বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের ছাদে নিয়ে চবি ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে চারুকলা ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আলমাস মাহফুজ রাফিদ নামের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর এর লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, গত ৯ জুলাই চারুকলা ইনস্টিউটিউটের তার সিনিয়র শিক্ষার্থী আলমাস মাহফুজ রাফিদ আমার সাথে আলোচনার কথা বলে পুরাতন কলার (ড. আব্দুল করিম ভবন) ছাদে হুমকি দিয়ে নিয়ে যায়৷ এরপর সেখানে রাফিদ তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে যৌন হয়রানি এবং ধর্ষণের চেষ্টা করে। অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, এর আগের রাতে রাফিদ ভুক্তভোগীকে হুমকি দিয়ে বলে, তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক শুরু করতে হবে নয়তো আমার নামে বিভিন্ন গুজব ছড়াবে। এভাবে সে বারবার আমাকে হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে রাফিদ বলেন, ওই মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের সময়ে তার একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল, যার সঙ্গে তার কোনো প্রেমের সম্পর্ক না থাকলেও মাঝেমধ্যে তারা ঘনিষ্ঠ হতো। এটা সে শুরুতে অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে তার বন্ধু তা স্বীকার করে। বিষয়টি নিয়ে আমি আবারো তার সঙ্গে কথা বলি এবং জানাই তার বন্ধুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। এরপর সে আমার কাছে মাফ চেয়ে অনুরোধ করে যেন এসব ইনস্টিটিউটে জানানো না হয় এবং বলে, আমার সঙ্গেই ভালোভাবে থাকতে চায়। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আরও বলেন, এরপর সে স্বেচ্ছায় আমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছে। পরে আমরা একসঙ্গে খাবার খেয়ে তাকে ট্রেনে তুলে দিই। কিন্তু পরদিন সকালে দেখি সে আমাকে ব্লক করেছে। এখন তার ও ওই বন্ধুর মধ্যে ঘটে যাওয়া কর্মকাণ্ড যেন প্রকাশ না পায় এজন্য সে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে আমাকে হেয় করার জন্য। অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নূরুল হামিদ বলেন, আমরা অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন সেলের নিকট হস্তান্তর করেছি। তারা এটি তদন্ত করে ডিসিপ্লিনারি কমিটি উঠাবেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানা গেছে রাফিদ চবি শাখা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী। তিনি এর আগে শাখা ছাত্রলীগের উপ-গ্রুপ ‘ভার্সিটি এক্সপ্রেস’ (ভিএক্স)-এর কর্মী ছিলেন। এ বিষয়ে জানতে চবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, আমি ওই ছেলেকে চিনি না। ভুক্তভোগী যদি অভিযোগ করে থাকে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

ঢাবির জগন্নাথ হলের ছাদ থেকে পড়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলের ছাদ থেকে পড়ে সঞ্জয় বাড়াইক (২৮) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। সোমবার (১৪ জুলাই) সকালের দিকে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সঞ্জয়ের বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার ‘চা বাগান’ এলাকায়। তিনি ওই এলাকার মনিরুদ বাড়াইকের ছেলে। জগন্নাথ হলের কর্মচারী মানিক কুমার দাস জানান, ভোরে এক দারোয়ান ফোন করে জানান, জগন্নাথ হলের ভেতরে রাস্তার পাশে ওই শিক্ষার্থীর লাশ পড়ে আছে। তাৎক্ষণিক তিনি সেখানে গিয়ে আরও কয়েকজনের সহযোগিতায় রক্তাক্ত অবস্থায় সঞ্জয়কে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে হলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, ওই যুবক ভবন থেকে পড়ে গেছে। তবে তিনি পড়ে গেছেন নাকি লাফ দিয়েছেন তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। হলের প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ পাল বলেন, আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে একজন ক্লিনার কাজ করার সময় ওপর থেকে কিছু পড়ার শব্দ পান। কাছে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় একজনকে পড়ে থাকতে দেখেন। পরবর্তীতে বিষয়টি দারোয়ানকে জানালে তিনি আমাকে অবগত করেন এবং অন্যদের সহায়তায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা প্রথমে তার পরিচয় শনাক্ত করতে পারছিলাম না। পরবর্তীতে শাহবাগ থানা থেকে পুলিশ এসে তার পকেট থেকে একটা নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রশ্ন পায়। তারপর আমার তার সহপাঠীদের কাছ থেকে তার পরিচয় জানতে পারি। তিনি আরও বলেন, ছেলেটি কিছুদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, গত দুদিন ধরে সে হলে ছিল না। আজ ভোর ৪টার দিকে সে হলে আসে এবং ৪টা ১০ মিনিটে হলের ছাদে যায়। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, লাশ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি শাহবাগ থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।

ঢাবিতে ‘জুলাই উইমেন্স ডে’ উদযাপন আজ

আজ সোমবার (১৪ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘জুলাই উইমেন্স ডে’ উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে অডিও-ভিডিও প্রদর্শন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ড্রোন শো-এর আয়োজন করা হচ্ছে। রোববার (১৩ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা আয়োজন বিষয়ে সরকার কর্তৃক গঠিত কমিটির আহ্বায়ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫ শীর্ষক কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথমবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি চলমান রয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে: জুলাই বিপ্লব ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে উপজীব্য করে প্রত্যেক অনুষদে ১টি করে সেমিনার আয়োজন এবং হল, বিভাগ ও ইনস্টিটিউটসমূহের উদ্যোগে পৃথকভাবে আলোচনা সভা/সেমিনার আয়োজন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান: তারুণ্যের কন্ঠস্বর’ প্রতিপাদ্য নিয়ে দু’দিনব্যাপী আন্ত:বিভাগ বিতর্ক উৎসব আয়োজন এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতা নিয়ে শিক্ষার্থীদের রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন প্রভৃতি। এছাড়া, আগামী ১৭ জুলাই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। ৫ আগস্ট বৃহত্তর পরিসরে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানকে আহ্বায়ক করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে ৩টি পৃথক উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কোন দলের হাতে কতজন খুন, দেখা যাবে টিএসসির স্কোরবোর্ডে

