মধ্যরাতে চরমোনাই পীরের দরবারে এনসিপির নেতারা

দেশব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা বরিশাল বিভাগে পদযাত্রা করছেন। এর অংশ হিসেবে চরমোনাই পীরের দরবার পরিদর্শন করেছেন তারা। সোমবার (১৪ জুলাই) দিবাগত রাতে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল সেখানে গেলে তাদের স্বাগত জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা সৈয়দ এসহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের এবং দলের সহ-প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক কেএম শরীয়াতুল্লাহসহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দরা। পরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। এরপর নাহিদ ইসলাম ও সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম সাংবাদিকের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। এ সময় ফয়জুল করিম বলেন, গত বছরের জুলাইয়ে হাসিনা বিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখনই আমরা ওই আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলাম। এখনো আমরা জুলাই আন্দোলনের চেতনা ধারণ করি। নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই পদযাত্রায় আমরা যে এলাকাতেই যাচ্ছি সেখানকার ঐতিহাসিক স্থান কিংবা ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করছি। সেই ধারাবাহিকতায় আজ আমরা চরমোনাইতে এসেছি।

বাংলাদেশে ভারত কিংবা পাকিস্তানপন্থি কোনো রাজনীতি হবে না: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশে ভারত কিংবা পাকিস্তানপন্থি কোনো রাজনীতি হবে না। আমরা বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি করব। তিনি আরও বলেন, একটা দল ইতিহাসের এককালে পাকিস্তানপন্থিদের পুনর্বাসিত করেছিল বাংলাদেশে। গণঅভ্যুত্থানের পর তারা আবার মুজিববাদকে পুনর্বাসিত করছে। বাংলাদেশে কোনো মুজিববাদের ও চাঁদাবাজদের রাজনীতি হবে না। সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে সাড়ে ৫টার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাব-সংলগ্ন সদর রোড এলাকায় ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র আয়োজিত এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা সেই তরুণ, যারা জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়ে শেখ হাসিনাকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করেছিলাম। বিগত ১৬ বছর দেশে একটা ফ্যাসিস্ট সরকার ছিল। সেই সরকার দুর্নীতি মাফিয়াতন্ত্র, গুম, মানবাধিকার হরণসহ এমন কোনো অপকর্ম নাই যা তারা করেন নাই। সেই অপকর্ম থেকে বাংলাদেশকে মুক্তি দিতে স্বৈরাচারকে মুক্তি দিতে দেশের ছাত্র-তরুণরা রাজপথে নেমে এসেছিল। তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পরে চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজরা আবারও চেপে বসেছে বাংলাদেশের ঘাড়ে। আমরা বলেছিলাম চাঁদাবাজ এবং মাফিয়াবাজ যে সিস্টেমে টিকিয়ে রাখে সেই সিস্টেমের আমরা পতন চাই। কিন্তু দেখছি, সেই সিস্টেমকে আবারও টিকিয়ে রাখছে এবং চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে একটি দল। তিনি আরও বলেন, গণহত্যার বিচার এবং নতুন বাংলাদেশের জন্য আমরা সংস্কার চাই। সংস্কার ছাড়া আমরা নতুন বাংলাদেশ কখনোই পাবো না। আমরা নিরপেক্ষতা চাই, নির্বাচন কমিশনে নিরপেক্ষ নিয়োগ চাই। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত থাকবে। আমরা কোনো স্বৈরতন্ত্র বাংলাদেশে আর ফেরত আসতে দেবো না। নতুন করে কাউকে আর স্বৈরাচার হতে দেবো না। ঢাকায় নির্মমভাবে সোহাগ হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত কয়েকদিন আগে বরগুনার ছেলে সোহাগকে ঢাকায় পাথর মের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের পর হাজারো মানুষের রক্তের পরেও এই সরকারের আইনশৃঙ্খলার ব্যর্থতা এবং একটি রাজনৈতিক দলের চাঁদাবাজদের সমর্থন দেওয়ার ফলে আপনাদের সন্তানকে পাথর মেরে হত্যা করা হয়েছে, আপনারা এর প্রতিবাদ করুন। আপনারা সেই দৃশ্য বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে দেখান। বরগুনাবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, এখানকার মানুষদেরকে অনেক লড়াই সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হয়। দুর্যোগ, নদী ভাঙন সবকিছুকে উপেক্ষা করে বরগুনার মানুষ প্রতিনিয়ত লড়াই করে যায়। উন্নয়নের মুলা ঝুলালেও বরগুনায় উন্নয়ন আসে না। আমরা জানি, এখানে জলবায়ু দুর্যোগ রয়েছে। বরগুনায় লবণাক্ত পানি কৃষি জমির ক্ষতি করছে। সুপেও পানির অভাব তৈরি করছে। তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগর হচ্ছে আমাদের ভবিষ্যৎ এবং সম্ভাবনার জায়গা। বরগুনাকে আমাদের শক্তিশালী ঘাটি হিসেবে তৈরি করতে হবে। জাতীয় নাগরিক পার্টি বরগুনার প্রতি কমিটমেন্ট রাখছে, বরগুনার প্রতিটি নদী আমাদের রক্তধারা বরগুনার জেলে মজুররা আমাদের পরম আত্মীয়। আমরা বরগুনায় পরিবেশ বান্ধব উন্নয়ন নিয়ে কাজ করতে চাই। আমরা চাই বরগুনার নদীর সমুদ্র রক্ষা হবে উপকূল সুরক্ষা হবে এবং মানুষের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার সমস্যা দূর হবে। বরগুনার পদযাত্রার পথসভায় এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনীম জারাসহ জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয়, জেলা, উপজেলাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সংসদে ১০০ নারী আসনের পক্ষে বিএনপি, তবে সংরক্ষিত : সালাহউদ্দিন

বিএনপি জাতীয় সংসদে নারীদের ১০০ আসনের পক্ষে বলে জানিয়েছে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সংসদে ১০০ নারী আসনের পক্ষে বিএনপি। তবে এসব আসনে সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে নয়। বিদ্যমান পদ্ধতিতে সংরক্ষিত ১০০ আসনে নারী সংসদ সদস্যরা নির্বাচিত হতে পারেন। আজ সোমবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের সামনে এসব কথা বলেন সালাহউদ্দিন। বাংলাদেশের নারী ক্ষমতায়নে বিএনপি সব সময়ই ভূমিকা রেখেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সালাহউদ্দিন আরো বলেন, সমাজে যারা বিভিন্ন বিষয়ে অবদান রেখেছেন তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে তাদের সংসদের উচ্চকক্ষ বসানোর প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তবে তাদের নির্বাচন পদ্ধতি কী হবে সেটা নিয়ে ঐকমত্য হয়নি। এদিকে কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, জাতীয় সংসদের কাঠামোগত সংস্কার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে নারী আসন বৃদ্ধি ও উচ্চ কক্ষ গঠনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। নারী আসনে কোন পদ্ধতিতে প্রতিনিধিদের নির্বাচন করা হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

