
সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য পণ্য ও সেবা খাতে মোট ৬৩ দশমিক ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ সংক্রান্ত বৈঠক শেষে তিনি এ তথ্য জানান। সভায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনও উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্য সচিব জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পণ্য খাতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ বিলিয়ন ডলার, যার বিপরীতে অর্জিত হয়েছে ৪৮ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার—লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৭ শতাংশ। এ আয় আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি। সেবা খাতে জুলাই-এপ্রিল সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার, যা নির্ধারিত ৭ দশমিক ৫০ বিলিয়নের ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ বেশি।
তিনি বলেন, রপ্তানি খাতে অর্জিত প্রবৃদ্ধির ধারা, বাজার সম্প্রসারণ, বৈশ্বিক বাণিজ্যের পরিবর্তন, ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মধ্যপ্রাচ্য সংকট ও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবসহ অংশীজনদের মতামত বিবেচনায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরে পণ্য খাতে প্রায় ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে ৫৫ বিলিয়ন ডলার এবং সেবা খাতে প্রায় ১৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে ৮ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরকে ভিত্তি ধরে ২০২৪-২৫ সালে পণ্য খাতে বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং সেবা খাতে ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
খাতভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রায়, তৈরি পোশাক (ওভেন) খাতে ১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে ২০ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার, তৈরি পোশাক (নিট) খাতে ১২ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে ২৩ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার এবং হোম টেক্সটাইল খাতে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে ১ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য ধরা হয়েছে।
লেদার ও লেদার গুডস খাতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি সহ ১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার, যদিও খাতটির প্রতিনিধিরা ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছেন। হিমায়িত ও জীবন্ত মাছের ক্ষেত্রে লক্ষ্য ২২ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি সহ ৫৩৯ মিলিয়ন ডলার, পাট ও পাটজাত পণ্যে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি সহ ৯০০ মিলিয়ন ডলার, আর কৃষি পণ্যে ২২ দশমিক ৪৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি সহ ১ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার।
খাত সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা নীতিগত সহায়তা, অবকাঠামো উন্নয়ন, পরীক্ষাগার সক্ষমতা বৃদ্ধি, কুলিং সিস্টেম ও আধুনিক সরঞ্জাম সংযোজনের ওপর জোর দিয়েছেন, যাতে নির্ধারিত লক্ষ্য ছাড়িয়ে রপ্তানি আয় বাড়ানো সম্ভব হয়।