সংহত নীতিমালায় পদোন্নতি পাবেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক কর্মকর্তারা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৭:৪৫ পিএম, ০৬ আগস্ট ২০২৫
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একক ও সমন্বিত পদোন্নতি নীতিমালা প্রণয়ন করেছে সরকার। আগে প্রতিটি ব্যাংক নিজস্ব নিয়মে পদোন্নতি দিলেও এবার ব্যাংকভেদে দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়, যার ফলে পদোন্নতি প্রক্রিয়া হবে সুনির্দিষ্ট ও একযোগে।
দুই ধরনের নীতিমালা
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ‘রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কর্মচারী পদোন্নতি নীতিমালা-২০২৫’ এবং ‘রাষ্ট্রমালিকানাধীন বিশেষায়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মচারী পদোন্নতি নীতিমালা-২০২৫’ শিরোনামে পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল (বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি) অন্তর্ভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় প্রথম নীতিমালাটি প্রযোজ্য হবে। অন্যদিকে কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ ও হাউস বিল্ডিং ফিন্যান্স করপোরেশন দ্বিতীয় নীতিমালার আওতায় পড়বে।
সমন্বিত পদোন্নতির লক্ষ্য
সরকার আশা করছে, একই দিনে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এবার থেকে একসঙ্গে পদোন্নতির সুযোগ পাবেন। সিনিয়র অফিসার থেকে উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) পর্যন্ত পদোন্নতি এই নীতিমালার আওতায় হবে।
যোগ্যতার নির্ধারিত মানদণ্ড
পদোন্নতির জন্য আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, চাকরির সন্তোষজনক রেকর্ড, মেধা, দক্ষতা, সততা, প্রশিক্ষণ ও জ্যেষ্ঠতা বিবেচনায় নেওয়া হবে। স্নাতক ডিগ্রির নিচে কেউ পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হবেন না।
কমপক্ষে পাঁচ বছর মেয়াদি বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (ACR)-এর গড় নম্বর, শিক্ষাগত যোগ্যতা, কর্মস্থলের পারফরম্যান্স, ব্যাংকিং ডিপ্লোমা, দুর্গম এলাকায় কাজের অভিজ্ঞতা, শাখা ব্যবস্থাপকের অর্জন এবং মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে ১০০ নম্বরের স্কোর গঠন করা হবে। মৌখিক পরীক্ষায় ৮-এর মধ্যে ৪ এবং বাকি ৯২ নম্বরের মধ্যে অন্তত ৭৫ পেতে হবে।
তদবির নয়, নীতিমালা কার্যকর
নীতিমালায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, পদোন্নতির জন্য কোনো প্রকার তদবির বা সুপারিশ ‘অসদাচরণ’ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
কমিটি গঠন ও নির্ধারিত তারিখ
প্রতিটি ব্যাংকে পদোন্নতি যাচাইয়ে কমিটি ও সহায়ক কমিটি গঠন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
- বাণিজ্যিক ব্যাংকে ডিজিএম পদে পদোন্নতির কমিটির সভাপতি হবেন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান
- এজিএম পদে পদোন্নতির কমিটির সভাপতি হবেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক
- বিশেষায়িত ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার থেকে ডিজিএম পর্যন্ত পদোন্নতির সভাপতি হবেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক
- বাছাই কমিটির সভাপতির দায়িত্বে থাকবেন প্রশাসন বিভাগের ডিএমডি
পদোন্নতির ভিত্তিকাল বাণিজ্যিক ব্যাংকের জন্য ৩১ ডিসেম্বর এবং বিশেষায়িত ব্যাংকের জন্য ৩০ জুন নির্ধারণ করা হয়েছে।
অযোগ্যতার কারণ
যাদের শেষ তিন বছরের কোনো এক বছরে চাকরির রেকর্ড সন্তোষজনক নয়, যাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলছে বা যাঁরা বিভাগীয় মামলায় দণ্ডিত, তাদের পদোন্নতির বিবেচনায় আনা হবে না।
নীতিমালায় অস্পষ্টতা থাকলে
নীতিমালা সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে অস্পষ্টতা দেখা দিলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ব্যাখ্যাই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।