আরও কমেছে বিদেশি ঋণ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কমতে শুরু করেছে বৈদেশিক ঋণ। গত ডিসেম্বর শেষে বিদেশি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১০৩ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৩৬৪ কোটি ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে) ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা। তিন মাস আগে সেপ্টেম্বর শেষে যা ছিল ১০৪ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৪৩৭ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে। তথ্য বলছে, তিন মাসে বিদেশি ঋণ কমেছে প্রায় ৭৪ কোটি ডলার। বেসরকারি খাতে কমেছে ৫২ কোটি ডলারের বেশি। সরকারি খাতে কমেছে সাড়ে ২১ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ ধারাবাহিকভাবে বেড়ে গত বছরের জুনে ২ হাজার ৬০ কোটি ডলারে উঠেছিল। সেখান থেকে কমে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ১ হাজার ৯৯৫ কোটি ডলারে নামে। আরও কমে ডিসেম্বরে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৪২ কোটি ডলার। আর সরকারি খাতে গত সেপ্টেম্বরে বিদেশি ঋণ ছিল ৮ হাজার ৪৪৩ কোটি ডলার। ডিসেম্বরে তা ৮ হাজার ৪২১ কোটি ডলারে নেমেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সরকারি ও বেসরকারি খাতের ঋণের বকেয়া পরিশোধ বেড়েছে। অন্যদিকে ডলারের দর ও সুদহার বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ আগের ঋণের মেয়াদ না বাড়িয়ে পরিশোধে অধিকতর মনোযোগী হয়েছে। রেমিট্যান্স চাঙ্গা থাকার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধিও ঋণ পরিশোধে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। এখন রিজার্ভ থেকে কোনো ডলার বিক্রি না করে বরং কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে করে রিজার্ভ বাড়ছে। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী এখন রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১০০ কোটি ডলারের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, পাচার কমে যাওয়ায় রেমিট্যান্স ব্যাপক বাড়ছে। যে কারণে রিজার্ভ থেকে কোনো ডলার বিক্রি না করেও বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আগের সব দায় পরিশোধ করা হচ্ছে। এতে করে একদিকে আগের দায় কমছে, আরেকদিকে রিজার্ভ বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেশের ইতিহাসে ২০২১ সালের আগস্টে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উঠেছিল রেকর্ড ৪৮ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। ওই বছরের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে যেখানে বিদেশি ঋণ ছিল ৮ হাজার ৪৭৪ কোটি ডলার। কিন্তু পরের বছরগুলোতে রিজার্ভ কমতে থাকে এবং বিদেশি ঋণ বাড়তে থাকে। তবে এখন রিজার্ভ আবারও কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী।

ফের সোনার দামে রেকর্ড, ভরি ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা

দেশের বাজারে সোনার দাম ফের বাড়ানো হয়েছে। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৬২৪ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৮৩৩ টাকা। দেশের বাজারে সোনার এতো দাম আগে কখনো হয়নি। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। কাল রোববার (২০ এপ্রিল) থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৩ হাজার ৩৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৬৫ হাজার ২০৯ টাকা। এতদিন দেশের বাজারে এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম ছিলো। এই রেকর্ড দাম নির্ধারণ করার ৩ দিন পর এখন আবার দাম বাড়ানো হলো। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় উঠেছে সোনা। শনিবার (১৯ এপ্রিল) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৬২৪ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৮৩৩ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৫০৮ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬০ হাজার ২০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ১৩৫ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৮৩২ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৯১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে গত ১৭ এপ্রিল সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৩ হাজার ৩৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৬৫ হাজার ২০৯ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৮৯২ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৪৮৪ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ১২২ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১১ হাজার ৬৫৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আজ শনিবার পর্যন্ত এ দামেই সোনা বিক্রি হয়েছে। সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ভিয়েতনাম থেকে এলো সাড়ে ১২ হাজার টন চাল

ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা আরও সাড়ে ১২ হাজার মেট্রিক টন চাল বাংলাদেশে এসেছে। এ চাল আমদানি করেছে খাদ্য অধিদফতর। শনিবার (১৯ এপ্রিল) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘জিটুজি চুক্তির আওতায় ভিয়েতনাম থেকে সাড়ে ১২ হাজার টন আতপ চালবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। ভিয়েতনাম থেকে মোট ১ লাখ টন আতপ চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। এরইমধ্যে ৭২ হাজার ৭০০ টন চাল দেশে পৌঁছেছে।’ জাহাজে রক্ষিত চালের নমুনা পরীক্ষা এরইমধ্যে শেষ হয়েছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘চাল খালাসের কার্যক্রম দ্রুত শুরু হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

