
সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে মাদকমুক্ত দেশ গড়তে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জনগণের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করে সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। ২৬ জুন ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষ্যে বুধবার (২৫ জুন) দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।” তিনি বলেন, ‘মাদকের পাচার ও অপব্যবহার একটি বহুমুখী ও জটিল সমস্যা। আমাদের যুব সমাজের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আজ মাদকের কবলে পড়ে মেধা ও সৃজনশীলতা হারিয়ে ফেলছে। মাদকের অপব্যবহারের ফলে জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতিসহ জীবন ঘনিষ্ঠ বিভিন্ন উপাদান ও সূচকের ওপর চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিঘ্নিত হচ্ছে দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা।’ প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে মাদকের বিস্তার রোধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ডসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং মাঠ প্রশাসনকে সম্মিলিতভাবে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে। মাদক নির্মূলে গণসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি মাদক সমস্যা নিরসনে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংগঠন, সুশীল সমাজ, শিক্ষক, অভিভাবক, ধর্মীয় নেতা, ছাত্রছাত্রী, চিকিৎসক, সমাজকর্মী, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াসহ সব শ্রেণি পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে গৃহীত সব কর্মসূচির সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করেন।

রথযাত্রা উপলক্ষে রাজধানীতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ডিএমপির নির্দেশনা
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র রথযাত্রা উপলক্ষে রাজধানীতে কিছু সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখতে নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। বুধবার (২৫ জুন) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ জুন (শুক্রবার) বিকেল ৩টায় রথযাত্রা এবং ৫ জুলাই (শনিবার) বিকেল ৩টায় উল্টো রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। এই উপলক্ষে যেসব সড়কে রথযাত্রার শোভাযাত্রা চলবে, সেগুলো হলো: স্বামীবাগ আশ্রম থেকে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির স্বামীবাগস্থ ইসকন মন্দির, জয়কালী মন্দির থেকে ইত্তেফাক মোড় শাপলা চত্বর হয়ে দৈনিক বাংলা মোড় ও বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট পল্টন মোড় থেকে প্রেস ক্লাব হয়ে কদম ফোয়ারা, হাইকোর্ট মাজার, দোয়েল চত্বর, শহীদ মিনার, জগন্নাথ হল, পলাশী হয়ে ঢাকেশ্বরী মন্দির পর্যন্ত ডিএমপি জানায়, ওই দিনগুলোতে বিকেল ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এসব সড়কে যানবাহনের চাপ এড়াতে চালক ও যাত্রীসাধারণকে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রথযাত্রার রুটে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও সহায়তা প্রদান করবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

৬ হাজার কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন পেল ডিএনসিসি
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৬,০৬৯ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে। বুধবার (২৫ জুন) গুলশান নগর ভবনে অনুষ্ঠিত ডিএনসিসির ৭ম কর্পোরেশন সভায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন করা হয়। এ বাজেটে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬,০৬৯ কোটি টাকা এবং ব্যয় প্রাক্কলনও ৬,০৬৯ কোটি টাকা। ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরের বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩,৬৩৬ কোটি টাকা, যা মোট বাজেট আয়ের ৬০ শতাংশের সমপরিমাণ। সভায় ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, রাজস্ব আদায়ের উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করাটা নিঃসন্দেহে একটি চ্যালেঞ্জ হবে। তবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন প্রস্তুত। ব্যয়ের ক্ষেত্রে নতুন সৃষ্ট ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে মোট বাজেটের প্রায় ৭৬ শতাংশ, অর্থাৎ ৪,৬২৪ কোটি টাকা উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সড়ক ও অবকাঠামো উন্নয়নে, যেখানে ২,০৩২.৫০ কোটি টাকা, অর্থাৎ বাজেটের ৩৩ শতাংশ বরাদ্দ রয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে, যা টাকার অঙ্কে ৪৩৬.৩০ কোটি টাকা এবং মোট বাজেটের ৮ শতাংশ।।মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১৮৭.৭৫ কোটি টাকা, যা বাজেটের ৩ শতাংশ। এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও পারিশ্রমিক বাবদ বরাদ্দ করা হয়েছে ২৫৭ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৪ শতাংশ। ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরের হোল্ডিং ট্যাক্স, পরিচ্ছন্নতা, লাইটিং ও স্বাস্থ্য খাত থেকে মোট রাজস্ব আয়ের ৪৫ শতাংশ আদায়ের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া সম্পত্তি হস্তান্তর খাত থেকে ১,০৮০ কোটি টাকা, অর্থাৎ প্রায় ৩০ শতাংশ আয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে। অবশিষ্ট অর্থ সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা ও অনুদানের মাধ্যমে সংগ্রহের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সভায় ডিএনসিসির সব ওয়ার্ডে কর্মরত “ওয়ার্ড সচিব” পদবির নাম পরিবর্তন করে “ওয়ার্ড সুপারভাইজার”, “ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর” অথবা “ওয়ার্ড অর্গানাইজার” নামকরণের প্রস্তাব প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য প্রেরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

