কোচ হয়ে বিসিবিতে ফিরলেন হান্নান সরকার

সদ্য সমাপ্ত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আবাহনী। এই দলের প্রধান কোচের দায়িত্বে ছিলেন হান্নান সরকার। ডিপিএল শেষে গেল মাসে কাজ করেছেন ক্লেমন ক্রিকেটের সঙ্গে। তবে সদ্য এবার ভক্ত-সমর্থকদের সুখবর দিলেন হান্নান সরকার। আবারো বিসিবিতে ফিরেছেন সাবেক এই ক্রিকেটার। এর আগে বয়সভিত্তিক ও জাতীয় দলের নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করলেও এবার বয়স ভিত্তিক দলের কোচের দায়িত্ব নিলেন হান্নান। অনূর্ধ্ব-১৭ দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন হান্নান। মূলত কোচিং করানোর ইচ্ছার কারণেই নির্বাচকের দায়িত্ব ছেড়েছিলেন হান্নান। ফলে বিসিবির অধীনে কোচিংয়ে দায়িত্ব পেয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত তিনি। জানিয়েছেন নিজের সেরাটা দিয়ে কাজ করতে চান। এদিকে গেল মাসে জানা গিয়েছিল ২০২৬ মৌসুমের ডিপিএলে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের প্রধান কোচের ভূমিকায় দেখা যাবে হান্নানকে। এর আগে চলতি বছরের শুরুতে বিসিবির নির্বাচকের পদ থেকে সরে আসেন হান্নান। সবমিলিয়ে ৮ বছর ৮ মাস বিসিবিতে নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৬ সালে বয়সভিত্তিক দল দিয়ে যাত্রা শুরু, সবশেষ দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের নির্বাচকের পদেও।

২৭ বছর পর শিরোপা খরা ঘুচলো দক্ষিণ আফ্রিকার

১৯৯৮ সালের পর আইসিসি ইভেন্টে কোনও শিরোপার স্বাদ পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। তার ওপর সেমিফাইনাল কিংবা ফাইনাল হলেই হৃদয় ভাঙার যন্ত্রণায় পুড়তো। যে কারণে চোকার্স তকমা গায়ে লেগে গিয়েছিল প্রোটিয়াদের। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া হওয়ায় বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও তেমন শঙ্কা জেগেছিল। কিন্তু না এবার আর কোনও ভুল হয়নি। ক্রিকেট তীর্থ লর্ডসে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ২৭ বছরের শিরোপা খরা ঘুচিয়েছে তেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়ারা সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে ঘরে তুলেছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ২৮২ রানের লক্ষ্যে গতকালকেই মঞ্চ প্রস্তুত করে ফেলেছিল প্রোটিয়ারা। এইডেন মারক্রাম সেঞ্চুরি তুলে ১০২ রান নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। সঙ্গী অধিনায়ক বাভুমা নামেন ৬৫ রানে। চতুর্থ দিনের শুরুতে তেম্বা বাভুমা আর ১ রান যোগ হতেই কামিন্সের বলে বিদায় নেন। দ্রুত সময়ে স্টার্কের বলে ত্রিস্টান স্টাবস (৮) বোল্ড হলে কিছুটা রোমাঞ্চ ছড়ালেও মারক্রামের দৃঢ়প্রতিরোধে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে ফেরার সুযোগ পায়নি। অবশ্য প্রোটিয়ারা যে মানসিকভাবে চাপে পড়েছিল এর প্রমাণ শেষ ৬৯ রান তুলতে ধীর গতিতে এগিয়েছে তারা। লেগেছে ২৭.৪ ওভার! মারক্রাম দলের ২৭৬ রানে পঞ্চম উইকেট হিসেবে ফিরলেও ততক্ষণে জয়ের একেবারে কাছে প্রোটিয়া দল। জয়ের মঞ্চ গড়ে দেওয়া মারক্রাম ১৪ চারে ১৩৬ রানে সাজঘরে ফেরেন। বাকি পথটা টেনে নেন ডেভিড বেডিংহ্যাম (২১*) ও কাইল ভেরেইন (৪*)। নিঃসন্দেহে এটি দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন ‍যুগের সূচনা। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের বাধা পার হয়ে ফাইনাল খেলেছিল। এবার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে এলো চূড়ান্ত সাফল্য। অথচ গত কয়েক দশকে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে জয়ের দ্বারপ্রান্তে গিয়েও বেশ কয়েকবার ব্যর্থ হওয়ায় অনাকাঙ্ক্ষিত চোকার্স তকমা অর্জন করে তারা। সংক্ষিপ্ত স্কোর অস্ট্রেলিয়া ২১২ (স্মিথ ৬৬, ওয়েবস্টার ৭২; রাবাদা ৫/৫১, ইয়ানসেন ৩/৪৯) ও ২০৭ (ক্যারি ৪৩, স্টার্ক ৫৮*; রাবাদা ৪/৫৯, এনগিদি ৩/৩৮) দক্ষিণ আফ্রিকা ১৩৮ (বাভুমা ৩৬, বেডিংহ্যাম ৪৫; কামিন্স ৬/২৮) ও ২৮২/৫ (মারক্রাম ১৩৬, বাভুমা ৬৬) ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা: এইডেন মারক্রাম।

কাবরেরাকে পদত্যাগ করতে মতামত দিলেন বাফুফের কর্মকর্তা

এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। এই হারের পর জাতীয় দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরাকে নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই স্প্যানিশ এই কোচের পদত্যাগ দাবি করেছেন। শনিবার রাজধানীর রাওয়া ক্লাবে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি তাবিথ আউয়াল ও কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এই সভায় বাফুফে ও জাতীয় দল কমিটির সদস্য শাখাওয়াত হোসেন ভুইয়া শাহীন প্রকাশ্যে কাবরেরার পদত্যাগ দাবি করেন। তিনি বলেন, 'জাতীয় দল কমিটির সদস্য হিসেবে আমি কাবরেরার পদত্যাগ চাই। তাকে সরিয়ে ১৮ কোটি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।' আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে শাহীনের এমন দাবিতে বেশ বিব্রত হয়েছেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। তিনি বলেন, ‘যেটা হয়েছে সেটা অপ্রত্যাশিত। এটা নিয়ে আমরা ইন্টারনালি আলোচনা করবো।’ তবে বাফুফে এখনো কাবরেরার ভবিষ্যৎ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। হাভিয়ের কাবরেরার সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত, যা এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত বহাল রয়েছে। বাফুফে সূত্রে জানা গেছে, কাবরেরাকে এখনই বরখাস্ত করা হচ্ছে না। তবে জাতীয় দল কমিটির পরবর্তী সভায় সিঙ্গাপুর ম্যাচে হারের কারণ জানতে চাওয়া হবে এই স্প্যানিশ কোচের কাছে। উল্লেখ্য, হাভিয়ের কাবরেরার সঙ্গে বাফুফের চুক্তির মেয়াদ রয়েছে ২০২৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত, অর্থাৎ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। তাকে এখন বরখাস্ত করলে চুক্তিভিত্তিক ক্ষতিপূরণ বাবদ বাড়তি অর্থ গুণতে হতে পারে ফেডারেশনকে। জাতীয় দলের টানা ব্যর্থতা ও সিঙ্গাপুরের কাছে হারের পর সমর্থকদের হতাশা প্রকাশ পাচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। তবে বাফুফে এ বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী কমিটির সভা পর্যন্ত।

