বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিলেন সাবেক মন্ত্রীপুত্র মুবিন
কিশোরগঞ্জের রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান, সাবেক মন্ত্রীপুত্র অ্যাডভোকেট ফয়জুল কবীর মুবিন বিএনপি ছেড়ে আওয়...
রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বরের কালশীতে একটি বহুতল ভবনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিটের তৎপরতায় শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাত ১২টা ৫ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম দোলন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, "আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে রাত ১২ টা ৫ মিনিটে। আমাদের ৮টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। প্রাথমিকভাবে আগুনে কারো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। আগুন লাগার সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।" এর আগে, রাত ১০টা ১৪ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয় যে মিরপুরের কালশীতে বিবাহ বাড়ি কমিউনিটি সেন্টার ভবনের ছয়তলায় আগুন লেগেছে।
রাজধানীর মিরপুরের কালশীতে শুক্রবার রাত গভীরে একটি পোশাক কারখানায় আগুন লেগেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে সাতটি ইউনিট কাজ করছে, আর আরও চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান জানান, রাত সোয়া ১০টার দিকে ছয়তলা বাণিজ্যিক ভবনের নিচতলায় এই কারখানায় আগুন ধরে। ভবনটিতে বিবাহ বাড়ি কমিউনিটি সেন্টারও রয়েছে। রাকিবুল বলেন, "রাত ১০টা ১২ মিনিটের দিকে আমরা আগুন লাগার খবর পাই। পরে ১০টা ২৭ মিনিটে আমাদের প্রথম ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। বর্তমানে সাতটি ইউনিট কাজ করছে। আরও চারটা ইউনিট পথে রয়েছে।" আগুন লাগার সঠিক কারণ ও কারখানার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি। ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেননি।
রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বরের কালশী এলাকায় একটি ছয়তলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট, পাশাপাশি আরও দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলের পথে রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়, শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাত ১০টা ১৪ মিনিটে অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান বলেন, “আজ রাত ১০টা ১৪ মিনিটের দিকে আমাদের কাছে সংবাদ আসে রাজধানীর মিরপুরের কালশীতে বিবাহ বাড়ি কমিউনিটি সেন্টারের ছয়তলা ভবনের ছয়তলায় আগুন লেগেছে। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাদের চারটি ইউনিট কাজ করছে। আরও দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যাচ্ছে।” তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। এ পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবরও পাওয়া যায়নি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, সাক্ষাৎকালে দু’দেশের সাম্প্রতিক যোগাযোগ ও মন্ত্রী পর্যায়ের সফরের প্রশংসা করেন উভয়পক্ষ। এর মধ্যে গত আগস্টে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়। গত এপ্রিলে রাজধানীতে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ সভা সফলভাবে হওয়ার বিষয়টিও আলোচনায় স্থান পায়। এছাড়া দীর্ঘ বিরতির পর আগামী ২৭ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠককেও স্বাগত জানায় উভয় পক্ষ। উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সন্তোষ প্রকাশ করে জানান, সম্প্রতি ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালুসহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে উভয় দেশ অগ্রগতি লাভ করেছে। এ সময় তারা দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন। পাশাপাশি একাধিক খাতে সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে পাকিস্তানি হাইকমিশনারকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। সূত্র: বাসস।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক ঘটনার সূত্রে নতুন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, মুসলিম নারীদের লক্ষ্য করে কি কোনো সংগঠিত ফাঁদ পেতেছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা? ভোলায় মুসলিম পরিচয়ে বিয়ে করে ৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ, গাজীপুরে ১৩ বছরের কিশোরীর ওপর বর্বর নির্যাতন, বুয়েট শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়ের বিকৃত যৌন বর্ণনা, আর টঙ্গি থেকে মসজিদের এক খতিব অপহরণের পর পঞ্চগড়ে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার, এই ধারাবাহিক ঘটনাগুলো এখন জনমনে এক প্রশ্ন তুলেছে: এসব কি কেবল বিচ্ছিন্ন অপরাধ, নাকি সুপরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত? স্থানীয় সূত্র ও পর্যবেক্ষকরা বলছেন, একদল উগ্র হিন্দুত্ববাদী চক্র মুসলিম মেয়েদের টার্গেট করে তথাকথিত ‘ভাগোয়া লাভ ট্র্যাপ’ বা ‘গেরুয়া প্রেমের ফাঁদ’ নামের একটি কৌশল চালাচ্ছে। তাঁদের মতে, এটি শুধুমাত্র প্রেমের সম্পর্ক নয়, বরং এক ধরনের সাম্প্রদায়িক যৌন সহিংসতা, যার উদ্দেশ্য মুসলিম নারীদের মানহানি, ধর্মান্তর এমনকি পাচারের দিকে ঠেলে দেওয়া। অপহৃত খতিব অভিযোগ করেছেন, মসজিদে ইসকন ও ভাগোয়া লাভ ট্র্যাপ বিষয়ে সচেতনতামূলক বক্তব্য দেওয়ার পর থেকেই তিনি হুমকি পাচ্ছিলেন। তার ভাষায়, “ইসকন নেতার পক্ষে কথা বলার জন্য আমাকে চাপ দেওয়া হয়েছিল, অস্বীকার করায় অপহরণ করা হয়।” পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটির তদন্ত চলছে এবং বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পর্যবেক্ষকরা আরও বলছেন, ধর্মীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে সাধারণত গণমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, কিন্তু যখন অভিযুক্ত হন হিন্দু ধর্মাবলম্বী কেউ, তখন নীরবতা লক্ষ করা যায়, যা সন্দেহকে আরও ঘনীভূত করছে। গাজীপুরের ১৩ বছরের কিশোরীর নির্যাতনের ঘটনাতেও প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, দুই মাস ধরে নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরীর ঘটনাকে ‘সম্মতিপূর্ণ সম্পর্ক’ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যা ন্যায়বিচারের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। অন্যদিকে, বুয়েট শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি নিষিদ্ধ এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছদ্মনামে নারীসহপাঠীকে ধর্ষণ ও বিকৃত যৌনাচারের বর্ণনা দেন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই বিকৃত মানসিকতা একই উগ্র সাম্প্রদায়িক চিন্তাধারার ফল, যেখানে মুসলিম নারীকে ভোগ্যপণ্য হিসেবে দেখা হয়। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত কিছু হিন্দুত্ববাদী গ্রুপের স্ক্রিনশটে মুসলিম নারীদের নিয়ে অশালীন ও অবমাননাকর মন্তব্য দেখা গেছে। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, এ ধরনের আচরণ কেবল নারী নির্যাতনের দৃষ্টান্ত নয়, বরং বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্যও একটি গুরুতর হুমকি। আইন ও সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন। তাঁদের মতে, যদি প্রমাণিত হয় যে এর পেছনে সংগঠিত নেটওয়ার্ক কাজ করছে, তাহলে তা দেশের সাম্প্রদায়িক সহাবস্থানের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনবে। একইসঙ্গে তাঁরা অপ্রমাণিত গুজব বা উসকানিমূলক প্রচারণা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ অনুমোদিত হবে না। তিনি বলেন, “কারণ, বিগত দিনে তারা আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে ভূমিকা রেখেছে। তাদের কারণেই ফ্যাসিবাদ দীর্ঘায়িত হয়েছে। এখনো তারা বড় বড় কথা বলছে। খুনিদের পক্ষে সাফাই গাইছে। তাই এ দুটি দলকেই নির্বাচনের বাইরে রাখতে হবে। কারণ তারা আবার ক্ষমতায় আসলে দেশকে ভারতের করদরাজ্যে পরিণত করবে।” শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টায় রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাইদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে দলের ঢাকা জেলা ও দুই মহানগর শাখার সমন্বয় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় ঢাকা জেলা ও দুই মহানগরের থানা সমন্বয়কারীরা নিজেদের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনার দিক তুলে ধরেন। আখতার হোসেন উল্লেখ করেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার প্রক্রিয়াটি সরকারের টেবিলেই সম্পন্ন করতে হবে। তিনি বলেন, “জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি সত্ত্বেও সরকার কথা না শুনে স্বাক্ষর অনুষ্ঠান করেছে। এতদিন পরও সরকার এ বিষয়টি এখনো খোলাসা করেনি। আমরা মনে করি সেদিন আমরা স্বাক্ষর করলে সনদের অপমৃত্যু হতো। তাই অতি দ্রুত এটি বাস্তবায়ন করতে হবে। টেবিলেই এর সমাধান করতে হবে। নব্বইয়ের মতো কাগুজে সিদ্ধান্ত হলে আমরা আবার রাজপথে নামব।” তিনি আরও বলেন, অনেকে শুধু নির্বাচনী রাজনীতির বিষয়টিকে সামনে আনতে চেয়েছিলেন। অথচ আমরা সংস্কার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়েছি। “শুধু আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই ঐকমত্য কমিশন সংস্কার প্রক্রিয়াকে এ পর্যন্ত নিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে।” এনসিপির সদস্য সচিব বলেন, কোনো একটি দলের সিদ্ধান্তের কারণে আরপিও সংশোধন করতে চাইলে তিনি মনে করবেন যে এর সাথে প্রধান উপদেষ্টার লন্ডনে বৈঠকের যোগসূত্র রয়েছে। অতীতের মতো এবার তারা ডিজিএফআইর নির্বাচন চায় না। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আখতার হোসেন বলেন, “এখনও মানুষের মানবিক মর্যাদা নির্ধারণ করা যায় না। দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। আমরা দলবাজির রাজনীতি চাই না। মানুষের জন্য রাজনীতি করতে চাই। এজন্য ব্যক্তিগত কার্যক্রমে দলকে সম্পৃক্ত না করাই ভালো। অনেক সময় নেতিবাচক খবর আমাদের দুঃখ দেয়।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “একজন ইমামকে গুম করা হলো। আমরা গুমের ঘটনা দেখতে চাই না। এনসিপি দেশের সব মানুষের পক্ষে কাজ করবে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করবে। নতুন বাংলাদেশের রাজনীতি বিনির্মাণ করতে হলে সংখ্যাকে প্রাধান্য না দিয়ে যোগ্যতার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।” সমন্বয় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারওয়ার নিভা। তবে সভায় দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম প্রধান অতিথি থাকলেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না।
গাজা যুদ্ধের পরের পরিস্থিতিতে নেতৃত্বের ভূমিকা নিতে সৌদি আরব সক্রিয়ভাবে পরিকল্পনা করছে। দেশটি হামাসকে প্রভাবহীন করতে চায় এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে অর্থ ও লজিস্টিক সহায়তার মাধ্যমে পুনরায় শক্তিশালী করতে আগ্রহী। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি গোপন প্রতিবেদনের প্রতিলিপি হাতে পেয়েছে, যা এই পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরব ‘গাজায় আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের উদ্যোগকে সমর্থন করবে।’ এতে সৌদি আরবের পাশাপাশি অন্যান্য আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশও অংশ নিতে পারে। দলিলটিতে উল্লেখ আছে, রাজত্বটি ‘গাজা উপত্যকা ও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য সৌদি আরবের দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন’ করতে চায়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে হামাসকে গাজার শাসন ব্যবস্থায় প্রান্তিক করা হবে এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে এমনভাবে সংস্কার করা হবে যাতে ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আশা পূরণ হয়। সৌদি আরব মনে করে হামাস ‘শান্তি প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং বিভাজনকে আরও গভীর করছে,’ তাই তাকে প্রান্তিক করা অপরিহার্য। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, হামাসকে ধাপে ধাপে নিরস্ত্র করা হবে ‘আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক চুক্তির মাধ্যমে, যা নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করবে।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গাজায় প্রশাসনিক দায়িত্ব ধীরে ধীরে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে দিলে হামাসের প্রভাব কমবে। এই প্রক্রিয়াকে ‘দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের সঙ্গে সংযুক্ত’ করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। পুরো উদ্যোগটি মিসর, জর্ডান ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হবে। নির্দেশনা দিয়েছেন সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রভাবশালী কর্মকর্তা মানাল বিনতে হাসান রাদওয়ান। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ২০০৭ সালের পর থেকে গাজায় কোনো কার্যকর উপস্থিতি রাখতে পারেনি। ওই সময়ে ফাতাহ ও হামাসের মধ্যে নির্বাচনী ফলাফলের কারণে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরব ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংস্কার আনতে চায়; দুর্নীতি মোকাবিলা, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সব ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় ঐক্য ও কার্যকর, স্বচ্ছ প্রশাসন গড়ে তুলতে কর্তৃপক্ষের সংস্কার মৌলিক ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত।’ রাজত্বটি ফিলিস্তিনি জনগণের মৌলিক সেবা নিশ্চিত করতে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করবে, যদিও কত অর্থ দেওয়া হবে তা উল্লেখ নেই। পাশাপাশি ‘ফিলিস্তিনি জাতীয় সংলাপ’ আহ্বান জানানো হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন গোষ্ঠী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ছাতার নিচে ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে। সৌদি আরব এই সংলাপকে সহায়তা করতে আঞ্চলিক কর্মশালা ও সম্মেলন আয়োজন করবে। তবে হামাস সংলাপে অংশগ্রহণ করবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। প্রতিবেদনে ইসরায়েলের নামও একবারও উল্লেখ নেই। কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট প্রতিবেদনটি ২৯ সেপ্টেম্বর তারিখের, যা আগের দিনই জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান গাজায় ইসরায়েলের ‘গণহত্যা বন্ধে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের’ আহ্বান জানান। গ্রীষ্মে সৌদি আরব ও ফ্রান্স যৌথভাবে একটি শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাব করে, যা চলমান গণহত্যা বন্ধ, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংলাপ পুনরায় চালুর আহ্বান জানায়। তবে অক্টোবরের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নিজস্ব যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর করেন, যেখানে কিছু মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সহযোগিতা করে। ওই চুক্তিতে সৌদি-ফরাসি প্রস্তাবের অনেক অংশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর বন্দি বিনিময় ও আংশিক ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ঘটে। এতে বলা হয় হামাস নিরস্ত্র হবে, যা হামাস নেতারা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বলেছেন, ইসরায়েলি দখল শেষ না হলে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগে নিরস্ত্রীকরণ সম্ভব নয়। জাতিসংঘ অধিবেশনের ফাঁকে ট্রাম্প জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, তুরস্ক, সৌদি আরব, কাতার ও মিসরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং গাজায় শান্তিরক্ষী বাহিনী গঠনে তাদের সেনা পাঠানোর আহ্বান জানান। পরবর্তীতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে মিসরের শারম আল শেখে গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে শীর্ষ বৈঠক ডাকা হয়। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান বৈঠকে অংশ নেননি। সূত্রগুলো মিডল ইস্ট আই-কে জানিয়েছেন, তাদের অনুপস্থিতির কারণ ছিল চুক্তিতে প্রত্যাশিত প্রভাব ও ভূমিকা না পাওয়া। অঞ্চলের সবচেয়ে ধনী রাষ্ট্র হিসেবে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকেই গাজার মানবিক ত্রাণ ও পুনর্গঠনের মূল ব্যয় বহন করতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া এদিকে, ইসরায়েলের প্রভাবশালী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ বলেছেন, সৌদি আরব যদি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিনিময়ে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চায়, ইসরায়েল তা প্রত্যাখ্যান করবে। তিনি বলেন, ‘যদি সৌদি আরব বলে, সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের বিনিময়ে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র চাই, তাহলে না ধন্যবাদ, বন্ধুরা। তোমরা তোমাদের মরুভূমিতে উট নিয়ে ঘুরো, আমরা আমাদের অর্থনীতি, সমাজ ও রাষ্ট্র আরও উন্নত করব।’
দেশে চলতি মাসের প্রথম ২২ দিনে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এসেছে ১৯২ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৩ হাজার ৪৩৬ কোটি ৬২ লাখ টাকার সমান। প্রতি ডলারের হিসেবে হিসাব করা হয়েছে ১২২ টাকা। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “অক্টোবরের প্রথম ২২ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯২ কোটি ১০ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের ১৭৯ কোটি ১০ লাখ ডলারের তুলনায় বেশি। অর্থাৎ, বছর ব্যবধানে রেমিট্যান্স প্রবাহে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হয়েছে।” কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে প্রবাসী আয় আসায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে স্বস্তি ফিরেছে। তারা মনে করছেন, হুন্ডি প্রতিরোধে সরকারের উদ্যোগ, প্রণোদনা এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থার আধুনিকায়নের ফলেই রেমিট্যান্স প্রবাহে এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৯৫০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে এটি ছিল ৮৩৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল: জুলাই ১৯১.৩৭ কোটি ডলার, আগস্ট ২২২.১৩ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বর ২৪০.৪১ কোটি ডলার, অক্টোবর ২৩৯.৫০ কোটি ডলার, নভেম্বর ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বর ২৬৪ কোটি ডলার। এছাড়া জানুয়ারি ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারি ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চ ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিল ২৭৫ কোটি ডলার, মে ২৯৭ কোটি ডলার, জুন ২৮২ কোটি ডলার, জুলাই ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার এবং আগস্ট ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বর ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।