এনসিসির প্রস্তাব থেকে সরে এসেছে ঐকমত্য কমিশন: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) প্রস্তাব থেকে সরে এসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর পরিবর্তে ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় এ কথা জানান তিনি। আলী রীয়াজ জানান, সংশোধিত এ কমিটিতে সভাপতিত্ব করবেন নিম্নকক্ষের স্পিকার। প্রস্তাবিত এ কমিশনের সদস্য থাকবেন সাত জন। অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, এ কমিটির সদস্য হিসেবে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, নিম্ন ও উচ্চকক্ষের স্পিকারদ্বয়, বিরোধী দলীয় নেতা, অন্য যেকোনো দলের একজন প্রতিনিধি, রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি এবং প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন কর্মকর্তা। এবং এতে সভাপতিত্ব করবেন নিম্নকক্ষের স্পিকার। তিনি আরো বলেন, এর আগে এনসিসিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি থাকার প্রস্তাব করা হয়েছিল। সংশোধিত ও নতুন প্রস্তাবিত এই কমিটিতে তারা থাকবেন না। কমিটির কাজ হবে অ্যাটর্নি জেনারেল ও তিন বাহিনীর প্রধানের নিয়োগ ব্যতীত অন্য সব সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা। প্রস্তাবিত কমিটিতে থাকবেন- প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার (নিম্নকক্ষ), স্পিকার (উচ্চকক্ষ), বিরোধীদলীয় নেতা, প্রধান বিরোধী দল ছাড়া অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর একজন প্রতিনিধি, রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি (আইনের মাধ্যমে নির্ধারিত যোগ্যতাসম্পন্ন), প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি। সভাপতিত্ব করবেন নিম্নকক্ষের স্পিকার। এ সময় জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই সনদ প্রস্তুত করার তাগিদ জানিয়ে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে রাষ্ট্রীয় স্বার্থে অন্ততপক্ষে কিছুটা হলেও ছাড় দিয়ে এগিয়ে আসার আহবান জানান। সেই সঙ্গে সবার সহযোগিতায় দ্রুত একটি ঐকমত্যে পৌঁছানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। বক্তব্যে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি কি কি বিষয় হবে সেটি নিয়েও আজ আলোচনার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি। এর আগে, রোববার রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি কি হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের মত পার্থক্য তৈরি হয়। এদিন কমিশনের প্রস্তাবিত মূলনীতির বিষয়ে প্রায় সব দল একমত প্রকাশ করলেও বিএনপি, জামায়াতসহ ডান ও মধ্যপন্থি দলগুলো পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দিয়ে যোগ করা ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ যুক্ত করার, ও সিপিবি, বাসদসহ কিছু বামপন্থী রাজনৈতিক দল বিদ্যমান চার রাষ্ট্রীয় মূলনীতির সঙ্গে কমিশনের প্রস্তাবিত মূলনীতি যুক্ত করার প্রস্তাব করে। এক্ষেত্রে এনসিপি বাহাত্তরের সংবিধানে রাখা চার মূলনীতি রাখার সম্পূর্ণ বিপক্ষে মত দেয়। ফলে সেদিন অমীমাংসিত থেকে যায় বিষয়টি, যা নিয়ে আজ আরো বিশদ আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। আজ দুপুরে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যাবার আগে বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, এ সকল বিষয়ে আলোচনা চলছে। অধিকতর আলোচনা শেষে এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হবে। উল্লেখ্য আজকের আলোচ্য সূচিতে রয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, নারী আসনসহ আরো বিভিন্ন অমীমাংসিত বিষয়। আজ রাজনৈতিক আলোচনায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি, জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশ, এবি পার্টি, গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।

জাতীয় পরিবেশ পদকসহ ৪ ক্ষেত্রে পুরস্কার দিল সরকার
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে জাতীয় পুরস্কার ২০২৫, জাতীয় পরিবেশ পদক ২০২৪, বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কার ২০২৪ এবং সামাজিক বনায়নে সর্বোচ্চ লভ্যাংশপ্রাপ্ত উপকারভোগীদের মাঝে পুরস্কার ও চেক বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার তুলে দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। জাতীয়ভাবে বন, প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কার্যক্রমকে উৎসাহিত করতে ২০১০ সাল থেকে চালু হওয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে জাতীয় পুরস্কারের ২০২৫ সালের চারজন বিজয়ীর মধ্যে রয়েছেন নাটোরের মো. ফজলে রাব্বী (ব্যক্তি পর্যায়), শেরপুর বার্ড কনজারভেশন সোসাইটি (প্রতিষ্ঠান পর্যায়), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. মনোয়ার হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ। প্রত্যেক পুরস্কারপ্রাপ্তকে ২২ ক্যারেট স্বর্ণপদক (দুই ভরি), এক লক্ষ টাকার চেক ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। জাতীয় পরিবেশ পদক ২০২৪ পেয়েছেন ব্যক্তি পর্যায়ে মো. মাহমুদুল ইসলাম, মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী ও প্রফেসর ড. এম. ফিরোজ আহমেদ এবং প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে স্নোটেক্স আউটারওয়্যার লি:, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। প্রতিটি পদকের সঙ্গে রয়েছে স্বর্ণের সমমূল্যের নগদ অর্থ, ৫০ হাজার টাকার চেক, একটি ক্রেস্ট ও সনদপত্র। বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কার ২০২৪-এর সাতটি শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকারীদের মধ্যে রয়েছেন লালমনিরহাটের দলগ্রাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, মিস দিলরুবা রহমান (টাঙ্গাইল), সোহেল নার্সারি (রংপুর), নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন, চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ এবং বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট। পুরস্কারের অংশ হিসেবে প্রদান করা হয় সনদ, ক্রেস্ট ও এক লক্ষ, ৭৫ হাজার এবং ৫০ হাজার টাকার চেক। এছাড়াও সামাজিক বনায়নে সর্বোচ্চ লভ্যাংশপ্রাপ্ত ১০ জন উপকারভোগীকে সম্মাননা হিসেবে চেক প্রদান করা হয়। এর মধ্যে মো. শাহাজ উদ্দিন পান ৬ লাখ ৭ হাজার ৯৫০ টাকা, উকিল মুর্মু পান ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৩২৫ টাকা, মোসা. মনোয়ারা বেগম পান ৪ লাখ ১৬ হাজার ৭০০ টাকা। এই সম্মাননাগুলো পরিবেশ ও প্রকৃতির সুরক্ষায় জনগণের অংশগ্রহণ ও উৎসাহকে আরও জোরদার করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এসময় মঞ্চে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান এবং বন অধিদপ্তরের সম্মানিত প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী প্রমুখ।

সুপারশপগুলো শতভাগ পলিথিনমুক্ত হয়েছে: পরিবেশ উপদেষ্টা
পলিথিনের ভয়াবহ কুফলের কথা বর্ণনা করে পাট, কাগজ ও কাপড়সহ এর অন্যান্য বিকল্প ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, সুপারশপগুলো শতভাগ পলিথিনমুক্ত হয়েছে। বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীতে বৃক্ষমেলা ও পরিবেশ মেলা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা জানান, প্লাস্টিক দূষণ রোধে নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে; সুপারশপগুলো শতভাগ পলিথিনমুক্ত হয়েছে। একবার ব্যবহারযোগ্য ১৭টি প্লাস্টিক পণ্যে নিরুৎসাহ এবং সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক বন্ধে কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন চলছে। এর আগে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০২৫ এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও জাতীয় বৃক্ষমেলা ২০২৫-এর উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরিবেশ মেলা চলবে ২৫ থেকে ২৭ জুন এবং বৃক্ষমেলা চলবে ২৫ জুন থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। অনুষ্ঠানে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের চলমান ও অগ্রাধিকারভিত্তিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন রিজওয়ানা হাসান। উপদেষ্টা জানান, নদী সংরক্ষণে চূড়ান্ত করা হয়েছে দেশের নদ-নদীর তালিকা। তুরাগসহ ঢাকার চারটি নদী ও ২০টি খালের জন্য ব্লু-নেটওয়ার্ক পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। বড়াল, করতোয়া, সুতাংসহ ১৫টি নদীর পুনরুদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, বন সংরক্ষণে মধুপুর শালবন ও চুনতি বন পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে। অবৈধ দখলমুক্ত হয়েছে ১১ হাজার ৪৫৯ একর বনভূমি। সোনাদিয়া উপকূলীয় বন ও রাজশাহীর দুটি জলাভূমিকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া ইটভাটা নিয়ন্ত্রণে নো-ব্রিকফিল্ড জোন গঠন ও পুরনো যানবাহন নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালানো হচ্ছে।

ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৩২৬
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩২৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বুধবার (২৫ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া দুজনই পুরুষ। আর আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ২৫৫ জনই ঢাকার বাইরের।চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছে ৩৬ জন, যাদের মধ্যে ১৯ জন পুরুষ ও ১৭ জন নারী। এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছে আট হাজার ৮৭০ জন, যার মধ্যে পাঁচ হাজার ২১১ জন পুরুষ ও তিন হাজার ৬৫৯ জন নারী। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত বছর ডেঙ্গুতে মোট ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই বছর মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১,০১,২১৪ এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিল ১,০০,০৪০ জন।

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড গোয়েন্দা-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানান, বুধবার দুপুরে ডিবি পুলিশের একটি দল মগবাজারে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে গত ২২ জুন রাজধানীর উত্তরা থেকে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২২ জুন সকালে শেরেবাংলা নগর থানায় দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনাকারী কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নুরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করে বিএনপি। দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ মামলাটি করেছেন। মামলায় সাবেক ৩ প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ২৪ জনকে আসামি করা হয়।

এত নোংরামি করার পরও ভদ্রতার লাইন ক্রস করিনি: আসিফ
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বলেছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে ঘিরে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আপত্তিকর মন্তব্য করায় তাকে নগরবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, অকারণে আমার ছবিতে জুতা মারার জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে? অনেক নোংরামি করার পরও গত দেড়মাসে একবারের জন্যও আমি ভদ্রতার লাইন ক্রস করিনি। বুধবার দুপুরে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা জানান। ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন- অকারণে আমার ছবিতে জুতা মারার জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে? - গুজবকে কেন্দ্র করে আমার পিতাকে ‘চালচোর’ বলে শ্লোগান দেওয়ার জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে? - শুরুতেই সরকারপক্ষ থেকে সমাধান চেষ্টা যারা দম্ভভরে প্রত্যাখ্যান করে ভোগান্তির জন্য দায়ী তারা ক্ষমা চেয়েছে? - নগর ভবন বন্ধ করে ১ কোটির বেশি নগরবাসীকে কষ্ট দেওয়ার জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে? - নগর ভবন দখলকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ এবং আহত হওয়ার ঘটনায় কেউ ক্ষমা চেয়েছে? - ইশরাক হোসেনের বক্তব্য অনুযায়ী উপদেষ্টা পরিষদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তের জন্য আমাকে বারবার ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ, আমার পরিবারকে আক্রমণ, জবাই করার শ্লোগান দেওয়াসহ অব্যাহত মানহানির জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে? ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, কিন্তু আমাকে ক্ষমা চাইতে হবে কারণ আমি বলেছি কয়েকজন নেতার প্ররোচনায় এই আন্দোলন হয়েছে। আমি সত্যি বলেছি এবং সত্যি যে বলেছি এটা তিনিও জানেন। তাকে যে ট্র্যাপে ফেলা হয়েছে, ফর এ্যা বেটার ন্যাগোসিয়েশন ব্যবহার করা হয়েছে তা তিনি ভালো করেই জানেন এবং আমার পরিচিত একাধিক ব্যক্তির কাছে স্বীকারও করেছেন। তিনি আরও বলেন, এত নোংরামি করার পরও গত দেড়মাসে একবারের জন্যও ভদ্রতার লাইন ক্রস করিনি। একবারও ব্যক্তি আক্রমণ করা কিংবা ছোট করে কথা বলিনি। আমার লড়াই, রাজপথ, রাজনৈতিক পথচলা কিংবা পরিবার কেউই আমাকে এই শিক্ষা দেয়নি। আমি ধৈর্য্য ধরেছি, জবাব দেইনি বলে যে এসব অন্যায় জবাবহীন থেকে যাবে এমনটা না। ইতিহাস সবাইকেই যার যার প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয়।

রিজার্ভ বাড়ায় বাজেট সাপোর্ট আসছে: অর্থ উপদেষ্টা
আমাদের রিজার্ভ বাড়ার কারণে বাজেট সাপোর্ট আসছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, বাজেট সাপোর্ট হিসেবে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক থেকে অর্থ পাওয়া এবং রপ্তানি আয় মোটামুটি ভালো হওয়া ও ভালো রেমিট্যান্স আসায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। রিজার্ভ বাড়ার কারণ কী সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, রিজার্ভ বাড়ার কারণে বাজেট সাপোর্ট আসছে। আর রপ্তানি আয় কিন্তু মোটামুটি ভালো এবং রেমিট্যান্স ভালো আসছে। যারা রেমিট্যান্স পাঠায়, ওদের কৃতিত্ব বেশি। তিনি বলেন, আমি তো কয়েক জায়গায় গেছি। সামিটে গেলাম মক্কা, মদিনায়, ওরা সাধারণ নাগরিকরা (প্রবাসী বাংলাদেশি) বলে, স্যার আপনারা আছেন বলে আমরা টাকা পাঠাচ্ছি। আগে টাকা পাঠালে কোথায় যেত, ওরা নিজেরাই জানত না। আশা করি পরবর্তী সরকারে যারা আসবেন, ওরা এটি কন্টিনিউ করবেন। আইএমএফ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের একটা সময় প্রকাশ পাওয়ায় আইএমএফসহ সবাই সন্তুষ্ট হয়েছে। আইএমএফ আমাকে প্রশ্ন করেছিল যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কি, হবে না। ওরা চিন্তা করছে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কি না? আমরা তো বলেছি হবে। রিসেন্টলি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, এডিবি, এএফডি, এআইআইবি লোন অ্যাপ্রুভ করেছে। মোটামুটি বাংলাদেশে সংস্কার কাজের প্রোগ্রেস দেখে সবাই সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, রিসেন্টলি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক অ্যাপ্রুভ করেছে, এডিবি অ্যাপ্রুভ করেছে, গত পরশু এআইআইবি বিরাট একটা অঙ্ক অ্যাপ্রুভ করেছে। আমাদের সংস্কার কার্যক্রমের যে প্রগ্রেস, তারপর অর্থনৈতিক খাতে আমরা যেটা করেছি, তারা সন্তুষ্ট বলে কোনো এজেন্সি এখনো পেন্ডিং নেই। আইএমএফ থেকে লেটেস্ট এসেছে ১.৩ বিলিয়ন ডলার। উপদেষ্টা বলেন, বিদেশি বিনিয়োগটা একটু স্লো আছে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে, বিশেষ করে বাজেট সাপোর্ট আসার কারণে ফরেন রিজার্ভটা বেড়ে গেছে। পাশাপাশি রপ্তানিটা এখন মোটামুটি ভালো। রেমিটেন্স আসছে ভালো। সৌদি আরবে গিয়ে জানলাম, সাধারণ নাগরিকরা আমরা আসছি বলেই টাকা পাঠাচ্ছে। আগে তারা টাকা পাঠাতে স্বস্তি পেত না। টাকা পাঠালে কোথায় যায় কী হয় এগুলো নিয়ে তাদের অস্বস্তি ছিল।

