শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে আজ ২০তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৯:৪০ এম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আজ (সোমবার) চলছে সাক্ষ্যগ্রহণের ২০তম দিন।
২২ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এই কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আদালতের কার্যক্রম শুরুতেই আসামিপক্ষের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদকে জেরা করবেন। পরে নতুন এক সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়ার কথা রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রসিকিউশন আরও তিনজন সাক্ষী উপস্থাপনের জন্য আবেদন করেছে।
এর আগে, গত ২১ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জুনায়েদের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। পরে তাকে স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী জেরা শুরু করলেও শেষ না হওয়ায় কার্যক্রম সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। জুনায়েদ এই মামলার ৪৮তম সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি ২০১৩ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত ঘটনাবলী তুলে ধরেন।
একই দিন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে দ্বিতীয় দিনের মতো জেরা করেন আইনজীবী আমির হোসেন। বেলা ১১টার পর শুরু হওয়া জেরা দুপুর সাড়ে ১২টায় শেষ হয়।
মামলার শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষে অংশ নেন মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, আবদুস সাত্তার পালোয়ান ও তারেক আবদুল্লাহ।
এর আগের ধাপে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন। বিকেলে তাকে স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীরা জেরা করেন। ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি প্রথম দিনের মতো বেলা ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত জবানবন্দি দিয়েছিলেন। সেদিনই দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকেও দ্বিতীয় দিনের মতো জেরা করা হয়।
এছাড়া ২ সেপ্টেম্বর সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে হাজির হন। তিনি জানান, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে জুলাই-আগস্টে গণহত্যা সংঘটিত হয়। সেইসঙ্গে তিনি ক্ষমা চেয়ে অজানা অনেক তথ্য আদালতের সামনে উন্মোচন করেন। তার জেরা শেষ হয় ৪ সেপ্টেম্বর।
এই মামলায় ১ সেপ্টেম্বর দশম দিনের শুনানিতে চিকিৎসক, সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শীসহ ছয়জন সাক্ষ্য দেন। তাদের বর্ণনায় গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের ভয়াবহ চিত্র উঠে আসে। শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা এ ঘটনায় শেখ হাসিনা, কামালসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়। প্রসিকিউশন তাঁদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ এনেছে।
অভিযোগপত্রটি মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণ চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠায় অন্তর্ভুক্ত। মামলায় ৮১ জন সাক্ষীকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। গত ১২ মে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটরের কাছে জমা দেয়।