
ঢাকার আদালতে মমতাজ : ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর মিরপুর মডেল থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুর ২টা ১৭ মিনিটে তাকে আদালতে আনা হয়। এসময় তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে। এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম তাকে সাত দিনের রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শুনানি হবে। এর আগে মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টায় রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ নং গোলচত্বর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন মো. সাগর। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আসামিরা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করেন। এসময় ভুক্তভোগী সাগরের বুকে গুলি লেগে পেছন দিকে বের হয়ে যায়। তার মা মোসা. বিউটি আক্তার তাকে খুঁজতে থাকেন। এক পর্যায়ে ওইদিন দিবাগত রাত ৩টায় মিরপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার লাশের সন্ধান পান তিনি। পরে সন্তানের লাশ গ্রহণ করে গ্রামের বাড়িতে দাফন সম্পন্ন করেন। এ ঘটনায় গত ২৭ নভেম্বর নিহতের মা মোসা. বিউটি আক্তার বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। এতে শেখ হাসিনাসহ ২৪৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া মামলায় ২৫০-৪০০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়। এ মামলার মমতাজ বেগম ৪৯ নং এজাহারনামীয় আসামি।

দুর্নীতির মামলায় ডা. জুবাইদা রহমানকে আপিলের অনুমতি
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করার অনুমোদন দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুর্নীতির মামলায় ডা. জোবাইদা রহমানের ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মওকুফ করে আপিল করার অনুমতি দিয়েছেন বলে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জাগো নিউজকে জানিয়েছেন। এর আগে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট ঘোষিত আয়ের বাইরে সম্পদের মালিক হওয়ার মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দুই ধারায় ৯ বছরের কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। ওই দিন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। আইনের দৃষ্টিতে পলাতক দুই আসামিকে গ্রেফতারে পরোয়ানা না জারিরও আদেশ দেন তিনি। একই সঙ্গে আদালত তারেকের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ২ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭ টাকার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া তারেককে তিন কোটি টাকা ও জুবাইদাকে ৩৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। ওইদিন দুদকের পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজল। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় তারেক রহমান ও জুবাইদার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। ২৬(২) ধারার অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ৩ বছর এবং ২৭(১) ধারায় অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছর। এ মামলায় গত ২৭ জুলাই দুদকের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। এরপর রায়ের দিন ধার্য করা হয়। রায়ের পর বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদ কায়সার কামাল বলেছিলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। মাত্র ১৬ কার্যদিবসে ৪২ জনের সাক্ষ্য নিয়ে রায় ঘোষণার বিষয়টি প্রমাণ করে এই মামলা কতটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জুবাইদা রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরের বছর তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

হাইকোর্টের রায়ে রাজনৈতিক দলের রেজিস্ট্রেশন বাতিল ইতিহাসে এটাই প্রথম: প্রধান বিচারপতি
ইতিহাসে এটাই প্রথম যাতে রাজনৈতিক দলের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে হাইকোর্টের রায়ে এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। মঙ্গলবার (১৩ মে) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের আপিল বিভাগে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন শুনানিতে এমন মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। এদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করছেন সিনিয়র আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক। উপস্থিত রয়েছেন আইনজীবী শিশির মনির। ইসির পক্ষে রয়েছেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর আপিল মামলাটি খারিজ (আইনজীবী হাজির না থাকায়) করে দেয়। এরপর আপিলটি পুনরুজ্জীবনের জন্য আবেদন করা হয়। গত বছরের ২২ অক্টোবর আদালত বিলম্ব মার্জনা করে আপিলটি শুনানির জন্য রিস্টোর করেছেন। অর্থাৎ পুনরুজ্জীবন করেছেন। ওইদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এহসান আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ও শিশির মনির। এরপর ৩ ডিসেম্বর আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়েছিল।

জুলাই-আগস্টের সকল হত্যাকাণ্ডের দায় শেখ হাসিনার
জুলাই আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার সবগুলোর দায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সোমবার (১২ মে) ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এদিন বেলা ১১টার দিকে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে তদন্ত সংস্থার কো-অর্ডিনেটর ও তদন্ত কর্মকর্তারা এ প্রতিবেদন জমা দেন। ওই প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও হত্যার উসকানি, প্ররোচনা ও সরাসরি নির্দেশসহ পাঁচটি অভিযোগ এনেছেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। জুলাই-আগস্টের সকল হত্যাকাণ্ডের দায় শেখ হাসিনারআন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর সংবাদ সম্মেলনে চিফ প্রসিকিউটরসহ তদন্ত কর্মকর্তারা এরপর সংবাদ সম্মেলনে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, জুলাই গণহত্যার ঘটনায় সকল হত্যাকাণ্ডের সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি শেখ হাসিনার। তিনি এ গণহত্যা ও হত্যার উসকানিদাতা, প্ররোচনাদাতা ও সরাসরি নির্দেশদাতা। জানা গেছে, প্রথমে শুধু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলেও পরে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