‘আমি শান্তকে সাহায্য করেছি, সেও আমাকে করবে’, বললেন মিরাজ

অনেকটা চমকের জন্ম দিয়ে নাজমুল হোসেন শান্তর জায়গায় ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজকে বেছে নিয়েছে বিসিবি। নেতৃত্বের এই রদবদলের প্রক্রিয়ায় কিছু বিতর্ক দেখা দিলেও মিরাজের আশা, শান্তর কাছ থেকে পূর্ণ সাহায্য পাবেন তিনি। বয়সভিত্তিক পর্যায়ে অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে একসঙ্গে খেলছেন মিরাজ ও শান্ত। ২০১৬ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে শান্তর অধিনায়ক ছিলেন মিরাজ। জাতীয় দলে ঢোকার পর আবার গত প্রায় তিন বছর শান্তর নেতৃত্বে খেলেছেন তিনি। শ্রীলঙ্কা সফরের টেস্টের পর ওয়ানডে সিরিজেও সেটিই হওয়ার কথা ছিল। হুট করেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শান্তকে ওয়ানডের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার খবর জানায় বিসিবি। এর আগে দুপুরে বোর্ড পরিচালকদের জরুরি জুম মিটিংয়ে নেওয়া হয় অধিনায়ক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত। তখনই প্রথম অধিনায়কত্ব পাওয়ার বার্তা পান মিরাজ। মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক নিজেই। “গতকাল (ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন) ফাহিম স্যার ডেকে নিয়ে বলেছেন, 'তোমাকে আমরা এরকম দায়িত্ব দেওয়ার কথা চিন্তা করছি। খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেহেতু সামনে খেলা আছে, ওয়ানডে দলটা ঠিক করতে হবে। আমরা সেভাবে পরিকল্পনা করছি।' তখন তিনি আমাকে জানিয়েছেন (অধিনায়কত্বের কথা)।” বিসিবির বিবৃতিতে মিরাজকে দায়িত্ব দেওয়ার পেছনে নিজেদের ভাবনা জানান নাজমুল। তবে হুট করেই শান্তকে সরিয়ে দেওয়ার পেছনে বোর্ডের ভাবনা কী ছিল, সেই ব্যাখ্যা দেননি। মিরাজেরও ধারণা নেই কী কারণে অধিনায়ক বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড। তবে সামনেও যদি এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেই ব্যাপারে আগে থেকেই মানসিক প্রস্তুতি রাখছেন ২৭ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। “আমি জানি না, তারা (বোর্ড) কীভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি যতটুকু জানি বোর্ড সভার মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত হয়। কেউ একা নিতে পারে না। অনেক সময় পরিস্থিতি তো ঘটে। আমরা সবাই সবসময় সেভাবে মানসিক প্রস্তুতি নেই।” এরই মধ্যে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে, বোর্ডের এমন আচমকা সিদ্ধান্ত ভালোভাবে নেননি শান্ত। এমনকি টেস্টের দায়িত্বও ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন তিনি। মিরাজের সংবাদ সম্মেলনে তাই প্রশ্ন ওঠে, অধিনায়কত্ব বদলের প্রক্রিয়ার নেতিবাচক প্রভাব দলের মধ্যে পড়বে কিনা? উত্তরে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার জানালেন, শান্তর কাছ থেকে পূর্ণ সমর্থন পাওয়ার বিশ্বাস আছে তার। “আমার মনে হয়, ড্রেসিং রুমে এরকম কোনো প্রভাব পড়বে না। দিন শেষে সবাই দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলি। শান্ত ও আমার মধ্যে এগুলো কখনোই কাজ করবে না। ও যখন অধিনায়কত্ব করেছে, আমি অনেক সাহায্য করেছি। আশা করি, সেও আমাকে করবে। ওর সঙ্গে আমার এই কথাই হয়েছে।” “ও আমাকে একটা কথা বলেছে, 'অধিনায়কত্ব নিয়ে আমি কখনও আলাদা কিছু ফিল করিনি।' আশা করি আমার ভেতরেও এই জিনিসটা আসবে না। বাংলাদেশের হয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করব। একটা ভালো জায়গায় বাংলাদেশকে দাঁড় করাতে চাই।” ওয়ানডেতে গত কয়েক বছর ধরে ধুঁকছে বাংলাদেশ। হতাশার প্রায় চরম সীমায় নেমে এখন আইসিসি র‍্যাঙ্কিংয়ের দশ নম্বরে অবস্থান করছে তারা। সাম্প্রতিক সময়ের এই ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে সদ্য সাবেক অধিনায়ক শান্তর সঙ্গে মিলে কাজ করতে চান মিরাজ। “(শান্তর সঙ্গে) কথা হয়েছে। ওর সঙ্গে ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে ক্রিকেট খেলছি। অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে একসঙ্গে আছি। আমাদের যে জিনিসটা মনে হয়, অধিনায়ক তেমন ম্যাটার করে না। দল হয়ে খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ।” “ওর সঙ্গে যখনই কথা হয়েছে, দুজনে এটাই আলোচনা করেছি বাংলাদেশকে কত দূর নিয়ে যেতে পারি। সিনিয়র ক্রিকেটার যারা ছিলেন তারা একটা পর্যায়ে এনেছেন। এখন আমাদের দায়িত্ব, বাংলাদেশ দলকে একটা জায়গায় দাঁড় করানোর। এখন একটু খারাপ সময় যাচ্ছে। আশা করি এটা দ্রুত কেটে যাবে ইনশাল্লাহ।”

বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচের নিয়মে পরিবর্তন আনছে এমসিসি

বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচ নেওয়া অথবা ছক্কা বাঁচাতে গিয়ে অনেক সময় শরীরের ভারসাম্য থাকে না ফিল্ডারদের। তাই অনেক সময় বলটি ওপরে ছুড়ে দিয়ে সীমানা পেরিয়ে আবার সীমানার বাইরে থাকতেই লাফ দিয়ে বলটি হাতের ধাক্কায় আবারও ওপরে ছুড়ে দিয়ে সীমানার ভেতরে ফেরত পাঠান এবং তারপর ক্যাচটি নেন কিংবা ছক্কা বাঁচান ফিল্ডাররা। এইভাবে ক্যাচ নিতে গিয়ে কিংবা ছক্কা বাঁচাতে গিয়ে ফিল্ডাররা অনেক সময় বাউন্ডারি সীমানার বাইরে একাধিকবার শূন্যে লাফিয়েও বল হাত দিয়ে স্পর্শ করেন। এবার এই নিয়মে আসছে পরিবর্তন। ক্রিকেটের আইনপ্রণেতা সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) নতুন নিয়ম অনুযায়ী এভাবে ক্যাচ নেওয়া কিংবা ছক্কা বাঁচানো আর বৈধ থাকছে না। ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো জানিয়েছে, চলতি মাসের শেষ দিকে নতুন এ নিয়ম কার্যকরের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে। আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশনে নিয়মটি সংযুক্ত হবে চলতি মাসেই। এরপর এমসিসির বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত হবে আগামী বছরের অক্টোবরে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, একজন ফিল্ডার বাউন্ডারি সীমানার বাইরে লাফিয়ে শুধু একবারই বল স্পর্শ করতে পারবেন। এরপর সীমানার ভেতরে ঢুকে তাকে ক্যাচ নিতে হবে। ২০২৩ সালে বিগ ব্যাশে সিডনি সিক্সার্সের জর্ডান সিল্কের ক্যাচ বাউন্ডারি সীমানার বাইরে (লাফিয়ে) দ্বিতীয়বার স্পর্শ করে সীমানার ভেতরে ফেরত পাঠান ব্রিসবেন হিটের মাইকেল নেসের। শূন্যে লাফিয়ে বলটি দ্বিতীয়বার স্পর্শ করে তিনি সীমানার বাইরেই পা রাখেন এবং দৌড়ে ভেতরে ঢুকে ক্যাচটি নেন। এমসিসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী এমন ক্যাচ আর বৈধ হবে না। নেসেরের নেওয়া ক্যাচ নিয়ে আলোচনা শুরু হলে তিনি জানিয়েছিলেন, ২০২০ বিগ ব্যাশে ম্যাথু ওয়েডের ক্যাচ অনেকটা এভাবেই নিয়েছিলেন ম্যাট রেনশ। সেই ক্যাচ দেখেই প্রেরণা পান নেসের। সে সময় দুটি ক্যাচের বৈধতা নিয়েই বিতর্ক হয়েছিল। তখন অনেকেই বলেছিলেন, বাউন্ডারি সীমানার ক্যাচের নিয়ম পাল্টানো হোক, যেটা সর্বশেষ হালনাগাদ করা হয়েছে ২০১০ সালে। চলতি বছরের শুরুতে ক্যাচ নেওয়ার প্রশ্নবিদ্ধ এই নিয়ম পুনরায় যাচাইয়ের জন্য এমসিসি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিল আইসিসির ক্রিকেট কমিটি। এরপর দুই পক্ষই এ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করে এবার সেটি হালনাগাদ করল। এ বিষয়ে এমসিসির সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা প্রতিটি সদস্যদেশের বোর্ডের কাছে পাঠিয়েছে আইসিসি। সেখানে বলা হয়েছে, বর্তমান নিয়মের অধীন ‘অসাধারণ’ ফিল্ডিং দেখা গেলেও সেটা ‘অস্বাভাবিক কিছু ক্যাচেরও জন্ম দিয়েছে, যা সিংহভাগ ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টদের চোখে অবৈধ’। নেসেরের ক্যাচের উদাহরণ টেনে এমসিসি বলেছে, ব্রিসবেন হিটের এই ফিল্ডার সীমানার ‘ভেতরে’ ক্যাচটি নেওয়া সম্পন্ন করার আগে ‘বানি হপড’ (ছোট্ট লাফ) করেছেন। ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘এমসিসি নতুন আইন করেছে, যেখানে সীমানার বাইরে “বানি হপড” পুরোপুরি নির্মূল করা হয়েছে। তবে এসব ক্যাচে ফিল্ডার সীমানার ভেতরে থেকে বল শূন্যে ছুড়ে দিয়ে বাইরে পা রাখার পর ক্যাচটি ধরতে ডাইভ দিয়ে ফিরতে পারবেন। আমাদের সমাধান হলো, সীমানার বাইরে চলে যাওয়া ফিল্ডারকে শূন্যে থাকতে একবারই বল স্পর্শ করতে দেওয়ার সীমারেখা বেঁধে দেওয়া এবং তারপর ডেলিভারিটির বাকি সময় সম্পন্ন করতে সীমানার ভেতরে থাকতে হবে।’ রিলে অর্থাৎ একাধিক ফিল্ডার মিলে ক্যাচের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম কার্যকর হবে। বাউন্ডারি সীমানার বাইরে বল স্পর্শ করা ফিল্ডারকে সীমানার ভেতরে ফিরতে হবে তার সতীর্থ ক্যাচ নিলেও। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের মধ্যকার গল টেস্ট দিয়ে শুরু হবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র। এই ম্যাচের সঙ্গে আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশনও হালনাগাদ করা হবে। নতুন এই নিয়ম কার্যকর হবে আগামী বছরের অক্টোবর থেকে।