জুনেই আইএমএফের ঋণের কিস্তি পাওয়ার আশা অর্থ উপদেষ্টার

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের কিস্তি পাওয়ার অনিশ্চয়তার মধ্যেই বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন সম্মেলনে যোগ দিতে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সেখানেও ঋণের কিস্তির বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হবে বলে জানান তিনি। বাজেট উপস্থাপনের পর জুনেই আইএমএফের বাজেট সহায়তার কিস্তি পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী এই উপদেষ্টা। জানান, এরপরও ঋণ না পেলে বাজেট সহায়তার জন্য মরিয়া হয়ে ছুটবে না বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ দিতে সম্মত হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। মোট ৬ কিস্তিতে ঋণ দেয়ার কথা সংস্থাটির। এরইমধ্যে ৩টি কিস্তি বাংলাদেশ হাতে পেলেও চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা। প্রায় দুই সপ্তাহের ঢাকা সফর শেষে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সংস্থাটির প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে বেশ কিছু সন্তুষ্টির কথা জানালেও চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড় করা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গেছে।চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হবে জুন পর্যন্ত। তবে বাজেট সহায়তার এই অর্থ পেতে জুনের প্রথম সপ্তাহে প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার পরপরই সিদ্ধান্ত জানতে চাইবেন অর্থ উপদেষ্টা। এ জন্য আগামী ২১ এপ্রিল ওয়াশিংটনে শুরু হতে যাওয়া বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন সম্মেলনেও সংস্থাটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।দশ দিনের এই সফরে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গেও বৈঠক করবে বলে জানান সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বাজেট ঘোষণা করার আগেই অর্থ ছাড়ের প্রতিশ্রুতি চেয়েছি। আইএমএফ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। ওয়াশিংটনে শুধু আইএমএফ নয়, বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গেও আলোচনা হবে।’এরইমধ্যে রাজস্ব বোর্ড বিকেন্দ্রীকরণ, রিজার্ভের স্থিতিশীলতায় সন্তোষ জানিয়েছে আইএমএফ। রাজস্ব বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। সমন্বয় করা হয়েছে জ্বালানির দাম। তবে খাদ্য, কৃষি খাতে দেয়া ভর্তুকি কমানোর বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ।অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এনবিআরকে দুই ভাগ করা হচ্ছে। এটাকে আইএমএফ ভালো সিদ্ধান্ত বলেছে। সংস্থাটি ভর্তুকি কমানোর কথা বললেও, সেটি হুট করে কমানো সম্ভব নয়। আইএমএফের টাকা না পেলে দেশ চলবে না, এমনটি নয়। তবে পেলে ভালো হয়।’ওয়াশিংটনে সম্মেলন শেষে ২৯ এপ্রিল অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে। ২ জুন ঘোষণা করা হবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট।

