আশুলিয়ায় ৬ লাশ পোড়ানোর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু সোমবার
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৬:৪৭ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের সময় সাভারের আশুলিয়ায় ছয় লাশ পোড়ানোর ঘটনায় সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য সোমবার দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
রবিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। অন্য দুই সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
ট্রাইব্যুনালে সূচনা বক্তব্যে চিফ প্রসিকিউটর গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ঘটে যাওয়া ওই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আশুলিয়ায় ছয়জন আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যার পর পুলিশের ভ্যানে তুলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই সময় জীবিত ছিলেন একজন। এমন বর্বরতা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। সেই ঘটনায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে বিচারকাজ চলছে। এর মধ্যে আটজন পলাতক। সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে আজ আনুষ্ঠানিক পর্ব শুরু হয়েছে। আগামীকাল (১৫ সেপ্টেম্বর) থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।”
আগস্টের ২১ তারিখ ওই মানবতাবিরোধী মামলায় ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন ও বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একই দিনে সূচনা বক্তব্য এবং সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য রোববার ধার্য করা হয়।
এদিকে এই মামলায় রাজসাক্ষী হতে চান পুলিশ সদস্য শেখ আফজালুল হক, যিনি আসামি ও আশুলিয়া থানার সাবেক উপপরিদর্শক।
২১ আগস্ট আবজালুল হক ট্রাইব্যুনালে মৌখিক আবেদন করে নিজের দোষ স্বীকার ও রাজসাক্ষী হতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, “আমি দোষ স্বীকার করি। একইসঙ্গে আমি অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) হয়ে পূর্ণাঙ্গ সত্য উন্মোচন করতে চাই এবং আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি।”
ট্রাইব্যুনাল আদেশে জানায়, মামলার সকল আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আবজালুল হক অপরাধ স্বীকার করেছেন এবং রাজসাক্ষী হওয়ার জন্য আবেদন করার অনুমতি পেয়েছেন। তাকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মামলায় মোট ১৬ আসামি, যার মধ্যে আট জন গ্রেপ্তার আছেন। তাদের মধ্যে সাভার সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম, ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ উত্তরের সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, আশুলিয়া থানার সাবেক উপপরিদর্শক আবদুল মালেক, আরাফাত উদ্দীন, কামরুল হাসান, শেখ আবজালুল হক এবং সাবেক কনস্টেবল মুকুল চোকদার অন্তর্ভুক্ত।
সাবেক এমপি মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও সাবেক উপপরিদর্শক বিশ্বজিৎ সাহাসহ আট আসামি পলাতক রয়েছেন। পলাতক আসামিদের পক্ষে ট্রাইব্যুনাল দুজনকে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।