১৭৮৩ কোটি টাকা আদায়ে এস আলমের ৩১ একর সম্পদ নিলামে
এবার এস আলম গ্রুপের বেনামি প্রতিষ্ঠানের ১৭৮৩ কোটি টাকা ঋণ আদায়ে ৩১ একর সম্পদ নিলামে তুলেছে ইসলামী ব্যাংক পিএলসি। খেলাপি প্রতিষ্ঠানটির নাম কর্ণফুলী ফুডস (প্রা.) লিমিটেড। চট্টগ্রাম নগরীর সাগরিকা বিসিক শিল্প এলাকার প্লট-সি ২৬/২৭ সরকারি শিল্প প্লটের ঠিকানায় ওই ঋণ দেয় ইসলামী ব্যাংক পিএলসি। সোমবার (১২ মে) স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ নিলাম ডাকে ব্যাংকটির জুবিলী রোড শাখা। চট্টগ্রামের স্থানীয় এক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি জুবিলী রোড শাখার বিনিয়োগ গ্রাহক কর্ণফুলী ফুডস (প্রা.) লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পটিয়ার কেলিশহর ইউনিয়নের কেলিশহর কাশেম চৌধুরী বাড়ির নুরুল ইসলাম চৌধুরী ও নুর নাহার দম্পতির ছেলে মো. রহিম উদ্দিন চৌধুরী এবং চেয়ারম্যান নগরীর বাকলিয়া থানাধীন পশ্চিম বাকলিয়া খালপাড় মক্কা আবাসিক এলাকার ইসলামীয়া ম্যানসনের মুনীর আহমেদ ও হালিমা বেগম দম্পতির ছেলে নজরুল ইসলামের কাছ থেকে গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত লভ্যাংশসহ ব্যাংকের খেলাপি বিনিয়োগ বাবদ ১ হাজার ৭৮৩ কোটি ২২ লাখ ২ হাজার ২৩১ টাকা এবং আদায়কাল পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য খরচ আদায়ের নিমিত্তে অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ এর ১২ (৩) ধারা মোতাবেক বন্ধকী সম্পত্তি নিলামে বিক্রির জন্য আগ্রহী ক্রেতাদের কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করা যাচ্ছে। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে ৪৩টি আলাদা তপসিলে ৩০ একর ৬০ শতক জমিসহ কারখানা রয়েছে। এ জমির মধ্যে নালা, পুকুর, খাস প্রকৃতির জমিও রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাংকটির জুবিলী রোড শাখার কর্মকর্তারা খেলাপি ঋণটি এস আলমের গ্রুপের বলে জানিয়েছে। ওই ঋণ অনুমোদনের সময় ফাইলে স্বাক্ষর দিতে অনীহা প্রকাশের কারণে দুই কর্মকর্তাকে বদলি ও চাকুরিচ্যুত হতে হয়েছে বলেও জানান তারা। এর আগে, ৮২ কোটি টাকা আদায়ে আদায়ে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এস আলম স্টিলস, এস আলম ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড, ২৭ এপ্রিল ২১৮০ কোটি টাকা আদায়ে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন স্টিল মিল, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ভোজ্যতেল কারখানাসহ ১১৪৯ শতাংশ জমি এবং এর আগে ২০ এপ্রিল ৯৯৪৮ কোটি টাকা পাওনা আদায়ে এস আলম গ্রুপের চিনিকলসহ প্রায় ১১ একর সম্পত্তিসহ আরও বেশ কয়েকটি নিলাম ডাকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি।

