
তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের খালাসের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
দুর্নীতি মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের খালাসের রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। সোমবার (১৪ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৫২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। রায়ে আদালত উল্লেখ করেছেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ যথাযথভাবে প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করার উপযুক্ত আইনগত ভিত্তি পাওয়া যায়নি। এর আগে, গত ২৮ মে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক বেঞ্চে রায় ঘোষণার মাধ্যমে তাদের আপিল গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। শুনানি শেষ হয়েছিল ২৬ মে। মামলার শুনানিতে দুদকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল করিম। অন্যদিকে, আসামিপক্ষের হয়ে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এস এম শাহজাহান, মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কুদ্দুস কাজল, কায়সার কামাল ও জাকির হোসেন ভূঁইয়া। ২০২৩ সালের ২ আগস্ট ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান দুর্নীতির মামলায় তারেক রহমানকে দু’টি ধারায় ৯ বছরের এবং জুবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন। রায়ে তারেক রহমানকে ৩ কোটি টাকা ও জুবাইদাকে ৩৫ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়। পরবর্তীতে জুবাইদা রহমানের কারাদণ্ড এক বছর স্থগিত করা হয়। দীর্ঘদিন লন্ডনে অবস্থান করার পর চলতি বছরের ৬ মে তিনি শাশুড়ি খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফেরেন।

দুই স্ত্রীসহ সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাসের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস, তার দুই স্ত্রী মোছা. মমতাজ বিশ্বাস ও বেগম আশানুর বিশ্বাসের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে সংস্থাটির উপ পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, আবদুল লতিফ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট আবদুল লতিফ বিশ্বাস ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং দেশের বাইরে দুর্নীতি ও অবৈধভাবে অর্থিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। গোপন সূত্রে জানা যায়, আবদুল লতিফ বিশ্বাস এবং তার পরিবারের সদস্যরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পালানো এবং তাদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর করার চেষ্টা করছেন। বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া একান্ত প্রয়োজন।

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিদেশি ব্যাংক হিসাব ও সম্পদ জব্দের আদেশ
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন যুক্তরাষ্ট্র ও মালয়েশিয়ায় থাকা চারটি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা প্রায় সাড়ে চার লাখ ডলারের আবাসিক ও বাণিজ্যিক সম্পত্তিও জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৪ জুলাই) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষ থেকে আদালতে একটি আবেদন উপস্থাপন করা হলে, ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এই আদেশ দেন। দুদকের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম আদালতকে জানান, বেনজীর আহমেদ তার ও তার পরিবারের মালিকানাধীন দেশি-বিদেশি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। ফলে তদন্ত সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে সম্পদ জব্দ ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার প্রয়োজন দেখা দেয়। এর আগে, গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও দুই কন্যার বিরুদ্ধে মোট চারটি মামলা দায়ের করে দুদক। এসব মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মোট ৭৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। দুদকের তদন্তে উঠে আসে, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ নিজ নামে ৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ২ কোটি ৬২ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। তার স্ত্রী জীশান মীর্জা অর্জন করেছেন ৩১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ এবং ১৬ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। তাদের বড় মেয়ে ফারহীন রিশতা ও মেজ মেয়ে তাহসীন রাইসার বিরুদ্ধে যথাক্রমে ৮ কোটি ৭৫ লাখ এবং ৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। উল্লেখ্য, বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার এবং র্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন।

আবু সাঈদ-মুগ্ধদের জাতীয় বীর ঘোষণা করতে হাইকোর্টের রুল
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ ও ওয়াসিমসহ অন্যান্য শহীদদের কেন জাতীয় বীর ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার (১৪ জুলাই) বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। আন্দোলনে শহীদদের প্রকৃত ও নির্ভরযোগ্য তালিকা করে তা গেজেট আকারে প্রকাশের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না— রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে নতুন বাংলাদেশের জাতীয় সংস্কারক কেন ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুরসহ ৮ জনের বিচার শুরু
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ৮ জনের বিচার শুরু হয়েছে। সোমবার (১৪ জুলাই) বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ বিষয়ে আদেশ দেন। এর আগে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুলে ৬ জনকে হত্যা মামলায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিবসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এদিন সকালে এ মামলায় গ্রেপ্তার চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। আসামিরা হলেন—শাহবাগ থানার বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক আরশাদ ও তিন কনস্টেবল সুজন, ইমাজ হোসেন ইমন ও নাসিরুল।এর আগে জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাজধানীর চানখাঁরপুলে ৬ জনকে হত্যার ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিবসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। গত ৩ জুন এই মামলার পলাতক চার আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়। একটি বাংলা দৈনিক ও একটি ইংরেজি দৈনিককে বিজ্ঞপ্তি নির্দেশ দিয়ে ২২ জুন পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়। গত ২৫ মে এই মামলায় ৮ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের গুলিতে নিহত হন আনাস। গত ২০ এপ্রিল এই মামলায় আটজনকে অভিযুক্ত করে একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। সেই প্রতিবেদন আজ আনুষ্ঠানিকভাবে দাখিল করা হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম ও মো. আখতারুল ইসলাম, রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল, শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম। তাদের মধ্যে শেষের চারজন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন, বাকিরা পলাতক।

