স্ত্রী, সন্তান, ভাইসহ ১৩ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত। সবশেষ, ইসলামী ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপকে আইনবহির্ভূতভাবে ঋণ প্রদানের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ১০ কর্মকর্তার বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

সাবেক সিইসি নুরুল হুদা চার দিনের রিমান্ডে

অন্যায়ভাবে প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন পরিচালনার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার একটি আদালত। আজ তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে দশ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার এসআই শামসুজ্জোহা সরকার। অপর দিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুস্তাফিজুর রহমান তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে রোববার (২২ জুন) রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। রোববার শেরেবাংলা নগর থানায় দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনাকারী কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করে বিএনপি। দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।

বাসা থেকে অপহরণ করা হয়েছিল, গ্রেপ্তার নয় : মডেল মেঘনা

রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় জব্দ থাকা মোবাইল ফোন, আইপ্যাড ও পাসপোর্ট নিজের জিম্মায় চেয়ে আবেদন করেছেন মডেল মেঘনা আলম। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি মডেল নই, পলিটিক্যাল লিডারশিপ ট্রেইনার। আমাকে গ্রেপ্তার নয়, বাসা থেকে অপহরণ করা হয়েছিল।’ আজ রোববার সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে হাজির হন মেঘনা আলম। এরপর তার আইনজীবী মহসিন রেজা পলাশ ও মহিমা ইসলাম বাঁধন জব্দ থাকা মোবাইল, আইপ্যাড ও পাসপোর্ট নিজ জিম্মায় চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক পরে আদেশ দেবেন বলে জানান। শুনানি শেষে মেঘনা আলম বলেন, ‘গত ৯ এপ্রিল আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বলা ভুল হবে। আমাকে অপহরণ করা হয়েছিল। কারণ গ্রেপ্তার করার একটি আইনি প্রক্রিয়া থাকে, সেটা মানা হয়নি। আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ, মামলা বা ওয়ারেন্ট ছিল না। আইনের লোক হোক বা না হোক, আমার বাসায় এসে তাৎক্ষণিকভাবে হামলা চালিয়ে জোর করে নিয়ে যায়। এটাকে আইনি ভাষায় অপহরণ বলে, গ্রেপ্তার বলে না।’ এর আগে গত ২৮ এপ্রিল ডিটেনশন আইনে মেঘনা আলমের ৩০ দিনের আটকাদেশ বাতিল করা হয়। ওইদিনই কারামুক্ত হন তিনি। এরপর থেকে তিনি জামিনে আছেন। গত ৯ এপ্রিল বাসা থেকে আটক হন মেঘনা আলম। পর দিন ১০ এপ্রিল বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে মডেল মেঘনা কারাগারে পাঠানো হয়। এ ছাড়া গ্রেপ্তারের পর গত ১২ এপ্রিল ভাটারা থানার প্রতারণা মামলায় দেওয়ান সমিরের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গত ১৭ এপ্রিল রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গত ২২ এপ্রিল এ মামলায় তার আরও ৪ দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে গত ২৭ এপ্রিল তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ দিকে চাঁদাবাজি মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মেঘনা আলম, দেওয়ান সমিরসহ অজ্ঞাতনামা ২-৩ জন একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েকে দিয়ে বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনীতিক বা প্রতিনিধি ও দেশীয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করিয়ে কৌশলে বিভিন্ন উপায়ে অবৈধপন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে তাদের সম্মানহানির ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আসছে। সম্প্রতি সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মেঘনা আলমের সম্পর্কের বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসে।

