চালের দাম আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন খাদ্য উপদেষ্টা

বিগত বছরের চেয়ে কেজিতে চার টাকা বেশি দামে ধান-চাল ক্রয় করছে সরকার। বেশি দামে কেনার কারণে বাজারে চালের দাম কিছুটা বাড়বে বলে জানিয়েছেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১১টায় সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে ধান সংগ্রহ অভিযান উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান তিনি। খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ধান-চাল ক্রয় নিয়ে কোনো সিন্ডিকেট আর হবে না, হতে দেবে না সরকার। কৃষকের স্বার্থে বিগত বছরের চেয়ে বেশি দামে ধান ও চাল কিনছে সরকার। তিনি বলেন, ‘বিগত আমন ধান সংগ্রহ অভিযানে কোনো সিন্ডিকেট ছিল না, বোরো সংগ্রহেও কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না। বিগত সরকারের আমলে কী হয়েছে, না হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে এখন কোনো সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব থাকবে না। সরকারি সভার মাধ্যমে অনেক বিষয় নিয়ে বিশদ আলোচনা করে ধান-চালের মূল্য নির্ধারণ করা হয় বলে জানান উপদেষ্টা। আলী ইমাম মজুমদার বলেন, সরকার প্রতি কেজি ধান ৩৬ টাকা ও চাল ৪৯ টাকা কেজি দরে কিনবে। বাজারে চালের মূল্য কিছুটা বাড়তে পারে। কৃষক পরিশ্রম করে ধান উৎপাদন করে তাদের উপযুক্ত মূল্য দিতে না পারলে কৃষক ধান চাষের আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক ড. ইলিয়াস মিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ, শান্তিগঞ্জ থানার নির্বাহ কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা, সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি অফিসার মোস্তফা ইকবাল আজাদ প্রমুখ।

বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ নেওয়ার আহ্বান বাণিজ্য উপদেষ্টার

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস প্রকল্পের আওতায় ‘মিট বাংলাদেশ এক্সপোজিশন’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের রপ্তানি একটি পণ্যের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল এবং আমাদের রপ্তানি বহুমুখীকরণ করা উচিত। টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য আমাদের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে কাজে লাগাতে হবে। এ জন্য আমাদের দুর্নীতি দূর করতে হবে এবং স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) সম্প্রতি একটি সফল আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন করেছে। সেখানে আমরা আমাদের সক্ষমতা এবং সুযোগগুলো সম্পর্কে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অবহিত করেছি। বাংলাদেশে যারা উদ্যোক্তা আছেন, যারা নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝেও বাংলাদেশকে আজ এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন, আমি তাদের প্রতি আন্তরিক সম্মান জানাই। যারা এখানে নিজেদের পণ্যগুলো প্রদর্শন করতে নিয়ে এসেছেন তাদেরকে এবং বিদেশি ক্রেতাদেরও ধন্যবাদ জানাতেই চাই।’ উল্লেখ্য, প্রদর্শনীতে ১২০টির বেশি কোম্পানি অংশ নিয়েছে। সিঙ্গাপুর, লিবিয়া, কলম্বিয়া, আলজেরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক সোর্সিং এজেন্ট ও ক্রেতা এতে অংশ নিয়েছেন। তারা প্রদর্শনী শেষে বাংলাদেশি উৎপাদনকারী বিভিন্ন শিল্পকারখানা পরিদর্শন করবেন। অনুষ্ঠানে বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের সিনিয়র অপারেশন অফিসার এন্ড এক্টিং কান্ট্রি ডিরেক্টর সোহাইল কাসিম ও বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি শামীম আহমেদ বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র প্রাইভেট সেক্টর স্পেশালিষ্ট হোসনা ফেরদৌস সুমি বক্তব্য রাখেন।বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) ও এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস প্রজেক্টের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর মো. আব্দুর রহিম খান সমাপনি বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস প্রজেক্টের ডেপুটি প্রজেক্ট ডাইরেক্টর শেখ মো. আব্দুর রহমান।

বিশ্ব ব্যাংকের রিপোর্ট: দেশে ৩০ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হতে পারে

অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ধীরগতির কারণে বাংলাদেশে চলতি বছর নতুন করে ৩০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের কবলে পড়তে পারে। আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য সীমা ব্যবহার করে বিশ্বব্যাংক এই পূর্বাভাস দিয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক দারিদ্র্য পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করেছে। বিশ্ব ব্যাংকের হিসেবে কোনো মানুষের দৈনিক আয় ২ দশমিক ১৫ ডলারের কম হলে তাকে হত দরিদ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০২২ সালে বাংলাদেশে এ হার ছিল ৫ শতাংশ। ২০২৫ সালে হতদরিদ্রের হার ৯ দশমিক ৩ শতাংশে উন্নীত হতে পারে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংক জাতীয়ভাবে হিসাব করা দারিদ্র্যের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। চলতি বছরে তা বেড়ে ২২ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে। বিশ্বব্যাংক বলেছে অর্থনৈতিক ধীর গতির কারণে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর ওপর বেশি প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া শ্রম বাজার পরিস্থিতি চলতি বছর দুর্বল থাকতে পারে। এর আগে বিশ্বব্যাংকের দ্বি-বার্ষিক প্রতিবেদন ‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট: ট্যাক্সিং টাইমস’-এর পূর্বাভাসে বলা হয়, চলতি অর্থবছরে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হতে পারে। এর আগে গত জানুয়ারি মাসে ৪ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে জানিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। নতুন পূর্বাভাসে সংস্থাটি জানিয়েছে, আগামী অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে।

দুই প্রকল্পে ৮৫০ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

বে টার্মিনাল নির্মাণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার জন্য জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা আধুনিকীকরণে সহায়তা করার জন্য মোট ৮৫০ মিলিয়ন ডলারের দুটি অর্থায়ন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাংক। বুধবার (২৩ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশের পক্ষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল এইচ. মার্টিন চুক্তিপত্রে সই করেন। এ সময় বাংলাদেশ সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজারও উপস্থিত ছিলেন বলে বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাংক বন্দর নগরী চট্টগ্রামে বে টার্মিনাল মেরিন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশকে ৬৫০ মিলিয়ন ডলার দেবে। এছাড়া সামাজিক সুরক্ষা জোরদার প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০০ মিলিয়ন ডলার দেবে। বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন জানিয়েছেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করে। টেকসই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে এই বিপুল জনগোষ্ঠীর জন্য মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান তৈরি করা জরুরি।তিনি বলেন, ‘অনুমোদিত ৮৫০ মিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন প্যাকেজটি রপ্তানি প্রতিযোগিতা বাড়ানো এবং সামাজিক সুরক্ষা থেকে চাকরির বাজারে উত্তরণে সহায়তা করে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।’ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার সিদ্দিকী জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্ব দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই প্রকল্পগুলো জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি ও একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথে অগ্রসর হতে দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।উল্লেখ্য, এই অর্থায়ন এসেছে বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ) থেকে, যা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য সুদমুক্ত ও রেয়াতি ঋণ দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের অন্যতম প্রাথমিক উন্নয়ন সহযোগী, যা দেশের স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে - যার মধ্যে রয়েছে অনুদান, সুদমুক্ত ও রেয়াতি ঋণ।

