ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর পরিচালনা পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (৬ এপ্রিল) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল ও প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমান, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খান, মো. আলতাফ হুসাইন ও মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

মার্চে এসেছে রেকর্ড ৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স

দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তিন বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে রেমিট্যান্স। গত মার্চ মাসে এ রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান ঢাকা ওয়াচকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, গত ডিসেম্বরে দেশের ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছিল ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে জুলাই মাসে ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এবার সেই রেকর্ড ভাঙে ২০২৪ সালের বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে। ২০২৪ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার। এবার অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে তিন বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রেমিট্যান্স।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের ফলে অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়বে তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, নতুন শুল্ক আরোপের বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে নেগোসিয়েশনের (সমঝোতা) উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ভালো কিছু হবে বলে আশাবাদী। ঈদ উপলক্ষে টানা ৯ দিনের ছুটি শেষে প্রথম কার্যদিবসে আজ রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, রমজান ও ঈদে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা গেছে, মানুষ স্বস্তি পেয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালোর দিকে যাচ্ছে। তিনি বলেন, রিজার্ভ বেড়েছে। এবার ঈদে পণ্যের দাম কম ছিল। ঈদ ভালো কেটেছে। এত দিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। ২ এপ্রিল নতুন করে আরও ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই শুল্কের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বড় বাজারটিতে পণ্য রপ্তানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বড় ধাক্কার আশঙ্কা করছেন রপ্তানিকারকেরা।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের প্রভাব সামাল দেওয়া কঠিন হবে না : অর্থ উপদেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের ফলে অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়বে তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। ঈদ উপলক্ষে টানা ৯ দিনের ছুটি শেষে প্রথম কার্যদিবস রোববার (৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে এসে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের ফলে অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়বে তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে না। এটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সঙ্গে নেগোসিয়েশনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ভালো কিছু হবে বলে আশাবাদী তিনি। রমজান এবং ঈদে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা গেছে এবং মানুষ স্বস্তি পেয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালোর দিকে যাচ্ছে, রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও উল্লেখ করেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ঈদে পণ্যের দাম কম ছিল। ঈদ ভালো কেটেছে। এতো দিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। ২ এপ্রিল নতুন করে আরও ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই শুল্কের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বড় বাজারটিতে পণ্য রপ্তানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বড় ধাক্কার আশঙ্কা করছেন রপ্তানিকারকরা। বাংলাদেশের মোট পণ্য রপ্তানির ১৮ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক বসিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ঘটনায় দুনিয়াজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ট্রাম্পের এই ঘোষণা নিয়ে বিবিসি, সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইমসসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিশ্বনেতাদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া উঠে এসেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলছে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বড় ধাক্কা। অস্ট্রেলিয়া বলছে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত বন্ধুসুলভ নয়। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, নিঃসন্দেহে এই ঘটনার অর্থনৈতিক প্রভাব অনুভূত হবে। বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট, ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করে দিলেন। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাংলাদেশের পক্ষে। আমদানির তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি অনেক বেশি। অবশ্য রপ্তানি তৈরি পোশাকের ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল, যার মধ্যে বেশিরভাগ মৌলিক আইটেম। অন্যদিকে, বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি লোহা, ইস্পাত, খনিজ জ্বালানি, তুলা, তেলবীজ ও নিউক্লিয়ার রেক্টরসহ পাঁচটি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ১০ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ৭ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার এবং দেশ থেকে আমদানি ছিল ২ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৬০১ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার মূল্যের লোহার ইস্পাত আমদানি করেছে, তারপরে খনিজ জ্বালানি ৫৯৫ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, তুলা ৩৬১ মিলিয়ন ডলার, তেলবীজ ৩৪১ মিলিয়ন ডলার ও নিউক্লিয়ার রেক্টর আমদানি করেছে ১১১ মিলিয়ন ডলারের। বাংলাদেশের রপ্তানি আয় বেশিরভাগ আসে তৈরি পোশাক থেকে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয়ের ৭ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার এসেছে তৈরি পোশাক থেকে। বাকিটা এসেছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, চামড়ার জুতা, ফার্মাসিউটিক্যালস ও বিভিন্ন কৃষিপণ্য থেকে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ছিল ৯৭০১ দশমিক ৩৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য, আমদানি ২৩৪৪ দশমিক ২৬ মিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি ১০৪১৭ দশমিক ৭২ মিলিয়ন ডলার, আমদানি ২৮২৫ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন ডলার, ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি ৬৯৭৪ দশমিক ০১ মিলিয়ন ডলার, আমদানি ২২৬৮ দশমিক ২০ মিলিয়ন ডলার, ২০১৯-২০ অর্থবছরে রপ্তানি ছিল ৫৮৩২ দশমিক ৩০ মিলিয়ন ডলার, আমদানি ২১২৬ দশমিক ১০ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রপ্তানি ছিল ৬৮৭৬ দশমিক ২৯ মিলিয়ন ডলার, আমদানি ১৭৭৩ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলার এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রপ্তানি ছিল ৫৯৮৩ দশমিক ৩১ মিলিয়ন ডলার, আমদানি ১৭০৪ দশমিক ৬৬ মিলিয়ন ডলারের পণ্য।

চলমান ঋণের শর্ত পর্যালোচনায় বৈঠক আজ

চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং ৪৭০ কোটি ডলার চলমান ঋণের শর্ত পর্যালোচনায় আইএমএফ প্রতিনিধি দলটি গতকাল শনিবার (৫ এপ্রিল) ঢাকায় পৌঁছে। আজ রোববার থেকে টানা দুই সপ্তাহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করবে তারা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বিদ্যুৎ বিভাগ, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সঙ্গে তাদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে প্রথম বৈঠকটি হবে বলে জানা গেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের চতুর্থ কিস্তি পাওয়ার কথা ছিল গত ডিসেম্বরে। তবে এখনও তা পায়নি বাংলাদেশ। সংস্থাটির একটি প্রতিনিধি দল গত ডিসেম্বরে ঢাকায় আসে। এর পর ঋণের এ কিস্তি অনুমোদনের জন্য আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদের সভায় ওঠার কথা থাকলেও দু’দফায় তা পিছিয়ে যায়। এদিকে ঋণের অন্যতম শর্ত কর আহরণের লক্ষ্যমাত্রা থেকে সরকার অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। অন্যদিকে মুদ্রার বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়েও সংস্থাটির প্রত্যাশা অনুসারে অগ্রগতি হয়নি। তবে অন্যান্য শর্ত পূরণ হওয়ায় আগামী জুনেই ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের আশা করছে সরকার। এ অবস্থায় ঋণের শর্ত বাস্তবায়ন পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ফের ঢাকায় আসছে আইএমএফ মিশন। আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি। ২০২৬ সাল নাগাদ পুরো অর্থ পাওয়ার কথা। ইতোমধ্যে তিন কিস্তি বাবদ ২৩০ কোটি ডলার ছাড় হয়েছে। এ ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশকে প্রতিটি কিস্তি পেতে কিছু শর্ত পরিপালন করতে হচ্ছে। চতুর্থ কিস্তির সাড়ে ৬৪ কোটি ডলারের জন্য গত বছরের জুনভিত্তিক বিভিন্ন শর্ত বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছিল। চতুর্থ কিস্তির জন্য দেওয়া শর্তের বাস্তবায়ন অগ্রগতি দেখতে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর ঢাকা সফরে আসে আইএমএফের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল। গত ৫ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে এ প্রস্তাব ওঠার কথা ছিল। পরে তারিখটি পিছিয়ে করা হয় ১২ মার্চ। ওই তারিখেও প্রস্তাব ওঠেনি। আবার তা পিছিয়ে গেছে আগামী জুনে। এদিকে গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার ও আইএমএফের যৌথ সম্মতিতে চতুর্থ ও পঞ্চম দুই কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাজেট সাপোর্ট প্রোগ্রামের আওতায় যে সব সংস্কার কার্যক্রম নেওয়া হয় তার মধ্যে কিছু কার্যক্রম বাস্তবায়নে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় প্রয়োজন হতে পারে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, কিছু শর্ত পূরণ না হলেও আগের কয়েকটি কিস্তি তারা বাংলাদেশের অনুরোধে দিয়েছে। তবে সর্বশেষ ঢাকা সফর করে যাওয়া আইএমএফ প্রতিনিধি দল কর অব্যাহতি সুবিধা কমিয়ে রাজস্ব বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে। শর্ত অনুসারে, চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ১২ হাজার কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে ৪ লাখ ৯২ হাজার কোটি টাকা। বাড়তি রাজস্ব আহরণের কৌশল হিসেবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যেই গত জানুয়ারিতে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ায় সরকার। অবশ্য পরে কিছু পণ্য ও সেবায় শুল্ক-কর কমানো হয়। জানা গেছে, আইএমএফ ঋণের শর্ত হিসেবে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত কর আহরণের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তা থেকে ৫২ হাজার কোটি টাকার বেশি পিছিয়ে ছিল সরকার। এর আগে গত বছরের জুন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন হয়নি। মূলত কর সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়া এবং মুদ্রার বিনিময় হার আপাতত পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করতে রাজি না হওয়ায় ঋণের চতুর্থ কিস্তি পিছিয়ে যায়। তবে দুই কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের বিষয়ে সরকার ইতোমধ্যে আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা করেছে। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে আগের মতো কিছুটা ছাড় দিলে এবং নতুন করে কোনো শর্ত না এলে আগামী জুনে অর্থ ছাড়ের আশা করছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন শর্তের বাস্তবায়ন পর্যালোচনায় ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে বৈঠক শেষে আগামী ১৭ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করবে আইএমএফ মিশন। এর আগে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে তারা আরও একটি বৈঠক করবে বলে জানা গেছে।

