খাদ্য মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির সূচক

বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের লাল তালিকায়


বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের লাল তালিকায়

বাংলাদেশ ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত চার বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বব্যাংকের লাল তালিকায় অবস্থান করছে। এই সময়ে দেশটির খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার প্রতি মাসে গড়ে ৫ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তৈরি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৭.৫৬ শতাংশে। চলতি বছরে চাল, সবজি, ডিম ও মুরগিসহ প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম এখনও ৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। লাল তালিকায় থাকা দেশগুলোর মুদ্রা সাধারণত স্থিতিশীল থাকে না, ফলে বিদেশি বিনিয়োগও বাধাগ্রস্ত হয়।

বিশ্বব্যাংক খাদ্য মূল্যস্ফীতির সূচক অনুযায়ী দেশগুলোর তালিকা তিন ভাগে ভাগ করা হয়। প্রতি মাসে খাদ্যপণ্যের দাম গড়ে ২ শতাংশের কম বাড়লে দেশকে সবুজ তালিকায় রাখা হয়। ২ থেকে ৫ শতাংশ বাড়লে হলুদ তালিকায়, এবং ৫ থেকে ৩০ শতাংশ বৃদ্ধিতে লাল তালিকায় রাখা হয়। ৩০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেলে পিঙ্গল তালিকায় ফেলা হয়, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়।

বাংলাদেশ বিভিন্ন সময় সবুজ ও হলুদ তালিকায় থেকেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার সর্বনিম্ন ০.২৫ শতাংশে নেমেছিল। ২০১১-১২ ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে গড়ে যথাক্রমে ২.৫৭ শতাংশ ও ৪.২৩ শতাংশ বেড়ে হলুদ তালিকায় ছিল। তবে এর বাইরে অধিকাংশ সময় লাল তালিকায় অবস্থান করেছে।

করোনা মহামারি ও ২০২২ সালে শুরু হওয়া বৈশ্বিক মন্দার নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতির পুনরুদ্ধার ধীর গতিতে হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতিও মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যাহত করেছে।

২০০৭-০৮ থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতির ধারা উঠানামা করেছে। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে এটি ১৪.১০ শতাংশে পৌঁছেছিল। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে দেশের বিভিন্ন পদক্ষেপ যেমন ডলারের দর স্থিতিশীল রাখা এবং বাজারে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে খাদ্যপণ্যের দাম কমাতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া না হলে লাল তালিকা থেকে বের হওয়া এখনও দূরদর্শী লক্ষ্য।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×