আজ থেকে টিএসসিতে একটা স্কোরবোর্ড করে দেওয়া হবে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে কোন রাজনৈতিক দলের হাতে কতজন খুন হয়েছে, সেটা সেখানে দেখা যাবে। বাংলাদেশের মানুষ দেখবে দিনে দিনে কত ঋণ তাদের বাড়ছে।’ শনিবার (১২ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সমাবেশে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা এই ঘোষণা দেন। রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল করে সংগঠনটি। বিন ইয়ামিন মোল্লা প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তাদের ধর্ম হয়ে গেছে, যেদিকে ক্ষমতা, সেদিকে হাওয়া দেওয়া। এই অভ্যাস বাদ দিতে হবে। কোনো দল-মতের তোয়াক্কা না করে স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ক্ষমতায় আসার আগে যদি আপনাদের এই ক্যারেক্টার (চরিত্র) হয়, তাহলে ক্ষমতায় এলে আপনারা কী করবেন? এ সময় ঢাবি শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হোসেন বলেন, জাহেলিয়াত কায়েম করে কোনো সরকার থাকতে পারেনি। ১৪০০ বছর আগে আমরা জাহেলিয়াত দেখেছি, তারা টিকতে পারেনি। আওয়ামী জাহেলিয়াত টিকতে পারেনি, এখন নব্য জাতীয়তাবাদী জাহেলিয়াতও টিকতে পারবে না। ঢাবি শিক্ষার্থী মাহতাব হোসেন বলেন, জুলাই আবার ফিরে আসছে। জুলাই পরবর্তী যে চাঁদাবাজদের ভারতে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম, তারা একটি দলের ওপর ভর করে ফের ফিরে আসছে। জেনে রাখুন- ধর্ষণ, চাঁদাবাজি করে বাংলাদেশের ম্যান্ডেট পাবেন না।

দেশে নতুন করে কাউকে ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠতে দেবো না : রিফাত রশিদ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রশিদুল ইসলাম রিফাত (রিফাত রশিদ) বলেছেন, ফ্যাসিবাদী অবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বিনির্মাণের আকাঙ্ক্ষা থেকে আমরা নতুন বাংলাদেশ করেছি। এ বাংলাদেশে আমরা নতুন করে কাউকে ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠতে দেবো না। শনিবার (১২ জুলাই) বেলা ১১টায় শাহবাগে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর মিটফোর্ডে চাঁদা না দেওয়ায় যুবদল নেতাকর্মীদের হাতে সোহাগ নামে এক ব্যবসায়ী নৃশংস হত্যার ঘটনা এবং সারাদেশে রাজনৈতিক শেল্টারে চাঁদাবাজি, দখলদারি, হামলা ও খুনের পরিস্থিতি নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রিফাত রশিদ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় শেখ হাসিনা, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ বলতো যারা আন্দোলন করছে তাদের মধ্যে কোনো সাধারণ শিক্ষার্থী নেই, সবই ইশরাকে কর্মী, যুবদলের কর্মী, ছাত্রদলের কর্মী, আর সব শিবির। আমাদের জঙ্গি বানানোর জন্য উপদেষ্টা চালানো হয়েছে। অথচ এখন বিএনপির হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে যখন মিছিল হয়, তখন এদের শিবির, জঙ্গি, বিএনপিবিরোধী, বাংলাদেশবিরোধী ও ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে বিতর্কিত করা হচ্ছে। এই ‘ট্যাগবাজি’ যাচ্ছে হাসিনার স্টাইল। বিএনপিকে উদ্দেশ করে রিফাত রশিদ বলেন, হাসিনার বয়ান মাঝে মাঝে স্টাইল সাবস্ক্রাইব কইরেন না। বাংলাদেশের মানুষ বহু আগেই হাসিনার স্টাইল ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ইনামুল হাসান ঘোষণা দেন মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ড ও সারা দেশে রাজনৈতিক শেল্টারে চাঁদাবাজি, দখলদারি, হামলা ও খুনের পরিস্থিতির প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আজ (শনিবার) সন্ধ্যা ৭টায় শাহবাগ মোড়ে মশাল মিছিল কর্মসূচি পালন করবে।

চুয়েটে ছাত্রদলের কমিটি ঘিরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও তীব্র উত্তেজনা

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও সেখানে ছাত্রদলের ৯ সদস্যের একটি শাখা কমিটি গঠন ঘিরে দেখা দিয়েছে তীব্র বিরোধ ও উত্তেজনা। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যায় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত একটি খসড়া কমিটির তালিকা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পরপরই সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা প্রথমে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন, পরে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির নামে দীর্ঘদিন ধরে সহিংসতা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও সিট বাণিজ্যের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হয়েছে। তারা চান না, চুয়েটেও এসব অপসংস্কৃতির পুনরাবৃত্তি ঘটুক। বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিমুক্ত রাখার জন্য তারা সোচ্চার এবং রাজনৈতিক সংগঠনের প্রকাশ্য কিংবা অপ্রকাশ্য কোনো কার্যক্রম তারা মেনে নেবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন। তারা আরও জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৩ সালের ৭ আগস্ট একটি নীতিমালা জারি করে যার মাধ্যমে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবাইকে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া নিষিদ্ধ করা হয়। এই প্রেক্ষাপটে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলেই শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তুলেছেন। তারা অবিলম্বে কমিটি বাতিলের দাবি জানান এবং যাঁরা এ ঘটনায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। ছড়িয়ে পড়া তালিকা অনুযায়ী, ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটিতে সভাপতি হিসেবে রয়েছেন তড়িৎকৌশল বিভাগের ২০১৫–১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াসিফ রাশেদ এবং সাধারণ সম্পাদক জৈব চিকিৎসা প্রকৌশল বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ তৌফিক হাসান চৌধুরী। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন, সহসভাপতি চন্দন কুমার দাশ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তৌসিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান আল সাবিত ও সাখাওয়াত হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লব হোসাইন এবং প্রচার সম্পাদক আহমেদ ইনতিসার। এ বিষয়ে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন বলেন, ‘এটি একটি খসড়া কমিটি ছিল, আপাতত সেটি স্থগিত করা হয়েছে। শুক্রবার নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।’ রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষিত ক্যাম্পাসে কমিটি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের রাজনীতি করার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলেই তা নিষিদ্ধ করতে পারে না।’

ইডেন কলেজ অধ্যক্ষের কার্যালয় তালাবদ্ধ করল শিক্ষার্থীরা

রাজধানীর স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইডেন মহিলা কলেজে বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না। প্রতিষ্ঠানটির ইংরেজি সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক জাকির হোসেনের বদলি আটকাতে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকালে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা দিয়েছে ইংরেজি সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, সরকারি কলেজ পর্যায়-২ থেকে ইংরেজি সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক মো. জাকির হোসেকে তিতুমীর কলেজে সংযুক্ত শিক্ষক হিসেবে বদলির নোটিশ এলে বদলি প্রত্যাহারের দাবিতে কলেজ চত্বরে নানা কর্মসূচি নিয়ে কয়েক দিন অবস্থান করছে শিক্ষার্থীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ জুলাই মাউশির মনিটরিং অ্যান্ড ইভাল্যুয়েশন উইং থেকে নোটিশ দেয় ছাত্রলীগ এবং তার প্রাইভেট টিউশনের ছাত্রীদের নিয়ে মব ভায়োলেন্সের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন। অন্যদিকে আশানুরূপ ফলাফল না পেয়ে আজ বিকেলে অধ্যক্ষর কার্যলয়ে তালা দেয় শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলছে, ইংরেজি সাহিত্য বিভাগে বরাবরই রয়েছে শিক্ষক সংকট। সে সংকট নিরসনে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে বিভাগের সবচেয়ে কার্যকরি শিক্ষাকের বদলি মোটেও কাম্য না। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রিমা আক্তার জানান, আমাদের জাকির স্যারের বদলি প্রত্যাহার করতেই হবে। তার সঙ্গে এটা অন্যায় হচ্ছে। এটা আমরা কিছুতেই মেনে নিব না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইডেন কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামছুন নাহার বলেন, শিক্ষার্থীরা যেটা চাচ্ছে তা সম্বন্ধে আমাদের কিছু করার নেই। মাউশি আদেশ দিয়েছে জাকির হোসেনের বদলির ব্যাপারে। তবে তাদের পক্ষ থেকে পরবর্তী যে নোটিশ আসছে তা নিয়ে কথা বলেছি, যতটুকু করার তা আমরা করছি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ খুলছে ১২ জুলাই