পৃথিবীর শীর্ষ উৎপাদনকারী দেশগুলোর একটি হতে চায় বাংলাদেশ: ড. ইউনূস

বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ উৎপাদনকারী দেশগুলোর একটি হতে চায় বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সরকার এ অঞ্চলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ পরিবেশ গড়ে তুলেছে বাংলাদেশে। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশকে একটি উৎপাদন ও অর্থনৈতিক কেন্দ্রে রূপান্তরের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।’ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কাতারের রাজধানী দোহায় কয়েকজন খ্যাতনামা বিদেশি বিনিয়োগকারীর সঙ্গে বৈঠকে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, বাংলাদেশের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অংশ নেন মালদ্বীপের সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী, মালয়েশিয়ার রাজপরিবারের এক সদস্য, মালয়েশিয়ার সাবেক এক মন্ত্রী, কাতারের রাজপরিবারের সদস্য, শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকার ও বেশ কয়েকজন ধনাঢ্য প্রবাসী বাংলাদেশি। বৈঠকে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশকে একটি উৎপাদন ও অর্থনৈতিক কেন্দ্রে রূপান্তরের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। সরকার সব ধরনের বিদেশি বিনিয়োগ স্বাগত জানায়। বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের উৎপাদন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি, ব্যাংকিং এবং পর্যটন খাতে- বিশেষ করে কক্সবাজারের রিসোর্ট এলাকায় বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন। প্রধান উপদেষ্টা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। পাশাপাশি বিনিয়োগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানান। বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।

বিএসইসি থেকে রাশেদ মাকসুদ ও আবু আহমেদের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ

পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এবং ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদের অপসরণ দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে বিকেল ৩টার দিকে শাপলা চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরোনো ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এ সময় বিনিয়োগকারীর খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও আবু আহমেদের অপসরণ দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেন। পরে বিক্ষোভ শেষে বিনিয়োগকারীরা বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। বিক্ষোভকালে বিনিয়োগকারীরা বলেন, বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান অযোগ্য। তাকে দিয়ে এই পুঁজিবাজারে ভালো কিছু আশা করা যায় না। তার প্রতি বিনিয়োগকারীদের কোনো আস্থা নেই। আমাদের টাকা ও মানসম্মান গেছে। পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক দরপতনের ফলে প্রতিদিন বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ফোর্সড সেল করা হচ্ছে। এতে প্রতিদিনই কোনো না কোনো বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন। গত দুই মাসে টানা দরপতনের ফলে আমাদের বিনিয়োগকৃত অর্থের ৮০-৯০ শতাংশ কমে গেছে। পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের বাঁচান। কারণ, এই বিনিয়োগকারীর সঙ্গে প্রায় ১ কোটি মানুষ সম্পর্কিত। বিনিয়োগকারীরা অনেক কষ্টে আছেন। পুঁজি হারিয়ে আমরা এখন নিঃস্ব। এ বিষয়ে রাষ্ট্রের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ওপর আমাদের আস্থা আছে। কিন্তু, বর্তমান বিএসইসির কমিশনের প্রতি বিনিয়োগকারীদের কোনেো আস্থা নেই। পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় প্রধান উপদেষ্টা ও অর্থ উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি। বিক্ষোভকালে আরো বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুঁজিবাজার ঠিক করতে না পারলে এবং রাশেদ মাকসুদ ও আবু আহমেদকে অপসরণ করা না হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি পুরো ঢাকা শহরে হরতাল ঘোষণা করে অচল করে দিতে বাধ্য হব। এভাবে পুঁজিবাজার চলতে পারে না। পুঁজি হারিয়ে অনেক বিনিয়োগকারী আত্মহত্যা করেছেন। আমরা প্রধান উপদেষ্টা ও অর্থ উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, অবিলম্বে রাশেদ মাকসুদ ও আবু আহমেদকে অপসরণ করা হোক। বিক্ষোভ চলাকালে ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম মানিক বলেন, বিএসইসি চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদ দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে পুঁজিবাজার ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি বিনিয়োগকারীদের ধ্বংস করে ফেলেছেন। পুঁজিবাজার ঠিক করার জন্য বিক্ষোভ করব। এটা আমার অধিকার। কিন্তু তিনি আমাদের এ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ব্রোকারদের অংশগ্রহণ না করতে বলেছেন। তিনি আরো বলেন, রাশেদ মাকসুদ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পুঁজিবাজারে রক্তক্ষরণ আরো বেড়েছে। বিনিয়োগকারী বাজারছাড়া হয়েছেন। কয়েক লাখ বিনিয়োগকারী ফোর্সড সেলের স্বীকার হয়ে শূন্য হাতে চলে গেছে। তিনি আবার বলেছেন, পুঁজিবাজার সংস্কার করছি। এমন সংস্কার করছেন যে, পুঁজিবাজারের ৭০ থেকে ৮০ হাজার মূলধন হারিয়ে গেছে। বর্তমান বাজারে যে কয়টি পোর্টফোলিও জীবিত আছে তার ৮০-৯০ শতাংশ পুঁজি নাই। এভাবে আর পুঁজিবাজার চলতে দেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে রাশেদ মাকসুদ ও আবু আহমেদের অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।

স্বর্ণের দাম ভরিতে কমলো ৫৩৪২ টাকা

দেশের স্বর্ণবাজারে একদিনের ব্যবধানে বড় ধরনের মূল্য হ্রাসের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভরিতে ৫ হাজার ৩৪২ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেট মানের প্রতি ভরি স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা। বুধবার (২৩ এপ্রিল) বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দামে সাম্প্রতিক পতনের প্রেক্ষিতে স্বর্ণের নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন এই দাম বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকাল সোয়া ৪টা থেকে কার্যকর হয়েছে। নতুন তালিকা অনুযায়ী, ২১ ক্যারেট স্বর্ণের প্রতি ভরি এখন ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৯৬ টাকা। ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৪১ হাজার ১৬৯ টাকা। আর সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৮০ টাকা। এর আগে মঙ্গলবার বাজুস হঠাৎ করে ভরিতে ৫ হাজার ৩৪২ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছিল, যা আজ (বুধবার) থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। সেই হিসাবে ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম এক ভরিতে হয়েছিল ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮৮ টাকা, যা এখন আবার পূর্বের তুলনায় কমানো হলো। তবে রুপার বাজারে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বর্তমানে ২২ ক্যারেটের রুপা বিক্রি হচ্ছে প্রতি ভরি ২ হাজার ৮৪৬ টাকায়। ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৭১৮ টাকা। ১৮ ক্যারেট ২ হাজার ৩৩৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপা ১ হাজার ৭৫০ টাকা ভরিতে বিক্রি হচ্ছে। বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে রেকর্ড পরিমাণ ওঠানামা এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা-সরবরাহের তারতম্যের কারণে দেশের বাজারেও এই দোলাচল দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাজুস-সংশ্লিষ্ট সূত্র।

বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস: বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৩.৩ শতাংশে নেমে আসবে

বিশ্বব্যাংক বলছে, ‘চলতি অর্থবছর (২০২৪-২৫) শেষে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নেমে আসবে মাত্র ৩ দশমিক ৩ শতাংশে, যা পূর্বের ৪ শতাংশ পূর্বাভাস থেকেও কম।’ বুধবার (২৩ এপ্রিল) প্রকাশিত ‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট: ট্যাক্সিং টাইমস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রাজনৈতিক সহিংসতা, কারফিউ ও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধের ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। প্রথম তিন প্রান্তিকে বেসরকারি ও সরকারি বিনিয়োগে প্রবল ধস দেখা গেছে, যার প্রভাব পুরো অর্থবছরে পড়বে।’ বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ৭ দশমিক ৩ শতাংশ, যা গত ৩০ বছরে সর্বনিম্ন। এতে স্পষ্ট যে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগপ্রবণতা অত্যন্ত দুর্বল। সরকারি বিনিয়োগেও ধীরগতি দেখা যাচ্ছে, কারণ মূলধনী ব্যয় কমছে। তবে কিছুটা স্বস্তির খবর হলো, বৈদেশিক খাতে চাপ কিছুটা কমেছে এবং চলতি হিসাব ঘাটতি সংকুচিত হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার বলেন, ‘গত এক দশকের একাধিক ধাক্কা দক্ষিণ এশিয়াকে দুর্বল করে দিয়েছে। এখন সময় এসেছে রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার, কৃষিতে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো ও জলবায়ু সহনশীলতা গড়ে তোলার জন্য টার্গেটেড রিফর্মের।’ প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভারতের প্রবৃদ্ধি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৩ শতাংশে নামবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার জন্য এই হার ৩ দশমিক ১ শতাংশ। এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে স্পষ্ট হলো, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত না করা গেলে বাংলাদেশের অর্থনীতি সামনে আরও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

কাতারের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

কাতারের ব্যবসায়ীদের দেশে বিনিয়োগ এবং তাদের উৎপাদন কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) কাতারের দোহায় তার সম্মানে আয়োজিত একটি ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক সংবর্ধনায় যোগ দিয়ে এই আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘জুলাইয়ে ছাত্ররা রাস্তায় নেমে এসে প্রতিবাদ শুরু করলো। আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী তাদের ওপর গুলি চালালো, হত্যা করলো। এটা ছিল ক্ষোভের সাম্প্রতিক অংশ। এর আগেও অনেক ক্ষোভ ছিল, ১৬ বছর ধরে ভুয়া নির্বাচন, মানুষ গুম হয়ে যেত নিয়মিত, সারা দেশে টর্চার সেল করা হয়েছিল, ব্যাংক থেকে অর্থ চুরি করেছিল, পুরো ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছিল, মেগা প্রকল্পে দুর্নীতি- এগুলোই চলছিল বিগত ১৬ বছর ধরে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্ররা প্রতিবাদে নেমে আসলো, বললো- ‘যথেষ্ট হয়েছে’। কয়েক হাজার তরুণ নিহত হয়। ছাত্ররা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের মুখে যাত্রা শুরু করে। মানুষের বন্যা বয়ে গিয়েছিল। সারা দেশ থেকে মানুষ চলে আসছিল, বেশ ভয়ানক দৃশ্য ছিল সেটা। দেশ ত্যাগ করার জন্য তাকে তার বাসভবন থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো। সেই থেকেই বাংলাদেশ তার শাসন মুক্ত হলো। আমি দেশের বাইরে ছিলাম, এই কারণেই আমাকে দায়িত্ব নিতে হলো। অন্তর্বর্তী সরকার এভাবেই গঠন হলো।’ তিনি আরো বলেন, ‘যারা বাংলাদেশকে চিনেন, তারা জানেন কতটা ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ। ১৮ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে অর্ধেক জনগোষ্ঠীর বয়স ২৭ বছর। অনেক বড় একটা তরুণ জনগোষ্ঠী, যাদের প্রযুক্তি, জ্ঞান, শিক্ষা সবকিছুরই প্রাপ্যতা আছে। আমি শুধু তরুণ ছেলেদের কথা বলছি না, আন্দোলনে তরুণ মেয়েরা নেতৃত্বও দিয়েছে। রাস্তায় কীভাবে এদেশের মেয়েরা প্রতিবাদ করেছে- সেটা একটা দেখার মতো দৃশ্য ছিল। এজন্য তারা এটাকে ‘নতুন বাংলাদেশ’ বলে থাকে, যেটা আমাদের তৈরি করতে হবে, অতীতে যা কিছু হয়েছে তা বাদ দিয়ে। দেশের অর্থনীতি, বিচার ব্যবস্থা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল, গত ৮ মাস ধরে ঠিক করার চেষ্টা চলছে। এটাই আমাদের কাজ। আমরা বিভিন্ন খাতে সংস্কার কমিশন করে দিয়েছি, তারা সুপারিশ করবে। এখন আমরা সেগুলো বাস্তবায়নের পর্যায়ে আছি। এই প্রক্রিয়া শেষ হলেই নির্বাচন হবে।’ প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অর্থনীতির দিক থেকে বাংলাদেশের ব্যাপক সম্ভাবনা আছে। বাংলাদেশকে আমরা এই অঞ্চলে এমনভাবে পেয়েছি, একদিকে নেপাল, আরেকদিকে ভুটান, আমাদের সীমান্তের খুব কাছেই। আমাদের উত্তরে ভারতের সাতটি রাজ্য। আঞ্চলিক অর্থনীতি হিসেবে বিবেচনা করে অন্তর্ভুক্ত হলে দারুণ একটা কাজ হতে পারে। এটি তাদের করতেই হবে- কারণ আর কোন উপায় নেই। নেপাল-ভুটান কারও সমুদ্র নেই, ভারতের সেভেন সিসটারও সমুদ্র পায় না। সবাই মিলে একসঙ্গে করলে সমুদ্রের ব্যবহার করা যায়। এর ফলে এখানে একটা হাব তৈরি হতে পারে। তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি হবে। এজন্য আমি যেখানেই যাই, সবাইকে স্বাগত জানাই, ইতিবাচক সাড়াও মিলে। আমরা বলি- আপনার উৎপাদন কারখানা এখানে তৈরি করুন। এখানে তৈরি করুন যেখানে খুশি বিক্রি করুন, যেকোনও দেশে। আমাদের এখানে লোকবল আছে, এখানে কাজ করার জন্য অন্য দেশ থেকে লোক আনার প্রয়োজন নেই। এখানে তৈরি করুন, যত সহায়তা প্রয়োজন আমরা করবো। আমরা বাংলাদেশে এই ধরনের অর্থনীতি তৈরি করতে চাই। সম্প্রতি আমরা বিনিয়োগ সম্মেলন আয়োজন করেছি, তাতে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। তাই আমরা আপনাদের স্বাগত জানাই, আপনারা আসুন, দেখে যান লাখ লাখ তরুণের উদ্যম, সৃজনশীলতা।’

