
যমুনা সেতু দিয়ে এক দিনে পারাপার ৩৮ হাজার যান, টোল আদায় ২.৮ কোটি টাকা
ঈদুল আজহার ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন মানুষ। ফলে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়তে শুরু করেছে। যমুনা সেতু হয়ে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গগামী যানবাহন চলাচলে তৈরি হয়েছে বাড়তি ভিড়। এরই প্রেক্ষাপটে গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত) যমুনা সেতু দিয়ে ৩৮ হাজার ৫৩৯টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এ সময় টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৬৯ হাজার ২০০ টাকা। শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, উত্তরবঙ্গগামী লেনে (সেতুর পূর্ব প্রান্ত) ১৬ হাজার ৩৮০টি যানবাহন পারাপার হয়েছে, যাতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ২৯ লাখ ২৪ হাজার ২৫০ টাকা। অন্যদিকে, ঢাকাগামী লেনে (সেতুর পশ্চিম প্রান্ত) পারাপার হয়েছে ২২ হাজার ১৫৯টি যানবাহন, যার টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ৯৫০ টাকা। সেতু কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, এ সময় প্রতি মিনিটে গড়ে ২৬টি যানবাহন সেতু দিয়ে পারাপার হয়েছে।

স্বর্ণ এখনই কিনবেন, নাকি আরও কমবে? জেনে নিন বাজারের হালচাল
বিশ্ববাজারে টানা অস্থিরতার পর স্বর্ণের দামে দেখা গেছে সাময়িক স্বস্তি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম বর্তমানে প্রতি গ্রাম ৩৬৯ দিরহামে নেমে এসেছে। কিছুদিন আগেও এই দাম ছিল ৩৭৪ থেকে ৩৭৬ দিরহাম, যা থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, বাজারে একটি মৃদু কমতির ধারা শুরু হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক উন্নতি ডলারের মান বাড়িয়ে দিয়েছে। আর ইতিহাস বলছে, ডলারের দাম বাড়লে স্বর্ণের দর কিছুটা কমে যায়। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩,৩১০ ডলার, যেখানে কিছুদিন আগে তা ছিল ৩,৩৭২ ডলার। বিশ্লেষকদের মতে, স্বর্ণের দাম এখন ৩,২০০ থেকে ৩,৩০০ ডলারের মধ্যে থাকলে তা স্বাভাবিক ধারা বলেই ধরা হচ্ছে। দুবাইয়ের বাজারে এর মানে প্রতি গ্রাম ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ৩৬৯ দিরহামের আশপাশে ঘোরাফেরা করা। বাজার বিশ্লেষকদের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, স্বর্ণের দাম সাময়িক স্থির থাকতে পারে। তবে ভবিষ্যতে মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনাই বেশি। এমনকি প্রতি আউন্স ৩,৫০০ ডলার (প্রায় প্রতি গ্রাম ৩৯০ দিরহাম) পর্যন্তও উঠতে পারে। অন্যদিকে, বড় পতন হলেও তা ৩,০০০ ডলার (প্রতি গ্রাম ৩৫৫ দিরহাম)-এর নিচে নামার সম্ভাবনা কম। গত দুই বছরে স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ১২৫ শতাংশ। কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ব্যাপক স্বর্ণ ক্রয় এবং বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ সম্পদ হিসেবে স্বর্ণে ঝোঁক। বিশ্বের শীর্ষ ব্যাংকগুলোর মতে, ২০২৫ সালে গড় দাম হতে পারে ৩,০৬৩ ডলার প্রতি আউন্স। ২০২৬ সালে তা বেড়ে ৩,৩৫০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল এবং অনেকের দৃষ্টিতে এটি একটি "ভালো সুযোগ"। স্বল্পমেয়াদে দামের ওঠানামা থাকলেও, দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণের দাম বাড়ার প্রবণতাই বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। তাই যারা নিরাপদ বিনিয়োগ খুঁজছেন কিংবা ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে চান, তাদের জন্য এখনকার দাম বেশ উপযুক্ত হতে পারে। তবে বাজার বিশ্লেষণ করে সচেতন সিদ্ধান্ত নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। বর্তমান দামে স্বর্ণ কেনা কিছুটা লাভজনক হতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনি দীর্ঘমেয়াদে এটি ধরে রাখতে চান। তবে বাজারে চূড়ান্ত ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। সুতরাং বিনিয়োগের আগে নিজের আর্থিক লক্ষ্য ও বাজারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা জরুরি।

বাংলাদেশে গতিহারা শেয়ারবাজারে দিশেহারা বিনিয়োগকারী
দেশের শেয়ারবাজারে জালিয়াতি, কারসাজি, দুর্নীতি ও দরপতনে পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা বিনিয়োগকারীরা। শুধু সাম্প্রতিক সময়ে নয়, গত ১৫ বছর ধরে চলতে থাকা এসব অনিয়মের প্রভাবে গতি হারিয়েছে শেয়ারবাজার। সরকারের অর্থ উপদেষ্টা বলছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে এ খাতে পুনরায় গতি ফিরে আসবে। যদিও সংকটে থাকা বিনিয়োগকারীরা সরকারের আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারছে না। তবে বাজারসংশ্লিষ্ট ও বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে পুঁজিবাজার বিষয়ে যেসব প্রস্তাবনা এসেছে এবং পুঁজিবাজার সংস্কারে সরকারের উদ্যোগগুলো সঠিক বাস্তবায়ন ও তদারকি থাকলে ক্ষত সেরে পর্যায়ক্রমে চাঙ্গা হয়ে উঠবে শেয়ারবাজার। জানা গেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটিজ লেনদেনের ওপর উৎসে করের হার শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে; তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করের পার্থক্য আড়াই শতাংশ বৃদ্ধি করে সাড়ে ৭ শতাংশের প্রস্তাব করা হয়েছে এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের জন্য করপোরেট করের হার ১০ শতাংশ কমিয়ে ২৭ দশমিক ৫০ শতাংশের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেটে পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট এসব সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জ, ব্রোকারেজ হাউজ মালিক, মার্চেন্ট ব্যাংক ও বাজার বিশ্লেষকরা। বাজেট এ ছাড়া বাংলাদেশ সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর বিনিয়োগকারীদের বিও অ্যাকাউন্টের ওপর ধার্য করা বার্ষিক ব্যবস্থাপনা খরচ ৪৫০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৫০ টাকা করেছে এবং সিসি অ্যাকাউটে অর্জিত সুদের ২৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ব্যয়ের জন্য ইনভেস্টর্স প্রটেকশন ফান্ডে জমার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। অন্যদিকে ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে অর্জিত ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত মূলধনী আয় সম্পূর্ণ করমুক্ত বিধান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ৫০ লাখ টাকার ওপরে মূলধনী আয়ের ওপর কর ১৫ শতাংশ হ্রাস করেছে। পুঁজিবাজার বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম এক বিবৃতিতে বলেছেন, ২০২৫-২৬ সালের বাজেটে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে করহারের ব্যবধান বৃদ্ধি, মার্চেন্ট ব্যাংকের করহার হ্রাস এবং লেনদেনের ওপর উৎসে কর হ্রাস ইত্যাদি পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম বলেছেন, বাজেটে পুঁজিবাজার সংক্রান্ত এই প্রস্তাবের বাস্তবায়ন বাজারের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বড় ভূমিকা রাখবে এবং এর ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী, ইস্যুয়ার কোম্পানি, স্টক ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকসহ পুঁজিবাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজন ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হবে। পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেছেন, বাজেটে যেসব বিষয় এসেছে, শেয়ারবাজারের জন্য তা ইতিবাচক বার্তা। পাশাপাশি দেশি-বিদেশি এবং স্থানীয় বড় কোম্পানির সঙ্গে সরকারি কোম্পানিকে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ ধরনের উদ্যোগ এর আগে নেওয়া হলেও এবারের বিষয় একটু ভিন্ন। এজন্য একজন অভিজ্ঞ লোককে বিশেষভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সেখানেও সফলতা আসবে। এ ছাড়া জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক জুলাই-সেপ্টেম্বরের সুদহার কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছে। এসব বিষয় শেয়ারবাজার চাঙ্গা হওয়ার জন্য ইঙ্গিত বহন করছে। ফলে পর্যায়ক্রমে শেয়ারবাজার ভালো করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে সুদহারের বিষয়টি সমাধান না হলে বিনিয়োগ সম্ভাবনায় অনিশ্চয়তা থেকে যাবে বলে জানিয়েছেন অনেকে। তাদের মতে, শেয়ারবাজারের ৯০ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারী। তারা ব্যাংকে নিশ্চিত লাভ রেখে লোকসানের জন্য শেয়ারবাজারে আসবে না। আবার ব্যাংকের উচ্চ সুদের কারণে উদ্যোক্তারা নতুন নিয়োগের চিন্তা করবে না। ফলে শেয়ারবাজার ও বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। এদিকে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে নেমে আসবে বলে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। মূল্যস্ফীতি কমলে সুদের হারও কমানো হবে বলেও জানান তিনি। বর্তমানে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১৪ শতাংশ থেকে সাড়ে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১১ শতাংশ থেকে কমে ৯ শতাংশের কিছু বেশি হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি এই নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ডিবিএর এক অনুষ্ঠানে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘অতীতে বাংলাদেশের কোনো সরকারই শেয়ারবাজারকে অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে ধারণ (আইডিবি) করেনি। এ কারণে শেয়ারবাজার সব সরকারের আমলে কমবেশি অবহেলিত ছিল। আর আওয়ামী লীগ সরকার শেয়ারবাজারকে রাজনৈতিকভাবে শোষণ করেছে। আগামী দিনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বিএনপি সরকার গঠন করলে আমরা শেয়ারবাজারকে “আইডিবি” করব। এটিকে অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তির অবস্থানে নিয়ে আসা হবে।’ জানা গেছে, পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট চিহ্নিত করতে সম্প্রতি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। সভায় বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে পুঁজিবাজারে তারল্য সংকট নিরসনে নতুন ফান্ড আনয়ন ও সরকারকে পুঁজিবাজার সহায়ক ভূমিকা রাখতে অন্যান্য সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলেছেন। পাশাপাশি লভ্যাংশ কর ও ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স মওকুফকরণ, পুঁজিবাজারে ক্যাটাগরি পরিবর্তনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত না করা এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে আরও দায়বদ্ধ করা, পুঁজিবাজারে সব অনিয়ম-কারসাজির বিরুদ্ধে তদন্ত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, ‘বাইব্যাক আইন’ বা শেয়ার পুনঃক্রয় আইন চালুর উদ্যোগ গ্রহণ, ইস্যুয়ার কোম্পানির অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বিকাশ ও উন্নয়ন, পুঁজিবাজারে ভালো বহুজাতিক কোম্পানি এবং ভালো মৌলভিত্তিসম্পন্ন সরকারি-বেসরকারি কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্তকরণে উদ্যোগের বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে সংস্কার, বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, ইস্যুয়ার কোম্পানির আর্থিক বিবরণীর স্বচ্ছতা ও যথার্থতা নিশ্চিতকরণে ব্যবস্থা গ্রহণ, আইসিবির বাজার সহায়ক ভূমিকা নিশ্চিতকরণ, পুঁজিবাজারের সব স্তরে দক্ষতা-পেশাদারিত্ব নিশ্চিতকরণ, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের সংযোগ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেন। পুঁজিবাজার-সংক্রান্ত সরকারের মনোভাব তুলে ধরে বাজেট বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি এবং পুঁজিবাজারে আন্তর্জাতিক মানের সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স এবং পুঁজিবাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ‘পুঁজিবাজার সংস্কার ফোকাস গ্রুপ’ গঠন করা হয়েছে। টাস্কফোর্স ইতিমধ্যে সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচ্যুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১ এবং আইপিও-সংক্রান্ত বিধির বিষয়ে খসড়া সুপারিশমালা ও মার্জিন রুলস-সংক্রান্ত চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দিয়েছে। তিনি বলেন, বিগত সরকারের অনিয়ম, কারসাজি ও দুর্নীতির ফলে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে পুনরায় গতি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোতে সরকারের শেয়ার কমিয়ে পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্তকরণ, বেসরকারি খাতের দেশীয় বড় কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য উৎসাহ প্রদান, বাজারে কারসাজি রুখতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, অনিয়মের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা এবং ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরতা কমাতে পুঁজিবাজার থেকে বন্ড ও ইক্যুইটির মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের সুযোগ বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ছাড়া কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা এবং পুঁজিবাজারের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি ও বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় ব্লকচেইনভিত্তিক ব্যাক অফিস সফটওয়্যার বাস্তবায়নের কাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি সংস্কার-সংক্রান্ত সুপারিশ বাস্তবায়ন এবং পুঁজিবাজারের অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে বিনিয়োগের এ গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে পুনরায় গতি ফিরবে।