পাঁচ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ১৮ দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজে ফের শিক্ষা কার্যক্রম চালুর নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি খুলে দেওয়া হচ্ছে মেডিকেল কলেজের হোস্টেল। মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী, ঢাকা মেডিকেল কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম আগামী ১২ জুলাই শনিবার থেকে শুরু হবে। আর মেডিকেল কলেজের হোস্টেলগুলো খুলে দেওয়া হবে ১১ জুলাই সকাল ৮টা থেকে। মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মো. কামরুল আলম বুধবার (৯ জুলাই) বলেন, “শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরতে চায়। হোস্টেল এবং কলেজ বন্ধ থাকায় তাদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।” নিরাপদ আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে গত মে মাস থেকে ক্লাস বর্জন করে আসছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ দাবিতে ২১ জুন তারা মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেন। ওই কর্মসূচি চলার মধ্যেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ২২ জুন দুপুর ১২টার মধ্যে হোস্টেল ত্যাগ করতে বলা হয়। তবে সেদিন সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা বলেন, তারা হোস্টেল ছাড়বেন না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থান করবেন। ২৩ জুন বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের ৭ সদস্যের একটি দল সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। তাদের সঙ্গে ছিলেন অধ্যক্ষ কামরুল আলম। স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের কথা থাকলেও তার বদলে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমানের সঙ্গে তারা বৈঠক করেন। সেখান থেকে বের হয়ে মেডিকেল কলেজের কে-৭৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তাদের বৈঠক ‘ফলপ্রসূ’ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের একটি ‘বিস্তারিত আলাপ’ প্রয়োজন ছিল, সেটা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী তাদের কথা ‘মনোযোগ দিয়ে’ শুনেছেন। তবে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা পাননি। “বাজেট বাস্তবায়নের সময় এবং বিকল্প আবাসনসহ কিছু বিষয়ে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। আমাদের বলেছেন, পরে জানানো হবে। আমরা সবকিছুর জন্য অপেক্ষা করছি। তবে আমরা এখনও ক্লিয়ার ইনস্ট্রাকশন পাইনি কীভাবে কী হচ্ছে। এ কারণে এখনও ক্লাসে ফিরছি না। কিন্তু আমাদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম যেন ব্যাহত না হয় আমরা চাই দ্রুত এটার সমাধান হোক। আমরা ক্লাসে ফিরে যেতে চাই।” পরদিন শিক্ষার্থীরা জানান তারা ক্লাসে ফিরছেন না। সেদিন থেকে মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম এবং হোস্টেলগুলো বন্ধ ছিল। শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হল– ১. নতুন ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস নির্মাণের জন্য দ্রুত বাজেট পাস করতে হবে। ২. ছাত্রাবাস নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। ৩. নতুন একাডেমিক ভবনের জন্য আলাদা বাজেট পাস করতে হবে। ৪. আবাসন ও অ্যাকাডেমিক ভবনের বাজেট পৃথকভাবে অনুমোদন করতে হবে ও দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। ৫. সব প্রকল্প ও কার্যক্রমের অগ্রগতি শিক্ষার্থীদের সামনে স্বচ্ছভাবে উপস্থাপনের জন্য শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ঠিক করতে হবে।

চবি ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সেক্রেটারি পারভেজ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রশিবিরের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী ও সেক্রেটারি পদে মনোনীত হয়েছেন একই শিক্ষাবর্ষের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থী পারভেজ। নতুন এই কমিটি চলতি বছরের বাকি সময়ের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) চট্টগ্রাম নগরের চকবাজারে এক জরুরি সদস্য সমাবেশে এই নতুন কমিটি গঠন করা হয়। ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান সম্পাদক ডা. উসামাহ রাইয়ানের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম। সংগঠনের সূত্রে যানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি নির্বাচন উপলক্ষে কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট গণনা শেষে সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্ত মোহাম্মাদ আলীকে শাখা সভাপতি হিসেবে ঘোষণা ও কেন্দ্রীয় সভাপতির প্রতিনিধি হিসেবে সাংবিধানিক শপথ পাঠ করান সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম। পরবর্তীতে সদস্যদের পরামর্শের ভিত্তিতে মোহাম্মাদ পারভেজকে সেক্রেটারি হিসেবে মনোনয়ন দেন নবনির্বাচিত সভাপতি মোহাম্মাদ আলী।

ঢাবিতে একযোগে ১২ নেতাকে অব্যাহতি দিল ছাত্রদল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদলের ১২ নেতাকর্মীকে একযোগে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ‎ সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় ছাত্রদল। সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, সাংগঠনিক দায়িত্ব অবহেলার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্য (সহ-সাধারণ সম্পাদক পদমর্যাদা) শহীদুল আলম মামুন, সদস্য জুনায়েদ আলম বাগদাদ, আকিউজ্জামান কোয়েল, আলম বাদশা, মো. জোবায়ের আলম চৌধুরী, ফাহিম আহমেদ, সালেহ মাহমুদ, মো. নাজমুল ইসলাম, রায়হান হোসেন, সিফাত উল ইসলাম, আব্দুল্লাহ রায়হান এবং মাশফিক আলম ভূইয়াকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো । বিজ্ঞপিত্ততে আরও জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির আজ এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন। এর আগে শুক্রবার (৪ জুলাই) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের চারজন যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ১১ জন সদস্যকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ‎