বাজারে কাঁকরোলের কেজি ১৪০, বেগুনের সেঞ্চুরি

বাজারে কিছু দিন ধরে সব ধরনের সবজির দাম বেড়ে গেছে। গেল রমজান মাস জুড়ে সবজির দাম সবচেয়ে কম থাকায় ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যে কিনতে পেরেছেন। তবে ঈদের পর থেকে বাজারে সবজির দাম বাড়তি যাচ্ছে। বলতে গেলে বাজারে এখন সব সবজির দাম বাড়তি। সবচেয়ে দামি সবজির তালিকায় আছে কাঁকরোল, যার প্রতি কেজি ১৪০ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি গোল বেগুনও সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে, পাশাপাশি লম্বা বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকা। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে সবজির এমন বাড়তি দামের চিত্র দেখা গেছে। বাজারে ৬০-৮০ টাকার নিচে তেমন কোনো সবজি নেই। আজকের বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, কাঁকরোল ১৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিকেজি ঢ্যাঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৭০টাকায়, ধুন্দুল ১০০ টাকা, ঝিঙা ১০০ টাকা, বেগুন (গোল) ১০০ টাকা, বেগুন (লম্বা) ৮০ টাকা, পটল৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, জালি প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, লাউ ৬০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ টাকা, লেবু মানভেদে প্রতি হালি ২০ থেকে ৩০ টাকা, আলু প্রতি কেজি ৩৫ টাকা এবং গাজর প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর শান্তিনগর বাজারে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী আব্বাস উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আজ বাজারে দেখলাম সবজির বাজার খুব চড়া। এত দাম দিয়ে সবজি তো সাধারণ মানুষ কিনে খেতে পারে না। এজন্য দরকার সরকারি মনিটরিং ব্যবস্থা, কি কারণে সবজির দাম বাড়ছে, কারা বাড়াচ্ছে এসব বিষয় তদারকি করা খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। নয়তো যে যার মত করে সবজির দাম বাড়িয়ে রাখছে। বাজারে দেখলাম সবচেয়ে বেশি দামি সবজি হচ্ছে কাঁকরোল আর বেগুন। এগুলো ১৪০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাকি সবজিগুলোর দামও ৭০-৮০ টাকার ঘরে।’ মালিবাগ বাজারের আরেক ক্রেতা মাসুম আহমেদ বলেন, ‘বাজারে সবজির দাম বাড়তি। বিশেষ করে ঈদের পর থেকে প্রতিদিনই সবজির দাম বেড়েই চলছে। এখানে ৭০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। আর অন্যান্য সবজির দাম তো সেঞ্চুরি পেরিয়েছে। এত দামি সবজি আমাদের মতো সাধারণ করে তাদের কিনে খাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ সবজি দাম বৃদ্ধির কারণ জানিয়ে সেগুনবাগিচার সবজি বিক্রেতা আতিকুর রহমান বলেন, ‘বাজারে এখন সবজির সরবরাহ কম। মূলত মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে এসব সবজি বাজারে সরবরাহ কম, সে কারণেই দাম বাড়তি যাচ্ছে। শীতের সবজি শেষ হয়ে যাওয়ার পর বাজারে আস্তে আস্তে দাম বাড়তে থাকে। এখন নতুন করে, এই মৌসুমের সবজি উঠবে কিছুদিন পর। নতুন সবজি উঠতে শুরু করলে সবজির দাম আবার কিছুটা কমে আসবে।’ সবজির দামের পার্থক্যের কারণ জানিয়ে কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা পলাশ তালুকদার বলেন, ‘রাজধানীর অন্যান্য বাজারের তুলনায় কাওরান বাজারের সবজির দাম কিছুটা কম। অন্য বাজারে যদি কোনো সবজির দাম খুচরা ৮০ টাকা হয়, তাহলে তা কাওরান বাজারে ৬০ টাকা। আসলে যারা এখান থেকে সবজি কিনে নিয়ে গিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে, তাদের পরিবহন খরচ, রাস্তা খরচ,দোকান ভাড়া, কর্মচারী খরচ সব মিলিয়ে তারা কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি করে। তবুও ঈদের পর থেকে সব ধরনের সবজির দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। এখন সবজির শেষ সময়ের মৌসুম, নতুন করে মৌসুম শুরু হলে সবজি বাজারে আসতে শুরু করবে, তখন ধীরে ধীরে সবজির দাম কমে আসবে।’

