
সময় শেষে উত্তরপত্র জমা চাওয়ায়, ছাত্রদল নেতার হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত
বগুড়ার নন্দীগ্রামে এইচএসসি পরীক্ষার সময় নির্ধারিত সময়ের পর উত্তরপত্র জমা দিতে চাওয়ায় পরীক্ষাকক্ষে কর্তব্যরত শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ফিরোজ আহমেদ শাকিল মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন), নন্দীগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রের ২০৩ নম্বর কক্ষে। বাংলা প্রথমপত্রের বহু নির্বাচনী (এমসিকিউ) পরীক্ষায় নির্ধারিত ৩০ মিনিট সময় শেষে পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র জমা দেওয়ার কথা থাকলেও ফিরোজ আহমেদ অতিরিক্ত সময় দাবি করেন। কক্ষ পরিদর্শক ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ফেরদৌস আলী এ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করলে ফিরোজ উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। পরীক্ষাকেন্দ্রের সূত্র জানায়, ফিরোজ আহমেদ নিজেকে ছাত্রদল নেতা পরিচয় দিয়ে শিক্ষককে হুমকি দেন এবং একপর্যায়ে পরীক্ষাকক্ষ ত্যাগ করতে গেলে শিক্ষক ও কেন্দ্রসচিব বাধা দেন। তখন তিনি কক্ষ পরিদর্শক ফেরদৌস আলীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। পরীক্ষাকেন্দ্রের সচিব আমজাদ হোসেন বলেন, "নির্ধারিত সময়ের বাইরে উত্তরপত্র জমা দিতে না পেরে তিনি উত্তেজিত হয়ে শিক্ষককে হেনস্তা করেন। আমরা সঙ্গে সঙ্গেই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনি এবং পুলিশও উপস্থিত হয়। পুলিশের সামনেই ওই পরীক্ষার্থী শিক্ষককে কেন্দ্রের বাইরে গিয়ে হামলা ও হত্যার হুমকি দেয়।" এ ঘটনায় কেন্দ্রের শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে ফিরোজ আহমেদকে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বিষয়ে মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতির বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাবিবুর রশিদ সন্ধান বলেন, “সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ফিরোজ আহমেদকে ছাত্রদল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।” নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. লায়লা আঞ্জুমান বানু জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষক জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

এইচএসসি পরীক্ষার ১ম দিনে রংপুর বিভাগে অনুপস্থিত ১২৯১ জন
রংপুর বিভাগের দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে অনুপস্থিতি ১ হাজার ২৯১ জন। এই বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৯৫ হাজার ৬১৭ জন। উপস্থিত ছিলেন ৯৪ হাজার ৩২৬ জন। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মীর সাজ্জাদ আলী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রংপুরে ৪১টি কেন্দ্রে ২২ হাজার ৩৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিল ২১ হাজার ৮২১ জন। অনুপস্থিত ২১৮ জন। গাইবান্ধায় ৩০টি কেন্দ্রে ১৩ হাজার ৬৫২ জনের মধ্যে উপস্থিত ছিল ১৩ হাজার ৪৩১, অনুপস্থিত ২২১। এ ছাড়া, নীলফামারীতে ২৪টি কেন্দ্রে ১১ হাজার ৩৩১ জনের মধ্যে ১১, কুড়িগ্রামের ২৭টি কেন্দ্রে ৯ হাজার ৬২০ জনের মধ্যে ৯ হাজার ৪৬৬ জন, লালমনিরহাটে ১৩টি কেন্দ্রে ৬ হাজার ২৫৪ জনের মধ্যে ৬ হাজার ১৫২ জন, দিনাজপুরের ৪৭টি কেন্দ্রে ১৯ হাজার ৬৭ জনের মধ্যে ১৮ হাজার ৮২৪ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ১৯টি কেন্দ্রে ৮ হাজার ৯০ জনের মধ্যে ৭ হাজার ৯৬৭ জন এবং পঞ্চগড়ের ১২টি কেন্দ্রে ৫ হাজার ৫৬৪ জনের মধ্যে ৫ হাজার ৪৭৪ জন উপস্থিত ছিল। কোথাও কোনো বহিষ্কার অথবা অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। সুষ্ঠুভাবে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণে বোর্ডের পক্ষ থেকে কেন্দ্র কমিটির সঙ্গে সভা করা হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালে ঝটিকা ভিজিলেন্স টিম বিভাগের ৮ জেলায় বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করে। এ ছাড়া শিক্ষাবোর্ডের বিশেষ ভিজিলেন্স টিম কাজ করছে। এদিকে বিভাগীয় নগরী রংপুরে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এইচএসসি ও সমমানের প্রথম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার ৮ উপজেলায় ৭০টি কেন্দ্রে প্রায় ৩৩ হাজার পরীক্ষার্থী এতে অংশ নেয়। এর মধ্যে ৪১টি কেন্দ্রে এইচএসসিতে ২৪ হাজার ২৬৩ জন, ১০টি কেন্দ্রে মাদ্রাসা বোর্ডের আলিম পরীক্ষায় ১ হাজার ৯৩৫ জন এবং ১৯টি কেন্দ্রে কারীগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ভোকেশনাল ও ব্যবসা ব্যবস্থাপনা বিএম পরীক্ষার্থী ছিল ৬ হাজার ৬৫৯ জন। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে রংপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। এ সময় তিনি কেন্দ্র পরিদর্শন করে দায়িত্বরত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন। রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, জেলায় ৭০টি কেন্দ্রে এইচএসসি ও সমমানের প্রথম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রের পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। এ ছাড়া কারগারে দুইজন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছেন। বিগত এসএসসি পরীক্ষায় যেসব কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে, সেখানে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছি। এইচএসসি পরীক্ষায় আমরা আরও বেশি সতর্ক রয়েছি।

রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুদকের অভিযান
বাগেরহাটের রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ভারত ও বাংলাদেশের কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য ও মালামাল লুটপাটের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে প্রায় ৫ ঘণ্টাব্যাপী অভিযানে ভারত ও বাংলাদেশের কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য এবং মালামাল লুটপাটের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক। বাগেরহাট জেলা দুদক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এছাড়াও ভারতের কর্মকর্তা কর্মচারীদের তিন বছরের কর মওকুফ করা হলেও, বাংলাদেশের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর মওকুফ করা হয় না। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান জানান, দুই দেশের নাগরিকদের বেতন বৈষম্য, কর মওকুফে অনিয়ম, কয়লা ক্রয়ে নয়-ছয়সহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রথামিক সত্যতা পাওয়া গেছে। অনিয়ম সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হবে। সেখান থেকে দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

