১২১ বার পেছাল সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রতিবেদন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০২:০৫ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় আবারও পিছিয়েছে। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ধার্য থাকলেও তদন্ত কর্মকর্তা তা দাখিল করতে ব্যর্থ হন। ফলে আদালত আগামী ৩০ নভেম্বর নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন। এর মধ্য দিয়ে এ মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা পিছিয়ে গেল ১২১ বার।
সেদিন দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে মামলার অগ্রগতি শুনানি শুরু হয়। বিচারক মিনহাজুর রহমান তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজিজুল হকের কাছে জানতে চান, “আপনি কি সিআইডিতে?” জবাবে তিনি জানান, “না স্যার, আমি পিবিআইতে।”
বিচারক এরপর জানতে চান তদন্ত কতদূর এগিয়েছে। এ সময় তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করে তদন্ত শুরু হয়। দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি নিহতদের সহকর্মী, প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন ও ডিএনএ বিশেষজ্ঞদের জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেছেন। “দুই জনের মিক্সড ডিএনএ পাওয়া গেছে, কিন্তু শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এ কারণেই প্রতিবেদন দাখিলে বিলম্ব হচ্ছে,” বলেন তিনি।
আদালত এসময় তদন্ত অগ্রগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “আগের তদন্ত কর্মকর্তাও একই কথা বলেছেন। আপনি আপ্রাণ চেষ্টা করবেন।”
এর আগে গত ১১ আগস্ট আদালত তদন্ত কর্মকর্তাকে হাজির হয়ে অগ্রগতি জানাতে নির্দেশ দিয়েছিল। তবে এরও আগে নির্ধারিত সময় শেষ হলেও উচ্চ আদালতের মাধ্যমে অতিরিক্ত সময় নেওয়া হয়েছিল।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি নিজ বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন। পরদিন সকালে তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ আটজনকে আসামি করা হয়। বাকি আসামিরা হলেন— নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল ও আবু সাঈদ।
প্রথমে মামলার তদন্ত শুরু করেন শেরেবাংলা নগর থানার এক উপপরিদর্শক। পরে তদন্তভার ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হলেও তারা রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হয়। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল মামলাটি র্যাবের হাতে দেওয়া হয়। একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বিভিন্ন সংস্থার অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়ে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেয়। ১৮ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পিবিআই প্রধানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে এবং ছয় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু দীর্ঘ ১২ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি তদন্ত সংস্থা।