
চার দাবিতে সব কর ও কাস্টমস অফিসে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলছে
অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল ও এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণসহ চার দাবিতে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং এর আওতাধীন সব অফিসে। শনিবার (২৪ মে) সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর এনবিআর প্রধান কার্যালয়ে নিচে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতির কর্মসূচি পালন করছেন। একই কর্মসূচি ঢাকার বাইরেও পালিত হচ্ছে। তবে, রপ্তানি ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এর আওতামুক্ত রয়েছে। কর্মবিরতি পালন শেষে আজ বিকেল ৪টায় সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। গত ২১ মে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবিসমূহের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করাসহ আজ ও ২৫ মে কাস্টমস হাউস এবং এলসি স্টেশনসমূহ ব্যতীত ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির ঘোষণা আসে। এই দুইদিন কাস্টমস হাউস এবং এলসি স্টেশনসমূহে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। আর আগামী ২৬ মে থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ব্যতীত ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলবে। এরই মধ্যে গত ২২ মে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিলুপ্তির জারিকৃত অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল, এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ, রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ ও সব অংশীজনের মতামত নিয়ে টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। ওই দিন রাতে পরামর্শক কমিটিসহ সব অংশীজনের সাথে আলোচনাক্রমে জারিকৃত অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনার পর তা বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়ে এনবিআরের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিকে সাধুবাদ জানালেও চার দাবি আদায়ে অটল অবস্থানে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। ২২ মে রাতের পাল্টা সংবাদ বিবৃতিতে ওই দাবির বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে এনবিআর ঐক্য পরিষদে একাধিক কর্মকর্তারা ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা কর্তৃক স্বাক্ষরিত প্রেস রিলিজের প্রতি এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ দেখেছে। আমরা আমাদের দাবিতে অটল রয়েছি। এখনও অধ্যাদেশ বিলুপ্ত করার বিষয়ে ঘোষণা আসেনি, এনবিআরকে বিলুপ্ত করা নয়, বরং সংস্কারের মাধ্যমে একে একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত রাজস্ব এজেন্সি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে ঘোষণা আসেনি, কিংবা এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ করার বিষয়ে ঘোষণা আসেনি। আমরা আমাদের কর্মসূচি ধীরে ধীরে সময় দিয়ে তীব্র করতে বাধ্য হয়েছি, হঠাৎ করে নয়। কর্মসূচির মাঝে মাঝে আমরা বিরতিও দিয়েছি, দেশ ও মানুষের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে। সরকার শুরু থেকেই যদি আমাদের যৌক্তিক দাবিসমূহের বিষয়ে আজকের মতো ভাববার সদিচ্ছা প্রদর্শন শুরু করতো তবে এই সমস্যা অনেক আগেই সুরাহা হয়ে যেতো বলে আমরা মনে করি। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের চারটি যৌক্তিক দাবি পূরণের সুনির্দিষ্ট আশ্বাস আমরা শিগগিরই পাবো। দাবি পূরণের আগ পর্যন্ত আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি চলবে। গত ১৩ মে আগারগাঁও এনবিআরের সামনে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কলম বিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে অনুসারে ১৪, ১৫, ১৭, ১৮ ও ১৯ মে কলম বিরতি কর্মসূচি পালিত হয়। আলোচনার আশ্বাসে ২০মে আন্দোলন স্থগিত রেখে ২১ মে থেকে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা আসে।

বৈদেশিক ঋণ বেড়ে ১০৩ বিলিয়ন ডলার
২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৩ বিলিয়ন ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে যা ছিল ৫১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ সাত বছরে এই ঋণ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, এই সময়ে সরকারি খাতের ঋণ বেড়েছে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। বেসরকারি খাতে তা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্যমতে, ২০২৪ সালের মোট ঋণের ৮৪ বিলিয়ন ডলারই নিয়েছে সরকার। বাকি ১৯ বিলিয়ন ডলার নিয়েছে বেসরকারি খাত। এদিকে ২০২৭ সালের মধ্যে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ ৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। ফলে ঋণ নেওয়ার এই গতিতে অব্যাহত থাকলে অর্থনীতি চাপের মুখে পড়তে পারে বলেও ধারণা বিশ্লেষকদের। অন্যদিকে এলডিজি উত্তরণ হলে ঋণের সুদের ছাড়ও কমে যাবে। তাই বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ তাদের।

বড় ধাক্কার মুখোমুখি বাংলাদেশের অর্থনীতি: জাতিসংঘ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন আমদানি শুল্কের ফলে অনেক উন্নয়নশীল দেশের বাণিজ্য খরচ বেশ বাড়বে। এ কারণে বৈশ্বিক বাণিজ্যে বৈষম্য বাড়ার ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলো। এ সময়ে উন্নয়নশীল দেশের রপ্তানি সম্ভাবনা কমবে পোশাক ও কৃষি খাতে। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রায় এক শতাব্দী ধরে অপরিবর্তিত বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি ট্রাম্পের শুল্ক আরোপে বড় ধাক্কার মুখোমুখি পড়ছে। তবে শুল্ক বাস্তবায়নে ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ অর্থনীতির পালে কিছুটা হাওয়া দিলেও দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির সম্ভাবনা থেকেই যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা আংকটাড প্রকাশিত ‘স্প্যারিং দ্য ভালনারেবল: দ্য কস্ট অব নিউ ট্যারিফ বার্ডেনস’ প্রতিবেদন এমনটি ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের মতো দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির মাত্র শূন্য দশমিক ৩ শতাংশের জন্য দায়ী হলেও, রপ্তানি ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে এসব দেশের নতুন শুল্কনীতি। ফলে মার্কিন বাজারে প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়বে। বিশেষ করে পোশাক ও কৃষিপণ্যের মতো খাতগুলোতে রপ্তানি সম্ভাবনা কমবে। যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির ওপর ১০ শতাংশ হারে সর্বজনীন শুল্ক আরোপ করলেও জুলাইয়ে দেশভিত্তিক অতিরিক্ত শুল্ক কার্যকর হবে। এতে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর আমদানি শুল্ক বেড়ে ৪৪ শতাংশ হতে পার, যা দেশগুলোর অর্থনীতিকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে বলেও প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, ট্যারিফ রিলিফ নীতিমালা ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বাজারে প্রবেশে সহজ শর্ত নিশ্চিত করা জরুরি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তা না হলে নতুন ধরনের বৈষম্য তৈরি হতে পারে বিশ্ব বাণিজ্যে, যা দীর্ঘমেয়াদে বৈশ্বিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য জোরদার এবং দেশটির বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক কমাতে আসন্ন বাজেটে ১০০টি মার্কিন পণ্যে শুল্ক ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

