.png)
দাম বাড়বে যেসব পণ্যের
আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সোমবার (২ জুন) বিকেলে ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা শুরু করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। প্রস্তাবিত বাজেটে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার ওপর বিদ্যমান শুল্ক ও করহারে কিছু পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। তাতে কিছু পণ্যের দাম বাড়বে, আবার কিছু পণ্যের কমানো সুযোগ তৈরি হবে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণের মাধ্যমে প্রস্তাবিত বাজেট তুলে ধরেন। এতে বেশ কিছু পণ্যের শুল্কহার বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি কার্যকর হলে নিচের পণ্যগুলোর দাম বাড়তে পারে। অর্থ উপদেষ্টার বাজেট বক্তব্যে নিম্নোক্ত পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে সিগারেট, অনলাইন কেনাকাটা, রড, সাবান-শ্যাম্পু, দেশে তৈরি মোবাইল ফোন, গৃহস্থালি প্লাস্টিক সামগ্রী, এলপিজি, দেশে তৈরি এলপিজি সিলিন্ডার, ফ্ল্যাট, বলপয়েন্ট কলম, হেলিকপ্টার সার্ভিস, দেশে তৈরি ওয়াশিং মেশিন, দেশে তৈরি মাইক্রো ওভেন, দেশে তৈরি ইলেকট্রিক ওভেন, দেশে তৈরি ব্লেন্ডার-জুসার-মিক্সার-গ্রাইন্ডার, দেশে তৈরি ইলেকট্রিক কেটলি-ইস্ত্রি, দেশে তৈরি রাইস কুকার-প্রেসার কুকার, ব্লেড, দেশে তৈরি লিফট, দেশে তৈরি ফোর স্ট্রোক থ্রি-হুইলার যান, ওটিটি কনটেন্ট, বাণিজ্যিক ভবন (কমার্শিয়াল স্পেস), সেলফ-কপি পেপার-ডুপ্লেক্স বোর্ড-কোটেড পেপার, সুতা, ম্যানমেড ফাইবার, স্ক্রু-নাট-বোল্ট, সার্জিক্যাল কিটস, শিপ স্ক্র্যাপস গুডস, সিমেন্ট শিট, ক্রেডিট রেটিং সার্ভিস, থ্রি-হুইলার ব্যাটারি, সেটআপ বক্স ইত্যাদি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি আরও নিয়ন্ত্রণ, বেসরকারি বিনিয়োগ ও এফডিআই সুবিন্যস্তকরণ, সম্পূর্ণ আর্থিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার এবং বৈশ্বিক ও দেশীয় অনিশ্চয়তার মধ্যে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি জোরদার করার মতো কঠিন কাজও রয়েছে। এছাড়াও আগামী অর্থবছরের বাজেটে কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি, স্থানীয় শিল্পকে সহজতর করা, কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, এফডিআই আকর্ষণ, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি, কর পরিপালন ঘাটতি কমানো, ভ্যাটের হিসাব ব্যবস্থা সহজীকরণের ওপর জোর দেওয়া হবে। এছাড়াও, ভ্যাট আদায়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্পূরক শুল্ক হারকে যৌক্তিক করতে সংশ্লিষ্ট আইনের কিছু বিধান সরলীকরণের সম্ভাবনা রয়েছে। এবারের বাজেটের আকার চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তুলনায় কম। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সর্বশেষ বাজেটের আকার ছিল সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা, যা তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী উপস্থাপন করেন। তবে চলতি অর্থবছরের মাঝপথে কাটছাঁটের ফলে সেই বাজেটের বাস্তবায়নযোগ্য আকার দাঁড়ায় সাত লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা। বাজেট উত্তর আগামীকাল মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টা সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এবছর সংসদ না থাকায় আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না এই বাজেটে। তবে বাজেট ঘোষণার পর প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর নাগরিকদের কাছ থেকে মতামত চাইবে অর্থ মন্ত্রণালয়। মতামতের ভিত্তিতে তা চূড়ান্ত করা হয়। এরপর আগামী ২৩ জুনের পর যেকোনো একদিন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন নিয়ে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে তা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হবে।
.png)
গৃহিণীর শ্রমকে মূল্যায়নের ঘোষণা, বাজেটে নারীদের জন্য বিশাল সুখবর
জাতীয় বাজেট ঘোষণায় গৃহিণীদের শ্রমকে মূল্যায়নের উদ্যোগের ঘোষণা দিয়ে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জানানো হয়েছে, গৃহিণীদের অবদান ভবিষ্যতে জিডিপিতে আর্থিক মানদণ্ডে যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীকরণে সরকার ১২৫ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছে। সোমবার (২ জুন) বিকেলে বাজেট প্রস্তাবনায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, কর্মজীবী নারীর পাশাপাশি অনেক নারী গৃহিণী হিসেবে তাদের শ্রম ও সময় উৎসর্গ করছেন। কিন্তু তাদের এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে প্রায়শই যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। আমি সরকার ও জনসাধারণের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ভবিষ্যতে তাদের অবদান জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করতে প্রয়োজনীয় পদ্ধতিগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীকরণে সরকার ১২৫ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছে। এই তহবিলের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন এবং উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়া ভিডব্লিউবি কর্মসূচির আওতায় নির্বাচিত ২০ হাজার নারীকে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং জাতীয় মহিলা প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন একাডেমির মাধ্যমে আরও কর্মসূচি চালু আছে। বাজেটে বলা হয়— নারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে উপজেলা পর্যায়ে মহিলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এদিকে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত শিশুদের পুনর্বাসনের পাশাপাশি শহিদ শিশুদের ৮৪টি পরিবারকে ইতোমধ্যে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এই পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর পদক্ষেপকে রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা বলে উল্লেখ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা। প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারের বাজেটটি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, যা পূর্ববর্তী বছরগুলোর বাজেটের তুলনায় ভিন্ন। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে প্রায় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার ও আহতদের জন্য থাকছে বড় অংকের বরাদ্দ
২০২৫-২৬ অর্থবছরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবার এবং আহতদের জন্য বড় অংকের বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সোমবার (২ জুন) প্রস্তাবিত বাজেটে তিনি শহিদ পরিবার ও আহতদের জন্য ৪০৫ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস ও স্মৃতি সংরক্ষণ, গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবার এবং আহত ছাত্র-জনতার পুনর্বাসনসহ গণঅভ্যুত্থানের আদর্শ ও চেতনাকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, শীঘ্রই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের পরিবার এবং আহতদের জন্য ভাতা প্রদানের লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। এছাড়া, তাদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবার এবং আহতদের জন্য ৪০৫ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করছি। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ব্যাপ্তি এবং গুরুত্ব বিবেচনায় আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা। এক্ষেত্রে পেনশন ব্যতীত সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়াবে ৯১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা।

নতুন বাজেটে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম কমল
ভোক্তা পর্যায়ে এলপি গ্যাসের দাম কমেছে। জুন মাসের জন্য ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪৩১ টাকা থেকে ২৮ টাকা কমে ১ হাজার ৪০৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার (২ জুন) নতুন এ মূল্যের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), যা আজ সন্ধ্যা থেকে কার্যকর হবে। এ ছাড়া কমেছে অটোগ্যাসের দামও। প্রতি লিটার অটোগ্যাসের দাম ১ টাকা ২৭ পয়সা কমিয়ে ৬৪ টাকা ৩০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে মে মাসের জন্য প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১৯ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৪৩১ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
.png)
২০২৫-২৬ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা
২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারের রাজস্ব আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের মোট জিডিপির ৯ শতাংশের সমান। সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনকালে এ তথ্য জানান। অর্থ উপদেষ্টা জানান, রাজস্ব সংগ্রহ বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। জনবল বৃদ্ধি, কর অব্যাহতির ক্ষেত্রগুলো যৌক্তিকীকরণ, কর জালের সম্প্রসারণ এবং একক হারে ভ্যাট নির্ধারণের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে মধ্যমেয়াদে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চেষ্টা চালানো হবে। নতুন বাজেটে প্রস্তাবিত মোট রাজস্ব আয়ের মধ্যে এনবিআরের মাধ্যমে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। বাকি ৬৫ হাজার কোটি টাকা আসবে অন্যান্য উৎস থেকে। সরকার আশা করছে, এই রাজস্ব পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো আরও দৃঢ় হবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন গতি আসবে।