অর্থপাচারে অভিযুক্তদের সঙ্গে ‘সমঝোতার’ ইঙ্গিত গভর্নরের
বিদেশে অর্থপাচারে অভিযুক্তদের সঙ্গে ‘সমঝোতার’ ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, বিদেশে অর্থপাচারের যেসব মামলা রয়েছে সেগুলোর মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর মামলাগুলোর ক্ষেত্রে আর্থিক সমঝোতা ‘অন্যতম বিকল্প’ হতে পারে। চলতি সপ্তাহে যুক্তরাজ্য সফরের আগে ঢাকায় দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কথিত কার্যকলাপের প্রকৃতির ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ নির্ভর করবে। যদি আইন লঙ্ঘনের প্রকৃতি তুলনামূলকভাবে হালকা ধরনের হয়...তবে আমরা দেওয়ানি মামলা করব। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আর্থিক সমঝোতার কথা বিবেচনা করা হবে। তিনি জানান, তাঁর দল আন্তর্জাতিক মামলা পরিচালনায় অর্থ জোগানো প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। বাংলাদেশে এসে সম্পদ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্য তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বিনিময়ে মামলায় সফল হলে সমঝোতার ভিত্তিতে বা পুরস্কার হিসেবে কিংবা আগেই নির্ধারণ করা অর্থ গ্রহণ করে থাকে তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, ‘আমরা লিটিগেশন ফান্ডিংয়ের দিকে নজর দিচ্ছি। এ নিয়ে খুবই ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। আমরা চাই, যতটা সম্ভব অর্থ এ উৎস থেকে জোগাড় করা।’ এদিকে বুধবার লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টা জোরদার করেছে বাংলাদেশ। পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার একটি দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল প্রক্রিয়া। তাই এ কাজে গতি আনতেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রচেষ্টা আরও জোরদার করেছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে লন্ডন সফরে রয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। প্রেস সচিব আরও জানান, পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনার বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইমস এজেন্সির (এনসিএ) সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পাচারের অর্থ শনাক্ত, কীভাবে পাচার হয়েছে তা খুঁজে বের করা ও জব্দ করার বিষয়ে ‘এনসিএ’-এর ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ বিষয়ে সংস্থাটি ইতোমধ্যে দুটি পদক্ষেপও নিয়েছে। শফিকুল আলম বলেন, পাচারকৃত অর্থ কীভাবে ফেরত আনা যায় তা জানতে অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতাও যাচাই করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যেই একাধিক বৈঠক হচ্ছে। এর আগে ১১ মার্চ অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছিলেন, বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা সম্ভব। এ জন্য বিদেশের সঙ্গে চুক্তির চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি। সচিবালয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি। বিশাল অংকের টাকা। সব অংকের টাকা আনতে, তাদের আইডেন্টিফাই করতে, বিভিন্ন দেশে আছে, এখানে কতগুলো আইনী পদক্ষেপ আছে, আবার সে আইনের পদক্ষেপগুলো বিদেশের সঙ্গে জড়িত। আমরা চেষ্টা করছি ইমিডিয়েটলি যেটা পারি আনতে। অন্যগুলোও আনার চেষ্টা করছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, এটলিস্ট কিছুটা ইন্ডিকেশন আসুক। এ জন্য আইনের...। আইন মানে কিছু এগ্রিমেন্ট করা বিদেশের সঙ্গে, এগুলো করব। নেক্সট মাসে আর একটু বেটার জানতে পারবেন।’ আপনারা কয়েকশ কোটি ডলার ফেরত আনার চেষ্টা করছেন। এটা কী সম্ভব- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘হ্যাঁ এটা সম্ভব। অনেক সময় দেখা যায় ১১-১২ জন দিয়েছে, ২০০ কোটি টাকার ওপরে অনেকের আইডেন্টিফাই করা হয়েছে। সব মিলিয়ে হয়তো আমরা আনতে পারব।’