যমুনা সেতু থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে রেললাইন
যমুনা সেতু থেকে রেলসেতুর রেললাইন খুলে ফেলা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে যমুনা সেতুর টাঙ্গাইলের এলেঙ্গার দিক থেকে রেললাইনের নাট-বল্টু খুলে ফেলার কাজ শুরু করে সেতু বিভাগ কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত ১৮ মার্চ থেকে যমুনা সেতুর ৩ শ মিটার বিপরীতে নির্মাণ করা যমুনা রেলসেতুতে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এ কারণে যমুনা সেতুতে সড়ক সেতুর পাশাপাশি স্থাপিত রেলসেতু রেল চলাচলে আর প্রয়োজন নেই। এ ব্যাপারে গতকাল যমুনা রেলসেতু প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো: মাসুদুর রহমান বলেন, সেতু বিভাগ রেললাইন খুলে ফেলার কাজ শুরু করেছে। রেললাইন খুলে ফেলার কাজ শেষ হলে সমুদয় মালামাল রেল কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হবে। রেললাইন সরিয়ে ফেলার পর ওই স্থানটি কি করা হবে, জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, সেতু কর্তৃপক্ষ সড়ক সেতু বর্ধিত করার জন্যই রেললাইন সরিয়ে ফেলছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা নদীতে টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জের মধ্যে ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যমুনা সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ওই দিনই আনুষ্ঠানিকভাবে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। পরবর্তীতে যমুনা সেতুতে রেল সংযোগের দাবিতে তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীন রেল বিভাগ আন্দোলন করে। এর প্রেক্ষিতে সরকার তাৎক্ষনিকভাবে যমুনা সেতুতে রেললাইন স্থাপনের ঘোষণা দেয়। বিদ্যমান সড়ক সেতুর উত্তর পাশ দিয়ে লোহার এঙ্গেল দিয়ে তৈরি করা হয় রেলসেতু। ২০০৪ সালের ১৫ আগস্ট যমুনা সেতুতে আনুষ্ঠানিকভাবে রেল চলাচল শুরু হয়। দ্রুত গতিতে ট্রেন চলাচলের কারণে ২০০৬ সালে সেতুতে ফাটল ধরে। পরে ট্রেন চলাচলের গতিসীমা করা হয় ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার। এতে একটি ট্রেনকে সেতু পার হতে ২২ মিনিট সময় লাগে। এ কারণে সেতুর দুই প্রান্তে ট্রেনের জট বেঁধে যায়। এই সমস্যার কথা বিবেচনা করে ২০২০ সালে যমুনা সেতুর ৩শ মিটার উজানে সমান্তরাল পৃথক রেলসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেয় সরকার। জাইকার অর্থায়নে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হয় ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের যমুনা রেলসেতু। গত ১৮ মার্চ থেকে রেলসেতুতে ট্রেন চলাচল শুরু হলে পুরাতন যমুনা সেতুর রেললাইন সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা নেয় সেতু বিভাগ। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে রেললাইন সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু হয়।

পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে হামলায় ব্যবসায়ী গুরুতর আহত
ভোলার চরফ্যাশনে পাওনা এক হাজার টাকা দিতে দেরি হওয়ায় রবিউল ইসলাম সুজন (৩৫) নামের এক ব্যবসায়ীর মাথায় ইট ও কাঠ দিয়ে আঘাত করেছেন রেদওয়ান আহমেদ নামের এক ছুটিতে থাকা সেনা সদস্য। বুধবার রাতে উপজেলার আমিনাবাদ ইউনিয়নের কুলসুমবাগ এলাকার তালুকদার বাজারের কাছে এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় সুজনকে প্রথমে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করেন। আহত সুজন স্থানীয় সামাজিক সংগঠন ‘রাইটস ফর কোস্টাল পিপল (আরসিপি)’-এর একজন সদস্য এবং ‘ইকরা বেকারী’র স্বত্বাধিকারী। সুজনের ভাই সাব্বির চরফ্যাশন থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সেনা সদস্য রেদওয়ান আহমেদ ছুটিতে বাড়িতে এসে পাওনা টাকা চাইতে গেলে টাকা পরিশোধে দেরির কথা বলায় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রেদওয়ান সুজনকে ইট ও কাঠ দিয়ে মাথায় আঘাত করে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ইকরা বেকারীর ম্যানেজার নুরে আলম বলেন, “বুধবার সন্ধ্যায় রেদওয়ান এসে তার পাওনা টাকা দাবি করেন। সুজন পরে দিবেন বললে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রেদওয়ান প্রথমে ইট দিয়ে এবং পরে কাঠ দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। এতে সুজন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।” সুজনের বোন সায়মা বলেন, “রেদওয়ান বয়সে আমার ভাইয়ের ছোট, সামান্য কথা কাটাকাটির জন্য সে ভাইয়ের মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করেছে। মাথায় ১৪টি সেলাই দিতে হয়েছে।” অভিযুক্ত রেদওয়ান আহমেদ বলেন, “পারিবারিক পাওনা টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটির সময় সুজন আমার দিকে তালা ছুড়লে আমি আহত হই। পরে আমার হাতে থাকা ইটের আঘাতে তার মাথায় লাগে। এটি পারিবারিক বিষয়, মিটিয়ে ফেলবো। নিউজ করার দরকার নেই।” তবে নিজেকে আহত দাবি করে হাসপাতালে ভর্তি হলেও রেদওয়ানকে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিচতলায় ও সামনের সড়কে স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আল্লাহর রহমতে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে: কাদের সিদ্দিকী
আল্লাহর রহমতে দেশের জনগণের ধারা শেখ হাসিনার পতন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পতন ন্যায়ের কাছে অন্যায়ের পতন। তার পতনে রাজনৈতিক দলের শ্রম ও ঘাম আছে। যারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছেন তাদেরও ভূমিকা আছে। সর্বোপরি আল্লাহর রহমতে দেশের জনগণের ধারা শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। আমি যদি ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার মতো করি আমারও পতন হবে। অন্য কেউ যদি করেন তারও হবে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেলে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা হলরুমে স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকীর স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। কাদের সিদ্দিকী বলেন, স্বাধীনতা আমাদের, স্বাধীনতা বাংলাদেশের। স্বাধীনতা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির না। স্বাধীনতা অধ্যাপক ইউনুস ও এনসিপিরও না। স্বাধীনতা এ দেশের মানুষের। সেজন্য এই স্বাধীনতায় যারাই হস্তক্ষেপ করবে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। অন্যকে শিকার করতে হবে। বিরোধীকে সম্মান দিতে হবে। চোর ও ডাকাতকে ইচ্ছে হলেই মেরে ফেললাম এটা চলবে না, তাকেও আইনের আশ্রয় দিতে হবে। সখীপুর উপজেলা শাখার কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আব্দুস সবুর খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, সখীপুর উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ মোহাম্মদ হাবীব, কালিহাতী উপজেলার পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনসুর আজাদ সিদ্দিকী, সখীপুর উপজেলা শাখার কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন সজীবসহ প্রমুখ।

