তেহরান থেকে বাংলাদেশিদের নিরাপদ স্থানে যাওয়ার ব্যবস্থা করছে দূতাবাস

ইরান-ইসরায়েলের যুদ্ধ ষষ্ঠ দিনে গড়িয়েছে। সহসাই এই যুদ্ধ থামার তেমন কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এমন প্রেক্ষাপটে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তেহরান থেকে নিরাপদ জায়গায় চলে গেছেন। তিনি যেখানে অবস্থান করছেন, আগ্রহী বাংলাদেশিদেরও তেহরান ত্যাগ করে সেখানে বা তার আশেপাশে চলে যেতে বলা হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বুধবার (১৮ জুন) জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, তেহরানের সঙ্গে ইন্টারনেটে যোগাযোগ খুবই সীমিত। এ কারণে তথ্য পেতে অনেক বিলম্ব হচ্ছে। তবে, আমরা জানি, আগ্রহী বাংলাদেশিদের তেহরান থেকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘সোমবার (১৬ জুন) রাতে ঝুঁকি থাকার কারণে রাষ্ট্রদূত নিরাপদ জায়গায় চলে গেছেন। তিনি যে জায়গায় আছেন, অন্য বাংলাদেশিদেরও সেখানে থাকার ব্যবস্থা করা সম্ভব। তবে এখনও পর্যন্ত কতজন বাংলাদেশি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, সেই তথ্য আমাদের হাতে নেই।’ সরকারের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইরানের পরিস্থিতি বুঝে রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত হওয়ার কারণে তাদের পক্ষে সবসময় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে তাদেরকে অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘যদি কোনও বাংলাদেশি ইরান ছেড়ে সীমান্তবর্তী কোনও দেশে যেতে চান, তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী সর্বতো সহায়তা দেবে বাংলাদেশ দূতাবাস। এজন্য অর্থ, লজিস্টিক, ভিসাসহ যেকোনও ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।’ যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে সড়ক পথে চলাচল অত্যন্ত সীমিত হয়ে পড়েছে। সে কারণে সীমান্তবর্তী পাকিস্তান, আজারবাইজান বা তুরস্কে যাওয়া কঠিন হবে। তারপরেও যদি সম্ভব হয়, সে ব্যবস্থা করা হবে, বলে তিনি জানান। এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা বাড়তি অর্থ পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। দূতাবাসের কাছে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ রয়েছে।’

আরো ২১২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত, বরিশালেই ১১০

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ২১২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১১০ জনই বরিশাল বিভাগের। তবে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। বুধবার (১৮ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৬ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৩ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৩৩ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১ জন রয়েছেন। চলতি মাসের ১৮ দিনে ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের এবং মোট আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৩৩৩ জন। এছাড়া এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩০ জন। আর সব মিলিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৬ হাজার ৬৭৮ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৮৯ জন ডেঙ্গুরোগী। আর এ বছর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৫ হাজার ৮৮৭ জন।

ইউএনডিপি ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ‌‘ব্যালট প্রকল্পে’ চুক্তি করল ইসি

সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউএনডিপি ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ‌‘ব্যালট প্রকল্প’ এ আর্থিক সহায়তার চুক্তি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রতিশ্রুতি দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। বুধবার (১৮ জুন) আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে এক অনুষ্ঠানে এই সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, অস্ট্রেলিয়ার হাই কমিশনার সুসান রাইলি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে ইসি সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, আমরা ইসির গঠনের পর থেকেই ইউএনডিপির সহায়তা চেয়ে আসছি। তারা প্রথম থেকেই সহযোগিতার হাত বাড়াচ্ছেন। ব্যালট প্রজেক্টে মোট ১৮.৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেবে। অস্ট্রেলিয়া তাদের মুদ্রায় ২ মিলিয়ন ডলার সহায়তার কথা জানিয়েছে। ইসি সচিব জানান, নির্বাচনের জন্য ১৬টি কমপোন্টেট আছে। এই ১৬টির মধ্যে অর্থায়নের বিষয়ে ইউএনডিপির আলোচনা হয়েছে। এরমধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ২ মিলিয়ন ডলারের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা আশা করি, এই প্রকল্পের ভবিষ্যত অর্থয়ানের জন্য দাতাদের সহযোগিতা পাওয়া যাবে। প্রকল্পটি ২০২৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলে জানান ইসি সচিব। তিনি বলেন, এই প্রজেক্টের আওতায় ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, অ্যাওয়ারনেন্স, ট্রেনিং, ইন্সটিটিউশনাল ফ্রেমওয়ার্ক- মোটাদাগে ১৬টি কম্পোনেন্টে এই প্রকল্প পরিচালিত হবে। আশা করি এটার বেস্ট ইউটিলাইজেশন হবে। আখতার আহমেদ বলেন, ভোটার রেজিস্ট্রেশন প্রসেসে তারা প্রাথমিক পর্যায়ে আমাদের ল্যাপটপ, স্ক্যানার, ক্যামেরা, অফিস মেশিন দিয়ে সহযোগিতা করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় এই প্রকল্পের আজ এমওইউ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশে হাইকমিশনার সুসান রাইলি বলেন, অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং অংশীদার, এবং বাংলাদেশ যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথে অগ্রসর হতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করার সুযোগকে আমরা স্বাগত জানাই। তিনি বলেন, সম্প্রতি আমরা সংস্কার কমিশনের পাঁচজন কর্মকর্তাকে অস্ট্রেলিয়ায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম, যাতে তারা ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র ইস্যুর বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নিতে এবং ধারণা পেতে পারেন। তবে আজ আমরা আনন্দিত যে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ‘দ্য ব্যালট’ প্রকল্পে সরাসরি সহায়তা হিসেবে ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার প্রদান করছি। নির্বাচিত সরকারের পথে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ, ইউএনডিপি, ইউনেস্কো এবং ইউএন উইমেনের সঙ্গে যৌথভাবে এই প্রকল্পটি স্বচ্ছতা, অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং টেকসই প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার নিশ্চিত করবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমাদের ক্ষুদ্র অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে আমরা গর্বিত। ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার জানান, গত বছর বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনের কিছুদিন পরেই তারা জাতিসংঘের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সহায়তা চায়। এরপর জাতিসংঘ একটি ‘নিড অ্যাসেসমেন্ট মিশন’ প্রেরণ করে, যা চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করে এবং জাতিসংঘ কি ধরনের কারিগরি সহায়তা দিতে পারে, তার সীমারেখা নির্ধারণে কাজ করে। তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে এই সুপারিশগুলো একটি প্রকল্পে রূপান্তরিত হয়েছে, যা ‘দ্য ব্যালট প্রজেক্ট’ নামে পরিচিত। বাংলাদেশ সরকার এই প্রকল্পটি রেকর্ড সময়ে অনুমোদন করেছে। জাতিসংঘ, নির্বাচন কমিশন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এই প্রকল্পে একসঙ্গে কাজ করছে এবং আমরা গর্বিত যে আজ অস্ট্রেলিয়া এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের প্রথম দাতা ও অংশীদার হিসেবে এগিয়ে এসেছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাতিসংঘ, ইউএনডিপি, ইউনেস্কো এবং ইউএন উইমেন। অস্ট্রেলিয়াই প্রথম দেশ, যারা এর পেছনে সরকারের ও করদাতাদের প্রতিশ্রুতি নিয়ে এগিয়ে এসেছে। আমরা অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি এবং আশা করছি, অন্যরাও এগিয়ে আসবে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করতে, যাতে এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম সেরা নির্বাচন হয়ে ওঠে।