চাঁদাবাজ-দুর্নীতি আবারও রাষ্ট্রে চেপে বসেছে: নাহিদ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর চাঁদাবাজ আর দুর্নীতি আবারও বাংলাদেশ রাষ্ট্রে চেপে বসেছে। আমরা বলেছিলাম, এ চাঁদাবাজ আর মাফিয়াদের যে সিস্টেম বাঁচিয়ে রাখে সেই সিস্টেমের আমরা পতন চাই। কিন্তু দেখেছি সেই সিস্টেমকে টিকিয়ে রেখেছে একটি দল। চাঁদাবাজ আর দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে তারা। সোমবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় বরগুনা শহরের পৌর মার্কেটের সামনের সদর রোডে এনসিপির পথযাত্রায় এসব কথা বলেন তিনি। পুরান ঢাকায় এক ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, আপনারা কয়েকদিন আগে ঢাকায় দেখেছেন এ বরগুনা এলাকার সন্তান সোহাগকে কী বিভৎসভাবে পাথর দিয়ে জনসম্মুখে হত্যা করা হয়েছে। বরগুনাবাসী কী এই পাথর মেরে হত্যার রাজনীতি দেখতে চায়? বরগুনাবাসী কী এ চাঁদাবাজির রাজনীতি দেখতে চায়? আপনাদের সন্তানকে ঢাকা শহরে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে আপনারা প্রতিবাদ তৈরি করুন। বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী উপকূলীয় জেলা বরগুনা নিয়ে পরিকল্পনার বিষয়ে এনসিপি এ শীর্ষ নেতা বলেন, আমরা চাই এ বরগুনার নদী সমুদ্রের রক্ষা হবে। উপকূল সুরক্ষা পাবে, মানুষের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা নিশ্চিত হবে। নাহিদ বলেন, গণহত্যার বিচার আর নতুন বাংলাদেশের জন্য আমরা সংস্কার চাই। আমরা চাই নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে দুদক পর্যন্ত নিরপেক্ষভাবে নিয়োগ হবে। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত থাকবে। আমরা কোনো স্বৈরতন্ত্র বাংলাদেশে ফেরত আসতে দেব না। আমরা বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি করব। ভারতপন্থি কিংবা পাকিস্তানপন্থি রাজনীতির কোনো জায়গা হবে না। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি একটা দল ইতিহাসে এককালে পাকিস্তানপন্থিদের পুনর্বাসন করেছিল। গণঅভ্যুত্থানের পরে তারা আবার মুজিববাদীদের পুনর্বাসিত করছে। আমি স্পষ্টভাষায় বলছি, বাংলাদেশে মুজিববাদীদের রাজনীতি হবে না, চাঁদাবাজদের রাজনীতি হবে না। পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তর অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা, শামান্তা শারমীন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি।

বিএনপির বিরুদ্ধে যারা কথা বলছেন, বুঝে-শুনে বলবেন: দুদু

বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, বিএনপির বিরুদ্ধে যারা কথা বলছেন, স্লোগান দিচ্ছেন, তাদের বলব বুঝে-শুনে কথা বলবেন। এ দেশের গণতন্ত্রের জন্য বিএনপি যে রক্ত দিয়েছে তা অপূরণীয়। সোমবার (১৪ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাজকল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে বিএনপির বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। দুদু অভিযোগ করেন, চাঁদপুরে মসজিদে ইমামের ওপর হামলা, খুলনায় সাবেক যুবদল নেতা হত্যা সবই নির্বাচন বানচাল ও দেশে গণতন্ত্র যাতে প্রতিষ্ঠিত না হয় তার জন্যই ঘটানো হচ্ছে। শামসুজ্জামান দুদু বলেন, মিটফোর্ডে যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটানো হয়েছে, তার তীব্র নিন্দা জানাই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই অবিলম্বে যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেপ্তার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। তিনি বলেন, যে ছেলেটি নিহত হয়েছে সে যুবদলের কর্মী। তাকে উদ্দেশ্য করে চাঁদাবাজির প্রসঙ্গ তুলে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে। এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে যাতে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের উত্তরণ না হয়। নির্বাচন যেন না হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি দলের নেতা বলেছে বাংলাদেশের নির্বাচনের পরিবেশ নাই। যারা নির্বাচন পেছাতে চায় তাদের উদ্দেশ্য গণতন্ত্রের পক্ষে না। ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, অনেকেই বলে সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে তারা বাধা দেবে। বাংলাদেশের স্বৈরতন্ত্র পতনের পর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সেটি যদি না হয় তাহলে যারা বাধা দেবে তাদের নাম ইতিহাসে লেখা থাকতে হবে স্বৈরাচারের দোসর বলে।

চিলড্রেন্স পার্টি’র কথা শুনে বিভ্রান্ত হওয়ার কারণ নেই: মির্জা আব্বাস

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক দল ও ব্যক্তি বিএনপি এবং তারেক রহমানকে নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য করছেন, কিন্তু এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড এবং দেশজুড়ে সংঘটিত সহিংস ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদে এই কর্মসূচির আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। মির্জা আব্বাস বলেন, “বাংলাদেশ চিলড্রেন্স পার্টির মতো কিছু দল এখন তারেক রহমান ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছে। তাদের কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে আমাদের দৃঢ় অবস্থান বজায় রাখতে হবে।” তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এক নেতার সমালোচনা করে বলেন, “কেউ কেউ বলছেন বিএনপির পরিণতি হবে আওয়ামী লীগের মতো। অথচ ২০১৩ সালে হেফাজতের ওপর হামলার সময় তারা কোথায় ছিলেন? তখন মুসলমানদের পক্ষে দাঁড়ায়নি তারা, কিন্তু বিএনপি পাশে দাঁড়িয়েছিল।” জামায়াতে ইসলামীর প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “কিছু দলের কাজ শুধু চাঁদা আর হাদিয়া সংগ্রহ। কখনো এরশাদের কাঁধে, কখনো আওয়ামী লীগের কাঁধে ভর করে রাজনীতি করে এসেছে তারা। এখন বিএনপিকেই প্রধান শত্রু মনে করছে, কারণ তারেক রহমানের জনপ্রিয়তা তাদের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে।” তিনি বলেন, “আমরা গণমানুষের দল, জনগণ আমাদের ভালোবাসে। বিএনপিকে সহজে মুছে ফেলা যাবে না। তারেক রহমানের নেতৃত্বেই দেশ এগিয়ে যাবে, কোনো ষড়যন্ত্রেই তা রোধ করা যাবে না।” সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভাপতিত্ব করেন মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি রফিকুল আলম মজনু এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিন। এছাড়াও বক্তব্য দেন মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, আব্দুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু, মোস্তফা জামান, যুবদল সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নসহ অন্যান্য নেতারা।

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারীরা গণতন্ত্রের শত্রু: মির্জা ফখরুল

