
প্রায় সকল দলই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তনে আগ্রহী : আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, কমিশনের সঙ্গে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলগুলো দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা চলাকালে সংবিধানের ৪৮(১) অনুচ্ছেদে বিদ্যমান রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতিটিকে পরিবর্তন করে নতুন পদ্ধতি প্রণয়নের বিষয়ে তাদের মত প্রদান করেছে। আজ রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দিনব্যাপী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার চতুর্থ দিন শেষে গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে তিনি একথা বলেন। আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আলোচনার ফলে প্রায় সকল রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন বিষয়ে একমত হয়েছে। তারা বলেছেন যে বিদ্যমান ৪৮(১) অনুচ্ছেদ এর পরিবর্তন করতে হবে। তবে পরিবর্তিত ও সংশোধিত ব্যবস্থা কী হবে তা নিয়ে আমরা পরবর্তীতে আলোচনা করব। তিনি আরো বলেন যেহেতু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি পরিবর্তনের সঙ্গে দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার ব্যাপারটি জড়িত আছে, সেহেতু আজ সেই বিষয়টিও আমরা আলোচনা করেছি। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা ব্যাপারে যারাই মত দিয়েছেন তারা প্রায় সকলে উচ্চকক্ষে ১০০ আসনের বিষয়ে একমত হয়েছেন। কিন্তু, এসব বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট আরো বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে৷ তিনি আরো বলেন, একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর পদে পরপর দুই মেয়াদে থাকবেন- এ বিষয়ে অনেকে একমত হয়েছেন আবার কেউ কেউ পরপর দুই মেয়াদের পর বিরতি দিয়ে আবার পুনরায় প্রধানমন্ত্রী পদ পালন করতে পারবে কিনা সে বিষয়ে বিবেচনা করার অনুরোধ কমিশনকে জানিয়েছে। অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ প্রতিটি দল স্বাধীনভাবে নিজেদের মতামত জানাতে পারছে। মত ভিন্নতা থাকলেও মতামত প্রদানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বিরাজ করছে। এ সময় গণমাধ্যমের কর্মীদের তিনি জানান আগামী রোববার সকাল সাড়ে দশটায় পুনরায় সকল রাজনৈতিক দলের সাথে দ্বিতীয় দফার পঞ্চম বৈঠকে বসবে কমিশন। আগামী সপ্তাহের আলোচনার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি ঐকমত্য সৃষ্টি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একমত হওয়ার সদিচ্ছা রয়েছে বলে জানান তিনি। এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে।

পররাষ্ট্রসচিব হলেন আসাদ আলম সিয়াম
নতুন পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব আসাদ আলম সিয়াম। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) তাকে নিয়োগ দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব আসাদ আল সিয়াম পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তার এ নিয়োগ আদেশ শুক্রবার (২০ জুন) থেকে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা আসাদ আলম। সর্বশেষ তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় জাতিসংঘ কার্যালয়ে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং ফিলিপাইনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। পররাষ্ট্রসচিবের দায়িত্ব চালিয়ে আসা পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন গত ২২ মে ছুটিতে যান। তিনি গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর দেশের ২৭তম পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে স্মরণ করতে ১ জুলাই থেকে বিশেষ কর্মসূচি পালিত হবে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে স্মরণ করতে আগামী ১ জুলাই থেকে বিশেষ কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেন, জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে কর্মসূচি শুরু হবে। কিন্তু মূল ইভেন্ট শুরু হবে জুলাইয়ের ১৪ তারিখ থেকে। এটি চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, জুলাইয়ে যে রকম পুরো বাংলাদেশ এক হয়েছিল, আবার সে অনুভূতিটাকে ফিরিয়ে আনা। এটার জন্য কিছু কর্মসূচি নিয়ে কাজ চলছে।’ আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান উপদেষ্টা। উপদেষ্টা পরিষদের আজকের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এই প্রেস ব্রিফিং করা হয়। আগামী সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জুলাই অভ্যুত্থান সম্পর্কিত কর্মসূচির বিষয়ে বিস্তারিত জানাবে বলে উল্লেখ করেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আজকের বৈঠকে নয়জন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের স্বায়ত্তশাসন নিয়ে একটা কমিটি হয়েছে। কমিটির নেতৃত্ব দেবেন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার। জুলাই ঘোষণাপত্রের জন্য একটি কমিটি হয়েছে বলে জানান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, জুলাই প্রক্লেমেশন (জুলাই ঘোষণাপত্র) ছাত্র-জনতার একটা দাবি। জুলাই প্রক্লেমেশন যাতে ৫ আগস্টের আগে দেওয়া যায়, সে জন্য একটা কমিটি হয়েছে। কমিটির নেতৃত্ব দেবেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। কমিটিতে আরও কয়েকজন উপদেষ্টা থাকবেন। দ্রুত জুলাই সনদ তৈরির জন্য কমিটি শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কাজ করবে। এদিকে, আজকের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় প্রতিবছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত হয়। ৫ আগস্ট ছুটি ঘোষণা করা হবে। প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আচরণবিধির খসড়া অনুমোদন : সংসদ নির্বাচনে পোস্টারের ব্যবহার বন্ধ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিধিমালায় আসন্ন সংসদ নির্বাচনে পোস্টারের ব্যবহার বন্ধ, বিধি লঙ্ঘনে সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা জরিমানা ও প্রচার প্রচারণায় পরিবেশ বান্ধব সামগ্রী ব্যবহারের নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে সপ্তম কমিশন সভায় আচরণ বিধিমালার খসড়া অনুমোদন করা হয়। সভায় সিইসি ছাড়াও চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কমিশন সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকের বলেন, ‘খসড়া আচরণবিধি আজ কমিশন অনুমোদন দিয়েছে। এর কয়েকটি বিষয় রয়েছে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধন ও ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সে জন্য এ বিধিমালার খসড়া শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদন দিয়ে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধি সংক্রান্ত আলোচনায় উল্লেখযোগ্য যে বিষয়গুলো এসেছে তা হলো- প্রথমত গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে আরপিও’র ধারা ৯১ (ঙ) তে প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়টি ইতোঃপূর্বে আচরণবিধিতে সন্নিবেশিত ছিল না। এটা সন্নিবেশ করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত বিলবোর্ডের ব্যবহার অতীতে ছিল না, এটা অন্তর্ভূক্ত করা হচ্ছে। পোস্টার ব্যবহার বাদ দেওয়ার ব্যাপারে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ছিল। এতে আমরাও একমত হয়েছি। এছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ব্যানার, ফেস্টুন ব্যবহার করতে পারবে, এ সব নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সভায় আলোচ্যসূচিতে ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫’ ছিল। আরেকটি বিষয় ছিল জাতীয় সংসদে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত আলোচনা। প্রথম এজেন্ডা আজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি, আগামী সপ্তাহের শেষ নাগাদ সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের কাজ শেষ হবে।’ ইসি সানাউল্লাহ বলেন, সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদেরকেও যোগ করা হয়েছে। তারা প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিতে পারবে না। তাদের জন্য বিভিন্ন সরকারি সুবিধার ব্যবহার, যেমন- সার্কিট হাউস, ডাক বাংলো ও রেস্ট হাউস এ সবের ওপরে কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রচার প্রচারণায় পরিবেশবান্ধব সামগ্রীর ব্যবহারের ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। ভোটার স্লিপ ইন্ট্রোডিউস করার ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। টিশার্ট, জ্যাকেট ইত্যাদির ব্যাপারে যে অতীতে বিধিনিষেধ ছিল। এটা একটু শিথিল করা হয়েছে। ইসি সানাউল্লাহ বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর বিশদ আলোচনা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কি পারবে, কি পারবে না- তা ডিফাইন করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচারে বিদেশি বিনিয়োগ আনা যাবে না। মাইকে প্রচারের সময় শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিমেলে রাখতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রচারণার সময় তিন সপ্তাহ থাকছে। টিভিতে সংলাপের সুযোগ রাখা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে সকল প্রার্থী সভাপতি বা সদস্য হিসেবে পরিচালনা পর্ষদে থাকবেন বা মনোনীত হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পর, সেখান থেকে পদত্যাগ করতে হবে।’ সানাউল্লাহ বলেন, বিধিমালা লঙ্ঘনে যে নরমাল শাস্তি ছিল, ছয় মাস কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা। এবার জরিমানা সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকার প্রস্তাব রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকারনামা নতুনভাবে সংযোজিত করা হয়েছে। দল ও প্রার্থী উভয়ই একটা হলফ নামা দেবে যে, তারা এই আচরণ বিধিমালা মেনে চলবেন। এক প্রশ্নের জবাবে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘কমন প্লটফর্ম বলতে- রিটার্নিং অফিসাররা সংশ্লিষ্ট আসনের সব ক’জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে নিয়ে একটি প্লাটফর্ম থেকে একদিনে তাদের ইশতেহার বা ঘোষণাপত্রগুলো পাঠ করার ব্যবস্থা করবে। এছাড়া বিভিন্ন টিভি মিডিয়াতে যে ডায়লগের আয়োজন করে, তাতে সম্মতি দেওয়া হয়েছে।’