তথ্য এখন জাতীয় নিরাপত্তার কৌশলগত অস্ত্র: উপদেষ্টা রিজওয়ানা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তা এখন কেবল অস্ত্রের ওপর নির্ভর করে না, এটি জনমতের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিভ্রান্তিকর তথ্য একটি মনস্তাত্ত্বিক অস্ত্র এটি মোকাবিলায় চাই সত্য, আস্থা এবং তথ্যভিত্তিক সচেতনতা। বুধবার (১৮ জুন) মিরপুরের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ (এনডিসি)-এ অনুষ্ঠিত একটি সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে এনডিসি এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (বিপিএসএস)। উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ আমাদের ইতিহাসে একটি ট্র্যাজেডি। ৫০ হাজার সৈন্য নিয়ে পরাজয়ের অন্যতম কারণ ছিল ভুল তথ্য ও ষড়যন্ত্র। আজকের দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো গুজব ঠিক তেমনি জাতীয় নিরাপত্তা ও উন্নয়নকে হুমকির মুখে ফেলছে। তিনি বলেন, তথ্যের স্বপ্রণোদিত প্রকাশ নিশ্চিত না হলে জনগণ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, ফলে গুজবই সমাজে চালিকা শক্তি হয়ে ওঠে। রাষ্ট্রের প্রকল্পের খরচ জনগণের টাকায়, তাই জনগণের উচিত সেই প্রকল্প সম্পর্কে জানার অধিকার থাকা। উপদেষ্টা জলবায়ু সংকটকে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি আমাদের এক-তৃতীয়াংশ ভূখণ্ডকে ডুবিয়ে দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, তথ্য শুধু প্রযুক্তি দিয়ে নয়, লোকজ জ্ঞান দিয়েও গঠিত। অনেক ক্ষেত্রে গ্রামের মানুষদের পূর্বাভাস মডেলের চেয়েও বেশি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। উপদেষ্টা জানান, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে স্যাটেলাইটভিত্তিক তথ্য ও প্রশিক্ষণ সহায়তা দিতে প্রস্তুত। এখন প্রয়োজন সেই তথ্য বিশ্লেষণের সক্ষমতা গড়ে তোলা এবং তা সাধারণ মানুষের কাছে সহজভাবে পৌঁছে দেওয়া। উপদেষ্টা বলেন, তথ্য যদি গোপন রাখা হয়, সত্য যদি দমন করা হয়, তাহলে আমরা টেকসই উন্নয়ন ও নিরাপত্তা দুটোই হারাব। এই আলোচনার মাধ্যমে আমরা যেন একটি তথ্যভিত্তিক, সুরক্ষিত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ার পথে আরও একধাপ এগিয়ে যেতে পারি। ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হকও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। চারজন অংশগ্রহণকারী মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, কূটনীতিক, শিক্ষাবিদ, অংশগ্রহণকারী এবং উন্নয়ন পেশাদাররা উপস্থিত ছিলেন।

পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করতে এসএসএফ সদস্যদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সদস্যদের রাষ্ট্র ঘোষিত ভিআইপিদের নিরাপত্তা প্রদানে পেশাগত দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি চারিত্রিক দৃঢ়তা, উন্নত শৃঙ্খলা, সততা, দায়িত্বশীলতা এবং মানবিক গুনাবলীর বিষয়সমূহকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। একইসাথে তিনি এসএসএফ সদস্যদের রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠে পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করার আহ্বান জানান। অধ্যাপক ইউনূস আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের ৩৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত 'প্রধান উপদেষ্টার দরবার' অনুষ্ঠানের বক্তব্যে এ আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নিরাপত্তার খাতিরে এসএসএফকে বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতা আরোপ করতে হয়, যা অনেক সময় জনভোগান্তি সৃষ্টি করে। এ ব্যাপারে আমি এসএসএফকে যতটুকু সম্ভব জনভোগান্তি পরিহার করার ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছি। অতীতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিআইপি ফ্লাইটের জন্য প্রায় এক ঘণ্টা সকল ফ্লাইট অপারেশন বন্ধ থাকত। এতে অনেক ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হত। আমি এই নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়েছি। এতে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘব হবে বলে আমি আশাবাদী। আমি মনে করি জনবিচ্ছিন্ন না হয়ে বরং জনসংযোগ ও নিরাপত্তার মেলবন্ধনের মাধ্যমেই এসএসএফ তার ওপর অর্পিত সকল দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করবে।’ অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে আধুনিক প্রযুক্তি ও তথ্য আদান প্রদান খুব সহজ হওয়ার কারণে নিরাপত্তা হুমকির ধরন ও প্রকৃতি দ্রুত পরিবর্তনশীল। তাই শতভাগ নিরাপত্তা প্রদান করা খুবই চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয়। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এসএসএফ সুষ্ঠুভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। আমি আশা করি, এসএসএফ নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা হুমকি পর্যালোচনা এবং সেগুলো মোকাবিলা করার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করবে।’ তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি এসএসএফ যমুনার সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুসংহত করেছে। আমি আশা করি, এসএসএফ একই ভাবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়েরও সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করবে। আমি আরো আশা করি, এসএসএফ একটি পেশাদার বাহিনী হিসেবে উন্নত প্রশিক্ষণ, উন্নত প্রযুক্তি এবং উন্নত মনোবলের সন্নিবেশে দিন দিন আরো উন্নতি সাধন করবে।’ এসএসএফের প্রশিক্ষণ,অস্ত্র ও সরঞ্জামাদির আধুনিকায়ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গতবছরের ৫ আগস্ট এই বাহিনীর কিছু যানবাহন ও সরঞ্জামাদির ক্ষতি হয়েছিল, যা অল্প সময়ের মধ্যেই কার্যক্ষম করা হয়েছে। পাশাপাশি, বাহিনীর অভিযানিক কার্যক্রম আরো বেগবান ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে অত্যাধুনিক অস্ত্র-সরঞ্জামাদির ব্যবহার এবং দেশে-বিদেশে উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিটি সদস্যের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। খুব শীঘ্রই এসএসএফ তাদের ১২ বছরের পুরানো ভিএইচএফ রেডিও কমিউনিকেশন সিস্টেম পরিবর্তন করে সর্বশেষ মডেলের ইউএইচএফ রেডিও কমিউনিকেশন সিস্টেম সংযোজন করবে, যা তাদের অভিযানিক কার্যক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি করবে। তিনি বলেন, আমি জেনে খুশি হয়েছি যে এসএসএফ এর অত্যাধুনিক ইনডোর ফায়ারিং রেঞ্জ এর কাজ প্রায় শেষ ও আগামী মাস থেকে এটি ব্যবহার করা সম্ভব হবে। এই ফেরিং রেঞ্জের জন্য ভূমি বরাদ্দসহ অন্যান্য সহযোগিতা প্রদান করায় বিমান বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্যান্য বাহিনীর তুলনায় এসএসএফ একটি ক্ষুদ্র বাহিনী। তবে এর কাজের গুরুত্ব এবং সংবেদনশীলতা অনেক বেশি। এই বাহিনী আমার নেতৃত্বে এবং তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। এসএসএফ একটি প্রশিক্ষিত ও সুশৃঙ্খল বাহিনী যারা আমার ও রাষ্ট্রপতির সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। বিগত ১০ মাসে এসএসএফ দেশে ও বিদেশে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালন করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন এবং সার্বিক পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতার জন্য তিনি এসএসএফের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেনা, নৌ, বিমান, পুলিশ ও আনসার বাহিনী হতে সেরা চৌকস অফিসারকে নিয়ে এসএসএফ একটি অত্যাধুনিক ও পেশাদার বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠেছে। তবে তাদেরকে কেবল দেশের সেরা হলে চলবে না পেশাদারিত্ব, কাজের দক্ষতা, প্রযুক্তির ব্যবহার সবকিছু মিলিয়ে বিশ্বমানের হতে হবে। এসএসএফ সদস্যদের বিশ্বমানের হওয়ার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। তিনি এসএসএফ-এ সেনা, নৌ, বিমান, পুলিশ ও আনসার বাহিনী থেকে চৌকস অফিসার নির্বাচন ও প্রেরণ করায় সকল বাহিনী প্রধানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে এসএসএফ-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুস সামাদ চৌধুরী বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাসহ রাষ্ট্র ঘোষিত ভিআইপিদের নিরাপত্তা প্রদান এবং মর্যাদা ও সম্মান রক্ষায় এসএসএফ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। বর্তমানে এই বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৫৭০। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, তিন বাহিনী প্রধান, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