শ্রীলঙ্কা পৌঁছেছেন সব ক্রিকেটার

গল টেস্ট দিয়ে শুরু হচ্ছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ সিরিজ। সেই টেস্টের আগে দুই ভাগে দেশ ছেড়েছেন টাইগার ক্রিকেটাররা। বৃহস্পতিবার প্রথম বহরে বাংলাদেশ স্কোয়াডের ১০ জন গিয়েছিলেন। আজ শুক্রবার দুপুরে রওনা হয়ে শ্রীলঙ্কা পৌঁছেছেন দলের বাকি ক্রিকেটার এবং কোচিং স্টাফের সদস্যরা। শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট সিরিজের জন্য ১৬ সদস্যের দলে ইনজুরি কাটিয়ে প্রায় দুই বছর পর ফিরেছেন এবাদত হোসেন। আগামী ১৭ জুন থেকে গলে শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। ২৫ থেকে ২৯ জুন কলম্বোতে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টটি। এরপর ২, ৫ ও ৮ জুলাই হবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে। ওয়ানডে সিরিজের পর হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ১০, ১৩ ও ১৬ জুলাই তিন টি-টোয়েন্টি।

নিজেকে প্রমাণ করতে বিগব্যাশে বাবর আজম

গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকেই পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ দেয়া হয়েছে অভিজ্ঞ ব্যাটার বাবর আজমকে। পিসিবি সম্প্রতি ঘোষণা করেছে, এ মুহূর্তে পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি দলে বাবর আজমের প্রয়োজন নেই। দেশের জাতীয় দলে সুযোগ না পাওয়ায় নিজেকে প্রমাণের মিশনে নেমেছেন বাবর। নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিগ ব্যাশ লিগের ১৫তম আসরে নতুন একটি দলে দেখা যাবে পাকিস্তানের এই ব্যাটারকে। বিগ ব্যাশ লিগের আসন্ন মৌসুমে সিডনি সিক্সার্সের হয়ে খেলতে দেখা যাবে বাবর আজমকে। সিডনি সিক্সার্স তাদের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে বাবরকে অন্তর্ভূক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে। প্রথমবারের মতো বাবর এই টুর্নামেন্টে অংশ নিতে চলেছেন। এই পাক তারকা ব্যাটারকে সিডনি সিক্সার্স প্রাক-ড্রাফট স্বাক্ষর হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। বিগব্যাশে বিদেশি খেলোয়াড়দের জন্য ড্রাফট আগামী ১৯ জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। লিগের নিয়ম অনুসারে, বিগ ব্যাশের সব ফ্র্যাঞ্চাইজি ড্রাফটের আগে একজন করে বিদেশি খেলোয়াড়কে সই করতে পারবে। বাবর আজম ছাড়াও স্টিভ স্মিথ, জ্যাক এডওয়ার্ডস, বেন ডোয়ার্শুইস, শন অ্যাবট, জোয়েল প্যারিস, মইসেস হেনরিখসহ অনেক ভালোমানের ক্রিকেটারকে দিয়ে শক্তিশালী দলই এবারের বিগ ব্যাশে সিডনি সিক্সার্সকে দেখা যাবে। সিডনি সিক্সার্সে যোগদানের পর, দলটির প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বাবর আজম বলেন, ‘আমি সত্যিই খুশি যে আমি বিশ্বের সেরা টি-টোয়েন্টি লিগগুলির মধ্যে একটিতে খেলতে যাচ্ছি। এটি সবচেয়ে সফল এবং সম্মানিত ফ্র্যাঞ্চাইজি। আমি আমার দলের সাফল্যে অবদান রাখতে চাই। আমি ভক্তদের সঙ্গে একটি সংযোগ তৈরি করতে চাই এবং এই অভিজ্ঞতা পাকিস্তানে আমার বন্ধু, পরিবার এবং সমর্থকদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই।’ বাবর আজম ছাড়াও, শাদাব খান, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাহিন শাহ আফ্রিদি এবং হারিস রউফকেও বিগ ব্যাশ লিগের আগামী মৌসুমে খেলতে দেখা যেতে পারে। আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিতব্য বিদেশি ড্রাফটে এ সকল খেলোয়াড়ের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং সব কিছু নির্ভর করবে, কোনও ফ্রাঞ্চাইজি তাদেরকে দলে নেয় কি না, তার উপর। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাবর আজম এখনও পর্যন্ত ৩২০টি ম্যাচ খেলেছেন এবং সম্প্রতি ২০২৫ সালের পাকিস্তান সুপার লিগে পেশোয়ার জালমির অধিনায়কত্ব করেছেন। এই মৌসুমে পেশোয়ার জালমির পারফরম্যান্স খুবই খারাপ ছিল। কিন্তু জালমির হয়ে বাবর সবচেয়ে বেশি রান করেছেন। তিনি ১০ ইনিংসে ১২৮-এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ২৮৮ রান করেছেন।

ফিফা র‌্যাংকিংয়ে পাঁচ ধাপ উন্নতি বাংলাদেশ নারী ফুটবলের

মেয়েদের ফিফা র‍্যাংকিংয়ে বড় লাফ দিয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার হালনাগাদ করা ফিফা র‍্যাংকিংয়ে পাঁচ ধাপ উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের। ১৩৩তম স্থান থেকে এগিয়ে ১২৮তম স্থানে উঠে এসেছেন আফিদা খাতুনরা। ২০১৯ সালের পর এটাই র‍্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের র‍্যাংকিংয়ে সেরা অবস্থান। ছয় বছর আগে জুলাইয়ে ১৩০তম স্থানে ছিল বাংলাদেশ। র‌্যাঙ্কিংয়ে সেরা তিনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষেই আছে। পরের দুই ধাপে আছে স্পেন ও জার্মানির নারী ফুটবল দল। ব্রাজিল চার ধাপ এগিয়ে উঠে এসেছে চতুর্থ স্থানে। মূলত জর্ডান সফরে পারফরম্যান্সের পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। সফরে স্বাগতিক জর্ডানের সঙ্গে ২–২ ও ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে গোলশূণ্য ড্র করেছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। যথাক্রমে ৩৯ ও ৫৯ ধাপ এগিয়ে থাকা ইন্দোনেশিয়া ও জর্ডানকে রুখে দেওয়ায় বাংলাদেশের র‌্যাঙ্কিং পয়েন্ট ১০৯২ থেকে বেড়ে ১০৯৯.৩৬ হয়েছে। প্রভাব পড়েছে ইন্দোনেশিয়া, জর্ডানের র‌্যাঙ্কিংয়েও। দুটি দলই এক ধাপ পিছিয়েছে, জর্ডান এখন ৭৫তম, ইন্দোনেশিয়া ৯৫তম।

ওয়ানডের নতুন অধিনায়ক মিরাজ

জাতীয় ক্রিকেট দলে তিন ফরম্যাটের জন্য তিন অধিনায়ক বেছে নিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। শ্রীলঙ্কা সফরের আগে ওয়ানডে অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজকে। তাকে আপাতত এক বছরের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। লিটন দাসকে টি-২০ অধিনায়ক করা হয়েছে। নাজমুল শান্ত আরও এক বছর টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দেবেন বলে শ্রীলঙ্কা সফরের আগেই নিশ্চিত করেছে বিসিবি। এর আগে তিন ফরম্যাটে নাজমুল শান্ত বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন। তার নেতৃত্বে টি-২০ বিশ্বকাপ খেলেছে বাংলাদেশ। ওই টুর্নামেন্ট শেষে টি-২০র নেতৃত্ব ছাড়তে চেয়েছিলেন তিনি। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও অধিনায়ক ছিলেন শান্ত। সেখানে ভালো করতে পারেনি দল। মিরাজকে ওয়ানডের অধিনায়ক করার বিষয়ে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম বিসিবির বার্তায় বলেছেন, ‘বোর্ড মনে করছে ব্যাটে-বলে মিরাজের পারফরম্যান্স, মাঠে তার লড়াই করার সামর্থ্য ও দলকে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষমতা তাকে অধিনায়ক হওয়ার আদর্শ প্রার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই ফরম্যাটে তার বিচক্ষণতা ও পরিপক্কতা দলকে এগিয়ে নেবে।’ মিরাজ এর আগে নাজমুল শান্তর অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশ দলকে চার ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি দেশের জার্সিতে ১০৫টি ওয়ানডে খেলেছেন। আইসিসির ওয়ানডের অলরাউন্ডার র‌্যাংকিংয়ে চারে আছেন। ওয়ানডেতে অন্তত এক হাজার রান করা ও একশ’ উইকেট নেওয়া চতুর্থ বাংলাদেশি ক্রিকেটার মিরাজ। ওয়ানডের নেতৃত্বভার পেয়ে উচ্ছ্বসিত মিরাজ বিসিবির বার্তায় বলেছেন, ‘বোর্ডের থেকে নেতৃত্বভার পাওয়া আমার জন্য অনেক সম্মানের। যেকোন ক্রিকেটারের জন্য দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া স্বপ্নের মতো। বোর্ড আমার প্রতি আত্মবিশ্বাস দেখানোয় আমি কৃতজ্ঞ। এই দলের ওপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। নির্ভীক ক্রিকেট খেলার মতো প্রতিভা ও সামর্থ্য আমাদের আছে। দেশের জন্য আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আমরা নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলতে চাই।’

ঢাকায় অনুষ্ঠেয় সাফে খেলবে না ভারত

ঢাকায় আগামী মাসের ১১ জুলাই শুরু হবে মেয়েদের অনূর্ধ্ব-২০ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। উদ্বোধনী দিন বাংলাদেশের মেয়েরা শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে। তবে শেষ সময়ে আসর থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত। সাফ সূত্রে জানা গেছে, ভারতের ফুটবল ফেডারেশন এই টুর্নামেন্টে অংশ না নেওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সাফকে জানিয়েছে। তবে কী কারণে তারা টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করেছে তা জানা যায়নি। ভারত না আসায় টুর্নামেন্টটি হবে বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভুটানকে নিয়ে। চার দল হওয়ায় টুর্নামেন্টের ফরম্যাট বদলে একে অন্যের সঙ্গে দু’বার রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে খেলবে। একটি দল ছয়টি করে ম্যাচ পাবে। শীর্ষ পয়েন্টধারী দল পাবে শিরোপা। নারী সাফ অনূর্ধ্ব-২০ টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। ভারত না আসায় ঘরের মাঠে টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের মেয়েদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেড়েছে। এর আগে টুর্নামেন্টটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে যায়। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) টুর্নামেন্টটি জাতীয় স্টেডিয়ামে আয়োজন করতে চেয়েছিল। কিন্তু মাঠ সংস্কারের কারণে টুর্নামেন্টটি বসুন্ধরা কিংসের ঘরের মাঠ কিংস অ্যারেনায় হবে।