৩ বছরে মেয়েকে একটা জামা দিয়েছি শুধু: দুবাইয়ের ফ্ল্যাট বিতর্কে বললেন গভর্নর
দুবাইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের মেয়ে মেহরিন সারা মনসুরের যে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে, গভর্নর তা নিজেই স্বীকার করেছেন। তবে তার দাবি, তিনি গভর্নর হওয়ার আগেই মেয়ে ওই ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন। এর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। যুক্তরাজ্যে অবস্থনরত আহসান এইচ মনসুর বুধবার টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক, তার বয়স ৪০, বিবাহিত। স্বামীর ব্যবসার কারণে দুবাইতে থাকে। সে নিজেই এমন একটা ফ্ল্যাট কিনতে পারে। আমার মেয়ে আমেরিকার সিটিজেন। আর ও একজন (মেয়ে) অ্যাডাল্ট। তার আর্থিক বিষয়ে আমি কেন ইনভলভ হতে যাব?” ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন দুবাইয়ের ওই ফ্ল্যাটের খবর দিয়ে ফেইসবুকে অর্থ পাচারের আভিযোগ তোলার পর গভর্নরের এ প্রতিক্রিয়া এল। তিনি বলেন, “আমি গভর্নর পদে বসার অনেক আগেই আমার মেয়ে ২০২৩ সালে দুবাইতে ফ্ল্যাটটি ক্রয় করেছে। আমার গভর্নর পদে বসার সঙ্গে এই ফ্ল্যাট কেনার কোনো সম্পর্ক নেই।” আহসান মনসুর বলেন, ওই ফ্ল্যাটে আগে থেকেই থাকত তার মেয়ের পরিবার। মালিক ছিলেন একজন ভারতীয়। তিনি ফ্ল্যাটটি বিক্রির উদ্যোগ নিলে মেহরিন সেটি কিনে নেন। কেনাকাটার সকল কার্যক্রম ২০২৩ সালেই সম্পন্ন হয়। আর ২০২৪ সালে সেটি হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা সারা হয়। তার দাবি, ওই ফ্যাটের দামের ৮০ শতাংশ মর্টগেজ, বাকিটা মেহরিন নিজে দিয়েছেন। “তিন বছরে আমি আমার মেয়েকে একটা কাপড় দিয়েছি, আর কিছু দেইনি,” বলেন গভর্নর। ২০২৪ সালে ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুতের পর ব্যাংকিং খাতেও সংস্কার শুরু হয়। পরিবর্তনের ঢেউয়ে তৎকালীন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পদত্যাগ করেন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর ওই মাসেই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব নেন। আওয়ামী লীগের সময় পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া উদ্যোগেরও নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। তার মেয়ের ফ্ল্যাট নিয়ে আলোচনা শুরু হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সোমবার ছাত্রলীগ নেতা জাকিরের ফেইসবুক পোস্টটি শেয়ার করার পর। ওই পোস্টে বলা হয়, “জুলাই ষড়যন্ত্র বিপ্লবের পর হঠাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হয়ে যাওয়া আহসান এইচ মনসুর, তার আদরের মেয়ে মেহেরিন সারা মনসুরের নামে গত ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ সালে মাত্র ৪৫ কোটি টাকার ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছেন! “তথ্যমতে, দুবাইতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের মেয়ের নামে ১৩.৫ মিলিয়ন দিরহামের প্রোপার্টির (৪৫ কোটি) খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।” পোস্টটিতে আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হলেও এ বিষয়ে কোনো তথ্য-প্রমাণ দেখানো হয়নি। আহসান এইচ মনসুর গভর্নর পদে বসার পর ব্যাংকিং খাতের সংস্কারের উদ্যোগ নেন। প্রথমেই তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোতে ‘অবৈধভাবে’ তারল্য সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দেন। এরপর এসব সমস্যাজর্জরিত ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ দেন। তাতে ইসলামী ধারার বেশ কয়েকটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী এস আলমের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এসব ব্যাংকের ফরেনসিক অডিট রিপোর্টে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নানা রকম অনিয়মের তথ্য ইতোমধ্যে উঠে এসেছে।

বাণিজ্য উত্তেজনার প্রভাবে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমবে: বিশ্বব্যাংক
বিশ্বব্যাংক ২০২৫ সালের বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ পয়েন্ট কমিয়েছে। সংস্থাটির মতে, এ বছর বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৩ শতাংশ হবে। মঙ্গলবার (১০ জুন) সংস্থাটির ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপ্রেক্ট’ বা ‘বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্ভাবনা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ ও অনিশ্চয়তা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে প্রায় সব অর্থনীতির জন্যই একটি বড় ‘প্রতিবন্ধকতা’ তৈরি হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনটিতে তাদের মাত্র ৬ মাস আগের পূর্বাভাসের তুলনায় বিশ্বের প্রায় ৭০ শতাংশ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমবে বলে জানানো হয়েছে। সংস্থাটির পূর্বাভাসে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপ এবং উদীয়মান ৬টি অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমবে। সংস্থাটির মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে একের পর এক শুল্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছেন। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কার্যকর শুল্কহার ৩ শতাংশ থেকে বেড়ে দুই অঙ্কে উঠেছে, যা গত প্রায় এক শতাব্দীর মধ্যে সর্বোচ্চ। চীনসহ অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক বৃদ্ধির পাল্টা জবাব দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক ট্রাম্পের অনিয়মিত বাণিজ্যনীতির কারণে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে। যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করছেন, শুল্ক বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে এবং এখনো অনুমোদন না পাওয়া করছাড় নীতির মাধ্যমে পুষিয়ে নেওয়া যাবে। বিশ্বব্যাংক সরাসরি মন্দার পূর্বাভাস না দিলেও জানিয়েছে, চলতি ২০২৫ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে এমন এক দুর্বল অবস্থায় নামবে, যা ২০০৮ সালের পর মন্দা ব্যতিরেকে সবচেয়ে দুর্বল। আগামী ২০২৭ সাল নাগাদ বৈশ্বিক মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) গড় প্রবৃদ্ধি হবে মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশ, যা ১৯৬০-এর দশকের থেকে কোনো একক দশকে সবচেয়ে ধীরগতির প্রবৃদ্ধি।

নতুন নোট নিচ্ছে না এটিএম বুথ
চলতি মাস থেকেই বাজারে এসেছে নতুন নোট। যেসব নোটে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক, প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতীকগুলোকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। দেশের মানুষও খুব আগ্রহের সঙ্গে সেসব টাকা সংগ্রহের চেষ্টা করেছেন। এমনি অনেকের আগ্রহ এত বেশি ছিল, খোলা বাজার থেকে বেশি দাম দিয়ে হলেও সংগ্রহ করেছেন নতুন নোটগুলো। তবে এগুলো ব্যবহার করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় শিকার হতে হচ্ছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। যা নিয়ে বেশ আলোচনা তৈরি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে একটি ভিডিওতে দেখা যায় এক হাজার টাকা নোট হাতে এক ব্যক্তি বলছেন কোনো দোকানদার নতুন টাকা নিচ্ছেন না। অনেক দোকানে ঘুরেও কাউকে বিশ্বাস করাতে পারেননি এটা নতুন টাকা। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, এটিএম বুথে টাকা জমা দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও মেশিনটি টাকা নিচ্ছে না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মুদ্রিত টাকা কেনো বুথগুলো গ্রহণ করছে না সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। পাশাপাশি ভিডিওর বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানতে পারেনি কালবেলা। এর আগে, বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি বছরের ঈদ উপলক্ষে বাজারে আনে প্রায় ২০০ কোটি টাকার নতুন নোট। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নির্ধারিত ব্যাংকগুলোতে নতুন নোট সরবরাহ শুরু হয়েছে।
.jpeg)
ফ্রিতেও নিচ্ছে না ছাগলের চামড়া, ফুটপাতে ফেলে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা
রাজধানী ও আশপাশের এলাকার কোরবানির পশুর চামড়ার একটা বড় অংশ কেনাবেচা হয় আমিনবাজারে। তবে এবার আমিনবাজারে কোরবানির পশুর চামড়ার সরবারহ কম। এখানে বড় আকারের গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকায়। তবে ছাগল ও ভেড়ার চামড়ার চাহিদা নেই বললেই চলে। রোববার (৮ জুন) দুপুর পর্যন্ত আমিনবাজারে কোনো আড়তদারকে ছাগল ও ভেড়ার চামড়া কিনতে দেখা যায়নি। ফলে বাধ্য হয়েই বাজার সংলগ্ন সড়ক ও ফুটপাতে এসব চামড়া ফেলে যাচ্ছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। এদিন দুপুর ১২টার দিকে মাত্র একজন ক্রেতাকে গরুর চামড়া কিনতে দেখা গেছে। এছাড়া এসময় ছুরি, চাকু হাতে কয়েকজনকে চামড়ার গায়ে লেগে থাকা মাংস ও হাড় কাটতে দেখা যায়। কথা হয় শহিদুল হক নামের এক আড়তদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, আজ চামড়া আসছে কম। এক পিস, ২ পিস এমন করে। সকাল থেকে মাত্র ২০ পিস চামড়া কিনেছি। দাম গতকালের মতোই ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা। গতকাল ঈদের দিন ৬০০ পিসের বেশি চামড়া সংগ্রহ করেছি। ছাগলের চামড়ার ভালো দাম ট্যানারি দিতে চায় না বলে এই চামড়া কেউ কিনছেন না বলেও জানান তিনি। আমিনবাজারে বিক্রি করতে ৬ পিস ছাগলের চামড়া এনে বিপাকে পড়েছেন মাকসুদ আলম। তিনি বলেন, এখন কী করবো বুঝছি না। ছাগলের চামড়া কেউ নিচ্ছে না। ছাগলের চামড়ার দাম নেই। এতদূর থেকে ছাগলের চামড়া এনে বিপদে পড়েছি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহাদাত উল্লাহ বলেন, ২০১৭ সালে হাজারীবাগ থেকে যখন ট্যানারিগুলো সাভারে স্থানান্তর হয়, তখন ছাগলের চামড়া নিয়ে যারা কাজ করে তারা স্থানান্তর হতে পারেননি। এমন অসংখ্য ট্যানারি সাভারে যেতে পারেনি। এখন যে ট্যানারিগুলো আছে সেগুলোর ছাগলের চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার সক্ষমতা নেই। বাকি যেগুলো আছে ওই ট্যানারিগুলার অবস্থা খুবই খারাপ, ওরা দীর্ঘদিন লোকসানে আছে। অনেকগুলো প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ছাগলের চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার মতো বড় কোনো ট্যানারি নেই।