ঋণের কিস্তি ছাড় স্থগিত রাখল আইএমএফ

দুই সপ্তাহের মিশন শেষে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড়ে এখনই ‘সবুজ সংকেত’ না দিয়ে বরং এক ধরনের ‘শেষ সুযোগের’ বার্তা দিয়েছে। অর্থাৎ এখনই কিস্তি স্থগিত থাকছে, তবে সব শর্ত পূরণে দ্রুত সংস্কার হলে আগামী জুনে এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। আইএমএফ মিশনপ্রধান ক্রিস পাপাজর্জিওর নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল ২-১৭ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করে। এই আলোচনা শেষে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে ক্রিস জানান, ‘বাংলাদেশ এখন সঠিক পথে থাকলেও, শর্ত পূরণ না হওয়ায় কিস্তি ছাড়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের আলোচনা এখনও চলছে। আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু হতে যাওয়া আইএমএফ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে বাংলাদেশ ইস্যুটি আলোচিত হবে।’ তবে কিস্তি ছাড়ে ‘স্টাফ লেভেল অ্যাগ্রিমেন্ট’ বা কর্মকর্তা পর্যায়ের সমঝোতায় পৌঁছানো না গেলে পর্ষদে অনুমোদন পাওয়া সম্ভব নয় বলে জানান তিনি। কোন্ কোন্ খাতে সংস্কার চাইছে আইএমএফ? সূত্র জানায়, ঋণের তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তি মিলিয়ে প্রায় ১১৫-১৩০ কোটি ডলার ছাড়ের জন্য এখনও বাংলাদেশকে আইএমএফের চারটি প্রধান শর্ত পূরণ করতে হবে। শর্তগুলো হল- বিনিময় হার ব্যবস্থাপনা: আইএমএফ বাজারভিত্তিক বিনিময় হারে জোর দিলেও, বাংলাদেশ ব্যাংক এখনই পুরোপুরি বাজারে ছেড়ে দিতে প্রস্তুত নয়। তবে এখনকার সময়টি ‘বাজারভিত্তিক বিনিময় হার বাস্তবায়নের জন্য উপযুক্ত’ বলেও মন্তব্য করেছেন ক্রিস, কারণ ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলারের দামের ব্যবধান কমেছে এবং রিজার্ভ কিছুটা স্থিতিশীল। কর সংস্কার: কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানো, করছাড় ও বৈচিত্র্যময় করহার হ্রাসে সংস্কার আনা, এবং রাজস্ব আহরণ বাড়ানো অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। ভর্তুকি হ্রাস: বিশেষ করে জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও কৃষিখাতে সরকারের ভর্তুকি কমানোর ক্ষেত্রে দৃশ্যমান অগ্রগতি চায় আইএমএফ। ব্যাংক খাতে স্বচ্ছতা ও খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ: সরকার পরিবর্তনের পর খেলাপি ঋণ বেড়েছে, যা আদায় ও তদারকির দুর্বল ব্যবস্থার ফল বলেও মনে করছে সংস্থাটি। তারা নিয়ন্ত্রণমূলক সংস্কার ও নীতিগত হস্তক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছে। জুনে জানা যাবে সিদ্ধান্ত: আইএমএফ সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের শেষ দিকে অর্থাৎ জুন মাসে পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। এর আগে গত ডিসেম্বরে চতুর্থ কিস্তি ছাড়ে ‘স্টাফ লেভেল অ্যাগ্রিমেন্ট’ হলেও তা অনুমোদনের পর্যায়ে যেতে পারেনি। এদিকে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘আমরা আইএমএফের শর্তগুলো পূরণে বাস্তবধর্মী অগ্রগতি দেখাচ্ছি। তবে কিছু খাত এখনও চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। জুনের মধ্যে সংস্কারে নির্ধারিত অগ্রগতি দেখাতে পারলে কিস্তি ছাড়ে কোনো বাধা থাকবে না।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘সরকার যেভাবে সময়ক্ষেপণ করছে, তাতে আইএমএফের ধৈর্যের পরীক্ষা চললেও এখনও সুযোগ পুরোপুরি ফুরায়নি। বরং একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও বাস্তব সংস্কারের মধ্য দিয়েই অর্থনীতির এই সংকটকালে বহির্বিশ্বের আস্থা অর্জন সম্ভব।’

