চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত শুল্ক এক মাসের জন্য স্থগিত: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৯:০৯ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দরের শুল্ক ও সেবামূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কার্যকরের আগে এক মাসের জন্য স্থগিত করেছে সরকার, ব্যবসায়ীদের দাবির পর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দর অডিটোরিয়ামে এক কর্মশালায় এ ঘোষণা দেন নৌপরিবহন বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। ‘কাস্টমস অ্যান্ড পোর্ট ম্যানেজমেন্ট: প্রবলেমস, প্রসপেক্টস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এ কর্মশালার প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি এবং বে-টার্মিনালসহ চলমান প্রকল্পগুলো বন্দরের চার্জ বাড়াতে বাধ্য করেছে। তবে সাময়িক স্থগিতাদেশ রপ্তানিকারকদের ওপর চাপ কিছুটা কমাবে।”
এই সাময়িক স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকবে আগামী এক মাস। এরপর বাড়তি শুল্ক কাঠামো বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান উপদেষ্টা।
কর্মশালায় অংশ নেওয়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা অন্তত ছয় মাসের জন্য এই বাড়তি শুল্ক স্থগিত রাখার দাবি জানান। একইসঙ্গে, তারা শুল্ক হার কিছুটা কমানোরও অনুরোধ করেন। তাদের মতে, “বৈশ্বিক বাণিজ্যে নতুন চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধি, মোকাবিলায় রপ্তানিকারকদের প্রতিযোগিতা ধরে রাখতে সরকারের সহায়তা জরুরি।”
তারা চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্যের জট নিরসন, কনটেইনার নিলাম প্রক্রিয়া দ্রুততর করা এবং কার্গো সরবরাহ ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ ও গতিশীল করতে আইন সংশোধনের প্রস্তাব দেন। এ ছাড়া, যৌথ টাস্কফোর্স গঠনের আহ্বান জানানো হয়, যা বন্দরের সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় তৈরি করবে।
চট্টগ্রাম বন্দর ও আইসিডি (ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো) সেবার নতুন কাঠামোয় গড় চার্জ ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। রপ্তানিকারকদের অভিযোগ, আইসিডিগুলো সেবার মান বা সক্ষমতা না বাড়িয়েই এ বাড়তি চার্জ নিচ্ছে। একইসঙ্গে, তারা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর কার্যকর নিয়ন্ত্রণ না থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান জানান, “বন্দরটি নকশা অনুযায়ী ধারণক্ষমতার বাইরে পরিচালিত হচ্ছে। এটি এখনও জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভরশীল এবং সীমিত গভীরতার কারণে এখনও বৈশ্বিক মানের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে।”
তিনি বন্দরে আটকে থাকা কনটেইনার দ্রুত ছাড়, কাস্টমস প্রক্রিয়ায় স্বয়ংক্রিয়তা এবং ভবিষ্যতের বাণিজ্য প্রবাহ সামলাতে আইন সংস্কারের ওপর জোর দেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান জানান, “বন্দরে আটকে থাকা সব নিলামযোগ্য কনটেইনার এই মাসেই তালিকাভুক্ত করে দ্রুত নিলাম করা হবে।” তিনি আরও বলেন, “সাবেক এমপিদের ফেলে রাখা ৩০টি গাড়ি সরকারি পরিবহন পুলে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
কর্মশালায় উপস্থাপিত এক প্রবন্ধে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বিবেচনায় চট্টগ্রাম বন্দর এখনও শীর্ষস্থানীয় বন্দরগুলোর তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে, বিশেষ করে লজিস্টিকস পারফরম্যান্স, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স এবং বাণিজ্য ব্যয়ের দিক থেকে।