এপ্রিলে নির্বাচিত সরকার পাবে দেশ, এরপর চুপচাপ সরে যাব: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছেন, আগামী এপ্রিলের মধ্যেই দেশ নির্বাচিত সরকার পাবে, এবং এরপর বর্তমান সরকার চুপচাপ সরে যাবে। গত ১২ জুন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই কথা বলেন। অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান আরও বলেন, রাজনৈতিক আন্দোলনের এক বছর পেরিয়ে গেলেও মানুষ এখনো সরকারকে শত্রু হিসেবে দেখে। ড. ইউনূসের ভাষায়, ‘নতুন বাংলাদেশে’ বিশ্বাস আনতে হলে গ্রামের পর গ্রাম, সরকারের প্রতিটি স্তর থেকে দুর্নীতি দূর করা ছাড়া উপায় নেই। নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ড. ইউনূস জানান, গত জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতনের পর তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন। এখন তিনি চান, এমন একটি রাষ্ট্র গড়ে উঠুক—যা সাধারণ মানুষকে কিছু ফিরিয়ে দিতে পারবে। কারণ, দীর্ঘদিন ধরে মানুষ মনে করে, সরকার তাদের কোনো কিছুই দেয় না। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পাসপোর্ট থেকে শুরু করে ব্যবসার লাইসেন্স নিতে গেলে ঘুষ দিতে হয়। সরকারের সদস্যরা টাকা আত্মসাৎ করেছে। প্রতিটি স্তরে দুর্নীতির বিস্তার রয়েছে। তিনি বলেন, ‘সব সময়ই কেউ না কেউ ওত পেতে থাকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য। মানুষ মনে করে, সরকার হলো তাদের চিরস্থায়ী শত্রু। এই শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ করেই বাঁচতে হয়। এই শত্রু এতই শক্তিশালী যে মানুষ তার কাছ থেকে দূরে থাকতে চায়।’ সরকারি চাকরিতে কোটার মাধ্যমে আওয়ামী লীগপন্থীদের সুবিধা দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ থেকে আন্দোলন শুরু হলেও এর পেছনে অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল—জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় ও তরুণদের সুযোগের অভাব। আওয়ামী লীগপ্রধান হাসিনা ধীরে ধীরে একনায়কতান্ত্রিক হয়ে উঠেছিলেন। বিরোধীদের দমন করছিলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত করছিলেন। ব্যাংকিং খাত ভেঙে পড়েছিল তাঁর দলের লোকজনের দুর্নীতির কারণে। এলিট শ্রেণির একাংশ বিশাল অঙ্কের ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করায় সাধারণ মানুষ নিজের টাকাও তুলতে পারছিল না। ২০২৪ সালের সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অনেকে আশা করেছিলেন, দেশের বিষাক্ত ও দ্বন্দ্বপূর্ণ রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। যেখানে দুই প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার ক্ষমতার জন্য মুখোমুখি হয়েছে। ইউনূস বলেন, ‘আমাদের শুরুটা ছিল এক ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতি, এক বিপর্যস্ত সমাজ নিয়ে। প্রশাসন পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিল। আমরা জানতাম না, আমাদের বিলগুলো মেটাতে পারব কি না। বিপুল অঙ্কের সম্পদ যেন কারও মালিকানায় নেই, এমনভাবে লুটপাট করা হয়েছে। ব্যাংকগুলো ঋণ দিয়েছে, কিন্তু তারা জানত এটা ঋণ নয়, উপহার—যা আর কখনোই ফিরে আসবে না।’ চলতি বছরের জানুয়ারিতে নির্বাচনী ব্যবস্থা, দুর্নীতি আর জনকল্যাণ নিয়ে কয়েকটি সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। ড. ইউনূস এখন চেষ্টা করছেন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই সংস্কার নিয়ে ঐকমত্য গড়ে তুলতে। আগামী জুলাইয়ে আন্দোলনের এক বছর পূর্তির আগেই ‘জুলাই সনদ’ নামে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি সম্পন্ন করতে চান তিনি, যেন এরপর এপ্রিলের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া যায়। ইউনূস বলেন, ‘এই চুক্তি হবে ঐতিহাসিক। সব দলকে একত্র করবে। কমিশনগুলো যে সুপারিশ দিয়েছে, সেগুলো সাধারণ নয়। এগুলো ভাসা-ভাসা কিছু নয়, একটু ভালো করার বা সামান্য পরিবর্তনের পরামর্শ নয়। আমাদের দায়িত্ব এসব বাস্তবায়ন করা এবং দেশকে এক কার্যকর, স্বাভাবিক ব্যবস্থার দিকে নিয়ে যাওয়া।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারপর আমরা গর্ব করে বলতে পারব, একটা নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে।’ তবে ইউনূস স্বীকার করেন, সব পক্ষের মধ্যে ঐকমত্য আনা সহজ হবে না। বিএনপি এখন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল এবং নির্বাচনে জয়ের ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে। তারা দ্রুতই ভোট চায়। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী পদে দুই মেয়াদের সীমাবদ্ধতার বিরোধিতা করছে। তবুও ইউনূস মনে করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখন যেভাবে আলোচনার পরিবেশ তৈরি হয়েছে, সেটি আগের বাংলাদেশে দেখা যায়নি। যেখানে দীর্ঘদিন ধরেই একে অপরের সঙ্গে মতৈক্যের কোনো নজির ছিল না। রাষ্ট্র কীভাবে মানুষের জন্য কাজ করবে—সেটি বদলাতে চান ইউনূস। তিনি চান, সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা কিংবা অন্যান্য খাতে কাজ হোক। তিনি নিজেই যে মাইক্রোক্রেডিট মডেল তৈরি করেছিলেন, সেটিকে আরও সম্প্রসারিত করতে চান। এই খাত বর্তমানে এনজিও-নির্ভর। যারা দরিদ্র মানুষকে ছোট ঋণ দিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসা করতে সাহায্য করে। ইউনূস চান, এটি একটি আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা হোক। যেখানে ক্ষুদ্রঋণের জন্য বিশেষায়িত ব্যাংক থাকবে। তাঁর ভাষায়, এতে উদ্যোক্তা তৈরি হবে। কারণ দরিদ্র মানুষ সাধারণ ব্যাংকের কাছে যেতে পারে না, তারা ঋণ দেয় না। মাইক্রোক্রেডিট নিয়ে নেতিবাচক ভাবনা তৈরি হয়েছে। কারণ, কিছু ঋণদাতা উচ্চ সুদ আরোপ করেছে। তবে ইউনূস বলেন, এই মডেল বিশ্বের নানা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘মানুষ ভাবে, মাইক্রোক্রেডিট দরিদ্রদের কাছ থেকে টাকা কেড়ে নিচ্ছে। কিন্তু আসলে তা নয়। তাই একে খারাপ নাম দেওয়া হয়েছে। তারপর বলা হয়েছে, এটা ঠিক করতে হবে। কিন্তু আমি বলি, ঠিক করার কিছু নেই। মাইক্রোক্রেডিটের কোনো ভুল নেই।’ ইউনূস বরাবরই প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার সমালোচক। কারণ, এতে দরিদ্রদের প্রবেশাধিকার নেই। আবার একই সঙ্গে এই ব্যাংক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে ক্ষমতাসীনদের ঋণখেলাপির কারণে। মানুষ পর্যন্ত নিজের জমানো টাকা তুলতে পারেনি। এক বছর আগেও শেখ হাসিনা তাঁকে প্রকাশ্যে আক্রমণ করতেন। হঠাৎ করেই তাঁকে সরকারে নিয়ে আসা হয়। ইউনূস বলেন, তিনি এপ্রিলের নির্বাচন পর্যন্তই দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর আর সরকারের সঙ্গে থাকবেন না। এখন তাঁর কাজ হলো বিভিন্ন রাজনৈতিক চাপের ভারসাম্য রক্ষা করে সংস্কার বাস্তবায়ন। তিনি বলেন, ‘আগে আওয়ামী লীগের লোকেরা আমাকে আক্রমণ করত, এখন সবাই করে। এটা স্বাভাবিক। এই দায়িত্বে থাকলে সবাই আপনাকে নিয়ে কিছু বলবেই। আপনাকে সেটা মেনে নিতে হবে।’ ইউনূস বলেন, ‘এপ্রিলের পর আমরা একটি নির্বাচিত সরকার পাব। আর আমরা চুপচাপ সরে যাব।’