১২ কেজি এলপিজি গ্যাসের দাম কমলো ২৮ টাকা
ভোক্তা পর্যায়ে এলপি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জুন মাসের জন্য ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪৩১ টাকা থেকে ২৮ টাকা কমে ১ হাজার ৪০৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া কমেছে অটোগ্যাসের দামও। প্রতি লিটার অটোগ্যাসের দাম ১ টাকা ২৭ পয়সা কমিয়ে ৬৪ টাকা ৩০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার (২ জুন) নতুন এ মূল্যের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), যা আজ সন্ধ্যা থেকে কার্যকর হবে। এর আগে মে মাসের জন্য প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১৯ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৪৩১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া অটোগ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৬৫ টাকা ৫৭ পয়সা।

বাজেটে বাড়তে পারে সিগারেটের দাম
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আজ সোমবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন। প্রতিবারের মতো এবারও কিছু পণ্যের ওপর কর বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে, যার ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে। তবে কিছু খাতে করছাড় ও ভর্তুকি দেওয়ার কারণে কিছু পণ্যের দাম কমে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। এদিকে এবারের বাজেটে সিগারেটের দাম আরও এক দফা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিগারেটের চারটি স্তরে দাম ও শুল্ক উভয়ই বাড়ানো হয়েছিল। তখন নিম্ন, মধ্যম ও উচ্চ স্তরের ১০ শলাকা সিগারেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক ৫ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সে কারণে প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের শুল্ক কাঠামোয় নতুন করে পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। তবে তামাক শিল্পে ব্যবহৃত সিগারেট পেপারের ওপর সম্পূরক শুল্ক ৬০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ করার প্রস্তাব রাখা হচ্ছে। এতে সিগারেটের দামে আবারও প্রভাব পড়তে পারে। উল্লেখযোগ্য যে, বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ধূমপান বা ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করেন। প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে মৃত্যু ঘটে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষের। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা চিকিৎসা ব্যয় ও উৎপাদনশীলতা হ্রাসের সম্মিলিত ফল।

বাংলাদেশের কৃষি গবেষণায় সহযোগিতা করবে চীন
কৃষি, পাট, সামুদ্রিক মৎস্য ও গবেষণার ওপর বিশেষ নজর রেখে ব্যবসা-বাণিজ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে প্রস্তুত চীন বলে জানিয়েছেন সফররত চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও। রোববার (১ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্মেলনে অংশ নেওয়া ওয়েনতাও চীনের বিশাল ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে ঢাকা সফর করছেন। ওয়াং ওয়েনতাও প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমার সঙ্গে আসা চীনা কোম্পানিগুলো খুবই উৎসাহী। আপনি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের যে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, তাতে চীনা কোম্পানিগুলো এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী।” বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ভোক্তা প্রবণতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, রাত ১০টার পরও শপিং মলে ক্রেতাদের উপস্থিতি দেখে তিনি অভিভূত। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে পরিণত হবে—এমন পূর্বাভাস রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে বিশেষ করে কৃষি ও গভীর সমুদ্র ও নদীমাতৃক মৎস্য খাতে এখনো অনেক সুযোগ অবারিত রয়েছে। তিনি বলেন, “চীনের ছোঁয়ায় বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামকেই একটি উৎপাদন ইউনিটে রূপান্তর করা সম্ভব।” ওয়েনতাও বলেন, আমরা যেমন আলোচনা করেছি, কৃষিতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমরা পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করতে পারি তা জানতে আমরা আগ্রহী। তিনি বিশেষ করে কৃষিজমি উন্নয়ন, জল সংরক্ষণ এবং চাষাবাদের প্রযুক্তির কথা উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, “আমার দৃষ্টিতে কৃষি কেবল একটি শিল্প নয়, এটি একটি সামাজিক সংগঠনেরও রূপ।” মৎস্য ও সামুদ্রিক অর্থনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে চীনের অভিজ্ঞতা অনেক এবং তিনি বাংলাদেশের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব প্রত্যাশা করেন। চীন মৎস্য প্রযুক্তিতে, বিশেষ করে গভীর জলের সামুদ্রিক মৎস্য চাষে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে বলেন চীনা মন্ত্রী। চীনা মন্ত্রী উল্লেখ করেন, অধ্যাপক ইউনূস চীন-বাংলাদেশ সম্মেলনে তার বক্তব্যে পাট খাতকে পুনরুজ্জীবনের যে সম্ভাবনার কথা বলেছেন, তা চীন গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। তিনি জানান, চীন প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পাট আমদানি করে, যা বাংলাদেশের মোট পাট রপ্তানির ১০ শতাংশ। গবেষণা ও পণ্য বৈচিত্র্য আনার মাধ্যমে এই পরিমাণ বহুগুণ বাড়ানো সম্ভব। ওয়েনতাও বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তৃতার পরপরই সম্মেলনে উপস্থিত চীনা পাট ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যের উপর গবেষণা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেন, “আমাদের সহযোগিতা শুধু ব্যবসায়িক পর্যায়েই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়, গবেষণার ক্ষেত্রেও যৌথভাবে কাজ করা উচিত। যদি বাংলাদেশও এই গবেষণায় অংশগ্রহণ করে, তাহলে পাট আমাদের জন্য একটি অত্যন্ত উপযোগী পণ্য হয়ে উঠবে।” প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের পাট ডিজাইনাররা চীনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে পারেন। তিনি চীনা মন্ত্রীর আন্তরিকতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবের প্রশংসা করে। তিনি আরও বলেন, “আমরা খুব আনন্দিত। আজকের আপনার বক্তৃতা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এত বিনিয়োগকারী এসেছেন—এটা আমাদের জন্য একটি ভালো বার্তা, কারণ পুরো জাতি এটি লক্ষ্য করছে।” প্রধান উপদেষ্টা তার সাম্প্রতিক চীন সফরের কথাও স্মরণ করেন, যেখানে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা হয়।

নতুন টাকা মিলবে যেসব ব্যাংকে
ঈদুল আজহা উপলক্ষে নতুন টাকা বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে আজ (রোববার, ১ জুন) গ্রাহকদের জন্য এসব নোট সরবরাহ করা হচ্ছে না। আগামীকাল (২ জুন) থেকে নির্ধারিত ব্যাংকগুলো থেকে সাধারণ গ্রাহকরা নতুন টাকা সংগ্রহ করতে পারবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ১১টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় ২০০ কোটি টাকার নতুন নকশার ২০, ৫০ ও ১,০০০ টাকার নোট বিতরণ করা হবে। এ উদ্দেশ্যে সোনালী, জনতা, অগ্রণী, পূবালী, উত্তরা, রূপালী, ডাচ-বাংলা, ইসলামী, আল-আরাফাহ ইসলামী, ব্র্যাক এবং ইস্টার্ন ব্যাংকে এই নতুন নোট সরবরাহ করা হয়েছে। নতুন মুদ্রিত ১,০০০ টাকার নোটে থাকছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও জাতীয় সংসদ ভবনের চিত্র, যা গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের স্বাক্ষরে প্রকাশিত হচ্ছে। এতে যুক্ত করা হয়েছে ১৩টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য। ৫০ টাকার নোটে আছে আহসান মঞ্জিল ও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ‘সংগ্রাম’ শীর্ষক চিত্রকর্ম। এই নোটে থাকবে ৮টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য। ২০ টাকার নোটে দেখা যাবে কান্তজিউ মন্দির ও পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের ছবি, যার সঙ্গে রয়েছে ৫টি নিরাপত্তা ফিচার। সবকটি নোটেই নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য হিসেবে জলছাপে থাকছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখাবয়ব, যা জাল নোট শনাক্তকরণে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক নিশ্চিত করেছে, আগামীকাল থেকে সারাদেশের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখাগুলোতে নতুন টাকা বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের নির্দিষ্ট শাখা থেকে গ্রাহকরা নির্ধারিত সীমার মধ্যে নতুন নোট সংগ্রহ করতে পারবেন।