শামীম ওসমানের দুই প্লট জব্দ, অবরুদ্ধ ২৯ হিসাব

নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নিজ নামে থাকা পূর্বাচল ও উত্তরার ২টি প্লট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া শামীম ওসমান, তার স্ত্রী সালমা ওসমান, ছেলে ইমতিনান ওসমান, মেয়ে লাবিবা জোহা অঙ্গনা, পুত্রবধূ ইরফানা আহমেদ রাশমী ও তার স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ২৯ ব্যাংক হিসাবের ১২ কোটি ৮৭ লাখ ৭৪ হাজার ৫২০ টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার (২২ জুন) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। দুদকের পক্ষে উপপরিচালক রেজাউল করিম জব্দ ও অবরুদ্ধ আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়েছে, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পলাতক অবস্থায় স্থাবর সম্পদ বিক্রয় এবং ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা উত্তোলন ও স্থানান্তর করার পরিকল্পনা করছেন। অভিযোগটি সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে উক্ত সম্পত্তি দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ (সংশোধিত বিধিমালা ২০১৯) এর বিধি- ১৮ মোতাবেক এবং মানিলন্ডারিং আইন ২০১২ এর ধারা-১৪ মোতাবেক ক্রোক এবং অবরুদ্ধকরণ করা প্রয়োজন।

কারাগারে সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে শাহিনুর বেগম নামে এক নারী হত্যা মামলায় সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। শনিবার (২১ জুন) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. জুয়েল রানার আদালত এই আদেশ দেন। এর আগে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার ইন্সপেক্টর কাজী রমজানুল হক আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী মোর্শেদ আলম শাহিন ও স্বপ্না খানম তার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, হত্যা মামলায় কাউকে গ্রেফতার করতে হলে কিছু কারণ থাকতে হবে। আসামিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। আসামি পুলিশের একজন সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি। তিনি অসুস্থ। এই মামলার সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সব আসামি আইনের দৃষ্টিতে সমান। একই ক্যাটাগরির মামলায় সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী জামিন পেয়েছেন। গ্রেফতারের একদিনের মাথায় নায়িকা নুসরাত ফারিয়াও জামিন পেয়েছেন। তাই যে কোনো শর্তে তার জামিন প্রার্থনা করছি। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ এই জামিনের বিরোধিতা করে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গত ২০ জুন সন্ধ্যায় বেইলি রোডের একটি বাসা থেকে ইকবাল বাহারকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তিনি এ মামলার এজাহারনামীয় ২৬ নং আসামি। মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ২২ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন কাজলা ফুটওভার ব্রিজের নিচে ছাত্ররা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিল। ওই আন্দোলনে ভিকটিম শাহিনুর বেগম খাবার পানি সরবরাহ করতে থাকেন। সাধারণ ছাত্রদের কর্মসূচি চলাকালে মামলার এজাহারনামীয় আসামিদের নির্দেশে অন্যান্য আসামিরা আন্দোলকারীদের ওপর দেশীয় অস্ত্রসহ, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ায় শেল, রাবার বুলেট ও গুলি বর্ষণ করেন। ভিকটিম শিক্ষার্থীদের পানি সরবরাহ করার সময় মাথায় গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সেসময় আশপাশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভিকটিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় ভিকটিম এক মাস ৯ দিন পর মৃত্যুবরণ করেন। এই ঘটনায় ভিকটিমের মেয়ে হাবেজা আক্তার (৩৪) বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ২৯৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় আরও অজ্ঞাতনামা ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ইকবাল বাহার এর আগে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তাকে অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে রাজারবাগ টিঅ্যান্ডআইএমে বদলি করা হয়। ২০১৯ সালে সেখান থেকে তিনি অবসরে যান।

সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মাসউদ, সাধারণ সম্পাদক ডালিম

