দেউলিয়ার পর্যায়ে ১২ ব্যাংক, অতি দুর্বল পর্যায়ে ১৫টি


দেউলিয়ার পর্যায়ে ১২ ব্যাংক, অতি দুর্বল পর্যায়ে ১৫টি

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ব্যাংক ও আর্থিক খাতে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। এর ফলে এখন সাধারণ মানুষ ব্যাংকে রাখা টাকা তুলতে হিমশিম খাচ্ছেন। বর্তমানে ১২টি ব্যাংক কার্যত দেউলিয়ার পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং আরও ১৫টি ব্যাংক অতিমাত্রায় দুর্বল হয়ে পড়েছে।

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত একটি সেমিনারে বক্তারা এসব তথ্য তুলে ধরেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয় (ইউএপি) এবং জার্মানির ওটিএইচ অ্যামবার্গ ওয়েইডেন যৌথভাবে সেমিনারটি আয়োজন করে। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন মাহমুদ ওসমান ইমাম।

বক্তারা বলেন, লুটপাটের ফলে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। খেলাপি ঋণ পাঁচ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে, যা মোট ঋণের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। এতে তারল্য সংকট আরও তীব্র হবে।

তারা জানান, এখন ১২টি ব্যাংক দেউলিয়ার পর্যায়ে চলে গেছে এবং আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে পারছে না। অতিমাত্রায় দুর্বল ১৫টি ব্যাংকের মধ্যে আটটিতে বড় আকারের লুটপাট হয়েছে।

সেমিনারে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী, সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন ও ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হোসেনসহ বিভিন্ন ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরা বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা বলেন, “এস আলম একাই পুরো ব্যাংক খাত ধ্বংস করে দিয়েছেন। আর তার সহযোগীরা আরও ধ্বংস করেছেন।” তারা আরও বলেন, ব্যাংক খাতে যে সংস্কারমূলক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা ইতিবাচক হলেও, রাজনৈতিক সরকারগুলো ক্ষমতায় এসে এসব সংস্কার বন্ধ করে দেয় বা এগুলোকে অগ্রাহ্য করে, যার ফলে অবস্থার উন্নতি হয় না।

বক্তারা অভিযোগ করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছ থেকে আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত ব্যাংক খাত পেয়েছিল। কিন্তু তারা সেই সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি এবং আগের সংস্কারগুলো ব্যাহত করেছে। এর ফলে ব্যাংক খাতে বড় ধরনের লুটপাট ও ধ্বংস নেমে এসেছে।

সেমিনারে বক্তারা আরও জানান, লুটপাটের অর্থের বড় অংশ বিদেশে পাচার হয়ে গেছে, যার পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এতে করে ব্যাংক খাতে চলমান তারল্য সংকট আরও দীর্ঘায়িত হবে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×