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় কথা বলাদের ‘গণতন্ত্রের শত্রু’ হিসেবে অভিহিত করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির যৌথ আয়োজনে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে তারেক রহমানকে নিয়ে অপপ্রচারের প্রতিবাদ এবং মিটফোর্ডসহ দেশজুড়ে সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডগুলোর সুষ্ঠু বিচার দাবি জানানো হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, মিটফোর্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠী এবং একটি চক্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দেশের রাজনীতিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চাইছে। এ ধরনের ষড়যন্ত্র নতুন নয়, অতীতেও বারবার জনগণের জাগরণকে দমাতে একই কৌশল নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, "যখনই মানুষ অধিকার নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চেয়েছে, তখনই একটি চক্র দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে সক্রিয় হয়েছে। বর্তমানেও সেই একই ষড়যন্ত্র চলছে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার, জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।" তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অপমানজনক মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, “কিছু দল অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ স্লোগানের মাধ্যমে ভাবছে, বিএনপিকে ঘরে আটকে রাখা যাবে। কিন্তু তারা ভুল করেছে বিএনপি বারবার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি ফিনিক্স পাখির মতো, যতবার ভাঙা হয়েছে, ততবার জেগে উঠেছে।” তিনি দাবি করেন, তারেক রহমান বর্তমানে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত, কর্মসংস্থান ও খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে পরিকল্পনা করছেন। আর ঠিক সেই সময়েই ষড়যন্ত্রকারীরা তাকে আঘাত করতে মরিয়া। মির্জা ফখরুল আরও বলেন, "এই ষড়যন্ত্রের মূল লক্ষ্য হলো দেশে আবার অস্থিরতা সৃষ্টি করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা। আমরা অতীতে ভয়াবহ ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করেছি, ভবিষ্যতেও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কোনো ফ্যাসিস্ট শক্তিকে দেশে ফিরে আসতে দেব না।" বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনার ইঙ্গিত মিলেছে, যেখানে বিএনপি এখন সক্রিয়ভাবে নিজেদের অবস্থান শক্ত করার পাশাপাশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

শেয়ারবাজারে দুষ্টচক্র তৈরি হয়েছে: আমীর খসরু

শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন ধরেই একটি দুষ্টচক্র তৈরি হয়েছে। এখান থেকে বের হয়ে আমাদের ‘ভালোর চক্র’বা ভার্চ্যুয়াস সাইকেল তৈরি করতে হবে। শেয়ারবাজারে অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। এ জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো স্বাধীন ভূমিকা পালন করতে পারে না। আবার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সক্ষমতারও ঘাটতি রয়েছে। এটি শুধু শেয়ারবাজারে নয়; পুরো আর্থিক খাতেই এমন চিত্র রয়েছে। শুধু তাই নয় আমাদের অর্থনীতিতে গনতন্ত্রনায়ন করতে হবে। অর্থনৈতিক গণতন্ত্রনায়ন ছাড়া আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি সম্ভব নয়। আমরা এখন সে পথেই হাটছি। বিএনপির শাসন আমলে শেয়ারবাজার কিংবা আর্থিক খাতে কোন রকম স্কেমের ঘটনা ঘটেনি। অথচ বিগত সরকার দেশের আর্থিক খাতকে ধংসের দ্বাপ্রান্তে নিয়ে গেছে। আজ সোমবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রোকারেজ হাউস মালিকদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) আয়োজিত পুঁজিবাজারবিষয়ক এক কর্মশালায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ কথা বলেন। রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান এ কে এম হাবিবুর রহমান, ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম, ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান, পুঁজিবাজার প্রতিবেদকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি গোলাম সামদানী ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মানিক মুনতাসির । আমীর খসরু আরও বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মতো নিয়ন্ত্রক সংস্থায় রাজনৈতিক নিয়োগ দেওয়া হবে না। অতীতেও বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় এসব প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ কারণে তখন ব্যাংক ধসে যায়নি এবং পুঁজিবাজারে লুটপাট হয়নি। ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে ব্যবসা-বাণিজ্যসংক্রান্ত সরকারি অনেক ভূমিকা বাণিজ্য সংগঠনের কাছে দেওয়া হবে বলে জানান আমীর খসরু। তিনি বলেন, আগে তৈরি পোশাক খাতের কাঁচামাল আমদানির প্রাপ্যতার অনুমোদন (ইউডি) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে নেওয়া লাগত। এতে আমদানিকারকদের দীর্ঘ সময় লাগত, নানা জটিলতায় পড়তে হতো। কিন্তু আমি যখন বাণিজ্যমন্ত্রী হয়েছিলাম, তখন এই অনুমোদনের বিষয়টি তৈরি পোশাকমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর কাছে দিয়ে দিই। এতে প্রক্রিয়াটি অনেক সহজ হয়ে যায়। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে মানুষের অংশগ্রহণ বাড়াতে রাজনীতির পাশাপাশি অর্থনীতিকেও গণতান্ত্রিক করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আপনি শুধু রাজনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ করবেন, আর অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ করবেন না, তাহলে সেটি ঠিকভাবে কাজ করবে না। ফলে এটা আমাদের (বিএনপির) অন্যতম একটি লক্ষ্য যে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে অবশ্যই গণতন্ত্রায়ণ করতে হবে।’ আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অর্থনীতির গণতন্ত্রায়ণ না হলে তাতে মানুষের অংশগ্রহণ ও আস্থা বাড়বে না। এর ফলে অর্থনীতিতে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায় না। বরং সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা গেলে যে যার জায়গা থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে। তিনি বলেন, দেশের শেয়ারবাজার খুবই অগুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ফলে শেয়ারবাজার ঠিক করতে হলে একধরনের সার্বিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এসইসি, ডিএসই, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ শেয়ারবাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে একত্রে সংস্কার কাজ করতে হবে; তাদের ভেতর সমন্বয় থাকতে হবে। খারাপ যেসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সার্বিকভাবে এসব উদ্যোগ নেওয়ার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। আমীর খসরু আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে বিএনপি সরকারে গেলে শেয়ারবাজারকে আমরা ধারণ করব। কারণ, যারা দেশ পরিচালনা করবে, তারা ধারণ করা ছাড়া পুঁজিবাজারের সত্যিকারের উন্নয়ন সম্ভব নয়।’ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, রেগুলেশনকে আরও বাজারমুখি করতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বাজার কখনোই রিলেভ্যান্ট ভূমিকা পালন করতে পারেন নাই। দেশের অর্থনৈতিক কোন সিদ্ধান্তে পুঁজিবাজার থাকেনা। তবে এই অবস্থা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। সিএসইর চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের বাজারে নতুন কোন ভালো শেয়ার নেই। গত ৯ মাসে মাত্র ১ টা কোম্পানি বাজারে এসেছে। এছাড়াও বিগত সরকারের কয়েক বছরে যে পরিমাণ কোম্পানি বাজারে এসেছে তা যথেষ্ট নয়। এরপরেও বাজারের উন্নয়ন হয়েছিলো। যেটুকু হয়েছিলো তা নানা ভাবে মেনিপুলেশনের মাধ্যমে নষ্ট করা হয়েছে।

একটি গুপ্ত সংগঠন দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে : নাছির

একটি গুপ্ত সংগঠন দেশে সাধারণ বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। গুপ্ত সংগঠনের নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ তার। আজ সোমবার রাজধানীতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এমন অভিযোগ করেন নাছির। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, জনমনে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্টের প্রতিবাদে ছাত্রদল এ বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করে। নাছির বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে একটি গুপ্ত সংগঠন দেশে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। কুমিল্লার মুরাদনগরে, চাঁদপুরে কিংবা খুলনায় যুবদল নেতাকে রগ কেটে হত্যার ঘটনা ঘটলেও গুপ্ত সংগঠনটি নীরব ছিল। মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে কথিত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে, একটি গুপ্ত সংগঠন সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে ছাত্রদলের বিপক্ষে মব সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। নাছির বলেন, ‘আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে চাই। কিন্তু এর মাধ্যমে আমরা কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করতে চাই না।’এদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের লাখো নেতাকর্মীকে শান্ত রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। বিএনপির শীর্ষ নেতাকে নিয়ে অশ্লীল স্লোগান দেওয়ার পরও নেতাকর্মীকে শান্ত রাখা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। মব কালচারের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো সম্পর্ক নেই দাবি করে রাকিব বলেছেন, ‘আমরা সতর্ক করে দিচ্ছি, আগামীতে এ ধরনের অস্থিতিশীল কোনো ঘটনায় ক্যাম্পাস ক্রস ইস্যু করা হয় এবং মব ক্রিয়েট করা হয়, এর দায়দায়িত্ব গুপ্ত সংগঠনকে বহন করতে হবে।

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে হবে: মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, বিএনপি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন চায় এবং এ বিষয়ে কোনো আপসের জায়গা নেই। সোমবার (১৪ জুলাই) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক জনসমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, “দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করেছেন। সেই সময়ের বাইরে নির্বাচন হতে পারে না। যারা এই সময়সীমাকে কেন্দ্র করে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে, তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।” তিনি আরও বলেন, “গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে বিএনপি কোনো আপসে যাবে না। আমরা মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে চাই। নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি।” বিএনপি মহাসচিব নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এমন কিছু করা যাবে না যাতে আমাদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ নেয়।” তিনি আরও বলেন, “যারা তারেক রহমান ও বিএনপিকে নিয়ে অশোভন মন্তব্য করছে, তারা গণতন্ত্রের শত্রু। আমরা তাদের ভাষায় জবাব দেব না, কারণ অশ্লীল কথায় কারও মান ক্ষুণ্ন হয় না—বরং যারা এমন ভাষা ব্যবহার করে, তারাই নিচু মানসিকতার পরিচয় দেয়।”

সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ মিছিল

সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, অপপ্রচার ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা-১২ আসনের বিএনপির নেতাকর্মীরা। আর এই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব। রোববার (১৩ জুলাই) শিল্পাঞ্চল থানার নাবিস্কো মোড় থেকে শুরু হয়ে সাত রাস্তা, তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড, ফার্মগেট ঘুরে কারওয়ান বাজার টিসিবি ভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শেষ হয়। মিছিলের আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সাইফুল আলম নীরব বলেন, এই দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে একটি গোষ্ঠী। আমরা বিগত ১৭ বছর হামলা মামলা নির্যাতনের শিকার হয়ে তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন নিশ্চিত করেছি। আগামীতেও তারেক রহমানের নেতৃত্বে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করব। তিনি আরও বলেন, আজকে দেশের মানুষ নির্বাচনমুখী তখনই একটি চক্র বিভিন্ন রকম হামলা ও চক্রান্ত করছে নির্বাচন বানচালের জন্য। মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ড এই চক্রান্তের অংশ। আমরা বিএনপি পরিবার এই চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেবো।বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন- স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন, যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কামাল উদ্দিন, আবু সুফিয়ান দুলাল, আবুল মনসুর খান দীপক, মোহাম্মদ আলী, নাজমুল হক মাসুম, হুমায়ূন কবির, ভিপি সোলায়মান, সাখাওয়াত হোসেন সৈকত, মনিরুজ্জামান মনির, কাজী ইলিয়াস, সালামত খান সজিব, আব্দুল বাসেত, মো. মশিউর রহমান সোহান প্রমুখ।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ

জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ সোমবার (১৪ জুলাই)। ২০১৯ সালের এই দিনে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তিনি মারা যান। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রংপুরসহ সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে জাতীয় পার্টি ও দলের অঙ্গসংগঠনগুলো। আজ সকাল ৮টায় ঢাকায় কাকরাইলের জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কোরআন খতম অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া সকাল ৯টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় চত্বরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এদিন বিকেল ৪টায় আলোচনা শেষে কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শোকযাত্রা হবে। এদিকে আজ রাজধানীর বারিধারার ডিপ্লোমেটিক জোনে এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট পার্কে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছেন এরশাদপুত্র এরিক এরশাদ। এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা এরশাদ আজ এই অনুষ্ঠানসহ একাধিক অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির বিষয়ে নতুন বার্তা দেবেন বলে জানা গেছে। এছাড়া সারাদেশে জাতীয় পার্টি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হবে। জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির জানিয়েছেন, এরইমধ্যে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা রংপুরে এসেছেন। তিনি আরও জানান, এই দিন উপলক্ষে সকাল ৬টায় রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডের জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, সকাল ৬টা থেকে শুরু করে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে কোরআন তিলাওয়াত মাইকযোগে প্রচার, বেলা ১১টায় নগরীর পল্লীনিবাসে সমাধি অঙ্গনে কোরআন তিলাওয়াত, সাবেক রাষ্ট্রপতির বিভিন্ন সময়ের ভাষণ প্রচার, কবর জিয়ারত, দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা ও তবারক বিতরণ, বাদ আসর রংপুর নগরীর বিভিন্ন মসজিদ ও মাদরাসায় দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৩০ সালের ২০ মার্চ বর্তমান কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলায় তার নানার বাড়িতে জন্ম নেন। তার পৈতৃক নিবাস অবিভক্ত ভারতের কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমা শহরে। তার বাবার নাম মৌলভি মকবুল হোসেন। পরে তারা কোচবিহার থেকে রংপুরে চলে আসেন। পল্লীজীবনের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটিয়ে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন এরশাদ। দীর্ঘ নয় বছর রাষ্ট্রপ্রধান থাকায় বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের উন্নয়নেও অবদান রেখেছেন তিনি। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৩০ সালের ২০ মার্চ বর্তমান কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলায় তার নানার বাড়িতে জন্ম নেন। তার পৈত্রিক নিবাস অবিভক্ত ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমা শহরে। তার বাবার নাম মৌলভী মকবুল হোসেন। তিনি ছিলেন একজন খ্যাতনামা আইনজীবী। তার দাদা মৌলভী শাহাদৎ হোসেনও ছিলেন একজন প্রখ্যাত আইনজীবী এবং তিনিই ছিলেন কুচবিহার অঞ্চলের প্রথম মুসলিম আইনজীবী। এরশাদের মায়ের নাম মজিদা খাতুন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছিলেন ৯ ভাই-বোনের মধ্যে দ্বিতীয় এবং চার ভাইয়ের মধ্যে প্রথম। তার ডাকনাম ছিল পেয়ারা। তার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে দিনহাটায়। দিনহাটা হাইস্কুল থেকে তিনি ১৯৪৬ সালে মেট্রিক পাস করেন। মেট্রিক পাসের পর দিনহাটা ছেড়ে এরশাদ ১৯৪৬-৪৭ শিক্ষাবর্ষে রংপুর কারমাইকেল কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হন। এ কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি ক্রীড়া ও সাহিত্য উভয় ক্ষেত্রে সমানভাবে যুক্ত হন। ১৯৫০ সালে তিনি কারমাইকেল কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে বিএ পাস করেন। পরে তার বাবার ইচ্ছায় তিনি এমএ পড়তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি হন। ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি তিনি তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের কোহাট সেনানিবাসে পাকিস্তান মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে যোগ দেন। ১৯৫৪ সালে তিনি ময়মনসিংহের স্বনামধন্য খান সাহেব উমেদ আলী সাহেবের কন্যা রওশন আরা ডেইজিকে বিয়ে করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে পশ্চিম পাকিস্তানে আটকা পড়েন তিনি। ১৯৭৩ সালে তিনি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। দেশে ফিরে তিনি আবার সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৭৯ সালের ৭ নভেম্বর তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদোন্নতি পান। বিচারপতি আব্দুস সাত্তার তার মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত ঘোষণা করে সামরিক আইন জারির মাধ্যমে সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করলে সেনাপ্রধান হিসেবে এরশাদ ১৯৮৪ সালের ২৪ মার্চ প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে দেশের শাসনভার গ্রহণ করেন। ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি তিনি জাতীয় পার্টি গঠন করেন এবং তিনি এ পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে রাজনীতি এবং সাংগঠনিক যাত্রা শুরু করেন। রাজনৈতিক দল গঠনের পর তিনি দেশে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দেন। ১৯৮৬ সালের ৭ মে দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ১৫৩ আসনে জয় লাভ করে সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়। ১৯৮৬ সালের অক্টোবর মাসে তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন। ১৯৮৬ সালের ১৫ অক্টোবর দেশে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে দেশের রাষ্ট্রপতি হন এরশাদ। ১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বর তিনি জাতীয় সংসদে ভাষণ দিয়ে সামরিক আইন তুলে দেন।

মিটফোর্ডের ঘটনায় ‘তদন্ত ও তথ্যানুসন্ধানী কমিটি’ করবে বিএনপি

রাজধানীর মিটফোর্ডের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের অন্তর্নিহিত কারণ অনুসন্ধানের জন্য একটি ‘তদন্ত ও তথ্যানুসন্ধানী কমিটি’ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এ ঘটনায় কমিটির সদস্যরা প্রকৃত সত্য উদঘাটন করবেন এবং তা জনসম্মক্ষে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ হত্যার ঘটনা কোনো রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্যবহার হচ্ছে কি না এবং এর মাধ্যমে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশকে বিঘ্নিত করার জন্য বিশেষ কোনো মহলের প্ররোচনায় এ ধরনের ঘটনাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে সন্দেহ করার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, কুমিল্লার মুরাদনগরে সংঘটিত তিনটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড, কুমিল্লায় মসজিদের ইমাম হত্যা, খুলনায় যুবদল নেতা মাহবুব মোল্লাকে হত্যা ও রগকাটা; এমন হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে সবার প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর সমমানের ছিল কি না সে প্রশ্নও তোলা যেতেই পারে। পরিকল্পিতভাবে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি বাস্তবায়নে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে অসংখ্য মানুষের সামনে, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার নিকটবর্তী অবস্থান থাকা সত্ত্বেও এই রূপ ঘটনার কোনো প্রতিরোধ না হওয়ায় পুরো ঘটনাটি সম্পর্কে জনমনে প্রশ্ন উদ্রেকের যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

৭ লাখ টাকা নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, এনসিপি নেতার দাবি ‘ডোনেশন’

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এবং শিক্ষাবিদ ড. এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান রোববার (১৩ জুলাই) বিকেলে নিজের ফেসবুক ওয়ালে এনসিপি নেতা ইমামুর রশিদের সাত লাখ টাকা নেওয়ার একটি ভিডিও পোস্ট করেন। ভিডিওটি পোস্ট করার পরই তা ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওর বর্ণনায় এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান লেখেন, ‘এই ভিডিওটির মেটা ডাটা বলছে: গত ১৪ মে ২০২৫, রাত ৯.২১ মিনিটে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এটি ধারণ করা হয়েছে। এখানে দেখা যাচ্ছে- জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য ইমামুর রশিদ ইমন একজন নারীর কাছ থেকে ৭ লক্ষ টাকা গ্রহণ করছেন। কোন এক ভাইয়ের সাথে কথা হয়েছে ১০ লক্ষ টাকা দেয়ার জন্য, কিন্তু উনি দিয়েছেন ৭ লক্ষ। ভুক্তভোগী ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ওই নারী জানিয়েছেন, বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ দেয়ার আশ্বাসে তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টিকে বিভিন্ন সময় প্রায় ৪৮ লক্ষ টাকা চাঁদা প্রদান করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে তাঁকে কোন কাজ বা প্রজেক্ট কিছুই দেয়া হয়নি। এই পোস্টের জবাবে এনসিপি নেতা ইমামুর রশিদ তার ফেসবুকে লেখেন, ‘আজকে আমাকে নিয়ে ফেসবুকে ওয়াহিদুজ্জামান নামক প্রোফাইল থেকে যে ভিডিওটি ছড়ানো হয়েছে সেটা নিয়ে আমার মতামত: ভিডিওতে যে মহিলার কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে, তিনি গত মে মাসের প্রথম দিকে আমাদের জাতীয় নাগরিক পার্টির অস্থায়ী কার্যালয়ে এসে পার্টির আহ্বায়ক ও দুই অঞ্চলের মুখ্য সংগঠকদ্বয়ের সাথে দেখা করেন। সেখানে তিনি স্বেচ্ছায় পার্টি ফান্ডে ডোনেশন দিতে ইচ্ছা পোষণ করেন। এছাড়াও তিনি একাধিকবার পার্টি অফিসে এসে অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে দেখা করেন। তিনি জানান, ইতোপূর্বে তিনি জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে আর্থিক অনুদান দিয়েছিলেন। যেটা আমরা পরবর্তীতে ভেরিফাই করেছিলাম। ঘটনাটি যে দিনের সেদিন সন্ধ্যায় সেই মহিলা পার্টি ফান্ডে ১০ লক্ষ টাকা দিবে বলে পার্টির পক্ষ থেকে একজনকে পাঠাতে বলেন। পার্টির পক্ষ থেকে সেই ফান্ড সংগ্রহের দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়। আমি আমার দায়িত্বশীলতার জায়গা থেকে ফান্ডটি কালেক্ট করে কোষাধ্যক্ষের কাছে জমা দেই। আমি পার্টির একজন সদস্য হিসেবে শুধুমাত্র আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছি, এর বেশি কিছুই নয়।’ ইমামুর রশিদ লেখেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে যে কেউ আর্থিক অনুদান দিতে পারে যা খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। যতটুকু জানতে পেরেছি, পরবর্তীতে সেই মহিলা আমাদের পার্টির টপ লিডারদের কাছে তার ব্যক্তিগত কিছু অনৈতিক সুবিধা চেয়েছেন। পার্টির টপ লিডাররা মহিলাটিকে ব্যক্তিগত সুবিধা দিতে রাজি না হলে টপ লিডারদের সাথে তার দূরত্ব বাড়তে থাকে। যার পরিপ্রেক্ষিতে আজকে তিনি এই ভিডিওটা অন্যকে দিয়ে ছড়িয়েছেন। এখন আমরা বুঝতে পারছি যে তার উদ্দেশ্য আসলেই অসৎ ছিল এবং তিনি কোন গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য আমাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। তা নাহলে তিনি কেন ডোনেশন দেওয়ার ভিডিওটি গোপনে ধারণ করেছিলেন?’ ‘আমাদের পার্টির পক্ষ থেকে তাকে কখনোই আগে এপ্রোচ করা হয়নি বরং তিনি নিজে থেকেই ডোনেশনের জন্য পার্টিকে এপ্রোচ করেছেন এবং তিনি যা ডোনেশন দিবেন এই সংখ্যাটাও তার নিজের নির্ধারণ করে দেওয়া, আমরা তাকে কোনকিছুই বলিনি। আরেকটি বিষয়, জাতীয় নাগরিক পার্টি কখনোই ডোনেশনের বিনিময়ে কোন কিছু সহযোগিতা করার কমিটমেন্ট করেনি। এই অভিযোগটি মিথ্যা এবং তিনি যে ৪৮ লক্ষ টাকা ডোনেশনের কথা উল্লেখ করেছেন সেই সংখ্যাটাও মিথ্যা।’ ইমামুর রশিদ লেখেন, ‘আমি মনে করি আমার সর্বোচ্চ যোগ্যতা হল আমার সততা। সেই সততাকে বিসর্জন দিয়ে আমি কোন অনৈতিক কাজ করেছি এর প্রমাণ দিতে পারলে আমি স্বেচ্ছায় যে-কোন শাস্তি মাথা পেতে নিবো।’ ভিডিও ভাইরালের পর এনসিপির ফান্ড পলিসি এবং ডোনেশন ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে বলে জানান ইমামুর রশিদ।

অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না: জাপা মহাসচিব

জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী দাবি করেছেন, বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার যে নির্বাচন আয়োজন করছে, তা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। রোববার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় রংপুর নগরীর সেনপাড়ায় দলীয় চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন। শামীম হায়দার অভিযোগ করেন, “এই সরকারের সঙ্গে এনসিপির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। প্রশাসনকেও সেই অনুযায়ী সাজানো হয়েছে, যা নির্বাচনে এনসিপিকে বাড়তি সুবিধা দেবে।” তিনি বলেন, দেশে মবতন্ত্রের উত্থান ঘটেছে এবং সরকার এটি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। এতে করে দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একই সঙ্গে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত না হওয়ায় নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে সভা-সমাবেশ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। জাপা মহাসচিব আরও বলেন, “জাতীয় পার্টি দেশের মানুষকে নিরাপত্তা ও সুশাসন দিতে সক্ষম। বর্তমানে দেশে প্রায় ২২ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছে এবং ২৮ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের নিচে নেমে গেছে। এই অবস্থায় জাতীয় পার্টি বাস্তবসম্মত সমাধান দিতে চায়।” দলের ভাঙনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “দলের ইতিহাসে কিছু প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং শীর্ষ নেতাদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণেই সাতবার জাতীয় পার্টি বিভক্ত হয়েছে। তবে তৃণমূল নেতাকর্মীরা সবসময় দলের সঙ্গেই থেকেছেন এবং মূল ধারার বাইরে যাননি।” শামীম হায়দার পাটোয়ারী ২০১৪ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়কে অস্বাভাবিক গণতন্ত্রের যুগ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “আমরা সঠিকভাবে জনগণের মতামত প্রতিফলন করতে পারিনি, তবে দল কোনো বড় দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। আমরা কোনো চাঁদাবাজি করিনি এবং রাজনৈতিক সন্ত্রাসে সমর্থন দিইনি।” এ সময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ছাড়াও রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির এবং জেলা-মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল

রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, অপপ্রচার ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা-১২ আসনের বিএনপি নেতাকর্মীরা। রোববার (১৩ জুলাই) এই কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব। বিকেলে শিল্পাঞ্চল থানার নাবিস্কো মোড় থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি সাত রাস্তা, তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড, ফার্মগেট হয়ে কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ পূর্ব এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সাইফুল আলম নীরব বলেন, “দেশের বিরুদ্ধে এক চক্রান্তকারী মহল আবার সক্রিয় হয়েছে। গত ১৭ বছর ধরে বিএনপি নেতাকর্মীরা নির্যাতন, মামলা ও হামলার শিকার হয়েও তারেক রহমানের নেতৃত্বে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন নিশ্চিত করেছে। ভবিষ্যতেও আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সব ষড়যন্ত্রের জবাব দেবো।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে যখন জনগণ একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশায় রয়েছে, তখনই একটি পক্ষ নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে হত্যাসহ নানা ধরনের চক্রান্ত করছে। সম্প্রতি মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ডও সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ। বিএনপি এসব ষড়যন্ত্র রুখে দেবে।” বিক্ষোভ মিছিলে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বহু নেতা-কর্মী অংশ নেন। এদের মধ্যে ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন, যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কামাল উদ্দিন, আবু সুফিয়ান দুলাল, আবুল মনসুর খান দীপক, মো. আলী, নাজমুল হক মাসুম, হুমায়ুন কবির, ভিপি সোলায়মান, সাখাওয়াত হোসেন সৈকত, মনিরুজ্জামান মনির, কাজী ইলিয়াস, সালামত খান সজিব, আব্দুল বাসেত ও মো. মশিউর রহমান সোহান।