বিলুপ্ত হচ্ছে না এনবিআর, সংশোধন হবে অধ্যাদেশ
কর্মকর্তাদের টানা আন্দোলনের মুখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) বিলুপ্ত করে দুই ভাগ করার চলমান পদক্ষেপ থেকে সরে এসেছে সরকার। পাশাপাশি অধ্যাদেশে ‘প্রয়োজনীয় সংশোধনী’ আনার কথা বলেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যমান কাঠামোতেই এনবিআরের সব কাজ চলবে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সংশোধন করে অধ্যাদেশ বাস্তবায়ন ‘অনেক সময়সাপেক্ষ’ হওয়ার কথা তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সব কার্যক্রম পূর্বের ন্যায় অব্যাহত থাকবে এবং কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিদ্যমান ব্যবস্থায় সব কাজ করবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, বিসিএস (কর) ও বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডারের স্বার্থ ঠিক করে পৃথকীকরণের প্রশাসনিক কাঠামো কীভাবে প্রণয়ন করা হবে তা এনবিআরসহ গুরুত্বপূর্ণ সব অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অধ্যাদেশে ’প্রয়োজনীয় সংশোধনী’ আনা হবে। এদিকে মন্ত্রণালয়ের এমন পদক্ষেপের পর অধ্যাদেশ বাতিল ও সংশোধনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’ তাদের কর্মসূচি চলবে না কি প্রত্যাহার হবে, সেই সিদ্ধান্ত পরে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে। মন্ত্রণালয়ের নতুন পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত আসার পর সংগঠন থেকে সংবাদমাধ্যমকে এ কথা জানানো হয়। গত ১২ মে রাতে এনবিআর বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। পরদিন থেকে অবস্থান ও কলমবিরতিসহ টানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন দেশের প্রধান রাজস্ব আহরণকারী সংস্থাটির কর্মীরা। এ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক হলেও তাতে সমাধান আসেনি। এমন প্রেক্ষাপটে অধ্যাদেশ সংশোধনের সিদ্ধান্ত জানাল সরকার। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধ্যাদেশটি জারি করার পর তা বাস্তবায়নের জন্য অনেকগুলো কাজ যেমন, দুইটি বিভাগের নতুন করে সাংগঠনিক কাঠামো প্রণয়ন করা: পদ সৃজনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ, বাস্তবায়ন অনুবিভাগ, সচিব কমিটি কর্তৃক চূড়ান্ত অনুমোদন ইত্যাদি সম্পাদন করতে হবে- যা যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ বিষয়। তা ছাড়া দুইটি নতুন বিভাগের জন্য ‘অ্যালোকেশন অব বিজনেস’ এবং আয়কর আইন, কাস্টমস আইন, মূল্য সংযোজন আইন এবং এ সকল আইনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিধি ও প্রবিধানেও পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হবে। এ কাজগুলোও সময়সাপেক্ষ কাজ।অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, এসব কাজ শেষ না করে ‘কোনোভাবে অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। সেহেতু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এখনই বিলুপ্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কাস্টমস ও কর ক্যাডারের সদস্যদের কোনো পদ-পদবি কমানোর কোনো পরিকল্পনাও সরকারের নেই। বরং সংস্কার কাজ শেষ হলে তাদের পদের সংখ্যা বাড়বে এবং সচিব পদে নিয়োগসহ পদোন্নতির সুযোগ আরও অনেক বেশি বাড়বে।অধ্যাদেশে এটির কার্যকর করার সময়ের ক্ষেত্রে বলা ছিল, পরে প্রজ্ঞাপন করে যে তারিখ নির্ধারণ করা হবে তখন থেকে এটি কার্যকর হবে। সে অনুযায়ী এনবিআর অধ্যাদেশ হওয়ার পর এখনও বিলুপ্তি হয়নি। তবে আয়কর ও শুল্ক ক্যাডারের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের ‘মতামত প্রতিফলিত’ না হওয়ার দাবি করে অধ্যাদেশটি বাতিলে ১২ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন তারা। সবশেষ তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর বৃহস্পতিবার স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, আজ বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাজস্ব বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত দুজন সম্মানিত সদস্যের মধ্যস্ততায় সারাদিনব্যাপী দফায় দফায় আলোচনার একপর্যায়ে তাদের পাঠানো সমঝোতা প্রস্তাব সম্পূর্ণ মেনে নেওয়ার পরও শেষ মুহূর্তে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এতে ‘রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে’ অর্থবছরের শেষ সময়ে জাতীয় বাজেট কার্যক্রম এবং রাজস্ব আহরণে নিয়োজিত এনবিআরের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘অফিস সময়ে দপ্তরে উপস্থিত’ থেকে তাদের নিজ দায়িত্ব ‘নিষ্ঠার সঙ্গে’ পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

ওয়ালটন হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হলেন জয়া আহসান
দেশের শীর্ষ ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড ওয়ালটনের হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। সম্প্রতি রাজধানীতে ওয়ালটন কর্পোরেট অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হন তিনি। ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির পক্ষে চুক্তিতে সই করেন ওয়ালটন হাই-টেকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এএমডি) নজরুল ইসলাম সরকার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেকের চিফ মার্কেটিং অফিসার জোহেব আহমেদ, ওয়ালটন হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সের চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) মোস্তফা কামাল প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জয়া আহসান বলেন, “ওয়ালটন হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স এর সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে দারুণ লাগছে। ওয়ালটন দেশি ব্র্যান্ড। দেশের গর্ব। বিদেশেও সুনাম কুড়াচ্ছে ওয়ালটন।ওয়ালটনের হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সসহ সব ধরনের পণ্যই আন্তর্জাতিকমানের। সার্ভিসও ভালো। দেশের প্রতিটি ঘরে ওয়ালটনের হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স শোভা পাচ্ছে। আমাকে এমন একটি দেশীয় স্বনামধন্য ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত করায় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।” ওয়ালটন হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সের সিবিও মোস্তফা কামাল বলেন, “অভিনেত্রী জয়া আহসানের প্রতিভা ও খ্যাতি সর্বজনবিদিত। জয়া আহসান তার অভিনয় দিয়ে অভিনয়প্রেমীদের মনে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিয়েছেন। ওয়ালটনও দেশে তৈরি আন্তর্জাতিকমানের পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের ক্রেতাদের হৃদয় জয় করে নিয়েছে।” তিনি বলেন, “জয়া আহসান ওয়ালটনের প্রতিনিধিত্ব করবেন। আমাদের বিশ্বাস পারস্পারিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা ওয়ালটন ব্র্যান্ডকে আরো উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হবো।ওয়ালটনের সঙ্গে স্বনামধন্য এই অভিনেত্রীর সংযুক্তি এ কার্যক্রমকে ভিন্ন মাত্রা দেবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।”

ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর পরিচালনা পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছৈ। বৃহস্পতিবার ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এতে সভাপতিত্ব করেন। হাইব্রিড সিস্টেমে অনুষ্ঠিত সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল ও প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমান, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (চলতি দায়িত্ব) মো. ওমর ফারুক খান, শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকায় আসছে ১৫০ সদস্যের চীনা বাণিজ্য প্রতিনিধিদল
আগামী ৩১ মে চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাওয়ের নেতৃত্বে ১৫০ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসছে। এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ওই প্রতিনিধিদল ঢাকা সফরকালে বিডা আয়োজিত এক সেমিনারে যোগ দেবে। এ ছাড়া জয়েন্ট ইকোনমিক কমিটির বৈঠকে যোগ দেবে প্রতিনিধিদল। একইসঙ্গে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ইকোনমিক জোন পরিদর্শন করবে তারা। চীনা প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ঢাকা সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশীরউদ্দীন ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চীনা প্রতিনিধিদল ঢাকা সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে চীনা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। চীনা প্রতিনিধিদলের ঢাকা সফর নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানিয়েছেন, চীনা প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরকালে উভয়পক্ষ একটি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিনিময় অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজন করবে। সেখানে শত শত চীনা এবং বাংলাদেশি উদ্যোগ অংশগ্রহণ এবং আরও সহযোগিতার সুযোগ অন্বেষণ করবে।

