আকুর বিল পরিশোধে ৩০ বিলিয়নে নামলো রিজার্ভ
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১১:৩৪ পিএম, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশ ব্যাংক এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নকে (আকু) জুলাই ও আগস্ট মাসের আমদানি বিল হিসেবে ১.৫ বিলিয়ন ডলার (১৫০৩.৫০ মিলিয়ন) পরিশোধ করেছে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) এই অর্থ পরিশোধের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ৩০.৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এ বিল মূলত জুলাই ও আগস্ট মাসে আকুর সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে আমদানি লেনদেনের বিপরীতে পরিশোধ করা হয়েছে। আকু সদস্যদের প্রতি দুই মাস পরপর আমদানি দায় পরিশোধ করতে হয়।
গত আগস্ট মাস শেষে দেশের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তবে আকুকে ১.৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর তা ৩০ বিলিয়নের নিচে নেমে এলেও বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধির কারণে রিজার্ভ পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে।
তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে, ২০২২ সালের আগস্টে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮.০৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। তবে এরপর অর্থ পাচারের কারণে বড় ধস নামে। সরকার পরিবর্তনের আগে ২০২৩ সালের জুলাই শেষে রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ২০.৩৯ বিলিয়ন ডলারে। নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রাখে এবং অর্থ পাচার রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়। আগের সরকারের রেখে যাওয়া প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারের বকেয়া পরিশোধ করার পরও বর্তমানে রিজার্ভ স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে।
সবশেষ বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩১ কোটি ডলার বা ৩০.৩১ বিলিয়ন ডলার। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ মানদণ্ড অনুযায়ী এ রিজার্ভের পরিমাণ ২৫.৪০ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকৃত বা নিট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) বর্তমানে ২১ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি রয়েছে বলে জানা গেছে, যদিও এটি নিয়মিত প্রকাশ করা হয় না।
বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে প্রতি মাসে গড়ে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করলে প্রায় চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান রিজার্ভ থাকা অর্থনীতির জন্য নিরাপদ বিবেচিত হয়। সেই দিক থেকে বাংলাদেশ এখন অনুকূল অবস্থানে রয়েছে।
উল্লেখ্য, আকু একটি আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানসহ কয়েকটি দেশের মধ্যকার আমদানি-রপ্তানির আর্থিক লেনদেন নিষ্পত্তি হয়। আকুর সদর দপ্তর ইরানের রাজধানী তেহরানে অবস্থিত। এ ব্যবস্থায় সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি দুই মাস পরপর আমদানির অর্থ পরিশোধ করে।
বর্তমানে শ্রীলঙ্কা আকুর সদস্য নয়। দেশটি দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে এবং আমদানি ব্যয় পরিশোধের শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
জাতিসংঘের এশিয়া অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ESCAP) আওতাভুক্ত সকল দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আকুর সদস্য হতে পারে।