সুপ্রিম কোর্ট বিটে কর্মরত নিয়মিত সাংবাদিকদের সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টার্স ফোরামের(এসআরএফ) ২০২৫-২০২৬ মেয়াদের জন্য সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের সিনিয়র রিপোর্টার মাসউদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ঢাকা পোস্টের সিনিয়র রিপোর্টার মেহেদী হাসান ডালিম। শনিবার (২১ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে রেইনি রুফ রেস্টুরেন্টে এসআরএফ’র বার্ষিক সাধারণ সভায় নির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করা হয়। কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন কালবেলার হেড অব নিউজ কবির হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক সময় টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি আফজাল হোসেন। কোষাধ্যক্ষ পদে দেশকাল নিউজের সিনিয়র রিপোর্টার কামরুল ইসলাম ফকির, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে এনটিভির বিশেষ প্রতিনিধি মো. তামজিদুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক পদে যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার মো. মাইনুল আহসান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে নাগরিক টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার অলিউল ইসলাম রনি নির্বাচিত হয়েছেন। কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদে নির্বাচিত ৫ জন হলেন— চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি মাজহারুল হক মান্না, দৈনিক ইত্তেফাকের মোহাম্মদ দিদারুল আলম, দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী, ঢাকা মেইলের আমিনুল ইসলাম মল্লিক ও দেশ টিভির সৈয়দা সাবরিনা মজুমদার। এই কমিটি এক বছরের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন। আজকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ৩০ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন।

হলি আর্টিজানে হামলা মামলায় হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

বহুল আলোচিত গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলা মামলায় ৭ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ২২৯ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়েছে। গত বছরের ৩০ অক্টোবর হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলা মামলায় ৭ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, আব্দুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপন। ২০২৩ সালের ১১ অক্টোবর আলোচিত এ মামলায় সাতজনের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন) ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষ হয়। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির সদস্যরা। তাদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পাঁচ জঙ্গি। এ ঘটনার মামলায় ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান একজনকে খালাস দিয়ে সাতজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। দেশের ইতিহাসে অন্যতম নৃশংস এ হামলায় ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, একজন ভারতীয়, একজন বাংলাদেশি-আমেরিকান দ্বৈত নাগরিক ও দুজন বাংলাদেশিসহ মোট ২০ জনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের গ্রেনেডের আঘাতে প্রাণ হারান বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন আহমেদ ও সহকারী পুলিশ কমিশনার রবিউল ইসলাম। হামলার পর জিম্মি অবস্থার অবসানে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হয়েছিলেন পাঁচ জঙ্গি। তারা হলেন- মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল। এছাড়াও বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন নব্য জেএমবির আরও ৮ সদস্য। তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজা করিমও অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান। বহুল আলোচিত নৃশংস ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন ওই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।

দুই দিনের রিমান্ডে সাবেক মেয়র আইভি, শ্যোন অ্যারেস্ট

সিদ্ধিরগঞ্জের সজল হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেত্রী সেলিনা হায়াৎ আইভীকে দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে জেলার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঈনুদ্দিন কাদিরের আদালত মামলার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। এ সময় আইভী গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ভার্চুয়ালি আদালতের শুনানিতে হাজিরা দেন। একই আদালতে ফতুল্লা থানার সাঈদ হত্যাচেষ্টার মামলায় পুলিশ আইভীকে শ্যোন অ্যারেস্টের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সিদ্ধিরগঞ্জের সজল হত্যা মামলায় আইভীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। একই সঙ্গে আইভীর পক্ষের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর এবং দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, আইভীর ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে দুটি মামলার শুনানি হয়েছে। আইভী একটি হত্যা ও একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামি। আদালত শুনানি শেষে তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। গত ৯ মে নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম দেওভোগ এলাকার চুনকা কুটির থেকে আইভীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের এই নেত্রীর বিরুদ্ধে জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এবং ফতুল্লা থানায় হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ছয়টি মামলা হয়েছে।

কারামুক্ত হলেন গান বাংলার তাপস

সব মামলায় জামিন পেয়ে কারা মুক্ত হয়েছেন গান বাংলার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৌশিক হোসেন তাপস। বুধবার (১৮ জুন) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্ত হন। ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ৪ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা থেকে তাপসকে গ্রেপ্তার করা হয়। উত্তরা পূর্ব থানার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ব্যবসায়ী ইশতিয়াক মাহমুদকে হত্যাচেষ্টার মামলায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত ৯ ডিসেম্বর গুলশান থানার অস্ত্র দেখিয়ে মারধর করে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘গান বাংলা’-এর মালিকানা দখলের মামলায় কৌশিক হোসেন তাপসকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে গত ৭ মে রাজধানীর গুলশান থানার ভ্যান চালক জব্বার আলী হাওলাদার হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তিন মামলাতেই জামিন পেয়েছেন তিনি। সব মামলায় জামিন পেয়ে তিনি কারা মুক্ত হলেন।