নতুন নোটের ছবি প্রকাশ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
অর্থ সচিব ড. খায়রুজ্জামান মজুমদার স্বাক্ষরিত নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ২ ও ৫ টাকা মূল্যমানের কারেন্সি নোটের ছবি প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রোববার (১ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের যোগাযোগ ও প্রকাশনা বিভাগ (ডিসিপি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক 'বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপতা'- শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের সকল মূল্যমানের (১০০০, ৫০০, ২০০, ১০০, ৫০, ২০, ১০, ৫ ও ২ টাকা) নতুন নোট মুদ্রণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান হাবিব মনসুর স্বাক্ষরিত নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোট ১ জুন থেকে প্রথমবারের মতো বাজারে প্রচলনে দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৫০০, ২০০, ১০০ ও ১০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোট এবং ৫ ও ২ টাকা মূল্যমান কারেন্সি নোট পর্যায়ক্রমে বাজারে প্রচলনে দেয়া হবে। এ সব নোট ইস্যুর তারিখ এবং মুদ্রিত নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য পরবর্তীতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জনসাধারণকে অবহিত করা হবে। উল্লেখিত মূল্যমানের নতুন নোটের পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সকল কাগুজে নোট এবং ধাতব মুদ্রাও যথারীতি চালু থাকবে। 'বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য' শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ২ ও ৫ টাকা মূল্যমান কারেন্সি নোটগুলোর ডিজাইন নিম্নরূপ- ৫ টাকা মূল্যমান কারেন্সি নোটের ডিজাইন অর্থ সচিব স্বাক্ষরিত ৫ টাকা মূল্যমান কারেন্সি নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ মি.মি. × ৬০ মি.মি.। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে তারা মসজিদ, ঢাকা এর ছবি এবং মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত থাকবে। নোটের পেছনভাগে জুলাই-২০২৪ গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্রদের আঁকা একটি গ্রাফিতি 'গ্রাফিতি-২০২৪' মুদ্রিত থাকবে। নোটটিতে গোলাপী রঙের আধিক্য থাকবে। জলছাপ হিসেবে নোটে 'রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ', মূল্যমান '5' এবং 'গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মনোগ্রাম' থাকবে। ২ টাকা মূল্যমান কারেন্সি নোটের ডিজাইন অর্থ সচিব স্বাক্ষরিত ২ টাকা মূল্যমান কারেন্সি নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ মি.মি. × ৬০ মি.মি.। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, মিরপুর, ঢাকা এর ছবি এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা'র ছবি মুদ্রিত রয়েছে। নোটের পেছনভাগের ডিজাইন হিসেবে রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ, ঢাকা এর ছবি থাকবে। নোটটিতে হালকা সবুজ রঙের আধিক্য থাকবে। জলছাপ হিসেবে নোটে 'রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ', মূল্যমান '2' এবং 'গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মনোগ্রাম' থাকবে।

প্রিমিয়াম মডেলের নতুন সাইড-বাই-সাইড ফ্রিজ উদ্বোধন করলো মার্সেল
ঈদ উৎসব উপলক্ষে স্মার্ট প্রযুক্তি ও ফিচার সমৃদ্ধ ইনভার্টার টেকনোলজির ৩টি নতুন প্রিমিয়াম মডেলের রেফ্রিজারেটর এনেছে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড মার্সেল। নতুন মডেলের এসব ফ্রিজে বিশেষ ফিচারের মধ্যে রয়েছে একুয়া ফাউন্টেইন, এমএসও ইনভার্টার, আজিটি, আয়োনাইজার, টার্বো মোড, সুপার মোড ও হলিডে মোড ইত্যাদি। সম্প্রতি রাজধানীর বসুন্ধরায় মার্সেল করপোরেট অফিসে আয়োজিত এক জমকালো অনুষ্ঠানে নতুন মডেলের ফ্রিজ উন্মোচন করেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। সেসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মার্সেলের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর নজরুল ইসলাম সরকার ও ইভা রিজওয়ানা, বিজনেস কোঅর্ডিনেটর (রেফ্রিজারেটর) শাহজালাল হোসেন লিমন, চিফ বিজনেস অফিসার (রেফ্রিজারেটর) তাহসিনুল হক, মার্সেলের হেড অব বিজনেস মতিউর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মতিউর রহমান জানান, ঈদে গ্রাহকদের হাতে সেরা দামে সেরা মানের সর্বাধুনিক স্মার্ট ফিচার সম্বলিত নতুন প্রিমিয়াম মডেলের ফ্রিজ বাজারে এনেছে মার্সেল। নতুন মডেলের ফ্রিজগুলোতে ক্রেতারা পাবেন স্মার্ট প্রযুক্তি ও ফিচার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শবনম ফারিয়া বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় মার্সেল ব্র্যান্ডের নতুন প্রিমিয়াম মডেলের রেফ্রিজারেটর উন্মোচন করার সুযোগ পেয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত। মার্সেল দেশেই আন্তর্জাতিকমানের পরিবেশবান্ধব ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ফ্রিজ তৈরি করছে। জয় করে নিয়েছে দেশীয় ক্রেতাদের আস্থা। মার্সেলের এই অগ্রযাত্রায় আমাকে যুক্ত করায় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গ্রাহকেরা মার্সেলের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচার সমৃদ্ধ নতুন মডেলের ফ্রিজগুলো তুলনামূলক সাশ্রয়ী দামে কিনতে পারবেন। মার্সেলের নতুন প্রিমিয়াম মডেলগুলোর মধ্যে এমএনআই-এফ১এন-জেডএনআই-ডব্লিউডি মডেলর ফ্রিজের দাম পড়ছে ১ লাখ ২২ হাজার ৯৯০ টাকা। এছাড়া এমএনআই-এফ১এন-জেডএনআই-ডিডি মডেলের ফ্রিজের দাম ১ লাখ ১৫ হাজার ৯৯০ টাকা। অন্যদিকে এমএনআই-ইজিসি-জিডিএনই-ডিডি মডেলের ফ্রিজ কেনা যাচ্ছে ৯৮ হাজার ৯৯০ টাকায়। মার্সেলের ফ্রিজে ১ বছরের রিপ্লেসমেন্টসহ কম্প্রেসরে ১২ বছরের গ্যারান্টি এবং ৫ বছরের ফ্রি বিক্রয়োত্তর সেবার সুবিধা পাচ্ছেন ক্রেতারা। এছাড়া রয়েছে আইএসও সনদপ্রাপ্ত দেশব্যাপী বিস্তৃত সর্ববৃহৎ সার্ভিস সেন্টার থেকে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা পাওয়ার নিশ্চয়তা।

ইসলামী ব্যাংকের নতুন আইটি অফিসারদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত
ইসলামী ব্যাংক ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ একাডেমি (আইবিটিআরএ) আয়োজিত নতুন যোগদানকৃত আইটি অফিসারদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম ১ জুন ২০২৫, রবিবার ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (চলতি দায়িত্ব) মোঃ ওমর ফারুক খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার। ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও আইবিটিআরএ-এর মহাপরিচালক কে.এম. মুনিরুল আলম আল-মামুন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ আমিনুর রহমান এবং সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ মিজানুর রহমান।