ভালো কিছুর প্রত্যাশা ছিল, কিন্তু আপনারা হতাশ করছেন: ছাত্র অধিকার পরিষদ

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেছেন, ৫ আগস্টের পর দেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের আশায় থাকলেও, বাস্তবে হতাশ হতে হয়েছে। শনিবার (১২ জুলাই) রাতে নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি লেখেন, “চাঁদাবাজি ও হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাসহ কর্মীরা যে ধরনের হুমকি দিচ্ছেন, তা উদ্বেগজনক। এখনই যদি এমন আচরণ করেন, তাহলে ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে পরিস্থিতি কী হবে?” স্ট্যাটাসে আরও বলা হয়, “শেখ হাসিনা যত জেল-জুলুম করেও আমাদের ভয় দেখাতে পারেননি। অথচ তিনি এখন ক্ষমতায় নেই। আপনাদের কাছ থেকে ভয় পাওয়ার কী কারণ থাকতে পারে?” এর আগে শনিবার বিকেলে ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ আয়োজন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। সমাবেশে বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, “আমরা বিএনপি পতনের লক্ষ্যে আন্দোলনে নামিনি এবং কারও ব্যক্তিগত শত্রু নই। তবে কেউ যদি 'ভালো মানুষের' মুখোশ পরে অপরাধমূলক কাজ- সন্ত্রাস, ধর্ষণ, খুন করে, তাহলে তার দায় দলকেও নিতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “বিএনপির মধ্যে কেউ যদি ‘ভালো ছেলে’ হিসেবে ঢুকে পরে ধর্ষণের মতো অপরাধে যুক্ত হয়, তাহলে সেটি শুধু তার নয়, দলের ব্যর্থতাও। নেতারা যদি চাঁদার ভাগ নেন, তাহলে খুন-ধর্ষণের দায় থেকেও তারা মুক্ত থাকতে পারেন না।” এই বক্তব্যে বিএনপির প্রতি কড়া বার্তা দিয়েছে, যেন রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে অপরাধের আশ্রয় নেওয়া কেউ পার না পায়।

বিএনপির ওপর পরিকল্পিত সাইবার হামলা চালানো হচ্ছে: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, জাতীয়তাবাদী শক্তিকে দুর্বল করতে এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে দলটির ওপর পরিকল্পিত সাইবার হামলা চালানো হচ্ছে। রোববার (১৩ জুলাই) বিকেলে গুলশানের একটি হোটেলে ‘তারেক রহমান: দ্য হোপ অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। বইটির সম্পাদক কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপিকে সহজে মুছে ফেলা যাবে না। আমরা বহুবার ধ্বংসস্তূপ থেকে ফিরে এসেছি।’ তারেক রহমানের সাংগঠনিক দক্ষতার কথা তুলে ধরে তিনি জানান, খালেদা জিয়ার কারাবন্দি হওয়ার পর থেকে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছেন তারেক। ‘অতি অল্প সময়ে তিনি গ্রাম থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত নেতাকর্মীদের সংগঠিত করতে পেরেছেন,’ বলেন ফখরুল। তিনি আরও যোগ করেন, বিএনপির বিশাল যুব ও ছাত্রসংগঠনকে আরও সক্রিয় করতে হবে; শুধু লড়াই নয়, সাংগঠনিক শিক্ষা ও জ্ঞানেও সমৃদ্ধ হতে হবে। একই অনুষ্ঠানে ২০০২ সালের খালেদা জিয়ার চীন সফরের স্মৃতিচারণা করে ফখরুল জানান, সে সময় চীনের প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমানকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘তোমার বাবা‑মায়ের পতাকা বহন করো।’ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নির্যাতন, নির্বাসন ও বিচ্ছিন্নতার দৃষ্টান্ত টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মতোই তিনি মাথা নত করেননি।’ মূল বক্তৃতা শেষে তিনি অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও ব্লগারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং ভবিষ্যতেও তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ। বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জাহিদ উর রহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, এবং বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্টাল অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাখাওয়াত হোসেন।

বিএনপিকে এত সহজে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না: মির্জা ফখরুল

বিএনপিকে এত সহজে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার (১৩ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে তারেক রহমান দ্যা হোপ অব বাংলাদেশ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি বারবার প্রমাণ করেছে, ধ্বংসস্তূপের মাঝ থেকে জেগে উঠতে পারে। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পরে অনেকেই ভেবেছিল বিএনপি শেষ। বিএনপিকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু সেই বিএনপি আবারও খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ছাত্রনেতা ও যুবনেতাদের সঙ্গে নিয়ে জেগে উঠেছে। বড় পরিসরে জাতীয়তাবাদীদের সাইবার যুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির ওপর পরিকল্পিতভাবে সাইবার হামলা করা হচ্ছে। এবার বাদ যায়নি তারেক রহমানও, যা খুবই উদ্বেগ্নজনক। এখন যে আক্রমণ করা হচ্ছে তা খুবই পরিকল্পিত চক্রান্ত। এসময় তারেক রহমানের ওপর দীর্ঘ নিপীড়নের পরও আপোষহীন মনোভাবের কথা তুলে ধরেন ফখরুল। তিনি বলেন, আজকে যে অপপ্রচার হচ্ছে, এর পেছনে কিন্তু একেবারে সুনির্দিষ্ট চক্রান্ত রয়েছে। সেই চক্রান্ত হলো বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করে দেওয়া। তারেক রহমানের নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া। এটা কিন্তু মনে রাখতে হবে।

হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে গুমের অভিযোগ বিএনপির

ক্ষমতায় থাকা সময় গুমের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদসহ মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জমা দিয়েছে বিএনপি। রোববার (১৩ জুলাই) দুপুরে ভুক্তভোগী পরিবারদের সঙ্গে নিয়ে অভিযোগপত্রটি চিফ প্রসিকিউটরের দপ্তরে জমা দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও তথ্য সেল সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে বর্তমান সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত অন্তত ১১টি গুমের ঘটনা ঘটেছে যার সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট ছিলেন তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। এ সময় শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন এবং অন্যান্য অভিযুক্তরাও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো অভিযোগ করেছে, কেবল বিএনপি করার কারণে তাদের স্বজনদের অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। অনেকে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। অভিযোগ গ্রহণের সময় প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কোনো ব্যক্তি বা দলের চরিত্রহনন নিন্দনীয়: জামায়াত আমির

কোনো ব্যক্তি বা দলের চরিত্রহনন একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত ও নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। রোববার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। জামায়াত আমির লিখেছেন, ‘সম্প্রতি দিনগুলোতে আমাদের সমাজজীবনে অনেকগুলো বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটে চলেছে। এসব বিষয়কে কেন্দ্র করে সমাজকে শৃঙ্খলায় ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব এককভাবে কারও নয়। সরকার, রাজনৈতিক দলগুলো এবং সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সবাইকেই সমন্বিতভাবে এই দায়িত্ব নিতে হবে। অর্থাৎ এ ধরনের স্পর্শকাতর সময়ে জাতীয় ঐক্যের ন্যূনতম জায়গাটা থাকা প্রয়োজন।’ তিনি লিখেন, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অবশ্যই আপনার নিজস্ব অধিকার। এক্ষেত্রে অন্যায়ের প্রতিবাদ হোক শালীন প্রতিবাদের ভাষায়। সমালোচনা হোক যুক্তি ও তথ্যনির্ভর। কোনো ব্যক্তি বা দলের চরিত্রহনন একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত ও নিন্দনীয়।’ জামায়াত আমির তার ফেসবুক পোস্টে আরও লিখেন, ‘এই ধরনের আচরণ সমাজজীবনে কেবল বিশৃঙ্খলা, বিষোদগার ও অনৈক্যের বীজ বপন করবে। তাই সবার পক্ষেই সংযত, সাবধানী ও দায়িত্বশীল আচরণ অত্যন্ত প্রয়োজন। মহান আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে এই বাস্তবতাটি উপলব্ধি করার তাওফিক দেন। আমিন।

‘শাপলা’ পেতে বাধা দিলে রাজনৈতিকভাবে লড়াইয়ে নামবে এনসিপি

শাপলা প্রতীক পেতে বাধা দেওয়া হলে রাজনৈতিকভাবে লড়াই করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী। রোববার (১৩ জুলাই) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে, সিইসির সঙ্গে সকাল ১১টার দিকে এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ ৫ সদস্যর প্রতিনিধি বৈঠকে বসেন। নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, নির্বাচনের আগে ইসি পুনর্গঠন করতে হবে। আমাদের শাপলা প্রতীক পেতে আইন কোনো বাধা নেই। শাপলা ছাড়া আমাদের বিকল্প অপশন নেই আর যদি শাপলা পেতে আমাদের বাধা দেওয়া হয় তাহলে তা আমরা রাজনৈতিকভাবে লড়াই করব। এর আগে, গত ০৯ জুলাই জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধনের লক্ষ্যে প্রতীকের তফসিলে ১১৫টি প্রতীক সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি, যা ওইদিনই আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের জন্য পাঠায়। তবে এনসিপির পছন্দের শাপলা প্রতীক তালিকায় রাখা হয়নি। গত ২২ জুন এনসিপি গত দলীয় নিবন্ধনের আবেদনে নিজেদের প্রতীক হিসেবে পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রাখে শাপলাকে। তখন এই প্রতীক তারা পাবেন এমন আশাবাদের কথাও জানান এনসিপি নেতারা। তবে নাগরিক ঐক্যও দলীয় প্রতীক হিসেবে কেটলির পরিবর্তে শাপলা দাবি করে। আবার তার আগে মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য ১৭ এপ্রিল একই প্রতীক চায়। এছাড়া দু’টি দলই শাপলা নিয়ে একাধিকবার বৈঠকও করে ইসির সঙ্গে। এছাড়া শাপলা জাতীয় প্রতীক হওয়ায় এটি দলীয় প্রতীক হতে পারে কি না এটা নিয়েও বিতর্ক ওঠে। এরমধ্যে গত বুধবার নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ জানান, নতুন প্রস্তাবিত প্রতীক তালিকায় শাপলা রাখা হচ্ছে না। নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে আমাদের শিডিউলভুক্ত হচ্ছে না প্রতীকটি। আমরা নীতিগতভাবে এটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, কোনো দল নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার তফসিলে যে প্রতীকগুলো থাকে সেখান থেকেই বরাদ্দ পায়। এক্ষেত্রে ইসির প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয় থেকে ভেটিং হয়ে এলেই প্রজ্ঞাপন জারি করবে কমিশন। বর্তমানে ইসির তফসিলভুক্ত ৬৯টি প্রতীকের মধ্যে ৫০টি প্রতীক বরাদ্দ রয়েছে রাজনৈতিক দলের জন্য। যার মধ্যে স্থগিত হওয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগেরও প্রতীক রয়েছে। অবশিষ্ট ১৯টি প্রতীক রয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের। তবে নতুন তালিকায় আইন মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত হয়ে আসলে জামায়াতের প্রতীক দাঁড়িপাল্লাসহ প্রতীকের সংখ্যা দাঁড়াবে ১১৫টি।

সিইসির সঙ্গে বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধি দল

ভোটের প্রতীকের তালিকায় শাপলা না রাখার সিদ্ধান্তের মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করতে এসেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির একটি প্রতিনিধি দল। রোববার (১৩ জুলাই) সিইসির সঙ্গে বৈঠকের জন্য পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদল নির্বাচন ভবনে আসে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে রোববার বেলা ১১টার দিকে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ প্রতিনিধিরা বৈঠকে বসেন। গত সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধনের লক্ষ্যে প্রতীকের তফসিলে শাপলা ছাড়া ১১৫টি প্রতীক সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি, যা ওইদিনই আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠায়। ইসির ওই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে এনসিপি। ২২ জুন নিবন্ধন আবেদন দাখিলের সময় শাপলা প্রতীক চায় এনসিপি। এর আগে মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্যও ১৭ এপ্রিল একই প্রতীক চায়। দুটি দলই শাপলা নিয়ে একাধিকবার বৈঠকও করে ইসির সঙ্গে। শাপলা নিয়ে এই কাড়াকাড়ির মধ্যেও প্রতীকটি তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করেনি ইসি। বাকি প্রতীকগুলো স্বতন্ত্র প্রার্থী ও অন্যান্য নতুন দলগুলোকে বরাদ্দ দেওয়া হবে।

বোমাবাজি করে বিএনপিকে দমানো যাবে না: রিজভী

ককটেল মেরে কিংবা বোমাবাজি করে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে দমন করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব সদস্য রুহুল কবির রিজভী। শনিবার (১২ জুলাই) দিবাগত রাতে নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি মন্তব্য করেন। রিজভী বলেন, আপনারা যে পথে হাঁটছেন এটা শেখ হাসিনার পথ। তারা শেখ হাসিনার পথে হাঁটছে আর ভাবছে এই পথ সাকসেস। এই পথ যদি সাকসেস হতো তাহলে তো বিএনপি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত। তিনি বলেন, বিএনপিকে দমন করা যায়নি। শত শত মামলা বোমা মেরে কিংবা ককটেল মেরে বিএনপি নেতাকর্মীদের জমানো যায়নি। বিএনপিকে কেউ দমন করতে পারবে না। এর আগে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। শনিবার (১২ জুলাই) রাত ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে দুষ্কৃতকারীরা এ বিস্ফোরণ ঘটায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, দুর্বৃত্তরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চলে যায়। প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে এ ঘটনায় পরিবহন যাত্রী ও পথচারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। তারা ভয়ে আশপাশে ছোটাছুটি শুরু করেন। পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিরুল আমীনও বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।