সেনাবাহিনী ঈদুল আজহাকালীন অতিরিক্ত ভাড়ার ৩৫ লাখ টাকা যাত্রীদের ফেরত দিয়েছে
ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে ১ হাজার ২৫৫টি যানবাহন থেকে ৩৫ লাখ ২৬ হাজার ২৩৩ টাকা যাত্রীদের মাঝে ফেরত দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের (স্টাফ কর্নেল) কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ঈদুল আজহাকালীন ঘরমুখো মানুষের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ঈদের আগে ও পরে ২ সপ্তাহের বিশেষ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এর অংশ হিসেবে জাতীয় মহাসড়কগুলোতে নির্বিঘ্নে যান চলাচল নিশ্চিত করতে ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বাস স্ট্যান্ড, রেল স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল ও মহাসড়কে দিন-রাত টহল পরিচালনা, গাড়ির অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য স্পর্শকাতর স্থানে চেকপোস্ট স্থাপনসহ টিকিট কালোবাজারি অথবা অধিক মূল্যে টিকিট বিক্রি রোধে সচেষ্ট ছিল। কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে ১ হাজার ২৫৫টি যানবাহন থেকে ৩৫ লাখ ২৬ হাজার ২৩৩ টাকা যাত্রীদের মাঝে ফেরত দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে ১৫১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং র্যাকারের মাধ্যমে ৯টি যানবাহন উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, ঈদুল আজহায় চাঁদাবাজি/অবৈধ স্থাপনা সংক্রান্ত কারণে ৭২ জনকে গ্রেপ্তার এবং ১৪ লাখ ৫৭ হাজার ৪৩০ টাকা জব্দ করা হয়। সর্বোপরি, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবারে সড়ক দুর্ঘটনা, মৃত্যু ও গুরুতর আহতের হার অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।

কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে সভা শুরু করেন উপদেষ্টা আসিফ
সচিবালয়ের সভাকক্ষে সচরাচর কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে সভা শুরু করতে দেখা যায় না। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটেছে। স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক সভার কার্যক্রম কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে শুরু হয়। বৃহস্পতিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পুরাতন সভাকক্ষে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে এক আলোচনা সভা শুরু হয়। এদিন মন্ত্রণালয়ের এ সভাকক্ষে ‘উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে নির্মাণাধীন পাবলিক লাইব্রেরি উদ্বোধন’ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পুরাতন সভাকক্ষে যান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। সভা শুরুর আগে সঞ্চালক কোরআন তেলাওয়াতের ঘোষণা দেন। পরে হাফেজ আশিকুর রহমান কোরআন তেলাওয়াত করেন, সুরা জুমার ২৭ থেকে ৩১ নম্বর আয়াত পাঠ করেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) অংশ নেন।