শুধু প্রেজেন্টেশন নয়, কাজও চলছে: আশিক চৌধুরী
সরকারের বর্তমান মেয়াদ প্রায় দশ মাস। এর মধ্যে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে নীতিগত সংস্কার ও নানামুখী বাস্তব পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানিয়েছেন, ‘শুধু প্রেজেন্টেশন নয়, কাজও চলছে’। তিনি এক স্ট্যাটাসে বিডা–বেজার গত আট মাসের কার্যক্রম তুলে ধরেছেন, যেটিকে তিনি ‘আমলনামা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। শুক্রবার (৬ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ স্টাটাস দেন তিনি। চৌধুরী আশিক বলেন, আমরা তিনটি মূল খাতে কাজ করছি নীতিমালা ও বাস্তবায়ন, বিদ্যমান বিনিয়োগকারীদের সমস্যা সমাধান এবং দেশের ভাবমূর্তি উন্নয়ন ও বিনিয়োগ পাইপলাইন গঠন। তিনি জানান, দেশি-বিদেশি দুই শতাধিক উদ্যোক্তা ও প্রধান নির্বাহীর (সিইও) মতামতের ভিত্তিতে ৩০টি পদক্ষেপ নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে ১৮টি কাজ নির্ধারিত সময়ের চেয়ে এগিয়ে আছে, ৭টি কাজ সময়ানুযায়ী এগোচ্ছে এবং ৫টিতে কিছুটা পিছিয়ে আছে। প্রতিটি কাজের অগ্রগতি জানাতে বিডা প্রতি দুই মাসে ‘স্টেট অব ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট’ নামে ওয়েবিনার করে থাকে। এসব ওয়েবিনারে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে অগ্রগতির তথ্য ভাগাভাগি করা হয়। স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, ইতিমধ্যে ৫টি নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও অন্যান্য অবকাঠামোর রোডম্যাপ তৈরি হয়েছে। পরিত্যক্ত জমিতে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প চালুর পাশাপাশি সামরিক খাতে বিনিয়োগের জন্য একটি ডিফেন্স ইকোনমিক জোন চালু করা হয়েছে। একই সঙ্গে চালু হয়েছে মাসিক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক, ওয়ান স্টপ সার্ভিস পোর্টালের কার্যক্রম, বিদেশি বিনিয়োগের জন্য এফডিআই হিটম্যাপ এবং স্টার্টার প্যাক সুবিধা। বিডায় রিসার্চ উইং, ডিজিটাল ইনভয়েসিং, গ্রিন চ্যানেল, ওয়ান স্টপ সার্ভিস পারফরম্যান্স ডেটা প্রকাশসহ মোট ১৮টি কাজ নির্ধারিত সময়ের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। অগ্রগতির উল্লেখযোগ্য দিকগুলো তুলে ধরে বলেন, এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিদের বিডা অফিসে স্থাপন, ব্যবসায়ীদের জন্য ফোকাল পারসন নির্ধারণ, কর্মীদের জন্য ডে-কেয়ার ও বিনিয়োগকারীদের জন্য আধুনিক ক্যান্টিন সুবিধা, বিডার নতুন ওয়েবসাইট ও কমিউনিকেশন স্ট্র্যাটেজির উন্নয়ন করা হয়েছে। তবে কিছু খাতে বিডা পিছিয়ে রয়েছে বলেও স্বীকার করেছেন নির্বাহী চেয়ারম্যান। এর মধ্যে রয়েছে প্রাইভেট সেক্টর অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল গঠন, ট্যাক্স রুল সংস্কার, ক্যাপিটাল রিপ্যাট্রিয়েশন নীতি পরিবর্তন, বিডার সাংগঠনিক কাঠামো সংস্কার ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে সমন্বিত কৌশল তৈরি। চৌধুরী আশিক মনে করেন, দেশের বিদ্যমান বিনিয়োগকারীদের সন্তুষ্টি ও আস্থা অর্জন নতুন বিনিয়োগ টানার অন্যতম প্রধান উপাদান। বিগত মাসগুলোতে ইয়ংওয়ান গ্রুপ, মেটলাইফ, শেভ্রন, লাফার্জ ও বাংলাদেশ অটোমোবাইলস–এর মতো প্রতিষ্ঠানের সমস্যার সমাধানে কাজ করেছে বিডা। নীতিগত সংস্কারের উদাহরণ হিসেবে তিনি ফুল ও পারশিয়াল বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্স পলিসি, ম্যান-মেড ফাইবারে শুল্ক হ্রাস এবং ‘নো ডিডাকশন সার্টিফিকেট’ জারি প্রক্রিয়া সহজ করার কথা উল্লেখ করেন। তিনি আরও জানান, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে ইতিমধ্যে বিডা দুটি বিনিয়োগ সম্মেলন করেছে একটি বৈশ্বিক, আরেকটি চীনকেন্দ্রিক। এতে ৬৭৫ জন বিনিয়োগকারী অংশ নেন এবং ৩০০টির বেশি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর ফলাফল হিসেবে একটি গার্মেন্ট কারখানা, একটি এয়ারলাইন্স অ্যামেনিটি কিট প্রস্তুতকারক এবং একটি ঘড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানি প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ নিশ্চিত করেছে। বিডার দাবি, এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে প্রায় ১০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এছাড়া আরও ১৫টি প্রকল্প শিগগির চূড়ান্ত হতে পারে। সামগ্রিক মূল্যায়নের কথা উল্লেখ করে চৌধুরী আশিক বলেন, আমরা যেটুকু করেছি, সেটি দলগত প্রচেষ্টার ফসল। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, ইউএনডিপি, বিদেশি দূতাবাস ও কিছু প্রাইভেট খাতের অংশীদারদের বিনা পারিশ্রমিকে সহযোগিতা ছাড়া এ অগ্রগতি সম্ভব হতো না। তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগ বাড়ানোর পথ দীর্ঘমেয়াদি। একটি সামিট করে কেউ হুট করে শত কোটি টাকা ঢেলে দেবে না। তবে একটি বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি তৈরি হয়েছে, যেখান থেকে সামনে এগিয়ে যাওয়া সহজ হবে। বিডা চেয়ারম্যান সবশেষ বলেন, আমাদের ওপর বিশ্বাস না থাকলে সরাসরি প্রশ্ন করুন। ভুল তথ্য ছড়ালে কেউ লাভবান হয় না।

ঈদের আগে সোনার দাম বাড়ল
ঈদের আগে দেশের বাজারে সোনার দাম আবারও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনায় ২ হাজার ৪১৫ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার ৩৩৬ টাকা নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন করে সোনার দাম বাড়ানোর কথা জানিয়েছে। বাজুসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) দাম বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে আবার দাম সমন্বয় করা হয়েছে। নতুন দাম আগামীকাল শুক্রবার থেকে কার্যকর হবে। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী (পিওর গোল্ড) সোনার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সে কারণে সোনার দাম সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাজুস। নতুন মূল্য অনুযায়ী ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম বেড়ে এক লাখ ৬৪ হাজার ৪৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ৪০ হাজার ৯৯৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ১৬ হাজার ৬৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এদিকে অপরিবর্তীত আছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী দাম ২২ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি দুই হাজার ৮১১ টাকা। ২১ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি দুই হাজার ৭১৮ টাকা এবং ১৮ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি দুই হাজার ৩৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম এক হাজার ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। https://www.deshrupantor.com/597686

রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বাজেট যৌক্তিক: এফবিসিসিআই
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় প্রস্তাবিত বাজেট যৌক্তিক হয়েছে বলে মত দিয়েছে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি (এফবিসিসিআই)। বুধবার (০৪ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানায়, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য নিরাপত্তা, সামাজিক সুরক্ষা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা ইতিবাচক। পাশাপাশি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে বাস্তবমুখী এবং সময়োপযোগী উল্লেখ করে সরকারকে এটি বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বলেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। এফবিসিসিআই মনে করে, উচ্চাভিলাষী বাজেট না করে বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট প্রণয়ন এবং প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে বাস্তবসম্মত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করায় সরকারের এ উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। বাজেটে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা ধরা হলেও এটি অর্জনে দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব বাড়ানোর পরামর্শও দেওয়া হয়। কর কাঠামো ও পুঁজিবাজারসংক্রান্ত যেসব সংস্কার প্রস্তাব করা হয়েছে, সেগুলোকেও বিনিয়োগবান্ধব পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে এফবিসিসিআই। বিশেষ করে মার্চেন্ট ব্যাংকের করহার হ্রাস, ব্রোকারেজ হাউজ থেকে উৎসে কর কমানো, এবং আইপিও অংশীদারিত্ব শর্ত পূরণে কর ছাড়ের প্রস্তাবকে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনবে বলে তারা মনে করে। যদিও করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব বাস্তবায়ন না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। এফবিসিসিআই আরও জানিয়েছে, উৎপাদনশীল শিল্পের ক্ষেত্রে ভ্যাট অব্যাহতির পরিধি বাড়ানো ও আমদানি শুল্ক হ্রাস করায় শিল্প খাত উপকৃত হবে। তবে কিছু খাতে ভ্যাট ও সুনির্দিষ্ট কর বৃদ্ধির কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলেও তারা সতর্ক করেছে।

জুনের প্রথম ৩ দিনে দেশে এসেছে ৬০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স
পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে চলতি মাসের প্রথম ৩ দিনে দেশে এসেছে ৬০ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৭ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে সাধারণত কোরবানির পশু কেনা, নতুন পোশাক, উপহার এবং পারিবারিক ব্যয়ের জন্য প্রবাসীরা দেশে বেশি অর্থ পাঠান। এই সময় রেমিট্যান্স প্রবাহে সাধারণত ঊর্ধ্বগতি দেখা যায় এবং এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অর্থনীতিবিদরা বলেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ শুধু প্রবাসী পরিবারের আয় বাড়ায় না, বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কোরবানির ঈদের সময় গ্রামীণ অর্থনীতি যেমন চাঙা হয়, তেমনি নগদ অর্থের প্রবাহ বাড়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসে। এদিকে, সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রণোদনা দিচ্ছে। ডিজিটাল চ্যানেলে অর্থ পাঠানো সহজ হওয়ায় বর্তমানে অনেকেই হুন্ডি এড়িয়ে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করছেন। এর আগে গেল মে মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাসিক প্রবাসী আয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ছিল ৩৬ হাজার ৫৩১ কোটি টাকারও বেশি। এর আগে, চলতি বছর ঈদুল ফিতরের সময় মার্চ মাসে এসেছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ৫৬ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। ঈদকেন্দ্রিক খরচ ও প্রবাসীদের দেশে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা বাড়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহে এই ঊর্ধ্বগতি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর টানা ৮ মাস দুই বিলিয়ন এবং মার্চে তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ৩ জুন পর্যন্ত প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৮১১ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২৯ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরে একই সময় রেমিট্যান্স এসেছিল দুই হাজার ১৬৬ কোটি মার্কিন ডলার।

বাজেটে রাজনৈতিক দল ও জনগণের মতামত নেই: বিএনপি
অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দল ও জনগণের মতামত ছাড়া ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। আজ বুধবার রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এই অভিযোগ করেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে আমীর খসরু বলেন, ‘দেশে এখন যেহেতু সংসদ বা গণতান্ত্রিক কোনো সরকার নেই, তাই আমরা আশা করেছিলাম অন্তর্বর্তী সরকার ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য স্থাপনের মাধ্যমে বাজেট প্রণয়ন করবে। সরকার চাইলে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত নিতে পারত। বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী ও তরুণ প্রতিনিধিরাও অংশ নিতে পারতেন। কিন্তু সেটি করা হয়নি।’ রাজনৈতিক দল ও জনগণের মতামত নিলে বাজেট প্রণয়ন একমুখী, অংশগ্রহণহীন ও গতানুগতিক ধারার হতো না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। আমীর খসরু আরও বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি প্রায় ‘ডাবল ডিজিট’। তা কমিয়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ করার কথা বলা হচ্ছে, যা বাস্তবসম্মত মনে হয় না। দারিদ্র্য বৃদ্ধির হারে লাগাম টানা যেত। বিশ্বব্যাংকের তথ্য বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ২৭ লাখের বেশি মানুষ আগের চেয়ে বেশি দরিদ্র হয়ে পড়েছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। সেটা এবারের বাজেটে ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, যা আগের সরকারের মতোই অবান্তর ও কাগুজে প্রবৃদ্ধি। খাদ্যনিরাপত্তা হুমকির মুখে। অপর্যাপ্ত, ত্রুটিপূর্ণ, দুর্নীতিগ্রস্ত সামাজিক সুরক্ষা খাতে পেনশন ও কৃষি ভর্তুকি অন্তর্ভুক্ত করে বরাদ্দ বাড়ানোর চেষ্টা হিসেবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু সামাজিক সুরক্ষার জন্য সরকারি বরাদ্দ অপর্যাপ্ত থেকে যাচ্ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, কলেজ ও স্কুলগুলোকে পূর্ণাঙ্গ কর মওকুফের আওতায় আনা যেত। ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে শিক্ষার এসব ক্ষেত্রকে পূর্ণাঙ্গ কর মওকুফের আওতায় আনা হবে। খসরু বলেন, অর্থনৈতিক কাঠামোর দুর্বলতা সমাধানে বাজেটে সুস্পষ্ট রূপরেখার প্রয়োজন ছিল। প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল, বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির পথনকশা উপস্থাপন। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে শিল্পকারখানা স্থাপন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার দরকার ছিল। জরুরি ছিল ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি বিভিন্ন খাতে সহায়তার মাধ্যমে আরও নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি। বিশাল সুদের হারের সঙ্গে অতিরিক্ত কর ও শুল্ক শিল্পে বড় চাপ সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে, উৎপাদনশীল খাতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কর্মসংস্থানও কমতে পারে। মধ্য ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির ওপর আর্থিক চাপ বাড়লে অর্থনৈতিক অস্থিরতা বাড়তে পারে। দারিদ্র্য বিমোচনের অগ্রগতিও থমকে যেতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান ও চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার।

ঈদ উৎসবে জমজমাট ওয়ালটন ফ্রিজের বিক্রি
দুয়ারে ঈদুল আযহা, কোরবানি ঈদ। প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদে নতুন ফ্রিজ কিনতে ক্রেতারা ছুটছেন ইলেকট্রনিক্সের শোরুমে। ক্রেতা পছন্দের শীর্ষে রয়েছে দেশের নাম্বার ওয়ান ব্র্যান্ড ওয়ালটন ফ্রিজ। সেরা দামে সেরা মানের পছন্দের ফ্রিজ কিনতে সিংহভাগ ক্রেতাই ভিড় করছেন ওয়ালটনের শোরুমে। ব্যাপক ক্রেতা সমাগমে দেশব্যাপী ওয়ালটন শোরুমগুলোতে পড়েছে ফ্রিজ কেনার হিড়িক। ঈদের আগে শোরুমগুলোতে ফ্রিজ বিক্রির উৎসব চলছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, বাগেরহাট, বগুড়া, সিলেট, ফেনী, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়োজিত ওয়ালটন প্লাজার ম্যানেজার, পরিবেশক ও অঞ্চল প্রধানরা। এদিকে ঈদ উপলক্ষে ‘দেশজুড়ে তোলপাড়, ওয়ালটন পণ্য কিনে হতে পারেন আবারো মিলিয়নিয়ার’ স্লোগানে সারা দেশে চলছে ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের সিজন-২২। এর আওতায় চলতি বছরের ঈদুল আজহা পর্যন্ত দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা ও পরিবেশক শোরুম থেকে ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিন অথবা বিএলডিসি ফ্যান কিনে ক্রেতারা পাচ্ছেন ১০ লাখ টাকা পাওয়ার সুযোগ। এছাড়াও আছে লাখ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচারসহ নিশ্চিত উপহার। ইতোমধ্যে এই সিজনে ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে মিলিয়নিয়ার হয়েছেন ৫ জন ক্রেতা। অসংখ্য ক্রেতা পেয়েছেন লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার। ওয়ালটন ফ্রিজের চিফ বিজনেস অফিসার তাহসিনুল হক জানান, প্রতিবছরের মতো এই ঈদেও ফ্রিজের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য ওয়ালটনের। দেশের সিংহভাগ ক্রেতাই আস্থা রাখছেন দেশের নাম্বার ওয়ান রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ড ওয়ালটনে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ওয়ালটন ফ্রিজে অ্যাডভান্সড আইওটি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই সমৃদ্ধ বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারের ব্যবহার। পাশাপাশি ওয়ালটন ফ্রিজের গ্রাহকেরা পাচ্ছেন দেশজুড়ে বিস্তৃত সর্ববৃহৎ সার্ভিস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবার নিশ্চয়তা। এরই প্রেক্ষিতে বরাবরের মতো এবারও ঈদ উৎসবে পছন্দের ওয়ালটন ফ্রিজ কিনতে শোরুমগুলোতে ক্রেতা ভিড় বেড়েছে ব্যাপক। ঈদ বাজারে সকল শ্রেণী, পেশা ও আয়ের ক্রেতাদের জন্য ওয়ালটনের রয়েছে বিভিন্ন ডিজাইনের ৩ শতাধিক মডেলের রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার। এসব মডেলের সহস্রাধিক কালারের ফ্রিজ রয়েছে। এসব ফ্রিজের দাম ১৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার মধ্যে। ওয়ালটনের ফ্রিজে ১ বছরের রিপ্লেসমেন্টসহ কম্প্রেসরে ১২ বছরের গ্যারান্টি এবং ৫ বছরের ফ্রি বিক্রয়োত্তর সেবার সুবিধা পাচ্ছেন ক্রেতারা। গ্রাহকদের দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা পৌঁছে দিতে ওয়ালটনের রয়েছে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সার্ভিস এক্সপার্টস টিম ও আইএসও সনদপ্রাপ্ত কাস্টমার সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট। এর আওতায় দেশব্যাপী বিস্তৃত ৯০টিরও বেশি সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে গ্রাহকদের সবচেয়ে কম সময়ে সর্বোচ্চ লেভেলের বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

বাজেট অনুমোদন ২২ জুন, মতামত দেওয়া যাবে ১৯ জুন পর্যন্ত: অর্থ উপদেষ্টা
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট চলতি মাসের ২২ তারিখ পাস হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বুধবার (৪ জুন) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। ঈদুল আজহা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থেকে ছুটি শুরু হচ্ছে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ঈদে টানা ১০ দিন ছুটি থাকলেও অর্থনীতিতে এর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না। উপদেষ্টা বলেন, বাজেটের প্রতিক্রিয়া ঈদের পরে পর্যালোচনা করা হবে। বাজেট সম্পর্কে সকল মন্তব্য, প্রতিক্রিয়া ও মতামত পর্যালোচনা করে ২২ জুন বাজেট পাস করা হবে। উল্লেখ্য, গত ২ জুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা। যার আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা প্রায়। এটি দেশের ৫৪তম, অন্তবর্তীকালীন সরকার ও অর্থ উপদেষ্টার প্রথম বাজেট। যা রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির পর অর্থাৎ আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। প্রস্তাবিত এ বাজেট চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৬২ শতাংশ।

কালোটাকা সাদা করার সুযোগ জুলাইয়ের চেতনার পরিপন্থি
রাজনৈতিক সরকারের মতো অন্তর্বর্তী সরকারের বাজেটেও অপ্রদর্শিত আয় (কালোটাকা) বৈধ করার সুযোগ রাখায় কড়া সমালোচনা করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এ ধরনের পদক্ষেপ জুলাই আন্দোলনের বৈষম্যবিরোধী চেতনার পরিপন্থি। মঙ্গলবার (৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর একটি হোটেলে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। ফাহমিদা বলেন, বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বহাল রাখা হয়েছে। তাতে যারা নিয়মিত নৈতিকভাবে কর দেন তাদের নৈতিকতাতে আঘাত করা হয়েছে। এতে বৈধপথে উপার্জনকারীদের সঙ্গে বৈষম্য তৈরি হবে। তাছাড়া এই পদক্ষেপে সরকারের খুব বেশি রাজস্ব আয় হবে বলেও মনে হয় না। তিনি বলেন, আয়কর আইন-২০২৩ এর প্রথম তফসিলের আওতায় যেকোনো ব্যক্তি আবাসন বা অ্যাপার্টমেন্টে বিনিয়োগ করে নির্ধারিত বিশেষ কর দিয়ে অঘোষিত তহবিলকে বৈধতা দিতে পারেন। এই সুবিধা গ্রহণের জন্য করের হার বৃদ্ধি করা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। কিন্তু সিপিডি সবসময়অঘোষিত অর্থ বৈধ করার এই সুযোগের বিরুদ্ধে। এই সুবিধা সৎ করদাতাদের জন্য নিরুৎসাহিত করে। কর কর্তৃপক্ষের কর আইন ও বিধি প্রয়োগের দিকে মনোনিবেশ করা উচিত। ফাহমিদা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অবৈধ আয় ও অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, এই ধরনের পদক্ষেপ সাধারণ জনগণের কাছে কেবল ভুল সংকেত পাঠাতে পারে। এটি জুলাইয়ের চেতনার পরিপন্থি। তিনি বলেন, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বৈষম্যের হাতিয়ার। এ ধরনের সু্বিধা বৈধভাবে আয় করা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমিয়ে দেবে। এটা বৈষম্য। যা জুলাই আন্দোলনের যে বৈষম্যবিরোধী চেতনা,তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করি। এর আগে সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন। বাজেটে বলা হয়েছে, কেউ চাইলে আবাসন খাতে বিনিয়োগ করে নির্ধারিত হারে কর দিয়ে নিজের অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করতে পারবেন। তবে এবারের বাজেটে আগের তুলনায় বেশি হারে কর দিতে হবে। বাজেটের সামগ্রিক কাঠামো নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সিপিডি নির্বাহী পরিচালক। তার মতে, ‘কিছু কিছু পদক্ষেপ ভালো নেওয়া হয়েছে বিচ্ছিন্নভাবে। কিন্তু সামগ্রিক কাঠামোগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে যে একই কাঠামোর মধ্যে এখানে একটু বেশি, ওখানে একটু কম—এ রকম করে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, বাজেটের যে দর্শন, সেখানে বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে, সব ক্ষেত্রে সেটা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’