আবারও শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ৯২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
ঢাকার সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আলিফ আহাম্মেদ সিয়াম (১৬) নামে এক স্কুলছাত্রকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ৯২ জনের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত সিয়ামের বাবা বুলবুল কবির বাদী হয়ে মামলাটি করেন। বুলবুল কবির বাগেরহাট জেলার বড় বাশবাড়ীয়া গ্রামের হাফিজুর রহমান হাওলাদারের ছেলে। নিহত আলিফ আহমেদ সিয়াম সাভার ডেইরি ফার্ম উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল।সোমবার দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে- গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ দাবিতে লংমার্চে অংশগ্রহণের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের ছাত্র-জনতা একত্রিত হয়ে সাভার থেকে লংমার্চ করে ঢাকা অভিমুখে রওনা করেন। দুপুর ২টার দিকে লংমার্চটি ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ধরে সাভার বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছলে প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে মিছিলের অগ্রভাগে থাকা আলিফ আহাম্মেদ সিয়াম মাথায় গুলিবিদ্ধ হন এবং গুলি কপালে লেগে পেছন দিক দিয়ে বের হয়ে যায়। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ আগস্ট বিকালে সিয়াম মারা যায়। শেখ হাসিনা ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, তৎকালীন সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহুল চন্দ, ঢাকার তৎকালীন পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফি, সাহিদুর রহমান, সাভার মডেল থানার ওসি শাহ জামান, এসআই সুদীপ ঘোষ, হারুন অর রশিদ, সাব্বির হোসেন, সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিব, তার ভাই তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফকরুল আলম সমর, সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম, সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীবের কথিত উপদেষ্টা জাকির হোসেন, সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক, সাভার পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল গনি, তার ছেলে আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন, তার ভাই মেহেদী হাসান তুষার, সবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজীবের পিএস মো. রাজু, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদ চৌধুরী, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূরে আলম সিদ্দিকী নিউটন, নজরুল ইসলাম মানিক মোল্লা, ঢাকা জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিজান ওরফে জি এস মিজান, সাভার উপজেলার ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নিজাম উদ্দিন টিপু, ভারপ্রাপ্ত, যুবলীগ নেতা নাছির উদ্দিন লিটন,আহাম্মেদ ফয়সাল নাইম তুর্জ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা যুগান্তরকে বলেন, দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিয়াম হত্যার ঘটনায় তার বাবা বুলবুল কবির বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পরের যোগসাজশে দাঙ্গা হাঙ্গামা, মারপিট, গুলিবর্ষণ করে হত্যা, হত্যার হুকুম এবং প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকে ছাত্রদল নেতার নির্দেশনা, ৪ শিক্ষককে অব্যাহতি
নাটোরের বড়াইগ্রামে এইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকে ছাত্রদলের নেতাকে পরীক্ষার্থীদের নির্দেশনা প্রদান করতে দেখা যায়। একই সময় কক্ষ পরিদর্শক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তরপত্র বিতরণ করছেন। এ সময় ছাত্রদলের নেতার এক সহযোগী ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। এতে সমালোচনার ঝড় ওঠে। আজ বৃহস্পতিবার উপজেলার বনপাড়া কলেজ কেন্দ্রের ২০৫ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কেন্দ্রসচিব ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কোহিনুর খাতুনকে শোকজ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই কক্ষে পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা চার শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন মোসাদ্দেক হোসেন, নারগিস আলম, মতিউর রহমান ও তসলিম উদ্দিন। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম রাকিব সরদার। তিনি ছাত্রদলের বনপাড়া শহর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক এবং বনপাড়া পৌর বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব সরদার রফিকের ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালীন শুধু পরীক্ষার্থী ও দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কেন্দ্র প্রবেশের নির্দেশনা রয়েছে। একই সঙ্গে পরীক্ষাকেন্দ্রের ১০০ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এই সময় ছাত্রদল নেতা রাকিব সরদার ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে তাঁর সহযোগীসহ কেন্দ্রে প্রবেশ করে বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে পরীক্ষার্থীদের নির্দেশনা-অভয় দিতে থাকেন। সবশেষ ২০৫ নম্বর কক্ষে গিয়ে স্মার্ট ফোন দিয়ে নিজের ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন। অথচ কোনোভাবেই পরীক্ষাকেন্দ্রে স্মার্ট ফোন অনুমোদিত নয়। অভিযোগ স্বীকার করে কেন্দ্রসচিব ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কোহিনুর খাতুন বলেন, ‘বিষয়টি আমার অগোচরেই ঘটে গেছে। তবে প্রশ্নপত্র বিতরণের আগেই ওই নেতা কেন্দ্র ত্যাগ করেন।’ তিনি আরও বলেন, ২০৫ নম্বর কক্ষে দায়িত্বরত চারজন কক্ষ পরিদর্শককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। জানতে চাইলে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, ‘ইউএনও মহোদয় আমাকে অবহিত করেছেন। এ বিষয়ে আইগত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।’ ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘আমি ৯টা ৪০ মিনিটে বনপাড়া কলেজ কেন্দ্রে পৌঁছে উপস্থিত অভিভাবক ও বহিরাগতদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিই। এরপর শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শন টিম তাদের কার্যক্রম শেষ করে চলে যাওয়ার পর ১০টা ৪০ মিনিটে ওই কেন্দ্র ত্যাগ করি। এর আগে ছাত্রদলের ওই নেতা কক্ষে প্রবেশ করেছিলেন। পরে ফেসবুকে ছবি ভাইরাল হওয়ার পরে ঘটনাটি আমার নজরে আসে। এরপর কেন্দ্রসচিবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং ২০৫ নম্বর কক্ষে দায়িত্বরত চারজন কক্ষ পরিদর্শককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’

কুষ্টিয়ায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি, টাকা-স্বর্ণালংকার লুট
কুষ্টিয়ার মিরপুরে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসময় অ্যাম্বুলেন্সে থাকা মৃতের স্বজনদের কাছ থেকে নগদ প্রায় ৩২ হাজার ৬০০ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটে নিয়ে গেছে। অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ আছে কিনা নিশ্চিত হতে মুখের কাপড় সরিয়েও দেখে ডাকাত দল। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বুধবার দিনগত রাত ২টার দিকে মিরপুর উপজেলার ছাতিয়ান ইউনিয়নের দুর্গাপুর মাঠের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে। মৃতের স্বজনরা জানায়, রাত ১০টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পোড়াদহ ইউনিয়নের সৌদিরাজপুর গ্রামের নিয়ামত আলীর স্ত্রী আয়েশা খাতুন (৬০) মারা যান। এরপর সেখান থেকে মরদেহ নিয়ে স্বজনরা অ্যাম্বুলেন্স যোগে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। রাত ২টার দিকে দুর্গাপুর মাঠের মধ্যে পান বরজের কাছে ডাকাত দল অ্যাম্বুলেন্সের গতিরোধ করে। মৃতের ভাই রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘পানের বরজের সামনে বাঁশের কাবাড়ি দিয়ে রাস্তা আটকে ৪-৫ জনের একদল ডাকাত দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমাদের কাছ থেকে টাকা-স্বর্ণালংকার লুট করে। আমার কাছে ২০ হাজার টাকা ছিল। ছোট বোনের কানে স্বর্ণের দুল ছিল, সব নিয়ে গেছে। অন্যদের কাছ থেকেও নগদ টাকা নিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, ‘কতবার মিনতি করেছি ভাই আমার বোন মারা গেছে। আমরা তাকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে আসছি মেডিকেল থেকে। আমাদের কাছে কিছু নাই। এসব বলার পরেও তারা অস্ত্রের মুখে আমাদের সব কিছু লুটে নিয়ে যায়।’ মৃতের ছোট বোন বলেন, ‘ডাকাতদের অনুরোধ করে আমরা বলি ভাই আপনাদেরও মা-বোন রয়েছে। আপনারা দেখেন আমার বোন মারা গেছে। তবুও আমার কান থেকে ডাকাত দল একজোড়া দুল নিয়ে খুলে নেয়। এমনকি ডাকাত দল আমার বোনের মুখ খুলে দেখে যে সত্যি তিনি মারা গেছেন কিনা।’ মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে ঘটনা জানার পরে অভিযুক্তদের আটকে অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।’