সরকারি সেবায় ঘুষ-দুর্নীতির শিকার ৩১.৬৭ শতাংশ নাগরিক
গত এক বছরে যেসব নাগরিক সরকারি সেবা গ্রহণ করেছেন তাদের মধ্যে ৩১.৬৭ শতাংশ নাগরিক ঘুষ-দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। সেখানে পুরুষ ৩৮.৬২ শতাংশ এবং নারী ২২.৭১ শতাংশ মানুষ ঘুষের শিকার। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে করে এমন তথ্য প্রকাশ করেছে। ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সময়ে দেশব্যাপী ‘সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে (সিপিএস)’ পরিচালনা করা হয়। ৬৪ জেলার ১, হাজার ৯২০টি প্রাইমারি স্যাম্পলিং ইউনিট থেকে ৪৫ হাহার ৮৮৮টি খানার ১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী মোট ৮৪ হাজার ৮০৭ জন নারী-পুরুষ উত্তরদাতার সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জরিপে নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গি ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নিরাপত্তা, সুশাসন, সরকারি সেবার মান, দুর্নীতি, ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার এবং বৈষম্য বিষয়ক এসডিজি ১৬ এর ছয়টি সূচকের অগ্রগতি মূল্যায়ন করা হয়েছে। জরিপের প্রশ্নপত্র জাতিসংঘ নির্ধারিত আন্তর্জাতিক মান ও পদ্ধতি অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে। বিবিএস জানায়, সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নাগরিকদের সর্বাধিক ঘুষ-দুর্নীতির শিকার হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শীর্ষে বিআরটিএ, ৬৩ দশমিক ২৯ শতাংশ মানুষ দুর্নীতির শিকার। এ ছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় ৬১ দশমিক ৯৪ শতাংশ, পাসপোর্ট অফিসে ৫৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ ও ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসে ৫৪ দশমিক ৯২ শতাংশ মানুষ সেবা নিতে গিয়ে ঘুষ ও দুর্নীতির শিকার হয়েছে। গত দুই বছরে ১৬.১৬ শতাংশ নাগরিক কোনো না কোনো বিবাদ বা বিরোধের মুখোমুখি হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৮৩.৬০ শতাংশ নাগরিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আনুষ্ঠানিক অথবা অনানুষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার পেয়েছেন। এর মধ্যে ৪১.৩৪ শতাংশ আনুষ্ঠানিক যেমন– আদালত, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এবং ৬৮.৯৬ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক যেমন– কমিউনিটি নেতা, আইনজীবী ইত্যাদির মাধ্যমে সেবা পেয়েছেন। জরিপের প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, গত এক বছরে দেশের ১৯.৩১ শতাংশ জনগণ কোনো না কোনো ধরনের বৈষম্য বা হয়রানির শিকার হয়েছেন। নারীদের মধ্যে এ হার কিছুটা বেশি, যা ১৯.৬২ শতাংশ, যেখানে পুরুষদের মধ্যে তা ১৮.৯৭ শতাংশ। শহরাঞ্চলে বৈষম্যের হার ২২.০১ শতাংশ, গ্রামাঞ্চলের ১৮.০৭ শতাংশের তুলনায় বেশি। এ ক্ষেত্রে আর্থসামাজিক অবস্থা এবং লিঙ্গভেদে বৈষম্য/হয়রানির হার সর্বাধিক। নিজের পরিবারের মধ্যে ৪৮.৪৪ শতাংশ, গণপরিবহন/উন্মুক্ত স্থানে ৩১.৩০ শতাংশ এবং কর্মস্থলে ২৫.৯৭ শতাংশ বৈষম্য/হয়রানির ঘটনা সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে মাত্র ৫.৩৫ শতাংশ ভুক্তভোগী এসব ঘটনার বিষয়ে রিপোর্ট করেছেন।

৫ আগস্ট সরকারি ছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দিবস পালন উপলক্ষ্যে ৫ আগস্ট সরকারি ছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামীতে প্রতিবছর দিবসটি সরকারিভাবে পালিত হবে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এ তথ্য জানান। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দিবস পালন করার আজ প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী রোববারের কেবিনেট বৈঠকে এটি পাস এবং সোমবার গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।’ তিনি বলেন, ৫ আগস্ট একটা জাতীয় দিবস হতে যাচ্ছে। সুতরাং আগামীতে প্রতিবছর দিনটি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দিবস হিসেবে পালিত হবে। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন নিয়ে সরকারের অফিসিয়াল নির্দেশনা পায়নি সেনাবাহিনী
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এখনো সরকারের পক্ষ থেকে অফিসিয়াল কোনো নির্দেশনা পায়নি সেনাবাহিনী। তবে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করবে সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের (স্টাফ কর্নেল) কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম এ কথা বলেন। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। যেহেতু সেনাবাহিনী মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে সেহেতু সেনাবাহিনী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কি না– এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখনো সরকারের পক্ষ থেকে অফিসিয়াল কোনো নির্দেশনা প্রাপ্ত হয়নি। তবে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করব। মব ভায়োলেন্সকে সেনাবাহিনী কীভাবে দেখছে। মব ভায়োলেন্স কি বেড়েছে নাকি কমেছে নাকি নীরবে চলছে এমন প্রশ্নের জবাবে কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মব ভায়োলেন্স কিংবা জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী যেকোনো পরিস্থিতির বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমরা মব ভায়োলেন্স অনেকাংশে কমিয়ে নিয়ে এসেছি। রংপুরের ঘটনাটিতে যে মব ভায়োলেন্স ঘটেছিল সেখানে সেনাবাহিনী সঠিক সময়ে উপস্থিত হওয়ার কারণে সেই পরিস্থিতিটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছিল। ঈদুল আজহা কেন্দ্রিক কার্যক্রমে সেনাবাহিনী কতটুকু সন্তুষ্ট– জানতে চাইলে সেনাবাহিনীর এ কর্মকর্তা বলেন, ঈদুল আজহার সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ বাস ও রেল স্টেশন ও লঞ্চ টার্মিনালে দিনরাত সার্বক্ষণিক টহল দিয়েছেন। এ ছাড়া স্পর্শকাতর স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করে বাসের গতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। আমাদের পুরুষ অফিসারদের পাশাপাশি নারী অফিসার ও সৈনিকরা রাস্তায় নেমে নির্দ্বিধায় ঈদের সময় অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছে। আমরা ১২৫৫টি গাড়ি থেকে ৩৫ লাখেরও বেশি টাকা যাত্রীদের ফেরত দিতে সক্ষম হয়েছি। এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে আমাদের সেনাবাহিনীর সার্বক্ষণিকভাবে দেশের মানুষের পাশে কাজ করার ইচ্ছা, প্রবণতা, সিনসিয়ারিটি, সততা ও হার্ড ওয়ার্কের জন্য। বিগত ঈদের তুলনায় এ বছরের ঈদে মৃতের সংখ্যা এবং গুরুতর আহতের সংখ্যা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমিয়ে নিয়ে আসতে পেরেছি, যোগ করেন তিনি। জাতীয় পতাকা বিক্রির সময় এক ব্যক্তিকে পেটানোর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আপনারা জানেন এটি একটি আন্তর্জাতিক মানের ফুটবল ম্যাচ ছিল। সেখানে নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য যতটুকু করার প্রয়োজন ছিল তা করা হয়েছে। এটি একটি দুঃখজনক ও বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল। তবে পরে আমরা ওই পতাকা বিক্রেতাকে ডেকে সমবেদনা প্রকাশ করি। এ ছাড়া তার ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে এক লাখ টাকা দেওয়া হয়। যাতে করে সে তার ব্যবসাটাকে সফলভাবে চালিয়ে যেত পারে। ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত থেকে পুশইনের বিষয়ে সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সতর্ক ও সজাগ আছে। সীমান্ত এলাকায় তারা টহল বৃদ্ধি করেছে। সেসব জায়গায় স্থায়ী ও অস্থায়ী ক্যাম্পের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ওই সব এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ বিষয়ে সেনাবাহিনী অন্তর্ভুক্ত হওয়ার মতো বিষয় এখনো অনুভূত হয়নি, তাই বিষয়টি বিজিবি ও কোস্টগার্ড দেখছে। সম্প্রতি অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। এ ধরনের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কোনো তালিকা করা হয়েছে কি না। আর হয়ে থাকলে এ বিষয়ে সেনাবাহিনী কি ব্যবস্থা নেবে– জানতে চাইলে সেনাবাহিনীর এ কর্মকর্তা বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী বা যেকোনো সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারের সময় যে অভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়, এক্ষেত্রে আমরা গোপনীয়তা রক্ষা করি। পরেও শীর্ষ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে আমাদের অভিযানিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