চলতি বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে হতে পারে ৩.৮ শতাংশ: আইএমএফ

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তবে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ হবে বলেও জানিয়েছে বহুজাতিক দাতা সংস্থাটি।মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাতে প্রকাশিত আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক, এপ্রিল ২০২৫- এ এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন যৌথ সভার দ্বিতীয় দিনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলো।ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকের প্রাপ্ত উপাত্ত ধরে দেশভিত্তিক তথ্যও হালনাগাদ করেছে আইএমএফ। সেখানে বাংলাদেশের জন্য চলতি অর্থবছরে জিডিপির নতুন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বেড়ে সাড়ে ৬ শতাংশ হওয়ার কথাও বলা হয়েছে। গত জুনে চলতি অর্থবছরের বাজেট দেওয়ার সময় ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। তবে অন্তর্বর্তী সরকার কিছুদিন আগে চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য সংশোধন করে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। চলমান আর্থিক সংকট, ব্যবসায় স্থবিরতা এবং সাম্প্রতিক সরকার পরিবর্তনের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা বিবেচনায় নিয়ে এ সংশোধন করা হয়।কয়েক দিন আগে আরেক দাতা সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলেছিল, বাংলাদেশের চলতি অর্থবছরে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে। আইএমএফ জিডিপির প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস আরও কমিয়ে দিল।আইএমএফ আরও বলছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ হবে। আগামী অর্থবছরে তা কমে ৫ দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসবে।গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, গত মার্চে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এক বছর ধরে গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ২৬ শতাংশ।আইএমএফের নতুন পূর্বাভাস অনুসারে, বৈশ্বিক গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৮ শতাংশ। আর এশিয়ার গড় জিডিপি হতে পারে সাড়ে ৪ শতাংশ।বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন সভা ২১ এপ্রিল শুরু হয়ে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল এ যৌথ সভায় অংশ নিচ্ছে। সভা চলাকালে বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুত আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থছাড় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে। সম্প্রতি আইএমএফ মিশন বাংলাদেশে এসে ঘুরে গেছে।

রেকর্ড দাম বেড়ে স্বর্ণের ভরি পৌনে দুই লাখ ছাড়াল

দেশের বাজারে আবারও রেকর্ড গড়েছে স্বর্ণের দাম। এক লাফে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৫ হাজার ৩৪২ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা এর আগে ছিল ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা।মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (২৩ এপ্রিল) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।নতুন দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮৮ টাকা। এছাড়াও ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৬৯ হাজার ৮০৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ২০ হাজার ৫১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে। এর আগে, দেশের বাজারে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা নিধারণ করা ছিল। এছাড়াও ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৯৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৪১ হাজার ১৬৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৮০ টাকা বিক্রি হয়ে আসছিল।স্বর্ণের দাম বাড়লেও হলেও অপরিবর্তিত আছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী, ২২ ক্যারেটে প্রতি ভরি রুপার দাম দুই হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ৫৮৬ টাকা।

'ফ্রিল্যান্সার অ্যাকাউন্ট' চালু করল এনসিসি ব্যাংক

দেশের অর্থনীতিতে ফ্রিল্যান্সারদের অন্তর্ভুক্তি ও ভূমিকার কথা বিবেচনা করে এবং ফ্রিল্যান্সারদের সহযোগিতার উদ্দেশ্যে এনসিসি ব্যাংক 'ফ্রিল্যান্সার অ্যাকাউন্ট' নামে নতুন প্রোডাক্ট চালু করেছে। সম্প্রতি সিলেটের হবিগঞ্জে দ্যা প্যালেস লাক্সারি রিসোর্টে আয়োজিত ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলনে, চেয়ারম্যান মো. নূরুন নেওয়াজ সেলিম, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান খায়রুল আলম চাকলাদার, পরিচালক সৈয়দ আসিফ নিজাম উদ্দীন, স্বতন্ত্র পরিচালক ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মীর সাজেদ উল বাসার এফসিএ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. শামসুল আরেফিন 'এনসিসি ফ্রিল্যান্সার অ্যাকাউন্ট' নামে নতুন প্রোডাক্টের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এ সময়, ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ প্রধান কার্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান এবং বিভিন্ন শাখার ব্যবস্থাপকরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথির ভাষণে ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নূরুন নেওয়াজ সেলিম বলেন, এনসিসি ব্যাংক সব ধরনের গ্রাহকদের চাহিদা পূরণে এবং দ্রুততম সময়ে সর্বোত্তম ও প্রযুক্তি নির্ভর ব্যাংকিং সেবা প্রদানে অঙ্গীকারবদ্ধ। এরই ধারাবাহিকতায় এনসিসি ব্যাংক বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে ফ্রিল্যান্সারদের বিভিন্ন সুবিধা প্রদান এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাদেরকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে নতুন এই প্রোডাক্টের কার্যক্রম শুরু করল। বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খোলার সুবিধাসহ নতুন এই সেবার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা দেশের অর্থনীতিতে আরও বেশি অবদান রাখতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। সভাপতির বক্তব্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. শামসুল আরেফিন বলেন, দেশে প্রায় ৬ দশমিক ৫ লাখ ফ্রিল্যান্সার রয়েছে যারা প্রযুক্তি খাতে অবদান রেখে চলেছে এবং যার মাধ্যমে বছরে প্রায় এক বিলিয়ন ইউএসডি সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশের অর্থনীতিতে সংযুক্ত হচ্ছে। প্রতি বছর এই ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। দেশের অর্থনীতিতে এই ফ্রিল্যান্সারদের অবদানের কথা চিন্তা করে এবং তাদেরকে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আরও বেশি উদ্বুদ্ধ করার জন্য পারসোনাল লোন এবং ক্রেডিট কার্ডসহ বিভিন্ন সুবিধা সম্বলিত “ফ্রিল্যান্সার অ্যাকাউন্ট” সেবাটি চালু করা হয়েছে। এই ফরেন কারেন্সি অ্যাকাউন্টটি ফ্রিল্যান্সারদের চাহিদা পূরণে এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাদেরকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে সহায়ক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মোহাম্মদ আবদুল মান্নান সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ড নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত

সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ড ফর ইসলামিক ব্যাংকস অব বাংলাদেশের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান। ১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসির প্রধান কার্যালয়ের বোর্ডরুমে অনুষ্ঠিত সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ডের নির্বাহী কমিটির ৬৯তম সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মোহাম্মদ আবদুল মান্নান ইসলামিক ব্যাংক কনসালটেটিভ ফোরামের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)-এর ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির তিন মেয়াদে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। মোহাম্মদ আবদুল মান্নান ‘সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ড ইসলামিক ব্যাংকিং অ্যাওয়ার্ড’ ছাড়াও এশিয়া-প্যাসিফিক ও গালফ অঞ্চলের ১১ হাজার ৫০০ ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের মধ্য থেকে ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে টানা তিনবার ‘এশিয়ান ব্যাংকার সিইও লিডারশিপ অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন। এছাড়াও তিনি ‘রেমিট্যান্স অ্যাম্বাসেডর অব বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড’, ‘সরদার প্যাটেল অ্যাওয়ার্ড’সহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

ইসলামী ব্যাংকের রাজশাহী জোনের ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর রাজশাহী জোনের ত্রৈমাসিক ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২১ এপ্রিল) রাজশাহী জোনাল অফিস কনফারেন্স হলে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য দেন ব্যাংকের পরিচালক মো. আবদুল জলিল এবং প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (চলতি দায়িত্ব) মো. ওমর ফারুক খান। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ সাঈদ উল্লাহ ও এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আবু নোমান মো. সিদ্দিকুর রহমান। রাজশাহী জোনপ্রধান মোহাম্মদ নুরুল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জোনের শাখা ও উপশাখাসমূহের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

ড্যাপের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে রড-সিমেন্ট, ক্যাবলসহ লিংকেজ কোম্পানি