ট্রাম্পের শুল্কারোপে কী প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে?

যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা বেশিরভাগ পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ ন্যূনতম শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া নির্দিষ্ট কিছু দেশের ওপর উচ্চতর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর প্রভাবে এরইমধ্যে দেশে দেশে শেয়ারবাজারে ধস নেমেছে, অস্থিরতা দেখা দিয়েছে স্বর্ণের বাজারে। ট্রাম্পের এই রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিশ্বজুড়ে। শুল্কারোপের এই প্রভাব পড়বে বাংলাদেশেও; এতে শঙ্কায় রফতানিকারক ও শিল্প উদ্যোক্তারা। ট্রাম্প আগেই জানিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) হবে অ্যামেরিকার লিবারেশন ডে বা মুক্তি দিবস। কারণ, তিনি বিশ্বের অন্য দেশের উপরে সমহারে শুল্ক বসাবেন। অন্য দেশ যে হারে মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বসায়, ঠিক ততটা শুল্ক তাদের ওপর বসানো হবে। তবে এদিন বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক বসানোর ঘোষণা করে ট্রাম্প জানিয়েছেন, অন্য দেশের তুলনায় অর্ধেক বা তার কমবেশি শুল্ক বসানো হয়েছে। আগামী ৫ এপ্রিল থেকে এই শুল্ক কার্যকর হবে।ট্রাম্প বলেন, ‘কয়েক দশক ধরে আমাদের দেশকে দূরের ও কাছের বন্ধু ও শত্রু নির্বিশেষে বিভিন্ন দেশ লুণ্ঠন করেছে, ধর্ষণ করেছে এবং ধ্বংস করেছে। বিদেশি মেথররা আমাদের এক সময়ের সুন্দর আমেরিকান স্বপ্নকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলেছে। আজকের দিনকে আমেরিকান শিল্পের ‘পুনর্জন্ম’ এবং আমেরিকাকে ‘আবার সম্পদশালী’ করার দিন হিসেবে স্মরণ করা হবে। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কখনো কখনো ‘বন্ধু শত্রুর চেয়েও খারাপ হয়’।’এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেসব দেশের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তা কার্যকর করা হবে আগামী ৫ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে। আর যেসব দেশের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশের বেশি শুল্ক ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প, সেই নতুন শুল্ক কার্যকর হবে আগামী ৯ এপ্রিল মার্কিন স্থানীয় সময় রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে।এশিয়ার কোন দেশের ওপর কত শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প? এশিয়ায় বাংলাদেশ বাদেও ভারতের পণ্যের ওপর ২৬, পাকিস্তান ২৯, চীনা পণ্যে ৩৪, শ্রীলঙ্কা ৪৪, মিয়ানমার ৪৪, ভিয়েতনামের পণ্যে ৪৬ শতাংশ শুল্কারোপ করেন ট্রাম্প। এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সবচেয়ে বেশি কম্বোডিয়ার পণ্যে শুল্কারোপ করেছেন তিনি।চীন - ৩৪ শতাংশভিয়েতনাম - ৪৬ শতাংশতাইওয়ান - ৩২ শতাংশজাপান - ২৪ শতাংশভারত - ২৬ শতাংশদক্ষিণ কোরিয়া - ২৫ শতাংশথাইল্যান্ড - ৩৬ শতাংশমালয়েশিয়া - ২৪ শতাংশকম্বোডিয়া - ৪৯ শতাংশবাংলাদেশ - ৩৭ শতাংশসিঙ্গাপুর - ১০ শতাংশফিলিপাইন - ১৭ শতাংশপাকিস্তান - ২৯ শতাংশশ্রীলঙ্কা - ৪৪ শতাংশমায়ানমার - ৪৪ শতাংশলাওস - ৪৮ শতাংশএশিয়া ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে মিত্র হিসেবে পরিচিত ইসরাইলের পণ্যেও রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ আরোপ করেন ট্রাম্প। বাদ যায় নি আফ্রিকা ও ওশেনিয়া মহাদেশের দেশও। শুল্কারোপের পূর্ণাঙ্গ তালিকা দেখুন এখানে। রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ কী:রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ বা পারস্পরিক শুল্ক হলো এমন একটি কর বা বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা যা এক দেশ অন্য দেশের ওপর একই ধরণের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় আরোপ করে। পারস্পরিক শুল্কের পেছনে ধারণা হলো দেশগুলির মধ্যে বাণিজ্যে ভারসাম্য তৈরি করা।যদি একটি দেশ অন্য দেশ থেকে পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ায়, তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটি প্রথম দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর নিজস্ব শুল্ক আরোপ করে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। এই প্রতিক্রিয়া স্থানীয় ব্যবসাগুলিকে রক্ষা করা, চাকরি সংরক্ষণ করা এবং বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা দূর করার জন্য।রেসিপ্রোকাল ট্যারিফের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে: পারস্পরিক শুল্ক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাধা বৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে পারে, যার ফলে বাণিজ্য যুদ্ধের সম্ভাবনা রয়েছে, যা উভয় অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই ধরনের পরিস্থিতি সরবরাহ শৃঙ্খলকে ব্যাহত করতে পারে, ভোক্তাদের জন্য দাম বাড়াতে পারে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর করে দিতে পারে।ট্রাম্পের শুল্কারোপের প্রভাব এরইমধ্যে বিশ্ববাজারে পড়তে শুরু করেছে। ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের ঘোষণায় দেশে দেশে শেয়ারবাজারে ধস নেমেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, অস্ট্রেলিয়া, ভিয়েতনামের মতো দেশের শেয়ারবাজার ধাক্কা খেয়েছে বড়সড়।শুল্কারোপের পর বাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গেই অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার শেয়ার সূচক দ্রুত নামতে শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার সূচক নাসডাক ফিউচার্সের পতন হয়েছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। প্রযুক্তি খাতের বড় ৭টি প্রতিষ্ঠানের বাজার মূলধন কমেছে ৭৬০ বিলিয়ন বা ৭৬ হাজার কোটি ডলার। অ্যাপলের আইফোনের সিংহভাগ উৎপাদিত হয় চীনে। অ্যাপলের শেয়ারের দাম কমেছে৭ শতাংশ।এছাড়া ট্রাম্পের ঘোষণার জেরে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ফিউচার্স কমেছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ, এফটিএসই ফিউচার্স কমেছে ১ দশমিক ৬ শতাংশ, ইউরোপিয়ান ফিউচার্স কমেছে প্রায় ২ শতাংশ। টোকিওর নিক্কেই (টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জের স্টক মার্কেট সূচক) প্রাথমিকভাবে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ কমে যায়।অস্থিরতা দেখা দিয়েছে স্বর্ণের বিশ্ববাজারেও। ট্রাম্পের শুল্কারোপের পর লাফিয়ে বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে যায় মূল্যবান এই ধাতুটির দাম। বেড়ে প্রতি আউন্স উঠে যায় ৩ হাজার ১৬৭ ডলারে। তবে এরপরই বড় পতন দেখে স্বর্ণের বাজার।রেকর্ড দাম স্পর্শ করার পর পরই বড় দরপতনের মধ্যে পড়ে একদিনেই প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৭০ ডলারের ওপর কমে গেছে। স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৯০ ডলারে।ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক বাংলাদেশের জন্য কতটা উদ্বেগের: মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি পণ্য রফতানিতে একলাফে ২২ শতাংশ বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ শুল্কারোপ করায় বড় ধরনের রফতানি বিপর্যয়ের শঙ্কা করছেন রফতানিকারকরা। মূলত বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি এবং দেশটিতে রফতানির পরিমাণ বিবেচনায় এনে এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দফতরের ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করেছে ৮৩৬ কোটি ডলারের পণ্য। বিপরীতে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করেছে ২২১ কোটি ডলারের পণ্য। এই হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি ৬১৫ কোটি ডলার।এদিকে, উচ্চমাত্রার এই শুল্ক রোষাণলে বাংলাদেশি পণ্য রফতানি, বিশেষ করে চাপে পড়বে তৈরি পোশাক খাত। কারণ, বাংলাদেশি তৈরি পোশাক রফতানির দ্বিতীয় শীর্ষ গন্তব্য মার্কিন বাজার। যার পরিমাণ ১৮ শতাংশের বেশি।বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, শুল্ক রোষাণলের প্রাথমিক ঝড়ে কতগুলো প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়বে, কতগুলো টিকে থাকবে; তা নির্ভর করবে সরকারের নীতি সহায়তার ওপর। কিছু হবে না ভেবে সরকার বসে থাকলে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবে পোশাক খাত। লাভবান হবে ভারত-চীন:নতুন শুল্কযুদ্ধে, মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারতে ২৬, চীনে ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এতে যেমন বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ কমার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, তেমনি ভারত পাবে বিশেষ সুবিধা।পোশাক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পোশাক রফতানিতে এখন আগের চেয়ে বেশি সুবিধা পাবে ভারত। কারণ, দেশটির ওপর বাংলাদেশের চেয়ে কম শুল্কারোপ করেছেন ট্রাম্প।বাংলাদেশের করণীয়:বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে আমদানি হয় কম। তবে রফতানি হয় বেশি। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি বেশি। বাংলাদেশ বাণিজ্যে উদ্বৃত্ত। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি যদি কমে তাহলে সামনে বাংলাদেশের ওপর শুল্ক–কর কমতে পারে।ফলে যুক্তরাষ্ট্র যে শুল্ক আরোপ করেছে, তা কমাতে হলে বাংলাদেশের আমদানি বাড়াতে হবে। তবে ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র এটি পর্যালোচনা করবে কি না, তা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দ্রুত শুল্কের বিষয়ে আলোচনায় যেতে হবে। শুধু আলোচনায় গেলেই হবে না, তাদেরকে আগের নিয়ম বা সম্ভব হলে শুল্ক আরও কমানো যায় কিনা তা নিয়ে রাজি করাতে হবে। পাশাপাশি খুঁজতে হবে বিকল্প বাজারও।ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের চেয়ারম্যান এস এম আবু তৈয়ব বলেন, আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। তাদের আগের পর্যায়ে শুল্ক রাখার প্রস্তাব দিয়ে আমাদের শুল্ক হার পর্যালোচনা করতে হবে। এ বিষয়ে তাদের আশ্বস্ত করতে হবে, যাতে দুই দেশের পণ্য বিনিময় স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে।এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে আরোপ করা শুল্ক কমানো ও টিকফা চুক্তি সামনে রেখে সরকারকে বহুমুখী পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের টিকফা চুক্তি রয়েছে। এই চুক্তির আলোকেই বাংলাদেশকে অগ্রসর হতে হবে। দ্রুত মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। তবে ট্রাম্প নিজে চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় সরাসরি হোয়াইট হাউজের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলে সেটি বেশি ফলপ্রসূ হবে। ‌‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শুল্ক ইস্যুর ইতিবাচক সমাধান হবে’ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শুল্ক ইস্যু সমাধানে ইতিবাচক অগ্রগতি হবে বলে দৃঢ় আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করছি। যেহেতু এটি আলোচনাযোগ্য, তাই আমরা আলোচনা করব এবং আমি নিশ্চিত যে আমরা সর্বোত্তম সমাধানে পৌঁছাতে পারব।’