সোহাগ হত্যাকারীদের পক্ষে দাঁড়াবে না বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা
পুরান ঢাকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ ওরফে লাল চাঁদ হত্যা মামলার আসামিদের পক্ষে আইনি লড়াই না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, ঢাকা বার ইউনিট। সোমবার (১৪ জুলাই) বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের এ সংগঠন থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। একইসঙ্গে সোহাগ হত্যার সকল আসামিদের চিহ্নিত করে তাদের বিচারের দাবি জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঢালাওভাবে বিএনপির ওপর দায় চাপানোর নিন্দাও জানায় সংগঠনটি। বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২০০৭ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত এদেশের সবচাইতে নির্যাতিত নিপীড়িত ও মজলুম দলটির নাম বিএনপি। পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি এই দলকে নিশ্চিহ্ন করতে এমন কোনো অত্যাচার নিপীড়ন নাই, যা করেনি। এর পরেও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দেশপ্রেম, সততা, আদর্শে অনুপ্রাণিত লক্ষ কোটি নেতা-কর্মী সমর্থকরা শত অত্যাচারের স্টিম রোলার সহ্য করেও বিএনপি পতাকা তলেই ঐক্যবদ্ধ ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতে থাকবে। ‘গত কয়েকদিনের কিছু নৃশংস এবং ঘৃণিত ঘটনা আপনাদের পাশাপাশি আমরাও জানতে পেরেছি। এর মধ্যে মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে সোহাগ হত্যা, খুলনায় যুবদল নেতা হত্যা এবং চাঁদপুরে মসজিদের ইমামকে কুপিয়ে আহত করা, তার মৃত্যু আমাদের অত্যন্ত মর্মাহত ও বিচলিত করেছে। যা কোনোভাবে মেনে নেওয়ার মতো নয়। এর মধ্যে সবচাইতে আলোচিত ঘটনা মিটফোর্ড হাসপাতালের সোহাগ হত্যা, যা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে স্পষ্টভাবে সবকিছু দেখার পরও কোনো এক অজ্ঞাত কারণে এর সমস্ত দায়ভার বাংলাদেশের সবচাইতে মজলুম ও নিপীড়িত দল বিএনপির ওপর চাপানো হচ্ছে এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে অশ্লীল স্লোগান দেওয়া হচ্ছে।’ ‘আমরা মনে করি ফ্যাসিবাদী শক্তির দোসর এবং আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভবিষ্যতে অদৃশ্য শক্তি অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে কোনোরকম তদন্ত অনুসন্ধান ছাড়াই চাঁদাবাজির মতো এক ঘৃণ্য অপবাদ আরোপ করে বিএনপিকে দোষারোপ করা হচ্ছে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, ঢাকা বার ইউনিট সোহাগ হত্যার তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা জানাচ্ছে এবং অনতিবিলম্বে সকল আসামির দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে। পাশাপাশি জাহীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিটের কোনো সদস্য সোহাগ হত্যা মামলায় আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করবে না মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং কোনো বিজ্ঞ আইনজীবী যেন আসামিদের পক্ষে না দাঁড়ায় সেই আহ্বানও জানাচ্ছে।

শহীদ পরিবারের পাশে থাকাই অনুপ্রেরণার উৎস: চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, শহীদ পরিবারের সদস্যরা পাশে থাকলে দায়িত্ব পালনে বাড়তি সাহস ও অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়। রোববার (১৩ জুলাই) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তোলা একটি ছবি শেয়ার করে তিনি এ মন্তব্য করেন। পোস্টে তিনি লিখেন, "যখন শহীদ পরিবারের সদস্যরা আমাদের সঙ্গে এসে দাঁড়ান, তখন আমাদের কষ্টকর দায়িত্বগুলোও অনেক সহজ মনে হয়। তারা আমাদের মনের জোর ও মনোবল অনেক বাড়িয়ে দেন।" ছবির ক্যাপশনে তাজুল ইসলাম জানান, এতে শহীদ মীর মুগ্ধের পিতা মীর মোস্তাফিজুর রহমান এবং শহীদ ফারহান ফাইয়াজের পিতা শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা রয়েছেন।