পিলখানা বিদ্রোহ: বিডিআরের ৪০ জওয়ানের জামিন
২০০৯ সালে বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দপ্তর পিলখানায় বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় কারাগারে আটক ৪০ বিডিআর জওয়ানের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (১২ মে) আদালত সূত্রে জানা যায়, ঢাকার ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক ইব্রাহিম মিয়ার আদালত গত ৮ মে এ আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী শাহাদাৎ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর মো. বোরহান উদ্দিন জানান, আসামিদের মধ্যে অনেকেই সাজাপ্রাপ্ত এমনকি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিও রয়েছেন। জামিন আবেদন করা আসামিদের নথিপত্র যাচাই করে আদালত সন্তুষ্ট হয়ে ৪০ জনের জামিন মঞ্জুর করেছেন। বাকি আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়েছে। জামিন পাওয়া আসামিরা হলেন- রেজাউল করিম, শাজাহান, রফিকুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, রেজাউল করিম, মো. শামীম, ওয়ালি উল্লাহ, হাবিবুর রহমান, তারিকুল ইসলাম, বনি আমিন চৌধুরী, মো. এ বারিক, ইমতিয়াজ আহমেদ নবীন, মোয়াজ্জেম হোসেন, মিজানুর রহমান, সিদ্দিকুর জামান জোয়ার্দার ওরফে লিটন, মো. এ মোনাফ, আকিদুল ইসলাম, খলিলুর রহমান, মিজানুর রহমান, কৌতুক কুমার সরকার, মো. সালাউদ্দিন, সোহরাব হোসেন, কামাল হোসেন, মো. ইশহাক, দারুল ইসলাম, শ্রী সুমন চক্রবর্তী, আবু সাঈদ, সেজান মাহমুদ, মো. সেলিম, বিধান কুমার সাহা, মাসুম হাসান, ফিরোজ মিয়া, শ্রী তাপস কুমার বিশ্বাস, রফিকুল ইসলাম, কামাল মিয়া, নূর-এ-আলম মিয়া, এনামুল হক, শফিকুল ইসলাম, রবিউল আলম এবং আল আমিন। এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি ১৭৮ জন জন বিডিআর জওয়ানকে জামিন দেন একই আদালত। পরে গত ২৩ জানুয়ারি ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুর কারাগার থেকে কারামুক্ত হন তারা। মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। সে ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাইকোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরো ২২৮ জনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন। হাইকোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অন্যদিকে, হাইকোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়। ২০১০ সালে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজও শুরু হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত পুনরায় শুরুর দাবি উঠছে। গত ১৯ ডিসেম্বর অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যান শহীদ পরিবারের সদস্যরা। এই হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তের জন্য গত ২৪ ডিসেম্বর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে কমিশন গঠন করে ৯০ দিনের সময় বেধে দিয়েছে সরকার।

জুলাই গণহত্যায় হাসিনা-কামাল-মামুনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন জমা
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। আজ সোমবার (১২ মে) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এর মধ্য দিয়ে মামলাটির আনুষ্ঠানিক বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। প্রথমে শুধু শেখ হাসিনাকে আসামি করা হলেও, তদন্তে নতুন তথ্য আসার পর অবশিষ্ট দুইজনকেও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর আগে, ১৮ ফেব্রুয়ারি, এই মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া গণহত্যার পেছনে শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশনার অডিও পাওয়া গেছে। সেই অডিওর ফরেনসিক বিশ্লেষণসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘তদন্তে প্রাপ্ত প্রমাণে স্পষ্ট, এই গণহত্যা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।’ তিনি আরও জানান, মামলাটি এখন বিচারিক প্রক্রিয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এ মামলায় মানবতাবিরোধী অপরাধ, হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের অভিযোগ আনা হয়েছে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল আজ
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে যাচ্ছে তদন্ত সংস্থা। আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এ তথ্য জানায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এই মামলায় প্রথমে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়।পরে আরো দুই আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম গত শুক্রবার ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন। পোস্টে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার তদন্ত রিপোর্ট আগামী সোমবার (১২ মে) চিফ প্রসিকিউটর বরাবরে দাখিল করবে আশা করছি। তদন্ত রিপোর্ট দাখিল হওয়ার পর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ, অর্থাৎ ফরমাল চার্জ দাখিলের মাধ্যমে হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হবে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে হওয়া মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এই মামলা ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আওয়ামী লীগ শাসনামলের সাড়ে ১৫ বছরে গুম ও খুনের ঘটনায় তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অন্যটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।