ইসলামী ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ, জালিয়াতির নথি দুদকে
বিভিন্ন জালিয়াতিতে সম্পৃক্ততার দায়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের বিতর্কিত এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে অপসারণ করা হয়েছে। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক মঙ্গলবার এতে অনাপত্তি দিয়েছে। আগামী এক মাস পর তথা ২০ জুন এ অপসারণাদেশ কার্যকর হবে। এর আগে গত ৬ এপ্রিল তাকে বাধ্যতামূলকভাবে তিন মাসের ছুটিতে পাঠিয়েছিল ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। জানা গেছে, মুনিরুল মওলাকে অপসারণের পাশাপাশি পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তার অনিয়ম–জালিয়াতির নথি পাঠানো হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। এখন বিধি অনুযায়ী সংস্থাটি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান সমকালকে বলেন, ইসলামী ব্যাংকের সাম্প্রতিক অডিটে বিভিন্ন জালিয়াতির সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। সে আলোকে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়েছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাতে অনাপত্তি দিয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের একজন পরিচালক সমকালকে বলেন, অপসারণের মানে তিনি দায়মুক্তি পাবে তেমন না। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে দুদকসহ সরকারের অন্য সংস্থা। এ জন্য যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা নিয়েছে। সার্বিক বিষয়ে বক্তব্যের জন্য মনিরুল মওলাকে ফোন করে বন্ধ পাওয়া যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংক দখল করে এস আলম গ্রুপ। বিভিন্ন উপায়ে শুধু এই ব্যাংক থেকে ৯১ হাজার কোটি টাকা বের করে নেওয়ার তথ্য পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এস আলম ইসলামী ব্যাংক দখলে নেওয়ার পর ব্যাংকটিতে প্রভাবশালী হয়ে উঠেন মনিরুল মওলা। দ্রুততার সঙ্গে তাকে পদোন্নতি দিয়ে প্রথমে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এমডি নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ব্যাংকটির পর্ষদের বেশিরভাগ সদস্য ও অধিকাংশ ডিএমডি আত্মগোপনে চলে যান। অদৃশ্য কারণে মনিরুল মওলা বহাল তবিয়তে ছিলেন। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের প্রকৃত খেলাপি ঋণ ঠেকেছে ৬৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। মোট ঋণের যা ৪২ দশমিক ২২ শতাংশ। এতে করে নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা। প্রভিশন সংরক্ষণের জন্য ব্যাংকটি এখন ২০ বছর সময় চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করেছে। অবশ্য ইসলামী ব্যাংক ডিসেম্বর ভিত্তিক যে তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিয়েছিল সেখানে খেলাপি ঋণ দেখানো হয় ৩২ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। ওই সময় পর্যন্ত বিতরণ করা এক লাখ ৫৫ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা ঋণের যা ছিল ২১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে অর্থনীতি সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়: গভর্নর
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে দেশের অর্থনীতি সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধার সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘আমরা হয়তো ভবিষ্যতের নির্বাচিত সরকারের কাছে আংশিকভাবে পুনর্গঠিত একটি অর্থনীতি দিয়ে যাবো। তবে রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় এসে এই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেবে— এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’ বুধবার (২১ মে) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশে আর্থিক খাতের উন্নয়ন’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই), বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টার (আইজিসি)। গভর্নর আরও বলেন, ‘যত দিন আমরা রাজনৈতিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে না পারবো, তত দিন অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রীকরণও সম্ভব হবে না। যদিও এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভরশীল।’ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন পিআরআইয়ের চেয়ারম্যান ড. জাইদি সাত্তার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআইয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান। মূল প্রবন্ধে তুলে ধরা হয়, ২০২৪ সালের তথ্য অনুযায়ী দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার মোট আমানতের প্রায় ৪২ শতাংশ রয়েছে মাত্র ০.১ শতাংশ হিসাবধারীর কাছে। এই গ্রুপের প্রত্যেকের হিসাবে জমা রয়েছে ১ কোটি টাকা বা তার বেশি। এটি দেশের সম্পদের মারাত্মক পুঞ্জীভবনের চিত্র তুলে ধরে বলে মন্তব্য করেন ড. আশিকুর রহমান। গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, ‘এক সময় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার, যা কমে ২০ বিলিয়নে নেমে আসে। এর ফলে প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা সিস্টেম থেকে বের হয়ে গেছে, যার বড় অংশই দেশের বাইরে চলে গেছে। এই কারণে ব্যাংকে আমানতের প্রবৃদ্ধিও কমেছে।’ বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য এখন রিজার্ভ পুনর্গঠন। প্রবাসী আয়, রফতানি এবং বৈদেশিক অর্থায়নের মাধ্যমে ধীরে ধীরে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে হবে। আশা করছি, শিগগিরই রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে।’ গভর্নর দেশের আর্থিক খাতের ডিজিটাল রূপান্তর নিয়েও আশাবাদ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ক্যাশলেস তথা অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির দিকে এগোচ্ছি। বর্তমানে ২০ হাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে— যা শিগগিরই ২৬ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। এতে করে ক্ষুদ্রঋণ খাতে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।’ সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আনিস উর রহমান, পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক খুরশিদ আলম এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।

খাতভিত্তিক গবেষণায় যৌথভাবে কাজ করবে এফবিসিসিআই ও আইবিএফবি
ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জসমূহ চিহ্নিতকরণসহ শিল্পের খাতভিত্তিক গবেষণায় এক সাথে কাজ করবে দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং দি ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি)। বুধবার (২১ মে) বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই এবং আইবিএফবি এর মধ্যে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়। নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সমঝোতা চুক্তিতে সই করেন এফবিসিসিআই-এর প্রশাসক মোঃ হাফিজুর রহমান এবং আইবিএফবি-এর প্রেসিডেন্ট লুৎফুন্নিসা সৌদিয়া খান। চুক্তি অনুযায়ী, উভয় পক্ষ গবেষণা ও প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে পরস্পরকে তথ্য, উপাত্তসহ অন্যান্য কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করবে। বেসরকারি খাতকে অর্থনীতির গতিধারা সম্পর্কে সঠিক ধারণা এবং দিকনির্দেশনা দিতে এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এফবিসিসিআই-এর প্রশাসক মোঃ হাফিজুর রহমান। আইবিএফবি -এর প্রেসিডেন্ট লুৎফুন্নিসা সৌদিয়া খান জানান, তৈরি পোশাকের বাইরেও দেশে অনেক সম্ভাবনাময় শিল্প এবং বিভিন্ন শিল্পে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে অপ্রচলিত খাতসমূহের সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্র তৈরি হবে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র মহাসচিব মোঃ আলমগীর, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স উইংয়ের প্রধান মোঃ জাফর ইকবাল এনডিসি, আইবিএফবি-এর নির্বাহী পরিচালক এস.এম সেলিম রেজা এবং অন্যান্যরা।