বিশ্বে কমছে ভোজ্যতেলের দাম, বাড়ছে দেশে

তিন বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে। দেশের বাজারে এই তেল বিক্রি হচ্ছে তুলনামূলক উচ্চ দামে। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন এবং যথাসময়ে ব্যাংকের সহায়তা না পাওয়ায় বিশ্ব বাজারে দর কমার সুফল পাচ্ছেন না দেশের ভোক্তারা। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) আমদানি খরচের সঙ্গে যাবতীয় ব্যয় পর্যালোচনা করে বলছে, এটি ব্যবসায়ীদের অজুহাত মাত্র। তাদের হিসাবে সর্বশেষ বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৪ টাকা বাড়ানোর পর ব্যবসায়ীদের লাভ হচ্ছে লিটারে অন্তত ১২ টাকা। দেশে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। সে হিসাবে মাসে এ চাহিদা দাঁড়ায় দেড় লাখ টন। বিশ্বব্যাংকের নিয়মিত মাসিক প্রতিবেদনের (পিংক শিট) তথ্যানুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে ২০২২ সাল থেকে সয়াবিন, পাম অয়েল ও সয়াবিন বীজের দাম নিম্নমুখী। ২০২২ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন সয়াবিন তেলের গড় দাম ছিল ১ হাজার ৬৬৭ ডলার। ২০২৩ সালে সে দর নেমে আসে ১ হাজার ১১৯ ডলারে। ২০২৪ সালে তা আরও কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ২২ ডলারে।চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেও সয়াবিনের দাম এর কাছাকাছি। গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সয়াবিনের গড় দাম ছিল ১ হাজার ৪০ ডলার। এপ্রিল মাসে দাম আরও কমতে শুরু করেছে। একই চিত্র পাম অয়েলের ক্ষেত্রে। ২০২২ সালে বিশ্ব বাজারে পাম অয়েলের গড় দাম ছিল ১ হাজার ২৭৬ ডলার। ২০২৩ সালে ছিল মাত্র ৮৮৬ ডলার। ২০২৪ সালে দাঁড়ায় ৯৬৩ ডলার। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে পাম অয়েলের গড় দাম ১ হাজার ৬৮ ডলার। এপ্রিল মাসে আবার কমতে শুরু করেছে এর দাম। সয়াবিন বীজের দাম কমেছে সবচেয়ে বেশি। ২০২২ সালে সয়াবিন বীজের গড় দাম ছিল ৬৭৫ ডলার। পরের বছর আরও কমে তা দাঁড়ায় ৫৯৮ ডলারে। ২০২৪ সালে আরও কমে বিক্রি হয়েছে ৪৬২ ডলারে। চলতি বছরের গত তিন মাসে আরও কমেছে সয়াবিন বীজের দাম। এই তিন মাসে গড় দাম ছিল ৪০৮ ডলার। সয়াবিন বীজ মাড়িয়ে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ভোজ্যতেল পাওয়া যায়। কাস্টমসের শুল্কায়ন মূল্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ৬ মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে অপরিশোধিত যে ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে, তার শুল্কায়ন মূল্য ছিল প্রতি কেজি গড়ে ১৩৬ টাকা। প্রতি কেজির পরিবহন ও পরিশোধন ব্যয় সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ বা ২০ টাকা। শুল্ক, কর ও ভ্যাট বাবদ আরও ২১ টাকা যুক্ত করলে খরচ দাঁড়ায় ১৭৭ টাকা প্রতিলিটার। ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সরকার লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়ে সয়াবিন তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ১৮৯ টাকা। এই হিসাবে, প্রতি লিটারে অন্তত ১২ টাকা লাভ করছেন ব্যবসায়ীরা। এবার সবচেয়ে বেশি ভোজ্যতেল আমদানি করেছে টিকে গ্রুপ। এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শফিউল আতহার তসলিম বলেন, ‘ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে এখন স্থিতিশীল। মাস কয়েক আগে দাম কিছুটা কমলেও এখন ১ হাজার ১০০ ডলারের কাছাকাছি।’ তাহলে দেশের বাজারে দাম বাড়ল কেন- জানতে চাইলে শফিউল আতহার তসলিম বলেন, ‘ট্যাক্স ও ভ্যাট পুনর্বহাল করার কারণে দাম বেড়েছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও তার সুফল সেভাবে নিতে পারিনি আমরা। ডলারের দাম বৃদ্ধি ও ব্যাংক খাতের অস্থিরতার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি আমরা।’ ভোজ্যতেলে এখনও লোকসান হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘যে শুল্কহার সরকার পুনর্বহাল করেছে তাতে লিটারে ২১ টাকা বাড়ার কথা। কিন্তু বাড়ানো হয়েছে ১৪ টাকা।’ এ বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে ক্যাবের সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, ‘আমাদের কাছে থাকা তথ্য বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে বেশ কয়েক মাস ধরে সর্বনিম্ন পর্যায়ে আছে ভোজ্যতেলের দাম। সেখানে দাম বাড়লে ব্যবসায়ীরা বাতাসের আগে তা কার্যকর করেন বাংলাদেশে। কিন্তু দাম কম থাকলে অজুহাত দেন ডলারের, ব্যাংকের, কাস্টমসের। এই অবস্থার পরিবর্তন দরকার।’ সয়াবিন তেলের দাম এক লাফে ১৪ টাকা বাড়ানোর বিষয়টি অযৌক্তিক বলে মনে করেন তিনি। সাড়ে তিন মাসে জাহাজ এসেছে ২৩টি: শিপিং এজেন্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে অপরিশোধিত সয়াবিন, পাম অয়েল ও সয়াবিনের বীজ নিয়ে গত সাড়ে তিন মাসে জাহাজ এসেছে ২৩টি। এসব জাহাজে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম অয়েল এসেছে ৩ লাখ ৭ হাজার ২৮৫ টন। সয়াবিন বীজ এসেছে ২ লাখ ২৭ হাজার টন। ২০২৫ সালে সবচেয়ে বেশি ভোজ্যতেল এনেছে টিকে গ্রুপ। ফেব্রুয়ারিতে ৪টি জাহাজে প্রায় ৬০ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম অয়েল এনেছে টিকে গ্রুপ। মার্চ মাসেও সর্বাধিক আমদানি করেছে টিকে গ্রুপ। এই সময় তাদের পাঁচটি জাহাজে পণ্য এসেছে প্রায় ৮০ হাজার টন। একই মাসে মেঘনা গ্রুপের পণ্য এসেছে প্রায় ৬৫ হাজার টন। তবে ১৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত ভোজ্যতেলের কোনো জাহাজ আসেনি চট্টগ্রাম বন্দরে। সূত্র দাবি করছে, দাম বাড়ার বিষয়টি আগাম নিশ্চিত হওয়ার পর ২ এপ্রিল থেকে আবার আমদানি শুরু করেন ভোজ্যতেলের ব্যবসায়ীরা। ১০ এপ্রিল পর্যন্ত সয়াবিন, পাম ও সয়াবিন বীজ নিয়ে ৭টি জাহাজ নোঙর করে চট্টগ্রাম বন্দরে। আমদানিকৃত এসব ভোজ্যতেলের বেশির ভাগই কেনা হয়েছে ২০২৪ সালে, যখন আন্তর্জাতিক বাজারের গড় দাম ছিল সর্বনিম্ন। গত বছর চার-পাঁচ বার ওঠানামা করেছে দাম: দেশে যে কয়েক বার ভোজ্যতেলের দর কমেছে, তার পেছনে রয়েছে সরকারের শুল্ককর ছাড়ের সুবিধা। অর্থাৎ যখন শুল্ককর কমানো হয়েছে, তখন আমদানিকারকরা তেলের দর কমিয়েছেন। আবার যখন শুল্ককর ছাড়ের মেয়াদ শেষ হয়েছে, ফের তারা দাম বাড়িয়েছেন। এভাবেই ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন আমদানিকারকরা। দাম ওঠানামার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত বছর (২০২৪ সাল) চার-পাঁচ বার ওঠানামা করেছে ভোজ্যতেলের দাম। গেল বছরের জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের পর সরকারের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছিলেন আমদানিকারকরা। তখন বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দর ৪ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১৭৩ টাকা। এর পর ১ মার্চ ১০ টাকা কমিয়ে প্রতি লিটারের দর নির্ধারণ করা হয় ১৬৩ টাকা। এর পর ওই বছরের ১৮ এপ্রিল বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৬৩ টাকা থেকে ৪ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ১৬৭ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের লিটার ১৪৯ টাকা থেকে কমিয়ে ১৪৭ টাকা করা হয়। এর পর গত ৯ ডিসেম্বর বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটারে ৮ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১৭৫ টাকা। এ ছাড়া খোলা সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করেছে প্রতি লিটার ১৫৭ টাকা। এর পর সরকার আমদানিতে দুই দফায় শুল্ককর ছাড় দিয়েছে। চলতি বছরের ৩১ মার্চ এই ছাড়ের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ফের লিটারে ১৪ টাকা বাড়ল সয়াবিন তেলের দাম। খাতুনগঞ্জে সরবরাহ এখনও স্বাভাবিক হয়নি: তার পরও বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ কম। গত সপ্তাহের তুলনায় পাইকারি মোকাম খাতুনগঞ্জে তেলের সরবরাহ একটু বেড়েছে।দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, মূলত বিশ্ববাজারে দাম কমে যাওয়ার পর আমদানিকারকরা এসও (সরবরাহ আদেশ) বিক্রি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার যা এসও আছে, সেটিরও পণ্য সরবরাহ করছে না। এতে করে বাজারে তেলের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এই ঘাটতির সুবাদে বেশ কয়েক মাস বাড়তি দামে বিক্রি হয়েছে ভোজ্যতেল। খাতুনগঞ্জে গতকালও চাহিদা মতো ভোজ্যতেল ছিল না বলে জানান পাইকারি ব্যবসায়ীরা। আগের সপ্তাহের তুলনায় সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। পাঁচ প্রতিষ্ঠানের হাতে ভোজ্যতেলের বাজার: সময়ের হাত ধরে ভোজ্যতেলের চাহিদা বাড়লেও ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী প্রতষ্ঠানের সংখ্যা ক্রমেই কমছে। এখন এই বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে বড় পাঁচ শিল্প গ্রুপ। তাদের দাবি অনুযায়ীই মূলত তেলের দাম বাড়ানো হয়। তাদের হাতেই বাজারের নিয়ন্ত্রণ। ক্যাব বলছে, এসব প্রতিষ্ঠানের হাতে রয়েছে আমদানিকৃত ভোজ্যতেলের ৭০ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে মেঘনা গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, টিকে গ্রুপ, বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেড ও স্মাইল ফুড প্রোডাক্টস। এনবিআরের তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালে প্রায় ২৫ লাখ ৭ হাজার টন সয়াবিন ও পাম তেল আমদানি করা হয়। ২০২৪ সালে আমদানি হয় প্রায় ৩২ লাখ টন ভোজ্যতেল। দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা এখন প্রায় ৩০ লাখ টন। ভোজ্যতেল পরিশোধনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন জানায়, দেশে রিফাইনারি রয়েছে ২২টি। এর মধ্যে পাঁচ থেকে ছয়টি অধিকাংশ চাহিদা পূরণ করছে।