সাভারে বাবাকে হত্যায় আদালতে মেয়ের দায় স্বীকার
ঢাকার সাভারে বাবাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ছুরি মেরে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার মেয়ে জান্নাতুল জাহান শিফা আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফরোজা সুলতানা সুইটির আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।আজ শুক্রবার আদালতের সাভার থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা উপপরিদর্শক বিশ্ব কুমার দেব নাথ এ তথ্য জানিয়েছেন।মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওই তরুণীর মা নিহত ব্যক্তি আবদুস সাত্তারের তৃতীয় স্ত্রী ছিলেন। তরুণীর বয়স যখন পাঁচ বছর তখন তার মা মারা যান। ২০১৯ সাল থেকে বাবা তাকে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। ২০২৩ সালে অভিযুক্ত তরুণী বাবার বিরুদ্ধে নাটোরে আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। এরপর বিভিন্ন সময় মেয়েকে মামলা তুলে নিতে চাপ দেন বাবা। একপর্যায়ে মেয়ের বিরুদ্ধে চুরির মামলাও করেন। পরে সাভারে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন ওই বাবা। চলতি বছরের শুরুর দিকে ওই বাসায় আসেন মেয়েটি। এর পর থেকে মেয়েকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন সময়ে চাপ দিতে থাকেন তিনি। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়।জবানবন্দিতে বলা হয়, গত বুধবার রাতে মেয়েটি খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বাবাকে খাওয়ান। ভোররাত চারটার দিকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরি মেরে বাবাকে হত্যা করেন তিনি। মেয়েটি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করে বাবাকে হত্যার কথা জানান।পরে সাভার মডেল থানা পুলিশ তাকে আটক করে। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় হত্যা মামলা হয়েছে।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন
আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রাপ্ত অভিযোগ ও অভিযুক্তের সংখ্যা, দ্রুত বিচার-নিষ্পত্তির প্রয়োজন, কাজের চাপ ইত্যাদি বিবেচনায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করেছে সরকার। ট্রাইব্যুনালের সদস্য পদে নিয়োগ পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং মাদারীপুরের জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। বৃহস্পতিবার (০৮ মে) আইন ও বিচার বিভাগ থেকে তাদের নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকের প্রাপ্য বেতন-ভাতা ও অন্য সুবিধা প্রাপ্ত হবেন। এছাড়া প্রজ্ঞাপনে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বিদ্যমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালের স্ত্রীর প্লট-ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খানের রাজধানীর তেজগাঁওয়ের চারতলা বাড়ি, পুরোনো ভবনসহ ১৬ শতক জমির চারটি প্লট ও পল্লবীতে থাকা একটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার ছয়টি ব্যাংক হিসাব ও দুইটি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৮ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে উপ-পরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর স্ত্রীর স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে, রাজধানীর তেজগাঁওয়ের মনিপুরি পাড়ায় ৫ দশমিক ৫৭ কাঠা প্লটের ওপর ৩ হাজার ৪০০ বর্গফুটের চারতলা ভবন, একই এলাকায় ৫ দশমিক ৭৬ শতক জায়গার আলাদা দলিলের দুইটি প্লট ও দুই ইউনিট বিশিষ্ট পুরোনো ভবন, একই এলাকায় ১ দশমিক ৩৪ শতক জমি, পল্লবী এলাকায় ১৮৭২ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট। এছাড়াও অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া ছয়টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আছে ৭ কোটি ৫৮ লাখ ৩৩ হাজার ৪৩৬ টাকা। আবেদনে বলা হয়েছে, আসামি লুৎফুল তাহমিনা খান ১৫ কোটি ৪৬ লাখ ৯৪ হাজার ৫৯১ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে অপরাধ করেছেন। একই সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে লুৎফুল তাহমিনাকে অপরাধে সহায়তা করে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারা অনুযায়ী অপরাধ করেছেন। আসামি তাহমিনা নিজ নামীয় এবং তার আংশিক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামীয় একাধিক ব্যাংক হিসাবে জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত মোট ৪৩ কোটি ৭৭ লাখ ৭৪৫ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ও মানি লন্ডারিং আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলার তদন্তকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় যে, আসামিরা মামলা সংশ্লিষ্ট অপরাধলব্ধ সম্পত্তি হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন, যা করতে পারলে মামলার মূল উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। তাই, আদালত কর্তৃক বিচার শেষে সরকারের অনুকূলে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের সুবিধার্থে আসামির বিভিন্ন সম্পত্তির মধ্যে আপাতত উল্লিখিত স্থাবর সম্পদ জব্দ এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা একান্ত প্রয়োজন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।

বেনজীরের মেয়ের দুবাইয়ের ফ্ল্যাট জব্দ ও অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধের আদেশ
পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে দুবাইতে থাকা একটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ফ্ল্যাটটির বর্তমান মূল্য ৪০ লাখ দিরহাম (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩ কোটি ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা)। এছাড়াও আমিরাত এনবিডি ব্যাংকের দুই হিসাবে রাইসার নামে থাকা মোট ১ লাখ ৪৩ হাজার ৪৯৭ দিরহাম অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব। এদিন দুদকের উপপরিচালক মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন এ আবেদন করেন। দুদকের আবেদন সূত্রে জানা যায়, রাইসার বিরুদ্ধে তার বাবার সঙ্গে যোগসাজশে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ক্ষেত্র থেকে পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ ৫৫ হাজার ৮৫ টাকা অর্জনের অভিযোগের তদন্ত চলমান। অনুসন্ধানকালে দেখা যায় যে, বেনজীরের স্ত্রী জিশান মীর্জা সংযুক্ত আরব আমিরাতে সম্পদ অর্জন করেছেন, যার সুবিধাভোগী তার কন্যা তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীর। বাংলাদেশের স্বার্থে এসব স্থাবর সম্পত্তি জব্দ ও অস্থাবর সম্পত্তি অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া প্রয়োজন।