এশিয়ান কাপের চাবি এখনও হামজা শোমিতদের হাতেই

চারদিকেই যেন হতাশার মেঘ। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে বাংলাদেশের ফুটবল আবার মুখ থুবড়ে পড়েছে, অনেকে এমনটাই ভাবছেন। কিন্তু কাগজে-কলমে দেখলে কিছুই শেষ হয়ে যায়নি। বরং এশিয়ান কাপে খেলার স্বপ্নটা এখনো বেঁচে আছে। আর সেই স্বপ্ন পূরণের চাবিটা এখনো হামজা চৌধুরীদের হাতেই রয়েছে। বাংলাদেশ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডে 'সি' গ্রুপে পড়েছে ভারত, সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের সঙ্গে। প্রতিটি দলই দুটি করে ম্যাচ খেলেছে। পয়েন্ট টেবিলে সিঙ্গাপুর ও হংকং ৪ পয়েন্টে এগিয়ে, তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে বাংলাদেশ ও ভারত আছে ১ পয়েন্ট করে নিয়ে। হিসাব জটিল মনে হলেও বাস্তবতা পরিষ্কার, বাকিটা নির্ভর করছে বাংলাদেশের নিজেদের পারফরম্যান্সের ওপর। বাংলাদেশ যদি পরের চার ম্যাচে জয় পায়, তাহলে পয়েন্ট দাঁড়াবে ১৩। সেটা কি যথেষ্ট হবে গ্রুপ সেরা হওয়ার জন্য? হতে পারে। তবে শর্ত আছে, সিঙ্গাপুর কিংবা অন্য কোনো দল যেন সমান বা বেশি পয়েন্ট না পায়। যদি পায়ও, তাহলে গোল ব্যবধানে তাদের পেছনে ফেলতে হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। বিশেষ করে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচটা হতে হবে বড় ব্যবধানে জয়। সবচেয়ে আশার কথা হলো, প্রতিপক্ষ যতই শক্তিশালী হোক না কেন, তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে নয়। ভারতের মাটিতে ভারতের সঙ্গে ড্র করে সেটারই প্রমাণ দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে আর কোনো ভুলের জায়গা নেই। হোম ম্যাচে হার, অ্যাওয়ে ম্যাচে ড্র, সব মিলিয়ে হিসাবের খাতায় এখন পর্যন্ত মাত্র ১ পয়েন্ট। ৬ ম্যাচে ১৮ পয়েন্টের খেলা, সেখানে ২ ম্যাচ শেষে ১ পয়েন্ট, চিত্রটা ভালো নয়, কিন্তু সুযোগ এখনো শেষ হয়নি। বাংলাদেশ যদি পরের ম্যাচগুলোতে জয় তুলে নিতে পারে তখন টেবিল টপার হিসেবে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী থাকবে সিঙ্গাপুর। এখানে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেই ৪৫ বছর পর এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে বাংলাদেশের পতাকা উড়ানোর স্বপ্ন বাস্তব হবে।

ক্যাবরেরার ভুলের কারণেই ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ!

বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচ ঘিরে ছিল ব্যাপক উত্তেজনা। ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জয়ের প্রত্যাশায় ছিল পুরো দেশ। কিন্তু সব আশা ভেঙে চুরমার করে দিয়ে সফরকারী সিঙ্গাপুর ২-১ ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। আর এই হারের পর জাতীয় দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরাকে এক হাত নিয়েছেন দেশের সাবেক ফুটবলার ও শীর্ষ কোচরা। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক জাহিদ হাসান এমিলি কঠোর ভাষায় কোচের সিদ্ধান্তকে দায়ী করে বলেন, ‘এই ম্যাচে জয়ের সামর্থ্য আমাদের ছিল। কিন্তু কোচের ভুল পরিকল্পনা ও অদ্ভুত খেলোয়াড় ব্যবস্থাপনার কারণে হার মানতে হয়েছে। ম্যাচে তিন পয়েন্টের মানসিকতা ছিল না শুরু থেকেই। সবচেয়ে অবাক হয়েছি যখন রাকিব গোল করলেন, তাকে পরবর্তীতে রাইটব্যাকে খেলানো হলো! ফরোয়ার্ডকে ডিফেন্সে খেলানো সত্যিই অযৌক্তিক।’ সাবেক জাতীয় ফুটবলার এবং অভিজ্ঞ কোচ জুলফিকার মাহমুদ মিন্টুও কোচের কৌশলে হতাশ, ‘গোলদাতা খেলোয়াড়কে রাইটব্যাকে খেলানোর যুক্তি আমার বোধগম্য নয়। পুরো ম্যাচেই কোনো পরিকল্পনার ছাপ ছিল না। শুরু থেকে মনে হয়েছে খেলোয়াড়রাও জানে না তাদের ভূমিকা কী।’ এ ম্যাচে আন্তর্জাতিক ফুটবলের অভিজ্ঞতা নিয়ে কানাডার সামিত সোম অভিষেক করলেও তার সৃষ্ট গোলের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। এমিলি প্রশ্ন তোলেন, ‘যখন সামিত এমন দুর্দান্ত পাস দিচ্ছে, তখন কেন প্রকৃত স্ট্রাইকার সুমন রেজা বা আল আমিনকে শুরু থেকেই খেলানো হলো না? ৬৬ মিনিটে গোল করার দশ মিনিট পর আল আমিনকে নামানো হয়, আর তখনই রাকিবকে নামানো হয় রাইটব্যাকে!’ মিন্টুও তাতে যোগ করেন, ‘সামিত কার্যকর খেলোয়াড়, তাকে কেন্দ্র করে পরিকল্পনা করা উচিত ছিল। কিন্তু তার কাছে বল পৌঁছে দেওয়ার সুনির্দিষ্ট রণকৌশল দেখা যায়নি।’ সাবেক কিংবদন্তি সৈয়দ রুম্মন বিন ওয়ালী সাব্বির বলছেন, ‘সিঙ্গাপুর খুব ভয়ঙ্কর দল ছিল না। কিন্তু আমাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ছিল চোখে পড়ার মতো। এত স্পষ্ট পরিকল্পনার অভাব শুধুই কোচের ব্যর্থতা।’ আরেক বিস্ময়ের নাম জামাল ভূঁইয়া। জাতীয় দলের নিয়মিত অধিনায়ক মাঠে নামার সুযোগ পাননি। অথচ দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ পেয়েছিল ১০টি কর্নার। এমিলির মতে, ‘জামাল স্পট কিকে দেশের সেরা, তবুও তাকে নামানো হয়নি। এটা চরম অব্যবস্থাপনা।’ জাতীয় দলের সাবেক ফরোয়ার্ড এবং লিগ চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানের কোচ আলফাজ আহমেদ ভুটানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে পারফর্ম করা তাজউদ্দিনকে মূল দলে না রাখায় বিস্মিত। তিনি বলেন, ‘তাজউদ্দিন ভালো খেলেও বাদ পড়েছেন, জামালকে খেলানো হয়নি, রাইটব্যাকে তপুকে খেলানো হয়েছে, মিডফিল্ডার কাজেমকে উইংয়ে। এসব দেখে বোঝা যায় কোচ নিজেও বুঝতে পারছিলেন না কে কোথায় উপযুক্ত।’ গোলরক্ষক মিতুলের দুটি গোল হজম নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এমিলির বিশ্লেষণ, ‘দুটি গোলেই গ্রিপে ভুল ছিল, তার পরে ডিফেন্ডাররাও সময় পেয়েও প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেনি।’ সবচেয়ে বিতর্কিত ছিল সাদ উদ্দিনের নাম থাকা। সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে তাকে মাঠে ফেরানো হয় কোচের চাহিদায়। অথচ ম্যাচে ছিলেন কার্যত নিষ্ক্রিয়। দ্বিতীয় গোলের সময় তাকে দেখা গেছে দর্শকের ভূমিকায়। এই ম্যাচের পর সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে স্প্যানিশ কোচ ক্যাবরেরা। তার অধীনে বারবার ভুল সিদ্ধান্ত, কৌশলের অদক্ষতা ও দল নির্বাচনে বিতর্ক নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন সাবেকরা। অক্টোবরে পরবর্তী বাছাইয়ের আগে কোচের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি উঠছে এখনই। বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা এখন প্রশ্ন তুলছেন—কোচ বদল হবে কবে? দলের সামর্থ্য থাকলেও কৌশলের অভাবে যদি এমন হার হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ কতটা অন্ধকার তা ভাবতেই শঙ্কা জাগে।

সিঙ্গাপুর ম্যাচের ব্যর্থতায় নিজেকেই দোষারোপ মিতুল

জাতীয় দলের গোলপোস্টের নিচে যিনি ছিলেন নির্ভরতার প্রতীক, সেই মিতুল মারমা গতকালের ম্যাচ খেলছেন নিজের জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করে। একদিকে দেশের হয়ে ম্যাচ, অন্যদিকে বড় ভাইয়ের মৃত্যু—দুটি বিপরীতধর্মী বাস্তবতার ভার নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। ৪ জুন ভুটানের বিপক্ষে জয় পাওয়ার পর যখন দলের মধ্যে স্বস্তির বাতাস বইছে, তখনই মিতুলের জীবনে নামে শোকের ছায়া। ৬ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের চার দিন আগেই বড় ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ পান রাঙামাটির ছেলে মিতুল। তবে এই শোকেও দলের প্রতি তার দায়িত্ববোধের কমতি ছিল না। জাতীয় দলের ক্যাম্প না ছেড়ে থেকে গেছেন দলের সঙ্গে, চালিয়ে গেছেন অনুশীলন। ভাই হারানোর কষ্ট সয়ে খেলা শেষে আজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক আবেগঘন বার্তায় মিতুল লিখেছেন, ‘আমার জীবনের সবচেয়ে দুঃখজনক মুহূর্তগুলো আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। বড় ভাইকে হারানোর পর সত্যিই হৃদয় ভেঙে গিয়েছিল। তবু দেশের হয়ে খেলতে চেয়েছি, মনোযোগ দিতে চেয়েছি পারফরম্যান্সে। চেষ্টা করেছি, কিন্তু পারিনি। এজন্য আমি দুঃখিত এবং সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।’ সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশ ২-১ গোলে হেরেছে। ম্যাচে দুটি গোল হজম করলেও, দুটি নিশ্চিত গোল ঠেকিয়ে দেন মিতুল। তবে ম্যাচের পর নিজের ভুলের দায় স্বীকার করে নেন অকপটে। জাতীয় দলের কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা তার ওপর আস্থা রেখেছিলেন যৌক্তিক কারণেই। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর হয়ে ১৫ ম্যাচে ৯টি ক্লিন শিট রেখে নিজেকে প্রমাণ করেছেন আগেই। সেখান থেকেই জাতীয় দলে জায়গা এবং গোলপোস্টের দায়িত্ব পান মিতুল। কিন্তু ব্যক্তিগত শোক আর ম্যাচ হারার কষ্টে ভেঙে পড়েননি তিনি, বরং প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে জানান দিয়েছেন—এই ব্যর্থতা তাঁকে আরও দৃঢ় করবে। আগামী অক্টোবরে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ রয়েছে হংকংয়ের বিপক্ষে। ৯ অক্টোবর ঢাকায় এবং ১৪ অক্টোবর হংকংয়ের মাটিতে হবে ম্যাচ দুটি। সেই ম্যাচগুলিতে সুযোগ পেলে নতুন উদ্যমে মাঠে ফিরতে চান মিতুল। ‘বিশ্বাস রাখুন, আমি আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসব,’—ফেসবুক পোস্টের শেষে এমনটাই লিখেছেন আত্মবিশ্বাসী এই তরুণ। ভাইয়ের শোক, ম্যাচ হারার কষ্ট, আর নিজের দায়বোধ—সব মিলিয়ে এক ভারী বাস্তবতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন মিতুল মারমা। তবু যেভাবে তিনি মাঠে দাঁড়িয়েছেন, সেটাই বলে দেয়—বাংলাদেশ দলের ভবিষ্যৎ গোলপোস্ট অনেকটাই নিরাপদ হাতে।

হামজা-শোমিতদের রাত কেটেছে বিষণ্ণতায়

শেষের বাঁশি বাজতে উল্লাসে মাতল সিঙ্গাপুর দল। মাঠও তারা ছাড়ল দ্রুত। কিন্তু অন্য প্রান্তে ভিন্ন চিত্র। হামজা-শোমিত-রাকিবদের যেন পা নড়ছিল না! বেশ কিছুক্ষণ তারা মাঠেই রইলেন। কেউ ঠাঁই দাঁড়িয়ে, কেউ বসে, শুয়ে মুখ ঢেকে রাখলেন। রাজ্যের বিষণ্ণতার চাদর যেন মুড়িয়ে রেখেছিল দলকে। এক পর্যায়ে গ্যালারির কাছে এসে সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে হোটেলে ফিরলেন তারা। টিম হোটেলে মঙ্গলবার রাতটি হামজা-শোমিতদের কেটেছে উচ্ছ্বাসহীন, সুনসান নীরবতায়। ঘরের মাঠে ২-১ গোলের হার মেনে নিতে পারেননি খেলোয়াড়রা। টিম হোটেলে তাদের রাতটিও বিষন্নতায় কেটেছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাথে আলাপচারিতায় জানালেন বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ হাসান আল মামুন। বিমর্ষ দলকে উজ্জীবিত করতে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা টিম মিটিংয়ে অনেক উদ্দীপনামূলক কথাও বলেছেন, বিশেষ করে মনে করিয়ে দিয়েছেন হংকংয়ের বিপক্ষে আসছে ম্যাচের কথা। “(ম্যাচের আগে) গত কয়েকদিন যে প্রাণোচ্ছল আবহ ছিল, হাসি-খুশি যে পরিবেশ ছিল, সেটা কাল রাতে ছিল না। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে সমর্থকদের, আমাদেরও প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি, কিন্তু কাঙিক্ষত ফল পাইনি আমরা। সেটা না পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই ছেলেরা হতাশ ছিল। ওরা খুব কষ্ট পেয়েছে। রাতে টিম হোটেলে ফেরার পরও তারা ছিল বিমর্ষ। একসাথে ডিনার করেছি আমরা।” “এরপর কোচ টিম মিটিংয়ে ছেলেদের উদ্দীপ্ত করতে অনেক কথা বলেছেন। এ মুহূর্তে আমাদেরই দায়িত্ব হতাশ খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করা। কোচ এবং আমরা যারা টিম স্টাফ আছি, সবাই সেই চেষ্টা করেছি নানা কথা বলে তাদেরকে অনুপ্রাণিত করতে। সামনে হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচ আছে, সেই ম্যাচে যেন আমরা ভালো করতে পারি, এজন্য তাদের মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুতি নিতে নানা পরামর্শ দিয়েছেন কোচ।” সবচেয়ে বেশি হতাশ ছিলেন হামজা চৌধুরী। বাংলাদেশের জার্সিতে গত মার্চে শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল তার। গোলশূন্য সেই ড্র ম্যাচে আলো ছড়িয়েছিলেন হামজা। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল লেস্টার সিটির এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার গোল পেয়েছিলেন ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে, বাংলাদেশও ম্যাচটি জিতেছিল ২-০ ব্যবধানে। হামজাকে ঘিরে তাই সবার প্রত্যাশার পারদ চড়েছিল উঁচুতে। এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডে প্রথম জয় পেতে মুখিয়ে ছিলেন হামজাও। কিন্তু দুই গোলে পিছিয়ে পড়া দলকে রাকিব হোসেন ম্যাচে ফেরার উপলক্ষ এনে দিলেও শেষ পর্যন্ত সমতাসূচক গোলের দেখা পায়নি দল। হাসান আল মামুন বললেন, সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচটি খুব করে জিততে চেয়েছিলেন হামজা। “এই ম্যাচ নিয়ে হামজার প্রত্যাশা ছিল অনেক। দেশের মাঠে বাছাইয়ে প্রথম জয় পেতে সে খুব উন্মুখ ছিল। ছেলেটা ভীষণ বিনয়ী, মিশুক। সবসময় হাসিখুশি থাকে। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে হারের পর স্বাভাবিকভাবেই সে খুব হতাশ ছিল। তবে, সে ভীষণ পেশাদার; এই হারের প্রভাবে মুষড়ে পড়বে না। আমার বিশ্বাস, হংকং ম্যাচের জন্য সে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবে।” সিঙ্গাপুর ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম খেলতে নেমেছিলেন শোমিত সোম। কানাডার লিগে খেলা এই মিডফিল্ডারের অভিষেকটাও হয়নি জয়ের রঙে রঙিন। ইতালির সেরি ডি’তে খেলা ফাহামিদুল ইসলামও জয়ের স্বপ্ন নিয়ে নেমেছিলেন মাঠে, কিন্তু এই তরুণ ফরোয়ার্ডও পারেনি গোলের চাহিদা পূরণ করতে। হামজার মতো তাদের রাতটি আনন্দহীন কেটেছে বলে জানালেন হাসান আল মামুন। “আপনারাও দেখেছেন, দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও কিন্তু ছেলেরা হাল ছাড়েনি। দ্বিতীয়ার্ধে ছেলেরা ভালো খেলেছে, বিশেষ করে রাকিব ব্যবধান কমানোর পর সবাই ভালো ফল পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলাম। শোমিত, ফাহামিদুলরা প্রেস করে খেলেছে, হাল ছাড়েনি।” “সবসময় আমাদের লক্ষ্য পরিষ্কার ছিল, ওদের চেপে ধরেছিল ছেলেরা, দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের পেনাল্টিটা আমাদের প্রাপ্য ছিল। আসলে ভাগ্যকেও কাল পাশে পাইনি আমরা। সব মিলিয়ে সবাই খুব হতাশ ছিল। শোমিত, ফাহামিদুল সিঙ্গাপুর ম্যাচ নিয়ে ভীষণ আশাবাদী ছিল, জয় না পাওয়ায় ভীষণ কষ্ট পেয়েছে ওরাও।” হতাশার বলয় ভেঙে বেরিয়ে আসতে বাংলাদেশ এখন তাকিয়ে অক্টোবরে হংকংয়ের বিপক্ষের ম্যাচের দিকে। ৯ অক্টোবর ঘরের মাঠে, ১৪ অক্টোবর প্রতিপক্ষের ডেরায় খেলবে দল। বুধবার ছুটিতে যাবেন কাবরেরা। ছুটি পাচ্ছেন খেলোয়াড়রাও। এই ছুটির মধ্যে সিঙ্গাপুর ম্যাচের চুলচেরা বিশ্লেষণও চলবে। খতিয়ে দেখা হবে ভুল-ত্রুটিগুলো। ‘সি’ গ্রুপের টেবিলের হিসাব কষে সাজাতে হবে ছক। এ মুহূর্তে ৪ করে পয়েন্ট সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের। বাংলাদেশ ও ভারতের পয়েন্ট ১ করে। অবশ্য টেবিলে ভারতের ওপরেই আছে বাংলাদেশ। বাছাইয়ের বাধা পেরিয়ে মূল পর্বে যেতে হলে হতে হবে গ্রুপ সেরা। পথটা কঠিন, তবে অসম্ভব নয়। এই ছুটিতে তাই হামজা-রাকিবদের মাঝের সময়ের করণীয় বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন হাসান আল মামুন। সাবেক এই ডিফেন্ডারের আশা, আরও শক্তিশালী হয়েই হংকংয়ের বিপক্ষে নামবে দল। “কাবরেরা আজ ছুটিতে যাবে। খেলোয়াড়দের অনেকে রাতেই টিম হোটেল ছেড়েছে, কেউ সকালে গেছে। হামজা-শোমিতরা সকালে হোটেল ছেড়েছে। তবে আমরা তাদের বলেছি, এই হারে সবকিছু শেষ না, আরও খেলা আছে। ছুটিতে যাও, হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য সতেজ হয়ে ফিরে এসো।”

সিঙ্গাপুরের কাছে হেরেও ভারতের ওপরে বাংলাদেশ

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। তবে একই দিন ভারতেরও হার বাংলাদেশের জন্য একটু স্বস্তির বার্তা হয়ে এসেছে। হংকংয়ে সফরে গিয়ে স্বাগতিকদের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে ইগর স্টিমাচের দল। ফলে গ্রুপ ‘সি’-তে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে নেমে গেছে ভারত। সিঙ্গাপুরের কাছে হারলেও বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। ম্যাচ শুরুর আগে ভারতের জয় নিশ্চিত করতে খেলোয়াড়দের আর্থিকভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন। হংকংকে হারাতে পারলে ভারতীয় দলকে দেওয়া হতো ৪২ লাখ রুপি। তবে সেই পরিকল্পনা মাঠে কাজে আসেনি। ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ২৬ ধাপ পেছনে থাকা হংকংয়ের কাছে হেরে গেছে যোগ হওয়া সময়ের গোলে। পেনাল্টি থেকে এই গোলটি করেন হংকংয়ের স্তেফান পেরেইরা। প্রথমার্ধে দু'দলই একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি করলেও কাজে লাগাতে পারেনি। ভারত সুযোগ পেয়েছিল এগিয়ে যাওয়ার, তবে ফিনিশিংয়ের অভাবে ব্যর্থ হয় তারা। দ্বিতীয়ার্ধে অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড সুনীল ছেত্রী নামলেও তাতেও লাভ হয়নি। এই হারে গ্রুপ ‘সি’-তে রদবদল হয়েছে পয়েন্ট টেবিলে। দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে এখন সিঙ্গাপুর। সমান পয়েন্টে গোল ব্যবধানে দুইয়ে হংকং। এক ড্র ও এক হারে ১ পয়েন্ট নিয়ে তিনে বাংলাদেশ। আর গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে এক পয়েন্টেই চার নম্বরে ভারত। বাংলাদেশকে বাছাইয়ের পরবর্তী ধাপে যেতে হলে অক্টোবরের ম্যাচগুলোতে হংকংয়ের বিপক্ষে পয়েন্ট তুলতেই হবে।

ভোরে মাঠে নামছে আর্জেন্টিনা ও সকালে ব্রাজিল

দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আগামীকাল ভোরে মাঠে নামছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ও পাঁচবারের বিশ্বজয়ী ব্রাজিল। ম্যাচে আর্জেন্টিনার লক্ষ্য জয়ের ধারা অব্যাহত রাখা, অন্যদিকে ব্রাজিলের লক্ষ্য জয়ে ফেরা। ম্যাচের সময় ও প্রতিপক্ষবাংলাদেশ সময় বুধবার (১১ জুন) ভোর ৬টায় মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে শক্তিশালী কলম্বিয়ার মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে, সকাল পৌনে ৭টায় করিন্থিয়াস অ্যারেনায় প্যারাগুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে ব্রাজিল। আর্জেন্টিনার লক্ষ্য ও প্রস্তুতিইতোমধ্যে ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত করেছে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। ১৫ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা রয়েছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। ফলে বাকি ম্যাচগুলোতে স্কালোনি একাদশে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন। তবে শক্তিশালী কলম্বিয়ার বিপক্ষে জয় ধরে রাখতে প্রস্তুত আলবিসেলেস্তেরা। চাপে ব্রাজিল, প্রয়োজন জয়বিপরীত চিত্র ব্রাজিল শিবিরে। ১৫ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে তারা রয়েছে চতুর্থ অবস্থানে। নতুন কোচ কার্লো আনচেলত্তির অধীনে প্রথম ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করেই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। তাই প্যারাগুয়ের বিপক্ষে জয় ছাড়া কোনো কিছুই ভাবছে না সেলেকাওরা। বাংলাদেশে কোথায় দেখবেন ম্যাচ?দুঃখজনকভাবে বাংলাদেশে কোনো টিভি চ্যানেল ম্যাচ দুটি সরাসরি সম্প্রচার করবে না। তবে অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ফুটবলপ্রেমীরা ম্যাচ উপভোগ করতে পারবেন। অনলাইনে সরাসরি দেখার মাধ্যম ফ্যানকোড অ্যাপ সিবিএস স্পোর্টস অ্যাপ প্যারামাউন্ট প্লাসে এছাড়া, কিছু থার্ড পার্টি অ্যাপ যেমনস্পোর্টিফাইওএইচডি স্ট্রিমজএর মাধ্যমেও মোবাইল বা অনলাইনে ম্যাচগুলো দেখা যেতে পারে। শীর্ষে থাকা আর্জেন্টিনাল পয়েন্ট ৩৪। ২৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় ইকুয়েডর। তৃতীয় স্থানে থাকা প্যারাগুয়ের পয়েন্ট ২৪ পয়েন্ট। ব্রাজিল ২২ পয়েন্ট নিয়ে অবস্থান করছে চতুর্থ স্থানে। ২১ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে উরুগুয়ে। সব দলই এখন পর্যন্ত ১৫টি করে ম্যাচ খেলেছে।

দুই লিটার পানির দাম ৬০০ টাকা চাচ্ছেন বিক্রেতারা!

এএফসি এশিয়ান বাছাইপর্বে আজ বাংলাদেশের প্রথম হোম ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে। প্রতিপক্ষ সিঙ্গাপুর, ম্যাচ শুরু সন্ধ্যা ৭টায়। কিন্তু ম্যাচের ঘণ্টা কয়েক আগেই ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামের সামনে ফুটবলপ্রেমীদের ঢল নেমেছে। এরই মধ্যে স্টেডিয়ামও কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। কিন্তু খেলা দেখতে আসা অনেকের অভিযোগ, স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে দর্শকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। হাতে দুই লিটারের পানির বোতল নিয়ে ক্ষুব্ধ এক দর্শক বলেন, ‘বাচ্চাকে স্টেডিয়ামে রেখে ১ ঘণ্টা যাবত পানি খুঁজতেছি। একটা দুই লিটারের পানির বোতল ৬০০ টাকা দাম চাইছে আমার কাছে।’ এত দাম কিভাবে সম্ভব প্রশ্ন করে তিনি নিজেই উত্তর দেন, ‘এইটা আমাদের দেশে সম্ভব। সব সম্ভবের দেশ হচ্ছে আমাদের দেশ।’ স্টেডিয়ামে আসা আরেক দর্শক জানান, ভেতরে কোনো নিয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এমনকি পানির বোতলও নয়। তিনি বলেন, খেলা শুরুর অনেক আগে স্টেডিয়ামে ঢুকেছি। খাবার-পানি নিয়ে আসতে পারেনি। এখন ক্ষুধা-তৃষ্ণা লাগলেতো এত বেশি দাম দিয়ে আমার খাবার-পানি কেনা সম্ভব নয়। আয়োজকদের উচিত ছিল দর্শকদের কথাও ভাবা। এর আগে দুপুরে দেখা যায়, তীব্র রোদ উপেক্ষা করেই স্টেডিয়ামের সব প্রবেশপথে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন হাজারো সমর্থক। পল্টন মোড় থেকে শুরু করে স্টেডিয়ামের চারপাশজুড়েই ফুটবলপ্রেমীদের সরব উপস্থিতি প্রমাণ করছে দলকে ঘিরে সাধারণ মানুষের আবেগ ও প্রত্যাশা কতটা তীব্র। ভুটান ম্যাচে ভোগান্তির স্মৃতি এখনও টাটকা। তাই এবার অনেকেই সময়মতো মাঠে আসার চেষ্টা করেছেন। পল্লবী থেকে আসা সমর্থক শাহেদ জানান, ভুটান ম্যাচে টিকিট থাকার পরেও মাঠে ঢুকতে পারিনি। এবার তাই আগেভাগেই চলে এসেছি, দলকে সমর্থন দিতে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্দেশনায়, দুপুর ২টা থেকেই গেট খুলে দেয়া হয়েছে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত সাধারণ দর্শকদের প্রবেশের সুযোগ থাকবে। জাতীয় দল আজ মাঠে নামবে জামাল ভুঁইয়া, হামজা চৌধুরী ও সমিতের নেতৃত্বে। ফুটবলপাড়া ইতোমধ্যেই ম্যাচ ঘিরে গরম, আর স্টেডিয়ামের চিত্র তারই স্পষ্ট প্রতিফলন।