সচিবালয়ে কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে শুরু হলো আসিফ মাহমুদের সভা
সচিবালয়ের সভাকক্ষে সচরাচর কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে সভা শুরুর রীতি না থাকলেও এবার ব্যতিক্রম ঘটেছে। স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। বৃহস্পতিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পুরাতন সভাকক্ষে এক আলোচনা সভায় এমন চিত্র গেছে। মন্ত্রণালয়ের এ সভাকক্ষে ‘উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে নির্মাণাধীন পাবলিক লাইব্রেরি উদ্বোধন’ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পুরাতন সভাকক্ষে আসেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা। সভা শুরুর আগে সঞ্চালক কোরআন তেলাওয়াতের ঘোষণা দেন। পরে হাফেজ আশিকুর রহমান সুরা জুমার ২৭ থেকে ৩১ নম্বর আয়াত তেলাওয়াত করেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) অংশ নেন।

ফকিরাপুলে মাদকবিরোধী অভিযান, গুলি করার পরও ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে
রাজধানীর ফকিরাপুলে মাদকবিরোধী অভিযানে পুলিশ সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, পুলিশ খুব সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করেছে। গুলি করার পরও তারা তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। মাদক ও গাড়ি জব্দ করেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে বুধবার (১৮ জুন) দিবাগত রাতে পল্টনে মাদকবিরোধী অভিযানে গুলির ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়া শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন উপদেষ্টা। ঘটনার বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, গতকাল (বুধবার) আমাদের কাছে তথ্য ছিল, চট্টগ্রাম থেকে একটি গাড়ি আসছে, যেটার ভেতরে মাদক আছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির লালবাগ বিভাগের একটি টিম ফকিরাপুল এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালায়। তিনি বলেন, এসময় একটি গাড়িকে থামার সিগন্যাল দিলে গাড়িটি সামনে এগিয়ে যায়। প্রায় ৬০০ গজ সামনে যাওয়ার পর গাড়িটি থামানো হয়। গাড়ি থেকে একজন গুলি করলে আমাদের তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। এর মধ্যে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজন কনস্টেবল ও এএসআই রয়েছে। আহতদের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এএসআইর পেটে গুলি লেগেছে। তবে তার কোনো অর্গানে না লাগায় তিনি শঙ্কামুক্ত। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর অপারেশন করে গুলিটা বের করা হবে। এ ছাড়া কনস্টেবলের পায়ে গুলি লেগেছে। তাকে আজই রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার ও গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। গাড়ি থেকে ৯ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। মাদক কারবারিকে চ্যালেঞ্জ করার পরও পুলিশের ওপর হামলা করল, বিষয়টা কীভাবে দেখছেন– এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পুলিশ খুব সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করেছে। গুলি করার পরও তারা তিনজনকে আটক করেছে। মাদক ও গাড়ি জব্দ করেছে। জীবনবাজি রেখে মাদক নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। পুলিশের অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে কথা উঠেছে। কিন্তু সন্ত্রাসীদের হাতে ভারি অস্ত্র– জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এ ঘটনায় ভারি অস্ত্র ব্যবহার হয়নি, পিস্তল ব্যবহার হয়েছে। পুলিশের জীবন রক্ষায় যে অস্ত্র নিয়ে কাজ করছে এটা যথেষ্ট কি না– জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশের যে ধরনের অস্ত্র দরকার সেটা দিয়েই তারা কাজ করবে। অপরাধীরা বেশি সুযোগ নিচ্ছে কি না– জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সন্ত্রাসীরা বেশি সুযোগ নিতে পারছে না। কারণ পুলিশ সাহসিকতার সঙ্গে গুলির পরও তাদের আটক করেছে। এসময় আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। আহত পুলিশ সদস্যদের খোঁজ নেওয়ার সময় উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী, ডিবির যুগ্ম কমিশনার নাসিরুল ইসলাম, রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার বৈঠক
যুক্তরাষ্ট্রের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফার ল্যান্ডাউয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট, শুল্কসংক্রান্ত আলোচনার অগ্রগতি, দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর প্রক্রিয়াসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বুধবার (১৮ জুন) ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারের পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যান্ডাউ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ‘অবিচল সমর্থন’ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। বৈঠকের বাইরে ড. খলিলুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডান লিঞ্চের সঙ্গেও একটি দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক সংক্রান্ত একটি চুক্তি নিয়ে গঠনমূলক অগ্রগতি হয়েছে বলে জানানো হয়।