স্ত্রীসহ সাবেক এমপি শাহীন চাকলাদারের জমি-গাড়ি জব্দ, শেয়ার অবরুদ্ধ
যশোর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের ২৬টি স্থাবর সম্পত্তি ও তিনটি গাড়ি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। এ ছাড়া, তার ৩ লাখ ১৫ হাজার শেয়ারসহ ১৬টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এদিকে তার স্ত্রী ফারহানা জাহান মালার ১ লাখ ১০ হাজার শেয়ার ও তিনটি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। আজ বুধবার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। আবেদনে বলা হয়, মামলায় এজাহার নামীয় আসামি যশোর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো শাহিন চাকলাদারের বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৪২ কোটি ৪৬ লাখ ৬৪ হাজার ৬২৩ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অসাধু উপায়ে অর্জনপূর্বক দখলে রেখেছেন। একই সাথে ২৯টি ব্যাংক হিসাবে জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৩৪১ কোটি ৬১ লাখ ৬৬ হাজার ৩৬৫ টাকা অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে অপরাধলব্ধ অবৈধ অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামি মো. শাহিন চাকলাদারের নামে অর্জিত স্থাবর বা অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর বা দলিল সম্পাদন বা অন্য কোন পন্থায় মালিকানা পরিবর্তন কিংবা হস্তান্তরের সম্ভবনা রয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামি মো শাহিন চাকলাদার নামে অর্জিত স্থাবর সম্পদ জব্দ এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা আবশ্যক। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আজ আদেশ দেন।

সালমান এফ রহমান পরিবারের ৯৪ কোম্পানির শেয়ার ফ্রিজ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণিজ্য উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তার ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান ও তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে ৯৪টি কোম্পানিতে থাকা শেয়ার ও ১০৭টি বিও হিসাব ফ্রিজ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৭ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। বিও হিসাবগুলোর মধ্যে ২৮টি সালমান এফ রহমানের কোম্পানির মালিকানাধীন এবং ৭৯ টি সালমান এফ রহমানের ব্যক্তি মালিকানাধীন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, সংস্থাটির উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন এসব হিসাব ফ্রিজ চেয়ে আবেদন করেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। আবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে প্লেসমেন্ট শেয়ার কারসাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ার হোল্ডারদের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট, অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক হতে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে আত্মসাতসহ হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ করা হয়েছে। অনুসন্ধানকালে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সালমান এফ রহমান, তার পরিবারের সদস্য, ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও অন্যান্যদের নামে কোম্পানিসমূহের শেয়ার ও বিও হিসাবসমূহের তথ্য পাওয়া যায়। দুদক জানায়, তারা এসব কোম্পানির শেয়ার ও বিও হিসাবসমূহ হস্তান্তর, স্থানান্তর বা রূপান্তর করার চেষ্টা করছেন। এতে সফল হলে, এই অনুসন্ধানের ধারাবাহিকতায় মামলা রুজু, বিজ্ঞ আদালতে চার্জশিট দাখিল, বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক বিচার শেষে সাজার অংশ হিসেবে অপরাধলব্ধ আয় হতে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণসহ সব উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। তাই, সুষ্ঠু অনুসন্ধান ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সালমান এফ রহমান, তার পরিবারের সদস্য এবং তার সহযোগীদের মালিকানা, শেয়ার ও বিও হিসাব ফ্রিজ করা আবশ্যক।

