এবার রুশ তেল কেনা ‘স্থগিত’ করলো চীনের রাষ্ট্রীয় কোম্পানিগুলো
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১২:৫০ পিএম, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
রাশিয়ার প্রধান দুই তেল কোম্পানি রসনেফট ও লুকওয়েলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর চীনের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানিগুলো সমুদ্রপথে রুশ তেল কেনা সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) একাধিক বাণিজ্যিক সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
রাশিয়ার যুদ্ধ তহবিলের অর্থায়নে জড়িত থাকার অভিযোগে ট্রাম্প প্রশাসন এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যার লক্ষ্য মস্কোর ওপর আর্থিক চাপ বাড়ানো। একই সঙ্গে রাশিয়ার সমুদ্রপথে সবচেয়ে বড় ক্রেতা ভারতও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মেনে রুশ তেল আমদানি কমানোর পরিকল্পনা করছে।
চীন ও ভারতের এই সিদ্ধান্ত রাশিয়ার রাজস্বে বড় ধাক্কা দিতে পারে এবং বিকল্প সরবরাহ খুঁজতে গিয়ে বৈশ্বিক বাজারে তেলের দাম আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
রয়টার্সের সূত্র অনুযায়ী, চীনের চারটি রাষ্ট্রীয় কোম্পানি—পেট্রোচায়না, সিনোপেক, সিএনওওসি ও ঝেনহুয়া অয়েল—সাময়িকভাবে রুশ তেলের সমুদ্রপথের লেনদেন স্থগিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। গত সপ্তাহে সিনোপেকের ট্রেডিং ইউনিট ইউনিপেক রুশ তেল কেনা বন্ধ করে দেয়, যখন যুক্তরাজ্য রসনেফট, লুকওয়েলসহ ‘শ্যাডো ফ্লিট’ জাহাজ ও কিছু চীনা কোম্পানির ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেয়।
চীন প্রতিদিন প্রায় ১৪ লাখ ব্যারেল রুশ তেল সমুদ্রপথে আমদানি করে, যার বড় অংশ যায় ছোট বেসরকারি রিফাইনারিগুলোর (টিপট রিফাইনারি) কাছে। ভর্টেক্সা অ্যানালিটিক্সের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম নয় মাসে চীনের রাষ্ট্রীয় কোম্পানিগুলোর দৈনিক রুশ তেল কেনা ২.৫ লাখ ব্যারেলের নিচে ছিল, যদিও এনার্জি অ্যাসপেক্টস এই পরিমাণ ৫ লাখ ব্যারেল প্রতিদিন হিসেবে জানিয়েছে।
ব্যবসায়ীদের ধারণা, রসনেফট ও লুকওয়েল সাধারণত মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে চীনে তেল বিক্রি করে থাকে। বর্তমানে টিপট রিফাইনারিগুলোও ক্রয় স্থগিত রেখে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পর্যবেক্ষণ করছে।
নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার আগে নভেম্বর ডেলিভারির ইএসপিও ক্রুড তেলের দাম আইসিই ব্রেন্টের তুলনায় প্রতি ব্যারেলে ১ ডলার প্রিমিয়ামে নেমে আসে। অন্যদিকে, চীন পাইপলাইনের মাধ্যমে আরও ৯ লাখ ব্যারেল রুশ তেল প্রতিদিন আমদানি করে, যা পেট্রোচায়না সরাসরি গ্রহণ করে থাকে।
বাণিজ্যিক সূত্রগুলো জানায়, পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ এই মুহূর্তে তেমন প্রভাবিত হবে না। তবে ভারত ও চীন বিকল্প উৎসের দিকে ঝুঁকলে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকা থেকে নিষেধাজ্ঞামুক্ত তেলের দাম বাড়তে পারে।
সূত্র: রয়টার্স