ব্যবসায়ীদের আস্থা ও বাণিজ্যে গতি বাড়ানোই মূল চ্যালেঞ্জ: অর্থ উপদেষ্টা
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৪:৩২ পিএম, ০৬ আগস্ট ২০২৫
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, দেশের অর্থনীতি গত এক বছরে ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে কিছুটা স্বস্তির অবস্থানে এসেছে। তবে সামনে মূল্যস্ফীতি, কর্মসংস্থান, জ্বালানি ও শুল্কসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ব্যবসায়ীদের হারানো আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং মন্দা পরিস্থিতিতে থাকা ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আনা।
বুধবার (৬ আগস্ট) সরকারি ক্রয় ও অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অর্থনীতি খাদের কিনারা থেকে উপরে উঠেছে এটা বুঝতে চোখের পাশাপাশি অন্তর্দৃষ্টি দরকার। পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে অনেকটা স্থিতিশীল। যদিও কিছু জায়গায় এখনো চাপ রয়েছে।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি সংকট, কর্মসংস্থান এবং ট্যারিফ ইস্যুতে আমরা কাজ করছি। তবে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে ব্যবসায়িক পরিবেশে গতি ফেরানো। এজন্য দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য প্রকল্পগুলোতে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।
মূল্যস্ফীতি বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, মূল্যস্ফীতি একদিনে কমানো সম্ভব নয়। এটা কোনো ঘোড়া না যে রাশ ধরে টান দিলেই মাথা উঠবে। খাদ্যবহির্ভূত খাতগুলোতে চ্যালেঞ্জ এখনো রয়েছে, তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে।
নির্বাচনী ব্যয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য যা প্রয়োজন, তা বাজেট থেকেই দেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত বাজেট ঘাটতি রয়েছে ৩.৬ শতাংশ, যা ৪.৫ শতাংশ সীমার মধ্যেই।
অর্থনীতির সংস্কার প্রসঙ্গে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, কিছু তাৎক্ষণিক সংস্কার ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। কিছু বিষয় রয়েছে মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে। যেমন ব্যাংক রেজুলেশন নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক রোডম্যাপ তৈরি করছে। ক্যাপিটাল মার্কেটে কিছু উন্নয়ন হয়েছে, আরও উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। এনবিআর-এর প্রক্রিয়া সংশোধনেও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পাল্টা শুল্ক হ্রাস বিষয়ে তিনি বলেন, ২০ শতাংশে নামানো শুল্ক কিছুটা স্বস্তিদায়ক হলেও আরও কম হলে ভালো হতো। এখনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি সই হয়নি। বাণিজ্য উপদেষ্টা বশির সাহেবের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ইউএস চেম্বারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক বার্তা পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের তৈরি পোশাক, নিট এবং টেক্সটাইল খাত দ্রুত পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছে, যা আমাদের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানকে এগিয়ে রাখছে। তবে ওয়েভিং সেক্টরে কিছুটা চাপ রয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষর এবং বাণিজ্য আলোচনার বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “এটি মাল্টিলেটারাল কোনো আলোচনার অংশ নয়, বরং ওয়ান-টু-ওয়ান আলোচনার মাধ্যমে হচ্ছে। ফলে সব তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এখানে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর অবস্থানও বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই আলোচনায় আমরা আমদানি ও শুল্ক কাঠামোর দিকগুলো খতিয়ে দেখছি, যেখানে আমাদের সুযোগ ও সীমাবদ্ধতা উভয়ই আছে।