শেখ হাসিনা, জামাই মুশতাকসহ ৪৪৭ জনের নামে মামলা করলেন তিশার বাবা
শেখ হাসিনাসহ ৪৪৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন সিনথিয়া ইসলাম তিশার বাবা সাইফুল ইসলাম। মঙ্গলবার (৬ মে) রাতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাইফুল ইসলাম। তিনি দাবি করেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে অর্থ যোগান ও ৪৪ জন পুলিশ সদস্যকে হত্যার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার জামাই মুশতাক আহমেদ এবং আরও ৪৪৭ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদের মধ্যে সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনসহ আরও ৪৪৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া, মামলায় অজ্ঞাত ১০ হাজার ২০০ জনের নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সাইফুল ইসলাম, যিনি বর্তমানে রাজধানী ঢাকার উত্তর মুগদায় বসবাস করছেন, পেশায় একজন ব্যবসায়ী এবং ৩ নম্বর আকচা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক, তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিকা। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার এই আন্দোলন দমন করতে বিভিন্ন জেলা ও ঢাকায় ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে হামলা ও গুলি চালিয়েছিল। মামলায় বলা হয়েছে, এই হামলায় ৪৪ জন পুলিশ সদস্যসহ মোট ১৪০০ জনেরও বেশি ছাত্র-জনতা নিহত হন এবং হাজার হাজার মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন, অনেকেই চিরকাল অন্ধ হয়ে গেছেন। সাইফুল ইসলাম দাবি করেন, এই হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত ছিল এবং এটি মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য করা উচিত। তিনি বলেন, "আসামিরা দেশের বিচার বিভাগকে বুদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বুক ফুলিয়ে চলেছে।" মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ অনুসারে আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।

হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিনেতা সিদ্দিক কারাগারে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর গুলশানে ভ্যানচালক জব্বার আলী হাওলাদারকে হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৭ মে) সাত দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুস সালাম তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালত পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে ৩০ এপ্রিল তাকে এ মামলায় সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত ২৯ এপ্রিল বিকেলে বেইলি রোড দিয়ে যাওয়ার সময় কিছু যুবক সিদ্দিককে আটক করে। পরে তাকে রমনা থানা থেকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গুলশানের শাহজাদপুরে কনফিডেন্স টাওয়ারের সামনে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়। এতে জব্বার আলী হাওলাদার গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১০৯ জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন ভ্যানচালক জব্বার আলী হাওলাদার।

বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধানের জমি-ফ্ল্যাট জব্দ, ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান শেখ আব্দুল হান্নানের জমিসহ তিনটি ফ্ল্যাট জব্দ এবং ছয়টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৬ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে উপ-পরিচালক তানজির হাসিব সরকার ওই আবেদন করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানান। জব্দ সম্পদের মধ্য রয়েছে– খিলক্ষেতে ৬তলা ভবনের ষষ্ঠ তলার ৬৯৯ বর্গফুট ও ৮২৩ বর্গফুটের দুটি ফ্ল্যাট, মিরপুরের ডিওএইচ এলাকায় ২২৫০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, মিরপুরের সামরিক অফিসার আবাসিক প্রকল্পের নির্মানাধীন ৭তলা ভবন এবং নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের সাত শতকের বেশি দুই দলীলের জমি। আকতারুল ইসলাম বলেন, শেখ আব্দুল হান্নান ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অর্থের ক্ষতিসাধন, ঘুষ গ্রহণ, নিয়োগ বাণিজ্য, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে অর্থ পাচারসহ নিজ নামে ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে অনুসন্ধানী টিম গঠন করা হয়েছে। অনুসন্ধান কালে দেখা গেছে, শেখ আব্দুল হান্নান ক্ষমতায় অপব্যবহার করে নিজ, পরিবার ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছে। এসব সম্পদ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তরের চেষ্টা চলছে। স্থানান্তর হয়ে গেলে পরবর্তীতে সম্পদ পাওয়া দুরুহ হবে। তাই জরুরি ভিত্তিতে এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। এর আগে সোমবার (৫ মে) পরিবারসহ শেখ আব্দুল হান্নানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

এটিএম আজহারের আপিল শুনানি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের আপিল শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আপিল বিভাগ। সেদিন এ মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ শুনানি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করেন। এর আগে এদিন সকাল ১০টায় এ মামলার শুনানি শুরু হয়েছিল। এ টি এম আজহারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির এ তথ্য জানিয়েছেন।

আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো চিন্ময়কে
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারাগারে থাকা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায়ে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (৫ মে) ৬ষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন শুনানি শেষে আবেদন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলায় চিন্ময়কে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন করে পুলিশ। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেছেন। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নিরাপত্তা ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা আদালতে হাজির করা হয়নি কিন্তু ভার্চুয়াল শুনানিতে জেলখানা থেকে সংযুক্ত করা হয়। জানা গেছে, চিন্ময়কাণ্ডে কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া চারটি মামলার মধ্যে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে খুনের একটি এবং পুলিশের কাজে বাধাদান, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে আরও তিনটি মামলা রয়েছে। হত্যা মামলার শুনানি সোমবার ভার্চুয়াল আদালতে হয়। বাকি তিনটির শুনানি মঙ্গলবার একইভাবে হবে। চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোট নামে একটি সংগঠনের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কারাগারে পাঠানোর নির্দেশকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে ত্রাস সৃষ্টি করে চিন্ময়ের অনুসারীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা তাকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান আদালত এলাকায় আটকে রাখে তারা। এক পর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তী সময়ে নগরীর লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালি এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়। এ ঘটনায় তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন।

ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আর নেই
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রোববার (৪ মে) বিকেলে ৪টা ১০ মিনিটে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী শিশির মনির ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি হন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। উল্লেখ্য, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর ১১ বছর পর যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন এ জ্যেষ্ঠ আইনজীবী। এরপর সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় আবারো কাজ শুরু করেন। গত ৬ জানুয়ারি জুনিয়র আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনে তাকে সংবর্ধনা দেন। ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। এর আগে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের আইনজীবী ছিলেন। যুক্তরাজ্যে থাকা অবস্থায় ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। তখন দলটির আমির শফিকুর রহমান এক বার্তায় বলেছিলেন, তার পদত্যাগে আমরা ব্যথিত ও মর্মাহত। পদত্যাগ করা যে কোনো সদস্যের স্বীকৃত অধিকার। এরপর নতুন দল আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির প্রধান উপদেষ্টা হন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ১৭ আগস্ট সেই পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি। ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের জন্ম ১৯৪৪ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে। বিএ (অনার্স) ও এম এ ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮০ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি লন্ডনেই আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। দেশে ফিরে ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। তিনি ১৯৮৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৯৪ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৯০ সালে তিনি দ্য ল’ কাউন্সিল নামে একটি আইনি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০২ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী হন।

আজ হচ্ছে না চিন্ময় দাসের জামিন শুনানি
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এম. আই. ফারুকীর ইন্তেকালে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজ রোববার সুপ্রিম কোর্টে বিচারিক কার্যক্রম আংশিকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। ফলে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন পাওয়া সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আজকের শুনানি হচ্ছে না। রোববার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এদিন আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম বেলা ১১টা পর্যন্ত এবং হাইকোর্ট বিভাগের কার্যক্রম দুপুর ১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলবে। এরপর সুপ্রিম কোর্টের সকল বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিচারপতি এম. আই. ফারুকী (সিনিয়র আইনজীবী এবং অ্যাডভোকেট রোল নম্বর-৭) এর মৃত্যুতে প্রধান বিচারপতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন। তার সম্মানে এবং প্রধান বিচারপতির নির্দেশে এই কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। আজকের শুনানি হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী অ্যাডভোকেট অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, এখনো যতটুকু জানি, আজকে হয়তো শুনানি বসবে না। আজ না বসলে আগামীকাল (সোমবার) বসতে পারে। এদিকে জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আদালতের প্রবেশ পথে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিচারপ্রার্থী ও কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে আদালত চত্বরে প্রবেশ করতে হচ্ছে। বেলা ১১টার দিকে 'ছাত্রসমাজ' আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়ে আইনজীবী আলিফ হত্যার বিচার ও চিন্ময়ের ফাঁসির দাবি জানান। গত বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে শুনানি হবে ৪ মে চেম্বার আদালতে। অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ সাংবাদিকদের বলেন, রোববার শুনানি হবে। এর আগে হাইকোর্টের বিচারপতি আতোয়ার রহমান খান ও বিচারপতি আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ চিন্ময় দাসের জামিন মঞ্জুর করে রুল যথাযথ ঘোষণা করেন। সন্ধ্যায় হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানির জন্য ৪ মে দিন ধার্য হয়। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গত পাঁচ মাস ধরে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন।

