খালেদা জিয়ার সঙ্গে আফ্রিদির বাবার ছবি দেখিয়ে জামিন চাইলেন আইনজীবী
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৫:৩৪ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০২৫

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক যাত্রাবাড়ী থানার আসাদুল হক বাবু হত্যার মামলায় বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীর ছেলে ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২৫ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক শুনানি শেষে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে তাকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আনা হয় এবং হাজতখানায় রাখা হয়।
বিকেল ৩টা ২৬ মিনিটে কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় তাকে এজলাসে তোলা হলে জনাকীর্ণ কক্ষে হট্টগোল শুরু হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক খান মো. এরফান তৌহিদকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী খায়রুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আদালতে শুনানি করেন। তিনি বলেন, আফ্রিদির মামলা ঘটনার সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। বাদীর অভিযোগে বলা হয়েছে ভিকটিম নিহত হয়েছেন আওয়ামী লীগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও পুলিশের গুলিতে। এছাড়া আফ্রিদির কিডনিতে জটিলতা আছে এবং তার স্ত্রী গর্ভবতী। মানবিক কারণে জামিন মঞ্জুর করা উচিত।
রাষ্ট্রপক্ষে বাদীর আইনজীবী ইব্রাহিম খলিল, অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন ও ঢাকা বারের সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হাসান মুকুল রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। তারা জানান, আফ্রিদি মামলায় এজাহারভুক্ত। তিনি লাইভে এসে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে আন্দোলনকারীদের ওপর নারকীয় হত্যাকাণ্ডে উৎসাহ দিয়েছেন। রিমান্ডে তাকে নিলে জানা যাবে হত্যাকাণ্ডে কারা সম্পৃক্ত, কারা অর্থদাতা ও অস্ত্রদাতা। আফ্রিদি ডিবির হারুনের সঙ্গে একাধিক লাইভ করেছেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আদালতকে জানান, আফ্রিদি আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন এবং ছাত্রদের পক্ষে তার একাধিক পোস্ট রয়েছে। এজলাসে ফের হট্টগোল শুরু হয়। তারা আফ্রিদির রাজনৈতিক পরিচয় আলাদা নয় উল্লেখ করে বলেন, তার বাবা ব্যবসায়ী এবং কোনো রাজনৈতিক পদ-পদবি নেই। এছাড়া আফ্রিদির কিডনির জটিলতার কারণে আনা-নেওয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থার অনুরোধ করা হয়। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শুনানির পর হাজতখানায় নেওয়ার পথে তাকে পেটে হাত দিয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখা যায়।
তৌহিদ আফ্রিদিকে রোববার (২৪ আগস্ট) রাতের দিকে সিআইডি বরিশাল থেকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে ১৭ আগস্ট তার বাবা নাসির উদ্দিনকে রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ী থানার পাকা রাস্তার উপর অংশ নেওয়া আসাদুল হক বাবুকে আসামিদের ছোড়া গুলিতে বুকে ও ডান পাশে আঘাত লাগে। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর ৩০ আগস্ট নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়। নাসির উদ্দিন ২২ নম্বর ও তৌহিদ আফ্রিদি ১১ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।