আইএমএফের প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছে শনিবার

ঋণ কর্মসূচির আওতায় ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থছাড়ের আগে বিভিন্ন শর্ত পর্যালোচনা করতে শনিবার (৫ এপ্রিল) ঢাকায় আসছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধি দল। দলটি ঢাকায় অবস্থানকালে শুরুতেই রোববার (৬ এপ্রিল) সকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করবে বলে জানা গেছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের আগে বিভিন্ন শর্ত পালনের অগ্রগতি পর্যালোচনায় আইএমএফের একটি দল কাল শনিবার (৫ এপ্রিল) ঢাকায় আসছে। দলটি ৬ এপ্রিল থেকে টানা দুই সপ্তাহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করবে। এ সফরে আইএমএফের দলটির সঙ্গে অর্থ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠক শেষে ১৭ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করবে সফররত আইএমএফের দল। তবে সংবাদ সম্মেলনের আগে দলটি ১৭ এপ্রিল অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে আরও একটি বৈঠক করবে বলে জানা গেছে।

পাচার হওয়া অর্থ ফেরত পেতে শ্রীলঙ্কার সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হরিনিয়া আমারাসুরিয়ার সঙ্গে ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন এবং বন্ধুপ্রতিম দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও সহযোগিতা সম্প্রসারণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এসময় প্রধান উপদেষ্টা পাচার হওয়া শত শত কোটি ডলার ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টায় শ্রীলঙ্কার সমর্থন কামনা করেন। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে তার দেশের প্রচেষ্টার বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, ‘পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে শ্রীলঙ্কার সংসদ একটি নতুন আইন অনুমোদন করেছে।’ দুই নেতা জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের বিভিন্ন দিক নিয়েও আলোচনা করেন এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার এজেন্ডা এবং আগামী বছরের ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তার প্রশাসনের পরিকল্পনার বর্ণনা দেন। বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ এবং পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

বিমসটেকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিল বাংলাদেশ

আগামী দুই বছরের জন্য বিমসটেকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। এই জোটের লক্ষ্য হলো দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে আঞ্চলিক সংযোগ, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন বাড়ানো। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে বিমসটেক নেতাদের সঙ্গে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নেতারা (সরকারপ্রধানরা) সর্বসম্মতিক্রমে ব্যাংকক ঘোষণাপত্র ও বিমসটেক ব্যাংকক ভিশন গ্রহণ করেছেন, যা একটি কৌশলগত রোডম্যাপ। এটি সংগঠনটিকে টেকসই উন্নয়ন এবং গভীর অর্থনৈতিক একত্রীকরণের দিকে পরিচালিত করবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে বিমসটেকের জন্য বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি ও অগ্রাধিকারগুলো তুলে ধরেন। তার সরকারের অটল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে তিনি আশ্বস্ত করেন, বাংলাদেশ তার সব নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে অবিচল। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, মুহাম্মদ ইউনূস মুক্ত বাজার এলাকা চুক্তি এফটিএ-সংক্রান্ত বিমসটেক ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি বাস্তবায়নের জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং পরিবহন সংযোগ সম্পর্কিত বিমসটেক মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় মিয়ানমারকে সম্পৃক্ত করার জন্য বিমসটেককে আরও দৃশ্যমান ও সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান, যাতে জোর করে বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গাদের তাদের ভূমিতে প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংটার্ন সিনাওয়াত্রার কাছ থেকে সভাপতিত্ব গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও কর্মমুখী বিমসটেকের প্রতি স্বীকৃতির বিবৃতি দেন। এর আগে শুক্রবার সকালে প্রধান উপদেষ্টা থাই বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রাতঃরাশের বৈঠক করেন। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত বিমসটেক আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য বিশেষ করে বাণিজ্য, প্রযুক্তি, পরিবহন, জ্বালানি ও সন্ত্রাসবাদ দমনের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমানভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তঃআঞ্চলিক জোট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