আফতাবনগরে গরুর হাট বসানো যাবে না: হাইকোর্ট
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট বসানোর জন্য ইজারা প্রদানের বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। আদালতের এ আদেশের ফলে এবার আফতাবনগরে পশুর হাট বসছে না। গত ২১ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ঈদ উপলক্ষে রাজধানীতে পশুর হাট বসানোর জন্য ইজারার একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে ১১টি হাটের তালিকা ছিল, যার একটি ছিল আফতাবনগর। এ অবস্থায় আফতাবনগরে হাট বসানো বন্ধ চেয়ে ২৪ এপ্রিল হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং দক্ষিণ সিটির প্রধান ভূমি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। রিটকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ জানান, আফতাবনগর একটি পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা, যেটি রাজউকের অনুমোদিত। এখানে বিচারপতি, পেশাজীবী ও বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ বসবাস করেন। প্রায় সাত হাজার প্লট নিয়ে গঠিত এই এলাকায় বহুতল ভবন ও পরিবারসমূহের বাস রয়েছে। এমন একটি ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকায় পশুর হাট বসালে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছাবে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯-এর ধারা ৩(২) ও প্রথম তফসিল অনুযায়ী আফতাবনগর মূলত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত, যা বাড্ডা থানার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত এলাকা। সেই হিসেবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওই এলাকায় হাট বসানোর এখতিয়ার নেই। আইনজীবী আরও জানান, ২০২৩ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ইজারা বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধেও রিট হয়েছিল। তখন হাইকোর্ট হাট বসানোর ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে আপিল বিভাগের অনুমতিতে শুধু এল ব্লকের পরবর্তী অংশে হাট বসানো হয়েছিল, কিন্তু এ থেকে এইচ ব্লক পর্যন্ত হাট বসেনি। আদালতের চলতি বছরের রায়ের ফলে এবার পুরো আফতাবনগর এলাকাতেই হাট বসানো বন্ধ থাকছে, যা এলাকাবাসীর স্বস্তির কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তুরিন আফরোজের ডক্টরেট ডিগ্রি ভুয়া
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজের পিএইচডি সম্পূর্ণ করেননি। তার ডক্টরেট ডিগ্রি ভুয়া বলে জানিয়েছে সিডনির ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস। এই তথ্য সংবলিত চিঠি রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে উপস্থাপন করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, তুরিন আফরোজের নামে পিএইচডি ডিগ্রির কোনো রেকর্ড নেই বিশ্ববিদ্যালয়টির কাছে।এমনকি এই নামে কেউ কখনো ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন বলেও কোনো তথ্য নেই। আজ রবিবার (৪ এপ্রিল) আপিল বিভাগে বাড়ি সংক্রান্ত মামলায় এ তথ্য দাখিল করা হয়েছে। আইনজীবী ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হায়দার বিষয়টি জানিয়েছেন।

নারী সংস্কার কমিশনের বিতর্কিত সুপারিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট
নারী সংস্কার কমিশনের বিতর্কিত ও সাংঘর্ষিক বিষয় পর্যালোচনার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে নারী সংস্কার কমিশনের বিতর্কিত ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। রোববার (৪ মে) সু্প্রিম কোর্টের আইনজীবী রওশন আলী এ রিট দায়ের করেন। আইনজীবী বলেন, “উইমেন রিফর্ম কমিশন রিপোর্ট, ২০২৫” -এর অধ্যায় ৩, ৪, ৬, ১০, ১১ এবং ১২-এ অন্তর্ভুক্ত সুপারিশসমূহ ইসলামী শরীয়তের বিধানসমূহের পরিপন্থি, জনগণের ধর্মীয় অনুভূতির পরিপন্থি এবং বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায়, এই বিষয়ে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। “উইমেন রিফর্ম কমিশন রিপোর্ট, ২০২৫”- এই রিপোর্টটি ৩১৮ পৃষ্ঠাব্যাপী এবং সম্প্রতি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত ও আলোচিত হয়েছে। রিপোর্টের বিভিন্ন সুপারিশ ইসলামী শরীয়ত, আমাদের সংবিধান এবং দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের মূল্যবোধের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। প্রথমত, রিপোর্টের অধ্যায় ১১-তে পুরুষ ও নারীর জন্য সমান উত্তরাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা সরাসরি কোরআনের সুরা নিসা (৪:১১)-এর পরিপন্থি। দ্বিতীয়ত, রিপোর্টে বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব এসেছে, যা ইসলামী শরীয়তে অনুমোদিত একটি বিধান এবং সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ধর্মচর্চার অধিকার ক্ষুণ্ণ করে। তৃতীয়ত, “My Body, My Choice” স্লোগানকে অন্ধভাবে সমর্থন দিয়ে শরীয়তের ওপর ভিত্তি না রেখে নৈতিকতার সীমা অতিক্রম করার চেষ্টা করা হয়েছে। চতুর্থত, যৌনকর্মকে বৈধ পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা ইসলামি মূল্যবোধ এবং সংবিধানের ২(ক) ও ২৬ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি। পঞ্চমত, রিপোর্টে লিঙ্গ পরিচয় এবং ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তা শরীয়তবিরোধী এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। রিটে তিনটি মন্ত্রণালয় এবং উইমেন রিফর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান বিবাদী করা হয়েছে। বিচারপতি ফাতেমা নজিব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে।