শুরু হল তিন দিনের বিসিক ঈদ মেলা

বিসিকের আয়োজনে দেশের কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তাদের নিয়ে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী বিসিক ঈদ মেলা ২০২৫। রোববার (২৩ মার্চ) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বিসিকে প্রধান কার্যালয়ে ঈদ মেলার উদ্বোধন করেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। মেলায় বিসিকের উদ্যোক্তাদের জামদানি, চামড়াজাত পণ্য, শতরঞ্জি, শীতলপাটি, পাটজাত পণ্য, মণিপুরী শাড়ি, খাদ্যজাত, বাঁশ-বেতজাত ইত্যাদি পণ্যের ৩০টি স্টলে রয়েছে বাহারি ডিজাইনের নানান পণ্যের সমাহার। বিসিকের পৃষ্ঠপোষকতায় মেলাটি ২৩-২৫ মার্চ পর্যন্ত সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চালু থাকবে। মেলা উদ্বোধনের পাশাপাশি বিসিক প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএম) শিল্পের ভূমিকা: সমস্যা ও সম্ভাবনা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় বিসিকে চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিসিক ভবনের নীচতলায় একটি স্থায়ী প্রদর্শনী ও বিক্রয়কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে দেশীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পণ্যসমূহ নিয়মিত প্রদর্শন ও বিক্রি করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিসিক উদ্যোক্তাদের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস, ঋণ কর্মসূচি, উদ্যোক্তা তৈরির কর্মসূচি, এপিআই শিল্প পার্ক, নতুন শিল্প নগরী গঠন ও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা, লবণ শিল্প, মধু প্রক্রিয়াকরণ, চামড়া শিল্পের উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিকাশে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করছে।’

ঈদের আগে রেমিট্যান্সের পালে হাওয়া, ভাঙতে পারে রেকর্ড

চলতি মাসের প্রথম ২২ দিনে দেশে এসেছে ২৪৩ কোটি ৭৫ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ২৯ হাজার ৭৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ১১ কোটি ৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। রোববার (২৩ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।এতে বলা হয়, ‘মার্চের প্রথম ২২ দিনে দেশে এসেছে ২৪৩ কোটি ৭৫ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর গত ফেব্রুয়ারি ও জানুয়ারির একই সময়ে প্রবাসী আয় এসেছিল যথাক্রমে ১৯২ কোটি ৯৯ লাখ ডলার ও ১৪৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এ হিসাবে মার্চে প্রচুর বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ।’সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে দেশে স্বজনদের কাছে বিপুল পরিমাণে অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। এতে বাড়ছে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে আসতে পারে।’মার্চের প্রথম ২২ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫২ কোটি ৭৩ লাখ ৯০ হাজার ডলার। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯ কোটি ৯২ লাখ ৮০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৭০ কোটি ৬৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৫ লাখ ৭০ হাজার ডলার।বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, ১৬-২২ মার্চ প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৭৮ কোটি ১৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। ৯ থেকে ১৫ মার্চ দেশে এসেছে ৮৪ কোটি ১৮ লাখ ২০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। ২ থেকে ৮ মার্চ দেশে এসেছে ৭৮ কোটি ৪২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। আর ১ মার্চ রেমিট্যান্স এসেছে ৩ কোটি ৮০ হাজার ডলার।এদিকে, গত ফেব্রুয়ারি ও জানুয়ারি মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল যথাক্রমে ২৫২ কোটি ৭৬ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার ও ২১৮ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলার।আর সদ্য বিদায়ী ২০২৪ সালে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৬৮৮ কোটি ৯১ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে গত বছরের জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ ৭০ হাজার, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার, মে মাসে ২২৫ কোটি ৪৯ লাখ ৩০ হাজার, জুনে ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ, জুলাইতে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার, আগস্টে ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ৮ হাজার, নভেম্বরে ২১৯ কোটি ৯৫ লাখ ১০ হাজার ও ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার।

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারে চারগুণ মাশুল, ক্ষতির মুখে পড়তে পারে রপ্তানি খাত

বিভিন্নমুখী সংকটে ধুঁকছে তৈরি পোশাক রপ্তানিসহ শিল্পখাত। তার ওপর সম্প্রতি আমদানি পণ্যের কনটেইনারে বন্দরের ভাড়া বা স্টোর রেন্ট চারগুণ বাড়ানো হয়েছে। এই ডেমারেজ (মাশুল) শিল্পখাতের সংকটে ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে বন্দরের কনটেইনারে চারগুণ মাশুল আরোপ পণ্যের আমদানি ব্যয় বাড়াবে, বাড়বে উৎপাদন ব্যয়ও। এতে ক্ষতির মুখে পড়বে কাঁচামাল আমদানিনির্ভর সব ধরনের রপ্তানি খাত। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্ষেত্রবিশেষে আমদানিকারকদের একেকটি কনটেইনারে ৩৮৪ ডলার পর্যন্ত ডেমারেজ গুনতে হচ্ছে। এতে বাড়ছে পণ্যের আমদানি ব্যয়। নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে রপ্তানি শিল্পের ওপর। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, জাহাজ থেকে খালাসের পর বন্দরে চার দিন কনটেইনার রাখার যে ফ্রি টাইম রয়েছে, সেই সময়ের মধ্যে অনেক আমদানিকারক কনটেইনার ডেলিভারি করতে পারছেন না। এতে কনটেইনারের যেমন জটলা তৈরি হচ্ছে, গচ্ছা যাচ্ছে শত শত ডলারও। অথচ নির্ধারিত চার দিনের মধ্যে বন্দরের পণ্যবোঝাই কনটেইনার ডেলিভারি করা গেলে কোনো ভাড়া বা মাশুল দিতে হয় না। এতে বন্দরের কার্যক্রমও স্বাভাবিক থাকে। যদিও বিভিন্ন পণ্যের ছাড়পত্র অনুমোদনসহ নানান জটিলতায় আমদানিকারকদের পক্ষে অনেক সময়ই সেটি সম্ভব হয়ে ওঠে না। শিল্পের উদ্যোক্তারা মনে করছেন, বিগত সরকারের পতনের পর বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে শ্রমিকদের আন্দোলনে গত সাত মাসে পোশাকশিল্পসহ সব ধরনের রপ্তানিমুখী শিল্পের উৎপাদনে ব্যাহত হয়েছে। রয়েছে গ্যাস সংকট। এ সময়ে কনটেইনারে চারগুণ মাশুল আরোপ সব মিলিয়ে কাঁচামাল আমদানিনির্ভর সব ধরনের রপ্তানি খাতকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে। জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ করে বন্দরে কনটেইনার জটলা তৈরি হয়। একপর্যায়ে কনটেইনারের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়ে যায়। জটলা কমাতে গত ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম বন্দর ও ঢাকার কমলাপুর আইসিডিতে থাকা আমদানিকৃত এফসিএল কনটেইনারে চারগুণ হারে মাশুল আরোপ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) এনামুল করিমের সই করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম বন্দর ও ঢাকাস্থ কমলাপুর আইসিডি (পানগাঁও, আইসিটি ব্যতীত) থেকে কনটেইনার খালাসে অত্যন্ত ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। কোনো কোনো আমদানিকারক তাদের আমদানিকৃত কনটেইনার ২১ দিন বা তারও বেশি সময় ডেলিভারি না নিয়ে বন্দরের অভ্যন্তরে ও আইসিডিতে সংরক্ষণ করছেন। এতে চট্টগ্রাম বন্দর এবং কমলাপুর আইসিডির স্বাভাবিক অপারেশনাল কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। চট্টগ্রাম বন্দরের ও আইসিডির স্বাভাবিক অপারেশনাল কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন রেখে দেশের সব আমদানি-রপ্তানিকারকদের দ্রুত বন্দর সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে বন্দর অভ্যন্তরে/কমলাপুর আইসিডিতে থাকা আমদানিকৃত এফসিএল কনটেইনারগুলো ডেলিভারি/সরিয়ে নেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। ওই সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে বা কমলাপুর আইসিডিতে থাকা কনটেইনার ডেলিভারি না নিলে ১০ মার্চ থেকে ‘রেগুলেশন্স ফর ওয়ার্কিং অব চিটাগং পোর্ট (কার্গো অ্যান্ড কনটেইনার), ২০০১-এর ১৬০ ধারা মোতাবেক এফসিএল কনটেইনার ভাড়া চারগুণ বেশি হারে আরোপে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হবে। এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর গত ১০ মার্চ থেকে স্টোর রেন্ট বা বন্দরের ভাড়া চারগুণ হারে আদায় শুরু করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। এতে শিল্পখাতের উদ্যোক্তারা লোকসানের মুখে পড়ছে। এ নিয়ে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) চট্টগ্রামের সাবেক নেতারা বন্দর চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে চারগুণ মাশুল আদায়ের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান। বন্দর সূত্রে জানা যায়, আমদানিকৃত পণ্যবাহী কনটেইনার বন্দরে আসার পর চার দিন ফ্রি টাইম থাকে। এসময়ে পণ্য খালাস নিলে কোনো ভাড়া বা স্টোর রেন্ট দিতে হয় না। বন্দরের ঘোষিত নিয়ম অনুযায়ী, স্বাভাবিক সময়ে ফ্রি টাইমের পরে প্রথম ৭ দিনের মধ্যে খালাস নিতে প্রতিদিন ২০ বর্গফুট একক কনটেইনারের জন্য ৬ ডলার, ৪০ বর্গফুট কনটেইনারের জন্য ১২ ডলার, দ্বিতীয় ১৩ দিনের মধ্যে খালাস নিতে প্রতিদিন ২০ বর্গফুট কনটেইনারের জন্য একক প্রতি ২৪ ডলার, ৪০ বর্গফুট কনটেইনারের জন্য ৪৮ ডলার এবং তৃতীয় ধাপে ২১ দিনের মধ্যে খালাস নিতে প্রতিদিন ২০ বর্গফুট কনটেইনারের ৪৮ ডলার এবং ৪০ বর্গফুট কনটেইনারে ৯৬ ডলার করে ভাড়া দিতে হয়। গত ১০ মার্চ থেকে এই ভাড়া চারগুণ হারে পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে ফ্রি টাইমের পর ২০ বর্গফুট কনটেইনারের জন্য প্রথম ৭ দিন দৈনিক ২৪ ডলার, দ্বিতীয় ১৩ দিন দৈনিক ৯৬ ডলার, তৃতীয় ২১ দিন দৈনিক ১৯২ ডলার করে ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে। একইভাবে ৪০ বর্গফুট কনটেইনারের ক্ষেত্রে প্রথম ৭ দিন দৈনিক ৪৮ ডলার, দ্বিতীয় ১৩ দিন দৈনিক ১৯২ ডলার এবং তৃতীয় ২১ দিন থেকে দৈনিক ৩৮৪ ডলার করে ভাড়া আদায় করছে বন্দর। বিজিএমইএ ফোরাম চট্টগ্রামের ট্রেজারার এবং চৌধুরী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিক চৌধুরী বাবলু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সসহ নানান জটিলতার কারণে বন্দরে ১০-২০ দিন কনটেইনার রাখতে হয়। এখন চারগুণ হারে স্টোর রেন্ট নেওয়া হচ্ছে। এতে ক্ষেত্রবিশেষে কোনো কোনো কনটেইনারে ৪০০ ডলার পর্যন্ত ডেমারেজ দিতে হচ্ছে। এতে আরএমজি (রেডিমেড গার্মেন্টস) খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘দেশের জিডিপিতে আরএমজি খাতের অবদান ১০ শতাংশ। এখন নানান সংকটের কারণে এ শিল্প ধুঁকছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের অন্যতম বড় স্টেকহোল্ডার হচ্ছে আরএমজি। এ খাত ক্ষতিগ্রস্ত হলে বন্দরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ খাতে স্থবির এলে বন্দরও গতি হারাবে। আমরা মনে করি বন্দরের বর্তমান যে ফ্রি টাইম আছে, তা বাড়িয়ে ১৫ দিন করা উচিত। পাশাপাশি বর্ধিত চারগুণ স্টোর রেন্ট আদায়ের সিদ্ধান্ত দ্রুত পরিহার করা উচিত।’ বিজিএমইএর নেতা রফিক চৌধুরী বাবলুর বক্তব্যের সত্যতা খুঁজে পাওয়া গেছে চট্টগ্রামের পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার চিত্রে। শিল্প পুলিশের সূত্রে বলছে, চট্টগ্রামে রপ্তানিকারক তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে ৫৮০টি। এরমধ্যে বর্তমানে চালু রয়েছে ৫২৮টি। বন্ধ হয়ে গেছে ৫০টির বেশি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ায় আর্থিক সংকটের মুখে কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যায়। শুধু পোশাক খাত নয়, বন্দরের ভাড়া চারগুণ করায় সব ধরনের শিল্পই ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বাড়বে আমদানি ব্যয়- এমনটিই মনে করছেন বাংলাদেশ নন-প্যাকার্স ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আমদানিকারক মাহবুব রানা। তিনি বলেন, ‘শিল্প মালিকরা কাঁচামাল আমদানি করে বন্দরে রেখে দিতে চান না। এতে তাদেরই উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটে। কিন্তু কিছু পণ্য খালাসে সরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের সনদ ও ছাড়পত্র নিতে হয়। এতে সময়ক্ষেপণ হয়। এখন কনটেইনারে বন্দর কর্তৃপক্ষ স্টোর রেন্টে চারগুণ মাশুল আরোপ করায় রপ্তানিমুখী শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ ‘অনেক আমদানিকারক আছেন পণ্য আমদানি করে বন্দরকে গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করেন। এতে বন্দরের নিয়মিত কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। কোন আমদানিকারক কোন পণ্য আমদানি করে বন্দরকে গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করেন সেই তথ্য বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে রয়েছে। তাদের ওপর ডেমারেজ আরোপ করা হলেও শিল্পোদ্যাক্তাদের এই ডেমারেজের বাইরে রাখা উচিত।’ বিজিএমইএ চট্টগ্রামের সাবেক সহ-সভাপতি এবং এইচকেসি অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘বন্দরকে খালি করার জন্য স্টোর রেন্ট চারগুণ করেছিল। তখন হয়তো কনটেইনার ৪০ হাজার ছাড়িয়েছিল। এখনতো বন্দর খালি হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম বন্দরে ৫৩ হাজারের বেশি কনটেইনার রাখার সক্ষমতা রয়েছে। বর্তমানে ২৫ হাজারের মতো রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এমনিতে বহুমুখী সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পোশাকশিল্প। এখন বন্দরের অতিরিক্ত স্টোর রেন্ট এ শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বর্ধিত স্টোর রেন্ট আদায়ের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়ে আমরা বন্দর চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট কনটেইনারগুলোর বিষয়ে তারা মৌনতা দেখিয়েছেন। এখন দেখি কোন সিদ্ধান্ত আসে।’ চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) আগের ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ৩৫ টিইইউস কনটেইনার বন্দর থেকে ডেলিভারি হয়েছে। এ সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে কনটেইনার ছিল ২৭ হাজার ৮২৬টি। এরমধ্যে ৯ হাজার ৪৬৯ টিইইউস কনটেইনার অকশন (নিলাম) ইউনিটের। একমাস আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ছিল ৪১ হাজার ৫৫০ টিইইউস। চবকের সচিব মোহাম্মাদ ওমর ফারুক বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে কনটেইনার খালাস নিলে বন্দর ব্যবহারকারীরাই সুফল পাবেন। বন্দরে কনটেইনার জট তৈরি হলে সমস্যাও তাদেরই। রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্প বড় একটি খাত। কনটেইনার বন্দরে আসার পর ডেলিভারির জন্য চার দিন ফ্রি টাইম থাকে। এই সময়ে কোনো মাশুল দিতে হয় না।’ তিনি বলেন, ‘বন্দর তো পণ্যের গোডাউন হতে পারে না। মূলত, বন্দরের গতিশীলতা অব্যাহত রাখতে স্টোর রেন্ট বাড়ানো হয়েছে। ফ্রি টাইমের সুযোগটা নিলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা হয়।’

বাড়ছে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ

সাধারণত অর্থবছরের শেষ দিকে সরকারের ঋণ বেড়ে থাকে। তবে সরকারের এখন পর্যন্ত নেওয়া ঋণ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক কম। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক থেকে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকার এ লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৯৯ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, সরকারের ঋণ ৯০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সীমিত রাখা হবে। এদিকে, হঠাৎ করেই ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ বাড়তে শুরু করেছে। অর্থবছরের শুরু থেকে গত ১০ মার্চ পর্যন্ত নিট ৩৮ হাজার ৫১০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। যেখানে গত জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারের ব্যাংক ঋণ ছিল ১৩ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা। অর্থাৎ, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে সরকার যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছিল, শেষ এক মাস ১০ দিনে তা দ্বিগুণ হয়েছে। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ বাড়ার কারণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি, বিদেশি উৎস থেকে ঋণছাড় কমে যাওয়া ও সঞ্চয়পত্র থেকে প্রত্যাশিত ঋণ না পাওয়া।’ গত ১০ মার্চ সার্বিকভাবে ব্যাংক ব্যবস্থায় সরকারের ঋণস্থিতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় পাঁচ লাখ ১২ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা। যা গত জুন শেষে ছিল ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। বাণিজ্যিক ব্যাংকে ঋণস্থিতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৪ হাজার ১০৫ কোটি টাকা। গত জুন শেষে এর পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ১৮ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা। অন্যদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থিতি কমে এক লাখ ৮ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা হয়েছে। যেখানে গত জুন শেষে ছিল এক লাখ ৫৬ হাজার ৪৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিগত সরকারের সময়ে গোপনে ‘ওভার ড্রাফট’ খাতে নেওয়া ৪৮ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা সমন্বয় করে বর্তমানে ৬ হাজার ৭৪২ কোটি টাকায় নেমেছে। দেশে দীর্ঘ দিন ধরে চলা উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের সঞ্চয় ক্ষমতা কমেছে। গত বছর আমানত বেড়েছে মাত্র ৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আলোচিত সময়ে ট্রেজারি বিল এবং বন্ডের বিপরীতে ঋণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আগের দায় শোধ করা হচ্ছে। এতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশে নেমেছে।

বেড়েছে মুরগির দাম, গরু-খাসির খবর কী?

ঈদুল ফিতরের বাকি আর হাতেগোনা কয়েক দিন। এরমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে সব ধরনের মুরগির দাম। তবে স্থিতিশীল রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। আর আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ডিম। শুক্রবার (২১ মার্চ) কেরানীগঞ্জের আগানগর এবং রাজধানীর নয়াবাজার ও কারওয়ানবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।আর কয় দিন বাদেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবটিকে ঘিরে বাড়ছে মাংসের চাহিদা। এই সুযোগে রাজধানীর বাজারে বাড়তে শুরু করেছে ব্রয়লার ও সোনালিসহ সব ধরনের মুরগির দাম।বাজারে ২০-৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে মুরগির দাম। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২১০ টাকায়। আর ৪০ টাকা কেজিতে বেড়ে সোনালি মুরগি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়।এছাড়া দেশি মুরগি ৬৫০-৬৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৮০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়।বিক্রেতারা বলছেন, ‘ঈদকে কেন্দ্র করে বাড়ছে মুরগির দাম।’ রাজধানীর কারওয়ানবাজারের মুরগি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রতি বছরই ঈদের আগে দাম বাড়ে মুরগির। কারণ এ সময় ঈদের শপিং করতে গিয়ে মানুষ খাওয়া-দাওয়া করে বেশি। এতে চাহিদা বাড়ায় দামও বাড়ে।’আরেক মুরগি বিক্রেতা আবিদ ইসলাম বলেন, ‘আর কয়েক দিন বাদেই ঈদ। এ জন্য পাইকারি বাজারে কম পরিমাণে মুরগি ছাড়ছেন খামারিরা। আর চাহিদার তুলনায় মুরগি কম আসায় দাম বেড়েছে।’ক্রেতারা বলছেন, ‘কোনো উৎসব এলেই পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। এই সিন্ডিকেট বন্ধ করতে হবে। না হলে অহেতুক বাড়তি পয়সা গুনতে হয় ভোক্তাকে।’মুরগির দাম বাড়লেও বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮৫০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ২৫০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়।ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘চাহিদার তুলনায় সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। এতে বাজারে নতুন করে বাড়েনি গরু ও খাসির দাম।’ কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের মাংস ব্যবসায়ী রফিকুল আলম বলেন, ‘কমে গেছে গরুর মাংসের বেচাকেনা। রোজায় মানুষ গরুর মাংস কম কিনছেন। এতে চাহিদা কম থাকায় নতুন করে আর দাম বাড়েনি।’বাজারে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ডিমও। প্রতি ডজন লাল ডিম ১২০-১২৫ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ১৮০-২০০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ কমিটির ১৪৭তম সভা অনুষ্ঠিত

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পিএলসি. এর এক্সিকিউটিভ কমিটির ১৪৭তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের বোর্ডরুমে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান মো. জাহেদুল হক। সভায় কমিটির সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল আজিজ, সদস্য ফিরোজুর রহমান, এবং আলহাজ মোহাম্মদ শামসুল আলম। সভায় আরো অংশগ্রহণ করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিদ্দিকুর রহমান এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মো. মিজানুর রহমান, এফসিএস।

ইসলামী ব্যাংকের শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির সভা বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু বকর রফীক ও সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