বিএনপি অফিসে চিরকুট ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতা পেলে ফিলিস্তিনের মত হবে’
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার নওদা মটমুড়া গ্রামে স্থানীয় বিএনপি অফিসের সামনে থেকে দুটি বোমা সদৃশ্য বস্তু উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে পড়ে ছিল আওয়ামী লীগের নামে হুমকি সম্বলিত একটি চিরকুট। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে পুলিশের একটি দল বোমা সদৃশ্য বস্তু ও চিরকুট উদ্ধার করেছে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নওদা মটমুড়া গ্রামের স্থানীয় বিএনপির অফিস রয়েছে। রাতে অফিস বন্ধ করে নেতা-কর্মীরা বাড়ি চলে যায়। সকালে অফিসের সামনে স্কচ টেপ দিয়ে মোড়ানো বোমা সদৃশ্য বস্তু দুটি দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। বোমা সদৃশ্য বস্তুর পাশে পাওয়া যায় হাতে লেখা একটি চিরকুট। তাতে আওয়ামী লীগের এক অজ্ঞাত কর্মীর বরাত দিয়ে লেখা রয়েছে- ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তারা জায়গায় রয়েছে। ভবিষ্যতে ক্ষমতা পেলে ফিলিস্তিনের মত হবে।’ গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানি ইসরাইল জানান, বোমা সদৃশ্য বস্তু দুটি পানি- বালু ভর্তি পাত্রে রেখে প্রাথমিক নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। এ ঘটনার পেছনে কারা রয়েছে তদন্ত করা হচ্ছে।

একসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন তিন বোন
টাঙ্গাইলের সখীপুরে একসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন তিন বোন। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) শুরু হওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উপজেলার সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তারা। একসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া তিন বোন হলেন- সখীপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের বড় মেয়ে সুমাইয়া ইসলাম (১৯), মেজো মেয়ে সাদিয়া ইসলাম (১৮) ও ছোট মেয়ে রাদিয়া ইসলাম (১৭)। একসঙ্গে তিন বোনের পরীক্ষা দেওয়ার ঘটনাটি সবার নজর কেড়েছে। জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের বাবা শফিকুল ইসলাম সৌদি আরব প্রবাসী হওয়ায় সেখানেই তিন বোনের জন্ম। এরপর ২০১০ সালে সৌদি আরবের মক্কায় ব্যবসা-বাণিজ্য বাদ দিয়ে পরিবার নিয়ে দেশে চলে আসেন শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিগত পরীক্ষায় মেয়েদের ফলাফলে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আশা করি এবার এইচএসসি পরীক্ষায়ও ভালো ফলাফল করবে। তারা উচ্চশিক্ষা লাভে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে বলে মনে করি। এইচএসসি পরীক্ষার্থী তিন বোন বলেন, বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। তাদের ইচ্ছা মেয়েরা উচ্চ শিক্ষালাভ করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে নিজেদের পাশাপাশি সমাজ ও দেশের কল্যাণে ভূমিকা রাখবে। তিন বোন সবার কাছে দোয়া চান। সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এম এ রউফ বলেন, ওই তিন বোন মেধাবী শিক্ষার্থী। এর আগে তারা প্রাথমিক সমাপনী, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে। এবারের পরীক্ষায়ও তারা কৃতিত্বের ধারাবাহিকতার স্বাক্ষর রাখবে বলে আশা করি।

চাঁদপুরে বসতঘরে ঢুকে বৃদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যা
চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় বসতঘরে ঢুকে মমতাজ বেগম (৬৫) নামের এক বৃদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। প্রথমে ডাকাতির ঘটনা বলা হলেও ওই বসতঘর থেকে তেমন কিছু খোয়া যায়নি। বুধবার (২৫ জুন) রাতে উপজেলার ১১ নম্বর গেট দক্ষিণ ইউনিয়নের চাপাতলী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। মমতাজ বেগম চাপাতলি গ্রামের বাচ্চু কোম্পানির স্ত্রী। পুলিশ জানায়, রাতে বসতঘরে একা ছিলেন বৃদ্ধা। তার ছেলে সোহেল প্রধানিয়া বাসায় এসে তার মাকে খুঁজে পায়নি। বাসার দরজা খোলা ও বসতঘরের কক্ষগুলো রক্তাক্ত ছিল। পরে রাতে খোঁজাখুঁজির পর রান্নাঘরের পাশে পাতার স্তূপে ঢেকে রাখা লাশ দেখতে পান এলাকাবাসী। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট করে। স্থানীয় বাসিন্দা মিলন হোসেন বলেন, ঘরে একটি রক্তাক্ত বটি এবং প্রতিটি কক্ষে ও বাইরে রক্ত পড়ে ছিল। তিনি বাসায় একা ছিলেন। বাথরুমের ভেন্টিলেটর ভেঙে দুর্বৃত্তরা ঘরে প্রবেশ করেছিল। কচুয়া থানা ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ নিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে সাজিদ খান নামে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাতে গাজীরহাট এলাকা থেকে অভিযুক্ত সাজিদ খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় বুধবার (২৫ জুন) সকালে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে ইন্দুরকানী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযুক্ত সাজিদ খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। ইন্দুরকানী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মারুফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তার সাজিদ খান উপজেলার পত্তাশী ইউনিয়নের গাবগাছিয়া গ্রামের সোহাগ খানের ছেলে এবং উপজেলার পত্তাশী ইউনিয়নের গাবগছিয়া ৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। মামলা এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুন সকালে অভিযুক্ত সাজিদ খান এলাকার ওই কিশোরীকে বাড়ির পাশে একটি রান্না ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে সাজিদ খান কিশোরীর হাতে ২০০ টাকা দিয়ে বিষয়টি কাউকে বলতে নিষেধ করেন। পরে এ ঘটনা জানাজানি হলে দুই পরিবার মীমাংসার চেষ্টা করে। মীমাংসা না হলে কিশোরীর মা বাদী হয়ে ইন্দুরকানী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত সাজিদ খানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এ বিষয়ে ইন্দুরকানী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মারুফ হোসেন বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত সাজিদ খানকে গ্রেপ্তার করে আজ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