বৈষম্যমূলক ড্যাপ ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালার ফার সংক্রান্ত সমস্যায় কমেছে সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামোগত প্রকল্পের গতি। এতে আবাসন শিল্প ও সংশ্লিষ্ট লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রিতে মারাত্মক স্থবিরতা বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্ট প্রায় ২০০ লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রিতে উৎপাদন কমেছে। কোনো কোনো শিল্পে বিক্রি কমে নেমে এসেছে অর্ধেকে। লোকসান কমাতে শিল্প মালিকেরা কর্মী ছাঁটাইয়ে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে বাড়বে বেকারত্বের হার (কর্মী ছাঁটাই), ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অর্থনীতি। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আবাসন শিল্প ও সংশ্লিষ্ট লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রির স্থবিরতা উত্তরণের লক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান খাত সংশ্লিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তারা। বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ মাসাদুল আলম মাসুদ বলেন, নির্মাণ উপকরণের সবচেয়ে বড় উপাদান রড। সেই রডের চাহিদা প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। গেল বছরের শেষের দিকে রড শিল্পের কয়েকটা সংগঠন যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিল তাদের চাহিদা ৫০ শতাংশ কমে গেছে। এরপর গেলো ৪-৫ মাসে রডের চাহিদা আরও কমেছে। শেখ মাসাদুল বলেন, ড্যাপের বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সংস্কার না হলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। একটি কারখানা বন্ধের পর চালু হতে পাঁচ বছর সময় লেগে যায়, এতে বেকারত্ব বাড়বে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অর্থনীতি। দেশের ভালোর জন্য হলেও সংকট দূর করা আবশ্যক। বাংলাদেশ ইলেকট্রিক ক্যাবল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আখতার হোসেন ঢালি বলেন, আমাদের তারের চাহিদার ৯৮ ভাগ সরবরাহ করে থাকেন দেশীয় উদ্যোক্তারা। আমাদের ব্যবসা আবাসন খাতের সঙ্গে সম্পর্কিত। আজ আবাসন সেক্টরের মন্দার কারণে আমাদের উৎপাদন কমেছে। আমার নিজের কারখানার ২৫ ভাগ শ্রমিক ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছি। এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে আরও ছাঁটাই করতে হবে। কারণ আমার বিক্রি কমেছে বা বিক্রি নেই। সেখানে উৎপাদন করে কী করব আমরা? সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক শংকর রায় বলেন, আবাসনের সঙ্গে জড়িত প্রতিটি শিল্পের মতো সিমেন্টের চাহিদা কমেছে। আমাদের প্রতিটি কাঁচামাল আমদানি নির্ভর, এর ওপরে বিক্রি খরা। আমরা এ সংকটের সমাধান চাই। ব্যবসা বাঁচলে দেশ বাঁচবে, দেশের অর্থনীতির চাকা সচল হবে। ব্যবসায়ী রাজ্জাক বলেন, আমার ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ, প্রতিষ্ঠানের কর্মী ৩৫০ জন থেকে এখন ৭৫-এ নামাতে বাধ্য হয়েছি। আমার মতো অন্যদের অবস্থাও একই রকমের। আমরা সমাধানের পথ চাই, ড্যাপের সংশোধন চাই। বাংলাদেশ এলিভেটর এসকেলেটরস অ্যান্ড লিফট ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে সভাপতি এমদাদ উর রহমান বলেন, আমাদের লিফটের ব্যবসা অর্ধেকে নেমেছে। অনেক ব্যবসায়ী লোকসান এড়াতে ব্যবসা ছোট করতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ আবার কর্মী ছাঁটাই করছেন। লিংকেজ ব্যবসা অনেক বড়। প্রায় ৫০ লাখ নাগরিকের কর্মসংস্থান এবং দুই কোটি লোকের খাদ্যের সংস্থান হয়েছে এই গৃহায়ন শিল্পকে ঘিরে। আমরা ছাঁটাইয়ে বিশ্বাসী না, আমরা চাই আবাসনের সমস্যা দ্রুত সময়ে সমাধান করা হোক। আমরা ব্যবসা করতে চাই। এ সময় টিম্বার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ তানভির হোসেন বলেন, কয়েক বছর ধরে আবাসন খাতে মন্থর অবস্থার কারণে আমাদের কাঠের ব্যবসায় ধস নেমেছে। সারা দেশে এই খাতের ১০ লাখ ব্যবসায়ী আছেন যাদের দেড় লাখের মতো থাকেন ঢাকা শহরে। যাদের প্রায় ৩০ হাজার ব্যবসায়ী এখন পথে বসেছেন। রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, মৌলিক চাহিদার অন্যতম গৃহায়ন সমস্যা সমাধানে সরকারের সঙ্গে বড় সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে আবাসন শিল্পের সদস্যদের একমাত্র প্রতিষ্ঠান রিহ্যাব। বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ আবাসের ব্যবস্থা করাই রিহ্যাবের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর লক্ষ্য। রিহ্যাব সদস্যদের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণেই আজ শহরগুলোতে সুন্দর সুন্দর নান্দনিক ভবন তৈরি হচ্ছে। আবাসন শিল্পের কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করে রড, সিমেন্ট, ইট, টাইলস, কেবল, রং, লিফট, থাই, স্যানিটারিসহ দুই শতাধিকের বেশি লিংকেজ শিল্প অর্থনীতির চাকা গতিশীল রেখেছে। প্রায় দুই কোটি লোকের খাদ্যের সংস্থান হয়েছে এই গৃহায়ন শিল্পকে ঘিরে। জিডিপিতে প্রায় ১৫ শতাংশ অবদান রয়েছে এই খাতের। এ খাতের সমাধান না করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অর্থনীতি, বাড়বে বেকারত্ব। রিহ্যাব সভাপতি বলেন, বৈষম্যমূলক ও ত্রুটিপূর্ণ ড্যাপ নিয়ে ভূমি মালিক, আবাসন ব্যবসায়ী এবং এই সংক্রান্ত লিংকেজ শিল্পগুলোর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ রয়েছে। জমির মালিকের পাশাপাশি ফ্ল্যাটক্রেতা সবার মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। অর্থনীতিতে গতিশীলতা আনতে অবশ্যই আবাসন শিল্প ও সংশ্লিষ্ট লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রির স্থবিরতা থেকে অতিদ্রুত উত্তরণ ঘটাতে হবে। সরকারের এ ব্যাপারে একটা ইতিবাচক ভূমিকা নিতে হবে। আমরা প্রত্যাশা করি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেবেন। সংবাদ সম্মেলনে লিংকেজ শিল্প উদ্যোক্তারা বলেন, আবাসন খাত ভালো থাকলে আমাদের সংশ্লিষ্ট লিংকেজ শিল্পগুলো স্বাভাবিকভাবেই ভালো থাকার কথা। কিন্তু তারাও ভালো নেই। কারণ লিংকেজ শিল্পগুলোর সবশেষ প্রোডাক্টের বেশিরভাগ ক্রেতাই ডেভেলপাররা। বৈষম্যমূলক ড্যাপ (২০২২-২০৩৫) ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন যাবৎ আবাসন শিল্প মারাত্মক সমস্যায় রয়েছে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে লিংকেজ শিল্পগুলোর ওপর। ড্যাপে ফার সমস্যাকে কেন্দ্র করে আমাদের ভবনের উচ্চতা এবং আয়তন একেবারে কমে গেছে। ফলে ২০২২ সালে ড্যাপের প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর জমির মালিকরা ডেভেলপ করার জন্য আমাদের কোনো ভূমি দিচ্ছেন না। যার কারণে ডেভেলপার কোম্পানিগুলো নতুন কোনো প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারছেন না। এতে লিংকেজ শিল্পগুলোর পণ্যের চাহিদা ব্যাপকভাবে কমে গেছে। তারা বলেন, সিমেন্ট, রড, ইটসহ অন্যান্য উপকরণের চাহিদা কমেছে। চাহিদা কমে যাওয়ায় কিছু কিছু পণ্যের দাম কমিয়ে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। যার ফলশ্রুতিতে অনেকগুলো লিংকেজ শিল্পপ্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান তিন শিফটের উৎপাদন দুই শিফটে নামিয়ে দিয়েছে। আবার কেউ সেটা এক শিফটে নামিয়ে এনেছে। উৎপাদন কমানোর কারণে স্বাভাবিকভাবেই কর্মসংস্থান এখানে সংকুচিত হয়েছে। অনেক লোকবল ছাঁটাই হয়েছে এবং অনেকে সেই পথে হাঁটছেন। এক কথায় বলতে গেলে বৈষম্যমূলক ড্যাপ ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালার ফার সংক্রান্ত সমস্যা এবং সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামোগত প্রকল্পের গতি কমে যাওয়াতে আবাসন শিল্প ও সংশ্লিষ্ট লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রিতে মারাত্মক স্থবিরতা বিরাজ করছে। সিলেটে সকাল থেকেই বৃষ্টির মুখে পড়েছে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের প্রথম টেস্ট। বিকেলে ময়মনসিংহে ফেডারেশন কাপ ফাইনালে আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংসের ম্যাচ শুরু হয়েছিল বেশ রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়াতেই। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ প্রথমার্ধ শেষ হয়েছিল ১-১ গোলে। বিরতির পর দ্বিতীয়ার্ধে খেলা শুরু হয়। দুই মিনিটের মাথায় কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতের শঙ্কায় রেফারি সায়মন হাসান সানি খেলা স্থগিত করেন। ময়মনসিংহে এই মুহূর্তে তীব্র ঝড় ও বৃষ্টি হচ্ছে। ঝড়ের তীব্রতায় মাঠে ডাগআউট টেন্ট উড়ে গেছে। রফিক উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া স্টেডিয়ামের ছাদে সাংবাদিকদের জন্য অস্থায়ী প্রেসবক্স করা হয়েছিল তাবু টানিয়ে। সেই তাবুও বাতাসে উড়ে গেছে। গ্যালারিতে কোনো শেড না থাকায় কালবৈশাখীর ঝড়ে অনেক সমর্থক মাঠে নেমে পড়েছেন। এই পরিস্থিতি খেলা আপাতত বন্ধ রয়েছে। ঘরোয়া ফুটবলের মতো আবহাওয়ার কারণে বিঘ্ন ঘটছে বাংলাদেশ হকি খেলাও। ইন্দোনেশিয়ার জার্কাতায় বাংলাদেশ সময় বিকেল চারটায় থাইল্যান্ডের বিপক্ষে এএইচএফ কাপ হকি খেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল। জাকার্তায় বৃষ্টির জন্য খেলা শুরু করা যায়নি। বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক লে কর্ণেল (অব) রিয়াজুল হাসান জানিয়েছেন, বৃষ্টির জন্য খেলা এক ঘণ্টা পিছিয়ে বাংলাদেশ সময় বিকেল পাঁচটায় শুরু হওয়ার কথা।

২০২৩ সালে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকার কর ফাঁকি

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) এক গবেষণায় দেখা গেছে, কর ফাঁকির কারণে ২০২৩ সালে আনুমানিক ২ লাখ ২৬ হাজার ২৩৬ কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে সরকার। সিপিডির গবেষণা বলছে, এর মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ হারিয়েছে করপোরেট কর ফাঁকির কারণে। ২০২৩ সালে করপোরেট কর ফাঁকির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার ১১৮ কোটি টাকা। আজ সোমবার সিপিডির কার্যালয়ে বাংলাদেশের উত্তরণে করপোরেট আয়কর সংস্কার বিষয়ক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। সিপিডির গবেষণা বলছে, ২০১১ সাল থেকে কর ফাঁকির পরিমাণ বেড়েছে, ২০১২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৬ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা এবং ২০১৫ সালে তা ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকায় পৌঁছায়। গবেষণায় বাংলাদেশের ক্রমাগত কর ফাঁকির পেছনে কয়েকটি প্রধান কারণ উঠে এসেছে। এর মধ্যে আছে উচ্চ কর হার, প্রশাসনিক দুর্বলতা, জটিল আইনি কাঠামো এবং কর ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক দুর্নীতি।