ঈদের আগে রেমিট্যান্সে সুবাতাস, ১৯ দিনে এলো ২২৫ কোটি

প্রতিবছরই ঈদ ঘিরে বাড়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ। এবারও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের গতি বেড়েছে। চলতি মার্চ মাসের ১৯ দিনে প্রবাসীরা ২২৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ২৭ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকার বেশি। এই ১৯ দিনের হিসাবে প্রতিদিন গড়ে রেমিট্যান্স আসছে প্রায় ১২ কোটি ডলার বা এক হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মার্চে প্রবাসী আয়ে নতুন রেডর্ক সৃষ্টি হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। গত বছরের আগস্টে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই বেড়ে যায় প্রবাসী আয়ের গতি। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ (প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার) রেমিট্যান্স আসে। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে ফেব্রুয়ারিতে (প্রায় ২৫৩ কোটি ডলার)। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থপাচার কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে হুন্ডি কারবারিদের দৌরাত্ম্যও। অন্যদিকে, খোলা বাজারের মতোই ব্যাংকে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম পাওয়া যাচ্ছে। এসব কারণে প্রবাসীরা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এছাড়া আসন্ন ঈদুল ফিতর ঘিরে আরও বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) মোট রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম আট মাসে এসেছিল এক হাজার ৪৯৪ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩৫৫ কোটি ডলার। এর আগে দেশের ইতিহাসে একক কোনো মাসে গত ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। এ নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা আট মাস রেমিট্যান্স দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করলো। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার আর ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। করোনাকালীন ২০২০ সালের জুলাইয়ে রেকর্ড ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। গত ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স প্রবাহ সেই রেকর্ড ভেঙে ফেলে। এটি আগের বছরের ডিসেম্বরে চেয়ে ৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালের জুলাই মাস ছাড়া বাকি ১১ মাসই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।

বিশ্বসেরা ১০০ পরিবেশবান্ধব কারখানার ৬৬টিই বাংলাদেশের

বাংলাদেশে নতুন করে সবুজ কারখানা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে আরও তিনটি তৈরি পোশাক কারখানা। এতে দেশের পোশাক খাতে পরিবেশবান্ধব কারখানার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪০টিতে। আর নতুন এসব কারখানাসহ বিশ্বসেরা ১০০টি পরিবেশবান্ধব কারখানার মধ্যে ৬৬টিই বাংলাদেশের। সম্প্রতি ইউনাইটেড স্টেটস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) এ স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এ তথ্য জানিয়েছে। বিজিএমইএ জানায়, এখন পর্যন্ত দেশের পোশাক ও বস্ত্র খাতের ২৪০টি কারখানা লিড সনদ পেয়েছে। এর মধ্যে লিড প্লাটিনাম ৯৮টি, লিড গোল্ড ১২৮টি, লিড সিলভার ১০টি ও সার্টিফায়েড ৪টি। এ নিয়ে লিড স্বীকৃতি পাওয়া নতুন এই কারখানাগুলোসহ বিশ্বসেরা ১০০টি পোশাক কারখানার মধ্যে ৬৬টিই বাংলাদেশের।সবুজ কারখানার নতুন সনদ পাওয়া কারখানা তিনটি হলো গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ইকোটেক্স লিমিটেড, শ্রীপুরের ইউরো নিট স্পিন লিমিটেড ও বোর্ড বাজারের এলিট গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ইউরো নিট স্পিন ও এলিট গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজ ৮৫ পয়েন্ট নিয়ে প্লাটিনাম এবং ইকোটেক্স প্লাটিনাম রেটিং পেয়েছে ৯২ পয়েন্ট নিয়ে।উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) ‘লিড’ নামে পরিবেশবান্ধব স্থাপনার সনদ দিয়ে থাকে। লিডের পূর্ণাঙ্গ রূপ লিডারশিপ ইন অ্যানার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন। এ সনদ পেতে হলে একটি প্রকল্পকে ইউএসজিবিসির তত্ত্বাবধানে নির্মাণ থেকে উৎপাদন পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে সর্বোচ্চ মান রক্ষা করতে হয়।মূলত ভবন নির্মাণের পর কিংবা পুরোনো ভবন সংস্কার করেও প্রতিষ্ঠানটিতে আবেদন করা যায়। লিড সনদের জন্য ৯টি শর্ত পরিপালনে মোট ১১০ পয়েন্ট রয়েছে। এর মধ্যে ৮০ পয়েন্টের ওপরে হলে ‘লিড প্লাটিনাম’, ৬০-৭৯ হলে ‘লিড গোল্ড’, ৫০-৫৯ হলে ‘লিড সিলভার’ এবং ৪০-৪৯ পয়েন্ট হলে ‘লিড সার্টিফায়েড’ সনদ পাওয়া যায়।

এনসিসি ব্যাংকের নতুন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হলেন খোরশেদ আলম

এনসিসি ব্যাংক পিএলসি. এর নতুন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে এম. খোরশেদ আলম বুধবার (১৯ মার্চ) যোগদান করেছেন। এর আগে তিনি ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি. এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে প্রধান ঝুঁকি কর্মকর্তার দায়িত্ব সহপ্ল্যানিং, স্ট্র্যাটেজি ও গভর্ন্যান্স বিভাগের নেতৃত্বে ছিলেন। খোরশেদ আলম ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ একজন দক্ষ পেশাদার ব্যাংকার। তিনি তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে রিটেইল ব্যাংকিং, এসএমই ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং, ক্রেডিট কার্ড, এসএমই ঝুঁকি এবং স্পেশাল এ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট, ট্রেনিং ইনিস্টিটিউটসহ বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্ব পালন করেন। খোরশেদ আলম ১৯৯৬ সালে ইস্টার্ন ব্যাংকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে তাঁর ব্যাংকিং ক্যারিয়ার শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে এনআরবি ব্যাংকে যোগদান করেন এবং রিটেইল, এসএমই, এজেন্ট ব্যাংকিং, ক্রেডিট কার্ড ট্রেনিং ইনিস্টিটিউটসহ বিভিন্ন বিভাগে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন। ২০২১ সালে তিনি পুনরায় ইস্টার্ন ব্যাংকে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন এবং শীর্ষ পর্যায়ে নেতৃত্ব প্রদান করেন। তিনি ওমেগা, ইউকে এর একজন সার্টিফাইড ক্রেডিট স্পেশালিস্ট (সিএসএ)। এছাড়া, তিনি নিউজিল্যান্ডের ওয়ার্কপ্লেস স্কিল ডেভেলপমেন্ট একাডেমীর একজন সিনিয়র ফ্যাকাল্টি। তিনি বিআইবিএম, বিবিটিএ, ফিনাক্সেল, আইএফসি এবং ইইউ এর সহযোগিতায় বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তাদের এবং এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য বেশ কিছু সেমিনার, কর্মশালা এবং প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জনপ্রশাসনে বিএসএস ও এমএসএস সম্পন্ন করেন।

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের ৪১৯তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৯ মার্চ) পর্ষদ চেয়ারম্যান খাজা শাহরিয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় ব্যাংকের সার্বিক ব্যবসা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয় এবং বিভিন্ন নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এসময় সভায় পর্ষদ পরিচালক মোঃ শাহীন উল ইসলাম, মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ, অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ, মোহাম্মদ আশরাফুল হাছান এফসিএ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ফরমান আর চৌধুরী, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ রাফাত উল্লা খান, ব্যাংকের কোম্পানি সচিব (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এফসিএ এবং সংশ্লিষ্ট নির্বাহীগণ উপস্থিত ছিলেন।

চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সুযোগ আরও বড়: বাণিজ্য উপদেষ্টা

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পরবর্তী বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও সুযোগ ও সম্ভাবনাকে বড় করে দেখছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে সম্মিলিতভাবে এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বুধবার (১৯ মার্চ ) রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত “Diversification of Bangladesh’s Export Basket: Challenges & Opportunity in the Post LDC Graduation” শীর্ষক সেমিনারে তিনি এই আহ্বান জানান। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য খাতভিত্তিক অ্যাসোসিয়েশনসহ ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে একসাথে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে- ব্যবসার ক্ষেত্রে কোন দেশ আমাদের বন্ধু নয়, সবাই প্রতিযোগী। এটা মেনে নিয়ে নিজেদের মধ্যে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করতে হবে। চ্যালেঞ্জের তুলনায় সামনে সুযোগ অনেক বড়। একসাথে কাজ করতে পারলে সেই সুযোগ কাজে লাগানো সম্ভব। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই-এর প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশকে যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখিন হতে হবে তার মধ্যে অন্যতম হলো পণ্য বৈচিত্রকরণ। এক্ষেত্রে কোন কোন পণ্য ও খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন তা খুঁজে বেড় করে অগ্রাধিকার ভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষনা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। এলডিসি পরবর্তী নীতিকাঠামোয় কিভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে সে বিষয়ে ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেন। এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং বেসরকারি খাতের সমস্যা সমাধনে বর্তমান সরকার আন্তরিক বলে জানান তারা। সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী ড. এম মাশরুর রিয়াজ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক উজমা চৌধুরী, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালের নির্বাহী পরিচালক এবং বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান, বিপিজিএমইএ’র সভাপতি শামীম আহমেদ, বিজেএমএ’র সদস্য ও ক্রিয়েটিং কানেকশনের স্বত্তাধিকারী মাশরেকা বিনতে মোশাররফ, এফবিসিসিআই -এর সাবেক পরিচালকবৃন্দ, সাধারণ পরিষদের সদস্যবৃন্দ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।

আইএফআইসি ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাৎ, ৪ কর্মকর্তাকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ

ঋণের নামে আইএফআইসি ব্যাংক থেকে সালমান এফ রহমানের ২ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকটির ৪ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (১৯ মার্চ) দুদকের উপ-পরিচালক ইয়াছির আরাফাতের নেতৃত্বে একটি টিম তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়া আইএফআইসি ব্যাংকের কর্মকর্তারা হলেন ডিএমডি শাহ্ মো. মঈন উদ্দিন, ইকবাল পারভেজ চৌধুরী, কর্পোরেট ম্যানেজার ওয়াসীম আলী ও রিলেশনশিপ ম্যানেজার তাসলিমা আক্তার।দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এক বছর বয়সী পাঁচ কোম্পানিকে ব্যাংকটি ঋণ দেয় প্রায় ২ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। অথচ এসব কোম্পানির নেই কোনো ওয়েবসাইট। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকে দেয়া প্রতিবেদনেও দেয়া হয়নি কোনো ঠিকানা।’এসব ঋণের সুবিধাভোগী হিসেবে মনে করা হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে। অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে ব্রাইটস্টার বিজনেস লিমিটেড, অ্যালট্রন ট্রেডিং লিমিটেড, ফারইস্ট বিজনেস লিমিটেড, সানস্টার বিজনেস লিমিটেড ও কসমস কমোডিটিস।

১৯ মার্চ, ২০২৫: স্বর্ণের আজকের বাজারদর

দেশের বাজারে ফের স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ বুধবার (১৯ মার্চ) থেকে স্বর্ণ বিক্রি হবে নতুন দামে। তবে আগের দামেই বিক্রি হবে রুপা। সবশেষ মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যায় বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণের দাম বাড়িয়েছে বাজুস। এবার স্বর্ণের ২২ ক্যারেটের এক ভরিতে ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়েছে সংগঠনটি।নতুন দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯৪৫ টাকা। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ২৬ হাজার ৭৭৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৪ হাজার ৪৯৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে। এর আগে, সবশেষ গত রোববার (১৬ মার্চ) দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে ২ হাজার ৬১৩ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৭৫ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৭৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩ হাজার ৪৭১ টাকা করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছিল গত ১৭ মার্চ থেকে। এ নিয়ে চলতি বছর ১৫ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হলো স্বর্ণের দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ১১ বার, আর কমেছে মাত্র ৪ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার। স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

সিগারেটে মূল্যস্তর কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব ‘আত্মা’র

সিগারেটে চারটি মূল্যস্তর (নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ ও প্রিমিয়াম) থাকায় তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ সঠিকভাবে কাজ করছে না। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেটের দাম কাছাকাছি হওয়ায় ভোক্তা যে কোন একটি স্তরের সিগারেট বেছে নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এই দুইটি স্তর একত্রিত করে সিগারেটে মোট তিনটি মূল্যস্তর নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা)। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়। বৈঠকে এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘সিগারেটের স্তর সংখ্যা চারটি থেকে কমিয়ে তিনটিতে নামিয়ে আনা এবং দাম বাড়ানোর বিষয় বিবেচনা করবে এনবিআর।’ পাশাপাশি প্রজ্ঞা ও ‘আত্মা’র তামাক কর কাঠামো সংস্কারে অতিরিক্ত ২০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ প্রস্তাবকে সাধুবাদ জানান তিনি। বাংলাদেশে তামাকপণ্য অত্যন্ত সস্তা ও নিত্যপণ্যের তুলনায় এগুলো আরো সস্তা হয়ে পড়ছে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত ৭টি মহানগরীর (ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল এবং রংপুর) নিত্যপণ্যের গড় খুচরামূল্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২১ সালের (৪ জুলাই) তুলনায় ২০২৩ সালে (৪ জুলাই) খোলা চিনির দাম বেড়েছে ৮৯ শতাংশ, আলু ৮৭ শতাংশ, খোলা আটা ৭৫ শতাংশ, পাঙ্গাস মাছ ৪৭ শতাংশ, ডিম ৪৩ শতাংশ, সয়াবিন তেল ৩৪ শতাংশ, গুঁড়ো দুধ ৩০ শতাংশ, এবং ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২৭ শতাংশ। অথচ একইসময়ে বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের দাম বেড়েছে মাত্র ৬ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত। ফলে তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী এই ক্ষতিকর পণ্য ব্যবহারে বিশেষভাবে উৎসাহিত হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। প্রাক-বাজেট সভায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ‘আত্মা’র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিয়েছেন দৈনিক জনকন্ঠের সিটি এডিটর কাওসার রহমান, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর সাজ্জাদুর রহমান, আত্মা’র কনভেনর মর্তুজা হায়দার লিটন এবং কো-কনভেনর মিজান চৌধুরী। ‘আত্মা’র পক্ষ থেকে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে প্রতি ১০ শলাকার খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়। এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে স্বল্প আয়ের ধূমপায়ী ধূমপান ছাড়তে বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে। একইসাথে তরুণ প্রজন্ম ধূমপান শুরু করতেও নিরুৎসাহিত হবে বলে সভায় জানানো হয়। এছাড়া প্রতি ১০ শলাকা উচ্চ স্তরের সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৪০ টাকায় অপরিবর্তিত রাখা এবং প্রিমিয়াম স্তরের প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৯০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়। এই তিনটি স্তরে সম্পূরক শুল্ক ৬৭ শতাংশ বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়। প্রাক-বাজেট সভায় ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২৫ টাকা এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়। প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার খুচরা মূল্য ৫৫ টাকা এবং ১০ গ্রাম গুলের খুচরা মূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া সব তামাকপণ্যের খুচরামূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়। আসন্ন বাজেটে প্রস্তাবিত তামাক কর সংস্কার বাস্তবায়ন করা হলে ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে। রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য পূরণ এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে এটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। একইসাথে দীর্ঘমেয়াদে প্রায় নয় লাখ তরুণসহ মোট সতেরো লাখের অধিক মানুষের অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক (ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন) ব্যবহার করেন, বছরে ১ লক্ষ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত রোগে মৃত্যুবরণ করে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।