বিদ্যুৎ করিডোর প্রকল্প বাতিল করছে ঢাকা
ভারতের প্রস্তাবিত ১১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ করিডোর প্রকল্প বাতিল করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ভারতের পক্ষ থেকে চলতি বছর প্রকল্প শুরু করে ২০২৮ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য বলা হচ্ছে। তবে গ্রিড নিরাপত্তা, পরিবেশ এবং অর্থনৈতিক দিক বিবেচনায় বাংলাদেশ প্রকল্পটি পুনর্বিবেচনা করছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের পার্বতীপুর হয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বোরানগর থেকে বিহারের কাটিহার পর্যন্ত বিদ্যুৎ ৭৬৫ কেভি (কিলোভোল্ট) সঞ্চালন লাইন যাবে। বিনিময়ে ভারত বাংলাদেশকে অতিরিক্ত এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) অর্থায়নের আশ্বাস দিয়েছে। বর্তমানে ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য থেকে ভারতের অন্য অংশে বিদ্যুৎ নিতে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে সঞ্চালন লাইন নির্মাণে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছে দিল্লি। ২০২৩ সালের মে মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা-সংক্রান্ত যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির সভায় এ বিষয়ে দুই দেশের সঞ্চালন সংস্থার অংশীদারিত্বে একটি সিদ্ধান্ত হয়। যৌথ কোম্পানি প্রস্তাবিত সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করবে। এ বিষয়ে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সমীক্ষাও সম্পন্ন করে। কয়েকটি প্রস্তাবিত রুটের মধ্যে বোরনগর-পার্বতীপুর-কাটিহার রুটটি চূড়ান্ত হয়। পিজিসিবিসহ বিদ্যুৎ বিভাগের অনেক প্রকৌশলী এই লাইনের বিষয়ে বিরোধিতা করলেও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের ভারত-ঘেঁষা নীতি প্রকল্পটিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার প্রকল্পটি পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেয়। খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পটির অন্যতম ঝুঁকি হচ্ছে গ্রিড সংযুক্তি। বাংলাদেশ ও ভারতের বিদ্যুৎ ভিন্ন মানের দুই গ্রিড একীভূত হলে একটি দেশের বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রভাব অপর দেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন প্রকৌশলীরা। ভারতে কোনো কারণে ‘ব্ল্যাকআউট’ হলে তার তাৎক্ষণিক প্রভাব বাংলাদেশে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। আবার আর্থিক দিক থেকেও এটি দেশের জন্য বাড়তি বোঝা তৈরি করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিদ্যমান ও নির্মাণাধীন বিভিন্ন বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিপরীতে বাংলাদেশকে ২.১৫ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে। নতুন এই প্রকল্প হাতে নিলে তাতে বৈদেশিক ঋণ আরও বেড়ে যাবে বলে মনে করছে অর্থ ও পরিকল্পনা বিভাগ। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বর্তমানে প্রায় ২৮ হাজার মেগাওয়াট, যেখানে সর্বোচ্চ চাহিদা ১৭ হাজার মেগাওয়াট। এ বাস্তবতায় ২০৩০ সালের আগে অতিরিক্ত বিদ্যুতের প্রয়োজন নেই। তাই মাত্র এক হাজার বিদ্যুতের জন্য ঋণ নিয়ে আরেক দেশের জন্য সঞ্চালন লাইন নির্মাণের যৌক্তিকতা দেখছেন না তারা। সংশ্লিষ্টদের মতে, সবচেয়ে গুরুতর শঙ্কা হলো পরিবেশগত বিপর্যয়। প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনটি যে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ আনবে, তা নির্মিত হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদের ভারতীয় অংশে। এই নদীই বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলোর উৎস ধারা। ভারতে বাঁধ নির্মাণের ফলে বাংলাদেশেপানিপ্রবাহ কমে যাওয়া, নদীভাঙন বৃদ্ধি, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস এবং কৃষিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ ও জ্বালানি বিশ্লেষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ সমকালকে বলেন, মাত্র এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের জন্য বিপুল আর্থিক ও পরিবেশগত ঝুঁকি নেওয়া অনুচিত। আমাদের আগের অনেক বিদ্যুৎ চুক্তিই হয়েছে গোপনীয়তার মধ্যে, সেখানে জনস্বার্থের দিকটি উপেক্ষিত হয়েছে। তাই বর্তমানে প্রকল্প অনুমোদনের আগে পূর্ণ স্বচ্ছতা ও জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, বিদ্যুৎ করিডোরের বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও পরিবেশগত প্রভাব বিবেচনা করেই আমরা সিদ্ধান্ত নেব। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সঞ্চালন লাইন স্থাপনের আগে অবশ্যই জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। বর্তমানে ভারত থেকে প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৭০ মেগাওয়াট আসছে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে স্বাক্ষরিত বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে। বাকি ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট সরবরাহ করছে দেশটির আদানি গ্রুপ। এ ছাড়া গত ১৫ জুন নেপাল থেকে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করেছে। এই বিদ্যুৎ আমদানি হচ্ছে ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে। এ জন্য ঢাকা-দিল্লি-কাঠমান্ডু ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই করেছে। এখন বাংলাদেশ যদি ভারতের করিডোর প্রস্তাব নাকচ করে, তাহলে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা– এ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিম সমকালকে বলেন, প্রতিটি চুক্তি ভিন্ন। নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তির সময় তো এমন কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি– এর বিনিময়ে ভারতকে বিদ্যুৎ করিডোর দিতে হবে। আর ভারতের করিডোর বিষয়ে তো এখনও চুক্তি হয়নি।

৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৬৫৫৮
৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৬ হাজার ৫৫৮ জন প্রার্থী। বুধবার (১৮ জুন) সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ওয়েবসাইটে (www.bpsc.gov.bd) এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা, ২০১৪ অনুসরণে ৪৫তম বিসিএস পরীক্ষা-২০২২ এর লিখিত পরীক্ষায় সাময়িকভাবে ৬৫৫৮ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। বিপিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) মাসুমা আফরীনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা, ২০১৪ অনুসারে অনুষ্ঠিত ৪৫তম বিসিএস পরীক্ষার লিখিত অংশে এই প্রার্থীরা সাময়িকভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এদের মধ্য থেকে সাধারণ ক্যাডার, সাধারণ ও কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার এবং শুধুমাত্র কারিগরি/পেশাগত ক্যাডারে প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, উত্তীর্ণ প্রার্থীদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর মেধাক্রম অনুযায়ী নয়; বরং বাছাই তালিকা হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে। ফলাফল পিএসসির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে এবং একইসঙ্গে কমিশনের অফিসিয়াল নোটিশ বোর্ডেও এটি প্রকাশ করা হয়েছে। কী থাকছে পরবর্তী ধাপে? উত্তীর্ণ প্রার্থীদের এখন মৌখিক পরীক্ষার (ভাইভা) জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, খুব শিগগিরই ভাইভা পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করা হবে। প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নির্ধারিত তারিখ ও সময় অনুযায়ী প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর ৪৫তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। এ বিসিএসে মোট ২,৩০৯ জন ক্যাডার কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হবে। আবেদন প্রক্রিয়া শেষে ২০২৩ সালের ১৯ মে ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষা নেওয়ার ১৭ দিনের মধ্যে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। প্রিলিতে অংশ নেন দুই লাখ ৬৮ হাজার ১১৯ জন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১২,৭৮৯ জন প্রার্থী।