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ৪২২তম পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের ৪২২তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) এ ভা অনুষ্ঠিত হয়। পর্ষদের চেয়ারম্যান খাজা শাহরিয়ারের সভাপতিত্বে সভায় ব্যাংকের সার্বিক ব্যবসায় পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয় এবং বিভিন্ন নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় পর্ষদের পরিচালক মো. শাহীন উল ইসলাম, মো. আব্দুল ওয়াদুদ, অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ, মোহাম্মদ আশরাফুল হাছান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. রাফাত উল্লা খান, ব্যাংকের কোম্পানি সচিব (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্ম মনিরুজ্জামান এবং সংশ্লিষ্ট নির্বাহীগণ উপস্থিত ছিলেন।

রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ালো পৌনে ২৭ বিলিয়ন ডলারে

দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ধীরে ধীরে বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। চলতি এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশের মোট রিজার্ভ বেড়ে প্রায় পৌনে ২৭ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী দেশের রিজার্ভ রয়েছে ২১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। রোববার (২০ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৬৭৩ কোটি ডলার। তবে আইএমএফ হিসাব পদ্ধতি (বিপিএম-৬) অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২১ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১৩৯ কোটি ডলার। এ দুই হিসাবের বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে জানানো হয়। সেখানে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়। সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেক্ষেত্রে আমাদের রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের বেশি সময়ের আমদানি দায় মেটানো সম্ভব। নিট রিজার্ভ গণনা করা হয় আইএমএফের ‘বিপিএম-৬’ পরিমাপ অনুসারে। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ বের হয়। রিজার্ভের ইতিবাচক ধারায় সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনে ১০৫ কোটি ২৪ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। গত মার্চ মাসে রেমিট্যান্স আহরণে নতুন ইতিহাস রচিত হয়েছে। মার্চে রেমিট্যান্স এসেছে ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার। যা দেশের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড, এক মাসে এর চেয়ে বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স আগে কখনো আসেনি। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। পরের মাস আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। এরপর নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার। চলতি বছরের জানুয়া‌রি‌তে ২১৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার ও মার্চে সব রেকর্ড ভেঙে ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পা‌ঠি‌য়েছেন প্রবাসীরা। অন্তর্বর্তী সরকার দা‌য়িত্ব নেওয়ার পর টানা ৭ মাস দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট‌্যান্স এসে‌ছে দেশে। যার প্রভাবেই চাঙা রয়েছে রিজার্ভ।

ইসলামী ব্যাংক ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের ১৫তম এজিএম অনুষ্ঠিত

ইসলামী ব্যাংক ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের (আইবিসিএমএল) ১৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২০ এপ্রিল) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আইবিসিএমএল পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব সভাপতিত্ব করেন। সভায় কোম্পানির পরিচালক প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, মো. আলতাফ হুসাইন, জিএম মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন কাদের, শেয়ারহোল্ডার মো. ওমর ফারুক খান, মো. আশরাফুল হক, মো. সালেহ ইকবাল, কোম্পানির শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও (চলতি দায়িত্ব) আবু সাঈদ মো. নাহিদ উপস্থিত ছিলেন। সভায় শেয়ারহোল্ডারগণ কর্তৃক ২০২৪ সালের আর্থিক বিবরণীর অনুমোদন এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক সফলতাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

ট্রাম্পের শুল্কে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এক হাজার পোশাক কারখানা, মালিকদের শঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ৩৭ শতাংশ শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার না হলে দেশের এই প্রধান রপ্তানি খাতকে প্রতি মাসে গড়ে ২৫০ মিলিয়ন ডলার শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। এতে প্রায় ১০০০ পোশাক কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তৈরি পোশাকশিল্পের নেতারা। শনিবার (১৯ মার্চ) বিকেলে উত্তরার জায়ান্ট বিজনেস টাওয়ারে বিজিএমইএ নির্বাচন ২০২৫–২০২৭ উপলক্ষে সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তারা এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন। পোশাক শিল্প খাতের নেতারা মার্কিন শুল্ক প্রত্যাহারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহবান জানান। অনুষ্ঠানে সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল প্রধান মো. আবুল কালাম বলেন, আমেরিকার বাজারে আমাদের রপ্তানিতে ৩৭ শতাংশ শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত হওয়া নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। ৯০ দিন সময় চেয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তিনি বলেন, ৯০ দিনের সময়সীমা শেষে আমরা যেন আবারও এই শুল্কের মুখোমুখি না হই, সে লক্ষ্যে কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি ড. ইউনূস যেন সরাসরি মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। সাধারণত শুল্ক পরিশোধের দায়িত্ব ক্রেতার হলেও বর্তমান বায়িং প্যাটার্ন অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে—ক্রেতারা অতিরিক্ত খরচ সরবরাহকারীর ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন, উল্লেখ করেন এই উদ্যোক্তা নেতা। বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও বিজিএমইএ নির্বাচন ২০২৫–২০২৭ এর সম্মিলিত পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী ফারুক হাসান বলেন, আমরা যে শিল্পের ধারাবাহিক সাফল্য দেখছি, তার পেছনে সম্মিলিত পরিষদের অবদান অপরিসীম। তিনি এলডিসি উত্তরণের সময়সীমা অন্তত তিন বছরের জন্য পিছিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। আমেরিকান বাজারে শুল্ক কাঠামো প্রসঙ্গে ফারুক হাসান বলেন, যদি শুল্ক আরোপ পারস্পরিক হতো, তবে আমাদের ওপর শুল্ক আরও কমে যেত। বাস্তবতা হলো, তারা বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে শুল্কারোপ করেছে।শুধুমাত্র আমদানি বাড়িয়ে বাণিজ্য ঘাটতি সমাধান সম্ভব নয়, তবে আমরা আমদানি বাড়াতে আগ্রহী। সরকারকে এ বিষয়ে কোনো অযাচিত প্রতিশ্রুতি না দিতে অনুরোধ করছি। আগামীতে বিজিএমইএ’র সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুক, সম্মিলিত পরিষদের প্রধান সহ-সমন্বয়কারী রফিকুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক শোভন ইসলাম, বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন পাভেল, বিজিএমইএ’র সহায়ক কমিটির সদস্য আসিফ আশরাফ এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইয়ুথ লিডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বায়লা) সভাপতি আবরার হোসেন সায়েম।