আরও ৫৭ হাজার কোটি টাকা আদায়ে চাপ দিচ্ছে আইএমএফ

চলতি বছরের জানুয়ারিতে অপ্রত্যাশিতভাবে কর বৃদ্ধি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এরপর প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে পূর্বাভাস দেওয়া হয়, বিভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা থেকে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় সম্ভব। কিন্তু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চায়, আগামী অর্থবছরে কর ছাড় কমিয়ে ও করের হার বাড়িয়ে সরকার অতিরিক্ত ৫৭ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করুক। এ অবস্থায় এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, অতিরিক্ত এ রাজস্ব সংগ্রহ করা না গেলে আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তি যা ইতোমধ্যে মার্চ থেকে বিলম্বিত হয়েছে এবং আসন্ন পঞ্চম কিস্তি পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তারা আরও বলেন, আইএমএফ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের দাবিগুলো জানায়নি। তবে শনিবার (৫ এপ্রিল) ঢাকায় সংস্থাটির প্রতিনিধি দল আসার পর আনুষ্ঠানিকভাবে এসব শর্ত উপস্থাপন করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, জানুয়ারির কর বৃদ্ধির ধাক্কা এখনও পুরোপুরি সামলানো যায়নি। তাছাড়া সব কর ছাড় একসঙ্গে বাতিল করাও সম্ভব নয়। এনবিআরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে কিছু কর ছাড় পুরোপুরি তুলে দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য কিছু কর ছাড় বিশেষ করে আয়করের ক্ষেত্রে বাতিল করা যেতে পারে। তবে, তা রাজস্ব আদায়ে প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করবে এমন নিশ্চয়তা নেই। এনবিআরের ওই কর্মকর্তা বলেন, আবার শুধু কর বাড়ালেই রাজস্ব বাড়বে না। কর ফাঁকি রোধ, করজালের সম্প্রসারণ এবং করদাতাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য অটোমেশন ব্যবস্থা উন্নয়ন করাও জরুরি। এমন পরিস্থিতিতে সরকার যদি আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের চেষ্টা করে, তাহলে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা কঠিন হবে জানিয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, আদতে শুধু কর বাড়িয়ে বা ছাড় কমিয়ে এত বড় অঙ্কের রাজস্ব আদায় করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, অতীতে অনেক দেশ আইএমএফের শর্ত মেনে চলতে গিয়ে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। তাই বাংলাদেশকে নিজস্ব সক্ষমতার ভিত্তিতে অর্থনীতি পরিচালনার পরিকল্পনা নিতে হবে। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, আইএমএফ যদি ঋণের কিস্তি স্থগিত রাখে, তাহলে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক দাতাসংস্থাগুলোও তাদের বাজেট সহায়তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বসতে পারে। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের শুরুতে স্বাক্ষরিত ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তির অংশ হিসেবে আইএমএফ ৩০টিরও বেশি সংস্কারের শর্ত দিয়েছে, যার মধ্যে বার্ষিক রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ০.৫ শতাংশ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যও অন্তর্ভুক্ত। তবে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। এমনকি জানুয়ারিতে ভ্যাট ও কর বৃদ্ধির পরও রাজস্ব আদায় প্রত্যাশিত মাত্রায় পৌঁছায়নি। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু নীতিগত পদক্ষেপ নিয়ে মতবিরোধের কারণে চতুর্থ ঋণের কিস্তি ছাড়ে বিলম্ব হচ্ছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই বাংলাদেশ আগামী জুন মাসে দুটি কিস্তি পাওয়ার আশা করছে। তার আগে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল দেশের অর্থনৈতিক সংস্কারের অগ্রগতি মূল্যায়ন করতে শনিবার (৫ এপ্রিল) ঢাকা সফর করবে। এ সময় প্রতিনিধিদলটি অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে এবং পরদিন এনবিআরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক বসবে।

আরও ১০ হাজার টন চাল এলো ভারত থেকে

ভারত থেকে ১০ হাজার ৮৫০ মেট্রিক টন চাল নিয়ে এমভি এইচটি ইউনাইট নামে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র চুক্তির আওতায় (প্যাকেজ-৮) ভারত থেকে এ চাল কেনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, উন্মুক্ত দরপত্র চুক্তির আওতায় ভারত থেকে মোট ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৯টি প্যাকেজে মোট ৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। এরই মধ্যে চুক্তি মোতাবেক ৩ লাখ ৬ হাজার ৭৬৯ মেট্রিক টন চাল দেশে পৌঁছেছে।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি পণ্যের শুল্ক পর্যালোচনা করছে বাংলাদেশ

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের শুল্ক পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত পণ্যের শুল্ক পর্যালোচনা করছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দ্রুত শুল্ক যৌক্তিকীকরণের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জরুরি বিভিন্ন বিকল্প চিহ্নিত করছে। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া স্ট্যাটাসে এসব কথা বলেন ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি। স্ট্যাটাসে তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য। ট্রাম্প প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে কাজ করে আসছি। আমাদের চলমান প্রচেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে সমন্বিতভাবে শুল্কসংক্রান্ত এই বিষয়টির সমাধানে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা সব পণ্যের ওপর ব্যাপক হারে আমদানি শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিবিসির সংবাদে বলা হয়, আমদানি শুল্ক আরোপের অংশ হিসেবে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক বসছে। এতদিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল।

ব্যাংক বন্ধ হবে না, ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে একীভূতকরণ: গভর্নর

খেলাপি ঋণের লাগাম টানতে ব্যাংক খাতের সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া হয়েছে। এবার চ্যালেঞ্জ, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। যেসব ব্যাংক একেবারে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না, সেগুলো একীভূত করা হবে, বন্ধ হবে না। তবে দেশ থেকে পাচার করা অর্থ কোথায় গিয়েছে, তা এখনও খোঁজা হচ্ছে। সম্প্রতি অনলাই নিউজ পোর্টাল সময় সংবাদের সঙ্গে একান্ত আলাপে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।ধীরে ধীরে মুক্ত হচ্ছে হাসিনা সরকারের আমলে জিম্মি হয়ে পড়া বাংলাদেশের ব্যাংক খাত। একই সঙ্গে চলছে গ্রাহকের আস্থা ফিরিয়ে ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করার কার্যক্রম।এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, গত ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৫ হাজার ৭৩ কোটি টাকা। তিন মাসে বেড়েছে ৬০ হাজার ৭৮৭ কোটি টাকা। বাড়তে থাকা এই খেলাপী ঋণের লাগাম টানতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার বিকল্প দেখছেন না কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর।তিনি বলেন, ‘দুর্বৃত্তায়নের সঙ্গে জড়িত বোর্ডগুলো (ব্যাংকের পর্ষদ) ভেঙে দেয়া হয়েছে। যদি ব্যাংকের পর্ষদ ভালো হয়, বিনিয়োগ ভালো হয়, তাহলে ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।’গভর্নর জানান, কোনো ব্যাংকই বন্ধ হবে না। তবে, গ্রাহকের আমানতের সুরক্ষা দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে ব্যর্থ ব্যাংকগুলো আইন মেনে একীভূত করা হবে। যেসব ব্যাংক কার্যকরভাবে কাজ সম্পাদন করতে পারবে না, তাদেরকে অন্য সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। তবে বন্ধ করা হবে না। এতে গ্রাহকের ভয়ের কিছু নেই।অর্থনীতিকে পঙ্গু করতে এস আলম গ্রুপসহ ব্যাংক খাতে আধিপত্য বিস্তার করা কোম্পানির দাপটে পাচার হওয়া অর্থ কোথায় গিয়েছে তা খুঁজে বের করে দেশে ফিরিয়ে আনার কর্মযজ্ঞও চলছে। ব্যাংক খাতের কোন তথ্যই গোপন করা হবে না বলেও জানান ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, কিভাবে টাকাগুলো বিদেশে পাচার করা হয়েছে সেটি অনুসন্ধান করা হচ্ছে। অনেকগুলো শনাক্তও করা হয়েছে। টাকা ফিরিয়ে আনতে কাজ চলছে।কোনো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে স্বজনপ্রীতির শঙ্কা দেখা দিলেই তা ভেঙে দেয়ারও হুঁশিয়ারি দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যাংকের পর্ষদ পরিবারগতভাবে গড়ে উঠলে বা সদস্যরা উপযুক্ত না হলে সেসব পর্ষদ ভেঙে দেয়া হবে।’

কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে গরু ও মুরগির মাংসের দাম

ঈদুল ফিতরে সরবরাহ ঘাটতির প্রভাব পড়েছে বাজারে। যে কারণে ক্রেতা কমলেও কমেনি মাংস, সবজির দাম। কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা করে বেড়েছে গরুর মাংস ও মুরগির দাম। তবে দুটি বাজার খুঁজেও মেলেনি খাসির মাংস। পেঁয়াজ রসুনে স্বস্তি মিললেও গরুর মাংস আর মুরগির দামে অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। রাজধানীর মিরপুরের উত্তর ও মধ্য পীরেরবাগের একাধিক মাংসের দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেজিতে অন্তত ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। কোনো দোকানে আরেকটু বেশি। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর মিরপুর-২ উত্তর পীরেরবাগ ছাপড়া মসজিদ কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, সবজি, মাছ ও গরুর মাংসের দোকানে ক্রেতাদের ভিড়। মরিয়ম গোস্ত বিতানের বিক্রেতা বাবুল মিয়া বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ ধরে প্রচুর গরু কাটছি। চাহিদা অনুযায়ী বিক্রিও ছিল বেশি। আজকে আর গরু কাটি নাই। তবে চাহিদা থাকায় মিরপুর-১ থেকে একমণ মাংস এনেছি। আর ৫ কেজি বিক্রি বাকি আছে।’ তিনি বলেন, ‘গতকালও ৭৮০ টাকায় মাংস বিক্রি করছি। আজ ৮০০ টাকা বিক্রি করছি।’ তবে কাদের গোশত বিতানে গরুর মাংসের দাম আরও ২০ টাকা বেশি, অর্থাৎ সেখানে ৮২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। পাইকারি এই দোকানে মুরগি ডিমসহ নিত্যপণ্য বিক্রি করা হয়। কাদের গোশত বিতানের বাদশা মিয়া বলেন, ‘আজও সবচেয়ে বেশি মাংসের চাহিদা। ঈদের আগের দিন থেকে এখানে ৮২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। দেশি মুরগি ৬০০ টাকা, ব্রয়লার ২৩০ টাকা, লেয়ার মুরগি বাজারে নেই। পাকিস্তানি কক ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ডিম মিলছে কমেই, ১২০ টাকা ডজন।’ উত্তর পীরেরবাগ এলাকার একটি আবাসিক ভবনের এক বাসিন্দা বলেন, ‘হাসপাতালে চাকরি করি। এ ঈদে ছুটি মেলেনি। বাসায় রাতে কিছু অতিথি আসবে। গরুর মাংস কিনতে এসে দেখি কেজি প্রতি ৪০ টাকা বেশি চাওয়া হচ্ছে। গত ৩ দিন আগেও গরুর মাংসের কেজি ছিল ৭৮০ টাকা। আজকে নিলো ৮২০ টাকা।’ নির্মাণ শ্রমিক ফরহাদ গরুর মাংসের দাম শুনে কপালে ভাঁজ নিয়ে মুরগির দাম জানতে চান। সেখানেও বাড়তি দাম। বাধ্য হয়ে ৩৩০ টাকায় একটি পাকিস্তানি কক কিনে ফেরার পথে ফরহাদ বলেন, গরুর মাংস আমগো নাগালের না, মুরগিও দেখতাছি দাম বাড়তাছে। খামু কি? ৩৩০ টাকায় কক কিনে আমগো পোষায় না। কি করমু। ব্রয়লার আর কতো! একটা দিন তো কক খাইতে মন চায়। মরিয়ম গোশত বিতানের মালিক বাবুল শিকদার বলেন, ‘গরুই বেচতেছিলাম, খাসির মাংসের বাড়তি দাম, তাই দোকানেই তুলি নাই।’ ব্রয়লার মুরগি কিনে মুসলিমা বেগম বলেন, ‘কক ৩৩০ টাকা কেজি। কেমনে খামু কন! ব্রয়লারও যে খুব কম তা না, তবে দেড় কেজি ব্রয়লার কিনে যা বাঁচবে তা দিয়ে কিন্তু সবজি কেনা যায়। তাই কক বাদ দিয়ে ব্রয়লারই কিনতে হলো।’ মধ্য পীরেরবাগ বিসমিল্লাহ গোশত বিতানে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা ভিড় করেও ফিরে যাচ্ছেন। মাংস শেষ। মালিক মো. জাহাঙ্গীর বলেন, প্রতি রমজানের ঈদে অন্তত ২০টা গরু কাটি। গতকালও ২টা কাটছি। আজ একটা, তা সকাল সকালই শেষ হয়ে গেছে। মাছের সরবরাহ কমেছে বাজারে। যা আছে তাও ক্রেতা কম। নদীর চিংড়ির কেজি ৭০০ টাকা, তবে লাল ও অন্য সাদা চিংড়ি ৬৬০ টাকায় মিলছে। রুই মাছ যেন ছুলেই দাম। ৪৬০ টাকা কেজি হাঁকিয়ে বেচা হচ্ছে ৪২০ টাকায়। তেলাপিয়া ১৮০ টাকা। নলা মাছ ১৬০ টাকা। ইলিশ ৭৬০ থেকে ১৩০০ টাকার মধ্যে আকার অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে। মাছ বিক্রেতা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে মাছের সরবরাহ কম। ক্রেতাও কম। যা পাইছি তাই বেচতাছি। ক্রেতারা তো মাছের চেয়ে মাংসই বেশি কিনতাছে।’ ছাপড়া মসজিদ কাঁচাবাজারে গিয়ে জানা যায়, কিছু সবজিতে বেড়েছে দাম। দামে কাঁচা মরিচের ঝাঁজ নেই। কেজিতে টমেটোর দাম বেড়েছে ২০ টাকা। টমেটো ৬০ টাকা ও গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। আলু ২০-২৫ টাকায় মিলছে। তবে পটল ও শশায় অসন্তুষ্ট ক্রেতারা। ছাপড়া মসজিদ কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা সেলিম মিয়া বলেন, ‘বেগুন গত সপ্তাহে কিনেছি ৮০ টাকায়। গত সপ্তাহেও ঢেঁড়শ ছিল ৫০ টাকা, আজ তা ৬০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে, কেজি বাড়তি ১০ টাকা। গত সপ্তাহেও শশার দাম ছিল ৬০টাকা, আজ ৮০ বেচতে হচ্ছে।’ বাজার ঘুরে দেখা যায়, লাউ ৫০-৭০ টাকা পিস, কচুরলতি ৮০ টাকা কজি, ১০ টাকা বাড়তিতে করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা। ৫০০ গ্রাম ওজনের ছোট পাতা কপির পিস ৫০ টাকা, ঝিঙা ৭০, চিচিঙ্গা ৭০, কাঁচা কলার হালি ৩০ টাকা। পেঁপে আর পটলে বিরক্ত ক্রেতারা। পটল ৮০, পেঁপে ৬০ টাকা। হুসাইন আল মামুন নামে ক্রেতা বলেন, ‘গরুর মাংসের সঙ্গে আলু আর পটল ভাল লাগে। আলুটার দাম ঠিক আছে। পটল যে ৮০! আর গরুর মাংসের দাম তো জানেনই ৮২০ টাকা! আমাদের মতো মধ্যবিত্তের ৬ সদস্যের পরিবারের জন্য এটা বেশিই।’ ধনেপাতার ১০০ গ্রাম ২৫ টাকায় বিক্রি হলেও লেবুর দাম ফের বেড়েছে। ছোট ছোট লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। সবজি বিক্রেতা আলমগীর বলেন, ‘টমেটো ও গাজরের দাম বাড়তি। পেঁপে ও পটলে বিরক্ত ক্রেতারা। কিন্তু কিছু করার নাই। কেনাই তো বাড়তি আমাদের।’