‘আমরা আপনাকে বসিয়েছি, আপনি আমাদের কথা শুনতে বাধ্য’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতারের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাগ্‌বিতণ্ডার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, উপাচার্যের কক্ষে তার আসন ঘিরে দাঁড়িয়ে আছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। চলছিল বাগ্‌বিতণ্ডা। এ সময় একজন বলেন, ‘আপনি নিজ যোগ্যতায় বসেননি, আপনাকে আমরা বসিয়েছি। আপনি আমাদের কথা শুনতে বাধ্য।’ শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলের এই ঘটনাটির একটি চার মিনিটের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। জানা যায়, চবি সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষক কুশল বরণ চক্রবর্তীর পদোন্নতি সংক্রান্ত সাক্ষাৎকারকে কেন্দ্র করে এই উত্তেজনার সূত্রপাত। সাক্ষাৎকার বাতিল ও শিক্ষককে বরখাস্তের দাবিতে দুপুরের পর থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় কয়েকটি ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরে তারা উপাচার্য কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান নেয় এবং তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ইসলামী ছাত্রশিবির ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক দুই নেতা শাখাওয়াত হোসেন ও তাহসান হাবীব সরাসরি উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে বক্তব্য দেন। তাহসান হাবীব বলেন, ‘স্যার, আপনাকে আমরা বসিয়েছি। আপনি এখানে নিজ যোগ্যতায় বসেননি।’ এ সময় উপাচার্য প্রতিবাদ করে বলেন, ‘না’, এরপর ছাত্রনেতারা উচ্চস্বরে চিৎকার শুরু করেন। শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এখানে আপনি নিজ যোগ্যতায় বসেননি।’ বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে তাহসান হাবীব উপাচার্যকে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘আপনি কেন ফ্যাসিবাদের দোসরদের প্রমোশন দিচ্ছেন? আমাদের রক্তের সঙ্গে, আমাদের বিপ্লবের সঙ্গে বেইমানি করে....। ঘটনার সময় উপাচার্য উপস্থিত সাংবাদিকদের ফোন বন্ধ রাখতে বলেন। এ বিষয়ে কথা বলতে উপাচার্যের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। এদিকে, নিজের মন্তব্য নিয়ে পরে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাহসান হাবীব। তিনি বলেন, ‘উপাচার্য যোগ্য নন, এমনটা বলিনি। বলতে চেয়েছি, তিনি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আসেননি। আন্দোলনের ফসল হিসেবে এসেছে এই প্রশাসন। সেই শহীদের রক্তকে অস্বীকার করলে সেটা আমরা মেনে নেব না। পরবর্তীতে বিষয়টি উপলব্ধি করে আমি উপাচার্যের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি।’ এদিকে তাহসান হাবীব বর্তমানে ছাত্র অধিকার পরিষদের সঙ্গে আর জড়িত নন বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির বর্তমান আহ্বায়ক তামজিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘অন্য একটি সংগঠনের প্রভাব থাকায় তাহসানকে অনেক আগেই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’ সাবেক শিবির নেতা শাখাওয়াত হোসেনও বলেন, ‘উত্তেজনার বশে কথাগুলো বলে ফেলেছেন তাহসান। সেভাবে ভেবেচিন্তে বলা হয়নি।’ ভিসি অফিসে উত্তেজিত ব্যক্তি ইসলামী ছাত্রশিবিরের অফিস সম্পাদক হাবিবুল্লাহ খালেদ বলেন, ‘আমরা ভিসি অফিসে ঢোকার পরই, স্যারের থেকে ভালো ব্যবহার পায়নি। তারপর আমরা থাকা অবস্থায় কুশল বরণ চলে আসে, তখন আমি উত্তেজিত হয়ে বলি, খুনি কেন আপনার অফিসে আসলো, স্যার।’ উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় নেওয়ার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিনই পদত্যাগ করেন উপাচার্য, দুই সহ-উপাচার্য, ছাত্র উপদেষ্টা, পরিবহন প্রশাসক, প্রক্টরিয়াল বডির ১০ সদস্য ও ১৪টি হলের প্রাধ্যক্ষ। পরে নতুন উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যান। একপর্যায়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। চবি অধ্যাদেশ অনুযায়ী উপাচার্য নিয়োগ হওয়ার কথা সিনেটের মাধ্যমে। তবে তা দীর্ঘদিন ধরেই উপেক্ষিত। কয়েক মেয়াদ ধরে প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় নয়, রাজনৈতিক বিবেচনায় উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ইবিতে ছাত্রদল নেতার চাঁদা দাবি, লিখিত অভিযোগ দোকানদারের

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দুই ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। চাঁদা না দিলে দোকান বন্ধ করে দেওয়াসহ দেখে নেওয়ার হুমকি দেন বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী দোকানদার আহাদ ইসলাম। শনিবার (৫ জুলাই) ভুক্তভোগী দোকানদার আহাদ ইসলাম ব্যবসার নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। চাঁদা দাবি করা দুই ছাত্রদল নেতা হলেন- ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী উল্লাস মাহমুদ এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন। লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী উল্লেখ করেন, আমবাগান সংলগ্ন (আপনার ক্যাম্পাসে) চায়ের দোকানদার আমি। দীর্ঘদিন ব্যবসা করি। কয়েকদিন আগে ছাত্রদলের এক কর্মী উল্লাস আমাকে দোকান বন্ধ করার জন্য জানায়। ৫ জুলাই দুপুর ১টার সময় তার সাথী সাব্বির নামে একজনকে সাথে নিয়ে আমার দোকানে আসে এবং তাদের কথামতো দোকান বন্ধ না করায় চাঁদা দাবি করে। যদি চাঁদা না দিই পরবর্তীতে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এমতাবস্থার আমি ব্যবসায়িক কাজে অনিরাপদ বোধ করছি। এ বিষয়ে দোকানদার আব্দুল আহাদ বলেন, উল্লাস মাহমুদ এবং সাব্বির নামে দুইজন দোকানে এসে কিছু টাকা দাবি করে। টাকা দিলে ক্যাম্পাসে কোনো সমস্যা হবে না, বড় ভাইও খুশি থাকবে। অভিযুক্ত সাব্বির হোসেন বলেন, এই বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমি সকালে ক্যাম্পাসে গিয়ে আলমগীর ভাইয়ের দোকানে বসে চা খাইছি। তারপর প্রশাসন ভবনে ঘুরে ঝিনাইদহ চলে এসেছি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি সত্য নয়। এ বিষয়ে উল্লাস মাহমুদ বলেন, আমার নামে চাঁদা দাবির যে অভিযোগ উঠেছে, আমি তার কিছুই জানি না। এমনকি অভিযোগকারীকেও আমি ভালোভাবে চিনি না। ইবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহেদ আহম্মেদ বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। ছাত্রদল করে চাঁদাবাজির কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ এমন করে থাকে আমরা সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেব। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনককেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাব। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, অফিসে কয়েকটা অভিযোগ এসেছে। অফিস থেকে আমাকে জানালো এক দোকানদান অভিযোগ দিয়ে গেছে। অফিস টাইম শেষ হওয়ার কারণে দেখার সুযোগ হয়নি। আগামীকাল রোববার ক্যাম্পাস বন্ধ। সোমবার এসে অফিস সময়ে দেখবো। তারপর বাকি ব্যবস্থা নেব।

জুলাই আন্দোলনে ৭০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করা অধ্যাপককে ‘অধ্যক্ষ’ হিসেবে নিয়োগ