পেঁয়াজের বাজার চড়া

হঠাৎ তেতেছে পেঁয়াজের বাজার। গত তিন-চার দিনে কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে মসলাজাতীয় পণ্যটির দাম। তবে ঈদের আগে উত্তাপ ছড়ানো মুরগির বাজারে অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে। সবজির বাজারও গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা কমতির দিকে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকার কারওয়ান বাজার, মালিবাগ ও তেজগাঁওয়ের কলোনি বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের বাজারের এই চিত্র দেখা গেছে। এবার মৌসুমে বেশ কম দর ছিল পেঁয়াজের। ফলন ভালো হওয়ায় দেশি পেঁয়াজের কেজি সর্বনিম্ন ২৫ টাকায় নেমেছিল। রোজার ঈদের আগে, অর্থাৎ ১৫ থেকে ২০ দিন আগেও কেজি বিক্রি হয়েছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। ঈদের পর বাড়তে থাকে দাম। গত সপ্তাহে সবচেয়ে ভালো মানের পেঁয়াজের কেজি উঠেছে ৫০ টাকায়। তবে গতকাল দর আরও বেড়ে ৬০ টাকা ছুঁয়েছে। যদিও পাড়া-মহল্লার দোকানদারদের কেউ কেউ এর চেয়েও কিছুটা বেশি দরে বিক্রি করছেন। তবে পাইকারি বাজার থেকে একসঙ্গে পাঁচ কেজি কেনা যাচ্ছে ২৭০ থেকে ২৭৫ টাকায়। সেই হিসাবে কেজিপ্রতি দর পড়ছে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা। কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ঈদের পর থেকে দুই-তিন টাকা করে বাড়ছে দাম। পাবনার মোকামে দাম বাড়ার কারণে ঢাকায়ও দর বাড়ছে।’ ঢাকার বাইরেও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দিনাজপুরের হাকিমপুরের হিলি স্থলবন্দর এলাকায় সপ্তাহ ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম খুচরা পর্যায়ে কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। বিক্রেতারা জানান, মৌসুমের শেষের দিকে পেঁয়াজের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে দাম বাড়তির দিকে। বন্দরের ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে পেঁয়াজের আইপি (আমদানির অনুমতি) বন্ধ রয়েছে। আসন্ন কোরবানি ঈদে পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে পড়বে। তাই দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমদানির অনুমতি দেওয়া দরকার। এদিকে, রসুনের দর কিছুটা কমতির দিকে। সপ্তাহ দুয়েক আগে আমদানি করা রসুনের কেজি ২০০-২২০ এবং দেশি রসুনের কেজি ১০০-১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার আমদানি করা রসুনের কেজি ১৮০-২১০ এবং দেশি রসুন ৮০-১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সেই হিসাবে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা রসুন কেজিতে ১০ থেকে ২০ এবং দেশি রসুন কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে। এদিকে ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে বাড়তে থাকে মাংসের দাম। তখন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২১০-২৩০ টাকা দরে। একইভাবে সোনালি জাতের মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ৩০০-৩৩০ টাকায়। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৭৫ এবং সোনালি জাতের মুরগি ২৫০-২৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। একইভাবে দর কমেছে গরুর মাংসের। ১৫-২০ দিন আগে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৮০-৮০০ টাকায়। দর কমে বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে কেজি ৭৫০ টাকা দরে। মুরগির দর কমার বিষয়ে পশ্চিম নাখালপাড়ার মুরগি বিক্রেতা রহিম মিয়া বলেন, ‘খামার পর্যায়ে দর কিছুটা কম। সেজন্য খুচরা বাজারেও কমেছে।’ ডিমের দরে তেমন হেরফের নেই। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। মাসখানেক ধরেই এই দামের আশপাশে রয়েছে ডিমের দর। মাছের বাজারেও খুব বেশি পরিবর্তন দেখা যায়নি। দাম বাড়ানোর আশায় কয়েক দিন ধরে বাজারে পাঁচ লিটারের বোতলজাত তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছিলেন আমদানিকারকরা। গত মঙ্গলবার লিটারে ১৪ টাকা দাম বাড়ানোর পর বাজারে বোতলের সরবরাহ বেড়েছে। বিশেষ করে ফ্রেশ ও রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের তেল দেখা গেছে বেশির ভাগ দোকানে। ঈদের পর সরবরাহ কম থাকায় কিছুটা বেড়েছিল সবজির দাম। তবে বৃহস্পতিবার সবজির বাজার অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। পটোল, উচ্ছে, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙা, চিচিঙ্গা ও শসার কেজি বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকায়। গাজর ও টমেটোর কেজি বিক্রি হয়েছে ৩০-৪০ টাকা দরে। এ ছাড়া বেগুনের কেজি কেনা গেছে ৬০-৭০ টাকায়। তবে বরবটির কেজি কিনতে ক্রেতাকে ১০০ বা এর চেয়ে বেশি টাকা গুনতে হয়েছে। কাঁচামরিচের দরও বেশ কম। মানভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৫০-৭০ টাকায়। আলুর দর এখনও কম। প্রতি কেজি কেনা যাচ্ছে ২০-২২ টাকায়।