হামজাদের জন্য শুভকামনা জানালেন ক্রিকেটাররাও

আর কিছুক্ষণ পরেই সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ঘিরে জাতীয় স্টেডিয়াম এলাকায় তো বটেই, সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়েছে ফুটবল উৎসবের আমেজ। সেই উত্তাপ ছুঁয়ে গেছে দেশের ক্রিকেট অঙ্গনকেও। জাতীয় দলের শীর্ষ ক্রিকেটাররাও শুভকামনা জানিয়েছেন জামাল ভূঁইয়া, হামজা চৌধুরীদের। কিছুদিন আগে জামাল ভূঁইয়া সামাজিক মাধ্যমে একটি প্রতীকী বার্তা দেন। সেখানে হামজা চৌধুরী, ফাহমিদুল ইসলাম, শমিত সোম, তারিক কাজী ও শাহ কাজেমের সঙ্গে তোলা একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি। ছবির বিশেষত্ব—প্রতিটি ফুটবলারের নামের পাশে যুক্ত ছিল তাদের পারিবারিক শিকড়ের দেশের পতাকা এবং বাংলাদেশের পতাকা। ফুটবলের এই 'বৈচিত্র্যে ঐক্য'র বার্তাটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে। জাতীয় দলের সাবেক পেসার রুবেল হোসেন সেই ছবিটি শেয়ার করে লেখেন, ‘শুভকামনা বাংলাদেশ!’ অন্যদিকে, জাতীয় দলের পেসার খালেদ আহমেদ আজকের ম্যাচ সামনে রেখে হামজা, ফাহমিদুল ও শমিতের ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘আজকের ম্যাচের জন্য বাংলাদেশের জন্য শুভকামনা।’ সবচেয়ে বড় বার্তা এসেছে সাবেক অধিনায়ক ও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের কাছ থেকে। তিনি বলেন, ‘সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য হামজাকে শুভ কামনা। আমি আশা করি, হামজা নিশ্চয়ই বাংলাদেশকে গর্বিত করবে।’ হামজাও নিরুত্তর থাকেননি। সাকিবের শুভকামনার উত্তরে এই প্রবাসী-বংশোদ্ভূত মিডফিল্ডার বলেন, ‘তাকে (সাকিব) অসংখ্য ধন্যবাদ। এই শুভেচ্ছাবার্তা আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার। কারণ তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের একজন কিংবদন্তি।’ এই ম্যাচ শুধু ফুটবল ম্যাচ নয়—এ যেন পুরো দেশের সম্মিলিত আবেগের প্রতিফলন। মাঠে নামছে ১১ জন, কিন্তু পেছনে আছে কোটি সমর্থক। আর সেই তালিকায় যুক্ত হচ্ছেন দেশের তারকা ক্রিকেটাররাও। আজ সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হতে যাওয়া লড়াইয়ের আগে ফুটবলারদের জন্য যে বার্তাটি স্পষ্ট—তারা একা নয়, গোটা বাংলাদেশ তাদের পাশে।

যেভাবে ঘরে বসে দেখবেন বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচ

আজ সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর। এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনায় ফুটবলপাড়া তেতে উঠেছে বহু আগেই। মাঠে ঢোকার জন্য দুপুর থেকেই দেখা গেছে সমর্থকদের ভিড়, তবে যারা গ্যালারিতে যেতে পারছেন না, তাদের জন্যও রয়েছে খুশির খবর—ঘরে বসেই সরাসরি দেখা যাবে লাল-সবুজের এই লড়াই। মাঠে না গিয়ে যারা খেলা দেখতে চান, তাদের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম টি-স্পোর্টস। দেশের একমাত্র খেলাধুলাবিষয়ক এই চ্যানেলটি আজকের ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে। ম্যাচপূর্ব আলোচনা শুরু হয়েছে আর সরাসরি খেলা শুরু সন্ধ্যা ৭টায়। কেবল টিভি ছাড়াও খেলা দেখা যাবে টি-স্পোর্টস-এর অফিশিয়াল অ্যাপেও। তবে তার জন্য আপনার সাবস্ক্রিপশন থাকতে হবে। লাইভ সম্প্রচারের সময় অনলাইনে ভিড় বেশি থাকার সময় বাফারিং হতে পারে তাই ধৈর্য ধরা ভালো। অফিসিয়াল ম্যাধ্যম ছাড়াও কিছু অনলাইন জনপ্রিয় স্ট্রিমিং অ্যাপেও সহজেই লাইভ ম্যাচ দেখতে পারবেন। অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস দুই প্ল্যাটফর্মেই পাওয়া যায়। সঙ্গত কারণেই অ্যাপের নাম বলা হচ্ছে না। তবে অনলাইনে খেলা দেখতে হলে ভালো ইন্টারনেট সংযোগ থাকা জরুরি। ম্যাচ চলাকালে একাধিক ব্যবহারকারী স্ট্রিমিংয়ে থাকেন বলে মাঝে মাঝে বাফারিং হতে পারে। যারা লাইভ দেখতে পারবেন না, তারা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে), কালবেলা-স্পোর্টস ও অন্যান্য ক্রীড়াবিষয়ক ফেসবুক পেজ হ্যান্ডেল থেকে নিয়মিত স্কোর আপডেট ও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের খণ্ডচিত্র পেয়ে যাবেন। বিশেষ করে #BANvSGP হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে থাকছে লাইভ বিশ্লেষণ ও ভক্তদের প্রতিক্রিয়া। ফুটবল মাঠে না গেলেও ঘরে বসেই তৈরি হচ্ছে উৎসবের মেজাজ। পতাকা, জার্সি আর ভুভুজেলার সঙ্গেই টিভি কিংবা মোবাইলের পর্দায় চোখ রেখে গলা ফাটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন অনেকেই। জয় যে শুধু মাঠেই নয়, ঘরে বসেও লাল–সবুজের প্রতি ভালোবাসা জানানো যায়—সেটাই প্রমাণ করবেন হাজারো দর্শক।

নতুন বিসিবি সভাপতিকে নিয়ে যা বললেন মুশফিক

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি হিসেবে গেল মাসে নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) থেকে বিসিবির পরিচালক হিসেবে অনুমোদন পান। এরপর বিসিবির জরুরি সভায় পরিচালকদের ভোটে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক এই অধিনায়ক। দায়িত্ব গ্রহণের পর সব পরিচালকদের নিয়ে করেন বৈঠক। জানান ঢাকার বাইরে বিসিবির অফিস করার কথাও। বিসিবি সভাপতি অবশ্য এই মুহূর্তে দেশের বাইরে। গতকাল সারা দেশব্যাপী পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহা। বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম পরিবারের সঙ্গে ঈদ পালন করতে বর্তমানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়াতে। সভাপতি যেমন ঈদের ছুটিতে আছেন পরিবারের কাছে। তেমন ছুটিতেই আছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাও। ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ঈদ পালন করেছেন নিজ শহর বগুড়াতে। সেখানে মুখোমুখি হয়েছিলেন গণমাধ্যমের। পরে কথা বলেছেন নতুন বিসিবি সভাপতিকে নিয়ে, 'এর আগে যারা ছিলেন অনেকেই তো পুরোদোস্তর ক্রিকেটার ছিলেন। আসলে দায়িত্বটা কে কতটুকু করছে তারপরে আসলে বিচার করা যায়। কে আগে আসছে তারপর ওরকম করে আসলে বলা যায় না।' নতুন সভাপতির অধীনে দেশের ক্রিকেটের উন্নতিটাই কাম্য মুশফিকের, ‘আপনি যেটা বললেন যে উনি আমাদের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান এবং অনেক বড় মাপের একজন ক্রিকেট প্লেয়ার ছিলেন। আমরা ছোটবেলা থেকেই তাদের খেলা দেখে বড় হয়েছি আকরাম ভাই, বুলবুল ভাই উনারা যারা সবাই ছিলেন। তো আশা করব উনি দেশের জন্য এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটার জন্য অনেক ভালো কিছু করবেন। যাতে পরবর্তীতে বাংলাদেশ ক্রিকেট অনেক উপকৃত হয়।'

বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচের নিরাপত্তায় সোয়াট

চার বছর পর জাতীয় স্টেডিয়ামে ফিরেছে আন্তর্জাতিক ফুটবল। ৪ জুন ভুটানের বিপক্ষে ২-০ গোলে জেতে বাংলাদেশ। তবে ওই ম্যাচে ঘটে বিশৃঙ্খলা—দর্শকরা গেট ভেঙে ঢুকে পড়েন স্টেডিয়ামে, মাঠে ঢুকে পড়েন তিনজন সমর্থকও। এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে ১০ জুন বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে বাফুফে। সোমবার (৯ জুন) স্টেডিয়ামে মহড়া দেবে পুলিশের বিশেষ ইউনিট সোয়াট। পরদিন ম্যাচেও নিরাপত্তায় থাকবে এই বাহিনী। বাফুফে কম্পিটিশন কমিটির চেয়ারম্যান গোলাম গাউস জানিয়েছেন, ‘আজ স্টেডিয়ামের বিভিন্ন গেট ও ভেতরের অংশ পরিদর্শন করা হয়েছে। কাল সকাল ১১টায় সোয়াটের মহড়া রয়েছে। ডিএমপির সঙ্গেও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’ বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় নিরাপত্তা ঘাটতির কারণে আগেও জরিমানার মুখে পড়েছে বাফুফে। জাতীয় স্টেডিয়ামে ফের ফুটবল ফেরায় এবার কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না ফেডারেশন। গোলাম গাউস বলেন, ‘ভুটান ম্যাচের চেয়ে এবার নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনায় আরও বেশি লোক থাকবে।’ ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে সিঙ্গাপুর ম্যাচ নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। অনেকে গ্যালারিতে খেলা দেখতে পারবেন না। তাদের কথা বিবেচনায় চট্টগ্রামে বড় পর্দায় খেলা দেখানোর উদ্যোগ নিয়েছে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ফর্টিজ এফসি।

আরসিবির বিজয় উৎসবে নিহত ১১: কোহলির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (আরসিবি) আইপিএল শিরোপা উদ্‌যাপন ঘিরে ১১ জনের প্রাণহানি হয়। এ ঘটনায় বিরাট কোহলির নামে এক ব্যক্তি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার বিরুদ্ধে ‘আইপিএলের মাধ্যমে জুয়া’ প্রচার করে ভিড় উসকে দেওয়ার জন্য দায়ী করা হয়েছে। তবে বেঙ্গালুরু পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়নি। প্রাণহানির ঘটনায় এরই মধ্যে যে মামলা হয়েছে, সেটির চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হবে। গত ৩ জুলাই আইপিএলের শিরোপা জেতে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু (আরসিবি)। পরদিন বুধবার বিরাট কোহলিদের বরণ করে নিতে গিয়ে প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ আসে ব্যাঙ্গালুরুর চেন্নাস্বামি স্টেডিয়ামে। সেখানে হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন। এছাড়াও আহত হন অন্তত ৫০। আজ রোববার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮–এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় সমাজকর্মী এইচ এম ভেঙ্কটেশ কাবন পার্ক থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। ভেঙ্কটেশ অভিযোগপত্রে লিখেছেন, কোহলি আরসিবি দলের একজন বিশিষ্ট সদস্য হিসেবে ‘আইপিএলের মাধ্যমে জুয়া’ প্রচার করে ভিড় উসকে দেওয়ার জন্য দায়ী। তার দাবি, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ বা আইপিএল ‘কোনো খেলা নয়, বরং জুয়া, যা ক্রিকেট খেলাকে কলুষিত করেছে।’ দলের বিজয় উদ্‌যাপনের সময় বিপুলসংখ্যক ভক্তের ভিড় তৈরিতে কোহলির ভূমিকা এই বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী, যা পরবর্তী সময়ে পদদলিত হওয়ার ঘটনা সৃষ্টি করেছে বলে দাবি ভেঙ্কটেশের। তিনি অভিযোগ করেন, বেঙ্গালুরু দলের জুয়ায় অংশ নেওয়া এবং একটি নির্দিষ্ট স্থানে লোক জড়ো হতে উসকানি দিয়ে এ দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপট তৈরি করেন কোহলি। অতএব আমরা আপনাকে অনুরোধ করছি, দয়া করে বিরাট কোহলি এবং তার দলের সদস্যদের এই দুর্ঘটনার এফআইআরে অভিযুক্ত করুন এবং ব্যবস্থা নিন।’ তবে বেঙ্গালুরু পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগটি গৃহীত হলেও এই পর্যায়ে কোনো নতুন এফআইআর দায়ের করা হবে না। একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এরই মধ্যে দায়ের করা একটি মামলার অধীন চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হবে।’ আরসিবির উদ্‌যাপনে প্রাণহানির ঘটনায় পুলিশ যে মামলা করেছে, সেখানে বিবাদী করা হয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ফ্র্যাঞ্চাইজি, কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন এবং ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডকে। এ তিন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে অবহেলা, ভিড় ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতা এবং প্রয়োজনীয় অনুমতি ছাড়াই অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য দায়ী করা হয়েছে। এরই মধ্যে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ঈদের নামাজে জামাল-হামজারা

আজ শনিবার সারাদেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদ উল আযহা। তবে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ফুটবলারদের ঈদ কাটছে জাতীয় দলের ক্যাম্পে। আগামী ১০ জুন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ঢাকায় সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ। সেই ম্যাচ সামনে রেখেই প্রস্তুত হচ্ছেন জামাল ভূঁইয়ারা। দেশের দায়িত্ব পালনের জন্য জামাল-হামজাদের ঈদ কাটাতে হচ্ছে জাতীয় দলের ক্যাম্পে। তবে ক্যাম্পেই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন জাতীয় দলের ফুটবলাররা। সবাই একসাথে ঈদের নামাজও আদায় করেছেন। বাংলাদেশ দল রাজধানী ঢাকার শাহবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অবস্থান করছে। হোটেল নিকটবর্তী মসজিদে সকাল সাতটার ঈদ জামাতে অংশ নেন হামজা-জামালরা। বাফুফের পক্ষ থেকে দলের সবাইকে সাদা পাঞ্জাবি উপহার দেওয়া হয়েছে। বাফুফের পাঞ্জাবি পরেই সবাই নামাজ আদায় করেছেন। বাফুফের তিন নির্বাহী সদস্য ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ, সাখওয়াত হোসেন ভুইয়া শাহীন ও ইকবাল হোসেন দলের সঙ্গে নামাজ পড়েছেন। নামাজ শেষে মুসল্লিদের সঙ্গে কোলাকুলি করেছেন বাংলাদেশ দলের ফুটবলাররা। হোটেলে ফিরে ফুটবলাররা একে অন্যের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। সকালে বাংলাদেশ দলের নিয়মিত নাস্তার পাশাপাশি ঈদের জন্য মেন্যুতে ছিল সেমাই। এদিকে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ থাকায় আজ ঈদের দিনের অনুশীলন আছে জামজাদের। তবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ছুটি পেয়েছেন জামালরা। এই সময়ে ফুটবলাররা পরিবারকে সময় দিতে পারবেন বা ক্যাম্পের বাইরে থাকতে পারবেন। জাতীয় স্টেডিয়ামে বিকেল পাঁচটা থেকে সাতটা পর্যন্ত অনুশীলন করবেন ফুটবলাররা। জাতীয় পুরুষ দলের মতো নারী ফুটবল দলও এশিয়ান কাপ মিশনে রয়েছে। জুনের তৃতীয় সপ্তাহে মিয়ানমারে এশিয়ান কাপ বাছাই। আসন্ন ম্যাচ সামনে রেখে অনেক নারী ফুটবলারও রয়েছেন ক্যাম্পে।

লা লিগার বর্ষসেরা বার্সেলোনার রাফিনিয়া

লড়াইটা অনুমিতই ছিল আগে থেকে। সেটাই হয়েছে। লামিনে ইয়ামাল এবং রাফিনিয়া বার্সেলোনার দুই সতীর্থই ছিলেন স্প্যানিশ লা লিগার সেরা খেলোয়াড়ের দৌড়ে। শেষ পর্যন্ত রাফিনিয়াই পেয়েছেন সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। লামিনে ইয়ামাল অবশ্য বঞ্চিত হননি। সেরা অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবলারের পুরস্কার পেয়েছেন বার্সার এই তরুণ সেনসেশন। বলতে গেলে, মৌসুম জুড়ে ধারাবাহিকভাবে দারুণ পারফরম্যান্স করার স্বীকৃতিটাই পেয়েছেন রাফিনিয়া। এবারের লা লিগার সেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। লামিনে ইয়ামালকে নিয়ে বার্সেলোনার ঘরোয়া ট্রেবল জয়ে বড় অবদান রেখেছেন রাফিনিয়া। লা লিগা কর্তৃপক্ষ গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মৌসুম সেরাদের নাম ঘোষণা করে। চলতি মৌসুমে শুরুর দিকে পিছিয়ে থাকলেও শেষদিকের দুর্দান্ত ছন্দে লা লিগা শিরোপা পুনরুদ্ধার করে বার্সেলোনা। এছাড়া রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে কোপা দেল রে ও স্প্যানিশ সুপার কাপ জেতে তারা। যদিও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইন্টার মিলানের কাছে হেরে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছে তাদের। সবমিলিয়ে এবারের মৌসুমে বার্সার জার্সিতে ৫৭ ম্যাচ খেলে ৩৪ গোল করেন রাফিনিয়া। পাশাপাশি সতীর্থদের ২৫টি গোলে রাখেন অবদান। ২০২২ সালে লিডস ইউনাইটেড থেকে বার্সেলোনা যোগ দেন রাফিনিয়া। প্রথম দুই মৌসুমে বাজে ফর্মে থাকলেও ২০২৪-২৫ মৌসুমে কোচ হান্সি ফ্লিকের কোচিংয়ে নিজেকে সেরারূপে মেলে ধরেন তিনি। সম্প্রতি ২৮ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের সঙ্গে ২০২৮ সাল পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে স্প্যানিশ ক্লাবটি। অন্যদিকে অনূর্ধ্ব-২৩ ক্যাটাগরিতে সেরা হয়েছেন লামিনে ইয়ামাল। স্প্যানিশ এই ফরোয়ার্ড সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫৫ ম্যাচ খেলে ১৮ গোল করেছেন, অ্যাসিস্ট আছে ২৫টি। সবশেষ নেশন্স লিগের সেমিতেও ছিলেন দুর্দান্ত। ১৭ বছরেই তাকে ব্যালন ডি’ অরের যোগ্য বিবেচনা করছেন অনেকেই।