পরিবেশের ক্ষতি করে কোনো উন্নয়ন নয়: প্রধান উপদেষ্টা
উন্নয়ন প্রকল্প পরিকল্পনার ক্ষেত্রে নদীর পানিপ্রবাহ যাতে নিরবচ্ছিন্ন থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১৮ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ‘টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া সমন্বিত অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়ন’ প্রকল্প নিয়ে আয়োজিত এক বৈঠকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি এ নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জোং ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তাদের একটি দল এই প্রকল্পের বিস্তারিত রূপকল্প, কৌশল এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া উপস্থাপন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি–বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দিতে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, অবশ্যই আমাদের নদীপ্রবাহকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে । বাংলাদেশ একটি বদ্বীপ। আমরা কোনোভাবেই আমাদের পানিপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করতে চাই না। আরেকটি বিষয় হলো, যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ওই এলাকার জনসংখ্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন। আমাদের দেশ বন্যাপ্রবণ। তাই পানিপ্রবাহ বন্ধ করে এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলবে। বন্যার সময় আমাদের দেশের মানুষ উঁচু রাস্তা, সেতু এবং রেলপথে আশ্রয় নেয়। সুতরাং সেতু শুধু নির্মাণ করলে হবে না, এটি জনগণের জন্য আশ্রয় হচ্ছে নাকি বিপদ ডেকে আনছে সেটাও বিবেচনা করতে হবে- বলেন প্রধান উপদেষ্টা বলেন। তৃতীয়টি হলো আন্তর্জাতিক সংযোগ। আমরা এ অঞ্চলে একটি ইনভেস্টমেন্ট হাব তৈরি করতে চাই। সেজন্য প্রকল্প এমন হতে হবে যা নেপাল, ভূটানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোকেও সংযুক্ত করবে। বৈঠকে এ উন্নয়ন প্রকল্পে পানি বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করতে এবং একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরির নির্দেশ দেন তিনি। উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, এর আগে হাওর এলাকায় বিশাল সড়ক নির্মাণ হয়েছে, কিন্তু পরে দেখা গেল সেটি ওই অঞ্চলের পুরো ইকোসিস্টেমকে ধ্বংস ভেঙে দিয়েছে। মানুষ মারাত্মকভাবে বন্যার কবলে পড়েছে। সুতরাং যে কোনো প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়েই বিবেচনা করতেই হবে।

২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত ২৮
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় কারও মৃত্যু হয়নি। তবে এ সময়ে নতুন করে আরও ২৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আগেরদিনে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হন ১৮ জন। বুধবার (১৮ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৩০৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ২৮ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৯ দশমিক ০৯ শতাংশ। নতুন করে ২৮ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হওয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৯০১ জনে। মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৫০৬ জনে অপরিবর্তিত রয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার ১৮ জনের করোনা শনাক্ত এবং দুজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

ভোক্তার অধিকার রক্ষায় সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেছেন, ফ্যাসিস্ট আমলে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, বাজারে গড়ে তোলা হয়েছে অসাধু সিন্ডিকেট, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে সাধারণ ভোক্তার ওপর। এখন সময় এসেছে সেই পরিস্থিতি বদলানোর প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠন করার এবং ভোক্তার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার। বুধবার (১৮ জুন) টিসিবি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বাজারে গুড সিন্ডিকেশন বা ইতিবাচক সংযোগ গড়ে তুলে অসাধু চক্রকে প্রতিহত করতে হবে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সক্ষমতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী হলে দুর্বৃত্তরা আপনা-আপনি পিছিয়ে যাবে। আমাদের এখন সবচেয়ে বড় লক্ষ্য ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করা এবং বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা। ইতোমধ্যে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভোক্তার স্বস্তি এবং অধিকার নিশ্চিত করাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মূল লক্ষ্য। এই লক্ষ্য অর্জনে যা কিছু করা প্রয়োজন, সরকার তাই করবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ঘনিষ্ঠভাবে একসঙ্গে কাজ করবে। আলোচনা সভায় বাজার ব্যবস্থাপনা, মূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং ভোক্তা অধিকার রক্ষায় বিভিন্ন প্রস্তাব ও বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় ক্যাবের পক্ষ থেকে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক এস. এম. ফেরদৌস আলম, ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলীম আখতার খান এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ক্যাবের নেতারা।

দক্ষিণ সিটি মেয়রের মেয়াদ শেষ, শপথ নেওয়ার সুযোগ নেই: আসিফ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুনদের শপথ নেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বুধবার (১৮ জুন) স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। আসিফ মাহমুদ বলেন, আপনারা জানেন, সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আমাদের আর শপথ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যে পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছিল, সে অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু কমিশন নতুন করে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন বলছে, তারা গেজেট প্রকাশ করেনি অথচ ১৫ দিন পর এসে জানিয়েছে। তখন গেজেটের কার্যকারিতা শেষ হয়ে গেছে, ২০ দিন পার হয়ে গেছে। এক দিকে একটি অকার্যকর গেজেটকে আবার সিদ্ধান্ত হিসেবে ধরা হয়েছে এটা আমাদের জন্য খুব বিভ্রান্তিকর। আসিফ আরও বলেন, আপিল বিভাগ যেভাবে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে, তাতে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ গেজেটটি কার্যকর থাকলেও ২০ দিন আগেই সেটি অকার্যকর হয়ে গেছে। অন্যদিকে আমাদের যে সিটি করপোরেশন, তার মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। আমি নিজে আইনজ্ঞ না, তবে আমাদের মাননীয় আইন উপদেষ্টা বিষয়টি খুব ভালোভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি একজন প্রফেসর ও আইন বিশেষজ্ঞ। আইন মন্ত্রণালয় দেখেন, তিনি বিষয়টি যেমন ব্যাখ্যা করেছেন, আমি যতটুকু বুঝেছি, তা-ই বলছি। তিনি আরও বলেন, পরবর্তী যেসব ঘটনা ঘটেছে, তাতে মনে হয়েছে আমরা আরও পরিপক্বভাবে বিষয়টি সামাল দিতে পারতাম। এখন দেখা যাচ্ছে, এক ধরনের অচলাবস্থার মধ্যে পড়ে গেছে সিটি কর্পোরেশন। আগের মাসের তুলনায় গত মাসে নাগরিক সেবা বিঘ্নিত হয়েছে। এখন পুরোপুরি দখলদারির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কর্পোরেশনের অফিসগুলোও এক ধরনের দখলে চলে গেছে, ফলে আমরা সেবা দিতে পারছি না। বিএনপির সঙ্গে সরকারের সম্পর্কে টানাপড়েন নেই দাবি করে তিনি বলেন, আপনারা জানেন, এখন আর আগের মতো টেনশন নেই। বিএনপির প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। তাতে সম্পর্ক অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। এই সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থা ধরে রাখতে হলে সব পক্ষকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।

দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় পারস্পরিক অবস্থান জানার সুযোগ হয়েছে: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, প্রথম দফার বৈঠকে সৃষ্ট মতভিন্নতার কারণে দ্বিতীয় দফায় আলোচনা শুরু করায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পারস্পরিক অবস্থান জানার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আজ বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার তৃতীয় বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনার ক্ষেত্রে মতভিন্নতার কারণেই দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রথম পর্বের আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলো পৃথক পৃথকভাবে তাদের অবস্থান জানিয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় পর্যায়ে পারস্পরিক আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, সে প্রেক্ষিতে দলগুলো নিজেদের অবস্থানের পাশাপাশি অন্যদের অবস্থান সম্পর্কেও জানতে পারছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় সকল রাজনৈতিক দল মতামতও দিচ্ছেন আবার মতবিনিময়ও করছেন। যা কমিশনকে অগ্রসর হতে সাহায্য করছে। অধ্যাপক আলী রীয়াজ আরো বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আজ জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা দু'টি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সাংবিধানিক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা রাজনৈতিক দলগুলো অনুভব করে। দুয়েকটি দলের মধ্যে এ ব্যাপারে নীতিগত মত পার্থক্য থাকলেও একটি সাংবিধানিক ব্যবস্থার বিষয়ে সকলে মত দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংবিধান সংস্কার কমিশন এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের দুটি প্রস্তাব রয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, ক্ষমতার ভারসাম্যের জন্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এসব বিষয়ে পুনর্বার আলোচনা অব্যাহত থাকবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। আগামীকাল সকাল ১১টায় আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে কমিশনের।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে জাতীয় পুরস্কার পাচ্ছেন যারা
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও গবেষণায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে “বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে জাতীয় পুরস্কার ২০২৫” এর জন্য চারটি ক্যাটাগরিতে চার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বন শাখা-২ থেকে ১৮ জুন জারীকৃত প্রজ্ঞাপন মোতাবেক চূড়ান্তভাবে মনোনীতরা হলেন- বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ (ব্যক্তি পর্যায়): নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার পূর্ব মাধনগরের মোঃ ফজলে রাব্বী। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ (প্রতিষ্ঠান/সংগঠন পর্যায়): শেরপুর সদরস্থ শেরপুর বার্ড কনজারভেশন সোসাইটি। বন্যপ্রাণী বিষয়ক শিক্ষা ও গবেষণা (ব্যক্তি পর্যায়): জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ মনোয়ার হোসেন। বন্যপ্রাণী বিষয়ক শিক্ষা ও গবেষণা (প্রতিষ্ঠান পর্যায়): ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ (পক্ষে: বিভাগীয় চেয়ারম্যান ড. মোসাঃ শেফালী বেগম)। নীতিমালা অনুযায়ী, প্রতিটি শ্রেণির পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে প্রদান করা হবে ২২ ক্যারেট মানের ২ ভরি (২৩.৩২ গ্রাম) ওজনের স্বর্ণপদক, এক লক্ষ টাকার অ্যাকাউন্ট-পেয়ী চেক এবং একটি সম্মাননা সনদ। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় মনে করে, এই সম্মাননা দেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, গবেষণা ও পরিবেশ শিক্ষায় জনগণের সচেতনতা ও সম্পৃক্ততা বাড়াবে। পাশাপাশি, পরিবেশবান্ধব উদ্যোগকে অনুপ্রেরণা জোগাবে ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এ কাজে উৎসাহিত করবে।
-67b716bee7cc8.jpg)
নির্বাচনে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত
নির্বাচনের সময় যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সবসময় প্রস্তুত থাকবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। বুধবার (১৮ জুন) রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে মে-২০২৫ মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন। ডিএমপি কমিশনার বলেন, দলমত নির্বিশেষে জাতীয় স্বার্থে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে জনগণকে একটি সফল নির্বাচন উপহার দিতে হবে। জনগণের কল্যাণে শতভাগ নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করে এ প্রক্রিয়া সফল করতে হবে। নির্বাচনের সময় যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সবসময় প্রস্তুত থাকবে। মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, যেকোনো অপরাধের ক্ষেত্রে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের হার আরও বাড়াতে হবে। ডিবি পুলিশসহ সব পুলিশ সদস্যের আরও কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালন করে নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ বলেন, নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম ও নাশকতার বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। দাগী আসামিদের গুরুত্বপূর্ণ ওয়ারেন্ট তামিল আরও বাড়াতে হবে। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তাদের কাজের গতি আরও বাড়িয়ে ওয়ারেন্ট তামিলের হার বাড়াতে হবে। ভাড়াটিয়াদের তথ্য হালনাগাদ করে সিআইএমএস-এ দ্রুত অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। জুলাই আন্দোলনের মামলাগুলো সঠিকভাবে তদন্ত করে দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। ঝটিকা মিছিল বন্ধে থানাগুলোকে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। সভায় যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মো. ফারুক হোসেন মে-২০২৫ মাসের সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি যেমন- ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি, সিঁধেল চুরি, খুন, অপমৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনা, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন মামলা সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করেন। এসময় ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। মাসিক অপরাধ সভায় মে মাসে ঢাকা মহানগরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও জননিরাপত্তা বিধানসহ উত্তম কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করেন ডিএমপি কমিশনার। অপরাধ পর্যালোচনা সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, উপ-পুলিশ কমিশনার, ডিএমপির সকল থানার ওসি ও বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তেহরান থেকে বাংলাদেশিদের নিরাপদ স্থানে যাওয়ার ব্যবস্থা করছে দূতাবাস
ইরান-ইসরায়েলের যুদ্ধ ষষ্ঠ দিনে গড়িয়েছে। সহসাই এই যুদ্ধ থামার তেমন কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এমন প্রেক্ষাপটে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তেহরান থেকে নিরাপদ জায়গায় চলে গেছেন। তিনি যেখানে অবস্থান করছেন, আগ্রহী বাংলাদেশিদেরও তেহরান ত্যাগ করে সেখানে বা তার আশেপাশে চলে যেতে বলা হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বুধবার (১৮ জুন) জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, তেহরানের সঙ্গে ইন্টারনেটে যোগাযোগ খুবই সীমিত। এ কারণে তথ্য পেতে অনেক বিলম্ব হচ্ছে। তবে, আমরা জানি, আগ্রহী বাংলাদেশিদের তেহরান থেকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘সোমবার (১৬ জুন) রাতে ঝুঁকি থাকার কারণে রাষ্ট্রদূত নিরাপদ জায়গায় চলে গেছেন। তিনি যে জায়গায় আছেন, অন্য বাংলাদেশিদেরও সেখানে থাকার ব্যবস্থা করা সম্ভব। তবে এখনও পর্যন্ত কতজন বাংলাদেশি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, সেই তথ্য আমাদের হাতে নেই।’ সরকারের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইরানের পরিস্থিতি বুঝে রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত হওয়ার কারণে তাদের পক্ষে সবসময় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে তাদেরকে অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘যদি কোনও বাংলাদেশি ইরান ছেড়ে সীমান্তবর্তী কোনও দেশে যেতে চান, তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী সর্বতো সহায়তা দেবে বাংলাদেশ দূতাবাস। এজন্য অর্থ, লজিস্টিক, ভিসাসহ যেকোনও ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।’ যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে সড়ক পথে চলাচল অত্যন্ত সীমিত হয়ে পড়েছে। সে কারণে সীমান্তবর্তী পাকিস্তান, আজারবাইজান বা তুরস্কে যাওয়া কঠিন হবে। তারপরেও যদি সম্ভব হয়, সে ব্যবস্থা করা হবে, বলে তিনি জানান। এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা বাড়তি অর্থ পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। দূতাবাসের কাছে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ রয়েছে।’