জামায়াতের মিছিলে লাঠিপেটার ভিডিও ভাইরাল, থানা ছাড়লেন ওসি
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল থানায় গত ১৩ জুন ওসি হিসেবে যোগদান করেন ইন্সপেক্টর হাশমত আলী। এরই মধ্যে ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর জয়পুরহাট সদরে জামায়াতে ইসলামীর মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরপর বুধবার তিনি থানা ছেড়ে চলে যান। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, জেলা সদরে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মিছিলে দলটির নেতাকর্মীর ওপর লাঠিচার্জ করছে পুলিশ। সেই পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ক্ষেতলাল থানার নবাগত ওসি হাশমত আলীকেও লাঠিচার্জ করতে দেখা যায়। তিনি তৎকালীন জয়পুরহাট সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর আজ সকালে ওসি হাশমত আলী ক্ষেতলাল থানা ছেড়ে চলে যান। পরে পুরো উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে ওসি হাশমত আলী থানা ছেড়ে পালিয়েছেন। তবে পুলিশ সুপার মু. আবদুল ওয়াহাব বলেন, তাঁকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। জানা গেছে, ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর জয়পুরহাট শহরে সাঈদীর মুক্তির দাবিতে জেলা জামায়াত বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। এরই এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। লাঠিচার্জের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের এক দল মিছিলকারীদের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে। তাদের সামনের সারিতে ছিলেন তৎকালীন এসআই হাশমত আলী। অভিযোগ আছে, তাঁর লাঠির আঘাতে গুরুতর আহত হন জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতা অধ্যাপক নজরুল ইসলামসহ অনেকেই। সেদিন এসআই হাশমতের গুলিতে শিবিরের সাথী বদিউজ্জামান নিহত হন বলে অভিযোগ জামায়াতে ইসলামীর। এ ঘটনার ১৩ বছর পর এসআই হাশমত গত ১৩ জুন ক্ষেতলাল থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করেন। এর পরই সেই ভিডিও ভাইরাল হয়। ক্ষেতলাল উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি শামীম হোসেন মণ্ডল বলেন, ওইদিন তিনিই আমাদের জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক নজরুল ইসলামকে রক্তাক্ত করেন এবং বদিউজ্জামানকে গুলি করে শহীদ করেন। তারপর যতবার জয়পুরহাটে দায়িত্বে ছিলেন, দমন-নিপীড়ন আরও বাড়িয়েছেন। এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে ক্ষেতলাল থানায় গিয়ে ওসি হাশমত আলীকে পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মু. আবদুল ওয়াহাব বলেন, ওসি হাসমত আলী পালিয়ে যাননি। তাঁকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

বন্ধুদের সঙ্গে নদীতে গোসলে নেমে নবম শ্রেণির ছাত্র নিখোঁজ
নরসিংদীর রায়পুরায় বন্ধুদের সঙ্গে মেঘনা নদীতে গোসলে নেমে সিয়াম মিয়া (১৬) নামে এক স্কুলছাত্র নিখোঁজ হয়েছে। বুধবার (২৫ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার পান্থশালা ফেরিঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ সিয়াম উপজেলার উত্তর বাখাননগর এলাকার মালয়েশিয়া প্রবাসী জুনায়েদ মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। সিয়ামের বন্ধু সাকিব আল হাসান জানান, ১১ বন্ধু মিলে পান্থশালা ফেরিঘাটে মেঘনা নদীতে গোসল করতে আসে। এক পর্যায়ে কয়েকজন একত্রে নদীতে ঝাঁপ দেয়। বন্ধুদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সিয়ামও ঝাঁপ দিলে মুহূর্তেই প্রবল স্রোতে তলিয়ে যায়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ রয়েছে। খবর পেয়ে বিকেল ৪টার দিকে রায়পুরা ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে তাদের নিজস্ব ডুবুরি না থাকায় টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের সহায়তা চাওয়া হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত- ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে জানান রায়পুরা ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার নাসির উদ্দিন।

ময়মনসিংহে অধ্যক্ষ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আটক
ময়মনসিংহে ক্যাপিটাল কলেজে অভিযান চালিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মনোয়ার হোসেন খান মিনারকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। বুধবার বিকালে নগরীর রামবাবু রোড, বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিপরীতে ক্যাপিটাল কলেজে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। সেনাবাহিনীর ময়মনসিংহ সদর ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জায়েদ সাদ আল রাব্বি জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি, এই কলেজের অধ্যক্ষ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সদস্য মিনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করার কাজে লিপ্ত ছিলেন। দলীয় কর্মকাণ্ড জোরদারসহ সংগঠনকে পুনর্গঠন করার কাজেও জড়িত ছিলেন। তবে অভিযানকালে তার সঙ্গে কথা বলে নরমাল মনে হয়েছে। তদন্ত শেষে আরও কোনো পরিকল্পনা ছিল কিনা জানা যাবে। অভিযানে তার ব্যবহৃত মোবাইলসহ বিভিন্ন ডিভাইস জব্দ করা হয়েছে। আটক মিনারকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে। আটক অধ্যক্ষ মিনার জানান, আমি আওয়ামী লীগ করি। আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। তবে দল ক্ষমতায় থাকাকালীন আমি অবৈধ কোনো সুযোগ-সুবিধা নেইনি। দল ক্ষমতায় থাকাকালীন কোনো পদ আমি পাইনি। তাই ২০২০ সাল থেকে দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে দূরে ছিলাম। এখনো দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আমি জড়িত না। আমাকে কেন আটক করা হয়েছে, আমি জানি না। আওয়ামী লীগ করার জন্য যদি আমি দোষী হই, তাহলে যেকোনো শাস্তি আমি মেনে নিতে প্রস্তুত আছি।

দশম শ্রেণির চার স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় দশম শ্রেণির চার স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক মিজানুর রহমান ওরফে মিজান (৪৫)-কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ২৪ জুন রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুরের সাদেক খান রোডের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে তিনজন ভুক্তভোগী ছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত মিজানুর রহমান, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার মৃত আবু তালেব শিকদারের পুত্র। ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, মিজান ঢাকায় বসবাস করলেও ফতুল্লার পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে আর্ট ও কম্পিউটার ক্লাস নিতেন। প্রতি শুক্রবার স্কুল বন্ধ থাকায় তিনি শিক্ষার্থীদের প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে ঢাকায় নিয়ে যেতেন এবং সেখানে ধর্ষণ করতেন। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত শিক্ষক চলতি জুন মাসের ৬, ১১ ও ২৩ তারিখে স্কুলের দশম শ্রেণির চারজন ছাত্রীকে একে একে কৌশলে ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে একটি ভাড়া বাসায় তাদের একাধিকবার ধর্ষণ করে। সর্বশেষ ২৩ জুন একজন ছাত্রীকে একই কৌশলে নিয়ে গেলে, সে ২৪ জুন কৌশলে পালিয়ে এসে পরিবারকে বিস্তারিত জানায়। পরে পুলিশ মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার এবং অভিযুক্ত মিজানকে গ্রেপ্তার করে। ওসি শরিফুল ইসলাম বলেন, “গ্রেপ্তারকৃত মিজান একজন বিকৃত রুচির ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে ঢাকার একটি থানায় পর্নোগ্রাফি ও ধর্ষণের একটি মামলা আগেই রয়েছে। নতুন করে ফতুল্লা থানায়ও একটি ধর্ষণ মামলা রুজু হয়েছে। তাকে রিমান্ডে এনে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”

তরুণীকে ফাঁকা বাসায় নিয়ে আসার প্রস্তাব, গাজীপুর ছাত্রদল সভাপতির ভিডিও ভাইরাল
গাজীপুর মহানগর ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত কমিটি ঘিরে একের পর এক বিতর্ক হচ্ছে। ঝাড়ু মিছিল, শহর সেক্রেটারির ওপর নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের হামলা ও দলীয় বিভাজনের অভিযোগের এবার ভাইরাল হলো মহানগর ছাত্রদল সভাপতির একটি ভিডিও কল রেকর্ড। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওটিতে ছাত্রদল সভাপতিকে আশালীন ভাষায় এক তরুণীর সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। ভিডিওটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।এ নিয়ে নেটিজেন, স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। ভিডিওটিতে মহানগর ছাত্রদল সভাপতিকে এক তরুণীর সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। কথোপকথনের এক পর্যায়ে তিনি ওই তরুণীর উদ্দেশে বলেন, ‘অনেক আদর করব, ভালোবাসা দেব।’ এ সময় ওই তরুণী বলেন, ‘ঠিক আছে দেখা যাবে।সকালে কল দেব, এখন অনেক ঘুম পাচ্ছে।’ এরপর ছাত্রদল নেতা বলেন, ‘তাহলে একটু পিছে যাও। আমি একটু ভালো করে দেখব তোমাকে।’ তরুণী বলেন, ‘এটা ঠিক না, প্লিজ এটা ঠিক না।’ পরে ছাত্রদল নেতা বলেন, ‘এটা ঠিক আছে। হাত সরাও, দাঁড়াও পিছে গিয়ে দাঁড়াও। ওকে, ওয়ান্ডারফুল।’ অপর এক ভিডিওতে ওই তরুণীর সঙ্গে ছাত্রদলের এই নেতাকে অশালীন কথাবার্তা বলতে শোনা যায়। এ সময় তিনি বাসা ফাঁকা থাকায় ওই তরুণীকে নিয়ে আসার প্রস্তাব দেন। বিষয়টিকে তৃণমূল পর্যায়ের ছাত্রদল নেতাকর্মীরাসহ নেটিজেনরা ‘নৈতিক অবক্ষয়ের চরম উদাহরণ’ হিসেবে উল্লেখ করে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। কেউ কেউ লিখেছেন, ‘যদি মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি এমন চরিত্রের অধিকারী হন, তবে স্কুল-কলেজের ছাত্রীরা আদৌ কতটা নিরাপদ?’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রোহানুজ্জামান শুক্কুর বলেন, ‘বিষয়টি আমিও শুনলাম। আমার আইডি হ্যাক করা হয়েছে। কমিটিকেন্দ্রিক ইস্যু করে কিছু কিছু প্রার্থী এবং কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ও আওয়ামী মহলের এজেন্ডা তারা আমার বিরুদ্ধে কুরুচীপূর্ণ অডিও বা ভিডিও যেটি ভাইরাল করছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলেছি, আমার দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে। কে বা কারা একটা মেয়ের সাথে ভিডিও এডিট করে এটা করেছে। এটা সম্পূর্ণ ফেইক। এই মেয়েকে আমি চিনি না। সে আমাদের দলের কোনো নেতাকর্মীও না।’

আটঘরিয়ায় জমি নিয়ে সংঘর্ষ-ভাঙচুর, অনুপস্থিত ব্যক্তির নামে মামলা
পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার হাপানিয়া মসজিদ পাড়া গ্রামে জমির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ ও বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে। তবে সংঘর্ষের ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন না-এমন ব্যক্তিদের মামলায় আসামি করে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ জুন হাপানিয়া মসজিদপাড়া গ্রামের কামাল জোয়ার্দ্দার ও তোফাজ্জাল প্রামানিকের মধ্যে তাদের জমির সীমানা নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। তোফাজ্জালের আত্মীয় একইগ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, আমিজাল, সোহেলসহ তাদের দলবল নিয়ে কামালের বাড়িতে গিয়ে কামালসহ তার স্ত্রী, ছেলে এবং ভাতিজাকে মারপিট করে। পরবর্তীতে কামালের ভাই আবদুল হাই গিয়ে ঘটনা শোনার পর কামাল এবং তোফাজ্জলের মধ্যে জমির বিরোধ আপোষ মিমাংসা করে দেন। তবে তোফাজ্জলের আত্মীয় আব্দুর রাজ্জাক-আমিজাল গংদের আপোষ হওয়ার কথা বললে তারা না করে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেন। পরে এ নিয়ে গত ১০ জুন কামাল-রাজ্জাক গংদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আমিজাল-রাজ্জাক গং কামালদের উপর হামলা করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারধর ও বাড়ি ভাঙচুর করে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত দশজন গুরুতর আহত হয়। তাদের পাবনা জেনারেল হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় গত ১৩ জুন আহত কামাল জোয়ার্দ্দারের ভাই আব্দুল হাই বাদি হয়ে প্রতিপক্ষ আমিজাল, রাজ্জাক, সোহেলসহ ৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে পরদিন ১৪ জুন আহত রাজ্জাকের ভাই মোজ্জেম আলী খান বাদি হয়ে কামাল, হাই, ওয়াহাব, হুজ্জাতুল্লাহসহ ১১ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।এ বিষয়ে আহত কামাল জোয়ার্দ্দার বলেন, প্রতিবেশীর সাথে জমির সীমানা নিয়ে ঝামেলা ছিল, সেটা আমার ভাই আমিন নিয়ে এসে জমি মেপে মিটিয়ে দিয়েছেন। ১০ জুন আমার ভাইয়েরা সবাইকে মিলেমিশে থাকার কথা বলেন। এমন সময় আমিজাল গং এক জোট হয়ে আমাদের উপর হামলা করে। বাড়ি ভাঙচুর ও সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুর করে। আমার দুই হাত ভেঙে দিয়েছে। আমার স্ত্রী, ছেলে ও ভাতিজা ঠেকাতে আসলে তাদেরও পেটায়-কুপায়। ওরা আওয়ামী লীগ করে এত শক্তি পায় কোথা থেকে জানি না। কামাল জোয়ার্দ্দারের স্ত্রী সালমা খাতুন বলেন, ওরা আমাদের নামে উল্টা মিথ্যা মামলা দিয়েছে, আমরাই নাকি তাদের উপর হামলা করেছি। অথচ তারা আমার স্বামী, সন্তানসহ আমাকে অমানসিকভাবে পেটাইছে, কুপাইছে, বাড়ি ভাঙচুর করছে। আব্দুল ওয়াহাব, হুজ্জাতুল্লাহ তারা মারামারির সময় উপস্থিত ছিলেন না। তারপরও তাদের নামে মিথ্যা মামলা করছে। অপরপক্ষের আহত আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার চাচাতো ভাই আমিজাল মোটরসাইকেল নিয়ে যাবার সময় ওদের বাড়ির সামনে আটকিয়ে পিটিয়ে কুপিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের অনুরোধ করি না মারার জন্য। তখন আমার মাথার পেছনে ও পিঠে কোপ মারে। তারপর আমার কিছু মনে নেই। প্রথমদিনের মারপিটের ঘটনা আমি দুই পক্ষকে ঠেকিয়ে শান্ত করেছিলাম। মুলত আমার ভাগ্নে মামুনদের জমি নিয়ে কামালদের সাথে দ্বন্দ্ব ছিল। রাজ্জাকের স্ত্রী মর্জিনা খাতুন বলেন, আমার স্বামীকে যেভাবে মাথায় পিঠে কুপাইছে, যদি আমার স্বামী মারা যেতো তাহলে কি হতো। তাই আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। বিচার যেন এলোমেলো হয় না। রাজ্জাকের ছেলে সোহাগ হোসেন বলেন, আমাদের কারো দলীয় কোনো পদ নেই, দলীয় কোনো কাজও করি নাই। আমরা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত কোনো কিছু করি না। অথচ আমাদের এখন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী হিসেবে ওরা আখ্যায়িত করছে। এদিকে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, কামাল জোয়ার্দ্দার, আব্দুল হাই ও তাদের পরিবার কখনও কোনো মারামারির ঘটনার সাথে জড়িত ছিল না। হাপানিয়া গ্রামের বাসিন্দা প্রবীণ কৃষক গোলাম মোস্তফা বলেন, হাই, হুজ্জাতুল্লাহ, কামাল ওরা খুব ভাল পরিবারের সন্তান। ভাল মনের মানুষ। গ্রামের কারো সাথে কখনও দ্বন্দ্ব করতে দেখিনি। খাদিজা খাতুন নামে এক নারী বলেন, আমিজাল, সোহেল এরা একদল বাধিছে। ওরা খুব খারাপ মানুষ। কিছু হলিই অস্ত্র লিয়ে মারামারি করে। পুরা হাপানিয়া গ্রামে অত্যাচার করে জ্বালায়া শেষ করে দিছে। এর আগে স্থানীয় এক মেম্বার ও তার বউকে মারছিল ওরা। চাঁদভা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য আব্দুল হান্নান বলেন, ঘটনার দিন কামালের ভাই আব্দুল ওয়াহাব ও হুজ্জাতুল্লাহ মারামারির সময় উপস্থিত ছিলেন না। তাদের কোনোদিন তাদের মারামারি করতে দেখিনি। তাদের নামে কোনো মামলা মোকদ্দমাও নাই। তোফাজ্জলের সাথে জমি নিয়ে ঝামেলা ছিল সেটা তো কামালের মিল হয়ে গেছিল। তাহলে মারামারি হলো কেন। কারণ তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আমিজাল-রাজ্জাক প্রভাব বিস্তার করতে পারে নাই। ওরা সব আওয়ামী লীগ করে, উচ্ছৃঙ্খল মানুষ। তাদের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বেও বিভিন্ন অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুজ্জামান বলেন, জমি নিয়ে বিরোধে উভয়পক্ষ মামলা করেছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি। তবে উভয় মামলার আসামিরা আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়েছেন বলে শুনেছি।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের দেখা করা উচিত ছিল: এ্যানি
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ছিল দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার। দশ মাসেও সেটি করেনি। তবে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে কথাবার্তা হয়েছে। কিন্তু আমাদের (বিএনপি) প্রত্যাশা ছিল, রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে উনার সঙ্গে দেখা করার। আগামীর দেশ পরিচালনা, হাসিনার বিচার, সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কথা বলার। যা-ই হোক হয়নি, তবে বিএনপি আশাবাদী আগামী দিনে অন্তর্বর্তী সরকার তা করবে।’বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন। শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস খুবই ভালো মানুষ। কয়েক দিন পূর্বে তিনি লন্ডনে সফর করেছেন। সেখানে তারেক রহমানের সঙ্গে উনার বৈঠকে নির্বাচন ও সংস্কারসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হয়েছিল। এতে শুধু বিএনপি নয়, সারা দেশের মানুষ আনন্দিত। তারেক রহমানের সঙ্গে বিদেশে বসে কথা বলা কোনো অপরাধ নয়। বরং আরো আগে কথা বলা দরকার ছিল। কারণ বিএনপি একটি বড় দল, জিয়াউর রহমানের দল, আপসহীন নেত্রীর দল। তাহলে এত বড় দলের নেতার সঙ্গে কথা বলবে, এটা তো স্বাভাবিক। বুঝতে হবে, তারেক রহমান বিদেশে বেড়াতে যাননি। বাধ্য হয়ে দেশত্যাগ করেছেন। তার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, এটি আমাদের চাওয়া-পাওয়া ছিল।’তিনি আরো বলেন, ‘লন্ডনের বৈঠকটি দু-চারজন মেনে নিতে পারছে না। তারা বলার চেষ্টা করছে, বিদেশে কেন তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। আমরা বলব, এ কথা বলা তাদের ঠিক হয়নি, দরকার ছিল না। কারণ আমরা সবাই মিলে ফ্যাসিবাদের পতনে আন্দোলন করেছিলাম। জেল খেটেছি, ত্যাগ স্বীকার করেছি। এসবের মূল উদ্দেশ্য ছিল, দেশ ও দেশের মানুষকে ভালো রাখা। সে লক্ষ্যই ছিল লন্ডনের বৈঠক।’ এ্যানি বলেন, ‘স্বাধীনতা পরে আওয়ামী লীগের ভূমিকা ভালো ছিল না। রক্ষীবাহিনী দিয়ে মানুষকে অত্যাচার করেছে। দুর্নীতি করেছে। তখন দেশে দুঃশাসন ও দুর্ভিক্ষ ছিল। সেখান থেকে আওয়ামী লীগ বের হয়ে আসেনি। পূর্বের ন্যায় বিগত ১৭ বছরেও দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট, বিরোধী মতের লোকদের দমন-পীড়ন করেছে। ওরা কখনো সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করেনি। করার চিন্তাও করেনি। তারা সব সময় প্রভাব বিস্তার, লুটপাট ও মানুষকে জিম্মি করে ক্ষমতায় ছিল। এরা অত্যাচারিত দল। খুনির দল। এ জন্যই জুলাই আন্দোলনে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। এখন শুধু হাসিনাদের বিচারের অপেক্ষায় মানুষ।’ চরশাহী ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিনিধি নির্বচন পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহসভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপী, জেলা বিএনপির সদস্য হাফিজুর রহমান, চন্দ্রগঞ্জ থানা বিএনপির আহ্বায়ক বেল্লাল হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম সরওয়ার, সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, লক্ষ্মীপুর পৌর বিএনপির আহবায়ক ফয়েজ আহম্মদ, জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল খালেদ ও সদর (পূর্ব) উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বাবু প্রমুখ।

রামেক হাসপাতালে দুদকের অভিযান, প্রমাণ মিলেছে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে থেকে ওয়ার্ডে রোগী নিতে ও অ্যাম্বুলেন্স সেবায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে রামেক হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে দুদক বাড়তি টাকা নেওয়া ও রোগীদের ভোগান্তিতে ফেলার প্রমাণ পেয়েছে। দুদকের রাজশাহী অফিসের সহকারী পরিচালক আমীর হোসেন জানান, হাসপাতালে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে যেসব আউটসোর্সিং কর্মী কাজ করেন তারা অনেকেই জরুরি বিভাগ থেকে ট্রলিতে করে রোগী বিভিন্ন ওয়ার্ডে নিয়ে যান। সে সময় তারা রোগীর স্বজনদের নিকট থেকে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা আদায় করেন। এটা অন্যায়। তিনি বলেন, বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালকরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে রোগী ও মৃতদের স্বজনদের থেকে এক হাজার বাড়তি টাকা ইনকাম করেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে কমিশনে লিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হবে। এ বিষয়ে রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. হাসানুল হাসিব বলেন, দুদকের কর্মকর্তারা হাসপাতালে এসেছিলেন। তারা আমাদের থেকে যে ধরনের তথ্য চেয়েছেন আমরা দিয়েছি।

রাঙ্গামাটিতে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন
প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনি সময় এই প্রতিপাদ্যে রাঙ্গামাটিতে বিশ্ব পরিবেশদিবস উদযাপন করা হয়েছে। বুধবার সকালে দিবসটি উপলক্ষে র্যালী আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে। রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলা প্রশাসনের সম্মেলনে কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক মো হাবিব উল্লাহ এর সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপপরিচালক, স্থানীয় সরকার এবং পৌর প্রশাসক মোহাম্মদ মোবারক হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজহারুল ইসলাম মুকুল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক রুহুল আমিন, ডেপুটি সিভিল সার্জন অমিত দে, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ, জেলা পরিবেশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামসহ বিভিন্ন সরকারী বেসরকারি বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ কারীদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করা হয়। এর আগে জেলা প্রশাসনের প্রাঙ্গন থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের হয়। র্যালীটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।

প্রথম ইউনিটের রিয়্যাক্টর কন্টেইনমেন্টের পরীক্ষা সম্পন্ন
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় চলছে দেশের সর্ববৃহৎ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ। প্রকল্পের প্রথম ইউনিট চালুর অপেক্ষায় দেশ। তারই ধারাবাহিকতায় প্রথম ইউনিটের রিয়্যাক্টর কম্পার্টমেন্টের কন্টেইনমেন্ট (সুরক্ষা ব্যুহ) এর অভেদ্যতা ও দৃঢ়তার পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে প্রকল্প সংস্থা। পরীক্ষায় নকশা অনুযায়ী কন্টেইনমেন্টের সর্বোচ্চ নিরাপত্তামান নিশ্চিত করা হয়েছে। বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে রাশিয়ার পরমাণু সংস্থা রোসাটম একটি বেসরকারি বার্তা সংস্থার মাধ্যমে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরীক্ষাকালে নকশা অনুযায়ী কন্টেইনমেন্টের অভ্যন্তরীণ চাপ বৃদ্ধি করা হয় এবং এর জন্য ব্যবহৃত হয় একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কম্প্রেসার। এ সময় এই অবকাঠামোটির দৃঢ়তা ও অভেদ্যতার পরীক্ষা করা হয়। এর লক্ষ্য হলো কোনও অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কন্টেইনমেন্টের ভেতরে চাপ বৃদ্ধি পেলে তা কতটুকু সহ্য করতে সক্ষম। পরমাণু জ্বালানী লোডিং এর পূর্বে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। কারণ কোনও কাল্পনিক বিপর্যয় ঘটলে কন্টেইনমেন্টই হচ্ছে শেষ সুরক্ষা ব্যুহ। কন্টেইনমেন্ট মূলত একটি অতি সুদৃঢ় কাঠামো, যা নির্মানে ব্যবহৃত হয় প্রিস্ট্রেসড রিইনফোর্সড কংক্রীট এবং এর ভেতরের দেয়ালে থাকে একটি শক্ত ইস্পাতের আবরণ। এটির নকশা এমনভাবে করা হয় যাতে কোনও জরুরী পরিস্থিতিতে তেজস্ক্রিয় পদার্থ রিয়্যাক্টর কমপার্টমেন্টের বাইরে বের হতে না পারে। সমস্ত তেজস্ক্রিয় পদার্থ এই কন্টেইনমেন্টের ভেতরেই আবদ্ধ ও সুরক্ষিত অবস্থায় থাকতে পারে। বাহ্যিক বড় কোনও আঘাত ও বিপর্যয় রোধ করতে সক্ষম এই কন্টেইনমেন্ট বা সুরক্ষা ব্যুহ। রূপপুর প্রকল্পের প্রথম ইউনিটে শীঘ্রই কিছু ‘হট মিডিয়া টেস্ট’ চালানো হবে। উদাহরণ স্বরূপ কুল্যান্ট সার্কিটকে নকশা অনুযায়ী নির্ধারিত তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা এবং বাষ্প উৎপাদন। অন্যান্য নিরাপত্তা প্যারামিটারগুলো চূড়ান্তভাবে পরীক্ষা করা হবে, যেমন সক্রিয় অবস্থায় বাষ্প নির্গমনকারী ডিভাইসের নিরাপত্তা। বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, এই পরীক্ষার সময় বেশ কিছু অনাকাংখিত শব্দ তৈরি হবে যা সম্পূর্ণ পূর্ব নির্ধারিত। এ নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণের আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ নিরাপদ। রসাটম নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে, তাই সংস্থাটির মূল লক্ষ্য হলো সকল নিরাপত্তা চাহিদা পূরণ। রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরী সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দু’টি ৩+ প্রজন্মের ভিভিইআর-১২০০ চুল্লী স্থাপিত হয়েছে। প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা ১,২০০ মেগাওয়াট। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংস্থা রসাটমের প্রকৌশল বিভাগ জেনারেল কন্ট্রাকটর হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

ইতালি প্রবাসীকে পিটিয়ে হত্যা, শ্বশুরবাড়িতে আগুন দিল গ্রামবাসী
মাদারীপুরের রাজৈরে ইতালি প্রবাসী হালিম খানকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তার শ্বশুরবাড়িতে আগুন দিয়েছে স্বজন ও গ্রামবাসী। বুধবার (২৫ জুন) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের দারাদিয়া গ্রামের সোমেদ চৌকিদারের বসতবাড়িতে এ অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় একটি রান্নাঘর, ধান রাখার গোলাঘর ও চার রুম বিশিষ্ট একটি ভবনের ভেতরে থাকা সকল জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। খবর পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে সোমেদ চৌকিদারের বাড়িতে তার মেয়ে রেশমা বেগমের স্বামী ইতালি প্রবাসী হালিম খানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে চিকিৎসার কথা বলে হালিমের মরদেহ রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। সেখানেই মরদেহটি ফেলে রেখে পালিয়ে যায় স্ত্রী রেশমা ও তার পরিবারের লোকজন। ঘটনাটি জানাজানির পর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে গ্রামবাসী। বুধবার সকালে নিহত হালিমের স্বজন ও গ্রামবাসী মিলে সোমেদ চৌকিদারের বসতবাড়িতে ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। পরবর্তীতে খবর পেয়ে রাজৈর থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে হত্যার পরই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন সোমেদ চৌকিদার ও তার পরিবারের সদস্যরা। এ ব্যাপারে রাজৈর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থালে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। গত কালের হত্যার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। এদিকে আর কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা যেন না ঘটে, সে বিষয়ে পুলিশ তৎপর রয়েছে। প্রসঙ্গত, চার বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক করে রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের উত্তর দারাদিয়া গ্রামের সোমেদ চৌকিদারের মেয়ে রেশমা বেগম ও পার্শ্ববর্তী ইশিবপুর ইউনিয়নের নগর গোয়ালদি গ্রামের ইতালি প্রবাসী হালিমের দ্বিতীয় বিয়ে হয়। পরে পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় স্ত্রীর বাবা সোমেদ চৌকিদারকে ৬০ লাখ টাকা দেন হালিম। ইতালি থেকে আসার আগে নিজের জন্য মোটরসাইকেল কিনতে টাকা পাঠান। কিন্তু সেই মোটরসাইকেল তার শ্যালক সবুজ চৌকিদারের নামে কেনা হয়। তিন মাস আগে ইতালি থেকে দেশে আসলে পাওনা টাকা ও মোটরসাইকেল নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। একপর্যায়ে সব কিছু ফেরত চাইলে তার দ্বিতীয় স্ত্রী, শ্যালকসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন সোমবার (২৩ জুন) রাতে হালিমকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে ও গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। এরপর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকালে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে মরদেহটি ফেলে পালিয়ে যান স্ত্রী রেশমাসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।