ড. কলিমুল্লাহসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (১৮ জুন) এই মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম। মামলার আসামিরা হলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও প্রকল্প পরিচালক এ কে এম নূর-উন-নবী, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক সাবেক উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদার মো. আ. সালাম বাচ্চু এবং এম এম, হাবিবুর রহমান। মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশ, অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদিত ডিপিপি উপেক্ষা করে নকশা পরিবর্তন করেন। তারা ৩০ কোটি টাকা মূল্যের বেশি চুক্তি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অনুমোদন ছাড়া করেন। ঠিকাদারের রানিং বিল থেকে কেটে নেওয়া নিরাপত্তা জামানতকে এফডিআর হিসেবে ব্যাংকে জমা রাখা এবং সেইউ এফডিআর ঠিকাদারকে লোন দেওয়ার জন্য নো অবজেকশন সার্টিফিকেট অনুমোদন তথা গ্যারান্টার হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের চার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তিতে অগ্রিম অর্থ দেওয়ার কোনও আইন না থাকা সত্ত্বেও অগ্রিম বিল দেন এবং অগ্রিম দেওয়া বিল সমন্বয়ের আগেই বিলের বিপরীতে প্রদত্ত ব্যাংক গ্যারান্টিগুলো অবমুক্ত করা হয়। প্রথম পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া ড্রইং বা ডিজাইন না মেনে সরকারি খাতে ক্রয় পদ্ধতির বিধি বহির্ভূতভাবে দ্বিতীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়। অস্বাভাবিক হারে মূল্য দাখিল বা ফ্রন্ট লোডিং থাকা সত্ত্বেও পিপিআর ২০০৮ এর বিধান অনুযায়ী দরপত্র মূল্যায়ন না করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

এস আলমদের ২০০ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ

দেশের বহুল বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ২০০ একর জমি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৭ জুন) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দিয়েছেন। দুদকের জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। ক্রোককৃত জমির দলিল মূল্যে ১৮০ কোটি টাকা বলে আবেদন তদন্তকারী কর্মকর্তা আবেদনে উল্লেখ করেছেন। আবেদনে বলা হয়েছে, সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সত্তা এবং সত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং সংগঠনের অভিযোগটি অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একটি যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। অনুসন্ধানকালে দেখা যায়, সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সত্তা এবং সত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে বিধি-বহির্ভূতভাবে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা স্থাবর সম্পত্তি অন্যত্র হস্তান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। অনুসন্ধান নিষ্পত্তির পূর্বে স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর হয়ে গেলে পরবর্তীতে সেটি উদ্ধার করা দুরূহ হয়ে পরবে। তাই সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সত্তা এবং সত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির স্বার্থসংশ্লিষ্ট ২০০ একর জমি জরুরি ভিত্তিতে ক্রোক করা প্রয়োজন। এর আগে গত ২৭ এপ্রিল এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সত্তা এবং সত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে থাকা ৫৬ হাজার ৩৫৭ শতক জমি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত।

যবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য আবদুস সাত্তার কারাগারে

দুদকের মামলায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. আব্দুস সাত্তারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৬ জুন) মামলার ধার্য তারিখে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানান অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার। বিচারক শেখ নাজমুল আলম জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অপর দুই আসামি হলেন- যবিপ্রবির উপপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) আব্দুর রউফ ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক উপউপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন জামিনে রয়েছেন। মামলা সূত্রে জানা গেছে, অবৈধভাবে নিয়োগ এবং সরকারি ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৭৩২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদক যশোরের তৎকালীন উপপরিচালক আল-আমিন। মামলার তদন্ত শেষে উল্লেখিতদের অভিযুক্ত করে সম্প্রতি আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে আবেদন করেন আসামি আব্দুর রউফ। নিয়োগের জন্য গঠিত তিন সদস্য বিশিষ্ট বাছাই বোর্ডের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন উপাচার্য ড. আব্দুস সাত্তার। বাছাই বোর্ডের আর একজন সদস্য ছিলেন ইবির উপ-উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন। একই বছরের ২২ আগস্ট মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ সময় আরও তিন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। কিন্তু কাউকে পাস করানো হয়নি। বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুযায়ী, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে আব্দুর রউফের কোনো পূর্ব-অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও বাছাই বোর্ড অবৈধভাবে তাকে প্রথমে সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাকে সেকশন অফিসার (গ্রেড-১, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়। রিজেন্ট বোর্ড সভাপতি হিসেবে সাবেক ভিসি ড. প্রফেসর আব্দুস সাত্তার উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই তাকে সেকশন অফিসার হিসেবে নিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। মামলায় আরও বলা হয়, আব্দুর রউফ সেকশন অফিসার পদে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে কর্মরত থাকা অবস্থায় সিলেকশন গ্রেডসহ বিভিন্ন সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে বিভাগীয় প্রার্থীর সুবিধা নিয়ে ২০১৪ সালে সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে এবং ২০২১ সালে উপপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। অবৈধ নিয়োগের কারণে ২০০৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত তিনি বেতনভাতা বাবদ মোট ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৭৩২ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

১০ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

বেসরকারি এনজিও উদ্দীপনের সাবেক চেয়ারম্যান মিহির কান্তি মজুমদারসহ ১০ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্লকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৬ জুন) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. তানজির আহমেদ এ তথ্য জানান। নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জাকিয়া কে হাসান, সাবেক কোষাধ্যক্ষ ড. মো. গোলাম আহাদ, সাবেক সদস্য মো. মাহবুবুর রহমান, সাবেক সদস্য, মো. নজরুল ইসলাম খান, নাহিদ সুলতান, ভবতোষ নাথ, ডা. আবু জামিন ফয়সাল, শওকত হোসেন ও সাবেক নির্বাহী পরিচালক বিদ্যুৎ কুমার বসু। দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান এ আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক চেয়ারম্যান মিহির কান্তি মজুমদারসহ বাকিরা দায়িত্ব পালনকালে পরস্পর যোগসাজশে ব্যক্তিগত লাভ ও আত্মসাতের উদ্দেশ্যে মাইক্রোক্রেডিট আইন (২০০৬)-এর ২৪/৩ ধারা ও বিধি (২০১০)-এর বিধি ১৯ (১) লঙ্ঘন করে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ক্ষুদ্রঋণ তহবিল থেকে অনুমোদনহীন নামমাত্র ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট গোল্ড ব্রিকস ও ব্যাটারি প্রকল্পে যথাক্রমে প্রায় ৮ কোটি ৯৭ লাখ ৮১ হাজার ৩৭৭ টাকা ও ৪ কোটি ৪৮ লাখ ৪৬৬ টাকা বিনিয়োগ দেখিয়ে তহবিল স্থানান্তর করেছেন। ওই জালিয়াতি সম্পর্কিত একটি মামলা দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্তাধীন রয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, আসামিরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামীদের বিদেশ গমন রোধ করা ও এনআইডি ব্লক করা প্রয়োজন।

কম খরচে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তিতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়: আসিফ নজরুল