পুঁজিবাজারে সরকারি-বহুজাতিক কোম্পানি আনতে প্রধান উপদেষ্টাকে ডিবিএ’র চিঠি

পুঁজিবাজারে সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তির অনুরোধ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নিকট চিঠি দিয়েছে পুঁজিবাজারের স্টক ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)। আজ মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে এই আবেদন জানানো হয়। সংগঠনের সেক্রেটারি মো. দিদারুল গনী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। প্রধান উপদেষ্টা রবাবর পাঠানো আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার গত ১৫ বছর ধরে চরম অনিয়ম, অপশাসন ও অস্থিরতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে। নানান অনিয়মের ফলে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান প্রায় অকার্যকর ও ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। এই সকল প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকৃত রিটার্ন এবং মূলধন হ্রাস পেয়ে বাজার প্রকৃত অর্থে প্রায় ৪০ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, অতীতে বিভিন্ন প্রতিকূল ঘটনা এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক ঘটনার কারণে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। বিশেষ করে ১৯৯৬ এবং ২০১০ সালের স্ক্যামগুলো বাজারের আর্থিক সংকট হিসাবে দাঁড়িয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা এবং বাজারের সামগ্রিক অখণ্ডতার স্থায়ী ক্ষতি করেছে। এই সময়ে অসংখ্য কোম্পানির শেয়ারের মূল্য কৃত্রিমভাবে বৃদ্ধির ফলে বিনিয়োগকারীদের মারাত্নক ক্ষতি হয়েছে। ২০২০ সালে কোভিড-১৯ এবং পরবর্তীতে প্রায় ২০ মাস ধরে শেয়ারের দামের ওপর ফ্লোর প্রাইস আরোপের ফলে বাজারের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক ফান্ড ম্যানেজাররা বাংলাদেশ থেকে দূরে সরে গিয়েছে এবং স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের সঞ্চয় ও বিনিয়োগের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো, মানহীন আইপিও তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে যার ফলে বাজারে স্থায়ী তারল্য সংকট ও আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। চিঠিতে আরো বলা হয়, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, পরিচালনাকারী সংস্থা, তালিকাভুক্ত কোম্পানি, বাজার মধ্যস্থতাকারী এবং আর্থিক নিরীক্ষক, রেটিং এজেন্সিসহ অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের মাঝে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ঘাটতির কারণে আস্থার মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। আপনার নেতৃত্বে আমরা যদি এই সংকট থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসতে না পারি, তাহলে আমরা বাজারকে ঘুরে দাঁড়ানোর, এতে শৃঙ্খলা আনার এবং রাষ্ট্রের জন্য ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য মূলধন সংগ্রহের পরিবেশ তৈরি করার একটি চমৎকার সুযোগ হারাবো। ‘তাই জবাবদিহিতা কাঠামো নিয়ে কাজ করার সময় আমাদের অবশ্যই আইপিও দিয়ে বাজারকে সমৃদ্ধ করতে হবে এবং বাজার মধ্যস্থতাকারী ও বিদ্যমান বিনিয়োগকারীদের দুর্ভোগ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য নতুন পণ্য ও কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে হবে। কম বাণিজ্যের পরিমাণ, বিনিয়োগযোগ্য স্টকের অভাব এবং সরবরাহের অসামঞ্জস্যতা, অনুমানমূলক এবং ম্যানিপুলেটিভ কৌশলগুলোর জন্য প্রজনন ক্ষেত্রের দিকে পরিচালিত করে। এ পরিবেশ থেকে বাঁচতে যত দ্রুত সম্ভব উচ্চমানের আইপিও পুঁজিবাজারে আনা প্রয়োজন। বাণিজ্যিক ও অবকাঠামো খাতে আমাদের অসংখ্য লাভজনক রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগ রয়েছে। যদি এই সমস্ত সংস্থাগুলি বাজারে তালিকাভুক্ত হয় তবে বাজারে মানের স্টকগুলির ক্রমবর্ধমান সরবরাহ থাকবে যা চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করতে সহায়তা করবে। এটি বিনিয়োগকারীদের বাজারে ফিরিয়ে আনবে এবং বাজারে তারল্য সমস্যার সমাধান করবে। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে অনেক সুশাসিত, বড় বহুজাতিক কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে তাদের মধ্যে কিছু শত বছরের, দেশের অবকাঠামোগত, আর্থিক ও মানবসম্পদকে একত্রিত করছে। আমরা সরকারকে সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে ন্যায্য মূল্যে বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতে থাকা তার অংশীদারিত্ব অফলোড করার জন্য অনুরোধ করছি। পুঁজিবাজারের বৃহৎ স্বার্থে প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আবেদনটি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবেন। সেই সঙ্গে এর বাস্তবায়নে কার্যকার পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ডিবিএ।

হাসিনা পরিবারের ৩১টি ব্যাংক হিসাবের ৩৯৪ কোটি টাকা জব্দ

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৩১টি ব্যাংক হিসাবের ৩৯৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা ফ্রিজ (জব্দ) করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুদকের উপপরিচালক মনিরুল ইসলামের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এই আদেশ দেন। দুদক সূত্রে জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৩১টি ব্যাংক হিসাবের ৩৯৪ কোটি ৬০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে। আদালতে করা দুদকের আবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছোট বোন শেখ রেহানা এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৩১ হিসাবের অস্থাবর সম্পদগুলো অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে এসব হিসাব অবিলম্বে অবরুদ্ধ করা আবশ্যক। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে অনুসন্ধান সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের অস্থাবর সম্পদ/সম্পত্তির মালিকানা পরিবর্তন/স্থানান্তর বা অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর করতে না পারেন এ মর্মে অবরুদ্ধকরণের প্রার্থনা করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এর আগে গত ১১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও ছোট বোন শেখ রেহানা ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ১২৪টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ ও শেখ হাসিনার ধানমন্ডির বাসভবন সুধাসদনসহ তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা আরও কিছু সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেন একই আদালত। একইসঙ্গে হাসিনাসহ পরিবারের সাত জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়। নানা কলা-কৌশলে টানা সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতা ধরে রাখা শেখ হাসিনা গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন। পরে তিনি তার বোন শেখ রেহানাসহ ভারতে পালিয়ে যান। তাদের পরিবারের অন্য সদস্যরা আগে থেকেই দেশের বাইরে রয়েছেন। এদিকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের ভয়াবহ রূপ সামনে আসতে শুরু করে। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে গণহত্যাসহ দুই শতাধিক মামলা হয়েছে। এছাড়া হাসিনা পরিবারের ভয়াবহ দুর্নীতি ও দুঃশাসনের চিত্র প্রতিদিনই সামনে আসছে।

