শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৫ অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যার নির্দেশনা, প্ররোচনা, উসকানিসহ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচ অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এসব অভিযোগে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। রোববার (১ জুন) দুপুরে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে জুলাই গণহত্যার মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন চিফ প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এ সময় অন্য প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।

সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে হাসিনার বিচারকাজ

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। রোববার (১ জুন) সকালে শেখ হাসিনাকে প্রধান নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনালে এই অভিযোগ দাখিল করা হয়। এরপর দুপুর সোয়া ১২টা থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)-এর মাধ্যমে এই বিচার প্রক্রিয়া সরাসরি সম্প্রচার শুরু হয়েছে। এর আগে শনিবার (৩১ মে) চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, ডিসেম্বরের মধ্যে জুলাই-আগস্টের হত্যাযজ্ঞের বিচার দৃশ্যমান হবে। তিনি বলেন, বিচার এমনভাবে করা হবে যাতে কেউ এর মান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে। ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্ত অন্যান্যের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। গত ১২ মে শেখ হাসিনার মামলার তদন্ত শেষ হয়। ওই দিন এক ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর দাবি করেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নির্বিচারে এক হাজার ৪০০-এর বেশি মানুষ হত্যার দায় শেখ হাসিনার। চিফ প্রসিকিউটর আরও জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নির্বিচারে হত্যার নির্দেশনা, প্ররোচনা, উসকানিসহ মোট পাঁচটি অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। একই ধরনের অপরাধের প্রমাণ আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধেও পাওয়া গেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এক যুগের আইনি লড়াইয়ের সফল অবসান: শিশির মনির

জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ফিরে পাওয়াকে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলা আইনি লড়াইয়ের সফল পরিসমাপ্তি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির। রোববার (১ জুন) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আজ দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে জামায়াতে ইসলামী তার নিবন্ধন ফিরে পেয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার মাধ্যমে দলটির নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আজকের রায়ে গণতন্ত্র ও অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির পথ উন্মুক্ত হলো। শিশির মনির জানান, আপিল বিভাগ হাইকোর্টের পূর্বের রায় বাতিল করে দিয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত জামায়াতের নিবন্ধন পুনর্বহাল করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি যেসব বিষয় নির্বাচন কমিশনের সামনে রয়েছে, সেগুলোও দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তিনি আরও বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ আরও বিস্তৃত হলো। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে জনগণ তাদের ইচ্ছামতো প্রার্থী নির্বাচন করতে পারবে। আগামী সংসদে আরও প্রাণবন্ত ও অর্থবহ বিতর্ক হবে বলে আমরা আশাবাদী, যা গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করবে। প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরে পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আদালত এই ইস্যুটি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। আমরা আশা করি, নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী দ্রুত প্রতীক ফিরিয়ে দেবে। তিনি আরও জানান, খুব শিগগির আদালতের সংক্ষিপ্ত রায়ের কপি হাতে পাবেন। এরপর তা নির্বাচন কমিশনে দাখিল করে নিবন্ধন ও প্রতীক পুনর্বহালের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করে এবং দাঁড়িপাল্লা প্রতীকও সরিয়ে দেয়। পরে ২০২৪ সালের ১ আগস্ট তৎকালীন সরকার জামায়াত ও শিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু সরকার পতনের পর ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।

এক যুগ পর নিবন্ধন ফিরে পেলো জামায়াতে ইসলামী

রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদোশের বাতিল হওয়া নিবন্ধন ও অন্যান্য বিষয়ে দলটির করা আবেদন নিষ্পত্তি করতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। রোববার (১ জুন) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের সমন্বয়ে আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। সবশেষ আপিল শুনানিতে নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী আদালতকে বলেন, জামায়াতকে নিবন্ধন দেয়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের অপেক্ষায় তারা।সেদিন ইসির আইনজীবী আদালতকে আরও জানান, সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের পর ইসির প্রতীকের তালিকা থেকে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বাদ দেয়া হয়েছে। নিবন্ধন ফিরে পেলে অন্যপ্রতীক বেছে নিতে হবে দলটিকে।যদিও জামায়াতের আইনজীবী বলছেন, দাঁড়িপাল্লাকে রাজনৈতিক দল প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না এটি আদালতের কোনো রায় নয়। সে কারণে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক পেতে জামায়াতের কোনো বাধা নেই।এক রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতে ইসলামীর আপিলের রায় কাল

রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে আপিলের রায় আগামীকাল (রোববার)। রোববার (০১ জুন) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৪ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করবেন। রায় ঘোষণার জন্য জামায়াতের নিবন্ধন মামলাটি কার্যতালিকার শীর্ষে রয়েছে। শনিবার (৩১ মে) জামায়াতের অন্যতম আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, ইনশাল্লাহ আগামীকাল সকালে জামায়াতের নিবন্ধন মামলার রায় ঘোষণা করবেন আপিল বিভাগ। এর আগে গত ১৪ মে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে আপিলের শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য ১ জুন দিন ধার্য করা হয়েছিল। সেদিন আদালতে জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। আদালত কক্ষে জামায়াত নেতাদের পক্ষে দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, মোবারক হোসেন, জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন, জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। গত ১২ মার্চ রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে আপিল শুনানি শুরু হয়। গত বছরের ২২ অক্টোবর রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে খারিজ হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবিত করে দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ। এর ফলে নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ফিরে জামায়াতের আইনি লড়াই করার পথ খুলে যায়। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান এ. সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রিটকারির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড আলী আজম। গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে খারিজ হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবিত করার আবেদনের শুনানির জন্য এদিন ধার্য করা হয়। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত এ দিন ধার্য করেন। আদালতে জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। এর আগে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে খারিজ হওয়া আপিলটি পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এক রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরে হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামায়াতে ইসলামী। তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানিতে জামায়াতের মূল আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় গত বছরের নভেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ বলে আপিল খারিজের আদেশ দেন। ফলে রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল থাকে। এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে শেখ হাসিনার সরকার। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮(১) ধারায় জামায়াত, ছাত্রশিবিরসহ তাদের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। তবে গত ২৮ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