গুগল পে চালুর মধ্য দিয়ে অর্থ লেনদেনে নতুন যুগের সূচনা: উপদেষ্টা আসিফ
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, গুগলের ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা ‘গুগল পে’ চালুর মধ্য দিয়ে দেশের অর্থ লেনদেনে নতুন যুগের সূচনা হলো। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া পোস্টে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘অর্থ লেনদেনে নতুন যুগের সূচনা! স্বাগত জানাই গুগল পে-কে বাংলাদেশে। এখন লেনদেন হবে আরো সহজ, আরো স্মার্ট!’ মঙ্গলবার দেওয়া ওই পোস্টে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘বাংলাদেশে আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হলো গুগলের ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা ‘গুগল পে’।’

পরিবেশ সুরক্ষায় প্লাস্টিক বর্জনের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দূষণ রোধ ও পরিবেশ সুরক্ষায় প্লাস্টিক বর্জনের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্লাস্টিক পরিবেশের বিষ। এটা কেবল মানুষ নয়, পৃথিবীর সকল প্রাণির জন্য ক্ষতিকর। পৃথিবীতে প্রতিদিন মানুষ বাড়ছে বাংলাদেশেও বাড়ছে, এর সঙ্গে বাড়ছে জনপ্রতি প্লাস্টিকের ব্যবহার। আসুন, আমরা আজ থেকে মনে মনে ঠিক করি, প্লাস্টিক বর্জন করব।’ আজ বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০২৫ এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। পরিবেশ সুরক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘জীবন বাঁচাতে হলে পরিবেশ বাঁচাতে হবে। পরিবেশ ধ্বংস করা থেকে বিরত থাকতে হবে। পরিবেশ বিপর্যয় রোধ করতে পারলে আমরা সুন্দর পৃথিবী উপভোগ করতে পারব।" একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর উল্লেখ করে তিনি এর ব্যবহার বন্ধের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিক যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে সপ্তাহে অন্তত একটা দিন একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জন করে, তাহলে ক্রমান্বয়ে প্লাস্টিককের ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব হবে। এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া ছাড়া কঠিন এ পথে এগুনো যাবে না। দূষণ রোধে কেবল পলিথিন বর্জন নয়, পলিথিন উৎপাদন বন্ধ করার প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দৈনন্দিন জীবনযাপনে (লাইফস্টাইল) পরিবর্তন ছাড়া সামগ্রিক পরিবেশ বিপর্যয় অবধারিত। পরিবেশ সুরক্ষার বর্তমান তরুণ প্রজন্ম অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। পরে প্রধান উপদেষ্টা অনুষ্ঠানস্থলে একটি সোনালু গাছ লাগিয়ে বৃক্ষরোপণ অভিযানের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বক্তব্য রাখেন।

মাদকের বাহকদের ধরে লাভ নেই, গডফাদারদের ধরতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, মাদকবিরোধী অভিযানে শুধু বাহকদের ধরে সমস্যার সমাধান হবে না, তাদের পেছনের ‘গডফাদারদের’ শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। বুধবার (২৫ জুন) মাদকের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে ৩২টি বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের মধ্যে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানের পর এক সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এ বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, আপনারা যেসব দাবি করেছেন, সরকার তা পূরণ করেছে। ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার মাদক নিরাময় কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, জনবলও বাড়ানো হয়েছে। এবার সময় এসেছে গডফাদারদের ধরার। বাহকদের ধরে লাভ নেই। তিনি আরও বলেন, একটি দেশের বাহিনী সীমান্তের মাদক পাচারের ওপর পুরোপুরি নির্ভর করছে। এখান থেকে আয় করে তারা ঘর সংসার চালাচ্ছে, এটা কীভাবে বন্ধ করা যায় চেষ্টা করছি। আমরা পুরোপুরি সফল হয়েছি বিষয়টা তা নয়, তবে আমরা চেষ্টা করছি। আজকাল অনেক বদি তৈরি হয়ে গেছে তাদের কীভাবে ধরা যায় সেই চেষ্টা করছি।

পানি কনভেনশনে যুক্ত হওয়া বাংলাদেশের জন্য ঐতিহাসিক পদক্ষেপ
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘জাতিসংঘ পানি কনভেনশনে যুক্ত হওয়া বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।’ চলতি বছরের ২০ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘের ‘দি কনভেনশন অন দ্যা প্রোটেকশন অ্যান্ড ইউজ অব ট্রান্সবাউন্ডারি ওয়াটারকোর্সেস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল লেকস’ (ইউএন ওয়াটার কনভেনশন) এ বাংলাদেশ যোগ দিয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম এবং বিশ্বে ৫৬তম দেশ হিসেবে এ চুক্তিতে যুক্ত হলো। পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও পানির চাহিদা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা আরো জরুরি হয়ে উঠেছে। এই কনভেনশন আমাদের অন্তর্ভুক্তিমূলক ও কার্যকর পানি নীতিমালা প্রণয়নে সহায়তা করবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশন ও গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তিসহ একাধিক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি এবং নেপাল, চীন ও ভূটানের সঙ্গে সহযোগিতামূলক কাঠামো দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান। তিনি বলেন, জাতিসংঘ ইউরোপীয় অর্থনৈতিক কমিশনের (ইউএনইসিই) নির্বাহী সচিব তাতিয়ানা মলসিয়ান বাংলাদেশের যোগদানের প্রশংসা করে বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এটি একটি তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি। ক্রমবর্ধমান জলবায়ু চাপে আন্তঃসীমান্ত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।” উপদেষ্টা বলেন, ডেল্টা রাষ্ট্র বাংলাদেশে গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা (জিবিএম) নদী ব্যবস্থাসহ ৫৭টি আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে। পানি নিরাপত্তা, পরিবেশগত স্থিতিশীলতা এবং আঞ্চলিক শান্তির জন্য এই নদীগুলোর যৌথ ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা প্রবেশ এবং এখনো ৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষের নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশনের অভাব যৌক্তিক ও টেকসই পানি শাসনের প্রয়োজনীয়তাকে আরও ঘনীভূত করেছে। জাতিসংঘ পানি কনভেনশন আন্তঃসীমান্ত ভূ-উপরিস্থ ও ভূগর্ভস্থ পানিসম্পদের ব্যবস্থাপনায় একটি বিস্তৃত আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রদান করে। বাংলাদেশ ২০১২ সাল থেকেই এই কনভেনশনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত এবং ২০২৪ সালে স্লোভেনিয়ায় অনুষ্ঠিত এর দশম বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সকল সদস্য রাষ্ট্রকে এই কনভেনশনে যোগ দিতে ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। উপদেষ্টা আরও বলেন, জাতিসংঘ পানি কনভেনশনের সেক্রেটারি সোনিয়া কোয়েপেল বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে অন্য দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোকেও এই কনভেনশনে যোগদানের আহ্বান জানান। তিনি আগামী ২০২৬ সালের ২ থেকে ৪ ডিসেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী জাতিসংঘ পানি কনফারেন্স এর প্রেক্ষাপটে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দেন।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য সাইবার নিরাপত্তা আইন সংশোধন করেছি: আইন উপদেষ্টা
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্যই সাইবার নিরাপত্তা আইন সংশোধন করা হয়েছে। এটি ছিল দেশের সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত ও সমালোচিত আইনগুলোর একটি। আমরা অত্যন্ত পরামর্শমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এর একটি সংশোধনী প্রস্তুত করেছি। সেটি চূড়ান্তের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে কমনওয়েলথ চার্টার-বিষয়ক এক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। আসিফ নজরুল বলেন, ‘গত সরকারের আমলে এ আইনের মাধ্যমে মানুষ সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হয়েছিলেন। আইন সংশোধনের পর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের লোকেরাও যখন স্বীকার করেন, আইনটি খুব খারাপ আইন নয়, তখন তা আমার জন্য বড় বিস্ময় ছিল। যখন আপনি এমন লোকদের কাছ থেকে শোনেন, এটি খুব খারাপ আইন নয়, তার মানে এটি একটি ভালো আইন। আপনি যদি আমাদের সম্পাদিত সাইবার সুরক্ষা আইনটির অতীত সংস্করণগুলোর সঙ্গে তুলনা করেন, তাহলে জনগণকে অপব্যবহারের শিকার হওয়া থেকে সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা যাবে।’ আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘কমনওয়েলথ সনদ শুধু একটি ঘোষণাপত্র নয়, এটি একটি নৈতিক দিকনির্দেশক; যা আমাদের সীমানা ছাড়িয়ে বেঁধে রাখে। আমি আশ্বস্ত করছি, এই মূল্যবোধগুলো আমাদের বর্তমান সংস্কার প্রচেষ্টার গভীরে প্রবাহিত। কমনওয়েলথ সনদের সঙ্গে সংগতি রেখে বর্তমান সরকার সাহসী সংস্কারের পথে অগ্রসর হয়েছে।’ গত বছরের জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানকে নৈতিক আন্দোলন হিসেবে দেখার আহ্বান জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, এ অভ্যুত্থান শুধু রাজনৈতিক আন্দোলন নয়; জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণরা শুধু আগামী দিনের নেতা নন, তারাই হবেন আগামী দিনের পরিবর্তন সৃষ্টিকারী। কমনওয়েলথ চার্টার কর্মশালাটি বাংলাদেশের তরুণদের স্বপ্ন দেখাতে শেখাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কমনওয়েলথের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক লুইস ফ্রান্সেশি। নারী ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় তরুণদের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুব উল আলম। ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের উপদেষ্টা মাইকেল স্কোবি।

পানি কনভেনশনে যুক্ত হওয়া বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ : পরিবেশ উপদেষ্টা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘জাতিসংঘ পানি কনভেনশনে যুক্ত হওয়া বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।’ চলতি বছরের ২০ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘের ‘দি কনভেনশন অন দ্যা প্রোটেকশন অ্যান্ড ইউজ অব ট্রান্সবাউন্ডারি ওয়াটারকোর্সেস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল লেকস’ (ইউএন ওয়াটার কনভেনশন) এ বাংলাদেশ যোগ দিয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম এবং বিশ্বে ৫৬তম দেশ হিসেবে এ চুক্তিতে যুক্ত হলো। পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও পানির চাহিদা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা আরো জরুরি হয়ে উঠেছে। এই কনভেনশন আমাদের অন্তর্ভুক্তিমূলক ও কার্যকর পানি নীতিমালা প্রণয়নে সহায়তা করবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশন ও গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তিসহ একাধিক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি এবং নেপাল, চীন ও ভূটানের সঙ্গে সহযোগিতামূলক কাঠামো দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান। তিনি বলেন, জাতিসংঘ ইউরোপীয় অর্থনৈতিক কমিশনের (ইউএনইসিই) নির্বাহী সচিব তাতিয়ানা মলসিয়ান বাংলাদেশের যোগদানের প্রশংসা করে বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এটি একটি তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি। ক্রমবর্ধমান জলবায়ু চাপে আন্তঃসীমান্ত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।” উপদেষ্টা বলেন, ডেল্টা রাষ্ট্র বাংলাদেশে গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা (জিবিএম) নদী ব্যবস্থাসহ ৫৭টি আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে। পানি নিরাপত্তা, পরিবেশগত স্থিতিশীলতা এবং আঞ্চলিক শান্তির জন্য এই নদীগুলোর যৌথ ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা প্রবেশ এবং এখনো ৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষের নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশনের অভাব যৌক্তিক ও টেকসই পানি শাসনের প্রয়োজনীয়তাকে আরও ঘনীভূত করেছে। জাতিসংঘ পানি কনভেনশন আন্তঃসীমান্ত ভূ-উপরিস্থ ও ভূগর্ভস্থ পানিসম্পদের ব্যবস্থাপনায় একটি বিস্তৃত আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রদান করে। বাংলাদেশ ২০১২ সাল থেকেই এই কনভেনশনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত এবং ২০২৪ সালে স্লোভেনিয়ায় অনুষ্ঠিত এর দশম বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সকল সদস্য রাষ্ট্রকে এই কনভেনশনে যোগ দিতে ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। উপদেষ্টা আরও বলেন, জাতিসংঘ পানি কনভেনশনের সেক্রেটারি সোনিয়া কোয়েপেল বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে অন্য দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোকেও এই কনভেনশনে যোগদানের আহ্বান জানান। তিনি আগামী ২০২৬ সালের ২ থেকে ৪ ডিসেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী জাতিসংঘ পানি কনফারেন্স এর প্রেক্ষাপটে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দেন।

ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ হাসপাতালে ভর্তি ৩৯৪, মৃত্যু শূন্য
সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৯৪ জন। এটি চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তির রেকর্ড। মঙ্গলবার (২৪ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৫৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৮ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৫ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪২ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৫০ জন, রাজশাহী বিভাগের (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৪ জন এবং খুলনা বিভাগ (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮ জন রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছরে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মোট ছাড়পত্র পেয়েছেন সাত হাজার ৪৩০ জন। ১ জানুয়ারি থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত দেশে মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আট হাজার ৫৪৪ জন। তাদের মধ্যে ৫৮ দশমিক ৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৪১ দশমিক ২ শতাংশ নারী। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে কারো মৃত্যু হয়নি। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩৪ জন মারা গেছেন। ২০২৩ সালে সারাদেশে ডেঙ্গুতে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয় ও আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয় ৫৭৫ জনের এবং আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন।

নির্বাচনের সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
নির্বাচনের সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আজকের আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানরা নিশ্চিত করেছেন যে নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে। নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকা শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপরই নির্ভর করে না, যারা নির্বাচনের অংশ নেন তাদের ওপরও নির্ভর করে।’ মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সভাপতিত্বে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, নির্বাচন করতে যত ধরনের সাহায্য সহযোগিতা দরকার হবে, নির্বাচন কমিশনকে সেটা আমরা দেবো। নির্বাচন কমিশন জাতিকে একটা ভালো নির্বাচন উপহার দেবে এটাই আমরা সবাই আশা করি। আগামী নির্বাচনে রাতে ভোট যেন না হয়, পুলিশ কি সেটা নিশ্চিত করবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এটা শুধু পুলিশ নয়, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ পোলিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার এদেরও কিন্তু একটা ভূমিকা থাকে। এসময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রন্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ জনের করোনা শনাক্ত, নেই মৃত্যু
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। তবে এ সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যু হয়নি। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ৪৪১টি নমুনা পরীক্ষায় ২১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ৪৭৩ জন। মারা যাওয়াদের মধ্যে নারীর সংখ্যা বেশি। সোমবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়।

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট অনুষ্ঠান
২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ৩৬ দিনব্যাপী ‘জুলাই স্মৃতি উদযাপন অনুষ্ঠানমালা’ আয়োজন করা হবে। মঙ্গলবার (২৪ জুন) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় তা জানানো হয়েছে। ৩৬ দিনব্যাপী জুলাই স্মৃতি উদযাপনে যেসব অনুষ্ঠানের আয়োজন হবে সেগুলো হলো- ১ জুলাই : মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা ও গির্জাসহ অন্যান্য উপসানালয়ে শহীদদের স্মরণে দয়া ও প্রার্থনা। জুলাই ক্যালেন্ডার প্রদান (অনলাইন-অফলাইন)। জুলাই হত্যাযজ্ঞের খুনিদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি সূচনা, চলবে ১ আগস্ট পর্যন্ত৷ দুলায় শহীদ স্মরণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবৃত্তি চালু। ৫ জুলাই : বিভিন্ন সময় অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম নির্যাতন প্রচারে দেশব্যাপী পোস্টারিং কর্মসূচি চালু। ৭ জুলাই : julyforever.org নামে ওয়েবসাইট চালু। ১৫ জুলাই : ‘আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া’ শিরোনামে ১৫ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। জুলাই স্মৃতিচারণ। ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী এবং জুলাইয়ের গান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলইডি ওয়াল ইনস্টলেশন। প্রজেকশন ম্যাপিং। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন। ১৯ জুলাই : ‘কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙ্গা’ ১৯ জুলাইয়ের ভিডিও, নরসিংদী, সাভার, ঢাকাসহ সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে জুলাইয়ের তথ্যচিত্র প্রদর্শন। গণহত্যা ও ছাত্রজনতার প্রতিরোধ দিবস ২৪ জুলাই : শিশু শহীদদের স্মরণে ‘কি করেছে তোমার বাবা’ শিরোনামে ২৪ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। শিশু শহীদদের স্মরণে দেশব্যাপী কর্মসূচি। দেশব্যাপী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ‘২৪ এর রঙে গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্গন’ প্রতিযোগিতা। নারায়ণগঞ্জের শিশু শহীদ রিয়া গোপের স্মরণে অনুষ্ঠান। শিশু শহীদদের স্মরণে অনুষ্ঠান জুলাইয়ের তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও গান। শিশু একাডেমিতে জুলাইয়ের শিশু শহীদদেরকে থিম করে একটি আইকনিক ভাস্কর্য স্থাপন। শিশুদের জন্য জুলাই আন্দোলনকে উপজীব্য করে গ্রাফিক একটি নভেল প্রকাশ। ৩০ জুলাই : ‘চল চল চল’ ৩০ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। অনলাইনে জুলাই স্মরণ। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রাখা সাংবাদিকদের নিয়ে অনুষ্ঠান। ৩১ জুলাই ‘কাণ্ডারি হুঁশিয়ার’ ৩১ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। দেশব্যাপী সব কলেজে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির স্মরণে অনুষ্ঠান। ৩২ জুলাই (আগস্ট ১) ‘গণজোয়ার’ ৩২ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। ৬৪টি জেলায় জুলাই নিয়ে বানানো তথ্যচিত্র প্রদর্শন। সব বাংলাদেশি দূতাবাসে জুলাই নিয়ে বানানো নির্বাচিত তথ্যচিত্র প্রদর্শনী। ‘২৪ জুলাই ফটোগ্রাফারের চোখ দিয়ে’ কফি টেবিল বুক প্রকাশনা। জুলাই হত্যাযজ্ঞের খুনিদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির সমাপ্তি। ৩৩ জুলাই (আগস্ট ২) ‘আমি বাংলায় গান গাই’ ৩৩ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। বাংলাদেশের সব জেলার ‘জুলাইয়ের মায়েরা’ শীর্ষক বিভিন্ন অনুষ্ঠান, প্রজেকশন ম্যাপিং। ৩৪ জুলাই (আগস্ট ৩) ‘ধনধান্য পুষ্প ভরা’ ৩৪ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। শাহবাগ থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত শোভাযাত্রা। রিকশায় জুলাইয়ের গ্রাফিতি অঙ্কন ও রিকশা মিছিল। ৬৪টি জেলায় জুলাই নিয়ে বানানো তথ্যচিত্র প্রদর্শনী। ৩৫ জুলাই ( আগস্ট ৪ ) ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’ ৩৫ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। সারা দেশে জুলাই যোদ্ধাদের সমাগম, জুলাইয়ের কার্টুনের প্রদর্শনী। ৬৪টি জেলায় ‘স্পটলাইট অন জুলাই হিরোজ’ শীর্ষক তথ্যচিত্র প্রদর্শনী। ৩৬ জুলাই (৫ আগস্ট) ‘শোনো মহাজন’ ৩৬ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। ৬৪ জেলার কেন্দ্রে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ। শহীদ পরিবারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ, শহীদদের জন্য প্রার্থনা, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে বিজয় মিছিল, এয়ার শো। গানের অনুষ্ঠান, ‘জুলাইয়ের ৩৬ দিন’সহ জুলাইয়ের অন্যান্য ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, ড্রোন শো এবং র্যাপের সঙ্গে বচসা।

রাঙ্গামাটিতে ইউপিডিএফের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনী
রাঙ্গামাটির দুর্গম পাহাড়ে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার (২৪ জুন) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আইএসপিআর জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাঙ্গামাটির দুর্গম পাহাড়ে মঙ্গলবার ভোর ৪টা থেকে ইউপিডিএফ (মূল) দলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। অভিযান শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।

টিউলিপ সিদ্দিক ও তার আইনজীবী বাংলাদেশকে ছোট করছেন : দুদক
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার আইনজীবী নিজেদের দেশকে ছোট করছেন বলে মনে করছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। দুদক ব্রিটেনের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে না উল্লেখ করে আবদুল মোমেন বলেন, ব্রিটেনের রাজনীতি কি এতই ভঙ্গুর যে তার দেশের একজনের নামে মামলা হলে; আর তাতেই ব্রিটেন সরকার, রাজনীতি একেবারে ধসে পড়বে— এটা কি হতে পারে? টিউলিপের আইনজীবীকে শব্দ চয়নে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তারা নিজেদের দেশকে ছোট করছেন। প্রমাণ করছেন ব্রিটেনের রাজনীতি ভঙ্গুর। আমাদের হস্তক্ষেপের কী আছে? দুদকের কার্যপরিধিতে রাজনীতিতে যাওয়ার সুযোগ নেই। চিঠি আদান-প্রদান নয়, অন্যান্য অভিযুক্তদের মতোই আদালতে এসে টিউলিপকে মামলা মোকাবেলার আহ্বান জানান দুদক চেয়ারম্যান। সম্প্রতি টিউলিপের আইনজীবী দুদককে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, অন্তর্বর্তী সরকার ও দুদক ব্রিটেনের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমার সহজ একটা প্রশ্ন, টিউলিপ সিদ্দিকীর কেইসটা কি এমন কোনো কেইস যেটা ব্রিটেনের ভঙ্গুর রাজনীতিকে আরও ভঙ্গুর করবে। বিষয়টিকে আমরা অন্যভাবেও দেখতে পারি। চিঠিপত্রের মাধ্যমে টিউলিপ মামলা নিষ্পত্তি করতে চাইছেন জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, অপরাধী যে দেশে অপরাধ করবে তাকে সেই দেশেই তা মোকাবেলা করতে হবে। এখন মনে হচ্ছে সম্ভবত চিঠিপত্রের মাধ্যমে তিনি মামলা নিষ্পত্তি করতে চাইছেন। এটা তো হওয়ার কথা নয়। কোর্টে মামলা হচ্ছে, টিউলিপ সিদ্দিকীকে কোর্টে হাজির হয়ে মামলা মোকাবেলা করতে হবে। টিউলিপ সিদ্দিকীর মামলা কোনো রাজনৈতিক মামলা নয় জানিয়ে তিনি বলেন, এটা কোনো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা নয়। কাউকে ছোট করার মামলা নয়। অনেক আসামির মতো টিউলিপ সিদ্দিকীও একজন অভিযুক্ত। আমাদের এর চেয়েও অনেক বড় মামলা আছে। তিনি আরও বলেন, টিউলিপ আমাদের কাছে বাংলাদেশি নাগরিক। তার জাতীয় পরিচয়পত্র আছে। তার টিআইএন আছে। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে মামলা করেছি। আমার বিশ্বাস টিউলিপ বাংলাদেশের আইন মেনে মামলা মোকাবেলা করবেন। টিউলিপ গোড়া থেকেই সব জানতেন, এজন্য মন্ত্রীর পদ থেকে তাকে সরে যেতে হয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, টিউলিপের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা আছে। তার অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে। এর আগে ২৩ জুন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও দুদক ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। ইউনূস ও দুদক বরাবর পাঠানো এক উকিল নোটিশে তিনি উল্লেখ করেন, তার সুনাম ক্ষুণ্ন করাই তাদের উদ্দেশ্য। প্রসঙ্গত, দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সমালোচনার মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন লেবার এমপি টিউলিপ। তিনি যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি। ঢাকার গুলশানের একটি প্লট অবৈধভাবে হস্তান্তরের ব্যবস্থা করিয়ে দিয়ে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে ‘ঘুষ’ হিসেবে একটি ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে টিউলিপের বিরুদ্ধে গত ১৫ এপ্রিল মামলা করে দুদক। পরে গত ১৫ জুন টিউলিপকে দ্বিতীয় দফায় ২২ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে দুদক। এর আগে ১৪ মে টিউলিপকে তলব করেছিল দুদক। তবে সেই তলবি চিঠি পাচ্ছেন না বলে বিভিন্ন মাধ্যমে অভিযোগ করেছেন টিউলিপ।

হাসিনাকে উৎখাতের সেই ঐক্য বাংলাদেশে কই: মাহাথির মোহাম্মদ
দারিদ্র্য বিমোচনে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাজের প্রশংসা করলেও বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক উত্তরণ পর্ব নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী হতে পারছেন না মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে যে ঐক্য দেখা গিয়েছিল, অভ্যুত্থানের এক বছরের মাথায় সেই ঐক্য তিনি আর বাংলাদেশে দেখছেন না। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মাহাথির। কিন্তু বাংলাদেশকে আসিয়ানের সদস্য করার যে দাবি ইউনূস জানিয়ে আসছেন, তার তেমন কোনো সম্ভাবনা তিনি দেখছেন না। মালয়েশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা ড. মাহাথির মোহাম্মদ আগামী মাসেই শততম জন্মবার্ষিকী পালন করতে যাচ্ছেন। এখনও তিনি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রাজনীতিতে বিরাট এক ব্যক্তিত্ব। সরকারি কোনো পদে না থাকলেও ৯৯ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ এখনও সমান সরব; এশিয়ার নানা বিষয়, এমনকি বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক পরিবর্তন নিয়েও তার পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত তীক্ষ্ণ। গতবছর অগাস্টে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়া ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে মাহাথিরের মন্তব্য: তিনি একজন ‘বড় মাপের মানুষ’। "তিনি যা করেছেন, দরিদ্রদের জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছেন, সেজন্য নোবেল পুরস্কার তার প্রাপ্য ছিল। তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি, তিনি কেবল দরিদ্র মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন।” ইউনূসের প্রশংসা করলেও বাংলাদেশে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ নিয়ে কিছুটা সংশয় প্রকাশ করেন প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ। "মানুষ শেখ হাসিনাকে সরাতে ঐক্যবদ্ধ ছিল, কিন্তু কী ধরনের সরকার তারা চায় সে বিষয়ে ঐক্য নেই। প্রত্যেকে চায় তার নিজের মতামতই দেশের সবাই মেনে নিক। আর তাতেই সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এখন সেই লোকজনের মধ্যেই দ্বন্দ্ব দেখা দিচ্ছে, যারা আগে ঐক্যবদ্ধ ছিল।" সম্প্রতি জাপানে মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা হয় মাহাথির মোহাম্মদের। তবে সেখানে বাংলাদেশের নেতাকে কোনো পরামর্শ দেননি বলে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্য। তিনি বলেন, "আমি তার (ইউনূস) কথা শুনেছি। আমি জানি সে সমস্যায় আছে। কিন্তু বাংলাদেশ কীভাবে চলবে, তা বলার মত যোগ্যতা আমি মনে করি আমার নেই।" অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশকে আসিয়ানের সদস্যপদে দেখতে চান। কিন্তু সেই সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী নন মাহাথির। সমস্যাটা কোথায় জানতে চাইলে তার সংক্ষিপ্ত উত্তর, সমস্যাটা ‘ভৌগোলিক’। জাপানে মাহাথিরের সঙ্গে ইউনূসের সাক্ষাতের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিসের কর্মীদের পক্ষ এমন আভাস দেওয়া হয়েছিল যে, আসিয়ানে যোগ দিতে বাংলাদেশের আগ্রহের বিষয়ে মাহাথিরের সমর্থনের ইঙ্গিত মিলেছে। তবে সাক্ষাৎকারে তার ভিন্ন মনোভাবের ইংগিত মেলে। তিনি বলেন, "দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বলতে যে ভৌগোলিক সীমা এখন বোঝায়, বাংলাদেশ তা থেকে অনেক দূরে। আমাদের তো একটা ভৌগলিক সীমা মেনে চলতে হবে, না হলে আসিয়ান তো দ্বিতীয় জাতিসংঘে পরিণত হবে।" তবে বাংলাদেশ আসিয়ান প্লাস ফরম্যাটে ‘ডায়ালগ পার্টনার’ কিংবা ‘অবজারভার স্ট্যাটাসে’ আসতে পারে মত দিয়ে তিনি বলেন, "আমরা জাপান, যুক্তরাজ্য, আমেরিকার সঙ্গেও তো কথা বলি, বাংলাদেশের সঙ্গেও কথা বলা সম্ভব।” বাংলাদেশ যখন আগামী বছর নতুন নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে, তখন ১৫ বছর দেশ শাসন করা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন থেকে গেছে। ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বিতর্কিত শাসনামলের কথা বিবেচনায় নিলে আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া উচিত কি না—এ প্রশ্নে মাহাথির উত্তর দেন দার্শনিক ভঙ্গিতে। তিনি বলেন, “এটা গণতন্ত্রের একটা সমস্যা। মানুষ সবসময় সেরা লোকটাকেই বেছে নেয় না; কখনও কখনও ভুল লোককেও বেছে নেয়।” এরপর তিনি বলেন, “যদি বাংলাদেশের মানুষ চিন্তাভাবনা করে তাদের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে আমি মনে করি, তারা একটা ভালো সরকার বেছে নিতে পারবে।” রোহিঙ্গা সংকটে মালয়েশিয়ার অবস্থান নিয়েও কথা বলেন মাহাথির। রাখাইনে নিপীড়িত সংখ্যালঘু মুসলিমদের প্রতি সহানুভূতি জানালেও তিনি বলেন, মালয়েশিয়া ‘যথেষ্ট’ করেছে। "আমাদের (এর বেশি) সক্ষমতা নেই। আমরা মিয়ানমারকে বোঝাতে চেষ্টা করছি, কিন্তু সফল হইনি।" গত কয়েক মাসে রোহিঙ্গাবাহী নৌকা ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েছে মালয়েশিয়া। তবে মাহাথির বলছেন, এখন অন্য দেশগুলোর এগিয়ে আসার সময়। “আমাদের এখানে অনেক রোহিঙ্গা আছে আগে থেকেই। শুধু মালয়েশিয়া নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়া, এমনকি মিয়ানমারের পশ্চিম পাশের অন্য দেশগুলোরও সহায়তা করা উচিত। এর মধ্যে বাংলাদেশও আছে।” মাহাথিরকে যখন প্রশ্ন করা হল, বাংলাদেশ যেখানে এরইমধ্যে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে, তখন কেন বাংলাদেশকে আরো দায়িত্ব নিতে হবে? তার সরল উত্তর: “কারণ বাংলাদেশ মিয়ানমারের পাশে। স্বাভাবিকভাবে আপনি কাছের দেশে যাবেন। আপনি তো লন্ডনে যাবেন না।”

মব জাস্টিস প্রশ্রয় দেওয়া হবে না, পুলিশের গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা
কোনো ধরনের মব জাস্টিস প্রশ্রয় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে পুলিশের কোনো গাফিলতি থাকলেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে জাপানি সংস্থা জাইকার কারিগরি সহযোগিতায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিআরএসপি প্রজেক্টের অধীনে ‘সড়ক নিরাপত্তা পোস্টার ও স্লোগান’ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন ডিএমপি কমিশনার। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকায় মব জাস্টিস ঠেকাতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উত্তরায় সাবেক সিইসি নুরুল হুদাকে আটকের সময় মব সৃষ্টির ঘটনায় একজন গ্রেপ্তার হয়েছে। একটা মামলাও নিয়েছি। আমরা মব জাস্টিস অ্যালাউ করছি না। মব জাস্টিসের ঘটনায় আমরা ছিনতাই ও ডাকাতির মামলা নিচ্ছি। তিনি বলেন, মব জাস্টিসের এক-দুটি ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার কারণে পুলিশের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিন-চার মাস আগে যে পরিমাণ মব জাস্টিস ছিল এখন আর সেই পরিমাণ নেই। ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, যে বাড়িতে আসামি আছে সেই বাড়িতে হানা দেওয়া, দরজা ভাঙা বা কিছু করা— এ ধরনের ঘটনা অ্যালাউ করছি না। এ কারণে সম্প্রতি এ ধরনের ঘটনা কমে গেছে। কেউ যেন কোনো অপরাধীকে ধরার জন্য না যায়। আপনারা পুলিশকে খবর দেবেন, আমরা সেখানে যাব। আমরা তাদের ধরব। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার এখতিয়ার রাখে না। যেসব অফিসার এ ধরনের ঘটনায় ব্যবস্থা নেবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। চাঁদাবাজি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগ পেলেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আদাবর থানায় একটি চাঁদাবাজির ঘটনায় আমরা মামলা নিয়েছি এবং গ্রেপ্তারও করেছি। অনুষ্ঠানে দশ শিক্ষার্থীকে পুরস্কার তুলে দেন ডিএমপি কমিশনার। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার এবং জাইকার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।