খাদের কিনারা থেকে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশের অর্থনীতি আর খাদের কিনারায় নেই, বরং তা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই মন্তব্য করেন তিনি। ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, আগে অর্থনীতি খাদের কিনারায় ছিল, তবে এখন তা অনেকটা টেনে তোলা হয়েছে এবং এখন দেশে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সন্তোষজনক। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের দিকে এখন অনেক দেশ তাকিয়ে আছে। কিছু ভুল-ত্রুটি থাকলেও পরিস্থিতি ভালো।’ এছাড়া, অর্থনীতি নিয়ে হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সম্পর্কের কোনো সমস্যা হবে না। ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও জানান, সরকার ২০২৬ সালে এলডিসি (Least Developed Countries) থেকে উত্তরণের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এই উত্তরণ একটি গৌরবময় পদক্ষেপ হবে এবং এটি অনুন্নত দেশগুলোর জন্য প্রেরণাদায়ী হবে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা ছিল, তবে এখন তা সমাধান করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময় নতুন সিস্টেম তৈরি করার চেষ্টা করেন, তবে সরকার তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।

প্রাইম ব্যাংক ও আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মধ্যে চুক্তি

দাতব্য কাজ পরিচালনা করতে আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে শীর্ষস্থানীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রাইম ব্যাংক পিএলসি। সম্প্রতি ব্যাংকের গুলশান কর্পোরেট অফিসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সোমবার (১৭ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। চুক্তির আওতায়, প্রাইম ব্যাংক ‘সাদাকাহ্ জাহিয়াহ্’ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে গ্রাহকরদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করবে এবং মুদারাবা নীতির ভিত্তিতে বিনিয়োগ করবে, যা ইসলামী শরীয়াহসম্মত এবং নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য আর্থিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করবে। বিনিয়োগ থেকে অর্জিত মুনাফা নির্ধারিত সময় ও নীতিমালার ভিত্তিতে আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনে প্রদান করা হবে। ফাউন্ডেশন এই তহবিলকে শুধুমাত্র দাতব্য ও জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয়ের নিশ্চয়তা প্রদান করবে, যা দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রাইম ব্যাংক পিএলসির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. নাজিম এ চৌধুরী এবং আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের জেনারেল সেক্রেটারি মো. সাব্বির আহমেদ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এসময় প্রাইম ব্যাংকের ইসলামিক ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান ও ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ ইবনে শাহরিয়ার, আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের হেড অব অ্যাকাউন্টস হাফিজুর রহমানসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এসবিএসি ব্যাংকের এমডি হাবিবুর রহমানের পদত্যাগ

বিভিন্ন অনিয়মে সম্পৃক্ততার অভিযোগে চাপে থাকা সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংকের এমডি হাবিবুর রহমান পদত্যাগ করেছেন। তিনি জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় পালিয়ে যাওয়া ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান এ জেড এম শফিউদ্দিন শামীমেরর বন্ধু। এমডি হিসেবে হাবিবুর রহমানের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিলো আগামী ডিসেম্বরে। রোববারের পরিচালনা পর্ষদের সভায় পদত্যাগপত্র দিলে তা গ্রহণ হয়। অবশ্য আগামী এক মাস পরে তার পদত্যাগ কার্যকর হবে বলে জানা গেছে। ব্যাংকের একজন পরিচালক হাবিবুর রহমানের পদত্যাগের সত্যতা নিশ্চিত করে সমকালকে বলেন, বিগত সময়ে ব্যাংকটিতে নানা অনিয়ম হয়েছে। প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে হঠাৎ করে রোববারের পর্ষদ সভার শেষ দিকে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিলে তা গ্রহণ করা হয়। এর আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে একবার হাবিবুর রহমান পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে পরে আবার প্রত্যাহার করেন। ২০১৩ সালে সাউথ বাংলা ব্যাংকের যাত্রা শুরুর পর থেকে বেশিরভাগ এমডি মেয়াদ শেষের আগেই পদত্যাগ করেছেন। যাত্রা শুরুর সময় ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন এসএম আমজাদ হোসেন। বিভিন্ন পক্ষের দ্বন্দে তিনি পদত্যাগ করার পর চেয়ারম্যান হন অবিতর্কিত ব্যবসায়ী থার্মেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির মোল্লা। তারপর ২০২৩ সালের আগস্টে ব্যাংকটির নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন এ জেড এম শফিউদ্দিন শামীম। তিনি ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকে এমপি হন। শামীম পলাতক থাকায় গত সেপ্টেম্বরের পর্ষদ সভায় নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয় ইঞ্জিনিয়ার মো. মোখলেসুর রহমানকে।