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে জেল-জরিমানা

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। অধ্যাদেশে আহতদের তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ এবং আহত ব্যক্তিদের যথাক্রমে ‘জুলাই শহীদ’ এবং ‘জুলাই যোদ্ধা’র স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) এ অধ্যাদেশ জারি করা হয়। প্রতারণার মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং আহতদের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা নিলে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে। অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা যেকোনো শ্রেণির আহত জুলাই যোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা জ্ঞাতসারে কোনো মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন করে বা বিভ্রান্তিকর কাগজাদি দাখিল করে নিজেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত জুলাই যোদ্ধা দাবি করে কোনো চিকিৎসা সুবিধা বা আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন সুবিধা দাবি করেন বা গ্রহণ করেন- তাহলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে তাকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া সুবিধা বা আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে।’ অধ্যাদেশে আরও বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে শহীদ হয়েছেন এমন ব্যক্তির পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য এবং আহত জুলাই যোদ্ধাদের অনুকূলে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি; তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক উপার্জনমুখী কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা; যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা; আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষে সহজ শর্তে ঋণ বা এমন সুবিধাদি প্রদান এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা প্রদান।

করোনায় দুজন মারা গেছেন, শনাক্ত ১৮

দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১৮ জন। এ নিয়ে চলতি বছরের গত ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৩৩১ জন এবং মারা গেছেন সাতজন। মঙ্গলবার (১৭ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১২টি নমুনা পরীক্ষায় ১৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ১০ জন, ঢাকা মহানগরে ২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪ জন, খুলনায় ১ জন এবং ময়মনসিংহে একজন রয়েছেন। এসময়ে যে দুজন মারা গেছেন তাদের মধ্যে একজন ঢাকা বিভাগে এবং অন্যজন চট্টগ্রাম বিভাগে।