আগামী মাসে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে: গভর্নর
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারে নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। বুধবার (২১ মে) পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।গভর্নর বলেন, ২৬ শতাংশ সুদ নিয়ে ক্ষুদ্র ঋণ টিকে থাকতে পারবে না। এজেন্ট ব্যাংকের শাখা থেকে অর্ধেক সুদে ঋণ পাচ্ছেন গ্রাহক, কাজেই ধীরে ধীরে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে চড়া সুদের ক্ষুদ্র ঋণ বাজার থেকে ছিটকে পড়বে। রিজার্ভ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী মাসে রিজার্ভ হবে ২৭-৩০ বিলিয়ন ডলার। এই রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারে নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। যার জন্য সময়ের প্রয়োজন।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্যানুযায়ী, চলতি মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২৫ হাজার ৪৪৪ দশমিক ৪৩ মিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২০ হাজার ৭ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা ২০২৫: একটি ব্যবসায়ীবান্ধব ও গণতান্ত্রিক সংস্কার
গণঅভ্যুত্থানের ফলে সৃষ্ট বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জনবান্ধন করার জন্য সংস্কার করার উদ্যোগ গ্রহন করে। এরই ধারাবাহিকতা ও বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ (এফবিসিসিআই ) সাধারণ ব্যবসায়ীদের দাবীর প্রেক্ষিতে বাণিজ্য সংগঠন বিধি ও এফবিসিসিআইএ'র সংস্কারের জন্য জোরালো ভূমিকা রাখে। সারাদেশের বিভিন্ন চেম্বার ও সকল এসোসিয়েশনের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করে তাদের কাছ থেকে লিখিত সংস্কার প্রস্তাব গ্রহণ করে। এ সকল প্রস্তাব প্রশাসক, এফবিসিসিআই ও মহাপরিচালক, বাণিজ্য সংগঠন মহোদয়ের অফিসে জমাদানের পাশাপাশি বিভিন্ন সভা ও সেমিনারে সংস্কারের পক্ষে ব্যবসায়ীদের দিক থেকে জোরালো অবস্থান ব্যক্ত করা হয়। মঙ্গলবার (২০ মে) সরকার বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা-২০২৫ প্রকাশ করেছেন। আমরা সাধারন ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে গণতান্ত্রিক ও ব্যবসায়ী বান্ধব সংস্কার প্রস্তাবমালা বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা -২০২৫ কে সাধুবাদ জানায়। কেননা এখানে ব্যবসায়ীদের বেশিরভাগ দাবীকে গ্রহন করা হয়েছে। প্রথমত সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সহ-সভাপতিবৃন্দ সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হবে, ফেডারেশনের পরিচালনা পর্ষদ ৮০ থেকে কমিয়ে ৪৬ জন করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, নতুন নেতৃত্ব বিকাশের জন্য দুইবার নির্বাচনের পর একবার নির্বাচন থেকে বিরতি রাখার বিধান রাখা হয়েছে। যদিও পূর্বে এ নিয়ম ছিল, কিন্তু বিগত সময়ে ব্যক্তি স্বার্থ উদ্বারের জন্য এটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠী এটি রহিত করছিল। তৃতীয়ত, সহ-সভাপতির সংখ্যা ও মনোনীত পরিচালকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমানো হয়েছে এবং সর্বক্ষেত্রে নির্বাচনকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র জাতীয় অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে এরকম খাতের কিছু মনোনীত পরিচালক নিয়োগ দেয়ার কথা বলা হয়েছে বিধামালাতে। সর্বোপরি বর্তমান সরকার ব্যবসায়ীবান্ধব সংস্কার প্রস্তাব প্রণয়ন করে ব্যবসায়ের সকল খাতে শৃংখলা আনয়নের অভূতপূর্ব কাজ সম্পাদন করেছে। বিগত বিভিন্ন সময়ে এফবিসিসিআই ও বাণিজ্য সংগঠন বিধি সংস্কারের দাবী জানানো হয়েছে। কিন্তু কোন সরকারই ব্যবসাবান্ধব বাণিজ্য সংগঠন বিধি প্রণয়ন করেনি। সব সরকারই লেজুড়বৃত্তি করে এমন ব্যবসায়ী নেতৃত্ব গঠনের দিকে মনোনিবেশ করেছে। আমরা বিশ্বাস করি এ বিধিমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি গনতান্ত্রিক ও জবাবদিহিতামূলক ফেডারেশন গঠিত হবে এবং ৪.৫ কোটি ব্যবসায়ীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আমাদের সকলের উচিৎ সে উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করা এবং বিধিমালা কে সাধুবাদ জানানো। কেননা ২০০০ শহীদের আত্নত্যাগ ও প্রায় ৪৫,০০০ আহতের রক্তের বিনিময়ে আমরা সংস্কার কে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। আতিকুর রহমানআহবায়ক, মিডিয়া ও লিয়াজোঁ কমিটিবৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ (এফবিসিসিআই)।