দ্রুত সময়ের মধ্যে কম খরচে মামলা নিষ্পত্তি করে মানুষকে মামলার অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে আইন মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, তিনটি লক্ষ্য নিয়ে আইনগত সহায়তা প্রদান আইনের সংশোধন করা হচ্ছে। আগামী মাস থেকে এ সংশোধনের কাজ শুরু হবে। আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। গরীব মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আজ শনিবার রাজধানীর বেইলি রোডে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার (লিগ্যাল এইড ) কার্যালয়ে আইনগত সহায়তা প্রদান আইন (সংশোধন) অধিকতর সংশোধনকল্পে প্রণীত অধ্যাদেশ-২০২৫ নিয়ে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার পক্ষ থেকে আইনগত সহায়তা প্রদান আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ এর খসড়া উপস্থাপন করা হয়। আইন উপদেষ্টা বলেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিতে বিচারকদের প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দেশে প্রতি বছর ৫ লাখ মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে লিগ্যাল এইডে ৩৫ হাজার মামলা নিষ্পত্তি হয়। আগামীতে এই হার ২ লাখে নিয়ে যাওয়ার আমাদের লক্ষ্য রয়েছে। এতে মামলার সংখ্যা ৪০ শতাংশ কমবে। এজন্য আইন পরিবর্তন করতে হবে। ছোট ছোট যেমন আপোষযোগ্য পারিবারিক মামলা, চেক ডিজঅনারসহ অন্যান্য মামলা আপসে বাধ্যতামুলক করা হবে। তিনি বলেন, আদালতে মামলার যে অস্বাভাবিক চাপ, তা শুধুমাত্র বিচারিক কাঠামোকে নয়, ন্যায় বিচারপ্রাপ্তির সম্ভাবনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। এ চাপ কমাতে হলে বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তি পদ্ধতি আরও গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন মামলার চাপ কমানো সময়ের দাবি। এ জন্য মামলার আগে আপস-মধ্যস্থতা বাধ্যতামুলক করা গুরুত্বপুর্ণ। দ্রুত সময়ে অল্প খরচে মামলার নিষ্পত্তি করতে সিভিল প্রসিডিউর কোড ইতিমধ্যে সংশোধন করা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধি সংস্কারের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে। এ সময় লিগ্যাল এইডের মামলা নিষ্পত্তিতে একজন বিচারকের জায়গায় ৩ জন বিচারক নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও জানান আইন উপদেষ্টা। মতবিনিময় সভায় অংশীজনদের মধ্যে বক্তব্যে দেন জাতীয় আইনগত প্রদান সংস্থার পরিচালক আজাদ সুবহানি, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. খোরশেদ আলম, ঢাকা জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার সায়েম খান প্রমুখ। এছাড়া চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা জেলার আইনজীবী সমিতি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ইউএনডিপি প্রতিনিধি, জিআইজেড প্রতিনিধি, আইএলও, ব্রাক, ব্লাস্ট ও প্রশিকার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বক্তারা বলেন, লিগ্যাল এইডের প্রচারের ক্ষেত্রে অনেক ঘাটতি আছে। গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ গরীব ও অসহায় মানুষ জানে না সরকারের এমন একটি আইনিসহায়তা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রচারের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে। পাশাপাশি বিভাগীয় শহরে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করে তাদের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে বলে মত দেন তারা।

শেখ হাসিনা-জয়সহ ২২২ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় গুলিতে সোহেল রানা নামে এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ২২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার (১৩ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহ'র আদালতে মামলাটির এজাহার আসে। পরে আদালত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ২০ জুলাই প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে গত ১১ জুন মোহাম্মদপুর থানায় ভুক্তভোগী সোহেল রানা (৩৮) বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অপর আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, ডা. দিপু মনি, কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম, অভিনেত্রী শমী কায়সার, সাবেক ডিবি প্রধান হারুণ অর রশিদ অন্যতম। মামলার এজাহারে বলা হয়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট দুপুর আড়াইটার দিকে মোহাম্মদপুর থানাধীন তিন রাস্তার মোড়ে ময়ূর ভিলার সামনে মিছিলে অংশ নেন ভুক্তভোগী সোহেল রানা। এসময় শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। তাদের ছোড়া গুলিতে আহত হন সোহেল রানা। এরপর তিনি হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেন বলে মামলা করতে দেরি হয়েছে এজাহারে উল্লেখ করেন।

