
পূবালী ব্যাংক কর্তৃক ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিকে বাস প্রদান
পূবালী ব্যাংক পিএলসি সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যবহারের জন্য একটি বাস প্রদান করেছে। এ উপলক্ষ্যে আইইউটি ক্যাম্পাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পূবালী ব্যাংক পিএলসি'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ আলী ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে বাসের চাবি হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ড. হিসেইন আরাবি নুর ও পূবালী ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ শাহনেওয়াজ খান। এসময় ব্যাংকের জেনারেল ব্যাংকিং ও অপারেশন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মোঃ ফয়জুল হক শরীফ, ঢাকা উত্তর অঞ্চল প্রধান ও মহাব্যবস্থাপক এ কে এম আব্দুর রকীব, গাজীপুর অঞ্চল প্রধান ও উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, উত্তরা মডেল টাউন শাখা ব্যবস্থাপক তাহমিনা ময়না এবং জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ মিজানুর রহমানসহ ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির শিক্ষকবৃন্দ ও ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী এই উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, পূবালী ব্যাংক শুধু মুনাফা অর্জন করার জন্যই ব্যবসা করেনা, এর বাহিরে সামাজিক দায়িত্ববোধও রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির জন্য পূবালী ব্যাংক একটি বাস অনুদান হিসেবে প্রদান করেছে। তিনি বলেন, এই অনুদান অনাগত দিনগুলোতে ঐতিহ্যবাহী দুই প্রতিষ্ঠানের মাঝে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির সেতুবন্ধন ও পারস্পরিক সহযোগিতার প্রতীক হিসাবে কাজ করবে। ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম পূবালী ব্যাংকের এই অনুদানের জন্য ধন্যবাদ জানান।

বাণিজ্য উপদেষ্টার সাথে সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার এর বৈঠক
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের অনাবাসিক হাইকমিশনার ডেরেক লো (Derek Loh) বৈঠক করেছেন। আজ মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার অফিস কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তাঁরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়ন ও বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো শক্তিশালী করার সুযোগ রয়েছে। এসময় উপদেষ্টা সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনারকে বাংলাদেশ হতে চা, আলু,মৌসুমি ফল ও হিমায়িত মাছ আমদানির আহবান জানান। সিঙ্গাপুরের অনাবাসিক হাইকমিশনার ডেরেক লো বলেন,সিঙ্গাপুরে মৌসুমি ফলের চাহিদা রয়েছে। চাহিদা পূরণে তারা বাংলাদেশ থেকে আম, লিচু, কলা ও আলু আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেন। এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) আয়েশা আক্তার, সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মিচেল লি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (এফটিএ-১) মো: ফিরোজ উদ্দিন আহমেদ ও যুগ্মসচিব (রপ্তানি-২) নাহিদ আফরোজ উপস্থিত ছিলেন।

ইসলামী ব্যাংকে অডিট বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
ইসলামী ব্যাংক ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ একাডেমির (আইবিটিআরএ) উদ্যোগে “ইফেক্টিভ ইন্টারনাল অডিট প্রসিডিউর ইন ব্যাংক” শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (চলতি দায়িত্ব) মো. ওমর ফারুক খান প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মশালার উদ্বোধন করেন। ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও আইবিটিআরএ’র প্রিন্সিপাল খোন্দকার মো. মুনীরুল আলম আল-মামুনের সভাপতিত্বে কর্মশালার বিভিন্ন সেশন পরিচালনা করেন ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. আলতাফ হুসাইন ও মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার, ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. রফিকুল ইসলাম ও মো. মাকসুদুর রহমান।ব্যাংকের অডিট অ্যান্ড ইন্সফেকশন ডিভিশনের নির্বাহী ও কর্মকর্তাবৃন্দ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।

প্রধান উপদেষ্টার সাথে ইয়ংওয়ানের চেয়ারম্যানের সাক্ষাৎ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সুং। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। কিহাক সুং দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগকারীদের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।ঢাকায় গতকাল সোমবার (৭ এপ্রিল) থেকে দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে চার দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন-২০২৫’ শুরু হয়েছে। চার দিনব্যাপী এই সম্মেলনের প্রথম দিন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বড় অংশ চট্টগ্রামের আনোয়ারা, কোরিয়ান ইপিজেড ও মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল ভ্রমণ করেছেন।আর মঙ্গলবার চীন, জাপান, সৌদি, আবুধাবি, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও প্রবাসী বাংলাদেশিসহ ৩৬ বিনিয়োগকারী নারায়নগঞ্জের জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করছেন। এসময় তারা খতিয়ে দেখছেন সুযোগ-সুবিধা ও কর্মপরিবেশ।পরিবহন ও জ্বালানি বিষয়েও কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা করবেন বিদেশি উদ্যোক্তারা। বিনিয়োগ সম্ভাবনা ও জুলাই বিপ্লব পরবর্তী অর্থনৈতিক সংস্কার তুলে ধরতে বাংলাদেশ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডা আয়োজিত বিনিয়োগ সম্মেলনের অংশ হিসেবে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অর্থনৈতিক অঞ্চলটি পরিদর্শন করানো হচ্ছে।এ সময় সুইডিশ কোম্পানি নিলর্ন বিএসইজেডে ১০ হাজার স্কয়ার মিটারের একটি প্লট কিনেছে। এ বিষয়ে একটি তাৎক্ষণিক বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষর করে কোম্পানিটি।