নতুন টাকার তিব্র সংকট, চড়া দামে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের
চাহিদার তুলনায় খুবই কম নতুন টাকা ছাপার কারণে বাজারে চরম সংকট দেখা দিয়েছে। ব্যাংকের শাখাগুলোতে এসে নতুন টাকা না পেয়েই ফিরে যাচ্ছেন গ্রাহক। বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ দামে খোলা বাজার থেকে নতুন টাকা কিনছেন তারা। মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে নতুন টাকার চাহিদা তুঙ্গে। বাহকের ভিড় জমানো শাখা গুলোর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিস একটি।আনিসুর রহমান নামের একজন ব্যক্তি সেখানে গিয়ে নতুন টাকা পাননি। ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এখনো টাকা এসে তাদের হাতে পৌঁছায়নি। গতকাল যা এসেছিল তা শেষ হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে আনিসুর রহমান খোলাবাজার থেকে দ্বিগুন দামে নতুন নোট কিনেছেন। কালের কণ্ঠকে তিনি জানান, আসলে নতুন টাকায় ঈদ সালামি, কেনাকাটা বা উপহারে নতুন টাকা এক বিশেষ অনুভূতির বিষয়। নতুন টাকা শুধু অর্থ নয়—এটি ঈদের স্মৃতি, সংস্কৃতি ও ভালোবাসার প্রতীক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনের খোলা বাজার এবং গুলিস্তান এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ২০ টাকার প্রতিটি নোট ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে ৫০ টাকার নতুন নোট বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। ১০০০ টাকার নোট দেখা গেলেও এটির চাহিদা খুবই কম।উল্লেখ্য, ৫ আগস্টের পর নতুন করে কোনো টাকা ছাপা হয়নি। বন্ধ রয়েছে পুরাতন ছাপানো টাকা সরবরাহ কার্যক্রমও। তাই বাজারে নতুন টাকার চরম সংকট দেখা দিয়েছে। ছেঁড়াফাটা নোটে ছয়লাপ হয়ে গেছে বাজার। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী পহেলা জুন থেকে বাজারের নতুন টাকা সরবরাহের কথা। কিন্তু ব্যাংকগুলোতে চাহিদার তুলনায় নগণ্য পরিমাণ টাকা সরবরাহের কারণে ব্যাংকগুলো টাকা গ্রাহক পর্যায়ে দিতে পারছে না। ফলে চরম ক্ষোভ তৈরি হয়েছে গ্রাহকের মনে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, মাত্র ২০০ কোটি টাকা ছাপানো হয়েছে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে। কিন্তু প্রতিবছর ২৫-৩০ হাজার কোটি টাকার নতুন নোটের চাহিদা থাকে।বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, রবিবার থেকে প্রাথমিকভাবে সীমিত পরিসরে ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট বিতরণ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল অফিস। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোতে বিতরণ শুরু হয়েছে।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক: সিপিডি
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার প্রস্তাব জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, এই সুযোগ থাকলে মধ্য ও নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য প্লট বা ফ্ল্যাট কেনা অসম্ভব হয়ে যাবে। এর ফলে সমাজে বৈষম্য হবে। তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলন বৈষম্যহীন সমাজের জন্য হয়েছিল। বাজেটের প্রত্যয়টা বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করার, সেটার সঙ্গে এই প্রস্তাব চরমভাবে সাংঘর্ষিক। মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬ নিয়ে সিপিডির মিডিয়া ব্রিফিং এসব কথা বলেন তিনি। ফাহমিদা বলেন, বাজেটে অপ্রদর্শিত আয়কে বৈধতা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ভবন, অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে গেলে সেখানে অপ্রদর্শিত আয় দেখিয়ে বর্ধিত হারে বিশেষ কর দিয়ে সেটি ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু আমরা সবসময় বলে এসেছি কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাব একেবারেই বন্ধ করা উচিত। এটা নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়, আমরা এটা সমর্থন করছি না। তিনি বলেন, এই প্রস্তাব সৎ করদাতাদের অনুৎসাহিত করবে। তাদের নৈতিকতার ওপর আঘাত। আমরা এই প্রস্তাব উঠিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব করছি। এটা বৈষম্য সৃষ্টির হাতিয়ার। উদাহরণ দিয়ে ফাহমিদা খাতুন বলেন, আবাসন খাতের মূল্য অনেক বেশি। এর কারণ এই অপ্রদর্শিত অর্থ। এই অর্থ সেই খাতে সেটার দাম বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে যারা বৈধভাবে আয় করে তাদের জন্য একটা অ্যাপার্টমেন্ট কেনা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এর ফলে সমাজে বৈষম্য হয়। জুলাই আন্দোলন বৈষম্যহীন সমাজের জন্য হয়েছিল। বাজেটের প্রত্যয়টা বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করার, সেটার সঙ্গে এই প্রস্তাব চরমভাবে সাংঘর্ষিক।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারও
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের মতো এবারের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখেছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে ঢালাওভাবে সব খাতে নয়, ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট কেনার ক্ষেত্রে এই সুযোগ রাখা হচ্ছে। সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ সুবিধা বহাল রাখেন। অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার ক্ষেত্রে দুটি শর্তও দেওয়া হয়েছে। যদি আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনের অধীনে কোনো অপরাধমূলক কার্যক্রম হতে উদ্ভূত হয় এবং কোনো বৈধ উৎস হতে উদ্ভূত না হয়, তাহলে এই আইনের এই ধারার আওতায় কালো টাকা সাদা করা যাবে না। এর মানে দাঁড়ায়, যদি অপ্রদর্শিত অর্থ মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, মাদক বা সন্ত্রাসবাদের অর্থায়ন ইত্যাদি অপরাধমূলক উৎস থেকে অর্জিত হয় এবং সেটা বর্তমানে বলবৎ অন্য কোনো আইনের আওতায় অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়, তাহলে তা এই সুবিধার আওতায় আসবে না। দ্বিতীয়, অপ্রদর্শিত অর্থের উৎস ‘বৈধ উৎস’ না হলে সেটি সাদা করা যাবে না। অর্থাৎ যেখানে অর্থ উপার্জনের উৎস নিজেই অবৈধ, যেমন- ঘুষ বা চুরি, সেখানে কর দিয়ে বৈধতা মিলবে না। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কালো টাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর বাতিল করে। কিন্তু এবারের বাজেটে অর্থ উপদেষ্টা নতুন করে করহার বাড়িয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিলেন। এদিকে, গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অন্তর্বর্তী সরকারের এ উদ্যোগের কড়া সমালোচনা করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, রাষ্ট্রীয় সংস্কার, বিশেষ করে দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যের সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়েছে সরকার। এ সিদ্ধান্ত একই সঙ্গে অনৈতিক, বৈষম্যমূলক ও সংবিধান পরিপন্থী। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘যেভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন, এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে রাষ্ট্র সংস্কার বিশেষ করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যকে রীতিমতো উপেক্ষা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। একইসঙ্গে, দুর্নীতিকে উৎসাহ দিয়ে রিয়েল এস্টেট লবির ক্ষমতার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। করহার যা-ই হোক না কেন, এটি সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যেখানে বলা হয়েছে রাষ্ট্র এমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে যে অনুপার্জিত আয় অবৈধ হবে। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ একই সঙ্গে বৈষম্যমূলক, কারণ এই সিদ্ধান্তের ফলে আবাসন খাতে অবৈধ অর্থের মালিকদের অধিকতর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সৎ উপার্জনকারীদের ফ্ল্যাট বা ভবনের অংশীদার হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবে।’ টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সবচেয়ে আশঙ্কা ও হতাশার ব্যাপার হলো, সরকারের এই সিদ্ধান্ত দুর্নীতিকে উৎসাহ দেবে। এর মাধ্যমে সরকার বাস্তবে পুরো বছরজুড়ে অবৈধ ও অপ্রদর্শিত অর্থ-সম্পদ অর্জনের জন্য নাগরিকদের উৎসাহিত করছে এবং বছর শেষে কালো টাকাকে বৈধতা দেয়ার অঙ্গীকার করছে। বৈধতা দেয়ার অজুহাত হিসেবে যে খাতের তোষণ করা হচ্ছে, সে আবাসন খাতই দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাতের একটি হিসেবে চিহ্নিত।’ বিদেশে অর্থ পাচার ঠেকাতে এই উদ্যোগ কিছুটা কার্যকর উল্লেখ করে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবদুল মজিদ বলেন, ‘তবে এটা নীতিগতভাবে অনুচিত। সব ধরনের কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করা উচিত। এটি সামাজিক ন্যায্যতার পরিপন্থী এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনের দাবির বিরোধী।’ এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে অপ্রদর্শিত প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা ঘোষণায় এসেছে অর্থাৎ সাদা হয়েছে বলে এনবিআর সূত্র জানা গেছে।

লিপস্টিকসহ বিভিন্ন প্রসাধন সামগ্রীর দাম বাড়ছে
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ঠোঁট, চোখ ও মুখমণ্ডলে ব্যবহৃত বিদেশি প্রসাধনপণ্যের ওপর কর বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে লিপস্টিকসহ বিভিন্ন প্রসাধন সামগ্রীর দাম বাড়তে পারে। সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, বাজেট প্রস্তাবে রাজস্ব আয় বাড়াতে এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এতে প্রসাধন সামগ্রী, বিশেষ করে লিপস্টিকের মতো পণ্যের দাম বাড়তে পারে। বাজেট ঘোষণার পর নাগরিকদের কাছ থেকে মতামত নিয়ে তা চূড়ান্ত করা হবে। আগামী ২৩ জুনের পর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাজেট কার্যকর হবে।