জুলাই আন্দোলনে তিতুমীর কলেজের ৭০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বাদী অধ্যাপক মালেকা আক্তার বানুকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। বুধবার (২ জুলাই) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক অফিস আদেশে এ এই তথ্য জানানো হয়। এর আগে, গত বছরের ২৫ জুলাই সরকারি তিতুমীর কলেজের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মালেকা আক্তার বানু বাদী হয়ে বনানী থানায় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কলেজ ভাঙচুরের মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৫০০-৭০০ জনকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে অধ্যাপক মালেকা আক্তার বানু উল্লেখ করেন, গত (১৮ জুলাই) সরকারি ছুটি থাকায় ক্লাস ও ছাত্রাবাস বন্ধ ছিল। সেদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে ৫০০-৭০০ জন অজ্ঞাতনামা বিএনপি, জামায়াত, শিবির ও তার অঙ্গ সংগঠনের দুষ্কৃতকারী আসামিরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নাশকতা করার লক্ষ্যে বেআইনি জনতাবদ্ধে আবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল নিয়ে সরকারি তিতুমীর কলেজের সামনে এসে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। তিতুমীর কলেজের মেইনগেট বন্ধ থাকায় আসামিরা সরকারি তিতুমীর কলেজের গেট লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে আসামিরা সরকারি তিতুমীর কলেজের মেইনগেট ভেঙে অনধিকার প্রবেশ করে অন্তর্ঘাতমূলক কাজের মাধ্যমে ভীতি সৃষ্টি করে কলেজের মূল ফটক ভেঙে অগ্নিসংযোগ ঘটায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অফিসিয়াল ছবি, কলেজ ক্যাম্পাসের ৪০টি সিসি ক্যামেরা, অধ্যক্ষের অফিস কক্ষের চেয়ার, টেবিল, জানালা, সোফাসেট, আলমারি, জানালার কাচ, সিসিটিভি মনিটর, আইপিএস, ল্যাপটপ, টেলিফোন সেট, এসি এবং সব সরকারি নথিপত্রসহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র এবং উপাধ্যক্ষের অফিসের ১টি প্রিন্টার ও ১টি ডেক্সটপ ভাঙচুর ও বিনষ্ট করে। এতে বলা হয়, কলেজের পশ্চিম পাশে অবস্থিত ছাত্র সংসদের ৩টি কক্ষের দরজা, জানালা, চেয়ার, টেবিল, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অফিসিয়াল ছবি ভাঙচুর করে। ‘হৃদয়ে মুজিব’ নামক বঙ্গবন্ধু কর্নারে রক্ষিত বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধু পরিবার, জাতীয় চার নেতাসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের আনুমানিক ১৫০টি ছবি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুর্লভ প্রায় ৫০০টি ছবি, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ৫০০টির অধিক বইসহ, টেবিল, চেয়ার, লাইট, সিসি ক্যামেরা, আইপিএস, সরকারি তিতুমীর কলেজের সেন্ট্রাল ইন্টারনেট সার্ভার, শেখ রাসেল পুষ্প কানন, জয় বাংলা মুক্ত মঞ্চ, কলেজের ছাত্র পরিবহনের ১টি বাসের সব গ্লাস এবং পুরাতন বিজ্ঞান ভবনের নিচতলার চারদিকে কাচের গ্লাস পরিবেষ্টিত সবগুলো জানালা ভাঙচুর করে। এতে আনুমানিক এক কোটি টাকার ক্ষতিসাধন করে। এছাড়া অধ্যক্ষের অফিস কক্ষ হতে ৩টি মনিটর, ৪টি হার্ডডিস্ক, ছাত্র সংসদের কক্ষ থেকে ১টি ডেস্কটপ, ২টি ল্যাপটপ, ১টি টেলিভিশন, ৪টি সিলিং ফ্যান, ৬টি স্ট্যান্ড ফ্যান, ৪টি টেবিল ফ্যান, ২টি আলমারি, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সরঞ্জাম, পানির ফিল্টার, তৈজসপত্রসহ অনুমান পঞ্চাশ লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। এতে আরও বলা হয়, পরবর্তী সময়ে একই তারিখে সময় আনুমানিক রাত ১০টা নাগাদ আসামিরা সরকারি তিতুমীর কলেজের শহীদ আক্কাছুর রহমান আঁখি ছাত্রাবাসের গেট ভেঙে অনধিকার প্রবেশ করে তিনতলা বিল্ডিংয়ের ৪৬টি কক্ষের দরজা, জানালা, শিক্ষার্থীদের চেয়ার, টেবিল, খাট, আলমারি, বুক সেলফ, ছাত্রাবাসের ভেতরে পার্কিংয়ে থাকা ১২টি মোটরসাইকেল, ১০টি বাইসাইকেলসহ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার্য অন্যান্য আসবাবপত্র ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে আনুমানিক পঞ্চাশ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন হয়। ৪০টি ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, ১২টি মোবাইল ফোন, ৫০টি টেবিল ফ্যান, ৪৬টি সিলিং ফ্যান, ২টি টেলিভিশন, ২০টি দেওয়াল ঘড়ি, ৭ শিক্ষার্থীর তালাবদ্ধ করা টেবিলের ড্রয়ার ভেঙে নগদ টাকাসহ আনুমানিক চল্লিশ লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। মামলার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে অধ্যাপক মালেকা আখতার বানুর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সরকার পতনের পর তিনি নিজের ভুল বুঝতে পেরে মামলা তুলে নিয়েছেন। তবে কবে মামলা তুলে নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, তার তারিখ মনে নেই। এ বিষয়ে তিতুমীর কলেজের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতা নীরব হাসান সুজন বলেন, আমরা সরকারে থাকা উপদেষ্টা পর্যন্ত জানিয়েছি এবং তার পদত্যাগ দাবি করেছি। কিন্তু কলেজের কতিপয় ব্যক্তি তার কাছ থেকে অসৎ উপায়ে সুবিধা নিয়ে তাকে আশ্রয় দিয়েছে।

রাবিতে অধ্যাপকের সঙ্গে সহকর্মীর শারীরিক অপ্রীতিকর আচরণ, তদন্তের দাবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের এক সিনিয়র অধ্যাপককে শারীরিকভাবে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে একই অনুষদের এক সহযোগী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার, অনুষদের ডিনের কক্ষে অনুষ্ঠিত ২৯তম সাধারণ সভায়। অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুস ছালাম চারুকলা অনুষদের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।অভিযোগকারী অধ্যাপক আবদুস সোবাহান (চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগ) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচারকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, সভায় সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স ও চারুকলায় ডিপ্লোমা-সার্টিফিকেট কোর্স চালুর প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন তিনি। তার মতে, এসব কোর্স চালু হলে চারুকলা অনুষদের মৌলিক স্বকীয়তা নষ্ট হবে। তিনি বলেন, এসব প্রোগ্রাম অতীতে "ফ্যাসিস্ট সরকার" সময় চালু হয়েছিল এই মন্তব্যকে ঘিরে অনুষদের একাধিক শিক্ষক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। সোবাহান অভিযোগ করেন, কথোপকথনের এক পর্যায়ে সহযোগী অধ্যাপক আবদুস ছালাম তাকে সভা থেকে বের করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। এরপর উত্তেজনার মধ্যে সোবাহান তার দিকে এগিয়ে প্রশ্ন করলে, ছালাম তাকে কোমর জড়িয়ে তুলে জোরপূর্বক চেয়ারে বসিয়ে দেন। সোবাহানের ভাষায়, “সব সহকর্মীর সামনে এমন শারীরিক আচরণ একজন সিনিয়র অধ্যাপকের জন্য অত্যন্ত অপমানজনক এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধির চরম লঙ্ঘন।” এদিকে অভিযুক্ত আবদুস ছালাম বলেন, “আমি তাকে চেয়ারে বসিয়েছি ঠিক, তবে সেটা লাঞ্ছনার উদ্দেশ্যে নয়। সভায় তিনি একা ভিন্নমত তুলে ধরে উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন এবং রাজনৈতিক বক্তব্য দেন, যা সভার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কহীন ছিল। পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য আমি কেবল পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি।” ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও চারুকলা অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী জানান, সোবাহান সভার এজেন্ডার বাইরে গিয়ে উত্তেজিতভাবে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তখন সহকর্মীরা তাকে শান্ত থাকতে অনুরোধ করলে, তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সহযোগী অধ্যাপক ছালামসহ কয়েকজন তাকে তার জায়গায় বসিয়ে দেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের সিদ্ধান্ত জানায়নি, তবে এ ঘটনা শিক্ষক মহলে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে।