চামড়া-প্লাস্টিকের রফতানি আয় বাড়লেও মুখ থুবড়ে পড়েছে পাট
রেমিট্যান্সে রেকর্ড গড়ার পর বছর ব্যবধানে গত মার্চ পর্যন্ত চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ১০ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়েছে রফতানি আয়। এ সময়ে মোট রফতানি আয়ের মধ্যে ৮১ ভাগের বেশি এসেছে তৈরি পোশাক খাতের ঘরে। আর চামড়া, প্লাস্টিক, বাইসাইকেল থেকে রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি হলেও বিশ্ববাজারে মুখ থুবড়ে পড়েছে পরিবেশবান্ধব পাটখাত। বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া রেকর্ড প্রবাসী আয়ের খবরের পর এবার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে দেশে রফতানি আয় এসেছে ৩ হাজার ৭১৯ কোটি ১৩ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি।খাতভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, এ সময়ে দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক শিল্প আয় করেছে ৩ হাজার ২৪ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। বছর ব্যবধানে বেড়েছে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ।চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানি আয় বেড়েছে ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ। জুলাই থেকে মার্চ; এ খাতের রফতানি আয় হয়েছে ৮৫ কোটি ২০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে মার্চ পর্যন্ত বাইসাইকেল থেকে রফতানি হয়েছে ৮ কোটি ৬৬ লাখ ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬০ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।রফতানি আয় বেড়েছে প্লাস্টিক খাতেরও। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ; এ খাতের রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ২২ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি দেখেছে কৃষি খাতও। ৮০ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রফতানি আয় ঘরে তুলেছে খাতটি। যা এক বছর আগের তুলনায় ৬.১৪ শতাংশ বেশি।রফতানি আয়ের এমন প্রবৃদ্ধির হিসাবের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে বিশ্ববাজারে মুখ থুবড়ে পড়েছে বাংলাদেশের পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটজাত পণ্য। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত; রফতানি হয়েছে ৬২ কোটি ৬৩ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য। যা গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসের তুলনায় ৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ কম।

সূচক বেড়ে পুঁজিবাজারে চলছে লেনদেন
পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বাড়ার মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৯ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২০৬ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসইর শরীয়াহ সূচক ৪ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে যথাক্রমে ১১৭০ ও ১৯৩৩ পয়েন্টে রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে লেনদেন হয়েছে ৭৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এদিন এ সময়ে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৯৪টির, কমেছে ৯৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৭৫টি কোম্পানির শেয়ার। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০টি কোম্পানি হলো- শাইনপুকুর সিরামিক, এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড, বেক্সিমকো ফার্মা, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট, বিএসসি, এডিএন টেলিকম, সোনালি পেপার, অগ্নি সিস্টেম, লংকাবাংলা ও নাভানা ফার্মা। এর আগে এদিন লেনদেন শুরুর প্রথম ৫ মিনিটে ডিএসইএক্স বাড়ে ৩ পয়েন্ট। সকাল ১০টা ১০ মিনিটে সূচক আগের অবস্থান থেকে আরও ২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়। লেনদেন শুরুর ২০ মিনিট পর অর্থাৎ সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সূচক আগের দিনের চেয়ে ৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২০৫ পয়েন্টে অবস্থান করে। অপরদিকে লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সিএএসপিআই সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে ১৪ হাজার ৫৬২ পয়েন্টে অবস্থান করে। এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪২ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ সময়ের মধ্যে ২২টি কোম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ২০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৯টি কোম্পানির শেয়ারের দর।