১০০ বিলিয়ন ডলারের আরএমজি স্বপ্নে সাহস-অভিজ্ঞতা-তারুণ্যের ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্ব চায় সম্মিলিত পরিষদ
তৈরি পোশাক শিল্পের সামনে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যে পৌঁছাতে প্রয়োজন সময়োপযোগী নেতৃত্ব, যারা অভিজ্ঞতা, সাহস ও তারুণ্যের সমন্বয়ে শ্রমিক, উদ্যোক্তা ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারবে এমন মন্তব্য করেছেন বিজিএমইএ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার মো. আবুল কালাম। বুধবার (২১ মে) সকালে রাজধানীর ইন্টার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে সাংবাদিকদের সামনে নিজের দলের ১২ দফা নির্বাচনী ইশতেহার উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, “আমি শুধু প্যানেল লিডার নয় আপনাদের সহকর্মী, পোশাক শিল্পের একজন অংশীদার।” তিনি পোশাক শিল্পের সূচনা ও সাফল্যের ইতিহাস স্মরণ করে বলেন, মাত্র ১২ হাজার ডলারের রপ্তানি দিয়ে যাত্রা শুরু করে আজ বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক। ইশতেহারে উল্লেখযোগ্য ১২ টি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে এসএমই সাপোর্ট সেল গঠন করা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানার জন্য নীতিগত, আর্থিক ও কাঠামোগত সহায়তায় ‘এসএমই সাপোর্ট সেল’ চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্যানেল লিডার মো. আবুল কালাম বলেন, তারা ভ্যাট, এইচএস কোড, অর্ডার বাতিল, বিলম্বিত পেমেন্ট ও চুক্তি সংক্রান্ত আইনি জটিলতা নিরসনে সরকারের সঙ্গে কাজ করবেন। বিদ্যুৎ ও জ্বালানী নিরাপত্তা সংকটকালে বিকল্প প্রণোদনার দাবি জানিয়ে আবুল কালাম বলেন, শিল্পের উৎপাদন অব্যাহত রাখতে উৎপাদন মৌসুমে গ্যাস-বিদ্যুতের নিশ্চয়তা দিতে হবে। ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ প্রস্তুতি ও গ্রিন ফান্ডিং ডেস্ক সম্মিলিত পরিষদ পোশাক শিল্পর শ্রমিক ও ব্যবস্থাপকদের জন্য AI, IoT, ERP, ESG ও কোয়ালিটি কন্ট্রোলে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে। আবুল কালাম বলেন, সবুজ অর্থায়নের জন্য ‘গ্রিন ফান্ডিং ডেস্ক’ গঠন করে GCF, IFC সহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উৎস থেকে সহজ শর্ত ও স্বল্প সুদে ঋণ প্রাপ্তিতে তারা সহায়তা করবেন। পণ্য ও বাজার বহুমুখীকরণ মার্কেট এক্সপ্যানশন ডেস্ক গঠন করে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকায় বাজার সম্প্রসারণ ও ইউরোপ-আমেরিকার ওপর নির্ভরতা কমানোর উদ্যোগ থাকবে। “আঞ্চলিক বাণিজ্য সংস্থা ও চেম্বারগুলোর সঙ্গে MoU স্বাক্ষর,B2B মিশন, এক্সপো ও সোর্সিং ফেয়ার-এ অংশগ্রহণের মাধ্যমে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার সম্ভাবনাময় বাজারে প্রবেশনিশ্চিত করব।ইউরোপ ও আমেরিকার অতিনির্ভরতা কমিয়ে বৈশ্বিকবাণিজ্য ঝুঁকি হ্রাস করব।EPB, বিদেশি মিশন ও প্রবাসী নেটওয়ার্কের সঙ্গে যৌথভাবে নতুন ক্রেতাসংযোগ এবং সিনথেটিক, ব্লেন্ড ও আউটারওয়্যার পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিতেউদ্যোগ নেওয়া হবে। আমদানী কাঁচামালের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নতুনপণ্যে প্রবেশ ও উচ্চ প্রবৃদ্ধির বাজারে অবস্থান সুদৃঢ় করবে।” LDC-পরবর্তী কৌশল শুল্ক সুবিধা কমে যাওয়া ঠেকাতে স্মার্ট রাজস্ব নীতি ও প্রণোদনার মাধ্যমে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও মজুরি স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। আবুল কালাম বলেন, “এই নীতি স্মার্ট রাজস্ব ব্যবস্থা, ক্রেতা-সহযোগিতা ও খাতভিত্তিকসহায়তার মাধ্যমে সব ধরনের কারখানা—বিশেষ করে এসএমই—কেবৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সহায়তা করবে।” বাণিজ্য সহায়তা ও এনবিআর সংস্কার বন্ড সুবিধা, গ্রিন চ্যানেল চালু, সোর্স ট্যাক্স হ্রাসসহ কাস্টমস-বন্ড-ভ্যাট ব্যবস্থার যুগোপযোগী সংস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়।তিনি বলেন, জরুরি রপ্তানির জন্য নন-বন্ডেড কারখানায় অস্থায়ী বন্ড সুবিধা* BGMEA–NBR–Customs যৌথ টাস্কফোর্স গঠন* ভ্যাট ও করের নিয়ম সরলীকরন ভ্যাট ছাড় ও সোর্স ট্যাক্স হ্রাসBGMEA’র* বন্দরে তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য গ্রিন চ্যানেল সুবিধা চালুরউদ্যোগ* UP অর্ডার সচল রাখা ও বন্ডেড সরবরাহকারীদের সমন্বয়* সোলার ও জ্বালানি-দক্ষ যন্ত্রপাতির আমদানিতে সবুজ প্রণোদনা* সিন্থেটিক, আউটারওয়্যারসহ নতুন পণ্যে বিশেষ সহায়তাপ্যাকেজ EPIC-ওয়ান স্টপ এক্সপোর্ট সাপোর্ট চালু রপ্তানিতে নতুন উদ্যোক্তা, নারী নেতৃত্ব ও এসএমই-দের জন্য তথ্যনির্ভর, প্রযুক্তিনির্ভর সেবা কাঠামো চালু করা হবে। তিনি বলেন বিজিএমইএ তে রেজিস্ট্রেশন, কাস্টমস ও ডকুমেন্টেশনে সহায়তা রপ্তানি প্রস্তুতি ডেস্ক, বাজার, ক্রেতা মানদণ্ড ও ট্রেন্ডসবিশ্লেষণে নীতিনির্ধারণ পর্যবেক্ষণ সেল, উৎপাদন দক্ষতা পরিমাপ ও তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণে ডিজিটাল ফ্যাক্টরি টুলস এবং প্রযুক্তি গ্রহণে প্রতিষ্ঠানের জন্য কাস্টমগাইডলাইন দিতে স্মার্ট ফ্যাক্টরি রোডম্যাপ তৈরি করা হবে। ইউনিফায়েড কোড অব কন্ডাক্ট চালু কালাম বলেন, বিভিন্ন ক্রেতা অডিট একত্র করে একটি একক নীতিমালা তৈরি করা হবে যাতে এসএমই কারখানার কমপ্লায়েন্স সহজ হয়। “আমরা BGMEA অনুমোদিতএকটি "Unified Code of Conduct" চালু করব, যা আন্তর্জাতিক ক্রেতা, ILO ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে যৌথভাবে প্রণয়ন করা হবে।এই উদ্যোগ বিশেষভাবে এসএমই কারখানার জন্য কমপ্লায়েন্স সহজ ও কার্যকর করে তুলবে।” আবুল কালাম বলেন, ভবিষ্যৎ সংকট ব্যবস্থাপনার জন্য শ্রমিক সেবা ফান্ডে বাধ্যতামূলকমাসিক সঞ্চয় ব্যবস্থা করা হবে। সবুজ শিল্পায়ন সার্কুলার ইকোনমি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ডিকার্বনাইজেশনের জন্য কারখানাভিত্তিক রোডম্যাপ ও অর্থায়নের সুযোগ বাড়ানো হবে। সার্কুলার ইকোনমি: সার্কুলার ইকোনমি বাস্তবায়নে একটি পুর্নাংগগাইডলাইন প্রনয়ন করা হবে এবং সকল প্রকার নীতি সহয়তাপ্রনয়ন করা হবে। আবুল কালাম বলেন, সৌর প্রযুক্তিতে বিনিয়োগে দেশি ও বিদেশিউৎস থেকে সহজ লভ্য ঋণ এর নিশ্চিত করা ও শেয়ারড মডেলেরুফটপ সোলার ব্যাবস্থা করা।এছাড়া এনার্জি অডিট, দক্ষতা উন্নয়ন ও কারখানাভিত্তিক ডিকার্বোনাইজেশন রোডম্যাপ প্রনয়নে সহায়তা এবং জ্বালানি সাশ্রয়, বর্জ্যহ্রাস, ক্লাইমেট একশন ও ESG সমন্বয়ে সার্টিফিকেশন ও ব্র্যান্ডিংসহায়তা প্রদান করা হবে। ‘Made in Bangladesh-প্রিমিয়াম এডিশন’ বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিংয়ে প্রিমিয়াম পণ্যের প্রচারণা, ডিজাইন-ভিত্তিক প্রদর্শনী ও ভিজ্যুয়াল ব্র্যান্ডিং সাপোর্টে আমরা ‘Made in Bangladesh – প্রিমিয়াম এডিশন’ নামে একটিগ্লোবাল ব্র্যান্ডিং ক্যাম্পেইন চালু করব, যেখানে বাংলাদেশকে কেবল সস্তাউৎপাদনের দেশ নয়, বরং আধুনিক, টেকসই ও মূল্যনির্ভর সোর্সিংডেস্টিনেশন হিসেবে পরিচিত করা হবে। প্রিমিয়াম ক্রেতাদের জন্য কাস্টমাইজড কনটেন্ট তৈরী ও প্রচার, সদস্যদের জন্য ব্র্যান্ড বিল্ডিং সাপোর্ট – ফটোশুট, ক্যাটালগ, ভার্চুয়ালশোরুম তৈরী করা এবং হাই-এন্ড নিটওয়্যার, আউটারওয়্যার ও সার্কুলার কালেকশন নিয়েডিজাইন-ভিত্তিক প্রদর্শনী করা হবে।এতে বাংলাদেশের রপ্তানি ভাবমূর্তি ও বাজার অবস্থান আরও শক্তিশালী করবে বলে মনে করেন সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার। অ্যাপারেল ডিপ্লোম্যাসি ও এক্সিট পলিসি তিনি বলেন আমরা নির্বাচিত হলে একদিকে GSP সুবিধা আদায়ের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা, অন্যদিকে দায়িত্বশীলভাবে কারখানা বন্ধের সুযোগ ও পুনর্বিনিয়োগে সহায়তা থাকবে। প্যানেল লিডার বলেন, “এটি শুধুমাত্র একটি নির্বাচনী ইশতেহার নয়, এটি হলো সময়োপযোগী ও বাস্তবমুখী রোডম্যাপ, যা পোশাক শিল্পকে একটি স্মার্ট ও ফিউচার ফিট শিল্পে রূপান্তর করবে।” এছাড়া অনুষ্ঠানের শুরুতে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়ক ফারুক হাসান তাদের নেতৃত্বে তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য তাদের বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরেন। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদ হাসনাত আলম সামগ্রিক অর্থনীতি ও তৈরি পোশাক শিল্পের ওপর একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

ঈদের ছুটি নেই কাস্টমসে, খোলা থাকবে সেবার জন্য
আসন্ন ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটিতে দেশের সব কাস্টমস হাউস ও শুল্ক স্টেশনগুলো খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সরকারি ছুটির দিনে আমদানি-রপ্তনি কার্যক্রম সচল থাকবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এ সংক্রান্ত আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। মঙ্গলবার (২০মে) রাজস্ব বোর্ডের দ্বিতীয় সচিব মুকিতুল হাসান (কাস্টম ও নীতি) স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য নিরবচ্ছিন্ন রাখার অভিপ্রায়ে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে আগামী ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত (ঈদের দিন ব্যতীত) সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কার্যক্রম সীমিত আকারে চলমান রাখার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। আগামী ৬ অথবা ৭ জুন বাংলাদেশে ঈদুল আজহা পালিত হতে পারে। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ১০ দিন ছুটি ঘোষণা করেছে। পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হবে আগামী ৫ জুন থেকে। টানা ১০ দিন ছুটি থাকবে। অর্থাৎ ছুটি শেষ হবে ১৪ জুন।

পাচার অর্থ ফেরাতে লাগতে পারে ৪–৫ বছর: গভর্নর মনসুর
পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জোর প্রচেষ্টা দেখালেও তাতে শিগগিরই কোনো ফল মিলছে না। আইনি প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করে এসব অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে অন্তত ৪-৫ বছর সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তবে এক বছরের মধ্যে বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দ করা যাবে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে যুক্তরাজ্য সফর শেষে ফিরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এসব তথ্য জানিয়েছেন। আজ সোমবার (১৯ মে) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে 'বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ও সম্পদ পুনরুদ্ধার: গৃহীত কার্যক্রম ও বাস্তবায়ন অগ্রগতি' শীর্ষক এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, 'টাকা কীভাবে ফেরত আনতে হয়, সে বিষয়ে আমাদের আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা নাই। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল এক্সপেরিয়েন্সটা আমরা জানি। সাধারণত, আইনি প্রক্রিয়া শেষ হতে চার থেকে পাঁচ বছর লাগে।' তিনি জানান, পাচার অর্থ ফেরাতে ৫ বছর লাগলেও সংশ্লিষ্ট দেশে পাচার অর্থ ও সম্পদ জব্দ করা সম্ভব। তিনি বলেন, 'তবে এটার মধ্যে কিছু ইন্টারমিডিয়েট বা অন্তর্বর্তীকালীন কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যায়। যেমন বিদেশে তাদের যে সম্পদ আছে, সে সম্পদকে ফ্রিজ করা যায়। সেটা কিন্তু আপেক্ষিকভাবে বছরের মধ্যে করা সম্ভব। আরো কম সময় করা সম্ভব, যদি আমরা প্রপার আইনি প্রক্রিয়া আমাদের দেশে সম্পন্ন করতে পারি।' তিনি আরো বলেন, 'তারপর এই রিকোয়েস্টটা বিদেশে আমাদেরকে সঠিক প্রক্রিয়ায় পাঠাতে হবে। এটাকে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স বলে। আমরা এই প্রক্রিয়াতে আছি, এখন আমরা রিকুয়েস্ট পাঠাচ্ছি বিদেশিদের, আমরা যদি সহায়তা পেয়ে যাই তাহলে কিন্তু আমরা ফ্রিজ করতে পারব। এসেট ফ্রিজ হলে পরবর্তীতে কোর্টে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং সেই প্রক্রিয়া সমাধান হতে সাধারণত চার থেকে পাঁচ বছর লেগে যায়।' কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় সফলতা অর্জনের জন্য উপযুক্ত ও মানসম্পন্ন তথ্য সংগ্রহ নিশ্চিত করতে হবে বলে জানান গভর্নর। তিনি বলেন, 'এখানে আমাদের যে তথ্য সংগ্রহ, গুণগত মান— এই জিনিসগুলো বিদেশি কোর্টের রায়ের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে। আমাদের লিগ্যাল প্রসেসটা বিদেশে শুরু করতে হবে, সেদিকে আমরা এগোচ্ছি।' এর আগে গত এপ্রিলে বিদেশে পাচার করা সম্পদের বড় অংশ ছয় মাসের মধ্যে জব্দ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন গভর্নর। বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ কার্যক্রম ও সমসাময়িক ব্যাংকিং নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেছিলেন তিনি। গভর্নর আহসান এইচ মনসুর তখন বলেন, 'ছয় মাসের মধ্যে বিদেশে পাচার করা সম্পদের বড় একটি অংশ জব্দ করা হবে। এ জন্য আমরা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কথা বলছি। বিভিন্ন দেশ ও সংস্থাকে চিঠি দিচ্ছি। বিদেশি আইনি সংস্থা বা ফার্মের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে, এ কাজে তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে। এরই মধ্যে আমরা বেশ কিছু সম্পদ যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের কাছ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতাও পাচ্ছি। এই প্রক্রিয়ায় ছয় মাসের মধ্যে বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দ করা হবে।'
.jpg)
২০২৫ অর্থ বছরে কারখানা-দোকান-প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত প্রায় সাড়ে ৯৪ হাজার
কোনো কারখানায় পাঁচজন বা তার বেশি শ্রমিক থাকলে সেই কারখানাকে শ্রম আইনের আওতায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডিআইএফই) থেকে নিবন্ধন নিতে হয়। অন্য যে কোনো ধরনের দোকান ও প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন লাগে কোনো শ্রমিক না থাকলেও। অর্থাৎ, কোনো দোকান মালিক এককভাবে চালালেও তাকে নিবন্ধন নিতে হবে। এমন নিয়ম থাকলেও দেশের সিংহভাগ কারখানা, দোকান ও প্রতিষ্ঠান এখনো নিবন্ধনের বাইরে। সারাদেশের মাত্র ৯৪ হাজার ৫১৫টি কারখানা, দোকান ও প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত। অনিবন্ধিত প্রায় দেড় লাখ। সরকারের উদ্যোগএ পরিস্থিতিতে দেশের সব কারখানা, প্রতিষ্ঠান ও দোকান শ্রম আইনে নিবন্ধের আওতায় আনতে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। প্রাথমিকভাবে ঢাকা জেলার সব আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট, সুপারশপ, শপিংমল ও বড় মার্কেটের দোকান নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব জায়গায় এ কার্যক্রম শুরু করা হবে। শ্রম ও কর্মংস্থান মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। যা বলছে প্রতিবেদনের তথ্যসারাদেশের নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত কারখানা, দোকান ও প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে শ্রম ও কর্মংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। সারাদেশে অবস্থিত ৩১টি উপ-মহাপরিদর্শকের কার্যালয়ের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে ডিআইএফই। এতে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময়ের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মাত্র ৯৪ হাজার ৫১৫টি কারখানা, দোকান ও প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত। আমাদের দেশে যে পরিমাণ কারখানা, দোকান ও প্রতিষ্ঠান আছে, সে হিসাবে এই সংখ্যা সন্তোষজনক কি না? এমন প্রশ্ন করা হলে শ্রম সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ কারণেই আমরা সবাইকে নিবন্ধনের আওতায় আনার কথা বলছি। সবাই নিবন্ধিত থাকলে তো এটা বলতে হতো না। যেহেতু সবাই নিবন্ধিত না, সে জন্য সবাইকে আমরা নিবন্ধনের আওতায় আনতে চাচ্ছি। আপাতত আমরা ঢাকায় কার্যক্রম শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে এই কার্যক্রম চালাবো।’

ন্যাশনাল ব্যাংক ও জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্বাক্ষর
সর্বজনীন পেনশন স্কিমগুলোর রেজিস্ট্রেশন ও চাঁদার টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যে গত ১৫ই মে, ২০২৫ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অর্থ বিভাগের সভাকক্ষে ন্যাশনাল ব্যাংকের সাথে সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। এ পর্যন্ত ২৪টি ব্যাংকের সঙ্গে এই এমওইউ স্বাক্ষর করেছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ।ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ইমরান আহমেদ এবং জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের পক্ষে নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দীন খান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

১৭ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৯ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা
চলতি মে মাসের প্রথম ১৭ দিনে দেশে ১৬১ কোটি মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৯ হাজার ৬৪২ কোটি টাকার বেশি। এই হিসাবে গড়ে প্রতিদিন ৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার বা ১ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। রোববার (১৮ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মে মাসের প্রথম ১৭ দিনে দেশে এসেছে ১৬১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স। এরমধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংগুলোর মাধ্যমে ৪৯ কোটি ৩৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। অপরদিকে বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৫ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৯৬ কোটি ২৭ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৩১ লাখ ৩০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর আগে গত মার্চে দেশের ইতিহাসে যেকোনো এক মাসের চেয়ে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স (৩২৮ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার) এসেছিল। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। এছাড়া সবশেষ গত এপ্রিলে দেশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭৫ কোটি ১৯ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।

ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞায় বেনাপোলে দাঁড়িয়ে আছে পোশাকভর্তি ৩৬টি ট্রাক
বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে তৈরি পোশাক আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার ফলে রোববার সকাল থেকে কোনো পণ্য ভারতে প্রবেশ করতে পারেনি। এতে করে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের তৈরি পোশাকবোঝাই ৩৬টি ট্রাক বেনাপোল বন্দরে আটকে আছে। এই পরিস্থিতিতে রপ্তানি অনিশ্চয়তায় পড়েছে। তবে কিছু প্রতিষ্ঠান এসব পণ্য চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর হয়ে রপ্তানির উদ্যোগ নিচ্ছে। উল্লেখ্য, শনিবার রাতে ভারত বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে তৈরি পোশাক আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। রফতানিকারকরা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পোশাকসহ প্রায় সাত ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত সরকার। এতে রফতানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা ক্ষতির মুখে পড়বে। বেনাপোল স্থলবন্দরের তুলনায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে পণ্য ভারতে পাঠাতে দ্বিগুণ খরচ হবে। একইসঙ্গে পণ্য পৌঁছাতেও বেশি সময় লেগে যাবে। এতে ক্রয়াদেশ কমে যাবে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের এক মাসের মাথায় ভারতের এই পাল্টা নিষেধাজ্ঞা দিলো। যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করার কথা বলেছে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত বছর (২০২৩-২৪ অর্থবছর) বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রায় ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৭ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকার পণ্য ভারতে রফতানি করেছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রফতানি করেছে ১৭ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার পণ্য। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রফতানি হয়েছে ১১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকার পণ্য। যেসব দেশে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি বাড়ছে, তার মধ্যে ভারত একটি। যেখানে প্রতি বছর প্রায় ৭০ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়। এর মধ্যে ৯৩ শতাংশের মতো পোশাকপণ্য স্থলপথেই রফতানি হয়। ফলে ভারতের নতুন নিষেধাজ্ঞা এই খাতের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দেখা দেবে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। শনিবার রাতে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদফতর এক বিবৃতিতে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, গার্মেন্টস/তৈরি পোশাক পণ্যসহ সাত ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এর ফলে ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় ৩৬টি পণ্যবোঝাই বাংলাদেশি ট্রাক বেনাপোল বন্দরে দাঁড়িয়ে আছে। নিষেধাজ্ঞার আদেশে বাংলাদেশ থেকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, গার্মেন্টস/তৈরি পোশাক পণ্যসমূহ শুধু কলকাতা সমুদ্রপথে আমদানি করা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়।

পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট ফি নির্ধারণ করল কেন্দ্রীয় ব্যাংক
দেশের ব্যাংকগুলোকে পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট করার জন্য ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট ফি বাবদ গ্রাহকদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা আদায় করতে পারবে ব্যাংকগুলো। শনিবার (১৭ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবৃদ্ধি ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তফসিলি ব্যাংকগুলো বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রির সময় বিভিন্ন হারে পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট ফি ও চার্জ এবং অতিরিক্ত সার্ভিস ফি বা কমিশন নিচ্ছে। অতিরিক্ত ফি আদায় করায় ব্যাংক থেকে বৈদেশিক মুদ্রা কিনতে নিরুৎসাহিত হন গ্রাহকরা। এ কারণে বৈধ চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রা কিনতে উৎসাহিত করতে প্রথমবারের মতো পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট ফি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

আজ স্বর্ণ কত দামে বিক্রি হচ্ছে?
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। আজ শনিবার (১৭ মে) সবশেষ সমন্বয়কৃত দাম অনুযায়ী দেশের বাজারে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে। সবশেষ সমন্বয়কৃত দাম অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে রুপাও। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণের দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার স্বর্ণের ২২ ক্যারেটের এক ভরিতে ৩ হাজার ৪৫২ টাকা কমিয়েছে সংগঠনটি। নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৭৩৪ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৫৮ হাজার ১৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৫ হাজার ৬০৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১২ হাজার ৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে। এর আগে, সবশেষ গত ১৩ মে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে ১ হাজার ৫৬৩ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৬৯ হাজার ১৮৬ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৮ হাজার ৪২৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৪ হাজার ৪৩৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছিল গত ১৪ মে থেকে। এ নিয়ে চলতি বছর ৩৪ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হলো স্বর্ণের দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ২২ বার, আর কমেছে মাত্র ১২ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার। স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮১১ টাকায়। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ২৯৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭২৬ টাকায়।

সাড়ে ৯ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন ডিএসইতে
প্রায় ২০ বছর পর দেশের পুঁজিবাজার লেনদেন হলো আজ শনিবার (১৭ মে)। এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে ২৬২ কোটি টাকা। ডিএসইর এই লেনদেন গত ৯ মাস ১৩ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে ডিএসইতে সব ধরনের সূচক উত্থান হয়েছে আজ। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৩৯ পয়েন্ট। এদিন লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর উত্থান হয়েছে। আগের কর্মদিবস বৃহস্পতিবারের তুলনায় আজ বাজারে মূলধন বেড়েছে তিন হাজার ৫০৬ কোটি টাকা। দেশে একসময় সাপ্তাহিক সরকারি ছুটি একদিন (শুক্রবার) ছিল। ১৯৯৭ সালে প্রথম সাপ্তাহিক সরকারি ছুটি দুদিন (শুক্রবার ও শনিবার) নির্ধারণ করা হয়। ২০০১ সালে সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন বাতিল করে ফের একদিন (শুক্রবার) করা হয়েছিল। এর চার বছর পর ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর ফের সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার ও শনিবার করা হয়। এরপর থেকে পুঁজিবাজারের লেনদেন শুক্রবার ও শনিবার বন্ধ থাকে। তবে আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে সরকার দীর্ঘ ছুটি দেওয়ার পাশাপাশি দুই শনিবার অফিস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। তার আলোকে আজ শনিবার সরকারি সব অফিস খোলা থাকার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। আগের কর্মদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ২৯৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার। আজ লেনদেন হয়েছে ২৬২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার। আজকের এই লেনদেন গত ৯ মাস ১৩ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে গত বছরের ৪ আগস্ট লেনদেন হয়েছিল ২০৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে মূলধন দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৫৩ হাজার ৯৯১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। গত বৃহস্পতিবার মূলধন ছিল ছয় লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা। ডিএসইতে শেয়ার কেনার চাপে আজ লেনদেন শুরুর প্রথম ১২ মিনিটে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স উত্থান হয় ১৯ পয়েন্ট। এদিন বেলা বাড়ার পর শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ে। এতে প্রধান সূচক পতনে আসে। লেনদেন শুরুর প্রথম ৪৬ মিনিটে সূচক ডিএসইএক্স পতন হয় ২০ পয়েন্ট। পরে ফের শেয়ার কেনার চাপ বাড়ে। এতে লেনদেন শেষে সূচক ডিএসইএক্স উত্থান হয়েছে ৩৯ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট। দিনশেষে সূচকটি বেড়ে দাঁড়ায় চার হাজার ৮২০ দশমিক ৪৬ পয়েন্টে। একইসঙ্গে উত্থান হয়েছে ডিএসইর সূচক ডিএসইএস ও ডিএস৩০। আজ ডিএসইএস সূচক ১৩ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫২ দশমিক ৭৮ পয়েন্টে। এদিন ডিএস৩০ সূচক ১৮ দশমিক শূন্য আট পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭৮৮ দশমিক ৩০ পয়েন্টে। আজ লেনদেন হওয়া ৩৯৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছে ২৭৭টির বা ৬৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ ও কমেছে ৭৯টির। শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪০টির। আজ লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৩ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিচ হ্যাচারির ১১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, সিটি ব্যাংকের ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, উত্তরা ব্যাংকের ৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের আট কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আজ দর কমার শীর্ষে উঠে এসেছে মার্কেন্টাইল ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। কোম্পানিটির দর কমেছে পাঁচ দশমিক ৬৮ শতাংশ। দর বাড়ার শীর্ষে উঠে এসেছে শাইনপুকুর সিরামিকের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

ফের নগদ বিভাগের নিয়ন্ত্রণ নিল দুষ্কৃতকারীরা: বাংলাদেশ ব্যাংক
ফের মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নগদের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। শনিবার (১৭ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান। তার অভিযোগ, অবৈধ পন্থায় নগদে এমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এমন এক ব্যক্তিকে যিনি বিপুল আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়ের করা মামলার আসামি। আরিফ হোসেন খান বলেন, নগদের আগের বোর্ডে যারা ছিলেন তারা বিপুল আর্থিক অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে কোটি কোটি জনগণের সম্পৃক্ততা আছে এবং শত শত কোটি টাকার আমানত এখানে জড়িত তাই বাংলাদেশ ব্যাংক সাময়িকভাবে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নেয়। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবীর অনুপস্থিতিতে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্তে আট সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। এর ওপর ভিত্তি করে বেআইনিভাবে এমন একজনকে প্রতিষ্ঠানটির সিইও হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়ের করা মামলার আসামি। তিনি বলেন, নগদের আইটি বিভাগের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুষ্কৃতিকারীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সব ধরনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটিতে এই মুহূর্তে কি হচ্ছে তা নিয়ে শঙ্কিত বাংলাদেশ ব্যাংক। বিগত সময়ের মতো অর্থ তছরুপ ও বেআইনি কর্মকাণ্ড হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আগামী ১৯ মে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের ফুল বেঞ্চে প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়ের করা মামলার আসামিদের পুলিশ কেন খুঁজে পাচ্ছে না সে প্রশ্নও রাখেন মুখপাত্র। বাংলাদেশ ব্যাংক ডাক বিভাগকে নগদ পরিচালনার লাইসেন্স দিয়েছে, কিন্তু ডাক বিভাগ কেন দ্বিতীয় পক্ষকের হাতে প্রতিষ্ঠানটিকে তুলে দিল এ বিষয়ে উদ্বেগের কথা জানান মুখপাত্র।

এনআরবি ব্যাংকের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন শেখ মোঃ সেলিম
জনাব শেখ মোঃ সেলিম সম্প্রতি এনআরবি ব্যাংক পিএলসি-এর পরিচালনা পর্ষদের এক সভায় ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। জনাব সেলিম বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক। জনাব সেলিম, ২০০৩ সালে যুক্তরাজ্যের হাল বিশ্ববিদ্যালয়থেকে আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এর আগে তিনি ১৯৮৭ সালে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) থেকে বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে, জনাব সেলিম বেসরকারি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে ছয় বছর কাজ করে মূল্যবান অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। এছাড়াও ১৯৯৭ সালে, তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে একটি সার্টিফিকেট কোর্স করে তার জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করেছেন। জনাব সেলিম ১৯৯৩ সালের জানুয়ারীতে বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদান করে তার ব্যাংকিং ক্যারিয়ার শুরুকরেন এবং নির্বাহী পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহন করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩০ বছরেরও বেশি সময়ধরে বিস্তৃত অভিজ্ঞতার সাথে, তিনি আর্থিক বিশ্লেষণ, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা, তথ্য-চালিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ঋণ মূল্যায়ন, ব্যাংক এবং ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গভীর দক্ষতা অর্জন করেছেন। নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন, বিশেষ করে কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের (সিএমএসএমই) উন্নয়নের লক্ষ্যে তার উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। জনাব সেলিম বিভিন্ন প্রচারমূলক অনুষ্ঠান, মেলা এবং সমাবেশ পরিচালনার মাধ্যমে সিএমএসএমই - এর আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এছাড়াও, তিনি ব্যাংকিং খাতের কার্যক্রম তত্ত্বাবধান এবং মূল্যায়ন, সম্মতি এবং কর্মক্ষমতা উৎকর্ষতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রশিক্ষণ একাডেমিতে তার শিক্ষাদান এবং প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতার মধ্যে রয়েছে কোর্স ডিজাইন, সমন্বয়, অধ্যয়ন উপকরণ প্রস্তুতকরণ, বার্ষিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উন্নয়ন, কোর্স বিতরণ এবং পরীক্ষার স্ক্রিপ্ট মূল্যায়ন ভূমিকা পালন করেছেন। জনাব সেলিমের বহুমুখী দক্ষতা এবং বিস্তৃত পটভূমি তাকে ব্যাংকিং এবং আর্থিক খাতে একজন অত্যন্ত সম্মানিত পেশাদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।