বাকৃবিতে ৩৮৮ কোটি ২৯ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য ৩৮৮ কোটি ২৯ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন পেয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা দফতরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৪৫৮ কোটি ২৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকার একটি প্রস্তাবিত বাজেট প্রণয়ন করেছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পক্ষ থেকে ৩৮৮ কোটি ২৯ লাখ টাকার সিলিং নির্ধারণ করে দেওয়ার পর সে অনুযায়ী বাজেট পুনর্গঠন করা হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় নতুন অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। বুধবার (২ জুলাই) বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মূল বাজেট উপস্থাপন করেন। জানা যায়,২০২৫-২৬ অর্থবছরের এই বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বরাদ্দ থেকে ৩৭৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয়ের উৎস থেকে ১৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা আয় হিসেবে ধরা হয়েছে। এই বাজেটে বেতন-ভাতা ও বিশেষ সুবিধা বাবদ ১৮৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, সাধারণ পণ্য ও সেবা খাতে ৫৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, মেরামত ও সংরক্ষণ বাবদ ৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা, পেনশন ও অবসর সুবিধা বাবদ ১১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা, গবেষণার জন্য ১৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা খাতে ৭৫ লাখ টাকা এবং অন্যান্য ও মূলধন অনুদানসহ বিভিন্ন খাতে সর্বমোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৮৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা। এছাড়াও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট অনুযায়ী ৩৭৯ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, গত বছরের তুলনায় এবারের বাজেটে ৭.৭১ শতাংশ বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজেট আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাস্তব চাহিদার ভিত্তিতে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। এ লক্ষ্যে পরবর্তীতে সংশোধিত বাজেট প্রণয়নের সময় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি বরাদ্দ পুনর্বিন্যাসের অনুরোধ জানানো হয়।

৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করলো ছাত্রশিবির

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। সোমবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনে শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম সাদ্দাম, অফিস সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাহিদুল ইসলাম। শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, শহীদদের নিয়ে যখন বিভিন্ন মহল দলীয়করণ ও ক্রেডিটের রাজনীতি করার চেষ্টা করছে, ঠিক তখন জুলাই স্পিরিট ধরে রাখতে ছাত্রশিবির সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময় থেকে আজ অবধি ছাত্রশিবির ধারাবাহিকভাবে জুলাই অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে নানাবিধ অর্থবহ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গায়েবানা জানাজা, কবর জিয়ারত, শহীদ পরিবারের খোঁজখবর, সহযোগিতা, ঈদ ও বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে শহীদ পরিবারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, ‘ফ্রেমবন্দি ৩৬ জুলাই’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, গণহত্যার বিচারের দাবিতে সপ্তাহব্যাপী আন্দোলন, জুলাই স্মৃতিলিখন প্রতিযোগিতাসহ ছাত্রশিবির ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। এই নেতা বলেন, এরই অংশ হিসেবে জুলাইয়ের স্মৃতিকে ধারণ, গণহত্যার বিচার নিশ্চিতকরণ, জাতীয় ঐক্য সুসংহত করতে সততা ও দক্ষতায় প্রজন্ম গড়ার প্রতিজ্ঞায় ‘জুলাই জাগরণ নব উদ্যমে বিনির্মাণ’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করছি। ১. সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, রিসার্চ কনফারেন্স, আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন ২. শহীদদের কবর জিয়ারত, শহীদ পরিবার ও আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় ৩. শাখাভিত্তিক জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে ‘জুলাই দ্রোহ’ শিরোনামে বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন ৪. সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক প্লেসে ‘জুলাই জাগরণ নব উদ্যমে বিনির্মাণ’ শীর্ষক আলোকচিত্র ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী এবং কালচারাল ফেস্ট আয়োজন ৫. জুলাই গ্রাফিতি অঙ্কন ৬. জুলাইয়ের গল্প ও স্মৃতি বলা, স্মৃতিলিখন, বক্তব্য, রচনা, বিতর্ক, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা প্রভৃতি আয়োজন ৭. শহীদদের নামে লাইব্রেরি/পাঠাগার প্রতিষ্ঠা ৮. শহীদ পরিবার, আহত ও আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী গাজীদের নিয়ে ‘ত্যাগীদের চোখে আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সাক্ষাৎকার গ্রহণ ও পডকাস্টের আয়োজন ৯. জুলাইয়ের ওপর সাহিত্য সাময়িকী ও বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ ১০. জুলাই স্মৃতি লিখন প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান ও জুলাই প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন ও প্রদর্শনী। এবং ১১. ‘Think Back to 36 July’ শিরোনামে ৩৬ দিনব্যাপী অনলাইন ক্যাম্পেইন। কর্মসূচিগুলো শিবিরের কেন্দ্র থেকে শুরুর করে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে ৩৬ দিনব্যাপী পালন করা হবে।

মহানবী (সা.)-কে কটূক্তি অভিযোগে জাবি শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার

হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটূক্তি করার অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের (৫০তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী তৌফিক ইসলাম নাবিলকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে গঠিত হয়েছে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি। সোমবার (৩০ জুন) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবমাননাকর মন্তব্য করে তৌফিক ইসলাম নাবিল ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন। এতে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ২৯৫(ক) ধারা এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ ২০১৮-এর ৪(১)(খ) ধারার লঙ্ঘন হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেন। একই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, "অসদাচরণের" অভিযোগে ঘটনার তদন্ত ও সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক মো. শামছুল আলমকে সভাপতি করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম, ১৩ নম্বর ছাত্রী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. এমদাদুল ইসলাম এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার (সাধারণ প্রশাসন) মো. মাহতাব-উজ-জাহিদ (সদস্য-সচিব)। গত ২৮ জুন তৌফিক ইসলাম নাবিলের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যসহ একটি স্ক্রিনশট সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। ওইদিন রাতেই তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বহিষ্কার দাবি জানায়। পরদিন ২৯ জুন শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র দেন এবং শান্তিপূর্ণ ও সহনশীল শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে দোষীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে যত আয়োজন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ১০৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার (১ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে এই দিবস উদযাপন করা হবে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে দেওয়া তথ্যমতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান সকাল ১০টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সম্মুখে পায়রা চত্বরে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। কর্মসূচি অনুযায়ী এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শোভাযাত্রাসহ স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে সমবেত হবেন। সেখান থেকে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হবে। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অ্যালামনাই, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ নেবেন। সকাল ১০টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সম্মুখে পায়রা চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলোতে পতাকা উত্তোলন এবং কেক কাটা হবে। এ সময় সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জাতীয় সংগীত ও উদ্দীপনামূলক দেশাত্মবোধক গান পরিবেশিত হবে। এছাড়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অন্য একটি সংগীত পরিবেশিত হবে। সকাল সাড়ে ১০টায় ছাত্র-শিক্ষককেন্দ্র মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের প্রতিপাদ্য ‘বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় আলোচনা সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। আলোচনা সভার শুরুতে দিবসটি উপলক্ষে প্রকাশিত ‘স্মরণিকা’র মোড়ক উন্মোচন করা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ক্লাস বন্ধ থাকবে, তবে পরীক্ষা যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আগামীকাল সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত নীলক্ষেত ও ফুলার রোড সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে উপাচার্য ভবন, কার্জন হল, কলা ভবন ও ছাত্র-শিক্ষককেন্দ্রসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সড়কে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।

শহীদ জিয়ার আদর্শে নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান উপাচার্যের

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেছেন, ভবিষ্যতে যে রাজনৈতিক দলই ক্ষমতায় আসুক, যদি তারা শহীদ জিয়াউর রহমানের দর্শন অনুসরণ করে, তাহলে সঠিক পথেই থাকবে। তিনি বলেন, "শুধু জিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী নয়, তার আদর্শকেও লালন করতে হবে। তাহলেই তিনি মানুষের হৃদয়ে চিরকাল জীবিত থাকবেন।" রোববার (২৯ জুন) শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী কর্মকর্তা ও কর্মচারী ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। উপাচার্য আরও বলেন, "জুলাইয়ের পর যেন কেউ পেছনে ফিরে না যায়। জিয়ার নীতি ও আদর্শকে সামনে রেখে জনগণের কল্যাণে কাজ করলে তবেই একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।" তিনি তার বক্তব্যে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের দিকেও ইঙ্গিত করে বলেন, "রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক জনগণ, কিন্তু ১৯৭১ ও ২০০৯ সালের পর রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ কিছু গোষ্ঠীর হাতে চলে যায়। অনেকে সুবিধাভোগী হয়ে ওঠেন। অথচ জিয়াউর রহমান দায়িত্ব নেওয়ার পর নিজেকে জনগণের সেবক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং মাত্র তিন বছরে দেশে গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে তোলেন। তার প্রণীত দর্শন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক মাইলফলক হয়ে থাকবে।" সভায় সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি আব্দুল মঈদ বাবুল। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এম. এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. মতিনুর রহমান, ড. এমতাজ উদ্দিন, ড. রফিকুল ইসলাম, ড. আলিনুর রহমান, প্রক্টর ড. শাহিনুজ্জামান এবং ছাত্রদল শাখার আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ।

ইবির বাস চাপায় পুলিশ সদস্য নিহত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী বহণকারী বাসচাপায় এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহত পুলিশের কনস্টেবল হাফিজুর রহমান পাবনার চাটমোহর উপজেলার জাগরকোল গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে। শনিবার সকালে কুষ্টিয়ার ভাদালিয়া এলাকায় কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, সকাল ১০ টার দিকে কুষ্টিয়ার জেলখানা মোড় থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘বাতায়ন’ বাস ছেড়ে আসে। এ সময় কুষ্টিয়া সদরের ভাদালিয়া এলাকায় কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করছিলেন কনস্টেবল হাফিজুর রহমান। একটি ট্রাককে ওভারটেক করতে গিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবাহী বাসটি হাফিজুর রহমানকে চাপা দেয়। পরে আহত অবস্থায় হাফিজুরকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কুষ্টিয়ার চৌড়হাস হাইওয়ে থানার ওসি সৈয়দ আল মামুন জানান, থানার সামনে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করছিলেন কনস্টেবল হাফিজ। এসময় কুষ্টিয়ার দিক থেকে আসা ইসলামী বিশ্বিবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বহণকারী বাসটি একটি ট্রাককে ওভারটেক করতে গেলে রাস্তার পাশে থাকা পুলিশ কনস্টেবল হাফিজকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। বাসটি জব্দ করে থানায় নেওয়া হয়েছে। চালক পলাতক রয়েছেন। লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ প্রশাসক অধ্যাপক ড. আব্দুর রউফ বলেন, আমি বর্তমানে ক্যাম্পাসে নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আমাদের প্রতিনিধি ঘটনাস্থল ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে গিয়েছিলো। আমরা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এ বিষয়ে রোববার তাদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করবো।

জাবি সিনেট অধিবেশনে আওয়ামীপন্থি সদস্যদের ঘিরে উত্তেজনা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৪২তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আওয়ামী লীগপন্থি সিনেটরদের প্রবেশ ঠেকাতে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শনিবার (২৮ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সিনেট হলের প্রবেশপথে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের সেখানে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। তারা ‘ফ্যাসিবাদের দোসররা হুঁশিয়ার’, ‘ফ্যাসিবাদের ঠিকানা, এই সিনেটে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিক-উর-রহমান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক যুগল কৃষ্ণ দাস এবং বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক নীগার সুলতানা সিনেট হলে প্রবেশ করলে শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্দেশে স্লোগান দেন। এক পর্যায়ে তারা হল ত্যাগ করেন। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের জাবি শাখার সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব আহসান লাবিব বলেন, সিনেটের নামে আওয়ামী পুনর্বাসন আমরা মেনে নেব না। চিহ্নিত আওয়ামী দোসর ও গণঅভ্যুত্থানবিরোধীদের অংশগ্রহণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা কোনো পরিস্থিতিতেই তাদের প্রবেশ করতে দেবো না। এদিকে, বিকেল ৩টায় সিনেট অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, প্রায় সোয়া একঘণ্টা পরে বিকেল সোয়া ৪টায় অধিবেশন শুরু হয়েছে।

ঢাবির হলে ধূমপানে জরিমানা, মাদক সেবন করলে বহিষ্কার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্যার এ এফ রহমান হলে প্রকাশ্যে ধূমপান করলে ২০০ টাকা জরিমানা এবং ইয়াবা, গাঁজা বা অন্য কোনো মাদক সেবনের প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীকে হল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন হলের প্রাধ্যক্ষ ড. কাজী মাহফুজুল হক (সুপণ)। শুক্রবার (২৭ জুন) জুমার নামাজের পর হল মসজিদে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ ঘোষণা দেন। প্রাধ্যক্ষ বলেন, যদি কোনো শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগের প্রমাণ মেলে, তবে তার অভিভাবকের উপস্থিতিতে তাকে হল থেকে বহিষ্কার করা হবে। আর কেউ প্রকাশ্যে ধূমপান করলে প্রচলিত আইনে ২০০ টাকা জরিমানা করা হবে। তার এমন ঘোষণায় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন লক্ষ্য করা যায়। তিনি বলেন, তোমরা একাত্তর দেখোনি কিন্তু আমরা যারা ৯০-এর জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছি, জানি এই সময়টা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যারা ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নিয়ে বাংলাদেশে এক নতুন পর্বের সূচনা করেছি, তাদের কাছে জুলাই যেরকম গুরুত্বপূর্ণ তেমনি একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কাছেও একাত্তর সমান গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তোমাদের ধন্যবাদ যে, তোমরা কোনো ধরনের মব সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত না। বিগত সময়ে যেমন সাইকেল চোরকে ধরিয়ে দিয়েছিলে- আমি তাকে হল থেকে বের করে দিয়েছি। তেমনি তোমরা আমাকে অবগত করেছো বলেই আজকে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ প্রসঙ্গে মতামত জানতে চাইলে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, প্রাধ্যক্ষ কর্তৃক নেওয়া এ রকম সিদ্ধান্ত সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। তার এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই আমাদের হলে আরও বেশি শিক্ষা ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতে সহায়ক হবে। উল্লেখ্য, স্যার এ এফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ কাজী মাহফুজুল হক (সুপণ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। এছাড়াও সদ্য প্রকাশিত, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪) অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের জন্য হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি শামীম হাসনাইনের নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। গঠিত পাঁচ সদস্যের এ কমিটির চার সহযোগী তদন্ত কর্মকর্তার মধ্যে তিনি একজন।

৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ঘোষণা মানা হবে না: ইনকিলাব মঞ্চ

আমরা বেঁচে থাকতে ৮ আগস্টকে নতুন বাংলাদেশ দিবস ঘোষণা করতে দেওয়া হবে না। সরকার এমন কিছু করলে ঐদিন সারাদেশে পালিত হবে বিপ্লব-বেহাত দিবস বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদী। শুক্রবার (২৭ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন শরীফ ওসমান বিন হাদী। তিনি বলেন, আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ঘোষণা করতে চায়। আমরা তা হতে দেবো না। ৮ আগস্ট আবার কোথা থেকে আসলো? আমাদের জাতীয় মুক্তি দিবস ৫ আগস্ট। ৮ আগস্ট যদি সরকার এমন কিছু করতে চায় আমরা সেদিন বিপ্লব-বেহাত দিবস পালন করবো। এসময় শরীফ ওসমান ৩৬শে জুলাই তথা ৫ আগস্টকে জাতীয় মুক্তি দিবস কিংবা দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিবস ঘোষণার দাবি জানান। এসময় তিনি দাবি করেন, শহীদ আবু সাঈদ দিবসকে শুধু আবু সাঈদ দিবস না করে বরং জুলাই শহীদ দিবস বা শহীদ দিবস ঘোষণা করার। যাতে অন্যান্য শহীদের পরিবার এই দিবসটিকে সমানভাবে নিজের করে নিতে পারে। সাবেক ইসি নূরুল হুদাকে জুতার মালা পরানোর পর যারা এটিকে মব বলছেন তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সংগ্রাম পত্রিকার সম্পাদক আবুল আসাদ সাহেবকে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের লোকেরা তার অফিসে গিয়ে দাঁড়ি ধরে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে এসেছে। তখন কেউ তাদের মব সন্ত্রাস বলেনি আর এখন সুশীলতা দেখানো হচ্ছে। এসময় শুধু আলিয়া মাদরাসা বোর্ড নয়, বরং জুলাই অভ্যুত্থানে কওমি মাদরাসার শিক্ষক-ছাত্রদের অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় নিয়ে দিনটিকে উদযাপনের দাবি তোলা হয়। জুলাইয়ের ১ তারিখ ‘লাল মার্চ’ কর্মসূচির উল্লেখ করে শরীফ ওসমান বলেন, আগামী জুলাইয়ের এক তারিখ জুলাই সনদ আদায়ের দাবিতে লাল মার্চ ঘোষণা করা হয়েছে। শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে বিকেল ৪টায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ে ছাত্র-জনতা রওয়ানা করবে জুলাই সনদ আদায়ের দাবিতে। তিনি আরও বলেন, সেদিন লাল মার্চে যে সব জুলাই যোদ্ধারা আসবেন, শহীদ পরিবার আসবেন, ছাত্র-জনতা আসবেন, জুলাই সনদ আদায়ের দাবিতে তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন। তারা যদি মনে করেন জুলাই সনদ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবে। আমরাও তাদের সঙ্গে থাকবো ইনশাআল্লাহ।

গত সতেরো বছরে শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিঃস্ব করা হয়েছে: শিক্ষা উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, ‘গত ১৭ বছরে শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিঃস্ব করা হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তার হিসাব দেওয়া সম্ভব না। যদি হিসাব দিতে যাই তাহলে দিনের পর দিন চলে যাবে।’ সোমবার নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী আয়োজিত রিসার্চ ফেয়ার অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা খুবই অল্প সময়ের জন্য দায়িত্ব নিয়েছি। যার জন্য আমাদের একটু চিন্তা করতে হয় কোনটা আগে করবো, কোনটা পরে করবো। হয়তো কিছু বিষয়ে আগে থেকে ধারণা আছে আমাদের, তাই কিছু কাজ এগিয়ে নিতে পারছি।’ উপদেষ্টা শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, ‘শিক্ষকদের কারও রাজনৈতিক বিশ্বাস থাকতে পারে। আর সেই রাজনৈতিক বিশ্বাস সেই বিশ্বাসের মধ্যে থাকতে হবে। কিন্তু সে রাজনীতিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতের আনা যাবে না। আর কেউ যদি মনে করেন, রাজনীতি করবেন তাহলে আমরা বলবো, অবশ্যই করবেন, তবে তার জন্য আপনাকে রাজনীতির অঙ্গনে যেতে হবে। রাজনীতিতে ভালো নেতৃত্বের দরকার আছে। সেখানেও আপনি সম্মান পাবেন। তাই রাজনীতি আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আনবেন না।’ নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন– কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হায়দার আলী, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হোসেন উদ্দিন শেখর, নোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ। এর আগে অতিথিরা বিশ্বিবদ্যালয়ের গোল চত্বরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে রিসার্চ ফেয়ারের উদ্বোধন করেন। পরে রিসার্চ ফেয়ারে অংশ নেওয়া বিভিন্ন ইনস্টিটিউট, বিভাগ ও সংগঠনের স্টল পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে ৭০ জন শিক্ষককে ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড ও রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড এবং ৩১ জন শিক্ষার্থীকে ডিনস অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।