শোরুমে হামলা নিয়ে বাটার বিবৃতি
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ এবং ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি সংহতি জানিয়ে সারা দেশে বিক্ষোভ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাটা ইসরায়েলি পণ্য এমন অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাটার শোরুমে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে বাটা কর্তৃপক্ষ। সোমবার (৭ এপ্রিল) রাতে বাটার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে এ বিষয়ে বিবৃতি দেয় প্রতিষ্ঠানটি। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বাটা কোনো ইসরায়েলি মালিকানাধীন কোম্পানি নয়। এমনকি চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, বাটা আন্তর্জাতিক একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন পারিবারিক প্রতিষ্ঠান, যার সূচনা চেক রিপাবলিকে। আমাদের কোনো রাজনৈতিক সংঘাতের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রশ্নই ওঠে না। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশের কিছু আউটলেটে যে ভাঙচুর হয়েছে, তা মিথ্যা তথ্য দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ঘটেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। বাটা সব ধরনের সহিংসতার নিন্দা প্রকাশ করে। ওই বিবৃতির শেষাংশে বলা হয়, বাটা ১৯৬২ সাল থেকে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। কোম্পানিটি সব সময় মানসম্মত পণ্য সরবরাহ এবং সব সম্প্রদায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আরও ১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বাংলাদেশ
যুক্তরাষ্ট্রে সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে আরও ১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বাংলাদেশ। সরকারে এমন উদ্যোগের কথা জানিয়ে আজ সোমবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) কাছে চিঠি লিখেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা বাড়তি ৩৭ শতাংশ তিন মাসের জন্য স্থগিত চেয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যে অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা প্রত্যাহার করে। এরপর থেকে বাংলাদেশের সকল রপ্তানি পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়। অথচ বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর গড়ে ৬ দশমিক ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। উল্লেখ্য, কাঁচা তুলা ও লোহার স্ক্র্যাপের ক্ষেত্রে আমাদের শুল্ক হার যথাক্রমে শূন্য ও এক শতাংশ। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় তুলা আমদানিকারক দেশ, যা দিয়ে তৈরি পোশাক শিল্প চালিত হয়। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের পণ্যগুলোর ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের শুল্ক তালিকায় ১৯০টি পণ্যের ওপর শুল্ক হার শূন্য এবং আরও ১০০টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার চিন্তাভাবনা চলছে। এতের আরও বলা হয়, ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি (টিকফা) অনুযায়ী, উভয় দেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পথে প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে তা যৌথভাবে দূর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ সব সময় গঠনমূলক সংলাপ ও সহযোগিতায় বিশ্বাসী। যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিতে যদি কোনো বাধা থাকে তা দূর করতে প্রস্তুত। এ বিষয়ে ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের বাণিজ্য শাখার সঙ্গে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার শুল্ক হার কমানো, সব ধরনের অশুল্ক বাধা দূর করা এবং পারস্পারিক বাণিজ্যকে আরও লাভজনক করতে বিভিন্ন সংস্কারমূলক উদ্যোগ নিয়েছে। এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে: আমদানি নীতির হালনাগাদ, কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণ, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ, ট্রেডমার্ক ও পেটেন্ট সুরক্ষা ইত্যাদি। এছাড়া আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি চুক্তি, মার্কিন অটো নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব, বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে সয়াবিন, গম, তুলা ইত্যাদি বড় আকারে আমদানির উদ্যোগ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাতকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও অন্যান্য সেবামূলক খাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হচ্ছে। চিঠিতে বাণিজ্য উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, তার বিশ্বাস এসব উদ্যোগ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ভারসাম্য আনতে এবং উভয় দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক হবে। প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস এবং তাঁর সরকারসহ বাণিজ্য উপদেষ্টা ব্যক্তিগতভাবে ইউএসটিআর দপ্তরের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক আরও মজবুত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ হারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বেশির দেশের পণ্যে এমন শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। যে দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য–ঘাটতি বেশি, সেই দেশের ওপর বেশি হারে শুল্ক আরোপ হয়েছে। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় চলছে। বাংলাদেশেও সরকারের উচ্চমহল ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ প্রধান উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টা এ বাড়তি শুল্কের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে দুই চিঠি দেন।

ইসলামী ব্যাংকে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর (চলতি দায়িত্ব) মো. ওমর ফারুক খানের সাথে প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী, জোন ও শাখাপ্রধানদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৭ এপ্রিল) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আলতাফ হুসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাহমুদুর রহমান এবং ধন্যবাদ জানান সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কে এম মাহবুব মোরশেদ। অনুষ্ঠানে ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. রফিকুল ইসলাম, মুহাম্মদ সাঈদ উল্লাহ, ড. এম কামাল উদ্দীন জসীম ও মো. মাকসুদুর রহমানসহ প্রধান কার্যালয়ের উইং ও ডিভিশন প্রধান, ঊর্ধ্বতন নির্বাহীরা, ১৬টি জোনের জোনপ্রধান, ৪শ’টি শাখার ব্যবস্থাপকরা এবং ২৬৫টি উপশাখার ইনচার্জরা অংশ নেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. ওমর ফারুক খান বলেন, ইসলামী ব্যাংক আমাদের প্রাণের ব্যাংক। আমাদের মূল শক্তি ঐক্য এবং শৃঙ্খলা। ইসলামী ব্যাংকিং শুধু পেশা নয়, একটি ইবাদত। তিনি বলেন, ব্যাংককে এগিয়ে নিতে সব কর্মকতা-কর্মচারীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সততা, আন্তরিকতা ও দক্ষতার সমন্বয় ঘটিয়ে ইসলামী ব্যাংকের সেবা সব মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি ব্যাংকের ঘুরে দাঁড়ানোর এই সময়ে সব গ্লানি ভুলে নিবেদিত হয়ে সবাইকে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান এবং সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ব্যাংকের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

তিন পার্বত্য অঞ্চলে রবিবার ব্যাংক বন্ধ
চৈত্র সংক্রান্তি বা চৈত্র মাসের শেষ দিন অর্থাৎ আগামী ১৩ এপ্রিল (রবিবার) তিন পার্বত্য অঞ্চল রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে বন্ধ থাকবে সব ব্যাংক। আজ সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ সাইট সুপারভিশন থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে ১৩ এপ্রিল রবিবার তিনটি পার্বত্য জেলায় (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) অবস্থিত তফসিলি ব্যাংকগুলোর সব শাখা, উপশাখা বন্ধ থাকবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারার ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক ব্রিফিংয়ে জানান, চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে ১৩ এপ্রিল তিন পার্বত্য অঞ্চল রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে ছুটি ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তিনি জানান, পার্বত্য অঞ্চলে চৈত্র সংক্রান্তিতে বিজু, বৈষাবী, সাংগ্রাইসহ অনেক উৎসবের আয়োজন করা হয়। তাদের জন্য নির্বাহী আদেশে একটি ছুটির বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এই ছুটি আমাদের সমতলে যারা জাতিগোষ্ঠী আছেন যেমন- সাঁওতাল, খাসিয়া বা গারো, তাদের জন্যও এই ছুটি প্রযোজ্য হবে। পরে ২৭ মার্চ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নির্বাহী আদেশে প্রজ্ঞাপন জারি করে তিন পার্বত্য অঞ্চলে ছুটি ঘোষণা করা হয়।