পুলিশের ওপর হামলা: ৬ ডাকাত রিমান্ডে

রাজধানীর পল্লবী থানাধীন কাঁচা বাজার এলাকায় ঈদের ছুটিতে থাকা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মো. মাসুদুর রহমানের ওপর হামলা ও ডাকাতির ঘটনায় করা মামলায় ছয় ডাকাতের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার (১৩ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহর আদালত এ আদেশ দেন। রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- আল আমিন (৩৬), আল আমিন (২৯), মো. রাজিব (৩৬), মো. বাবলু (৩৫), মো. ফারুখ (৩৩), সুমন (১৯)। এদিন তাদের আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক সালাহ উদ্দিন। আসামি পক্ষের আইনজীবী জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আজ পল্লবীর কাঁচা বাজার থেকে আসামিদের গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার সূত্রে জানা গেছে, ১২ জুন পল্লবী থানাধীন কাঁচা বাজারে বাজার করতে যান ঈদের ছুটিতে থাকা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ফরিদপুরে জেলায় কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক মো. মাসুদুর রহমান। ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় মাংসের দোকানের সামনে পৌঁছালে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে দেশীয় অস্ত্রসহ তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মারধর করে তার সঙ্গে থাকা মোবাইল, ঘড়ি, সোনার চেইন ও নগদ টাকাসহ মোট ১ লাখ ৪৬ হাজার টাকার ডাকাতি করে নিয়ে যায়। পরে তার চিৎকার শুনে আশপাশের মানুষ জড়ো হলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। ঘটনার দিন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ৬ জন এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী পুলিশ পরিদর্শক মো. মাসুদুর রহমান।

জামিন পেলেন জবির অবসরপ্রাপ্ত সেই শিক্ষক

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আনোয়ারা বেগমের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা একটি মামলায় তাকে কারাগারে পাঠান আদালত। সোমবার (০২ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমের জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবী। শুনানি শেষে সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান তার জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন আবেদনে উল্লেখ করা হয়, অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমের বয়স ৭০ বছর। তিনি ৩৫ বছর যাবত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক একজন নারী। তিনি অসুস্থ। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী তিনি জামিন পাওয়ার হকদার। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য রাখা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত ৫০০ টাকা মুচলেকায় অধ্যাপক আনোয়ারার জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতে আনোয়ারা বেগমের পক্ষে জামিন শুনানি করেন তার আইনজীবী ওবায়দুল ইসলাম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার করা হত্যাচেষ্টার মামলায় গত বুধবার আনোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। আনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে ওই মামলা হয় রাজধানীর সূত্রাপুর থানায়। সূত্রাপুর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়, গত বছরের ১৯ জুলাই রায়সাহেব বাজারের কাছে স্টার হোটেলের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আন্দোলনকারী ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে গুলি চালানো হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ ঘটনা ঘটান। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার চোখে গুলি লাগে। বাঁ চোখ দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। এ ঘটনায় সুজন মোল্লা বাদী হয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সূত্রাপুর থানায় এ মামলা করেন।

ইশরাকের শপথ ইস্যুটি পুরোটাই ছিল ইসির এখতিয়ারাধীন: আপিল বিভাগ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পুরোটাই নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এখতিয়ারাধীন বলে মন্তব্য করেছেন আপিল বিভাগ। রোববার (১ জুন) সন্ধ্যায় ইশরাকের শপথ ইস্যুতে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ।রায়ে আদালত বলেন, ‘ইশরাকের শপথ ইস্যুটি পুরোটাই ছিল নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারাধীন।’ তবে বিকেলে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ ইস্যুতে আদালতের রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। একইসঙ্গে পর্যবেক্ষণসহ আপিল নিষ্পত্তি করা হয়। এদিকে, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে আবারও ডিএসসিসির প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন তার সমর্থকরা। মূল ফটকসহ গুরুত্বপূর্ণ নাগরিকসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এতে বন্ধ রয়েছে নাগরিকসেবা।