টিউলিপের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের
ব্রিটিশ সংসদ সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা ফ্ল্যাট জালিয়াতির মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। বিষয়টি সামনে আসার পর, স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। গত ৮ জুলাই বিচারপতি মোহাম্মদ আলী এবং বিচারপতি এস কে তাহসিন আলীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলার এক আসামি, রাজউকের সাবেক কর্মকর্তা শাহ মো. খসরুজ্জামানের আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেন এবং রুল জারি করেন। মামলার পেছনের প্রেক্ষাপটে জানা যায়, রাজধানীর গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিং কর্তৃপক্ষকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে একই ভবনে টিউলিপ সিদ্দিক বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট গ্রহণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল দুদক একটি মামলা দায়ের করে, যাতে টিউলিপ সিদ্দিক ছাড়াও রাজউকের তৎকালীন দুই কর্মকর্তা শাহ খসরুজ্জামান ও সরদার মোশাররফ হোসেনকে আসামি করা হয়। মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে থাকলেও, হাইকোর্টের এ স্থগিতাদেশ তদন্তে বড় ধরনের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক। কমিশনের আইনজীবী এম এ আজিজ খান জানান, তদন্ত চলাকালে হাইকোর্টের এমন নির্দেশনা তাদের জন্য আশাহত করেছে। তার মতে, স্থগিতাদেশের ফলে চার্জশিট দাখিল ব্যাহত হতে পারে। এ জন্য দুদক দ্রুত আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে আদালত তদন্ত শেষে বিষয়টি বিচার করতে পারেন। তবে আইনজীবী খান এ-ও জানান, হাইকোর্টের লিখিত আদেশে পুরো মামলাটি নয়, বরং শুধুমাত্র পিটিশনার হিসেবে শাহ খসরুজ্জামানের বিরুদ্ধে তদন্ত স্থগিত থাকতে পারে। বিষয়টি পরিষ্কার হলে দুদক পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেবে।

'পিস টিভি বাংলা' পুনরায় চালুর দাবি, সরকারকে আইনি নোটিশ
খ্যাতনামা ইসলামি চিন্তাবিদ ডা. জাকির নায়েকের পরিচালিত ইসলামিক চ্যানেল ‘পিস টিভি বাংলা’ পুনরায় চালুর আহ্বান জানিয়ে সরকারকে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। রোববার (১৩ জুলাই) এ নোটিশটি পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আশরাফুজ্জামান। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের জুলাইয়ে ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর তদন্তে উঠে আসে যে হামলাকারীদের একজন ডা. জাকির নায়েকের বক্তব্য দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। এই অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকার পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। তবে সম্প্রতি ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’-এর পর একটি ইউটিউব ভিডিওতে ডা. জাকির নায়েক বলেন, পিস টিভি বাংলা ছাড়াও চ্যানেলটির ইংরেজি, উর্দু ও চাইনিজ সংস্করণগুলো স্যাটেলাইটের মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবেই সম্প্রচারে রয়েছে। তিনি দাবি করেন, পিস টিভির স্যাটেলাইট সম্প্রচার কখনোই বন্ধ হয়নি, শুধু বাংলাদেশ ও ভারতের মতো কিছু দেশে ডাউনলিংকের অনুমতি প্রত্যাহার করায় কেবল নেটওয়ার্ক থেকে এটি দেখা যাচ্ছে না। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে পুনরায় সম্প্রচারের অনুমতির জন্য ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। ডা. জাকির নায়েক আশা প্রকাশ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অনুমতি মিললে পিস টিভি বাংলা কয়েক দিনের মধ্যেই পুনরায় কেবল মাধ্যমে সম্প্রচার শুরু করতে পারবে।

মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা, আরও দুই আসামির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
ঢাকার পুরান মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙারি ব্যবসায়ী মো. সোহাগ ওরফে লাল চাঁদকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই আসামি মো. আলমগীর ও মনির ওরফে লম্বা মনিরকে চার দিন করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। রোববার (১৩ জুলাই) তাদের আদালতে হাজির করে তদন্তের স্বার্থে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ প্রত্যেকের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। এর আগে এ মামলায় মাহমুদুল হাসান মহিন ও টিটন গাজীর পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। গত ৯ জুলাই (বুধবার) রাতে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে সোহাগকে কুপিয়ে, পিটিয়ে এবং পাথর দিয়ে মাথা থেতলে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর নিহতের বড় বোন কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এছাড়া পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে পৃথক একটি মামলা করে। এ মামলায় গ্রেপ্তার তারেক রহমান রবিন দুই দিনের রিমান্ডে থাকার পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