মার্কিন ক্রেতাদের উদ্দেশে বিজিএমইএ’র খোলা চিঠি
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ফলে সৃষ্ট উদ্বেগের প্রেক্ষিতে মার্কিন ক্রেতা, ব্র্যান্ড কোম্পানি, খুচরা বিক্রেতা এবং তাদের প্রতিনিধিদের কাছে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন। রবিবার (৬ এপ্রিল) তিনি এই চিঠি ইস্যু করেন। চিঠিতে বিজিএমইএ’র প্রশাসক মার্কিন ক্রেতাদের কাছে পরিস্থিতি মোকাবিলায় যেকোনও পরামর্শ ও মতামত কামনা করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশের পোশাক রফতানি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় রফতানি গন্তব্য, যা দেশের মোট পোশাক রফতানির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ। তাই যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ফলে বাংলাদেশি রফতানিকারকদের পাশাপাশি মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। বিজিএমইএ’র প্রশাসক আরও জানান, এই পাল্টা শুল্ক আরোপ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের জন্যই অপ্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এর প্রভাব যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয় কাঠামো, সরবরাহ ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় বড় ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশের সরকার এবং বেসরকারি খাত বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে মোকাবিলা করছে। চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, অনেক আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতা ইতোমধ্যে তাদের বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং এই শুল্কের প্রভাব মোকাবিলায় সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করছেন। বিজিএমইএ’র প্রশাসক অংশীদারদের ধৈর্য ও সহযোগিতার জন্য অনুরোধ জানান এবং উল্লেখ করেন, ব্যবসায়ীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ না দেওয়ার কথা। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের পোশাক খাতকে টেকসই ও সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ খাতে রূপান্তরের জন্য পাশে রয়েছে, সেই সম্পর্কের ভিত্তিতে আমরা বিশ্বাস করি যে, পারস্পরিক প্রচেষ্টায় এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবো।’ এই চিঠি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ভবিষ্যৎ এবং মার্কিন ক্রেতাদের সঙ্গে সম্পর্কের ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মার্চে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১১.৪৪ শতাংশ
চলতি অর্থবছরের মার্চ মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ আয় করেছে ৪.২৫ বিলিয়ন বা ৪২৫ কোটি ডলার, যা আগের বছরের মার্চের চেয়ে ১১.৪৪ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের মার্চে পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছিল ৩.৮১ বিলিয়ন বা ৩৮১ কোটি ডলার। সোমবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) বাংলাদেশ রপ্তানি খাতে প্রশংসনীয় উন্নতি করেছে। মোট রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৭.১৯ বিলিয়ন ডলার, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময়ের ৩৩.৬১ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ১০.৬৩ শতাংশ বৃদ্ধি। বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের প্রধান ভিত্তি হিসেবে পরিচিত তৈরি পোশাক খাত (আরএমজি) পূর্বের মতোই শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত তৈরি পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০.৮৪ শতাংশ বেশি। শুধু মার্চ মাসেই এই খাতে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩.৪৫ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের মার্চে ছিল ৩.০৭ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে ১২.৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

চট্টগ্রামে কোরিয়ান ইপিজেড পরিদর্শনে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা
চার দিনব্যাপী শুরু হওয়া বিনিয়োগ সম্মেলনের ২০২৫ অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার কোরিয়ান রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল পরিদর্শন করছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের একটি প্রতিনিধি দল। সোমবার (৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫ এর প্রথম দিনে এই কর্মসূচি নেয় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বিডা জানায়, মূলত যারা শিগগিরই শিল্প কারখানা স্থাপনে আগ্রহী, তাদের এই সুযোগ করে দেয়া হয়। এ সফরের মাধ্যমে কোরিয়ান ইপিজেডের বাস্তবচিত্র বিদেশিদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। চীন, কোরিয়া, জাপানসহ ৪০টি দেশের ৬০ জনের একটি প্রতিনিধি দল এ সফরে অংশগ্রহণ করেন। কর্তৃপক্ষের আশা, বেশ কিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ চুক্তি সই করতে পারে এবারের সম্মেলনে। চট্টগ্রামে কোরিয়ান ইপিজেড এর কার্যক্রম ১৯৯৫ সালে শুরু হয়। এতে ৭ মিলিয়ন বর্গফুটের বেশি আয়তনের ৪৮টি সবুজ শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর পাশাপাশি গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য ১০টি ডিজাইন ডেভেলপমেন্ট সেন্টার এখানে স্থাপন করা হয়েছে। দেশের আইসিটি খাতকে এগিয়ে নিতে ১০০ একর আয়তনের একটি আইটি পার্কও নির্মাণাধীন রয়েছে। কেইপিজেডের বিভিন্ন কারখানায় ৩০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, যাদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ নারী কর্মী। ইতোমধ্যে ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে এবং উল্লেখযোগ্য পণ্যের মধ্যে রয়েছে- টেক্সটাইল, গার্মেন্টস, গার্মেন্টস এক্সেসরিজ পণ্য, জুতা এবং আইটি পরিষেবা।

নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ৯০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন
নতুন উদ্যোক্তাদের সহায়তা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ৮০০-৯০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। সেখান থেকে শুধু স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোকে মূলধন জোগান দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটের স্টার্টআপ কানেক্ট সেশনের আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। এ বিষয়ে শিগগির একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলেও জানান গভর্নর। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সোমবার (৭ এপ্রিল) চারদিনব্যাপী বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মলেন শুরু হয়েছে। সোমবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘এমপাওয়ারিং ইনোভেশন কানেক্টিং অপরচ্যুনিটি’ শিরোনামে স্টার্টআপ কানেক্ট সেশনের মাধ্যমে চার দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সেশনে দেশি-বিদেশি তরুণ ও উদ্ভাবনী উদ্যোক্তারা অংশ নেন। মূলপ্রবন্ধে বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর সম্ভাবনা তুলে ধরেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তানভীর আলী। প্রবন্ধে বলা হয়, দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশে উদ্ভাবনী স্টার্টআপ উদ্যোগের চাহিদা বাড়ছে। তবে প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় দেশে এখনো এই খাতে বিনিয়োগ কম। সেশনে আহসান এইচ মনসুর বলেন, নতুন উদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে বাংলাদেশ ব্যাংক যে বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে তার অর্থ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। এসময় নির্বাহী পরিচালক চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, ব্যবসা করার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স পাওয়াসহ সরকারি লালফিতার দৌরাত্ম্য বেশি। প্রতিবছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে গিয়ে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। তিনি আরও বলেন, ৪০ দেশের ৫ শতাধিক বিদেশি বিনিয়োগকারী এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। এসব বিনিয়োগকারীকে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরিয়ে দেখানো হবে। বাংলাদেশে উদ্ভাবনী উদ্যোক্তার অভাব নেই বলে মন্তব্য করেন বিডার চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, স্টার্টআপ তহবিলের সংকটে নতুন উদ্যোক্তারা ব্যবসা শুরু করতে পারেন না। এ কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংক ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি টাকার স্টার্টআপ তহবিল গঠন করতে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বার্তা দেন লিংকডইনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। প্যানেল আলোচনায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব এবং আইসিটি সচিব শীশ হায়দার চৌধুরী।

ঢাকায় ৪ দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলন আজ শুরু
চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলন-২০২৫ শুরু হচ্ছে আজ। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ ৪০টি দেশের শীর্ষ স্থানীয় ছয় শতাধিক দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী এ সম্মেলনে অংশ নেবেন। পাশাপাশি দেশেরও ২ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। গতকাল রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সম্মেলনের বিস্তারিত জানান বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। তিনি জানান, প্রথম দিন দুটি ট্র্যাকে অনুষ্ঠান হবে। প্রথম ট্র্যাকে ৬০ জনের বেশি বিদেশি বিনিয়োগকারীকে নিয়ে একটি স্পেশাল ফ্লাইট চট্টগ্রাম যাবে। সেখান থেকে কোরিয়ান ইপিজেড ও মিরসরাইতে স্পেশাল ইকোনমিক জোন পরিদর্শন শেষে রাতে ফিরে আসবেন তারা। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আরও জানান, যারা যাচ্ছেন তারা হলেন সেই সব উদ্যোক্তা যারা মনে করছেন তাদের সেখানে একটি কারখানা স্থাপন করতে হবে। তাদের জায়গা-জমি লাগবে। তাদের জন্য আমরা কী ধরনের সাপোর্ট সিস্টেম তৈরি করতে পারি তা তারা সরেজমিনে দেখবেন। অন্যদিকে সোমবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্টার্টআপ কানেক্ট নামে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানসূচি রয়েছে। সেখানে যেসব আরলি স্টেজ স্টার্টআপ এবং ভেঞ্চার বিনিয়োগকারী আসছেন তাদের মধ্যে ম্যাচ মেকিং ইভেন্ট, নেটওয়ার্কিং ও প্যানেল হবে। সারাদিন স্টার্টআপ ইভেন্টকে ফোকাস করা হবে। চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকালের দিকে বিনিয়োগকারীরা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে যেখানে জাপানি ইকোনমিক জোন রয়েছে সেখানে সরেজমিনে পরিদর্শন করবেন। তারা সেখানের কারখানার মালিকদের সঙ্গে কথা বলে কী ধরনের কর্মকাণ্ড হচ্ছে- তা বুঝে তাদের বিনিয়োগের জন্য কতটুকু সুযোগ-সুবিধা রয়েছে তা দেখবেন। দ্বিতীয় ধাপে বিশ্বব্যাংক ও আইএলওর সঙ্গে কিছু অ্যানগেজমেন্ট রয়েছে। তাদের এফডিআই সম্পর্কিত কিছু ব্যাপারে আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যতে বিনিয়োগের জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায় সে ব্যাপারে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। বুধবার (৯ এপ্রিল) উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছাড়াও সারাদিন একাধিক (৩-৪টা) প্যারালাল অনুষ্ঠান চলবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

রিজার্ভ এখন ২৫ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর মনিটরিং এবং হুন্ডি প্রতিরোধে জোর তৎপরতার ফলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এর প্রভাবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফের উর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, রবিবার (৬ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশের মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলারে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব অনুযায়ী প্রকৃত রিজার্ভ ২০ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রেমিট্যান্স ও রফতানি আয় ইতিবাচক ধারায় থাকলে রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে, যা আমদানি ব্যয় মেটানো এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একক মাসে প্রবাসী আয় ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। সদ্য বিদায়ী মার্চ মাসে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে এসেছে ৩২৯ কোটি মার্কিন ডলার, যা এখনও পর্যন্ত একক মাসে রেমিট্যান্স আয়ের সর্বোচ্চ রেকর্ড। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসায় প্রবাসীরা বৈধ পথে অর্থ পাঠাতে আরও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ব্যাংকারদের মতে, অর্থপাচার কমে যাওয়া ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধির ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মার্চে প্রবাসী আয় ছিল ৩২৯ কোটি ডলার, যা গত বছরের মার্চে ছিল ১৯৯ কোটি ডলার। এক বছরের ব্যবধানে প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৬৪ দশমিক ৭ শতাংশ। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৭৭ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ২০২৪ সালের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে টানা সাত মাস ধরে প্রতি মাসে ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসছে। শুধু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই এসেছে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার ফলে ব্যাংকিং খাতে ডলার সংকট অনেকটাই কেটে গেছে। ডলারের দামে অস্থিরতা কমে এসেছে এবং বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরেছে। বর্তমানে আন্তঃব্যাংক বাজারে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ১২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আমদানিকারকদের জন্য স্বস্তির বার্তা। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রবাসী আয় দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। এটি বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা এবং জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সরাসরি ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা আশা করছেন, সামনের মাসগুলোতেও রেমিট্যান্সের এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে। এতে সামগ্রিক অর্থনীতিতে পড়বে সুদূরপ্রসারী প্রভাব।

বাধ্যতামূলক ছুটিতে ইসলামী ব্যাংকের এমডি
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। বহিঃনিরীক্ষকের অডিটে বিভিন্ন অনিয়মে তার সম্পৃক্ততা পাওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে পর্ষদ। রোববার (৬ এপ্রিল) ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির একাধিক কর্মকর্তা। ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের এক সদস্য জানান, ব্যাংকের নতুন পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এমডি মুনিরুল মওলাকে অপসারণের দাবি ছিল। সে অনুযায়ী আন্দোলনও করে আসছিলেন কর্মকর্তারা। আমরা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বহিঃনিরীক্ষকের অডিট রিপোর্টের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। এখন প্রতিবেদন শেষ পর্যায়ে। অডিট রিপোর্টে এস আলম গ্রুপের ঋণ জালিয়াতি এবং নাবিল গ্রুপের ঋণ জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অনিয়মে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এসব কারণে তাকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক একসময় দেশসেরা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছিল। এখন ‘দুর্বল’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এর পেছনে যাদের ভূমিকা রয়েছে তাদের অন্যতম এমডি মুনিরুল মওলা। তার বাড়ি চট্টগ্রামে হওয়ার সুবাদে ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর পরই তিনি অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থার অবনতির পেছনে অন্যতম একজন ছিলেন তিনি। ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংক দখল করে এস আলম গ্রুপ। দখলে সহযোগিতায় ছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফজলে কবির ও এক গোয়েন্দা সংস্থার কিছু কর্মকর্তা। এরপর ইসলামী ব্যাংক থেকে ৯১ হাজার কোটি টাকা বের করে নেয় এস আলম গ্রুপ। ওই সময় থেকে ব্যাংকটিতে প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন মুনিরুল মওলা। এস আলম গ্রুপের সহায়তায় তাকে দ্রুততার সঙ্গে পদোন্নতি দিয়ে প্রথমে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

ইতিহাস সৃষ্টি করে মার্চে এলো ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স
গত মার্চ মাসে বৈধপথে ব্যাংকিং চ্যানেলে ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে বাংলাদেশে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। একক কোনো মাসে এত পরিমাণ রেমিট্যান্স এর আগে কখনো আসেনি বাংলাদেশে। এর আগে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রবাসীদের পাঠানো ২৬৪ কোটি ডলার ছিল একক কোনো মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। তারও আগে, ২০২০ সালের জুলাই মাসে ২৬০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। রোববার (৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, অর্থপাচারে বর্তমান সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ফলে হুন্ডি-সহ বিভিন্ন অবৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানো কমে গেছে, বৈধপথে রেমিট্যান্স আহরণ বেড়েছে। এছাড়া মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে পরিবার-পরিজনের বাড়তি খরচের কথা মাথায় রেখে বেশি বেশি অর্থ পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। যার কারণে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ মাসে দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১০ কোটি ৬১ লাখ ডলার। গত বছরের মার্চে দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ৬ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। সে হিসেবে গত মার্চ মাসে তার আগের বছরের মার্চের তুলনায় রেমিট্যান্সে ৬৪.৭০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০২৪ সালের মার্চে রেমিট্যান্স এসেছিল প্রায় ২০০ কোটি ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ১৭৮ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭.৬০ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরে একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৭০৮ কোটি মার্কিন ডলার। উল্লেখ্য, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার। এরপর জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি, ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার এবং মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। অর্থাৎ বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর টানা ৭ মাস দুই বিলিয়ন এবং মার্চে তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে।

