৫ আগস্ট পদত্যাগ করেননি শেখ হাসিনা, দাবি স্টেট ডিফেন্সের
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০২:৩৪ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পদত্যাগ করেননি, বরং তিনি বাধ্য হয়ে ভারতে চলে যান—এমন দাবি তুলেছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে জেরা করার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন। জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিচ্ছিলেন নাহিদ।
জবানবন্দিতে দেওয়া নাহিদের বক্তব্য সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে লড়াই করা আমির হোসেন। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সরকার পতনে ঘোষিত এক দফা আন্দোলন ছিল দীর্ঘ পরিকল্পনার অংশ। এর পেছনে দেশি-বিদেশি শক্তির ভূমিকা ছিল। এ কারণেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করার প্রস্তাব সামনে আসে।
স্টেট ডিফেন্সের এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে প্রসিকিউশন আপত্তি জানায়। তাদের মতে, মামলার বাইরে গিয়ে এমন আলোচনা করার সুযোগ নেই।
তবে শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী যুক্তি দিয়ে বলেন, “ড. ইউনূসকে জড়িয়ে কোনো মন্তব্য করা সমীচীন নয়। কিন্তু সাক্ষীর বক্তব্যের কারণে বিষয়টি উল্লেখ করতে হচ্ছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, আন্দোলন দমন করতে শেখ হাসিনা কখনো হেলিকপ্টার বা মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেননি। বরং জনগণের জানমাল ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। তাই ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়নি, এবং শেখ হাসিনা বা আসাদুজ্জামান খান কামাল এ ধরনের অভিযোগে দায়ী নন।
এর জবাবে সাক্ষী নাহিদ ইসলাম বলেন, এসব বক্তব্য সত্য নয়। তিনি জানান, ৫ আগস্ট সারাদেশে হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতনের তথ্য তিনি সমন্বয়ক হাসনাত-সারজিসের কাছ থেকে জেনেছেন।
এদিন সকাল ১১টার পর দ্বিতীয় দিনের মতো ট্রাইব্যুনালে নাহিদের জেরা শুরু হয়। দুপুর সাড়ে ১২টায় জেরা শেষে তিনি প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
এর আগে, ১৮ সেপ্টেম্বর বেলা সোয়া ১১টা থেকে নাহিদ ইসলাম ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন। দুপুরে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিরতি ঘোষণা করা হয়। পরে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তাকে জেরা করেন স্টেট ডিফেন্সের আইনজীবী, তবে শেষ না হওয়ায় অবশিষ্ট জেরা এদিন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন মিজানুল ইসলাম। এ সময় প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যরাও উপস্থিত ছিলেন।