এফবিসিসিআই এর সংস্কার উত্তর নির্বাচন ও কিছু কথা
গত ২০ মে ২০২৫ তারিখে ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে বর্তমান গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত সরকার বাণিজ্য সংগঠন বিধি - ২০২৫ সংস্কার করে গেজেট প্রকাশ করে। গেজেট প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে ফ্যাসিষ্টদের দোসর ছাড়া সাধারণ ব্যবসায়ীরা এটাকে সাধুবাদ জানায়। কেননা ব্যবসায়ীদের মূল দাবীসমূহ যথা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে সভাপতি, সিনিয়র সহ- সভাপতি, সহ- সভাপতি ও পরিচালক নির্বাচিত করা, মনোনীত পরিচালকের সংখ্যা গ্রহনযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনা; পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সংখ্যা কমানো প্রভৃতি বিধিতে সন্নিবেশ করা হয়েছে। কিন্তু বাণিজ্য সংগঠন বিধি - ২০২৫ প্রণয়নের পর থেকে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ব্যবসায়ী সমাজের মধ্যে বিভিন্ন প্রোপাগাণ্ডা ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করে বিভ্রান্ত ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছে। বিগত দিনগুলোতে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের সুযোগ সুবিধা নিয়ে আমি -ডামি নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছে। গত এফবিসিসিআই ২০২৩ -২০২৫ মেয়াদের নির্বাচনে শেখ ফজলে ফাহিম এর প্যানেলে সাজানো নির্বাচন অংশগ্রহণ করেছে ফ্যাসিষ্টদের বি টীম হিসাবে। এখন তারাই সংস্কার কে বলছে কালো আইন। পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সকল সেক্টরে বিশৃংখলা ও দেশকে অস্হিতিশীল করার অংশ হিসাবে এদেরকে মাঠে নামিয়েছে ব্যবসা বাণিজ্য সেক্টরে অস্হিতিশীলতা তৈরি করার জন্য। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও মাননীয় প্রশাসক, এফবিসিসিআই নিরলস কাজ করে যাচ্ছে সংস্কার সম্পূর্ণ করে দ্রুত নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ করে নির্বাচিত ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া কে সুসংহত করা। গুটি কয়েক দোসর মানব বন্ধন করে দাবী জানায় - বাণিজ্য সংগঠন বিধি -২০২৫ কে বাতিল করতে হবে- কেউ বলেন আগের বিধিতে ফেরত যেতে হবে, কেউ বলেন পরিচালকের সংখ্যা বাড়াতে হবে - সমন্বিত কোন প্রস্তাবনা নাই। মূল উদ্দেশ্য ব্যবসা বাণিজ্য খাতে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা, সরকারের সংস্কার ও নির্বাচন কাজ কে ব্যাহত করার চেষ্টা করা। বর্তমান সরকার ফ্যাসবাদবিরোধী সকল দল কে সাথে নিয়ে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্টানের পাশাপাশি বিভিন্ন সেক্টরে স্টকহোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে সুযোপযোগী সংস্কার করছে। বাণিজ্য সংগঠন সমূহ ও এফবিসিসিআই - এ যেন প্রকৃত ব্যবসায়ীরা নেতৃত্ব দিতে পারেন,ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে কাজ করতে পারেন এমন একটি বিধি প্রণয়ন হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে বিধিকে গোষ্ঠী ও দলীয় স্বার্থে বারংবার কাঁটাছেড়া করা হয়েছে। নির্বাচন বিহীন, আমি -ডামি নির্বাচন, পিএমও অফিস থেকে পাঠানো লিস্ট ধরে পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে এফবিসিসিআই ২০২৫/২৬ ও ২০২৬/২৭ মেয়াদের জন্য নির্বাচন বোর্ড ও আপিল বোর্ড গঠন করেছে। অর্থ্যাৎ এফবিসিসিআই এর নির্বাচনী ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে। ব্যবসায়ী বন্ধুদের বলবো পতিত স্বৈরাচারের লেজুড়বৃত্তি বাদ দিয়ে, তাদের পরামর্শে ব্যবসা সেক্টরে অরাজকতা তৈরির চিন্তা বাদ দিয়ে, আসুন - ব্যবসায়ীদের স্বার্থে, দেশের উন্নয়নে কাজ করি। আমাদের সন্তানতুল্য ছাত্ররা ফ্যাসিবাদ মুক্ত করে, দেশ গঠনের যে সুযোগ করে দিয়েছে, যার যার অবস্থান থেকে কাজ করে একটি সুখী, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখি। আসন্ন এফবিসিসিআই নির্বাচনে উৎসব মুখর পরিবেশে সকলে অংশগ্রহণ করি। সন্মানিত ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ করে দেয়, দীর্ঘদিন পর নেতৃত্ব বাছাই করার সুযোগ করে দেয়। সংস্কার তখনই প্রাতিষ্ঠানিক রুপ লাভ করবে, যখন ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারবেন এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ক্ষমতা হস্তান্তর হবে - এমন এফবিসিসিআই প্রতিষ্টায় হোক আমাদের সকলের প্রত্যাশা। আতিকুর রহমানআহবায়কলিয়াজোঁ ও মিডিয়া কমিটিবৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ - FBCCI

প্রতি টনে রডের দাম বাড়বে ১৪০০ টাকা
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রড ও স্টিলের ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এর ফলে, ঘরবাড়ি নির্মাণে ব্যয় বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার (২ জুন) বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম বিটিভিসহ বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে একযোগে বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এতে তিনি জানান, রড ও স্টিল আমদানিতে ২০-২৩ শতাংশ এবং উৎপাদনে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এর প্রভাবে খুচরা পর্যায়ে রডের দাম প্রতি টনে প্রায় ১,৪০০ টাকা বাড়তে পারে। বর্তমানে স্ক্র্যাপ আমদানিতে প্রতি টনে ১,৫০০ টাকা ফিক্সড শুল্ক এবং বিলেট ও রড উৎপাদনে ২,২০০ টাকা ফিক্সড ভ্যাট আরোপ করা হয়ে থাকে। সব মিলিয়ে এখন সরকার প্রতি টনে ৩,৭০০ টাকা রাজস্ব পায়। নতুন প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে এই পরিমাণ আরও বাড়বে। এ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেট (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) থেকে ৭ হাজার কোটি টাকা কম। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পেল। সংসদ না থাকায় এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট। বিগত বছরগুলোর মতো জুন মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার বাজেট না দিয়ে এবার ঈদুল আজহার ছুটির আগেই তা উপস্থাপন করা হয়। আগামী ৭ জুন ঈদুল আজহা উদযাপিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই বাজেট ঘোষণার পর নির্মাণ খাত সংশ্লিষ্টরা রড-স্টিলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, যা ভবিষ্যতে আবাসন ও অবকাঠামো খাতে প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ব্যাংক আমানতে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত থাকতে পারে আবগারি শুল্কমুক্ত
ব্যাংকে সঞ্চয় রাখা সাধারণ মানুষের জন্য আসছে ভালো খবর। ছোট অঙ্কের আমানতের ওপর আর কোনো আবগারি শুল্ক দিতে হবে না, এমনই প্রস্তাব আসতে পারে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নতুন বাজেটে। এখন থেকে ব্যাংকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত জমা রাখলে কোনো শুল্ক কাটা হবে না। আগে এই সীমা ছিল ১ লাখ টাকা। ফলে আরো প্রায় ৭৫ লাখ গ্রাহক এই করমুক্ত সুবিধার আওতায় আসবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষে দেশে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে ১৬ কোটি ৩২ লাখ গ্রাহকের নামে। এর মধ্যে প্রায় ১৫ কোটি ৪৭ লাখ হিসাবধারীর জমা টাকা ৩ লাখ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ, প্রায় ৯৫ শতাংশ হিসাবধারী এ ছাড়ার আওতায় আসবেন।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে নিম্ন ও মধ্য-আয়ের মানুষের মোট করের বোঝা প্রায় ১১২ কোটি টাকা কমবে। এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান, সাধারণ মানুষের সঞ্চয় ও ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ বাড়াতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।তারা বলেন, বর্তমানে অনেক ক্ষুদ্র আমানতকারী ব্যাংকে টাকা রাখলেও অল্প পরিমাণ শুল্কও তাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। মূল্যস্ফীতির এই সময়ে ব্যাংকে সঞ্চয় রাখতে উৎসাহ দিতেই শুল্কমুক্ত সীমা বাড়ানো হচ্ছে। যাদের ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ বেশি, তাদের জন্য আবগারি শুল্কের হারও বাড়ানো হচ্ছে। প্রস্তাবিত কাঠামো অনুযায়ী, ৩ লাখ টাকার নিচে কোনো শুল্ক লাগবে না। ৩ লাখ ১ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫০ টাকা শুল্ক। ৫ লাখ ১ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকায় ৫০০ টাকা, ১০ লাখ ১ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকায় ৩,০০০ টাকা, ৫০ লাখ ১ টাকা থেকে ১ কোটি টাকায় ৫,০০০ টাকা, ১ কোটি ১ টাকা থেকে ২ কোটি টাকায় ১০,০০০ টাকা, ২ কোটি ১ টাকা থেকে ৫ কোটি টাকায় ২০,০০০ টাকা শুল্ক দিতে হবে। আবগারি শুল্ক বছরে একবারই কাটা হয়। কোনো অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যালেন্স যদি ১ লাখ টাকার নিচে থাকে, তবে কোনো শুল্ক কাটা হয় না।ব্যাংকাররা এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তারা বলেন, ছোট ছোট গ্রাহকরা ব্যাংকে সঞ্চয়ে আগ্রহী হবেন। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়বে। মানুষ যখন বুঝবে যে তাদের ছোট অঙ্কের টাকায় শুল্ক কাটা হবে না, তখন ব্যাংকের প্রতি আস্থা বাড়বে। এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান, একদিকে ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের স্বস্তি দেওয়া, অন্যদিকে বড় অঙ্কের আমানতের ওপর শুল্ক বাড়ানোর মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ে ভারসাম্য রাখতেই এই উদ্যোগ। এতে একদিকে ব্যাংকে মানুষের টাকা জমার প্রবণতা বাড়বে, অন্যদিকে রাজস্ব আদায়ের ন্যায্যতাও নিশ্চিত হবে।

সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বৃদ্ধির প্রস্তাব বাজেটে
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। সোমবার (০২ জুন) বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনকালে এই তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এদিন বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ টেলিভিশনে অর্থ উপদেষ্টার বাজেটের বক্তব্য সম্প্রচার শুরু হয়। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ও দেশের ইতিহাসে ৫৪তম বাজেট। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার সময় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করছি, যা জিডিপির ১২.৭ শতাংশ। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্য খাতে মোট ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি। তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, ২০১৫ সালের পর এখন পর্যন্ত বেতন কাঠামো প্রণীত না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি। নতুন অর্থবছরের বাজেটের আকার চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে। সর্বশেষ সংসদের বাইরে বাজেট দেওয়া হয়েছিল ২০০৮ সালে। তখন ক্ষমতায় ছিল সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই বছরের ৯ জুন তখনকার অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম ২০০৮-০৯ অর্থবছরের জন্য ৯৯ হাজার ৯৬২ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছিলেন। সেদিনও ছিল সোমবার।