বিদেশি শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক ৯ এপ্রিল
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী পরিচালক চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানিয়েছেন, বুধবার (৯ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের নিয়ে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। রোববার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি। চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন বিনিয়োগের ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা খুবই আগ্রহী। তিনি নিজেই চেয়েছিলেন বিদেশি বড় বড় বিনিয়োগকারী যারা আসবেন (চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে) তাদের সঙ্গে পৃথক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। তিনি বলেন, আগামীকাল ৭ এপ্রিল থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত চার দিনব্যাপী সম্মেলনে আয়োজক বাংলাদেশসহ অর্ধশতাধিক দেশের সাড়ে ৫ শতাধিক শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করবেন। বিডার নির্বাহী পরিচালক বলেন, সম্মেলনে দেশি-বিদেশি পাঁচজন বিনিয়োগকারীকে পুরস্কার দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সম্মেলন অনুষ্ঠানটি ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচারিত হবে। এ ছাড়া, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ইন্টারভিউ নিতে মিডিয়া কর্নার থাকবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপে আইএমএফের সন্তোষ প্রকাশ
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণের চতুর্থ কিস্তির ২৩৯ কোটি ডলার পাবে বাংলাদেশ। সেই অর্থছাড়ের আগে বিভিন্ন শর্ত পর্যালোচনা করতে রোববার (৬ এপ্রিল) দুপুর ১২টা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ম্যারাথন বৈঠক করছেন আইএমএফ প্রতিনিধি দল। বৈঠকটি বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের রেটিং কমে যাওয়া ও ইনফ্লেশন নিয়ন্ত্রণ না আসায় হতাশা প্রকাশ করেছে আইএমএফ। পাশাপাশি জিডিপির রেশিও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে দলটি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেয়া ব্যাংক সংস্কার পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, বিভিন্ন ইস্যুতে আইএমএফ আলোচনা করছে। তবে তারা ১৭ তারিখ ফাইনাল মিটিংয়ের পর আনুষ্ঠানিক ব্রিফ করবে আইএমএফ। আজ তারা বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের রেটিং কমে যাওয়া ও ইনফ্লেশন নিয়ন্ত্রণ না আসায় হতাশা প্রকাশ করেছে আইএমএফ। পাশাপাশি জিডিপির রেশিও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে দলটি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেয়া ব্যাংক সংস্কার পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এর আগে, আইএমএফ অর্থ উপদেষ্টার সালেহউদ্দিন আহমেদ এর সঙ্গে বৈঠক করেন। জানা গেছে, বেলা ১২টায় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করছেন আইএমএফ প্রতিনিধি দলটি। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে এই বৈঠক। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আইএমএফ বড় কোনো দলের ঢাকায় এটি দ্বিতীয় সফর হবে। জানা গেছে, আইএমএফের ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের আগে বিভিন্ন শর্ত পালনের অগ্রগতি পর্যালোচনায় আইএমএফের প্রতিনিধি দলটি আগামী ৬ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত টানা দুই সপ্তাহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করবে। অর্থ বিভাগ আরও জানায়, এ সফরে আইএমএফ দলটির সঙ্গে অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠক শেষে ১৭ এপ্রিল প্রেস ব্রিফিং করবে সফররত আইএমএফ দল। দলটি শেষ দিন ১৭ এপ্রিল ফের বৈঠক করবে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে। ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ঋণ কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর তিনটি কিস্তির অর্থ পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। একই বছরের ডিসেম্বরে পেয়েছে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার আর ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে। তিন কিস্তিতে বাংলাদেশ পেয়েছে প্রায় ২৩১ কোটি ডলার। ঋণের অর্থছাড় বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আইএমএফের সঙ্গে চলমান ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি থেকে কিস্তি পেতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ আইএমএফের দেয়া শর্ত। এই শর্তগুলো প্রতিপালনে দেয়া বেশকিছু শর্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর পালন করতে অস্বীকৃত্রি জানান। এ নিয়ে গভর্নর সাংবাদিক সম্মেলনেও খোলামেলা কথা বলেছেন, তিনি বলেন, আইএমএফের কঠিন শর্ত মেনে ঋণ নেয়ার খুব প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। কারণ এখন আমাদের রেমিট্যান্সই প্রতিমাসে তিন বিলিয়নের কাছাকাছি আসে। এর আগে আইএমএফ ভর্তুকি কমানো, বিদ্যুতের দাম বাড়ানো, মুদ্রা বিনিময় হার বাজারের পর ছেড়ে দেওয়ার মতো অজনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিতে বাংলাদেশকে চাপ দেয়। শর্ত পূরণে বাংলাদেশ ও আইএমএফ যদি নিজ নিজ অবস্থানে অনমনীয় থাকে, তাহলে আর কোনো কিস্তি না–ও মিলতে পারে। তখন বাংলাদেশের জন্য দেখা যাবে নতুন জটিলতা। অর্থাৎ অন্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোও তখন বাংলাদেশকে ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে রক্ষণশীল হয়ে যেতে পারে।

ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর পরিচালনা পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (৬ এপ্রিল) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল ও প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমান, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খান, মো. আলতাফ হুসাইন ও মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

মার্চে এসেছে রেকর্ড ৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তিন বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে রেমিট্যান্স। গত মার্চ মাসে এ রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান ঢাকা ওয়াচকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, গত ডিসেম্বরে দেশের ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছিল ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে জুলাই মাসে ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এবার সেই রেকর্ড ভাঙে ২০২৪ সালের বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে। ২০২৪ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার। এবার অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে তিন বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রেমিট্যান্স।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার: অর্থ উপদেষ্টা
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের ফলে অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়বে তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, নতুন শুল্ক আরোপের বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে নেগোসিয়েশনের (সমঝোতা) উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ভালো কিছু হবে বলে আশাবাদী। ঈদ উপলক্ষে টানা ৯ দিনের ছুটি শেষে প্রথম কার্যদিবসে আজ রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, রমজান ও ঈদে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা গেছে, মানুষ স্বস্তি পেয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালোর দিকে যাচ্ছে। তিনি বলেন, রিজার্ভ বেড়েছে। এবার ঈদে পণ্যের দাম কম ছিল। ঈদ ভালো কেটেছে। এত দিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। ২ এপ্রিল নতুন করে আরও ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই শুল্কের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বড় বাজারটিতে পণ্য রপ্তানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বড় ধাক্কার আশঙ্কা করছেন রপ্তানিকারকেরা।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের প্রভাব সামাল দেওয়া কঠিন হবে না : অর্থ উপদেষ্টা
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের ফলে অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়বে তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। ঈদ উপলক্ষে টানা ৯ দিনের ছুটি শেষে প্রথম কার্যদিবস রোববার (৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে এসে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের ফলে অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়বে তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে না। এটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সঙ্গে নেগোসিয়েশনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ভালো কিছু হবে বলে আশাবাদী তিনি। রমজান এবং ঈদে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা গেছে এবং মানুষ স্বস্তি পেয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালোর দিকে যাচ্ছে, রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও উল্লেখ করেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ঈদে পণ্যের দাম কম ছিল। ঈদ ভালো কেটেছে। এতো দিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। ২ এপ্রিল নতুন করে আরও ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই শুল্কের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বড় বাজারটিতে পণ্য রপ্তানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বড় ধাক্কার আশঙ্কা করছেন রপ্তানিকারকরা। বাংলাদেশের মোট পণ্য রপ্তানির ১৮ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক বসিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ঘটনায় দুনিয়াজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ট্রাম্পের এই ঘোষণা নিয়ে বিবিসি, সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইমসসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিশ্বনেতাদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া উঠে এসেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলছে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বড় ধাক্কা। অস্ট্রেলিয়া বলছে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত বন্ধুসুলভ নয়। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, নিঃসন্দেহে এই ঘটনার অর্থনৈতিক প্রভাব অনুভূত হবে। বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট, ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করে দিলেন। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাংলাদেশের পক্ষে। আমদানির তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি অনেক বেশি। অবশ্য রপ্তানি তৈরি পোশাকের ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল, যার মধ্যে বেশিরভাগ মৌলিক আইটেম। অন্যদিকে, বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি লোহা, ইস্পাত, খনিজ জ্বালানি, তুলা, তেলবীজ ও নিউক্লিয়ার রেক্টরসহ পাঁচটি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ১০ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ৭ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার এবং দেশ থেকে আমদানি ছিল ২ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৬০১ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার মূল্যের লোহার ইস্পাত আমদানি করেছে, তারপরে খনিজ জ্বালানি ৫৯৫ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, তুলা ৩৬১ মিলিয়ন ডলার, তেলবীজ ৩৪১ মিলিয়ন ডলার ও নিউক্লিয়ার রেক্টর আমদানি করেছে ১১১ মিলিয়ন ডলারের। বাংলাদেশের রপ্তানি আয় বেশিরভাগ আসে তৈরি পোশাক থেকে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয়ের ৭ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার এসেছে তৈরি পোশাক থেকে। বাকিটা এসেছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, চামড়ার জুতা, ফার্মাসিউটিক্যালস ও বিভিন্ন কৃষিপণ্য থেকে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ছিল ৯৭০১ দশমিক ৩৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য, আমদানি ২৩৪৪ দশমিক ২৬ মিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি ১০৪১৭ দশমিক ৭২ মিলিয়ন ডলার, আমদানি ২৮২৫ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন ডলার, ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি ৬৯৭৪ দশমিক ০১ মিলিয়ন ডলার, আমদানি ২২৬৮ দশমিক ২০ মিলিয়ন ডলার, ২০১৯-২০ অর্থবছরে রপ্তানি ছিল ৫৮৩২ দশমিক ৩০ মিলিয়ন ডলার, আমদানি ২১২৬ দশমিক ১০ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রপ্তানি ছিল ৬৮৭৬ দশমিক ২৯ মিলিয়ন ডলার, আমদানি ১৭৭৩ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলার এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রপ্তানি ছিল ৫৯৮৩ দশমিক ৩১ মিলিয়ন ডলার, আমদানি ১৭০৪ দশমিক ৬৬ মিলিয়ন ডলারের পণ্য।