দেশে-বিদেশি বিনিয়োগ: চীনের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিতে খুলেছে সম্ভাবনার দুয়ার

দেশে-বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে যখন উঁকি দিচ্ছে শঙ্কার কালো মেঘ, তখন চীনের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিতে খুলেছে সম্ভাবনার দুয়ার। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে প্রায় ৩০টি চীনা কোম্পানি। শুধু তাই নয়, চীনা উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার আশ্বাস দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এছাড়াও, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং মোংলা বন্দরের আধুনিকায়নে ঋণ ও অনুদান মিলিয়ে আরও এক বিলিয়ন ডলারের বেশি পাচ্ছে ঢাকা। চীনের এমন ইতিবাচক মনোভাব বাংলাদেশকে উৎপাদনের হাবে পরিণত করতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা বিশ্লেষকদের।স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের যাত্রায় দরকার ব্যাপক বিদেশি বিনিয়োগ। অথচ গত কয়েক অর্থবছরে প্রাপ্তির হিসাবটা নামমাত্র। সবশেষ চলতি অর্থবছরে দুই প্রান্তিক মিলিয়ে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ মাত্র ২১ কোটি ডলার। প্রথম প্রান্তিক অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বরে যা ছিল ১০ কোটি ডলার, বছর ব্যবধানে ৭১ শতাংশ কম।এমন বাস্তবতায় চীন সফরে মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বের বৃহত্তম সৌর প্যানেল উৎপাদনকারী কোম্পানি লঞ্জি, মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক অপ্পো, চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি, হিসেন্স ইন্টারন্যাশনালসহ শীর্ষ চীনা কোম্পানির প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন।বাংলাদেশ ব্যবসায়ের জন্য কতটা উন্মুক্ত তা তুলে ধরা হয় এ বৈঠকে। চীন সরকার ও চীনা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ২.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ। চীন সফরের সময় প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগে চীনা উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার আশ্বাস দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। আমরা আশা করছি, চীনা বিনিয়োগ বড় পরিসরে আসবে।’এটাকে চীনা বিনিয়োগের দ্বার উন্মোচিত হওয়ার সবুজ সংকেত হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরাও।অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবু ইউসূফ বলেন, ‘বিনিয়োগে সহায়ক পরিবেশ আছে দেশে, এটি যদি বাইরে একটা বার্তা দেয়া যেত তাহলে চীন ছাড়াও জাপান আছে বা অন্য দেশও বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে।’দেশীয় উদ্যোক্তারা বলেন, ‘চীনা বিনিয়োগে দ্রুতই বাড়বে কর্মসংস্থান। তবে অর্থনীতিতে কতটা প্রভাব পড়বে তা জানতে সময় লাগবে।’ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ‘ব্যাপারটা যদি এমন হয় যে, পুরো কাঁচামালটা আসছে সেটা আবার প্রস্তুত হয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে, সেখানে সেভাবে ট্যাক্স ও আয় হচ্ছে না। শুধুমাত্র তারা তখন মুজুরি দিচ্ছেন, বাংলাদেশ ম্যানেজমেন্টকে বেতন দিচ্ছে তখন সেক্ষেত্রে খুব একটা লাভ হয় না। কিন্তু তারা লোকালি তাদের কাঁচামাল আমদানি সোর্স করছে তখন যেটা হয় সেটা হচ্ছে মূল্যায়নটার তাৎপর্যটা বেড়ে যায়।’চীনা বিনিয়োগে বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্য রফতানি বাজারে সহজে পৌঁছে দিতে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতেও ঋণ দিচ্ছে বেইজিং।

এপ্রিল মাসের জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ

এপ্রিল মাসের জন্য জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত রেখে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। যা কার্যকর হবে কাল মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) থেকে। সোমবার (৩১ মার্চ) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস বা বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে দেশে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতিমাসে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণের লক্ষ্যে প্রাইসিং ফর্মুলার আলোকে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসের জন্য তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্য জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিদ্যমান মূল্য কাঠামো অনুযায়ী ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।’ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে ডিজেল প্রতি লিটার ১০৫ টাকা, কেরোসিন ১০৫ টাকা, অকটেন ১২৬ টাকা এবং পেট্রোল ১২২ টাকায় বিক্রি হবে। সোমবার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

তিন মাসেই ১৭ দফা সমন্বয়, সোনার মূল্য কেন ঊর্ধ্বমুখী?

দেশের বাজারে চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসে ১৭ বার সোনার দাম সমন্বয় করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। যার মধ্যে ১৩ বারই বেড়েছে দাম। আর গত বছরের একই সময়ে দাম সমন্বয় করা হয়েছিল মাত্র ৫ বার। সবশেষ গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণের দাম বাড়িয়েছে বাজুস। সেদিন স্বর্ণের ২২ ক্যারেটের এক ভরিতে ১ হাজার ৭৭৩ টাকা বাড়িয়েছে সংগঠনটি। নতুন দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৮৭২ টাকা। যা দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চে।এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৫০ হাজার ৬৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ২৯ হাজার ১৬৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৬ হাজার ৫৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।মূলত চলতি বছরের শুরু থেকেই ঊর্ধ্বমুখী দেশ ও বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম। এই প্রবণতায় ইতিমধ্যে দেশ ও বিশ্ববাজারে রেকর্ড গড়েছে স্বর্ণের দাম। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক পরিকল্পনার ফলে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধ আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচিত মূল্যবান ধাতুটির প্রতি আস্থা রাখতে শুরু করেছেন। এতে স্বর্ণের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।ক্যাপিটাল ডটকমের আর্থিক বাজার বিশ্লেষক কাইল রোডা বলেন, ‘মার্কিন বাণিজ্য-রাজস্ব নীতি, ফেডের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ও চলমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বাড়ছে স্বর্ণের দাম। খুব শিগগিরই এটি ৩ হাজার ১০০ ডলার প্রতি আউন্স ছাড়িয়ে যেতে পারে।’বিশ্ববাজারে স্বর্ণের ঊর্ধ্বমুখী দামের প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারেও। ইতোমধ্যেই দেশে স্বর্ণের দাম পৌঁছেছে ইতিহাসের সর্বোচ্চে। এতে চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসেই ১৭ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হয়েছে স্বর্ণের দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ১৩ বার, আর কমেছে মাত্র ৪ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।স্বর্ণের দামের এই ঊর্ধ্বমুখীতায় বেচকেনা কমে গেছে বলে জানিয়েছেন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা। পুরান ঢাকার তাঁতিবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী সুরঞ্জন বলেন, ‘ব্র্যান্ডের বড় বড় দোকানগুলোর বিক্রিও সাম্প্রতিক সময়ে অনেক কমে গেছে। আর মাঝারি ও ছোট ব্যবসায়ীদের অবস্থা তো আরও করুণ। ঊর্ধ্বমুখী এই দাম পুরো স্বর্ণ ব্যবসার জন্যই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্ববাজার টালমাটাল থাকলে, চলতি বছর সর্বোচ্চ সংখ্যক বার দাম সমন্বয় হতে পারে।’

মোংলায় আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে চায় চীন

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে ৭৫০ মিলিয়নের মতো ঋণের কথা আমরা বলছি। এর মধ্যে অর্ধেক চট্টগ্রামের চীনা শিল্পাঞ্চল উন্নয়নের জন্য। অন্যদিকে মোংলা বন্দরে আমাদের একটি আধুনিকীকরণের প্রকল্প চলছে। যেহেতু চীন মোংলা বন্দর আধুনিকীকরণের কাজ করছে, এটার পাশপাশি ওখানেও একটা অর্থনৈতিক অঞ্চল করার চিন্তাভাবনা করছে। তারা আমাদের প্রস্তাব দিয়েছে, আমরা রাজি থাকলে সেখানে দ্বিতীয় ইকোনমিক জোন নিয়ে তারা কাজ করবে এবং সেখানে বিনিয়োগ করবেন।’ আজ রোববার (৩০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফর নিয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান ও প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, ‘চীনের ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রতিশ্রুতির কথা আমরা বলছি। এই অর্থ আগের সব বড় বড় অংকের থেকে একটি বড় কারণে ভিন্ন। কারণ, আগে যে বড় অংকের অর্থ নিশ্চিত করে আসা হয়েছে সেগুলো ছিল ঋণ। ঋণের একটা ইতিবাচক দিক হলো, নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টাকা চলে আসে, নেতিবাচক হলো, এই টাকা আমাদের ফেরত দিতে হয়। সুতরাং আমাদের অর্থনীতিতে এই টাকা ঢোকে এবং সুদসহ বের হয়ে যায়। সেই জায়গায় যদি বিনিয়োগ আসে, সেটি আমাদের অর্থনীতিতে প্রবেশ করে যায়। এই টাকা কখনও এই দেশ থেকে যাবে না। এই বিনিয়োগের ফলে যে পরিমাণ কর্মসংস্থান হবে সেটা ঋণ থেকে কখনই হয় না।’ আশিক চৌধুরী বলেন, ‘এবার এই ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার থেকে ১ বিলিয়নের বেশি বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি। এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ৩০টি চীনা কোম্পানি। এটি মূলত চট্টগ্রামের আনোয়ারাতে চীনা শিল্প ও অর্থনৈতিক অঞ্চলের ওপর নির্ভর করে। প্রায় ৮০০ একর জমির ওপর এই শিল্পাঞ্চল তৈরির কাজ চলছে। এই জোনের কাজ অনেক আগেই শুরু হয়েছিল কিন্তু ২০২২ সালের পর এটা নিয়ে আর কোনও অগ্রগতি হয়নি। গত তিন মাসে আমরা এখানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছি এবং অনেকগুলো বড় বড় সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে। তাদের সঙ্গে একটা নেগসিয়েশনে এসেছে, যে কারণে বিনিয়গকারিরা এখন খুবই কনফিডেন্ট অনুভব করছেন যে এই বছরের কোনও এক সময় আমরা নির্মাণ কাজ শুরু করবো। জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, এখন আমরা নির্মাণকাজে যাবো। সেটার ওপর নির্ভর করেই কিন্তু চীনা কোম্পানি আমাদের এখানে আসার চিন্তা করছে।’ এবারের চীন সফরে স্বাস্থ্য সেবা একটা বড় বিষয় ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১২ শতাংশের মতো এসেছে অনুদান, যা প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলারের মতো। এর মধ্যে ১৫০ মিলিয়ন ডলার কারিগরি সহায়তার জন্য এবং ১০০ মিলিয়ন হাসপাতাল তৈরির জন্য। চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে বাংলাদেশে অত্যাধুনিক হাসপাতাল তৈরি করা এবং বাংলাদেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য যে যাত্রা ভারত-থাইল্যান্ডের দিকে হয়, আমরা চেষ্টা করছি, যাতে চীন থেকে সেই সাপোর্ট পাওয়া যায়।’ আশিক চৌধুরী বলেন, ‘চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিষয়টি কিন্তু আমাদের জন্য বড় প্রভাব রেখেছে। আমরা অনেকদিন ধরে চীনের বিনিয়োগের কথা বলছি। চীনা বিনিয়োগের যে গুরুত্ব সেটা আমরা আবারও গিয়ে অনুধাবন করেছি। আমরা এই সুযোগ আসলে খুব কম গ্রহণ করেছি। চীনা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণা এখনও আছে কিন্তু খুব স্বল্প পরিসরে আছে। আমাদের আরও বেশি হারে চীনে যেতে হবে। চীন এমন একটি মহাদেশ, যেখান থেকে আমাদের সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ আসা সম্ভব। লাস্ট আগস্ট থেকে এই মার্চ পর্যন্ত ৩৪টি চীনা কোম্পানি বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ-বেপজাতে। এখানে আর্থিক প্রতিশ্রুতি প্রায় ১৬০ মিলিয়ন ডলারের মতো।’

২৫ বিলিয়ন ডলার ফেরানোর মিশন গভর্নরের

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য জোরালো মিশন শুরু করেছেন। এই উদ্যোগের আওতায় তিনি রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক অভিজাতদের বিদেশে পাচার করা বিপুল সম্পদ অনুসন্ধানে কাজ শুরু করেছেন। গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) ‘বাংলাদেশ আপ এগেইনেস্ট টাইম টু ফাইন্ড স্টোলেন বিলিয়নস : সেন্ট্রাল ব্যাংক গভর্নর’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আলজাজিরা অনলাইন। সংবাদ মাধ্যমটির ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিটকে (আই-ইউনিট) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সাক্ষাৎকারে গভর্নর ড. আহসান মনসুর বিদেশে পাচার হওয়া বিপুল অর্থ দেশে ফেরত আনার বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন। বিশেষ করে তিনি ব্রিটেনকে প্রধান লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছেন, যেখানে পাচার করা আনুমানিক ২৫ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ উদ্ধার করতে বাংলাদেশের সরকার এরই মধ্যে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কমনওয়েলথ দপ্তর এবং লন্ডনের আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। আলজাজিরা জানায়, গভর্নর আহসান মনসুর ১১টি প্রভাবশালী পরিবারের বিরুদ্ধে বিদেশে পাচার করা অর্থ উদ্ধার করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে তৎপর করেছেন। এই পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে বিগত এক দশক ধরে ব্রিটেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে কোটি কোটি ডলার পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এই সম্পদের সন্ধানে ১১টি বিশেষজ্ঞ দল গঠন করেছে। ১১টি পরিবারের মধ্যে একটি পরিবারের বিরুদ্ধে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদ পাচারের অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে একটি ব্যাংক থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ আমানত তুলে নেওয়া হয়েছে, ফলে ব্যাংকটি প্রায় ভেঙে পড়ার অবস্থায় পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক অর্থনীতিবিদ, গভর্নর আহসান মনসুর পাচারকৃত অর্থ দ্রুত উদ্ধার করার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অর্থের পরিমাণ কমে যেতে পারে।’ আহসান মনসুর জানিয়েছেন, অনেক পাচার করা সম্পদ ব্রিটেনের লন্ডনে রয়েছে এবং বাংলাদেশের উদ্দেশ্য হলো এ বিষয়টি বিশ্বে সচেতনতা সৃষ্টি করা, যাতে জানানো যায়, চুরি হওয়া সম্পদ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে ব্রিটেনে পাচার হয়েছে। এর আগে আলজাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর লন্ডন ও দুবাইতে ৫০ কোটি ডলারের বেশি সম্পদ রয়েছে। গত বছর প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে জানা যায়, সাবেক এই মন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের ৩৬০টি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে, যার বেশির ভাগই লন্ডনে। দুর্নীতি দমন কমিশন এরই মধ্যেই সাইফুজ্জামানের ৪০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে এবং তাঁকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ সময় ব্রিটেন ও অন্যান্য দেশে এসব অভিজাত পরিবারের কোটি কোটি ডলার পাচারে সহায়তাকারী আইনজীবী, ব্যাংকার এবং এস্টেট এজেন্টদের তদন্তের আওতায় আনার কথা বলেছে। গভর্নর আহসান মনসুর জানিয়েছেন, এই অপরাধীচক্রের মূল হোতার বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহ করতে বিদেশে সহায়তাকারীদের সঙ্গে দর-কষাকষি করার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে এবং হারিয়ে যাওয়া অর্থ ফেরত আনার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করারও পরিকল্পনা রয়েছে। গভর্নর বলেন, ‘আইন লঙ্ঘন করে অপরাধীদের পুনর্বাসনে সহায়তা করছে এমন এজেন্ট বা ব্যাংক অপারেটরের সংখ্যা অনেক। এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার একটি নৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’ গভর্নর জানিয়েছেন, পাচার করা অর্থের নিয়ন্ত্রণ পেতে পাঁচ বছর পর্যন্ত লাগতে পারে। তিনি স্বীকার করেন, কর্তৃপক্ষের কাজের মাত্রা এবং জটিলতা নিয়ে লড়াই করার কারণে অর্থ উদ্ধার কার্যক্রম কিছুটা ধীরগতিতে এগোচ্ছে। তবে ব্রিটেন সরকার এ ক্ষেত্রে সহায়তা করছে বলে জানিয়েছেন তিনি। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার পরিবর্তনের পর পাচারকৃত কোটি কোটি ডলার উদ্ধারের কার্যক্রম পরিচালনা জটিল হয়ে পড়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) তহবিল স্থগিত করে দেওয়ার ফলে বাংলাদেশে যে তদন্তকারী সংস্থা কাজ শুরু করার কথা ছিল তাদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘মার্কিন কর্মকর্তাদের পূর্ণশক্তিতে ঢাকায় থাকার কথা ছিল। তাঁদের ইউএসএআইডির মাধ্যমে অর্থায়ন করা হয়েছে। তবে তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা আর আসতে পারেননি, যা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।’

