অন্তর্বর্তী সরকারের ১ বছরে কমেছে অর্থপাচার-লুটপাট
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৯:৫২ পিএম, ০৮ আগস্ট ২০২৫
বিভিন্ন সঙ্কট ও জটিলতা মোকাবেলা করে এক বছর পূর্ণ করল অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তিতে অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে জানালেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তার মতে, মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, অর্থপাচার হ্রাস এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।
ঢাকা ছাড়ার সময় শেখ হাসিনার সরকার রেখে গিয়েছিল বিপর্যস্ত একটি অর্থনীতি চরম মূল্যস্ফীতি, বাড়তি বেকারত্ব, ব্যাংক খাতে লুটপাট ও বৈদেশিক মুদ্রা সংকট। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের আশা নিয়েই দায়িত্ব নেয় নতুন প্রশাসন।
পদে দায়িত্ব নেওয়ার এক বছর পর, সরকার এখন কিছু সাফল্যের দাবি করতে পারছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের ভাষ্য, তেলের দাম, গ্যাসের দাম বাড়েনি। যা বাড়ার তা আগেই বেড়ে গিয়েছিল। বড় একটি অংশের সংকট ছিল বাইরের উৎস থেকে, যার ৬০ শতাংশ আমরা নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি।
তিনি জানান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সার ও পরিবহন খাতে জমে থাকা ৩ বিলিয়ন ডলারের দেনা শোধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। রেমিট্যান্স ৩০ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড অতিক্রম করেছে এবং রপ্তানি খাতেও দেখা যাচ্ছে দৃশ্যমান উন্নতি।
তবে গভর্নর মনে করিয়ে দেন, এই সফলতায় আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। তার ভাষায়, বাবা আমাকে দেউলিয়া করে দিয়ে গেছে সন্তান হিসেবে আমাকেই সেটি ঘুরিয়ে দিতে হবে। আমরা এখন যে কাঠামো তৈরি করছি, তা আগামী ৫ বছরে বড় পরিবর্তন আনবে।
ফাইন্যান্সিয়াল খাতকে দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একাধিক সংস্কার প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে তার মতে, এই উদ্যোগগুলোর বাস্তবায়নে ভবিষ্যৎ সরকারকেও সুযোগ দিতে হবে।
সাবেক গভর্নর ও বর্তমান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা এখন আর খাদের কিনারায় নেই। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছি। আগের সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে এখন অনেকটাই বেরিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে।
তবে একবছরের এই সময়ে সরকার সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সফল হয়নি বলেও অকপটে স্বীকার করেন এই দুই শীর্ষ অর্থনৈতিক কর্মকর্তা। বিশেষ করে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, বৈষম্য হ্রাস এবং জনগণের জন্য কল্যাণমুখী নীতির ক্ষেত্রে আরও কাজ বাকি রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তারা।