বিজিএমইএ নির্বাচনে ‘ফোরাম প্যানেলে’র নিরঙ্কুশ জয়
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফেক্সারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ফোরাম প্যানেল নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। শনিবার সারাদিন ভোট গ্রহণ শেষে রাত ১১টায় ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল। এ সময় নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের অপর দুই সদস্য সৈয়দ আফজাল হোসেন ও আশরাফ আহমেদ এবং প্রতিদ্বন্দ্বী বিজিএমইএ প্যানেল নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম দুই অঞ্চল মিলিয়ে এবার মোট ৩৫ পরিচালক পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। এর মধ্যে ঢাকা অঞ্চলে ২৬ পরিচালক এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৯ পরিচালকের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই দুই অঞ্চল মিলে ৩১টি পদে জয়ী হয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা জয় পেয়েছে ফোরাম প্যানেল। সম্মিলিত পরিষদ পেয়েছে ৪টি পদ। ঐক্য পরিষদ কোন জয় পাননি। এবারের নির্বাচনে তিন প্যানেলের ৭৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোটগ্রহণ হয় ঢাকার র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন ও চট্টগ্রামের র্যাডিসন ব্লু বে ভিউ হোটেলে। ভোটার ছিলেন ১ হাজার ৮৬৪ জন। ভোট প্রদানের হার ৮৭.৫ শতাংশ। ঢাকা অঞ্চলের ২৬টি পদের মধ্যে ২৫টি পদে জয় পান ফোরামের প্রার্থীরা। শুধু একটি পদে জয়ী হয়েছেন সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থী ফারুক হাসান। ফোরামের বিজয়ী প্রার্থীরা হলেন: মাহমুদ হাসান খান, শাহ রাঈদ চৌধুরী, মিজানুর রহমান, এম এ রহিম, ফয়সাল সামাদ, মোহাম্মদ আবদুস সালাম, কাজী মিজানুর রহমান, মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, ইনামুল হক খান, মো. হাসিব উদ্দিন, মোহাম্মদ সোহেল, শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ, ভিদিয়া অমৃত খান, জোয়াদ্দার মো. হোসনে কামার আলম, এ বি এম শামছুদ্দিন, নাফিস-উদ-দৌলা, সুমাইয়া ইসলাম, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, মজুমদার আরিফুর রহমান, ফাহিমা আক্তার, আসেফ কামাল পাশা, রশীদ আহমেদ হোসাইনী, রুমানা রশীদ, সামিহা আজিম ও রেজওয়ান সেলিম। চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৯টি পদের মধ্যে ৬টি জিতেছে ফোরাম এবং ৩টিতে জয়ী হয়েছে সম্মিলিত পরিষদ। ফোরামের বিজয়ী প্রার্থীরা হলেন: সেলিম রহমান, এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাকিফ আহমেদ সালাম, মো. শরীফ উল্লাহ, মোহাম্মদ রফিক চৌধুরী ও এনামুল আজিজ চৌধুরী। সম্মিলিত পরিষদের বিজয়ী তিন প্রার্থী হলেন: সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, এস এম তৈয়ব ও রাকিবুল আলম চৌধুরী। নির্বাচনে ঢাকা অঞ্চলে সর্বোচ্চ ১ হাজার ১৪৯ ভোট পেয়ে শীর্ষে রয়েছেন ফোরামের দলনেতা এবং রাইজিং ফ্যাশনসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাহমুদ হাসান খান। চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন সেলিম রহমান।

কেরোসিনের দাম লিটারে বাড়ল ১০ টাকা
কেরোসিন ছাড়া সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমিয়েছে সরকার। নতুন দর অনুযায়ী, প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ১০৪ থেকে কমিয়ে ১০২ টাকা, পেট্রলের দাম ৩ টাকা করে কমিয়ে ১১৮ টাকা এবং অকটেনের ১২২ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। ভেজাল রোধে কেরোসিন লিটারে ১০ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে। আগামীকাল রবিবার থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে। শনিবার (৩১ মে) রাতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এর আগে মে মাসের জন্য প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১০৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১০৪ টাকা, অকটেন ও পেট্রলের দাম ১ টাকা করে কমিয়ে যথাক্রমে ১২৫ টাকা এবং পেট্রল ১২১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তার আগে মার্চ ও এপ্রিল মাসে জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়। আর ফেব্রুয়ারিতে পেট্রল, অকটেন, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে বেড়েছিল ১ টাকা।

কমলো জ্বালানি তেলের দাম
দেশের বাজারে আরও এক দফা কমলো জ্বালানি তেলের দাম। এ দফায় ডিজেলের দাম ২ টাকা কমে ১০২ টাকা, অকটেনের দাম ৩ টাকা কমে ১২২ টাকা ও পেট্রোলের দাম ৩ টাকা কমে ১১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত মে মাসে প্রতি লিটারে এক টাকা করে কমানো হয়েছিল। শনিবার (৩১ মে) নতুন এ মূল্যের প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। যা আগামীকাল (১ জুন) থেকে কার্যকর হবে। এর আগে মে মাসে জ্বালানি তেলের দাম লিটারে এক টাকা করে (পেট্রল, অকটেন, ডিজেল ও কেরোসিনের) কমানো হয়। তার আগে মার্চ ও এপ্রিল মাসে জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়। আর ফেব্রুয়ারিতে পেট্রল, অকটেন, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে বেড়েছিল ১ টাকা। ২০২৪ সালের মার্চ থেকে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ শুরু করে সরকার। সে হিসেবে প্রতি মাসে নতুন দাম ঘোষণা করা হয়।

১০০ ব্যবসায়ী নিয়ে ঢাকায় এলেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও
চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের বিশাল প্রতিনিধিদল নিয়ে ঢাকা সফরে এসেছেন। শনিবার (৩১ মে) দুপুরে ঢাকায় পৌঁছান তিনি। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সরকারের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। সফরে তার সঙ্গে রয়েছেন প্রায় ১০০ জন ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী। মোট প্রতিনিধিদলের সদস্য সংখ্যা প্রায় ২০০ জন। সরকারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার বিকেলে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করবেন চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী। রোববার তিনি পাঁচটি সেশনে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে ম্যাচমেকিং বৈঠকে অংশ নেবেন। ওইদিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। আগামী ২ জুন অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ-চীন যৌথ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য কমিশনের বৈঠক। এতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং চীনের পক্ষে থাকবেন ওয়াং ওয়েনতাও। সফরসূচি অনুযায়ী, একই দিন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চীনা উদ্যোক্তাদের পৃথক ম্যাচমেকিং সভা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া চীনা প্রতিনিধিদলের একটি অংশ গাজীপুরের একটি তৈরি পোশাক কারখানা পরিদর্শনে যাবেন। সরকারের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চীনা বাণিজ্যমন্ত্রীর সফরের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশ-চীন যৌথ বাণিজ্য কমিশনের বৈঠকে অংশগ্রহণ। তার সঙ্গে আসা প্রায় ১০০ জন চীনা ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীর প্রতিনিধিদলের মোট সদস্য সংখ্যা ২০০ জনের মতো। আশা করা হচ্ছে, সফরকালে তারা বাংলাদেশে সম্ভাব্য কিছু বিনিয়োগের ঘোষণা দেবেন। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) সূত্র জানিয়েছে, সফরকালে দ্বিপাক্ষিক আমদানি-রপ্তানির বাধা দূরীকরণ এবং ব্যবসা-বাণিজ্য সহজীকরণের লক্ষ্যে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে। এ বিষয়ে চীন ইতোমধ্যে গত মার্চে একটি খসড়া প্রস্তাব বাংলাদেশ সরকারের কাছে পাঠিয়েছে।

আগামী বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে চলতি বাজেটের চেয়েও ছোট বাজেট দিতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছর সরকারি ব্যয় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা চলতি বাজেটের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম। আগামী বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের আওতায় কিছু কর্মসূচিতে ভাতার পরিমাণ ও উপকারভোগী বাড়ানোর পাশাপাশি কর্মসংস্থানে সুযোগ তৈরির উদ্যোগ থাকবে গ্রামীণ পর্যায়ে। এজন্য উজ্জীবিত করা হবে রাস্তাঘাট নির্মাণ, সংস্কারসহ গ্রামীণ অবকাঠামো খাতের কর্মযজ্ঞকে। জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে বাজেট উপস্থাপন করা হবে ভিন্ন আঙ্গিকে। সংসদ না থাকায় ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেট এবার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভিসহ অন্যান্য বেসরকারি গণমাধ্যমে একযোগে প্রচার করা হবে। আগামীকাল সোমবার বিকেল ৪টায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের বাজেট বক্তব্য সম্প্রচার করা হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। আগামী ২ জুন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জাতির উদ্দেশ্যে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করবেন। ওইদিন বিকেল ৪টায় ধারণকৃত বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত হবে। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে ‘ফিড’ নিয়ে অন্যান্য সব বেসরকারি টেলিভিশন ও বেতারে একই সময়ে জাতীয় বাজেট বক্তব্য প্রচারের অনুরোধ করা হয়েছে তথ্য বিবরণীতে। এর আগে সংসদের বাইরে বাজেট দেওয়া হয়েছিল ২০০৮ সালে। তখন ক্ষমতায় ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই বছরের ৯ জুন তখনকার অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম ২০০৮-০৯ অর্থবছরের জন্য ৯৯ হাজার ৯৬২ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছিলেন। সেদিনও ছিল সোমবার। বেলা ৩টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সম্প্রচার করা হয়েছিল মির্জ্জা আজিজুল ইসলামের বাজেট বক্তব্য। তারপর আওয়ামী লীগের চার মেয়াদে সাড়ে ১৫ বছরে আবুল মাল আবদুল মুহিত টানা ১০ বার, আ হ ম মুস্তফা কামাল পাঁচবার এবং আবুল হাসান মাহমুদ আলী একবার জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করেন। নির্বাচিত সরকারের আমলের এসব বাজেট জাতীয় সংসদেই উপস্থাপন করা হয়। পরে মাসজুড়ে সেই প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা হত সংসদে। জুন মাসের শেষ দিকে সংসদে পাস হত নতুন অর্থবছরের বাজেট। এবার সংসদ না থাকায় সংসদের আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না। তবে বাজেট ঘোষণার পর প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর নাগরিকদের নিকট মতামত চাইবে অর্থ মন্ত্রণালয়। মতামতের ভিত্তিতে তা চূড়ান্ত করা হবে। এরপর আগামী ২৩ জুনের পর যেকোনো একদিন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন নিয়ে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে তা আগামী এক জুলাই থেকে কার্যকর করা হবে। সবশেষ ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। জুলাইয়ে নতুন অর্থবছর শুরুর পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এবার বাজেটের আকার সামান্য ছোট হয়ে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা। স্বাধীনতার পর এই প্রথম বাজেটের আকার আগের অর্থবছরের তুলনায় কমছে।

ইসলামী ধারার ব্যাংক একীভূতকরণে এনবিএল থাকছে না: কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো একীভূতকরণের প্রক্রিয়ায় ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডকে (এনবিএল) অন্তর্ভুক্ত করার কোনও পরিকল্পনা নেই বলে স্পষ্ট করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শুক্রবার (৩০ মে) গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি কয়েকটি সংবাদপত্রে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের বক্তব্য উল্লেখ করে বলা হয়েছে—ছয়টি দুর্বল ব্যাংক একীভূত হয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসছে। তালিকায় ৫টি ইসলামী ব্যাংকের পাশাপাশি ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের (এনবিএল) নামও উল্লেখ করা হয়েছে, যা সঠিক নয়।’ আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘ন্যাশনাল ব্যাংক একটি প্রচলিত ধারার ব্যাংক। ইসলামী ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে এনবিএলকে সম্পৃক্ত করার কোনও সুযোগ নেই।’ এর আগে বলা হয়েছিল, নানা অনিয়ম ও ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে ছয়টি ব্যাংককে একীভূত করে অস্থায়ীভাবে সরকারি মালিকানায় নেওয়া হবে। সংবাদমাধ্যমগুলো যেসব ব্যাংকের নাম উল্লেখ করে সেগুলো হলো—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংক। তবে বিষয়টি খণ্ডন করে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, প্রাথমিকভাবে ইসলামী ধারার দুর্বল পাঁচটি ব্যাংকের একীভূতকরণ পরিকল্পনা রয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় এনবিএল অন্তর্ভুক্ত নয়। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে ২৮ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, ‘একীভূতকরণের আগেই সরকার সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর ওপর মালিকানা প্রতিষ্ঠা করবে। এতে আমানতকারীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই, বরং তারা একটি অধিকতর শক্তিশালী ব্যাংকের অংশ হয়ে যাবেন।’ কতগুলো ব্যাংক একীভূত হবে—এমন প্রশ্নে গভর্নর বলেন, ‘প্রথমে কয়েকটি ব্যাংক দিয়ে শুরু করবো। এরপর পর্যায়ক্রমে আরও কয়েকটি—এভাবে চলবে।’

এনবিআর চেয়ারম্যানকে রাজস্ব ভবনে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা
নিজ ক্যাডার ও নিজ দপ্তর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) অবাঞ্চিত হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান। এনবিআরের সংস্কার নিয়ে লুকোচুরি, সরকারের ঊর্ধতন মহলে তথ্য আড়াল ও কর্মকর্তাদের আশ্বস্থ করেও রাতের আধারে অধ্যাদেশ জারি নিয়ে চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনের কর্মবিরতির মধ্যে সরকার আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেয়। এর মধ্যে আন্দোলনকারীদের অন্যতম দাবি এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের জন্য আন্দোলনকারীর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণ না হওয়ায় অপসারণের আগ পর্যন্ত অবাঞ্চিত ঘোষণা করে ঐক্য পরিষদ। যদিও আন্দোলনের তীব্রতা শুরু হওয়া থেকে এনবিআরে অফিস করেন না এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান। ইতোমধ্যে তিনি তার পিএস দিয়ে এনবিআরে থাকা নথিপত্র সচিবালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে নিয়ে গেছেন। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে আসার পর থেকে আব্দুর রহমান খান সংস্কার ইস্যুতে শুরু থেকে কর্মকর্তাদের নানাভাবে আশ্বস্থ করে আসছিলেন। সংস্কারের খসড়া অধ্যাদেশ অনুমোদনের পর থেকে আন্দোলন জোরদার হতে থাকে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, নিজের চেয়ার ধরে রাখতে এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন। এছাড়াও আন্দোলন দমন করতে উর্ধতন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে জুনিয়র কর্মকর্তাদের উপর তার নির্দেশে চাপ তৈরি করা হয়েছে। সর্বশেষ তার এলাকার দুই সমন্বয়ক নিয়ে এসে আন্দোলন বির্তকিত করার অপচেষ্টা চালিয়ে গেছেন বলেও অভিযোগ কর্মকর্তাদের। তারা বলছেন, এনবিআরে যোগ দিয়েই আব্দুর রহমান খান নিজের বলয় তৈরির চেষ্টা করেন। আয়কর বিভাগ ও কাস্টম বিভাগে নিজের পছন্দের কর্মকর্তাদের পদায়ন করেন। বিশেষ করে শুল্ক-ভ্যাটে তার এসব পদায়ন ছিল চোখে পড়ার মতো। তার পছন্দের ও এলাকার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিতে দুই পদে চারজনকে পদোন্নতির ব্যবস্থা করেন। বিষয়টি এসএসবি থেকে পাশ করে নিয়ে আসেন। আর গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর সরে আসেন। তবুও এনবিআরে সদস্যদের আটটি পদের বিপরীতে বর্তমানেও নয়জন কর্মকর্তা কাজ করবেন। এছাড়া তার অঞ্চলের এক কর্মকর্তাকে ব্রাসেলসে মিনিস্টার (কাস্টম) পদে মনোনীত করেন। এছাড়া এনবিআর চেয়ারম্যানের বলয়ের কর্মকর্তাদের বিষয় এখন এনবিআরে ওপেন সিক্রেট। এসব কর্মকর্তাদের এনবিআরে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পদায়ন করা হচ্ছে। আর তাদের বিগত দিনে কর্মকান্ড দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে অনুসন্ধানও চলছে। এমনকি বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা পাওয়া কর্মকর্তারাও তার আস্থায় ছিলেন। এছাড়াও মদ আমদানিতে এনবিআর চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত পছন্দের একটি ব্যবসায়ীর নামে মামলা করার কারণে তিনি এসব কর্মকর্তার নামে অনুসন্ধানের জন্য কমিটিও গঠন করেন। এছাড়াও চট্রগ্রামে জুলাই হত্যা মামলার আসামী সাবেক আওয়ামী লীগ নেতার পণ্য চালানেও রয়েছে, তার অন্য ধরণের সহযোগিতা। এর আগে ওই ব্যবসায়ীর অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য এক ঊর্ধতন কর্মকর্তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করেন। আওয়ামীপন্থী ও সাবেক সরকারের প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের কৌশলে সুবিধা দিতে প্রজ্ঞাপন বাতিলের উদ্যোগও নিয়েছিলেন তিনি। যদিও গণ্যমাধ্যমকর্মীদের জানাজানির পর তিনি এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। নিজের আয়কর নথিও নিজের হেফাজতে নিয়ে গেছেন বলেও নিশ্চিত করেছেন এনবিআরের আয়কর বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা। এই আন্দোলন শুরুর পর তিনি তার কর ফাইল নিজ হেফাজতে নেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কালবেলার পক্ষ থেকে আব্দুর রহমান খানের সঙ্গে বার বার চেষ্টা করেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এদিকে সন্ধ্যায় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানের অপসরাণ না হওয়া পর্যন্ত অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, জারিকৃত অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুতির প্রক্রিয়ার শুরু থেকে প্রতিটি ধাপে এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যান লুকোচুরির আশ্রয় নিয়েছেন ও চরম অসহযোগিতা করেছেন এবং সরকারকে ভবিষ্যৎ রাজস্ব কাঠামো নিয়ে এনবিআরের কর্মকর্তাদের আশা ও আকাঙ্ক্ষার কথা জানানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সুবিধাভোগী প্রশাসনের এই কর্মকর্তা তার পূর্ববর্তী পদে থাকা অবস্থায় ব্যাংকিং খাতে বিশৃংখলা সৃষ্টিসহ জুলাই পরবর্তী সময়ে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে কর ফাঁকি বিষয়ে সহযোগিতা করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অডিট কার্যক্রম বন্ধ করেন। এছাড়াও, নজিরবিহীনভাবে অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে অযৌক্তিক এবং অপরিকল্পিতভাবে ভ্যাট হ্রাস-বৃদ্ধির মাধ্যমে তিনি দেশের অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা তৈরী করেন। তিনি বিভিন্ন উপায়ে সরকারের সঙ্গে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের গঠনমূলক ও সার্থক আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবিসমূহের বিষয়ে সরকারকে শুরু থেকেই বিভ্রান্ত করে সরকারের সাথে সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে দুরত্ব তৈরির অপচেষ্টা করে পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতিকে দীর্ঘায়িত ও জটিল করেছেন। তার অবস্থান অতি নেতিবাচক ও ষড়যন্ত্রমূলক না হলে এই সমস্যা অনেক আগেই সুরাহা হয়ে যেতো বলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ইতোপূর্বে ঘোষিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অপসারণের বিষয়ে সরকার চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত প্রদান করেনি। কিন্তু বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে বলে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি। সরকারের আন্তরিক হস্তক্ষেপে ইতোমধ্যে আমাদের ন্যায্য দাবীসমূহ আদায়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের যৌক্তিক এই দাবি বাস্তবায়নে প্রতি পদে পদে বাধা সৃষ্টিকারী, প্রসেস টেম্পারিং ও সবার অগোচরে রাষ্ট্রীয় রাজস্ব ব্যবস্হাপনার মূল কাঠামো ধ্বংসের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী এই চেয়ারম্যানের হাতে প্রকৃত সংস্কার কার্যক্রম হুমকির মুখে বিধায় আমরা আশা করছি সরকার অবিলম্বে এ বিষয়ে চূডান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হবে: ড. আনিসুজ্জামান
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, “সরকার পুঁজিবাজার এবং বিনিয়োগকারীদের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক। বিনিয়োগকারীদের মতামতগুলো নিয়ে সরকার কাজ করবে। পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সব সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। আগামী বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি'র মাল্টিপারপাস হলে বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে ড. আনিসুজ্জামান বলেন, “সবাইকে দেশ ও জাতির স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং কাজ করতে হবে। পুঁজিবাজারের সব বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি শীর্ষ সংগঠন বা ফোরাম গঠন করার অনুরোধ করছি। যাতে আগামীতে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সরকার ও বিএসইসির সংযোগের সুযোগ বৃদ্ধি পায় এবং সংযোগ আরো কার্যকরী হয়।” এবাই প্রথম পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর শীর্ষ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে সরকার। এতে বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষ প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় বিএসইসি'র চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, কমিশনার মো. আলী আকবর এবং বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী ও বিএসইসির শীর্ষ কর্মকর্তাগণ পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে পুঁজিবাজারের বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন। বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিবৃন্দ সভায় বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এ সময় দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নের পথে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও করণীয় বিষয় উঠে আসে। মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে পুঁজিবাজারে তারল্য সংকট নিরসনে নতুন ফান্ড আনয়ন ও সরকারের পুঁজিবাজার সহায়ক ভূমিকা গ্রহণ, অন্যান্য সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে উদ্যোগ গ্রহণ, ডিভিডেন্ড ট্যাক্স ও ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স মওকুফকরণ, পুজিবাজারে ক্যাটাগরি পরিবর্তনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় ও কোম্পানিগুলোকে আরো দায়বদ্ধ করা, পুঁজিবাজারে সব অনিয়ম-কারসাজির বিরুদ্ধে তদন্ত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল রেখে সংস্কার বাস্তবায়ন, পুঁজিবাজারের প্রতি সবার আস্থা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ, বাইব্যাক আইন বা শেয়ার পুনঃক্রয় আইন চালুর উদ্যোগ গ্রহণ, ইস্যুয়ার কোম্পানিগুলোর অনিয়মসমূহের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বিকাশ ও উন্নয়ন, পুঁজিবাজারে ভালো বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে এবং ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন সরকারি-বেসরকারি কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্তকরণে উদ্যোগ গ্রহণ, গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে সংস্কার সাধন, বিনিয়োগ বান্ধব নীতিমালা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, পুজিবাজারে অপ্রদর্শিত আয়ের অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান, ইস্যুয়ার কোম্পানিগুলোর আর্থিক বিবরণীর স্বচ্ছতা ও যথার্থতা নিশ্চিতকরণে অডিটরের দায়িত্ব নিরূপণ ও ব্যবস্থা গ্রহণ, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে প্রণোদনা প্রদান, আইসিবি'র বাজার সহায়ক ভূমিকা নিশ্চিতকরণ, পুঁজিবাজারের সকল স্তরে দক্ষতা-পেশাদারিত্ব নিশ্চিতকরণ, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের সংযোগ বৃদ্ধি, বিএসইসিতে পরামর্শ বক্স স্থাপন ও সময়ে সময়ে মতবিনিময় সভা আয়োজন ইত্যাদি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। সভায় ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং বিএসইসির চেয়ারম্যান-কমিশনারবৃন্দ বিনিয়োগকারী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের বিভিন্ন মতামত এবং প্রশ্নের জবাব দেন। বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের প্রস্তাবনাগুলো বিবেচনায় নিয়ে আগামীতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে সরকার ও বিএসইসির পক্ষ হতে আশ্বস্ত করা হয়। সভায় বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিবৃন্দ পুঁজিবাজারের উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিবৃন্দ তথা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে এ ধরণের সংযোগের ফলে আগামীতে সবার মিলিত প্রচেষ্টায় পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত হবে বলে বিএসইসি আশা করে।

পহেলা জুন থেকে মিলবে ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নতুন নোট
ঈদের আগে আগামী ১ জুন থেকে নতুন নোট বাজারে ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বাদ দিয়ে নতুন ডিজাইনের ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট ছাড়া হবে। প্রথম দিন বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে সীমিত পরিসরে নতুন নোট ছাড়া হবে। পরে ঢাকার কয়েকটি বাণিজ্যক ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে নোট ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে। প্রতিবছর ঈদের আগে নতুন নোট বাজারে ছাড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এবারে একে তো নতুন নোট, তার ওপর নতুন ডিজাইন, ফলে এ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। রমজানের ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর নতুন নোটের চাহিদা থাকে। তবে গত রমজানের ঈদে নতুন নোট বাজারে ছাড়েনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মূলত জুলাই বিপ্লবের পর টাকায় শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এরপর আগের ডিজাইনের টাকা বাজারে ছাড়ার কার্যক্রম স্থগিত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর কাছে যে নতুন নোট গচ্ছিত ছিল তাও বাজারে দিতে নিষেধ করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, ঈদের আগে শুধু ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট বাজারে আসছে। এছাড়া ৫, ১০, ১০০, ২০০ ও ৫০০ টাকার নতুন ডিজাইনের নোট ছাপা শুরু হবে ঈদের পর।

নতুন টাকার ছবি প্রকাশ করল বাংলাদেশ ব্যাংক, নকশায় যা থাকছে
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের যোগাযোগ ও প্রকাশনা বিভাগ (ডিসিপি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য'- শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের সকল মূল্যমানের (১০০০, ৫০০, ২০০, ১০০, ৫০, ২০, ১০, ৫ ও ২ টাকা) নতুন নোট মুদ্রণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোট আগামী ১ জুন থেকে প্রথমবারের মতো বাজারে প্রচলন করা হবে। নোটগুলো সেদিন প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে ও পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য অফিস থেকে ইস্যু করা হবে। এ সকল মূল্যমানের নতুন নোটের পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সকল কাগুজে নোট এবং ধাতব মুদ্রাও যথারীতি চালু থাকবে। এছাড়া মুদ্রা সংগ্রাহকদের চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা করে নিয়মিত নোটের পাশাপাশি ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমান নমুনা নোট (যা বিনিময়যোগ্য নয়) মুদ্রণ করা হয়েছে; যা টাকার বিনিময়ে মিরপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা জাদুঘর থেকে নির্ধারিত মূল্যে সংগ্রহ করা যাবে। ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য'- শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটের ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য হলো- ১০০০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটের ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত ১০০০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬০ মিমি x ৭০ মিমি। নোটটি ১০০ শতাংশ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ’, ‘1000’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে বেগুনি রঙের আধিক্য রয়েছে।নোটের সম্মুখভাগে বামপাশে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, সাভার এর ছবি ও মাঝখানে ‘প্রতিশ্রুত বাক্য’ (Guarantee clause) ও মূল্যমান (এক হাজার টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের উপরে বামদিকে নোটের মূল্যমান ‘১০০০', ডানকোণে ‘1000' ও নিচে ডানকোণে '৳১০০০' মুদ্রিত রয়েছে। নোটের পেছনভাগের ডিজাইন হিসেবে জাতীয় সংসদ ভবন, ঢাকা এর ছবি মুদ্রিত রয়েছে। নোটের উপরে বামকোণে মূল্যমান ‘১০০০' ও ডানকোণে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম এবং নিচে ডানকোণ এবং বামকোণে মূল্যমান ‘1000' মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ডানপাশে উলম্বভাবে 1000' মুদ্রিত রয়েছে। নোটটিতে মোট ১৩ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে ৫ মিমি চওড়া নিরাপত্তা সুতা সংযোজন করা হয়েছে যাতে 'বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম' এবং '১০০০ টাকা খচিত রয়েছে। নোটটি নাড়াচাড়া (Tilt) করলে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম অংশের নিরাপত্তা সুতার রং লাল হতে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয় এবং ‘১০০০ টাকা' অংশে একটি উজ্জ্বল রংধনু বার (Bar) উপর থেকে নিচে ওঠানামা করে। এছাড়া নোটের ডানদিকে কোণায় মুদ্রিত মূল্যমান ‘1000’ রং পরিবর্তনশীল উন্নতমানের নিরাপত্তা কালি (OVMI) দ্বারা মুদ্রিত; যাতে নোটটি নাড়াচাড়া করলে এর রং ম্যাজেন্টা থেকে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয় এবং মূল্যমানের ভেতরে কোনাকুনিভাবে মুদ্রিত ‘১০০০' লেখাটি দৃশ্যমান হয়। পাশাপাশি, নোটের সম্মুখভাগের পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা UV fluorescence (Magenta) ink দ্বারা মুদ্রিত যা UV detector মেশিন দ্বারা দৃষ্টিগোচর হয়। নোটটিতে গভর্নর স্বাক্ষরের ডানপাশে See Through image হিসেবে একটি প্যাটার্ন মুদ্রিত রয়েছে; যা আলোর বিপরীতে ধরলে ‘১০০০' লেখা দৃশ্যমান হবে। এছাড়া, নোটের সম্মুখভাগের বামদিকে ‘BANGLADESH BANK' লেখার নিচে Microprint হিসেবে উলম্বভাবে ‘BANGLADESH BANK' মুদ্রিত রয়েছে। পাশাপাশি নোটের পেছনভাগে বামদিকের উপরে ‘১০০০' এবং নিচে ‘1000' লেখার ব্যাকগ্রাউন্ডে 'BANGLADESH BANK এবং এর নিচে 'ONE THOUSAND TAKA' পুনঃপুন মুদ্রিত রয়েছে; যা শুধু Magnifying Glass দ্বারা দেখা যাবে। ব্যাংক নোটটিতে অন্যান্য নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য হিসেবে অসমতল ছাপা (সম্মুখভাগে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ছবি, 'বাংলাদেশ ব্যাংক' লেখা, গ্যারান্টি ক্লজ, বাংলা ও ইংরেজি মূল্যমান, আড়াআড়িভাবে ৬টি সমান্তরাল লাইন, পেছনভাগে জাতীয় সংসদ ভবন এর ছবি, “BANGLADESH BANK', 'ONE THOUSAND TAKA' লেখা ইত্যাদি ইন্টাগ্লিও কালিতে মুদ্রিত), লুকানো ছাপা (সম্মুখভাগের নিচে মূল্যমান 1000), Iridescent Stripe (পেছনভাগে উলম্বভাবে হালকা সোনালী রংয়ে ‘BANGLADESH BANK' লেখা) দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সুবিধার্থে ৬টি বৃত্ত রয়েছে। ৫০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটের ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত ৫০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩০ মিমি x ৬০ মিমি। নোটটি ১০০ শতাংশ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ, ‘50' এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম রয়েছে। নোটটিতে গাঢ় বাদামী রঙের আধিক্য রয়েছে। ব্যাংক নোটটির সম্মুখভাগের বামপাশে আহসান মঞ্জিল, ঢাকা এর ছবি এবং মাঝখানে 'প্রতিশ্রুত বাক্য' (Guarantee clause) ও মূল্যমান (পঞ্চাশ টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা'র ছবি মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের উপরে বামদিকে মূল্যমান ‘৫০’, ডানকোণে ‘50’ও নিচে ডানকোণে ‘৳৫০' মুদ্রিত রয়েছে। নোটের পেছনভাগে জলছাপ এলাকার ডানপাশে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন এর বিখ্যাত চিত্রকর্ম 'সংগ্রাম' মুদ্রিত রয়েছে। নোটের উপরে বামকোণে মূল্যমান ‘৫০’ ও ডানকোণে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম এবং নিচে ডানকোণ এবং বামকোণে মূল্যমান ‘50' মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ডানপাশে উলম্বভাবে ‘50' মুদ্রিত রয়েছে। নোটটিতে মোট ৮ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে ২ মি.মি. চওড়া নিরাপত্তা সুতা সংযোজন করা হয়েছে যাতে ‘৫০ পঞ্চাশ টাকা' খচিত রয়েছে। নোটটি নাড়াচাড়া (Tilt) করলে নিরাপত্তা সুতার রং লাল হতে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয়। নোটটিতে গভর্নর স্বাক্ষরের ডানপাশে See Through image হিসেবে একটি প্যাটার্ন মুদ্রিত রয়েছে; যা আলোর বিপরীতে ধরলে ‘৫০’ লেখা দৃশ্যমান হবে। এছাড়া নোটের সম্মুখভাগে আহসান মঞ্জিল, ঢাকা-লেখাটির উভয়পাশে Microprint হিসেবে ‘BANGLADESH BANK এবং পেছনভাগের বামদিকের উপরে ‘৫০' ও নিচে ‘50' লেখার ব্যাকগ্রাউন্ডে Microprint হিসেবে যথাক্রমে ‘50 TAKA' এবং 'BANGLADESH BANK' মুদ্রিত রয়েছে। ব্যাংক নোটটিতে অন্যান্য নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য হিসেবে অসমতল ছাপা (সম্মুখভাগের আহসান মঞ্জিল এর ছবি, 'বাংলাদেশ ব্যাংক, গ্যারান্টি ক্লজ, বাংলা ও ইংরেজিতে মূল্যমান, আড়াআড়িভাবে ৬টি সমান্তরাল লাইন ইত্যাদি ইন্টাগ্লিও কালিতে মুদ্রিত), লুকানো ছাপা (সম্মুখভাগের নিচে মূল্যমান 50), দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সুবিধার্থে ২টি বৃত্ত রয়েছে। ২০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটের ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত ২০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৭ মিমি x ৬০ মিমি। নোটটি ১০০ শতাংশ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে 'রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ', '20' এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম' রয়েছে। নোটটিতে সবুজ রঙের আধিক্য রয়েছে। ব্যাংক নোটটির সম্মুখভাগের বামপাশে ঐতিহাসিক স্থাপনা কান্তজিউ মন্দির, দিনাজপুর এর ছবি এবং নোটের মাঝখানে ‘প্রতিশ্রুত বাক্য (Guarantee clause) ও মূল্যমান (বিশ টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা'র ছবি মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের উপরে বামদিকে মূল্যমান ‘২০’,ডানকোণে ‘20’ ও নিচে ডানকোণে ‘৳২০' মুদ্রিত রয়েছে। নোটের পেছন ভাগে জলছাপ এলাকার ডানপাশে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, নওগাঁ এর ছবি মুদ্রিত রয়েছে। নোটের উপরে বামকোণে মূল্যমান ‘২০’ ও ডানকোণে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম' এবং নিচে ডানকোণে মূল্যমান '20' মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ডানপাশে উলম্বভাবে ‘20' মুদ্রিত রয়েছে। নোটটিতে মোট ৫ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে ২ মি.মি. চওড়া নিরাপত্তা সুতা সংযোজন করা হয়েছে যাতে ‘৳২০ বিশ টাকা' খচিত রয়েছে। নোটটি নাড়াচাড়া (Tilt) করলে নিরাপত্তা সুতার রং লাল হতে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয়। নোটটিতে গভর্নর স্বাক্ষরের ডানপাশে See Through image হিসেবে একটি প্যাটার্ন মুদ্রিত রয়েছে; যা আলোর বিপরীতে ধরলে ‘২০’ লেখা দৃশ্যমান হবে। এছাড়া, নোটের সম্মুখভাগের ডানদিকে এবং পেছন ভাগের বামদিকের গ্লিউইশ প্যাটার্নের ভিতরের অংশে Microprint হিসেবে উলম্বভাবে ‘BANGLADESH BANK' মুদ্রিত রয়েছে।

চাচার সহযোগিতায় ভুয়া পরিচয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি
চাচার সহযোগিতায় জালিয়াতি করে নিয়োগ পরীক্ষা ছাড়াই বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রথম শ্রেণির চাকরি পেয়েছেন মো. আব্দুল ওয়ারেছ। তিনি প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা (সহকারী পরিচালক) হিসেবে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ দেন। এরই মধ্যে দুটি পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন যুগ্ম-পরিচালক, তবে শেষ রক্ষা হয়নি। একটি মামলায় পুলিশি তদন্তে ধরা পড়ার পর বুধবার (২৮ মে) তার নিয়োগ বাতিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর তার চাচা বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক শাহজাহান মিঞাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। জানা গেছে, প্রকৃতপক্ষে মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী নামের এক ব্যক্তি আসলেই ২০১৩ সালের বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক হিসেবে চাকরি পান। একই সময়ে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি হয় তার। আসল আনসারী বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদান না করে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেন। তিনি এখন নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) হিসেবে কর্মরত। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়। মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী হিসেবে এতদিন যিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করে আসছেন তার জাতীয় পরিচয়পত্রে ঠিকানা উল্লেখ আছে গাজীপুর। যদিও তার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। জালিয়াতি করে এই জাতীয় পরিচয়পত্রও পরে বানিয়েছেন। তার প্রকৃত নাম মো. শাহজালাল বলে জানা গেছে। প্রকৃত আব্দুল ওয়ারেছ গণমাধ্যমকে বলেন, তার আপন বোনজামাই বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে চাকরি করেন। কোনো একটি কাজে সম্প্রতি রাজশাহী অফিসে যান। সেখানে একই নামের নেমপ্লেট দেখে ছবি তুলে তার হোয়াটসঅ্যাপে দেন। তার এই ব্যতিক্রম নামের সঙ্গে হুবহু মিলে যাওয়ায় খুনসুটি করে বলেছিলেন, এতদিন পৃথিবীতে মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী নামে একজন ছিল। এখন আরেকজনকে পাওয়া গেল।তিনি জানান, বুধবার পরিচিত কয়েকজন দুপুরের পর নকল আব্দুল ওয়ারেছ আনসারীর নিয়োগ বাতিলের খবর জানান। জানা গেছে, কোনো একটি মামলার তদন্তের জন্য আব্দুল ওয়ারেছ আনসারীর বিষয়ে খোঁজখবর করছিল পুলিশ। তদন্তে গিয়ে বিভিন্ন অসংগতি উঠে আসে। বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংকে দেয়া তথ্য এবং জাতীয় পরিচয়পত্রে উল্লিখিত তথ্যে কোনো মিল নেই। সোমবার পুলিশ বাংলাদেশ ব্যাংকে এই তথ্য দেয়। প্রাথমিক যাচাইয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথ্য পায় জালিয়াতির মাধ্যমে ছবি টেম্পারিং করে তাকে এই পদে চাকরি দেয়া হয়েছে। যখন এই নিয়োগ হয়েছে, ওই সময় নিয়োগ শাখায় কর্মরত ছিলেন আপন চাচা শাহজাহান মিঞা। ফলে দেরি না করে আব্দুল ওয়ারেছ আনসারীর নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। আর শাহজাহান মিঞাকে সাময়িক বরখাস্ত করে তার বিষয়ে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তের ভিত্তিতে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এ কাজে সহায়তাকারী হিসেবে অভিযুক্ত মো. শাহজাহান মিঞার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দেশে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা
ঢাকাসহ সারা দেশের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। বুধবার (২৮ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি। এতে বলা হয়, সহ-সভাপতি মো. রিপনুল হাসানকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) থেকে ঢাকাসহ সারা দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে বাজুসের সহ-সভাপতি মো. রিপনুল হাসানকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেফতারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাজুসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গুলজার আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায়সহ কেন্দ্রীয় নেতারা। প্রসঙ্গত, আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় রাজধানীর তাঁতীবাজার নিজ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেফতার করা হয় বাজুসের সহসভাপতি মো. রিপনুল হাসানকে।