ফের চারদিনের রিমান্ডে কণ্ঠশিল্পী মমতাজ

দুই দিনের রিমান্ড শেষে নতুন করে আবার চারদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে। হরিরামপুর থানায় দায়ের করা হামলা ও ভাঙচুর মামলায় দুই দিনের রিমান্ড শেষে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয় তাঁকে। মামলার শুনানি শেষে জামিন না মঞ্জুর করে সিংগাইর থানায় হত্যা মামলায় মমতাজকে চারদিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত। আদালত চত্বরে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে পুলিশ। তবে আজকে মমতাজকে আদালতে আনা হলে আগের দুই দিনের মতো বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের আদালত চত্বরে দেখা যায়নি। কোর্ট ইন্সপেক্টর মো. আবুল খায়ের জানান, মমতাজ বেগমকে দুইদিনের রিমান্ড শেষে আদালতে আনা হয়। বিচারক হরিরামপুর থানার মামলার শুনানি শেষে জামিন না মঞ্জুর করে সিংগাইর থানার হত্যা মামলায় আবারও তাঁকে চারদিনের রিমান্ডে পাঠানো নির্দেশ দেন। ২০১৩ সালের হরতালের দিন সিংগাইর উপজেলার গোবিন্দল এলাকায় হরতাল-সমর্থনে একটি মিছিলে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হয়। প্রায় এক যুগ পর চলতি বছরের ২৫ অক্টোবর নিহত এক ব্যক্তির স্বজন মজনু মোল্লা সিংগাইর থানায় মমতাজ বেগমকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১২ মে মমতাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ওই দিন রাত পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির স্টার কাবাবের পেছনে একটি বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন মমতাজ বেগম। তিনি ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে সদস্য মনোনীত হন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচিত হন মমতাজ। ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের হয়ে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদের কাছে পরাজিত হন। আর সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর তাঁকে উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে খুব একটা সক্রিয় দেখা যায়নি।

মেজর সিনহার মৃত্যু পাহাড়ের মতো ভারী : অ্যাটর্নি জেনারেল

অ্যাটর্নি জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান বলেছেন, ‘মেজর সিনহার মৃত্যু গোটা দেশের মানুষকে এমনভাবে নাড়া দিয়েছে যে, আমাদের বুকের ওপর তা পাহাড়ের মত ভারী হয়ে আছে।’ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির শেষ দিন আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষে তিনি আদালতে এ কথা বলেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এই হত্যা মামলায় রায়ের জন্য আগামী ২ জুন দিন ধার্য করেন। আজ শুনানিতে রাষ্ট্র পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এই মামলার সকল সাক্ষী, স্বীকারোক্তি প্রদানকারীসহ সবাই বলেছে মেজর সিনহা গাড়ি থেকে নিরস্ত্র অবস্থায় নেমে দুই হাত উঁচু করে দাঁড়িয়েছিলেন। তারপর তাঁকে গুলি করা হয়। প্রথমে দুইটা, পরে আরও দুইটা। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য পা দিয়ে গলায় পায়ের চাপ দেয়া হয়। ফলে আসামীরা প্রাইভেট ডিফেন্স হিসেবে যে অ্যালিবাই নিয়েছেন, সেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। তাছাড়া অ্যালিবাই প্রমাণ করার জন্য কোনো সাক্ষী, কোনো সারকামস্টেনশিয়াল অ্যাভিডেন্স (পরিস্থিতিগত প্রমাণ), কোনো মৌখিক, দালিলিক কোনো কিছুই আনেননি। ফলে এটাই প্রমাণিত হয় যে, তারা (আসামীরা) মেজর সিনহাকে হত্যা করেছে।' অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানিতে আরও বলেন, পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য (সারকামস্টেনশিয়াল অ্যাভিডেন্স) বলছে যে, সকল সাক্ষীর জবানবন্দি আনবিটেবল। কোরাবরেটিভ অ্যাভিডেন্স বলছে, মেজর সিনহাকে কী উদ্দেশ্যে খুন করেছে, কে কিভাবে এই খুনে অংশ নিয়েছে, সেটি রাষ্ট্রপক্ষ সন্দোতীতভাবে প্রমাণ করেছে। আর এটা বলতে গিয়ে আদালতকে বলেছি, কোনো কোনো মৃত্যু পাখির পালকের মত হালকা, কোনো কোনো মৃত্যু পাহাড়ের মত ভারী। মেজর সিনহার মৃত্যু গোটা দেশের মানুষকে, গোটা দেশকে এমনভাবে নাড়া দিয়েছে যে, আমাদের বুকের ওপর পাহাড়ের মতো ভারী হয়ে আছে। আমরা যদি এর বিচার করে যেতে না পারি, তাহলে কবি হেলাল হাফিজের ভাষায় উত্তর পুরুষের কাছে ভীরু কাপুরুষের উপমা হয়ে থাকবে। তাই নিম্ন আদালতের রায়টিই আমরা বহাল চেয়েছি।' আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। এ ছাড়া রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি মো. জেনারেল জসিম সরকার, মো. আসাদ উদ্দিন, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. গিয়াসউদ্দিন গাজি, লাবনি আক্তার, তানভীর প্রধান ও সুমাইয়া বিনতে আজিজ ও আসাদুল্লাহ আল গালিব। ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার শেষে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত দুজনকে মৃত্যুদণ্ড, ছয়জনকে যাবজ্জীবন ও সাতজনকে খালাস দিয়ে রায় দিয়েছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক বরখাস্ত লিয়াকত আলী ও টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, সাগর দেব, রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন। বিচারিক আদালতের রায়ের পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের দণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। অন্যদিকে, দণ্ডিত আসামিরা আপিল ও জেল আপিল করেন।