অস্ত্র মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে মো. ফাতেহ আলী (৬১) ও তার তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। চার্জশিটভুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ, এম এ এস শরীফ ও আরাফাত ইবনে নাসির। রোববার (১৩ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামানের আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম। আদালত মামলার চার্জশিট দেখিলাম বলে স্বাক্ষর করে মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন। গত ২৭ মে আনুমানিক ভোর ৫টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ অভিযানে কুষ্টিয়া জেলা থেকে শীর্ষ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোল্লা মাসুদ ওরফে আবু রাসেল মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সুব্রত বাইনের দুই সহযোগী শ্যুটার আরাফাত ও শরীফকে।অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩টি গুলি এবং একটি স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২৮ মে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেন হাতিরঝিল থানার এস আই আসাদুজ্জামান। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০১ সালে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসামি সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম ঘোষণা করে এবং তাদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। তারা সন্ত্রাসী বাহিনী সেভেন স্টার গ্রুপ পরিচালনা করতো। সুব্রত বাইন তৎকালীন খুন-ডাকাতি সংঘটনের মধ্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে। পরে সে ভারত পালিয়ে যায়। ৫ আগস্টের পর সে দেশে প্রবেশ করে পুনরায় খুন, চাঁদাবাজি শুরু করে। তার সহযোগী আসামি এস এম শরীফের হাতিরঝিলের একটি বাড়িতে তারা নিয়মিত মিটিং করেন এবং সেখানে তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র, গুলি অপরাধ সংগঠনের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি রাখা আছে বলে তথ্য পায় পুলিশ। পরে হাতিরঝিল থানাধীন নতুন রাস্তা এলাকা হতে একইদিন বিকেলে আসামি এম এ এস শরীফ ও আসামি মো. আরাফাত ইবনে নাসিরকে আটক করা হয়।

সোহাগ হত্যার তদন্তে বিচারিক কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে রিট
রাজধানীর পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ (৩৯) নামের ভাঙারি ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা তদন্তে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিচারিক কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে। আজ রবিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। রিটে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আগামীকাল সোমবার এ রিটের ওপর শুনানি হতে পারে। এদিকে, গতকাল শনিবার টিটন গাজী নামে এক আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিব উল্লাহ গিয়াসের আদালত। অপরদিকে এ ঘটনায় পুলিশের করা অস্ত্র মামলায় রবিন নামে এক আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে গত ১০ জুলাই হত্যা মামলায় মাহমুদুল হাসান মহিনের পাঁচ দিন ও অস্ত্র মামলায় রবিনের দু দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। জানা যায়, গত ৯ জুলাই সন্ধ্যায় রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে পাকা রাস্তার ওপর একদল লোক লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ নামে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। আর পুলিশ অস্ত্র আইনে পৃথক আরেকটি মামলা করে।

মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যা: টিটন গাজীর ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
রাজধানীর পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার মো. টিটন গাজীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনিবার (১২ জুলাই) টিটন গাজীকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন। শুনানিতে তদন্তের স্বার্থে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে বিচারক মো. হাসিব উল্লাহ পিয়াস পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে শুক্রবার গভীর রাতে পুরান ঢাকার জিন্দাবাহার এলাকা থেকে টিটন গাজীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মাহমুদুল হাসান মহিন এবং তারেক রহমান রবিনকে আগে থেকেই রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। মহিনকে হত্যা মামলায় এবং রবিনকে অস্ত্র মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত ৯ জুলাই সোহাগকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে, পিটিয়ে এবং কংক্রিটের টুকরো দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়। ঘটনায় নিহতের বড় বোন কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পাশাপাশি পুলিশ নিজ উদ্যোগে অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা করে।