প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফর ‘অত্যন্ত সফল হয়েছে’ : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস এর সাথে সাক্ষাৎ এবং চুরি যাওয়া সম্পদ উদ্ধারে বাস্তব অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরকে ‘অত্যন্ত সফল’ বলে বর্ণনা করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক আজ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের বিবেচনায়, সফরটি অত্যন্ত সফল হয়েছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত সফরসূচির চেয়ে বেশি ব্যস্ততা ছিল এবং সরকারী সফরের সময় তাকে পূর্ণ প্রটোকল দেওয়া হয়েছিল। সিদ্দিক এই সফরে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জনের কথা তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে চুরি যাওয়া সম্পদ উদ্ধারে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ, রাজা তৃতীয় চার্লস এর সাথে একান্ত সাক্ষাৎ এবং অধ্যাপক ইউনূসকে মর্যাদাপূর্ণ রাজা তৃতীয় চার্লস হারমনি পুরষ্কার প্রদান। অধ্যাপক ইউনূস বৃহস্পতিবার লন্ডনের সেন্ট জেমস প্যালেসে আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে রাজা তৃতীয় চার্লস হারমনি পুরষ্কার গ্রহণ করেন। পুরষ্কার বিতরণের আগে, রাজা চার্লস বাকিংহাম প্যালেসে অধ্যাপক ইউনূসকে একান্ত সাক্ষাতের জন্য আমন্ত্রণ জানান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দুই নেতা আধাঘণ্টাব্যাপী একান্ত বৈঠক করেন, যেখানে তারা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ২৪৪ জন

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ২৪৪ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৩৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৯ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৬ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে চারজন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৩২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৪ জন রয়েছেন। এ সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২০৯ জন ডেঙ্গুরোগী। চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৬ হাজার ৪৬৬ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৫৯ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৮ শতাংশ নারী। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৯৮ জন। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩০জন। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন এবং মারা গেছেন ৫৭৫ জন।

ইশরাকের বিরুদ্ধে ‘ক্রিমিনাল অফেন্সের’ অভিযোগ আসিফ মাহমুদের

শপথ না নিয়েই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন সভায় অংশ নিয়ে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার মতো ‘ক্রিমিনাল অফেন্স’ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। মঙ্গলবার বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে এ মন্তব্য করেন উপদেষ্টা আসিফ। নাগরিক সেবাদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, ‘বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন নগর ভবনের মিলনায়তন ও অফিস দখল করে নাগরিক সেবাদানে বাধা দিচ্ছেন। প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার কোনো সুযোগ নেই ইশরাক হোসেনের। বর্তমান পরিস্থিতি চলতে থাকলে নাগরিক সেবাদান করা শতভাগ বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘উনি (ইশরাক হোসেন) অফিসিয়ালি কোনো দায়িত্ব নেননি। ইশরাক হোসেন নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে গিয়ে নগর ভবনের মিলনায়তন, অফিস দখল করেছেন।’ তবে ‘নাগরিক সেবা বিঘ্নিত করা আরও বাড়লে অবশ্যই আমাদেরকে বাধ্য হয়ে কোনো কঠোর ব্যবস্থায় যেতে হতে পারে’ বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আসিফ মাহমুদ। এদিকে দুদিন ধরে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কার্যালয় নগর ভবনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন সভায় অংশ নিচ্ছেন ইশরাক হোসেন। সিটি করপোরেশনের যেসব সভায় তিনি অংশ নিচ্ছেন সেগুলোর ব্যানারে তাকে ‘মাননীয় মেয়র’ হিসেবে সম্বোধন করা হচ্ছে। এসব সভা আবার সিটি করপোরেশনের কার্যালয় নগর ভবনের ভেতরে অবস্থিত মিলনায়তনেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু আইনানুযায়ী শপথ না নিয়ে এই বিএনপি নেতা মেয়রের এমন সব দায়িত্ব পালন করতে পারেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা বলছেন—বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন যেভাবে শপথ ছাড়াই নগর ভবনে মেয়রের ভূমিকায় বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন আইনগতভাবে তা তিনি পারেন না। সাবেক স্থানীয় সরকার সচিব আবু আলম শহীদ খান বলেন, ‘এরকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ইশরাক হোসেনের মধ্যে আইনগতভাবে সমঝোতা করতে হবে বলে মন্তব্য করেন সাবেক এই সচিব। উল্লেখ্য, মেয়র হিসেবে এখন পর্যন্ত শপথ নিতে না পারলেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনে মতবিনিময় সভা করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। সোমবার দুপুরে নগর ভবনে অনুষ্ঠিত ওই সভার ব্যানারে লেখা ছিল ‘পরিচ্ছন্ন ঢাকা ও নাগরিক সেবা নিশ্চিতকল্পে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা। প্রধান অতিথি ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। মাননীয় মেয়র, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।’ সিটি করপোরেশনের প্রায় ৭০ জন পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক এই সভায় অংশ নেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন বিএনপি–সমর্থিত ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক কয়েকজন কাউন্সিলর। নগর ভবনের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনে প্রায় দুই ঘণ্টা এই সভা চলে।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের উন্নয়নে ৫ দেশে স্থাপিত হবে নতুন মিশন : উপদেষ্টা আসিফ

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করতে পাঁচ দেশে নতুন মিশন স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার ভেরিফাইড ফেসবুকে এক পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ক্রমপরিবর্তনশীল ভূরাজনৈতিক পরিবেশ, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বাস্তবতা এবং এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রেক্ষাপটে ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার সঙ্গে রাজনৈতিক সংযোগ জোরদার, বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করতে পাঁচ দেশে নতুন মিশন স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।’ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এর পোস্টে বলা হয়, ‘আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন, নরওয়ের অসলো, আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেস, জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট ও ব্রাজিলের সাওপাওলো শহরে এসব মিশন স্থাপন করা হবে।’