২ জুন মেজর সিনহা হত্যা মামলার রায়

বহুল আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ২ জুন রায় ঘোষণা করবেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য এদিন ধার্য করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারল শামীমা দিপ্তী। সঙ্গে আছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জসিম সরকার, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার সুমাইয়া আজিজ, লাবনী আক্তার। এর আগে গত ২৩ এপ্রিল এ হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শুরু হয়। গত ২১ এপ্রিল সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। একইসঙ্গে মামলার যাবতীয় নথি বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠানো হয়। ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন কর্মকর্তা পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান। ঘটনার পাঁচদিন পর ২০২০ সালের ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় র‌্যাব। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড এবং টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত এবং কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেবকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া কক্সবাজারের বাহারছড়ার মারিশবুনিয়া গ্রামের মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বাকি সাত আসামি খালাস পান। পরে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণে ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা আপিল করেন।

‘আমার পাওয়ার দরকার নাই পাওয়ার আমার পিছে ঘোরে’

রাজধানীর হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সঙ্গে তার সহযোগী আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ, আরাফাত ইবনে নাসির ওরফে শুটার আরাফাত ও এমএএস শরীফের ছয় দিন করে রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইন এ আদেশ দেন। এ সময় আদালতে সুব্রত বাইন বলেন, ‘আমার কোনো পাওয়ার নাই। পাওয়ার দরকারও নাই। পাওয়ার আমার পিছে ঘোরে। সর্বশ্রেষ্ঠ পাওয়ারকে আমি সেজদাহ করি।’ গতকাল দুপুরে সুব্রত বাইনসহ পাঁচ আসামিকে কড়া নিরাপত্তায় আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাদের হাতে হাতকড়া, মাথায় হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরানো ছিল। পরে পৌনে ৪টার দিকে কাঠগড়ায় নিয়ে তাদের হেলমেট ও এক হাতের হাতকড়া খোলা হয়। তখন সুব্রত হাসতে থাকেন। পুলিশের উদ্দেশে তিনি বলেন, আরেক হাতের হাতকড়া খুলে দিতে বলেন। পুলিশ সদস্যরা এতে আপত্তি জানান। এ সময় এজলাশে বিচারক না থাকায় সুব্রত বাইন উচ্চস্বরে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলতে থাকেন, ‘আপনারা ছবি-ভিডিও নেন। তবে সত্য কথা লিখবেন। আমি যা, তাই লিখবেন। অন্য কিছু লিখবেন না। হলুদ সাংবাদিকতা যেন না হয়। সাংবাদিকরা ১৯৮৯ সাল থেকে লিখতেছেন। কিন্তু জায়গামতো পৌঁছাতে পারেননি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাংবাদিকদের রসালো লিখতে লিখতে অভ্যাস হয়ে গেছে। অথচ কারও কাছে কোনো প্রমাণ নাই। বাঁচার জন্য কে কী না করে। কত মানুষ মরে পচে গেছে। ঘাসও পচে গেছে। বেঁচে আছি, আল্লাহ জীবন্ত রেখেছেন।’ এ সময় আদালতে সুব্রত বাইন তার আইনজীবীকে খোঁজেন। পরে আবার বলেন, ‘সাংবাদিকরা কিছু না জেনে লিখে দেন। আমারও তো পরিবার আছে। কী ইফেক্ট পড়ে। কিন্তু আমি কোনো প্রতিবাদ করিনি ১৯৮৭ সাল থেকে। আমার বয়স এখন ৬১ বছর। সাংবাদিকরা এত খবর রাখেন, আড়াই বছর আগে আমাকে আয়নাঘরে রাখা হয়, সেই খবর নাই। এখন আমাকে ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ বানানো হচ্ছে। প্রমাণ দিয়ে দেখান আমি চাঁদাবাজি, ছিনতাই করেছি কি না। যারা আমার নামে চাঁদাবাজি, ছিনতাই করছে, তাদের ধরেন। আমার টাকা থাকলে পত্রিকা অফিস, টিভি অফিস খুলে নিতাম। আমার কোনো পাওয়ার নাই, পাওয়ার দরকারও নাই। পাওয়ার আমার পিছে ঘোরে। সর্বশ্রেষ্ঠ পাওয়ারকে আমি সেজদাহ করি।’ আড়াই বছর আয়নাঘরে রাখা হয়েছে দাবি করে সুব্রত বাইন বলেন, ‘২০২২ সালে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে আমাকে দেশে নিয়ে আসে। আমাকে আয়নাঘরে রাখা হয়, যা কবরের মতো। রড দিয়ে পিটিয়েছে। দেখেন আমার মাথায় কী করছে। ৫ আগস্ট রাত ৩টার দিকে আমাকে ছেড়ে দেয়। নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকদের কাছে প্রত্যাশা, তারা সত্যটা তুলে ধরবেন।’ নিজে বাঁচার জন্য সঙ্গে অস্ত্র রাখেন জানিয়ে সুব্রত বাইন বলেন, ‘আমি বাঁচার জন্য অস্ত্র রাখি। অস্ত্র রাখি না, এমন মিথ্যা বলব না। আমার পেছনে অনেক শত্রু। কে মরতে চায়। ৮৪, ৮৫ থেকে আমার শত্রুতা। লিয়াকত, মুরগি মিলন, আমির হোসেন আমু আমার এন্টি ছিল। তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে এখানে আসছি।’ এরপর আসামিদের রিমান্ডের দাবি জানিয়ে শুনানিতে যুক্তি তুলে ধরেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী। এ সময় তাদের আইনজীবী মোহাম্মদ বাদল মিয়া তাদের রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘সুব্রত বাইন মিডিয়ার সৃষ্টি। এই আসামিকে ভারতে তিনবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ৬ তারিখে নরসিংদীর ভুলতা ইউনিয়নে ফেলে রেখে চলে যায়। ওই সময় তিনি এত পরিমাণ ভয় পেয়েছেন। সুব্রত বাইন টোটালি ইনোসেন্ট। প্রয়োজনে তাদের কেন্দ্রীয় কারাগারে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতে পারে।’ এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতকে বলেন, ‘আসামিরা ধরা খাওয়ার ভয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করত না। তারা স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করত। সেটাই জব্দ করা হয়েছে।’ তখন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় সুব্রত বাইন বলেন, ‘যেটা উদ্ধার হয়েছে আদালতে সেটা শো করেন। ওইটা চায়না ফোন। কোনো স্যাটেলাইট ফোন নয়। অস্ত্র উদ্ধারের কথা বলা হচ্ছে। অথচ এতগুলো মানুষের কাছ থেকে একটা মোবাইলও জব্দ হলো না।’ এর জবাবে আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, ‘তাদের কাছ থেকে স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।’ তখন সুব্রত বাইন বলেন, ‘মোবাইলটা দেখান। চায়না ফোনকে স্যাটেলাইট ফোন বলছে। ওটা সিটিসেল মডেলের চায়না ফোন।’ শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেন। রিমান্ড আদেশের পরে আদালতকে সুব্রত বাইন বলেন, ‘আমার নামাজ যেন কাজা না হয়। নামাজের ব্যবস্থা যেন থাকে।’ আদালত পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলেন। পরে সোয়া ৪টায় পুলিশ প্রহরায় তাদের হাজতখানায় নেওয়া হয়। মঙ্গলবার ভোরে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ অভিযানে কুষ্টিয়া জেলা থেকে তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোল্লা মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সুব্রত বাইনের দুই সহযোগী শুটার আরাফাত ও শরীফকে। গতকাল তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়।