ঈদের আগেই বাড়ল গরুর মাংসের দাম

পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে রেখে বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম এলাকাভেদে ৩০-৪০ টাকা বেড়েছে। শনিবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর-১ কাঁচাবাজার, মিরপুর-১৪ বউবাজার, কচুক্ষেত কাঁচাবাজারসহ আশপাশের কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায় প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭৫০ টাকা। এদিকে কাঁচাবাজারের মতোই সুপারশপগুলোতেও দাম বেড়েছে। মিরপুর-১ প্রিন্স সুপারশপে প্রিমিয়াম (হাড়সহ) গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০০ টাকায় এবং হাড় ছাড়া ১০০০ টাকা। মিরপুর কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী হান্নান বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে গরুর মাংসের বাজার কিছুটা চড়া। আজ সকাল থেকেই ৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।’ গরুর মাংস কিনতে আসা একজন ক্রেতা জানান, অল্প নিলে দাম বেশি রাখে। কিন্তু বেশি নিলে কিছুটা কমে পাওয়া যায়। এদিকে রমজান উপলক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সুলভ মূল্যের বাজারে গরুর মাংস ৬৫০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর ৪৮টি পয়েন্টে রমজান মাসজুড়ে এই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সারাদেশে ডিম (প্রতি ডজন) ১০৮ টাকার জায়গায় ১০০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার (প্রতি কেজি) ২৫০ টাকা, পাস্তুরিত দুধ (প্রতি লিটার) ৮০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ ২৫.৪৪ বিলিয়ন ডলার

মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র পরিবার-পরিজনের জন্য বেশি বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ফলে চলতি মার্চ মাসের রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, সবশেষ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) পর্যন্ত দেশে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রোস রিজার্ভ ২৫ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলারে। তবে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ এখনো ১৫ বিলিয়নের ঘরে রয়েছে। এর আগে গত ৯ মার্চ আকুর বিল পরিশোধের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন ডলার নেমে এসেছে। বিপিএম-৬ ১৯ দশ‌মিক ৭০ বিলিয়ন ডলার হয়। এরপর রমজান মাসে রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও রপ্তানি আয় ইতিবাচক থাকায় রিজার্ভ বাড়ছে। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়। তবে এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, তা হ‌লো ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ। এ তথ্য আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ক‌রে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেখানে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ এর হিসাব করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৫ বিলিয়ন ডলারে আছে। প্রতি মাসে ৫ বিলিয়ন ডলার হিসেবে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৪ বিলিয়নের ডলারের নিচে নামে। সে সময় বৈদেশিক ঋণ ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কেনার মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়ানো হয়। আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন গভর্নর এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রেখেছে। আবার বিভিন্ন সোর্স থেকে ডলার যোগানের চেষ্টা করছে। তবে আগের দায় পরিশোধ করতে গিয়ে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে কাছে ওঠানামা করছে।

আজ যেসব এলাকায় ব্যাংক খোলা

তৈরি পোশাকশিল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি বিল সংক্রান্ত লেনদেন এবং পোশাক কারখানার কর্মীদের বেতন, বোনাস পরিশোধের সুবিধার্থে শিল্পঘন এলাকায় আজ শনিবার (২৯ মার্চ) ব্যাংক খোলা থাকবে। ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে অবস্থিত পোশাকশিল্প এলাকার ব্যাংকের নির্দিষ্ট কিছু শাখা আজ খোলা থাকবে। এর আগে গতকাল শুক্রবারও সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এসব এলাকায় ব্যাংকের শাখা খোলা ছিল। তবে লেনদেন চলে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত, বাকি সময় লেনদেন পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। আজ শনিবার শিল্প এলাকায় ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এর মধ্যে লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। যেসব শাখা খোলা থাকবে সেসব শাখায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ছুটির দিনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিধি মোতাবেক ভাতা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের জানমালের নিরাপত্তা চায় বাজুস

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) নেতারা। এমন পরিস্থিতিতে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। শুক্রবার রাজধানীর মগবাজারে বাজুসের নতুন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য রাখেন- বাজুসের সহসভাপতি মো. রিপনুল হাসান। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও ব্যবসায়ীদের ওপর সরাসরি আক্রমণের ঘটনা বাড়ছে। এমনকি বাসা-বাড়িতেও জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা পরিবার নিয়ে নিরাপদ বোধ করছে না। এসব অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সময় হত্যাচেষ্টার ঘটনাও বাড়ছে। রিপনুল হাসান বলেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাজুসের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. ওয়াহিদুজ্জামান সুজনের ওপর ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার চেষ্টা হয়। যা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়। এভাবে জানুয়ারি থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ২৩টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। তিনি আরও বলেন, আশুলিয়া সাভারে ডাকাতদের গুলিতে একজন জুয়েলারি ব্যবসায়ী নিহত হন এবং বনশ্রীতে স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় একজন জুয়েলারি ব্যবসায়ী গুরুতর আহত হন। গত এক বছরে এই চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় দেশের ২৩টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান প্রায় ৪৪ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বাজুসের সহসভাপতি বলেন, এসব ঘটনায় জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ জন্য জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারের আলাদা দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সশস্ত্র প্রহরার পাশাপাশি রাজধানীসহ দেশের সব জেলার জুয়েলারি মার্কেটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। বাজুসের নেতারা বলছেন, জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই হওয়া অলংকার উদ্ধার এবং অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় ১৫ এপ্রিলের পর পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাজুসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গুলজার আহমেদ, সহসভাপতি এম এ হাসান আজাদ, সহসভাপতি মাসুদুর রহমান, সহসভাপতি জয়নাল আবেদীন খোকন, সহসভাপতি সমিত ঘোষ অপু প্রমুখ।

২.১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিল চীন

চীনের সরকার ও কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঐতিহাসিক সফরের ফলস্বরূপ এ প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার শুক্রবার (২৮ মার্চ) এর তথ্য জানান। বাংলাদেশি কর্মকর্তারা এবং ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানান, প্রায় ৩০টি চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে এক্সক্লুসিভ চায়না ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোনে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের উৎপাদন খাতে বিনিয়োগে চীনের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহিত করার পর এই প্রতিশ্রুতি এসেছে। চীন মংলা বন্দর আধুনিকায়ন প্রকল্পের জন্য প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ, চায়না ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোনের উন্নয়নে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য ১৫০ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। বাকি অর্থ অনুদান ও অন্যান্য ঋণের মাধ্যমে আসবে। প্রধান উপদেষ্টার চার দিনব্যাপী প্রথম দ্বিপাক্ষিক চীন সফর প্রসঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও জয়েন বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক সফর। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, এই সফর বাংলাদেশের প্রতি চীনা বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মোচন করতে পারে। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময় ড. ইউনূস চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে বাংলাদেশে চীনা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগের জন্য সবুজ সংকেত দেওয়ার অনুরোধ করেন। আশিক চৌধুরী জানান, প্রেসিডেন্ট শি চীনা কোম্পানিগুলোকে তাদের উৎপাদন কেন্দ্র বহুমুখীকরণের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে স্থানান্তর করতে উৎসাহিত করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এই সফর চীনের অনেক কোম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে রাজি করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি কেবল সময়ের ব্যাপার। এ পর্যন্ত প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত ইতিবাচক। শুক্রবার ড. ইউনূস এবং আশিক চৌধুরী বেইজিংয়ে তিনটি ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশনে বিশ্বের বৃহত্তম কিছু কোম্পানিসহ ১০০টিরও বেশি চীনা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তারা বাংলাদেশে, বিশেষ করে উন্নত বস্ত্রশিল্প, ওষুধশিল্প, হালকা প্রকৌশল এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।