আরো ২১২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত, বরিশালেই ১১০
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ২১২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১১০ জনই বরিশাল বিভাগের। তবে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। বুধবার (১৮ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৬ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৩ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৩৩ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১ জন রয়েছেন। চলতি মাসের ১৮ দিনে ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের এবং মোট আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৩৩৩ জন। এছাড়া এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩০ জন। আর সব মিলিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৬ হাজার ৬৭৮ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৮৯ জন ডেঙ্গুরোগী। আর এ বছর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৫ হাজার ৮৮৭ জন।

ইউএনডিপি ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ‘ব্যালট প্রকল্পে’ চুক্তি করল ইসি
সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউএনডিপি ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ‘ব্যালট প্রকল্প’ এ আর্থিক সহায়তার চুক্তি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রতিশ্রুতি দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। বুধবার (১৮ জুন) আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে এক অনুষ্ঠানে এই সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, অস্ট্রেলিয়ার হাই কমিশনার সুসান রাইলি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে ইসি সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, আমরা ইসির গঠনের পর থেকেই ইউএনডিপির সহায়তা চেয়ে আসছি। তারা প্রথম থেকেই সহযোগিতার হাত বাড়াচ্ছেন। ব্যালট প্রজেক্টে মোট ১৮.৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেবে। অস্ট্রেলিয়া তাদের মুদ্রায় ২ মিলিয়ন ডলার সহায়তার কথা জানিয়েছে। ইসি সচিব জানান, নির্বাচনের জন্য ১৬টি কমপোন্টেট আছে। এই ১৬টির মধ্যে অর্থায়নের বিষয়ে ইউএনডিপির আলোচনা হয়েছে। এরমধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ২ মিলিয়ন ডলারের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা আশা করি, এই প্রকল্পের ভবিষ্যত অর্থয়ানের জন্য দাতাদের সহযোগিতা পাওয়া যাবে। প্রকল্পটি ২০২৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলে জানান ইসি সচিব। তিনি বলেন, এই প্রজেক্টের আওতায় ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, অ্যাওয়ারনেন্স, ট্রেনিং, ইন্সটিটিউশনাল ফ্রেমওয়ার্ক- মোটাদাগে ১৬টি কম্পোনেন্টে এই প্রকল্প পরিচালিত হবে। আশা করি এটার বেস্ট ইউটিলাইজেশন হবে। আখতার আহমেদ বলেন, ভোটার রেজিস্ট্রেশন প্রসেসে তারা প্রাথমিক পর্যায়ে আমাদের ল্যাপটপ, স্ক্যানার, ক্যামেরা, অফিস মেশিন দিয়ে সহযোগিতা করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় এই প্রকল্পের আজ এমওইউ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশে হাইকমিশনার সুসান রাইলি বলেন, অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং অংশীদার, এবং বাংলাদেশ যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথে অগ্রসর হতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করার সুযোগকে আমরা স্বাগত জানাই। তিনি বলেন, সম্প্রতি আমরা সংস্কার কমিশনের পাঁচজন কর্মকর্তাকে অস্ট্রেলিয়ায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম, যাতে তারা ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র ইস্যুর বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নিতে এবং ধারণা পেতে পারেন। তবে আজ আমরা আনন্দিত যে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ‘দ্য ব্যালট’ প্রকল্পে সরাসরি সহায়তা হিসেবে ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার প্রদান করছি। নির্বাচিত সরকারের পথে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ, ইউএনডিপি, ইউনেস্কো এবং ইউএন উইমেনের সঙ্গে যৌথভাবে এই প্রকল্পটি স্বচ্ছতা, অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং টেকসই প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার নিশ্চিত করবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমাদের ক্ষুদ্র অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে আমরা গর্বিত। ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার জানান, গত বছর বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনের কিছুদিন পরেই তারা জাতিসংঘের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সহায়তা চায়। এরপর জাতিসংঘ একটি ‘নিড অ্যাসেসমেন্ট মিশন’ প্রেরণ করে, যা চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করে এবং জাতিসংঘ কি ধরনের কারিগরি সহায়তা দিতে পারে, তার সীমারেখা নির্ধারণে কাজ করে। তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে এই সুপারিশগুলো একটি প্রকল্পে রূপান্তরিত হয়েছে, যা ‘দ্য ব্যালট প্রজেক্ট’ নামে পরিচিত। বাংলাদেশ সরকার এই প্রকল্পটি রেকর্ড সময়ে অনুমোদন করেছে। জাতিসংঘ, নির্বাচন কমিশন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এই প্রকল্পে একসঙ্গে কাজ করছে এবং আমরা গর্বিত যে আজ অস্ট্রেলিয়া এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের প্রথম দাতা ও অংশীদার হিসেবে এগিয়ে এসেছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাতিসংঘ, ইউএনডিপি, ইউনেস্কো এবং ইউএন উইমেন। অস্ট্রেলিয়াই প্রথম দেশ, যারা এর পেছনে সরকারের ও করদাতাদের প্রতিশ্রুতি নিয়ে এগিয়ে এসেছে। আমরা অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি এবং আশা করছি, অন্যরাও এগিয়ে আসবে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করতে, যাতে এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম সেরা নির্বাচন হয়ে ওঠে।