‘সন্ত্রাসী’ এক্সেল বাবুসহ সাতজন কারাগারে

সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় করা মামলায় সন্ত্রাসী এক্সেল বাবুসহ সাতজনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৮ মে) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথি। কারাগারে যাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- রাকিব হোসেন, যুবরাজ, লিটন মিয়া, আলম, সোহেল হাওলাদার ও সালাম। এর আগে গত ২৭ মে ঢাকার মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকায় সেনাবাহিনীর অভিযানে এক্সেল বাবুসহ সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র, সামুরাই, নগদ দুই লক্ষাধিক টাকা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও একাধিক মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা উদ্যান, বুদ্ধিজীবী কবরস্থান, বছিলা ফিউচার টাউন, বছিলা গার্ডেন সিটি এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি করে আসছে।

আমি পাওয়ারকে সিজদা করি: সুব্রত বাইন

আদালতে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমি পাওয়ারকে সিজদা করি (উপরের দিকে আঙুল ইশারা করে)। আমার যদি টাকা থাকতো আমি নিজেই পত্রিকা খুলতাম। আপনারা হলুদ সাংবাদিক হইয়েন না। যেটা সত্য, তদন্ত করে আপনারা সেটাই লেখেন। সত্য কথা লিখবেন। ১৯৮৯ সাল থেকে আমার বিরুদ্ধে লিখতেছে। আমার নাম বিক্রি করে যারা চাঁদাবাজি করেন, তাদের আপনারা ধরতে পারেন না? নিজে বাঁচার জন্য আমি কাছে অস্ত্র রাখি। কেউ যদি বলে রাখি না, তাহলে সেটা মিথ্যা হবে।’ আজ বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারক আসার আগে কাটগাড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের একটি মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে মো. ফাতেহ আলীকে (৬১)রিমান্ড আবেদনের জন্য আদালতে হাজির করা হয়। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালত তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এছাড়া অন্য তিনজনের ছয় দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ দিন আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক রিয়াদ আহমেদ। রিমান্ড চাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ (৫৩), এম এ এস শরিফ (২৫) ও মো. আরাফাত ইবনে মাসুদ (৪৩)। পরে আসামি সুব্রত বাইনের আইনজীবী বলেন, মিডিয়া তাকে সৃষ্টি করেছে। শত্রুদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এ লিস্ট তৈরি করা হয়। এরপর ২০২৫ পর্যন্ত আর কোনো লিস্ট কিন্তু তৈরি হয়নি। তিনি তিনবার গ্রেপ্তার হন মিডিয়ার কারণে। তিনিও আয়নাঘরে ছিলেন। গ্রেপ্তার চারজনের কাছ থেকে একটা মোবাইল ফোনও জব্দ হয়নি। আইনজীবী আরও বলেন, কারাগারে তাকে যেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ২০০১ সালে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসামি সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করে এবং তাদেরকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। তারা সন্ত্রাসী বাহিনী সেভেন স্টার গ্রুপ পরিচালনা করত। সুব্রত বাইন তৎকালীন খুন-ডাকাতি সংঘটনের মধ্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করেন। আসামিরা বিভিন্ন মামলায় সাজা ভোগ করা অবস্থায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবারও সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে গতকাল মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ গ্রেপ্তার হন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, আসামি এস এম শরীফের হাতিরঝিলের একটি বাড়িতে তারা নিয়মিত মিটিং করেন এবং সেখানে তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র, গুলি, অপরাধ সংগঠনের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি রয়েছে। পরে হাতিরঝিল থানাধীন নতুন রাস্তা এলাকা থেকে একইদিন বিকেলে এম এ এস শরীফ ও আরাফাত ইবনে নাসিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামিরা সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের সক্রিয় সদস্য। প্রাথমিক তদন্তে আসামিদের এ মামলায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার আসামিদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের আরও অনেক সহযোগীকে গ্রেপ্তার এবং আরও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে। তারা জামিনে মুক্তি পেলে চিরতরে পালাতে পারেন। তাই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের ১০ দশ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