এস আলম পরিবারের সিঙ্গাপুরের ব্যাংক হিসাব, শেয়ার অবরুদ্ধ
ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও পরিবারের নামে সিঙ্গাপুরে থাকা ৬৪টি ব্যাংক হিসাব ও ১০টি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহিম মিয়া দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. তানজির আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন। অবরুদ্ধ সম্পদের মধ্যে সিঙ্গাপুরে সাইফুল আলমের ৪০টি ব্যাংক হিসাব; স্ত্রী ফারজানা পারভীনের ছয়টি ব্যাংক হিসাব এবং সিঙ্গাপুরে তাদের নামে থাকা আটটি কোম্পানির শেয়ার; ছেলে আশরাফুল আলমের সাতটি ব্যাংক হিসাব ও একটি কোম্পানির শেয়ার; ছেলে আহসানুল আলমের সাতটি ব্যাংক হিসাব ও একটি কোম্পানির শেয়ার; ছেলে আসাদুল আলম মাহির একটি ব্যাংক হিসাব, তার শ্যালক আহমেদ বেলালের দুটি ব্যাংক হিসাব এবং বোন মাইমুনা খানমের একটি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। আদালত সূত্রে জানা যায়, দুদকের উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক এ আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন। এর আগে ৭ অক্টোবর এস আলম ও স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ তার পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। ১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন একই আদালত। ৩ ফেব্রুয়ারি ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত। ১২ ফেব্রুয়ারি ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ২৭৪টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের ৮ হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। ১০ মার্চ এস আলমের এক হাজার ছয় বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। ৯ এপ্রিল তার ৯০ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে। একই দিন আদালত তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা ৩৭৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। ১৭ এপ্রিল এস আলমের ১ হাজার ৩৬০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। এসব হিসাবে ২ হাজার ৬১৯ কোটি ৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা রয়েছে। ২৩ এপ্রিল তার ৪০৭ কোটি টাকা মূল্যের ১৫৯ একর জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। ২৭ এপ্রিল সাইফুল আলম ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্টদের নামে থাকা ৫৫৯ কোটি ৪৮ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের ১ হাজার ১৪ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। ১৭ জুন তাদের ১৮০ কোটি ৬১ লাখ টাকা মূল্যের দুইশ একর জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। ২৪ জুন জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া সাইফুল আলম ও স্ত্রী ফারজানা পারভীনের নামে ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে থাকা ১৮ কোম্পানির শেয়ার ও জার্সিতে থাকা ছয়টি ট্রাস্ট কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করা হয়। ১০ জুলাই সাইফুল আলমের নামে থাকা ৫৩টি ব্যাংক হিসাবের ১১৩ কোটি ৯ লাখ ৮২ হাজার ৮৬৮ টাকা অবরুদ্ধ করা হয়।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেন মামুন, নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করেছেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। একই সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ারও সম্মতি দিয়েছেন তিনি। এ অবস্থায় তার নিরাপত্তা চেয়ে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেছেন তার আইনজীবী। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে একটি মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশের সময় ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে দায় স্বীকার করেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। এ সময় ট্রাইব্যুনাল তার রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। এরপর জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আজ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফর্মাল চার্জ) গঠন করে আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে লিখিত বক্তব্যে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন আদালতকে জানান, যারা এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে চান তিনি। এ সময় চৌধুরী মামুনের আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ সাবেক পুলিশপ্রধানের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার জন্য প্রার্থনা করেন। ট্রাইব্যুনাল এ বিষয়ে যথাযথ আদেশ দেবেন বলে জানান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো। একই সঙ্গে মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য আগামী ৩ আগস্ট এবং রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৪ আগস্ট দিন নির্ধারণ করেন আদালত। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন আসামি হিসেবে রয়েছেন। তাদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। ট্রাইব্যুনালের আদেশের পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আজ জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যার ঘটনায় পলাতক আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। গ্রেপ্তার হওয়া আসামি পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন, তাকে অভিযোগ পড়ে শোনানো হলে তিনি তার দোষ স্বীকার করেন। চিফ প্রসিকিউটর বলেন, মামুন বলেছেন, তিনি একজন সাক্ষী হিসেবে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের সমস্ত ঘটনা জানেন। সব তথ্য উদঘাটনে আদালতের সামনে অ্যাপ্রুভার হতে চেয়েছেন তিনি। সেই প্রার্থনা আদালত মঞ্জুর করেছেন। সুতরাং পরবর্তী সময়ে আদালতের সুবিধাজনক সময়ে তার বক্তব্য উপস্থাপনের মাধ্যমে আদালতকে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে সাহায্য করবেন। এতে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে গণ্য হবেন। তাজুল ইসলাম বলেন, যেহেতু তিনি অ্যাপ্রুভার হতে চেয়ে আবেদন করেছেন, তার নিরাপত্তার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ তার পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে আদালতে আবেদন জানান। আদালত এ বিষয়ে যথাযথ আদেশ দেবেন। রাজসাক্ষী হওয়ায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ক্ষমা পাবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, সেটা আদালতের এখতিয়ার। আদালত চাইলে তাকে ক্ষমা করতে পারেন বা অন্য কোনো আদেশ দিতে পারেন।
১৮ বিচারককে বাধ্যতামূলক অবসর
১৮ বিচারককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের এ সদস্যদের চাকরির মেয়াদ ২৫ বৎসর পূর্ণ হওয়ায় তাদের অবসর দিয়ে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। জনস্বার্থে তাদেরকে ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ এর ৪৫ ধারার বিধান মতে চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হয়েছে। এ বিচারকরা বিধি অনুযায়ী অবসরজনিত সুবিধাদি পাবেন বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।