সুন্দরবন রক্ষায় কনক্রিট অ্যাকশন প্ল্যান করা হবে: রিজওয়ানা হাসান

সুন্দরবন রক্ষায় কনক্রিট অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আজ (১৭ জুন) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত স্ট্র্যাটেজিক এনভায়রনমেন্টাল অ্যাসেসমেন্ট (SEA) সংক্রান্ত এক গুরুত্বপূর্ণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। উপদেষ্টা বলেন, “সুন্দরবন আমাদের একটাই। সবাই মিলে সুন্দরবনকে বাঁচাতে হবে।” তিনি কনক্রিট অ্যাকশন প্ল্যান তৈরির পাশাপাশি একটি কার্যকর সমন্বয় কাঠামো (কোঅর্ডিনেশন মেকানিজম) গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তাঁর মতে, সুন্দরবনের কোনো ঝুঁকি চিহ্নিত হলে বন অধিদপ্তর ও পরিবেশ অধিদপ্তর তা দ্রুত উত্থাপন করবে এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সিমেন্ট ফ্যাক্টরিগুলোর পরিবেশগত প্রভাব মনিটরিং করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেন তিনি। এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে কী কী কাজ করা যায়, তা নির্ধারণের জন্য মন্ত্রণালয়কে একটি সুস্পষ্ট ওয়ার্কপ্ল্যান প্রণয়নের আহ্বান জানান। সুন্দরবন সংরক্ষণে ‘বটম-আপ প্রসেস’ বাস্তবায়নের ওপরও তিনি গুরুত্ব দেন এবং বলেন, “অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে বন বিভাগের দক্ষতা বাড়াতে হবে।” সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ; অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ; অতিরিক্ত সচি ড. ফাহমিদা খানম; পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো: কামরুজ্জামান; বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো: আমীর হোসাইন চৌধুরী এবং সিইজিআইএস এর নির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা এ খান প্রমুখ। এর আগে উপদেষ্টা বন্যপ্রাণী উপদেষ্টা বোর্ডের সভায়ও সভাপতিত্ব করেন।

তেহরানে দূতাবাসের ৪০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরানোর কাজ চলছে: পররাষ্ট্রসচিব

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী জানিয়েছেন, ইরানের তেহরানে প্রায় ৪০০ বাংলাদেশি অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে প্রায় ১০০ বাংলাদেশি তেহরানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। একই সঙ্গে, কূটনীতিকসহ দূতাবাসের ৪০ জনকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের কাজ চলছে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা বিষয়ে ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী এসব তথ্য জানান। রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, তেহরানে বাংলাদশিরা নিরাপদ স্থানে যেতে চান। ইতোমধ্যেই ১শ জন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তেহরানের ৪শ নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া হবে। তারপর তাদের নিরাপদে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, তেহরানে বাংলাদেশি নাগরিক ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা হুমকির মধ্যে আছেন। তেহরান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতের বাসভবন ইতোমধ্যেই স্থানান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইসরায়েল ইরানে বিভিন্ন স্থানে সামরিক হামলা শুরু করে। ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানে প্রতিদিনই হতাহত বাড়ছে। এদিকে ইসরায়েলেও ইরান পাল্টা হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে।

সাকিবসহ ১৫ জনের নামে দুদকের মামলা

শেয়ারবাজার থেকে শতকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে শতকোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় সাকিব ছাড়া আরও ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য জানান। দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে সোমবার সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের ওরফে হিরু, তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজি ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ুন কবির ও তানভির নিজাম। আসামিদের বিরুদ্ধে ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক দ্রুত আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অসৎ অভিপ্রায়ে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রচলিত আইন ও বিধি (সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর ১৭ ধারা) পরিকল্পিতভাবে লঙ্ঘনপূর্বক নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিও অ্যাকাউন্টসমূহে অসাধু, অনৈতিক ও অবৈধ উপায়ে ফটকা ব্যবসার মতো একাধিক লেনদেন, জুয়া ও গুজবের মাধ্যমে বাজারের কারচুপি করেছেন। এজাহারে বলা হয়, পরিকল্পিতভাবে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ার সংঘবদ্ধভাবে ক্রমাগত ক্রয়-বিক্রয়পূর্বক কৃত্রিমভাবে দাম বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ওই শেয়ারসমূহে বিনিয়োগে প্রতারণাপূর্বক প্রলুব্ধ করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে তাদের ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা আত্মসাৎপূর্বক অস্বাভাবিক রিয়ালাইজড ক্যাপিটাল গেইনের নামে অর্জিত অপরাধলব্ধ অর্থ বা প্রসিড অব ক্রাইম শেয়ারবাজার থেকে সংঘবদ্ধভাবে উত্তোলন করেছেন। মামলায় সাকিব আল হাসানের সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে বলা হয়, আসামি মো. আবুল খায়ের ওরফে হিরুর শেয়ারবাজারে কারসাজিকৃত প্যারামাউন্ট ইস্যুরেন্স লিমিটেড, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড এবং সোনালী পেপারস লিমিটেডের শেয়ারে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করে বাজার কারসাজিতে যোগসাজশ করেন। সরাসরি সহায়তাপূর্বক সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কারসাজিকৃত শেয়ারে বিনিয়োগে প্রতারণাপূর্বক প্রলুব্ধ করে তাদের ২ কোটি ৯৫ লাখ ২ হাজার ৯১৫ টাকা রিয়ালাইজড ক্যাপিটাল গেইনের নামে অপরাধলব্ধ আয় হিসেবে শেয়ার বাজার হতে উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করেছেন। মো. আক্তার হোসেন বলেন, তিনটি কোম্পানির শেয়ারে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করেছেন। বিনিয়োগ কার্যক্রমে মার্কেট ম্যানুপুলেট করা হয়েছে। মার্কেট ম্যানুপুলেশনের সঙ্গে তিনি (সাকিব) জড়িত। এর আগে গত এপ্রিলে সাকিবে বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অর্থপাচার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে জন্য দুদকের উপপরিচালক মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়। ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে ২০১৮ সালে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে চুক্তি হয় দুদকের। এছাড়া হটলাইন-১০৬ উদ্বোধনকালেও সাকিবের সঙ্গে কাজ করে দুদক। বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠলে ২০২২ সালে সাকিবকে আর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর না রাখার কথা জানিয়েছিল দুদক।

ঢাকায় ভিসা কার্যক্রম ফের চালু করায় অস্ট্রেলিয়াকে ধন্যবাদ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম পুনরায় চালু করায় দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এই ধন্যবাদ জানান। হাইকমিশনার রাইল জানান, এখন থেকে ভিসা আবেদন অনলাইনের মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে। বর্তমানে ৬৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন এবং সেখানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ হাজারের বেশি। সাক্ষাৎকালে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, নির্বাচন, প্রশাসনিক সংস্কার ও রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন,“বিশৃঙ্খল একটি সময় পার করে আমরা সাংবিধানিক, বিচারিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি। একটি শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজ করছি, যাতে মসৃণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করা যায়।” তিনি জানান, আগামী জুলাই মাসে ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন করা হবে। জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন,“এই প্রথমবার জনগণ, বিশেষত তরুণ ভোটাররা স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে। আমি বিশ্বাস করি, এটি একটি উৎসবমুখর ও আশাব্যঞ্জক মুহূর্ত হবে।” নির্বাচনী সহায়তার অংশ হিসেবে ইউএনডিপির মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের দক্ষতা বৃদ্ধিতে অস্ট্রেলিয়া ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার দেবে বলে জানান হাইকমিশনার রাইল। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রসঙ্গে তিনি জানান, বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার বাণিজ্য ৫ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে পৌঁছেছে, যা গত পাঁচ বছরে গড়ে বছরে ১৬.২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। রাইল আরও জানান,“অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডসের মাধ্যমে তিন হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এখন অ্যালামনাই নেটওয়ার্কে যুক্ত, যারা দেশের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখছেন।” প্রফেসর ইউনূস এই বৃত্তির সংখ্যা আরও বাড়াতে অনুরোধ জানান। রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,“বাংলাদেশে অবস্থানরত ১০ লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানবিক সহায়তা আরও বাড়ানো জরুরি।” এর জবাবে হাইকমিশনার রাইল জানান, ২০১৭ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশে ৫৫৩.৬ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মানবিক সহায়তা দিয়েছে এবং সম্প্রতি আরও ৯.৬ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে। তিনি বলেন,“মিয়ানমারে পরিস্থিতি অনুকূল হলে, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের পাশে থাকবে।” বাংলাদেশে নতুন দায়িত্ব পেয়ে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে রাইল বলেন,“বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক গতিশীলতা দীর্ঘদিন ধরে আমাকে আকৃষ্ট করেছে। এখানে এসে আমি সত্যিই রোমাঞ্চিত।” সাক্ষাতে সিনিয়র সচিব ও এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অনুবিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ নূরে আলম উপস্থিত ছিলেন।

জুলাইতে হবে ‘জুলাই সনদ’: আলী রীয়াজ

আগামী জুলাই মাসে ‘জুলাই সনদ’ তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংকল্পবদ্ধ যে, জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারবো’। মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার শুরুতে তিনি এমন মন্তব্য করেন। আলী রিয়াজ বলেন, ‘সব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হবে না। কিন্তু সবাইকেই ছাড় দেওয়ার মনোভাব নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।’ ঈদের আগে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু হলেও মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মূল আলোচনা শুরু করে কমিশন। বিএনপি-এনসিপিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা চলছে। এতে মূল আলোচ্য বিষয় হিসেবে রয়েছে, সংবিধানের ৭০নং অনুচ্ছেদ, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ এবং প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া। ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী তিন দিন টানা আলোচনা চলবে। এরপরেও আলোচনা অব্যাহত থাকবে। রাজনৈতিক দলগুলো রাজি থাকলে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শনিবারেও আলোচনা করতে রাজি কমিশন।

আমরা যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করছি, এখনই জ্বালানির দাম বৃদ্ধি নয়: অর্থ উপদেষ্টা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে তেলের বাজারে প্রভাব না পড়া পর্যন্ত দাম বাড়ানোর বিষয়ে অপেক্ষা করার কথা বলেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড.সালেহউদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ইরান-ইসরায়েলের চলমান সংঘাতে আমাদের দেশের জ্বালানি তেলের দামে কোনো প্রভাব পড়বে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, আপাতত আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। যুদ্ধ যদি বেশি দিন চলে, তাহলে আমাদের ওপর একটা প্রভাব বা প্রেশার পড়তে পারে। তবে আপাতত বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না। তিনি বলেন, গ্যাস, এলএনজির দাম যদি বেড়ে যায় তাহলে আমরা বিবেচনায় নেব। আজকে যে এলএনজি আমদানির অনুমোদন দিয়েছি সেটা পুরোনো দামেই। আমাদের ভাগ্য ভালো যে আমরা আগের দামেই পাবো। বিশেষ কোনো প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন কি না জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, বিশেষ প্রস্তুতি বলতে আজকে আমরা যে এলএনজি, সার আনার প্রস্তাব অনুমোদন দিলাম, সেটা পুরোনো দামে। ভবিষ্যতে যখন নতুন কোনো কিছু আনবো তখন হয়তো কিছুটা ইফেক্ট করবে। এছাড়া যুদ্ধ যদি দীর্ঘায়িত হয় তাহলে বিকল্প কিছু চিন্তা করছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বিকল্প চিন্তা বলতে অবশ্যই জ্বালানি মন্ত্রণালয় করছে। যেহেতু আমরা এলএনজির ওপর নির্ভর করি বেশি। যুদ্ধের ফলে শুধু জ্বালানি নয়, জাহাজ চলাচলেও প্রভাব পড়বে। হরমুজ প্রণালী দিয়ে জাহাজ আসে, সেখানে প্রভাব পড়তে পারে। আমার মনে হয় যুদ্ধটা বেশি দিন চলবে না।

আজও সচিবালয়ে বিক্ষোভ করছেন কর্মচারীরা

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে আজও (১৭ জুন) সচিবালয়ে বিক্ষোভ করছেন সরকারি কর্মচারীরা। বেলা ১১টায় কর্মচারীরা সচিবালয়ে ৬ নম্বর ভবনের সামনে বাদামতলায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। এরপর তারা মিছিল নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন ভবনের নিচে যান। সেখানে গিয়ে তারা বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন। সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতৃত্বে এ আন্দোলন হচ্ছে। বিক্ষোভ সমাবেশে ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবীর ও মো. নুরুল ইসলাম, কো-মহাসচিব মো. নজরুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত রয়েছেন। বিক্ষোভে কর্মচারীরা ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, সচিবালয় জেগেছে’, ‘মানি না মানবো না, ফ্যাসিবাদী কালো আইন’, ‘মানি না মানবো না, অবৈধ কালো আইন’ স্লোগান দেন। ঈদের ছুটির পর গতকাল সোমবার (১৬ জুন) ফের আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা। গতকালও তারা সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। কর্মচারী নেতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আইন উপদেষ্টার নেতৃত্ব গঠিত কমিটি চাকরি অধ্যাদেশ সংশোধনের সুপারিশ করবেন বলে আমরা শুনেছি। কিন্তু আমরা সেটি মেনে নেব না।’ আরেক কর্মচারী নেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘আমরা আঙুল এখনো সোজা রাখছি, বাঁকা করলে খবর আছে।’ চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে। এমন বিধান রেখে গত ২৫ মে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়। এর আগে গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন হয়। ২৪ মে থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবগুলো সংগঠন সম্মিলিতভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। তারা এই অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে অবহিত করছেন।

বিতর্কিত তিন নির্বাচন আয়োজনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি হচ্ছে

বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশনারগণ ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (১৬ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এ নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠকে কমিশন সদস্যগণ জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, ‘বেশকিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। খুব শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করে ফেলা সম্ভব হবে।’ প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমি আশা করি আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তার লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ‘লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে তারা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তারা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছে, মতামত দিয়েছে। যেখানেই গেছি সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?’ আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনায় বসতে হবে।’ বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘সকল রাজনৈতিক একমত হয়েছে যে, অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।’ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

করোনা ফিরতেই মাস্কের বাজারে আগুন!

দেশে নতুন করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার প্রতিনিয়ত বাড়ছে। সরকারি, অফিস-আদালত থেকে শুরু করে বেশির ভাগ জায়গায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। করোনার এই নতুন ঢেউয়ে মাস্কের পাইকারি পর্যায়ে দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। একদল অসাধু ব্যবসায়ী করোনার অজুহাতে অধিক মুনাফা আদায়ে সিন্ডিকেট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অতিরিক্ত দামে মাস্ক কিনে পরতে হচ্ছে তাদের। সার্জিক্যাল দোকানিরা জানান, পাইকারি পর্যায়ে প্রতি বক্সে ৫০-৮০ টাকা দাম বেড়েছে। চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দামও বাড়িয়ে দিয়েছে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রকেরা। শুধু মাস্কই নয়, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও ডেটলের দামও আগের চেয়ে বেড়েছে বলে জানা গেছে। সরেজমিনে রাজধানীর পল্টন মোড় এলাকার বিভিন্ন সার্জিক্যাল পাইকারি ও খুচরা দোকান ঘুরে দেখা গেছে, ১০০টি মাস্কের বক্স আগে দাম ছিল ১২০ টাকা, বর্তমানে এই বক্সের দাম হয়েছে ২০০ টাকা। কোম্পানি ভেদে মাস্ক বক্সের দাম বেড়েছে ৬০ থেকে ১০০ টাকা। ৫০০ মিলি ছোট হ্যান্ড স্যানিটাইজারের দাম ছিল আগে ১৩০ টাকা, বর্তমান দাম ১৫০ টাকা। এছাড়া আগে ছোট ডেটলের দাম ছিল ১০৫ টাকা, বর্তমানে ২০০ টাকা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সংক্রমণ বাড়ায় ইতোমধ্যে মহাখালীর কোভিড বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। ১৩ জন করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ইতোমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে শনাক্তকরণ কিট সরবরাহ শুরু করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। রফিক আহমেদ নামের একজন ক্রেতা বলেন, ‘দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অনুসারে বাসার সবার জন্য এক বক্স মাস্ক কিনতে এসেছি। কিন্তু এসে দেখছি আগে তুলনায় দাম বেড়েছে ভালোই। সরকারের উচিত এমন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম স্বাভাবিক রাখা।’ সার্জিক্যাল সপের মালিক আকাশ আহমেদ বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় মাস্কের চাহিদা যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে দামও। আমাদের পাইকারি পর্যায়ে কিনতেই কোম্পানি ভেদে ৫০-৮০ টাকা বেশি লাগছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’ মিয়া সার্জিক্যাল সপের মালিক ইদ্রিস মিয়া বলেন, ‘আমাদের দেশ হলো এমন অদ্ভুত, কোনো কিছুর চাহিদা একটু বাড়লেই একটা অসাধু চক্র সেটি ধরে বসে। এই চক্র যতটা সম্ভব সবার গলা কেটে অর্থ আদায় করে। এই অসাধু চক্রের কারণে বর্তমানে মাস্ক বক্সের দাম বেড়েছে। কারণ চাহিদা যতটা বাড়ছে তার চেয়ে বেশি দাম বেড়েছে।’ দেশে ২০২০ সালের মার্চে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়। তখন মাস্কসহ প্রয়োজনীয় স্যানেটাইজেশন সামগ্রীর চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। তখন এই খাতের ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের পকেট কাটে। তবে ২০২২ সালের পর করোনার প্রকোপ কমে যায়। এতে মাস্কসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রীর চাহিদাও কমে যায়। তবে সম্প্রতি নতুন করে করোনাভাইরাসের নতুন ভেরিয়েন্ট ধরা পড়ার পর আবার সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এতে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সুযোগ বুঝে আবারও ভোক্তাদের পকেট কাটার ফন্দি করছে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট।

রামপুরা ও তুরাগ থানার ওসি বদলি

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রামপুরা ও তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার তিন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। সোমবার (১৬ জুন) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সই করা এক অফিস আদেশে এ বদলি করা হয়েছে। বদলির আদেশ বলা হয়, রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আতাউর রহমান আকন্দকে ডিএমপি গোয়েন্দ বিভাগে এবং তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাহাৎ খানকে রামপুরা থানার ওসি হিসেবে বদলি করা হয়েছে। এছাড়া একই আদেশে ডিএমপির নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক এসএম শাহাদত হোসেনকে তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। এ আদেশটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়েছে।

সেনাপ্রধানের সঙ্গে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জাতিসংঘের বলপূর্বক গুমবিষয়ক কার্যনির্বাহী দলের ভাইস-চেয়ারম্যান গ্রাজিনা বারানোভস্কার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। সোমবার (১৬ জুন) সেনা সদরে তাদের সাক্ষাৎ হয় বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রাজিনা বারানোভস্কা বিভিন্ন সংস্থায় (যেমন র‍্যাব, ডিজিএফআই, বিজিবি) অতীতে কর্মরত কিছু সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। জবাবে সেনাপ্রধান জানান, এ ধরনের সেনা সদস্যরা সংশ্লিষ্ট সংস্থার অধীনে নিয়ন্ত্রণাধীন থেকে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিচার প্রক্রিয়া ও মানবাধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তদন্ত প্রক্রিয়ায় সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

শপথের সুযোগ নেই, পরিপক্ব আচরণ প্রত্যাশা করি: আসিফ মাহমুদ

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ইস্যুতে স্থানীয় সরকার বিভাগ কোনো আইন ভঙ্গ করেনি। বিষয়টি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় গেজেটের মেয়াদ এবং পরবর্তীতে সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় সরকার বিভাগের শপথ দেওয়ার কোনো আইনি সুযোগ নেই।’ তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের অংশীজনদের থেকে আমরা আরও দায়িত্বশীল এবং পরিপক্ব আচরণ প্রত্যাশা করি।’ সোমবার (১৬ জুন) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা। আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘এভাবে ক্ষমতা প্রদর্শন করে নগর ভবন দখল করে দক্ষিণ ঢাকার দৈনন্দিন নাগরিক সেবায় বিঘ্ন ঘটানো দায়িত্বহীনতা এবং আইনের শাসনের প্রতি অবমাননাকর।’ তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের একজন নেতার থেকে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ প্রত্যাশা করিনি। অবরোধের কারণে বিগত মাসে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ৩০-৪০ শতাংশ নাগরিক সেবা হ্রাস পেয়েছে। আমাদের অফিসাররা ওয়াসা অফিসে বসে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন যাতে নাগরিক সেবা বাধাগ্রস্ত না হয়।’