৮ দিনের রিমান্ডে ‘সন্ত্রাসী’ সুব্রত বাইন

রাজধানীর হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ৮ দিনের ও বাকি তিনজনের ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (২৮ মে) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক রিয়াদ আহমেদ এ রিমান্ড আবেদন করেন। বিকেলে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন এ আদেশ দেন। অপর আসামিরা হলেন- আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ, আরাফাত ইবনে নাসির ওরফে শ্যুটার আরাফাত ও এম এ এস শরীফ। এর আগে গত মঙ্গলবার আনুমানিক ভোর ৫টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ অভিযানে কুষ্টিয়া জেলা থেকে শীর্ষ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলি ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোল্লা মাসুদ ওরফে আবু রাসেল মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সুব্রত বাইনের দুই সহযোগী শ্যুটার আরাফাত ও শরীফকে। পরবর্তীতে বুধবার তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়।

৩ বছরের সাজা থেকে তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমান খালাস

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ৩ বছরের সাজা থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। সাজার বিরুদ্ধে জুবাইদা রহমানের দায়ের করা আপিলের শুনানি শেষে বুধবার (২৮ মে) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এই মামলায় রায়ের মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সব মামলায় খালাস পেলেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। আদালতে জুবাইদা রহমানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ভূঞা। তাদের সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস, আজমল হোসেন খোকন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আসিফ হাসান। এর আগে গত ২৬ মে সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জুবাইদা রহমানের আপিল শুনানি শেষ হয়। গত ১৪ মে বুধবার সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জুবাইদা রহমানকে জামিন দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সাজার বিরুদ্ধে জুবাইদা রহমানের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আদালত। গত ১৩ মে তিন বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলের জন্য জুবাইদা রহমানকে ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মার্জনা করেন হাইকোর্ট। জুবাইদা রহমানের আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জুবাইদা রহমান ও তার মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। এ মামলার বিচার শেষে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় তারেক রহমানকে দুটি অভিযোগে নয় ৯ বছর ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের তৎকালীন বিচারক মো. আছাদুজ্জামান । রায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন ২০০৪- এর ২৬(২) ধারায় তারেক রহমানকে তিন বছর ও ২৭(১) ধারায় ছয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাকে তিন কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জুবাইদা রহমানকে ২৭(১) ধারায় তিন বছর কারাদণ্ড দেন । তাকেও জরিমানা করা হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। এদিকে গত বছরের শেষের দিকে এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জুবাইদা রহমানের সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করে সরকার। সেই গেজেটে বলা বলা হয়, ডা. জুবাইদা রহমানের সাজা স্থগিতের বিষয়ে দাখিল করা আবেদন এবং আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আইন ও বিচার বিভাগ এর মতামতের আলোকে ২২ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন (১০ অক্টোবর, ২০২৪ ইং তারিখের বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত) সংশোধনপূর্বক আইনের ক্ষমতাবলে মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত, ঢাকা এর মেট্রো বিশেষ মামলা নং-৩৪১/২০২২ [কাফরুল থানার মামলা নং-৫২, তারিখ-২৬-০৯-২০০৭] -এ তার বিরুদ্ধে প্রদত্ত দণ্ডাদেশ আদালতে আপিল দায়েরের নিমিত্ত বিনাশর্তে ০১ (এক) বছরের জন্য স্থগিত করা হলো। এরপর চলতি বছরের ৬ মে দেশে ফিরেন জুবাইদা রহমান।

অবশেষে মুক্তি পেলেন জামায়াত নেতা এটিএম আজহার

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম অবশেষে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। বুধবার (২৮ মে) সকাল ৯টা ৫ মিনিটে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিরত অবস্থায় কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। আজহারুল ইসলামের মুক্তির আগে তাকে খালাস দিয়ে আপিল বিভাগের রায়ের কপি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (কেরানীগঞ্জ) এসে পৌঁছায়। সেখানে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে কারা কর্তৃপক্ষ আজহারুল ইসলামের মুক্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির তার মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সকাল ৯টা ৫ মিনিটে হাসপাতাল থেকে মুক্তি দেওয়া হয় আজহারুল ইসলামকে। মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

সাজার বিরুদ্ধে জোবাইদা রহমানের আপিলের রায় আজ

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তিন বছরের সাজা থেকে খালাস চেয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমানের আপিলের রায় আজ। বুধবার (২৮ মে) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করবেন। এর আগে গত ২৬ মে (সোমবার) সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জোবাইদা রহমানের আপিল শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালতে জোবাইদা রহমানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজী এস এম শাহজাহান, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ভূঞা। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস। গত ১৪ মে সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে জামিন দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সাজার বিরুদ্ধে জোবাইদা রহমানের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আদালত। তার আগে ১৩ মে তিন বছরের কারাদণ্ডের আপিলের জন্য জোবাইদা রহমানকে ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মার্জনা করেন হাইকোর্ট। জোবাইদা রহমানের আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওইদিন এ আদেশ দেন। সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জোবাইদা রহমান ও তার মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। এ মামলার বিচার শেষে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় তারেক রহমানকে দুটি অভিযোগে নয় বছর ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের তৎকালীন বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। রায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন ২০০৪- এর ২৬(২) ধারায় তারেক রহমানকে তিন বছর ও ২৭(১) ধারায় ছয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাকে তিন কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর জোবাইদা রহমানকে ২৭(১) ধারায় তিন বছর কারাদণ্ড দেন। তাকেও জরিমানা করা হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। এদিকে গত বছরের শেষের দিকে এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জোবাইদা রহমানের সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করে সরকার। সেই গেজেটে বলা বলা হয়, ডা. জোবাইদা রহমানের সাজা স্থগিতের বিষয়ে দাখিলকৃত আবেদন এবং আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আইন ও বিচার বিভাগের মতামতের আলোকে ২২ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন (১০ অক্টোবর, ২০২৪ ইং তারিখের বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত) সংশোধনপূর্বক আইনের ক্ষমতাবলে মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত, ঢাকা এর মেট্রো বিশেষ মামলা নং-৩৪১/২০২২ [কাফরুল থানার মামলা নং-৫২, তারিখ-২৬-০৯-২০০৭] -এ তার বিরুদ্ধে প্রদত্ত দণ্ডাদেশ আদালতে আপিল দায়েরের নিমিত্ত বিনাশর্তে এক বছরের জন্য স্থগিত করা হলো।

জয়কে অপহরণ করে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাংবাদিক শফিক রেহমানকে খালাস

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে করা মামলায় সাংবাদিক শফিক রেহমানকে খালাস দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তারিক এজাজের আদালত এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় শফিক রেহমান এজলাসে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত ২৭ এপ্রিল শফিক রেহমানের খালাস চেয়ে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ। এদিকে শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ আদালতকে জানান, এ মামলায় শফিক রেহমান খালাস পেলে তাদের আপত্তি নেই। এদিন শুনানিতে আসামিপক্ষে সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহ বলেন, হাসিনাপুত্র জয়কে কথিত অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা এটি। ভিকটিম নিজে মামলা দায়ের করেনি। পুলিশ অতিরিক্ত ইন্টারেস্ট দেখিয়ে মামলা দায়ের করে। শফিক রেহমান ৯০ বছর বয়সী লোক। তাকে এ মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। মামলায় কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেই। মামলায় ১২ জন সাক্ষী দিয়েছেন। জয়ও এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। যে দিন জয় এ মামলায় সাক্ষ্য দেয় সেদিন সাক্ষ্য শেষে বিচারক তার পেছনে দৌড়াচ্ছেন, এমন চিত্র দেখা যায়। তাহলে দেখেন কেমন বিচার হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ খলিলুর রহমান (খলিল) বলেন, এটা রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা। তিনি একজন প্রথিতযশা সাংবাদিক। খালাস দিলে আমাদের আপত্তি নেই। মামলা সূত্রে জানা যায়, সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের মামলায় গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত আমার দেশ পত্রিকার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচজনের পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন- জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ, রিজভী আহমেদ সিজার ও মিজানুর রহমান ভূঁইয়া। আসামিদের দণ্ডবিধির ৩৬৫ ধারায় (অপহরণ) পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন আদালত। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তাদের আরও একমাসের কারাভোগের আদেশ দেওয়া হয়। এছাড়া একই আইনে ১২০-খ ধারায় (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। দুই ধারার সাজা একসাথে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন। এ মামলায় গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাংবাদিক শফিক রেহমান ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়ার সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মাহমুদুর রহমান কারাগারে যাওয়ার পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকার আদালতে এ মামলায় সাজার বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের শর্তে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান শফিক রেহমান। পরে গত ১০ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় খালাস পান দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

আজহারুলের রায়ের পর কোর্ট চত্তরে জামায়াত কর্মীদের শোকরানা নামাজ

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের রায় থেকে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের খালাসের রায়ের পর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে শোকরানা নামাজ আদায় করেছেন দলের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার (২৭ মে) এ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে এনেক্স ভবনের সামনে তারা দুই রাকায়াত শোকরানা নামাজ আদায় করেন। নামাজের পর তারা সাংবাদিকেদের কাছে শুকরিয়া জানান। নেতাকর্মীরা বলেন, মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের খালাসের রায়ের পর আমাদের অনেক ভাই, মা বোন রোজা রেখেছেন। তারা আল্লাহ শুকরিয়া করছেন। যেকোনো ভালো খবরের পর আল্লাহর শুকরিয়া জানাতে শোকরানা নামাজ আদায় করতে হয়। তারই অংশ হিসেবে আজ আমরা নামাজ আদায় করলাম। এদিন সকালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীর আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে আজহারকে খালাসের রায় দেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে আপিল বিভাগ বলেছেন, ‘সাক্ষ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা ছাড়াই তাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল। বিচারের নামে অবিচার করা হয়েছিল।’

খালাস পেলেন জামায়াত নেতা আজহার

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম আপিলের রায়ে খালাস পেয়েছেন। মঙ্গলবার (২৭ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আজহারকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন আজহার। শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। পরে রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেন জামায়াত নেতা। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ রিভিউ শুনে ফের আপিল শুনানির সিদ্ধান্ত দেয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের এটিই প্রথম মামলা, যেটি রিভিউ পর্যায়ে আসার পর ফের আপিল শুনানির অনুমতি পায়।

হাজতখানার টয়লেটে পড়ে মাথা ফাটল সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুলের

আদালতে হাজিরা দিতে এসে হাজতখানার টয়লেটে পড়ে মাথা ফেটে গেছে কাসাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের। সোমবার (২৬ মে) সকালে দুদকের একটি মামলায় হাজিরার জন্য কামরুল ইসলামকে ঢাকার কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় আনার পর এ ঘটনা ঘটে। কামরুল ইসলামের আইনজীবী নাসিম মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সাবেক এ মন্ত্রীর আইনজীবী নাসিম মাহমুদ বলেন, আজ কামরুল ইসলামকে দুদকের মামলায় আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। গত নভেম্বর থেকে তিনি জেলহাজতে আটকে আছেন। বিভিন্ন মামলায় কয়েক দফায় রিমান্ড শেষে কারাগারে আছেন। তিনি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। বিশেষ করে পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত। দিন দিন তার ওজন কমে যাচ্ছে। তিনি বলেন, তার শরীর দুর্বল। আজকে আদালতের হাজতখানার টয়লেটে পড়ে গিয়ে মাথার পেছনের সাইডে আঘাত পাওয়ার পর রক্তাক্ত হয়েছেন তিনি। পরে পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় তাকে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। মাথায় ব্যান্ডেজ দিয়ে কেরানীগঞ্জ কারাগারের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে তাকে। এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) তারেক জোবায়ের বলেন, হাজতখানায় আনার পর আসামি কামরুল ইসলাম টয়লেটে যান। তিনি হাইপ্রেসারের রোগী। হাইপ্রেসার থাকায় মাথা ঘুরে টয়লেটে পড়ে যান। পড়ে আঘাতপ্রাপ্ত হন। আমরা আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। পরে তাকে কেরানীগঞ্জ কারা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

জুবাইদা রহমানের আপিলের রায় বুধবার

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমানের আপিল শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী বুধবার (২৮ মে) রায় দেবেন হাইকোর্ট। সোমবার (২৬ মে) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন। আদালতে জোবাইদা রহমানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ভূঞা। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস। গত ১৪ মে সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে জামিন দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সাজার বিরুদ্ধে জোবাইদা রহমানের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আদালত। তার আগে ১৩ মে তিন বছরের কারাদণ্ডের আপিলের জন্য জোবাইদা রহমানকে ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মার্জনা করেন হাইকোর্ট। জোবাইদা রহমানের আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওইদিন এ আদেশ দেন। সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জোবাইদা রহমান ও তার মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। এ মামলার বিচার শেষে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় তারেক রহমানকে দুটি অভিযোগে নয় বছর ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের তৎকালীন বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। রায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন ২০০৪- এর ২৬ (২) ধারায় তারেক রহমানকে তিন বছর ও ২৭ (১) ধারায় ছয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাকে তিন কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর জোবাইদা রহমানকে ২৭(১) ধারায় তিন বছর কারাদণ্ড দেন। তাকেও জরিমানা করা হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। এদিকে গত বছরের শেষের দিকে এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জোবাইদা রহমানের সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করে সরকার। সেই গেজেটে বলা বলা হয়, ডা. জোবাইদা রহমানের সাজা স্থগিতের বিষয়ে দাখিলকৃত আবেদন এবং আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আইন ও বিচার বিভাগের মতামতের আলোকে ২২ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন (১০ অক্টোবর, ২০২৪ ইং তারিখের বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত) সংশোধনপূর্বক আইনের ক্ষমতাবলে মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত, ঢাকা এর মেট্রো বিশেষ মামলা নং-৩৪১/২০২২ (কাফরুল থানার মামলা নং-৫২, তারিখ-২৬-০৯-২০০৭) -এ তার বিরুদ্ধে প্রদত্ত দণ্ডাদেশ আদালতে আপিল দায়েরের নিমিত্ত বিনাশর্তে এক বছরের জন্য স্থগিত করা হলো। এরপর চলতি বছরের ৬ মে দেশে ফেরেন জোবাইদা রহমান।

স্ত্রীসহ ব্যারিস্টার সুমনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইদুল হক সুমন (হবিগঞ্জ-৪) ও তার স্ত্রী ছাম্মী আক্তারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৬ মে) ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে চলমান অনুসন্ধান টিমের প্রধান দুদকের উপ-পরিচালক এ কে এম মাহবুবুর রহমান তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, সৈয়দ সাইদুল হক ওরফে ব্যারিস্টার সুমনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সৈয়দ সাইদুল হক সুমন দেশ ছেড়ে পলায়ন ও তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর করার চেষ্টা করছেন মর্মে অনুসন্ধানকালে জানা যায়। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিধায় তার বিদেশ গমন নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন। শুনানি শেষে বিচারক সে আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। এদিকে গত বছরের ২১ অক্টোবর মধ্যরাতে ঢাকার মিরপুর-৬ থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকেন্দ্রিক মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ২৮ অক্টোবর রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর তাকে আরও কয়েকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।

স্ত্রীসহ ব্যারিস্টার সুমনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

দুর্নীতির অভিযোগ থাকা কারান্তরীণ হবিগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন এবং তার স্ত্রী ছাম্মী আক্তারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। দুদকের পক্ষে সংস্থার উপপরিচালক এ কে এম মাহবুবুর রহমান তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, ব্যারিস্টার সুমনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। ব্যারিস্টার সুমন দেশ ছেড়ে পলায়ন করে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর করার চেষ্টা করছেন মর্মে অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। তিনি বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া একান্ত প্রয়োজন। গত ২১ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাতে ঢাকার মিরপুর-৬ থেকে সুমনকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত ২৮ অক্টোবর রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর তাকে আরও কয়েকটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।