প্রথম আলোর সম্পাদকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা, তদন্তে সিআইডি
প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত ঈদ শুভেচ্ছা কার্টুনে ‘ঈদ মোবারক’ লেখার পাশে কুকুরের ছবি ব্যবহার করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক, প্রকাশক ও গ্রাফিকস ডিজাইনার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজজামানের আদালত মামলাটি গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে অভিযোগ তদন্ত করে অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী ইমরান হোসেন এ তথ্য জানান। এর আগে গত ২৮ এপ্রিল নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলার আবেদন করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গত ৩০ মার্চ প্রথম আলো পত্রিকার প্রথম পাতার দ্বিতীয় , তৃতীয় এবং চতুর্থ কলামের হেডলাইনে ঈদ মোবারক নামক একটি ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ করে। যা কুকুরের ছবি সংবলিত। ওই ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন ইসলাম ধর্মের পবিত্র উৎসবকে অবমাননা করা হয়েছে।

নিজের সুরক্ষা চেয়ে মা-বাবার বিরুদ্ধে মামলা মেহরীনের
শারীরিক ও মানসিক হেনস্তা থেকে নিজের সুরক্ষা চেয়ে মা-বাবার বিরুদ্ধে মামলা করা মেয়ে মেহরীন আহমেদ (১৯) আদালতে বলেন,“আমি মা-বাবার পাপেট (পুতুল) নই। আমাকে কেন গালি দেবে? কেন তারা আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করে? আমি আমার সুরক্ষা চাই।” বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে এই কথা বলেন মেহরীন। গত ২২ জুন মেহরীন তার বাবা নাসির আহমেদ ও মা জান্নাতুল ফেরদৌসের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে একই আদালতে মামলা করেন। মামলার শুনানিতে মা-বাবার উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের বক্তব্য গ্রহণ করা হয়। মেহরীন অভিযোগ করেন,“বাবা-মায়ের মাধ্যমে আমি জন্মগ্রহণ করেছি, সেটা আমার কোনো দোষ নয়। আমি তাদের পুতুল নই। আমাকে কেন গালি দিবে? আমাকে শারীরিক-মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি ভালোভাবে খেতে ও ঘুমাতে পারি না। আমাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, ব্রেইন অ্যান্ড মাইন্ড হাসপাতালে দুই বছর রাখা হয়েছিল। সেখানে আমাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। কেন আমাকে ওই হাসপাতালে রাখা হয়েছিল, আমি জানতে চাই।” মেহরীন আরও বলেন,“আমি একটি সুন্দর জীবন চাই, কিন্তু তা পাচ্ছি না। আমি আমার সুরক্ষা চাই, আমি বিচার চাই।” মেহরীন আদালতে তার বক্তব্যের বেশির ভাগ ইংরেজিতেই প্রকাশ করেন। শুনানির সময় মেহরীনের মা জান্নাতুল ফেরদৌস কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করে বক্তব্য শুনেন, অন্যদিকে বাবা নাসির আহমেদ মেয়ের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনতে থাকেন। অপরদিকে, মা-বাবার পক্ষে আইনজীবী আবুল হোসেন আদালতে বলেন,“মেহরীন তাদের একমাত্র সম্বল এবং আশা-ভরসার স্থান। মা-বাবাও চান তাদের মেয়ে সুরক্ষার আদেশ পাক। দেশের বাইরে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী মেয়ের উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।” শুনানির শেষে তিনি জানান, আদালত পরে আদেশ দিবেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইসফাকুর রহমান গালিব জানান,“আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনেছেন। বয়ঃসন্ধিকাল থেকেই বাদী পরিবারের সদস্যদের অবহেলা ও মানসিক নির্যাতনের শিকার। তাই পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন ২০১০ অনুযায়ী সুরক্ষা আদেশ ও জীবনযাপনের প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার জন্য আবেদন করা হয়েছে।” মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে,গত ২৫ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাসায় মেহরীনকে তার মা ও বাবা শারীরিকভাবে আঘাত করেন এবং অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন। তারা মেহরীনের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, অপমান ও নির্যাতন করে যাচ্ছেন। এছাড়া, পরিবারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ব্যবহারে বাধা দেওয়া হয়। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়,পারিবারিক সম্পদ ও সুযোগ-সুবিধার অধিকার থেকে বাদীকে বঞ্চিত করা হয় এবং বৈধ অধিকার প্রয়োগে বাধা দেওয়া হয়। তারা মৌখিক নির্যাতন, অপমান, অবজ্ঞা, ভয় দেখানো ও অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করে মেহরীনকে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। শারীরিক নির্যাতনের ফলে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।

জুলাই গণহত্যার দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হলেন সাবেক আইজিপি মামুন
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন রাজসাক্ষী হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে তিনি স্বেচ্ছায় এই হত্যাকাণ্ডে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে বলেন, “আমি এই ঘটনায় জড়িত ছিলাম। সব রহস্য উন্মোচন করব।” একই দিনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ৩ আগস্ট এবং সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে ৪ আগস্ট। এর আগে সকালে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় সাবেক আইজিপি মামুনকে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, শেখ হাসিনা ছিলেন জুলাই গণহত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা। মামলার অন্য দুই আসামি হচ্ছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। এ বছরের ১২ মে তদন্ত দল আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাইব্যুনালে হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এর আগে, ১৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল এই মামলার তদন্ত কাজ ২০ এপ্রিলের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছিল। উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে গিয়ে নিরস্ত্র ছাত্র ও সাধারণ মানুষের ওপর গুলিবর্ষণ, হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তৎকালীন সরকারের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে এ মামলা হয়। তদন্তে দাবি করা হয়, সরকারের নির্দেশেই এ হামলা চালানো হয়, যাতে প্রাণ হারান প্রায় দেড় হাজার মানুষ।
.jpg)
জুলাই গণহত্যা, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ আজ
২০২৪ সালের জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) আদেশ দেবেন ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ বিষয়ে আদেশ দেবেন। ট্রাইব্যুনালে অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এর আগে, গত ৭ জুলাই ২০২৪ সালের জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশের জন্য আজকের তারিখ ধার্য করা হয়। মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আসামি। আসামিদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। তাদের পক্ষে আমির হোসেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী। সেদিন অভিযোগ গঠন বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের অব্যাহতির আবেদন করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। মামলার অপর আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন গ্রেপ্তার আছেন। গত ১ জুলাই জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন। সেদিন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। গত ১৭ জুন জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে নোটিশ জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ বিজ্ঞপ্তি জারি করেন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার। পত্রিকায় এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ১৬ জুন জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে এক সপ্তাহের মধ্যে হাজির হতে দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। আগামী ২৪ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। মামলার আরেক আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন। আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। গত ১ জুন জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী মামুন। একইসঙ্গে এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। সেদিন আদালতে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার, মিজানুল ইসলাম। যা সব গণমাধ্যমে সম্প্রচার করা যায়। এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান অভিযুক্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। গত ১২ মে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। তদন্ত প্রতিবেদনে জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম উঠে এসেছে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যা চালায়। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে।

সুব্রত বাইনকে দেখে আদালতে অন্য আসামিদের ‘জয় বাংলা’ স্লোগান
যুবদল নেতা আরিফ হত্যা মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের ফের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুনানি তোলার সময় সুব্রত বাইনকে দেখে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে দেখা যায় অন্য আসামিদের। বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর ২টা ১৩ মিনিটের দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানা থেকে বের করে এজলাসে তোলা হয়। এজলাসে তোলার সময় পাশে প্রিজন ভ্যানে থাকা কয়েকজন আসামি 'জয় বাংলা' স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় আইনজীবী ও উৎসুক জনতাকে বলতে দেখা যায়, আসামিরা হয়তো সুব্রত বাইনকে আওয়ামী লীগের কোনো আসামি মনে করেছেন। সুব্রত বাইন তাদের পরিচিত কিনা এটা নিয়েও কথা বলতে থাকেন অনেকে। এদিকে লিফটে করে ২টা ১৭ মিনিটের দিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবদুল ওয়াহাবের আদালতে তোলা হয় সুব্রত বাইনকে। এ সময় তাকে এক হাত ও পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরানো দেখা যায়। হাত দিয়ে ডান্ডাবেড়ি ধরে হাঁটতে থাকেন তিনি। এছাড়া বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরানোও দেখা যায়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম সুব্রত বাইনের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আজিজুল হক দিদার রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। অন্যদিকে সুব্রত বাইনের পক্ষে তার আইনজীবী মোহাম্মদ বাদল মিয়া রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত আসামিকে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।এর আগে গত ২৭ মে সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ চারজনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে যৌথবাহিনী। পরদিন হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের মামলায় সুব্রত বাইনের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের ৫৭৬ কোটি টাকার বিও অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধের আদেশ
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ৫৭৬ কোটি ৮ লাখ ৭৭ হাজার ৭৩০ টাকা মূল্যের ২৬টি বিও হিসাব (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৯ জুলাই) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে এ আবেদন করেন উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান। আবেদনে দুদক উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মানলন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য সাতজন সদস্যের একটি যৌথ অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। অনুসন্ধানকালে গোপন সূত্রে জানা যায় যে, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট এবং তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিও হিসাবসমূহ নগদায়নসহ অর্থ অন্যত্র স্থানান্তর বা হস্তান্তর করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। এসব বিও হিসাবসমূহ নগদায়ন বা অর্থ অন্যত্র হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে রাষ্ট্রের সমূহ ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। সে কারণে এসব বিও হিসাগুলো নগদায়ন বা অর্থ উত্তোলন বন্ধ করার জন্য অবরুদ্ধ করা একান্ত আবশ্যক। এর আগে গত ১৭ জুন সাইফুজ্জামান চৌধুরীর অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ পাচারের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে গড়া মোট এক হাজার ৬০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করে যুক্তরাজ্য সরকার। তার আগে গত ৫ মার্চ সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ৩৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। এসব ব্যাংক হিসাবে পাঁচ কোটি ২৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা জমা রয়েছে বলে দুদকের আবেদন সূত্রে জানা যায়। এছাড়াও গত ১৭ অক্টোবর সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের নামে থাকা দেশ-বিদেশের ৫৮০ বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/জমিসহ স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি ও যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে ৯টি সম্পত্তি রয়েছে।

