দেশে গ্যাস সংকটের মূলে রাজনীতিবিদ আর ব্যবসায়ীরা: জ্বালানি উপদেষ্টা
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০২:২৯ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০২৫

দেশের চলমান গ্যাস সংকটের জন্য সরাসরি রাজনীতিবিদ ও তাদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের দায়ী করলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তার ভাষায়, "গ্যাস নেই জেনেও" শিল্প কারখানায় সংযোগ দিয়ে যারা ব্যক্তিস্বার্থে কাজ করেছেন, তারাই এই জটিল পরিস্থিতির জন্য দায়ী।
শনিবার, ১১ অক্টোবর, রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে এলপিজি: অর্থনীতি, পরিবেশ ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি এসব মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে বলেন, “গ্যাস খাতের সংকট একদিনে বা আপনাআপনি হয়নি। এক শ্রেণির রাজনীতিবিদ এবং তাদের সহযোগী ব্যবসায়ীরা আমাদের আজকের এই সংকটে নিয়ে এসেছে।”
তিনি তুলে ধরেন, যেভাবে প্রয়োজন ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে, অথচ সেই চাহিদা পূরণের জন্য গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। একইভাবে, বেসরকারি শিল্পখাতেও অপ্রয়োজনীয়ভাবে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে, যা ছিল দুর্নীতিপূর্ণ ও অবিচারমূলক সিদ্ধান্ত।
গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থার পার্থক্য ব্যাখ্যা করে ফাওজুল কবির খান বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ সহজে এক এলাকা থেকে আরেক জায়গায় স্থানান্তর করা গেলেও, গ্যাস বিতরণে তা সম্ভব নয়। এই খাতে ‘আগে এলে আগে পাবেন’ নীতিতে সংযোগ দিতে হয়।
সরকার সংকট উত্তরণের জন্য দু’টি পথে কাজ করছে বলে জানান উপদেষ্টা। একদিকে, এলএনজি আমদানি বাড়িয়ে গ্যাসের সরবরাহ সচল রাখার চেষ্টা চলছে; অন্যদিকে, বাপেক্সের মাধ্যমে নতুন অনুসন্ধান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, “যেখানে প্রতিবছর প্রায় ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কমে যাচ্ছে, সেখানে আমরা নতুন করে মাত্র ৭০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পেয়েছি। তবে আমরা আশাবাদী যে আরও গ্যাস পাওয়া যাবে, বিশেষ করে ভোলায়।”
এলএনজি আমদানির সীমাবদ্ধতাও তুলে ধরেন ফাওজুল কবির খান। তিনি জানান, গত বছর দেশে ১০৮টি এলএনজি কার্গো এসেছে, যেখানে সর্বোচ্চ ১১৫ কার্গো আমদানির সক্ষমতা রয়েছে।
সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে এলপিজিকে বড় একটি সমাধান হিসেবে দেখছেন উপদেষ্টা। তার মতে, এলপিজি আমদানি তুলনামূলক সহজ হলেও দাম অনেক বেশি। “১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম এখনো ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি, যা কখনো কখনো ১ হাজার ৪০০ থেকে দেড় হাজার টাকাও হয়ে যায়। কিন্তু এটি ১ হাজারের নিচে হওয়া উচিত,” বলেন তিনি।
নির্ধারিত মূল্য না মানা নিয়ে ব্যবস্থা নিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার কথাও জানান উপদেষ্টা। তিনি শিল্পখাতে এলপিজির ব্যবহার বাড়াতে উৎপাদন ও সরবরাহ খরচ কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।