হাজতখানায় পড়ে গিয়ে রক্তাক্ত কামরুল ইসলাম

দুদকের এক মামলায় হাজিরার জন্য সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। পরে হাজতখানার টয়লেটে পড়ে রক্তাক্ত হন তিনি। সোমবার (২৬ মে) কামরুল ইসলামের আইনজীবী নাসিম মাহমুদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। আইনজীবী নাসিম মাহমুদ বলেন, ‘গত নভেম্বর থেকে উনি জেলহাজতে আটকে আছেন। ওনার ওজন কমে যাচ্ছে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। উনি বেশ অসুস্থ, পাকস্থলীর ক্যানসারে আক্রান্ত। আজ হাজতখানার টয়লেটে পড়ে গিয়ে মাথার পেছনের সাইডে আঘাত পাওয়ার পর রক্তাক্ত হয়েছেন। হাজতখানায় মাথায় ব্যান্ডেজ দিয়ে কেরাণীগঞ্জ কারাগারের হাসপাতালে পাঠানো হয়।’

ইশরাককে আজকের মধ্যে শপথ পড়াতে লিগ্যাল নোটিশ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে আজেকের মধ্যে শপথ পড়াতে স্থানীয় সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ইশরাক হোসেনের পক্ষে এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন তার আইনজীবী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী এহসানুর রহমান। বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে খোকন বলেন, হাইকোর্টের রায়ের পরও ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পাড়ালে এবার আদালত অবমাননা হবে। আদালত মামলা খারিজ করায় ইশরাকের শপথ নেওয়ায় আর কোনো বাধা রইল না। আগামী ২৬ মে এর মধ্যে তাকে শপথ পড়াতে হবে। বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা। গত ১৯ মে বিকালে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ফেসবুক পোস্টে ১০টি পয়েন্টে এর ব্যাখ্যা করেন। সেখানে বলা হয়েছে, আইনি জটিলতার কারণে শপথ পড়ানো যাচ্ছে না ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে। অথচ বিএনপির আন্দোলনকে উদ্দেশ করে তিনি লিখেছেন, আন্দোলনের যৌক্তিকতা না থাকলেও তারা গায়ের জোরে নগরভবন বন্ধ করে আন্দোলন করছেন। একটি মহল শপথ বন্ধ করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সেটা ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, শপথ না পড়ালে আদালত অবমাননা হবে। আশা করি, সরকার আইনের শাসনে বিশ্বাস করবে। ট্রাইব্যুনাল এবং হাইকোর্ট ডিভিশনালের আজকের রায়ের প্রতি আস্থা রেখে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার শপথের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সরকার। বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা। গত ১৯ মে বিকালে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ফেসবুক পোস্টে ১০টি পয়েন্টে এর ব্যাখ্যা করেন। সেখানে বলা হয়েছে, আইনি জটিলতার কারণে শপথ পড়ানো যাচ্ছে না ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে। অথচ বিএনপির আন্দোলনকে উদ্দেশ করে তিনি লিখেছেন, আন্দোলনের যৌক্তিকতা না থাকলেও তারা গায়ের জোরে নগরভবন বন্ধ করে আন্দোলন করছেন। ফেসবুক পোস্টে দেওয়া ব্যাখ্যার মধ্যে রয়েছে-১. আর্জি সংশোধন অবৈধ মর্মে হাইকোর্টের রায় ভায়োলেট করে নির্বাচন কমিশন ট্রাইব্যুনাল এই রায় দিয়েছে ২. নির্বাচন কমিশন শুনানিতে অংশগ্রহণ না করায় একপাক্ষিক রায় হয়েছে এবং পরে কমিশন আপিলও করেনি ৩. আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হলেও মতামত দেওয়ার আগেই এবং একই সঙ্গে দুজন নাগরিকের পাঠানো লিগ্যাল নোটিশ উপেক্ষা করে রাত ১০টায় গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন ৪. উক্ত মামলায় স্থানীয় সরকার বিভাগ পক্ষভুক্ত ছিল না এবং রায়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতি কোনো নির্দেশনার উল্লেখ নেই ৫. শপথ না দেওয়ার কারণে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার বিভাগকে বিবাদী করে রিট করা হয়েছে, যা এখনো বিচারাধীন ৬. বরিশাল সিটি করপোরেশন সংক্রান্ত মামলায়, আর্জি সংশোধনসংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়কে আমলে নিয়ে খারিজ করেছে ট্রাইব্যুনাল। এতে ট্রাইব্যুনালের দ্বিমুখী অবস্থান বোধগম্য হচ্ছে না ৭. মেয়াদসংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিয়েছে; কতদিন মেয়র থাকবেন বা আদৌ মেয়াদ আছে কিনা তা স্পষ্ট নয় ৮. নির্বাচন কমিশনের চিঠিতে কোন প্রকার আইনি জটিলতা না থাকলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। স্পষ্টতই বিতর্কিত রায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতি কোনো নির্দেশনা না থাকা, লিগ্যাল নোটিশ ও রিট পিটিশন বিচারাধীন থাকা সংক্রান্ত আইনি জটিলতা রয়েছে ৯. এই জটিলতা নিরসনে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে ও ১০. আওয়ামী আমলের অবৈধ নির্বাচনগুলোকে বৈধতা দেওয়ার প্রশ্নও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি স্বীকার করে যে, আওয়ামী আমলের নির্বাচনগুলো বৈধ, তবে সরকারের জন্য এসব প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে না।