শিগগির তুলাকে কৃষি পণ্য ঘোষণা করা হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, তুলাকে কৃষি পণ্য ঘোষণা করা এবং দেশে তুলা উৎপাদন বৃদ্ধিতে দুই মাসের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে সরকার। এ সময় তিনি দেশিও তুলার ওপর আরোপিত ট্যাক্স জরুরিভিত্তিতে প্রত্যাহার করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আহ্বান জানান। সোমবার (১৭ মার্চ) পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে বাংলাদেশ তুলা চাষের গুরুত্ব ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তামাক চাষের কারণে জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। তামাক চাষের জমির কিছু অংশে তুলা চাষ করলে কৃষকও লাভবান হবেন, আবার দেশও অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে। তিনি বলেন, দেশের জন্য ভালো তা কোনো গোষ্ঠীর বিপক্ষে গেলেও সেই সিদ্ধান্ত নিতে পিছুপা হবে না ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার। এক্ষেত্রে নীতি সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। আমদানি ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়ায় দেশিও তুলাকে প্রণোদনা দেওয়া উচিত সেখানে ট্যাক্স-ভ্যাট বসানো হয়েছে। দেশিও তুলার ওপর আরোপিত এই ট্যাক্স কমানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে সুপারিশ করা কথা জানান এনবিআর-এর সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন (কাস্টম বন্ড)। দ্রুতই দেশিও তুলার ওপরে আরোপিত ট্যাক্স-ভ্যাট প্রত্যাহারের সুখবর আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এনবিআর সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন । এদিকে, এলডিসি থেকে উত্তরণের সময়সীমা পেছানো উচিত হবে না বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, উত্তরণের জন্য সরকার ও ব্যবসায়ীরা আগে তেমন কোনো প্রস্তুতি নেয়নি। তাই বলে থেমে থাকা যাবে না। উত্তরণ পরবর্তী তিন বছর সময় পাওয়া যাবে তখনই ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নেবে। বাংলাদেশ কটন জিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সাবের বলেন, বাংলাদেশে তামাক কৃষি পণ্য অথচ তুলাকে এখনো কৃষি পণ্য হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এর ফলে তুলা চাষীরা কৃষি ঋণ নেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। ঋণ নিতে দিতে হয় বাড়তি সুদ। সরকারের নীতি সহায়তা পেলে অন্তত দুই লাখ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ করে আমদানিকৃত তুলার চার ভাগের এক ভাগ দেশে উৎপাদন করা সম্ভব বলেও জানান তিনি। তুলা আমদানিতে চীনকে হটিয়ে বাংলাদেশ এখন শীর্ষ দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, চামড়ার মৌসুমে ট্যানার্সদের যেভাবে স্বল্প সুদের ঋণ দেওয়া হয়। তুলাতেও স্বল্প সুদের ঋণ দেওয়া হলে কৃষকরা তুলা উৎপাদন করে দাম পাওয়ার অনিশ্চয়তা থেকে বের হয়ে আসতে পারবে। দেশে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার তুলা আমদানি করতে হয়। বিপুল এই বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে এক-চতুর্থাংশ দেশে উৎপাদন করা সম্ভব বলে মনে করেন তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী পরিচালক ড. ফকরে আলম ইবনে তাবিব। তিনি বলেন, ধানের জমিতে তুলা চাষ হয় না। তুলা মূলত চরাঞ্চল, বরেন্দ্র এলাকা, দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত এলাকা, পাহাড়ি এলাকাসহ উচুঁ জমিতে তুলা চাষ করা হয়। নীতি সহাযোগিতা দেওয়া হলে খাদ্য নিরাপত্তা ব্যাহত না করেই দেশে ২০ থেকে ২৫ লাখ টন তুলা উৎপাদন করা সম্ভব। তুলা বীজ থেকে ভোজ্য তেল ও গবাদি পশুর খাদ্য খৈল পাওয়া যায়। ফলে তুলা চাষ বাড়লে আমদানি নির্ভর ভোজ্য তেল ও খৈল আমদানি কমবে, বলেন তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক। বাংলাদেশ সুদান কটন জিনিং ইন্ডাস্ট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সুদানে তুলা চাষে সফল প্রবাসী উদ্যোক্তা মো. আবুল খায়ের বলেন, বাংলাদেশে তুলা চাষ বাড়াতে সহায়তা করবেন। এরইমধ্যে উচ্চ ফলনশীল তিনটি উন্নত জাতের তুলা বীজ পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হয়েছে। এই নতুন জাতের চাষাবাদ শুরু হলে কম জমি থেকে বেশি তুলা উৎপাদন করার সম্ভব। সভাপতির বক্তব্যে ইআরএফ-এর সভাপতি দৌলত আক্তার মালা বলেন, তুলা এখনো কৃষি পণ্য নয় বা দেশি তুলার ওপর বৈষম্যমুলক কর আছে অনেকে তা জানতো না। দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ খাতটিকে বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় নীতি সহযোগিতা দেওয়া প্রয়োজন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইআরএফ-এর সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে ইআরএফ, বাংলাদেশ কটন জিনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ সুদান কটন জিনিং ইন্ডাস্ট্রিজ।

আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম আবার বাড়ানো হয়েছে। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬১৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৭৫ টাকা। স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। রোববার বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। যা সোমবার থেকে কার্যকর হবে। এর আগে গত ৯ মার্চ স্বর্ণের দাম কিছুটা কমানো হয়। তার আগে ৫ মার্চ দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। এখন আবার দাম বাড়ানো হলো। নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬১৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৭৫ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৪৯৬ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১৪৭ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৮৩১ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩ হাজার ৪৭১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে ৯ মার্চ সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৩৮ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৫০ হাজার ৮৬২ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৯৯১ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৯৬৭ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ২৩ হাজার ৪২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ৭৩৫ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১ হাজার ৬৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আজ রোববার পর্যন্ত এ দামেই স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে। স্বর্ণের দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

১৫ দিনেই প্রবাসী আয় ২০ হাজার কোটি টাকা, ভাঙতে পারে অতীতের রেকর্ড

দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরপরই বেড়ে যায় রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের গতি। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ( প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার) রেমিট্যান্স আসে। আর দ্বিতীয় সর্বেচ্চ রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে (প্রায় ২৫৩ কোটি ডলার)। তবে সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি মাস মার্চে নতুন রেকর্ড হতে পারে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ে। ভাঙতে পারে অতীতে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের রেকর্ড। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য বলছে, চলতি মাস মার্চে প্রথম ১৫ দিনে ১৬৫ কোটি ৬১ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ২০ হাজার ২০৪ কোটি টাকার বেশি। আর প্রতিদিন আসছে ১১ কোটি ডলারের (১৩৪৭ কোটি টাকা) বেশি। রেমিট্যান্স আসার এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাসের পুরো সময়ে তিন বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে রেমিট্যান্স। যা দেশের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়তে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দেশ থেকে অর্থপাচার কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে হুন্ডি কারবারির দৌরাত্ম্যও। অন্য দিকে, খোলা বাজারের মতোই ব্যাংকে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম পাওয়া যাচ্ছে। এসব কারণে প্রবাসীরা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাছাড়া আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে আরও বেশি বেড়েছে রেমিট্যান্স আসার গতি। প্রাপ্ত তথ্য বলছে, আলোচিত সময়ে (মার্চে প্রথম ১৫ দিন) ১৬৫ কোটি ৬১ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৭ কোটি ১১ লাখ ডলারের বেশি, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩ কোটি ডলার। আর বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১১৫ কোটি ১৬ লাখ ২০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩১ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। এ সময়ে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা ৭টি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৮ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার। যা গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম ৮ মাসে ছিল এক হাজার ৪৯৪ কোটি ডলার। সে হিসেবে গত অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩৫৫ কোটি ডলার। এর আগে গত ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে। আর এ নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা ৭ মাস দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়া‌রি‌তে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পা‌ঠি‌য়েছেন প্রবাসীরা। একক মাস হিসাবে আগে কখনোই এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। এর আগে করোনাকালীন ২০২০ সালের জুলাই ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এবার সেই রেকর্ড ভাঙলো ২০২৪ সালের বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে। ২০২৪ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি। গত বছরের ডিসেম্বরে এসেছিল ১৯৯ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালের জুলাই মাস বাদে বাকি ১১ মাসই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।

ইরানকে কৃষি ফার্মিং খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। আজ রবিবার (১৬ মার্চ) সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার অফিস কক্ষে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের সাথে ইরানের ট্রেড ভলিউম সক্ষমতার চেয়ে ছোট। উভয় দেশেরই প্রচুর রপ্তানি সম্ভাবনা রয়েছে। বাণিজ্যিক সম্পর্কোন্নয়ন দু'দেশকেই লাভবান করবে উল্লেখ করে এসময় বাণিজ্য উপদেষ্টা বাংলাদেশে কৃষি ফার্মিং খাতে ইরানকে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান। ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশি বলেন, ইরান বাংলাদেশের ভালো বন্ধু রাষ্ট্র। সংস্কৃতি, ধর্ম ও ভাষার মিল দুদেশের মানুষকে শক্ত বন্ধনে আবদ্ধ করলেও বাণিজ্যিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনেও শক্ত ভিত পায়নি। এখন বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো জোরদার করতে ইরান আগ্রহী। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন ও ইরান দূতাবাসের সেক্রেটারি ফর ইকনমিক অ্যাফেয়ার্স মাহমুদ খোশরাভি এসময় উপস্থিত ছিলেন।