তত্ত্বাবধায়কের মুডে যেতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে: আমীর খসরু
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৩:২৯ পিএম, ২২ অক্টোবর ২০২৫

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের এখনই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে কাজ শুরু করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বুধবার, ২২ অক্টোবর, জাতীয় প্রেসক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “দেশে বর্তমানে কার্যকর কোনো নির্বাচিত সরকার না থাকায় রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রশাসনিক জবাবদিহির সংকট তৈরি হয়েছে।”
“দেশ-বিদেশে এখন সবাই একটি প্রশ্নই করছে: বাংলাদেশে নির্বাচন কবে হবে?” বলেন আমীর খসরু। তিনি অভিযোগ করেন, বিগত ১৫ মাস ধরে একটি অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, যা দেশের স্থিতিশীলতা ব্যাহত করছে।
তার ভাষ্য অনুযায়ী, “রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরেই এখন জবাবদিহির অভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। সরকারি দপ্তর থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রশাসন; কোথাও সুশাসনের ছাপ নেই। বর্তমান সরকারের প্রতি জনগণের কোনো প্রত্যাশা নেই, কারণ তাদের কোনো ম্যান্ডেট নেই,” বলেন তিনি।
জনগণের মালিকানা দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার তাগিদ দিয়ে আমীর খসরু বলেন, “নির্বাচিত সরকার না থাকায় সব ক্ষেত্রেই এক ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে। যাদের যাওয়ার কথা, তারা এখনও পদে বসে আছেন।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “নির্বাচন নিরপেক্ষ হতে হবে। কারণ, নিরপেক্ষতাই নির্বাচনের প্রথম শর্ত। এতদিন আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্যই আন্দোলন করেছি। নিরপেক্ষতা না থাকলে অপশক্তি শক্তিশালী হয়, ধোঁয়াশা রেখে নির্বাচন সম্ভব নয়।”
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা দাবি করেন, এখনই সরকারের উচিত নিজেকে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় রূপান্তরিত করা। তার মতে, সরকারে কিছু ব্যক্তি রয়েছেন যারা নিয়োগ ও পদায়নে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করছেন এবং তাদের কেউ কেউ বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তারা দায়িত্বে থাকলে নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ বাধাগ্রস্ত হবে।
তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের এখন কোনো বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়; তাদের দৈনন্দিন কাজে মনোযোগী থাকা প্রয়োজন। বড় সিদ্ধান্ত নিলে প্রশ্ন উঠবে৷”
আমীর খসরু দাবি করেন, বিএনপি এখনো দায়িত্বশীল রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েই চলেছে। “বিএনপি রাস্তায় নামতে পারত, কিন্তু আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাই না। এখন যেতে হবে জনগণের কাছে, ইশতেহারে দাবি নিয়ে। যারা রাস্তায় নামছে তারা গণতন্ত্রের বিপক্ষে যাচ্ছে৷”
তিনি বলেন, বিএনপির লক্ষ্য একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক রূপান্তর। তবে সরকারে থাকা কিছু ব্যক্তির আচরণ পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে, যা শেষ পর্যন্ত সরকারের জন্যই অস্বস্তিকর হতে পারে। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত এখন থেকেই নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক চরিত্র ধারণ করা।
দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিদেশি হস্তক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি। “বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে কারো হস্তক্ষেপ বরদাশত করা হবে না।”