যুবদল নেতা হত্যা মামলায় সুব্রত বাইন ৭ দিনের রিমান্ডে
যুবদল নেতা আরিফ হত্যার ঘটনায় রাজধানীর হাতিরঝিল থানার মামলায় সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলীর ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (৯ জুলাই) তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম তার দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্র পক্ষ রিমান্ডে পক্ষে শুনানি করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো: আবদুল ওয়াহাব তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত ২৩ জুন তদন্ত কর্মকর্তার আবেদন মঞ্জুর করে সুব্রত বাইনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখান আদালত। ওইদিন সুব্রত বাইনকে কারাগার থেকে ভার্চুয়ালি আদালতে উপস্থিত দেখিয়ে গ্রেপ্তারের বিষয়ে শুনানি করা হয়। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর হাতিরঝিলের নয়াটোলা মোড়ল গলির ‘দি ঝিল ক্যাফে’র সামনে যুবদল নেতা মো. আরিফ সিকদারকে গুলি করা হয়। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ এপ্রিল মৃত্যু হয় তার। নিহত আরিফ সিকদার ঢাকা মহানগর উত্তরের ৩৬নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সহ-ক্রীড়া সম্পাদক। এ ঘটনায় নিহত আরিফের বোন রিমা আক্তার বাদী হয়ে সুব্রত বাইনের সহযোগী মাহফুজুর রহমান বিপুসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ তদন্ত করছে। মামলার অপর আসামিরা হলেন– মো. ইয়াছিন (১৯), মো. আসিফ হোসেন (২১), মো. অনিক (১৯), মো. মিরাজ (১৯), মো. আশিক (১৯), মো. ইফতি (২৪), জাফর ইমাম তরফদার মন্টু (৪০), রতন শেখ (৪৫) ও আলিফ (১৯)। গত ২৭ মে সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ চারজনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী। পরদিন হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের মামলায় সুব্রত বাইনের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

হাইকোর্টের রায়ে শুকরিয়া আদায় করলেন চাকরি ফেরত পাওয়া শরীফ
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বরখাস্ত হওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনকে চাকরি ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায় পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে সব সুযোগ সুবিধা দিয়ে তাকে চাকরিতে পূনর্বহাল করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বুধবার (৯ জুলাই) বিচারপতি রেজাউল হাসান ও বিচারপতি বিশ্বজিত দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় শরীফ উদ্দিন তিনবার আলহামদুলিল্লাহ শব্দ উচ্চারণ করে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন। শরীফ বলেন, তিন বছরের আইনি লড়াই শেষে হাইকোর্ট থেকে ন্যায় বিচার পেয়েছি। ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান না হলে হয়তো এই ন্যায়বিচার পেতাম না। চাকরি হারানোর পর অনেক কষ্টে জীবন যাপন করেছি। আজ থেকে সব দু:খ কষ্ট মুছে গেল। আর কোনো দু:খ নেই। আদালতের শরীফের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন। এর আগে ২০২২ সালের ১৩ মার্চ চাকরি ফেরত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন। ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সই করা এক প্রজ্ঞাপনে উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনের অপসারণের বিষয়টি জানানো হয়।