আরও কমেছে বিদেশি ঋণ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কমতে শুরু করেছে বৈদেশিক ঋণ। গত ডিসেম্বর শেষে বিদেশি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১০৩ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৩৬৪ কোটি ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে) ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা। তিন মাস আগে সেপ্টেম্বর শেষে যা ছিল ১০৪ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৪৩৭ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে। তথ্য বলছে, তিন মাসে বিদেশি ঋণ কমেছে প্রায় ৭৪ কোটি ডলার। বেসরকারি খাতে কমেছে ৫২ কোটি ডলারের বেশি। সরকারি খাতে কমেছে সাড়ে ২১ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ ধারাবাহিকভাবে বেড়ে গত বছরের জুনে ২ হাজার ৬০ কোটি ডলারে উঠেছিল। সেখান থেকে কমে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ১ হাজার ৯৯৫ কোটি ডলারে নামে। আরও কমে ডিসেম্বরে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৪২ কোটি ডলার। আর সরকারি খাতে গত সেপ্টেম্বরে বিদেশি ঋণ ছিল ৮ হাজার ৪৪৩ কোটি ডলার। ডিসেম্বরে তা ৮ হাজার ৪২১ কোটি ডলারে নেমেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সরকারি ও বেসরকারি খাতের ঋণের বকেয়া পরিশোধ বেড়েছে। অন্যদিকে ডলারের দর ও সুদহার বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ আগের ঋণের মেয়াদ না বাড়িয়ে পরিশোধে অধিকতর মনোযোগী হয়েছে। রেমিট্যান্স চাঙ্গা থাকার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধিও ঋণ পরিশোধে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। এখন রিজার্ভ থেকে কোনো ডলার বিক্রি না করে বরং কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে করে রিজার্ভ বাড়ছে। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী এখন রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১০০ কোটি ডলারের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, পাচার কমে যাওয়ায় রেমিট্যান্স ব্যাপক বাড়ছে। যে কারণে রিজার্ভ থেকে কোনো ডলার বিক্রি না করেও বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আগের সব দায় পরিশোধ করা হচ্ছে। এতে করে একদিকে আগের দায় কমছে, আরেকদিকে রিজার্ভ বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেশের ইতিহাসে ২০২১ সালের আগস্টে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উঠেছিল রেকর্ড ৪৮ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। ওই বছরের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে যেখানে বিদেশি ঋণ ছিল ৮ হাজার ৪৭৪ কোটি ডলার। কিন্তু পরের বছরগুলোতে রিজার্ভ কমতে থাকে এবং বিদেশি ঋণ বাড়তে থাকে। তবে এখন রিজার্ভ আবারও কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী।

ফের সোনার দামে রেকর্ড, ভরি ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা

দেশের বাজারে সোনার দাম ফের বাড়ানো হয়েছে। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৬২৪ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৮৩৩ টাকা। দেশের বাজারে সোনার এতো দাম আগে কখনো হয়নি। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। কাল রোববার (২০ এপ্রিল) থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৩ হাজার ৩৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৬৫ হাজার ২০৯ টাকা। এতদিন দেশের বাজারে এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম ছিলো। এই রেকর্ড দাম নির্ধারণ করার ৩ দিন পর এখন আবার দাম বাড়ানো হলো। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় উঠেছে সোনা। শনিবার (১৯ এপ্রিল) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৬২৪ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৮৩৩ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৫০৮ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬০ হাজার ২০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ১৩৫ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৮৩২ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৯১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে গত ১৭ এপ্রিল সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৩ হাজার ৩৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৬৫ হাজার ২০৯ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৮৯২ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৪৮৪ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ১২২ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১১ হাজার ৬৫৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আজ শনিবার পর্যন্ত এ দামেই সোনা বিক্রি হয়েছে। সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ভিয়েতনাম থেকে এলো সাড়ে ১২ হাজার টন চাল

ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা আরও সাড়ে ১২ হাজার মেট্রিক টন চাল বাংলাদেশে এসেছে। এ চাল আমদানি করেছে খাদ্য অধিদফতর। শনিবার (১৯ এপ্রিল) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘জিটুজি চুক্তির আওতায় ভিয়েতনাম থেকে সাড়ে ১২ হাজার টন আতপ চালবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। ভিয়েতনাম থেকে মোট ১ লাখ টন আতপ চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। এরইমধ্যে ৭২ হাজার ৭০০ টন চাল দেশে পৌঁছেছে।’ জাহাজে রক্ষিত চালের নমুনা পরীক্ষা এরইমধ্যে শেষ হয়েছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘চাল খালাসের কার্যক্রম দ্রুত শুরু হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

জুনেই আইএমএফের ঋণের কিস্তি পাওয়ার আশা অর্থ উপদেষ্টার

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের কিস্তি পাওয়ার অনিশ্চয়তার মধ্যেই বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন সম্মেলনে যোগ দিতে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সেখানেও ঋণের কিস্তির বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হবে বলে জানান তিনি। বাজেট উপস্থাপনের পর জুনেই আইএমএফের বাজেট সহায়তার কিস্তি পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী এই উপদেষ্টা। জানান, এরপরও ঋণ না পেলে বাজেট সহায়তার জন্য মরিয়া হয়ে ছুটবে না বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ দিতে সম্মত হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। মোট ৬ কিস্তিতে ঋণ দেয়ার কথা সংস্থাটির। এরইমধ্যে ৩টি কিস্তি বাংলাদেশ হাতে পেলেও চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা। প্রায় দুই সপ্তাহের ঢাকা সফর শেষে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সংস্থাটির প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে বেশ কিছু সন্তুষ্টির কথা জানালেও চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড় করা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গেছে।চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হবে জুন পর্যন্ত। তবে বাজেট সহায়তার এই অর্থ পেতে জুনের প্রথম সপ্তাহে প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার পরপরই সিদ্ধান্ত জানতে চাইবেন অর্থ উপদেষ্টা। এ জন্য আগামী ২১ এপ্রিল ওয়াশিংটনে শুরু হতে যাওয়া বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন সম্মেলনেও সংস্থাটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।দশ দিনের এই সফরে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গেও বৈঠক করবে বলে জানান সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বাজেট ঘোষণা করার আগেই অর্থ ছাড়ের প্রতিশ্রুতি চেয়েছি। আইএমএফ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। ওয়াশিংটনে শুধু আইএমএফ নয়, বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গেও আলোচনা হবে।’এরইমধ্যে রাজস্ব বোর্ড বিকেন্দ্রীকরণ, রিজার্ভের স্থিতিশীলতায় সন্তোষ জানিয়েছে আইএমএফ। রাজস্ব বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। সমন্বয় করা হয়েছে জ্বালানির দাম। তবে খাদ্য, কৃষি খাতে দেয়া ভর্তুকি কমানোর বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ।অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এনবিআরকে দুই ভাগ করা হচ্ছে। এটাকে আইএমএফ ভালো সিদ্ধান্ত বলেছে। সংস্থাটি ভর্তুকি কমানোর কথা বললেও, সেটি হুট করে কমানো সম্ভব নয়। আইএমএফের টাকা না পেলে দেশ চলবে না, এমনটি নয়। তবে পেলে ভালো হয়।’ওয়াশিংটনে সম্মেলন শেষে ২৯ এপ্রিল অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে। ২ জুন ঘোষণা করা হবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট।