শেখ হাসিনার মামলা: ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেবেন মাহমুদুর রহমান ও নাহিদ ইসলাম
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০২:১৭ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এই তারিখে সাক্ষ্য দিতে যাচ্ছেন দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।
তামিম বলেন, “শেখ হাসিনার মামলায় আজ ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল মাহমুদুর রহমান ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নায়ক নাহিদ ইসলামের। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে তারা আসতে না পারায় ট্রাইব্যুনালের কাছে সময় চাওয়া হয়। পরে সময় মঞ্জুর করে নতুন দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। ওইদিনই এ দুজন সাক্ষী নিজেদের সাক্ষ্য উপস্থাপন করতে পারবেন বলে আমরা আশাবাদী।”
এ মামলায় এ পর্যন্ত মোট ৪৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর ছিল মামলার ১৪তম সাক্ষ্যগ্রহণের দিন, যেখানে ছয়জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তার আগের দিন, ৮ সেপ্টেম্বর, তিনজন সাক্ষ্য প্রদান করেন।
একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ছিল ২ সেপ্টেম্বর, যেদিন ৩৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন মামলার আসামি থেকে রাজসাক্ষী হয়ে যাওয়া সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তার জেরা শেষ হয় ৪ সেপ্টেম্বর। মামুন ট্রাইব্যুনালের কাছে স্বীকার করেছেন যে, “শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চালানো হয়েছে।” সেই সঙ্গে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমাও চান এবং বহু অজানা তথ্য প্রকাশ করেন।
এছাড়াও, বিভিন্ন সাক্ষীদের বক্তব্যে উঠে এসেছে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সারা দেশে যে হত্যাযজ্ঞ ঘটেছিল, তার ভয়াবহ বিবরণ। শহীদ পরিবারের সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা এই নৃশংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছিল মামলার দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ, যেখানে ছয়জন সাক্ষী জবানবন্দি দেন। তাদের মধ্যে চিকিৎসক, সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরাও ছিলেন।
ট্রাইব্যুনাল গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়। প্রসিকিউশনের দায়েরকৃত অভিযোগপত্রে মোট পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগের নথিপত্রে রয়েছে মোট ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠা। এর মধ্যে তথ্যসূত্র ২,০১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও অন্যান্য দালিলিক প্রমাণ ৪,০০৫ পৃষ্ঠা, এবং শহীদদের তালিকা ও বিবরণ ২,৭২৪ পৃষ্ঠায় বিস্তৃত। এই মামলায় মোট ৮১ জন সাক্ষীকে উপস্থাপন করা হবে। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।