ভারত থেকে আরও ৫০ হাজার টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত

ভারত থেকে আরও ৫০ হাজার টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ১ কোটি ৯৭ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২৪০ কোটি ৮০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। দেশের খাদ্য মজুত বাড়াতে এই চাল আমদানি করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি বৈঠকে এ চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, দেশের সরকারি খাদ্য মজুত বৃদ্ধি করে সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার স্বার্থে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হলে ছয়টি দরপত্র জমা পড়ে। ছয়টি প্রস্তাবই আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা ভারতের মেসার্স এস পাত্তাভী এগ্রো ফুডস প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এ চাল কেনার সিদ্ধান্ত হয়। প্রতি মেট্রিক টন চালের দাম ৩৯৪ দশমিক ৭৭ ডলার হিসাবে ৫০ হাজার টন চাল ক্রয়ে ব্যয় হবে ১ কোটি ৯৭ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২৪০ কোটি ৮০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমাদের ব্র্যান্ড, কোয়ালিটি ও মার্কেটিংয়ের বিষয় রয়েছে। বাণিজ্য ইস্যুতে ইউএস’র সঙ্গে সম্পর্ক যেন আরও বেশি বিস্তার লাভ করতে পারে সেই চেষ্টাই থাকবে। সেই সুযোগটা আছে। কারণ চীন অনেক কঠোর হয়েছে। এখন বাংলাদেশের সেখানে প্রবেশ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস (জিএসপি) বা অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে রফতানি বহুমুখীকরণের দিকে নজর দেবো। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে শুল্ক আরোপ নিয়ে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্র সফরে আমাদের যাওয়ার প্রথম উদ্দেশ্য হলো বাজেট সাপোর্ট ও কতগুলো প্রজেক্ট ওরিয়েন্টেড বিষয়ে বিশ্বব্যাংক, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং ওপেক ফান্ড আছে, তাদের সঙ্গে আলাপ করব। অর্থায়ন নিয়ে সেখানে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আমাদের দুটি চুক্তি হতে পারে এবং ওপেক ফান্ডের সঙ্গেও হতে পারে। ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা ইউএসএর সঙ্গে যতটুকু সম্ভব সরকারের লেভেল, মাল্টিল্যাটারাল লেভেল বা বাইলেটারাল লেভেল ছাড়াও প্রাইভেট খাতের সঙ্গে যোগাযোগ করবো। যেমন এনার্জি খাতের দুই-একজন বিনিয়োগকারীর সঙ্গে আলাপ হতে পারে। আমরা এনার্জি আনবো কিনা সে বিষয়ে। কারণ ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে তো আমাদের ইউএস থেকে আমদানির বিষয়ে একটু প্রণোদনা দিতে হবে। আমরা রফতানি যা করি তার থেকে কম আমদানি করি। এজন্য বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। তিনি বলেন, আমরা ওখানে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশনের সঙ্গেও আলাপ করবো। তারা কক্সবাজারে কাজ করছে। এছাড়া ইউএস ট্রেজারির সঙ্গে রূপপুর প্রকল্পে পেমেন্টের বিষয়ে আলোচনা হবে। এরইমধ্যে আমরা আলাপ করেছি। নিষেধাজ্ঞা আছে, তারপরও এ প্রকল্প নিয়ে বিশেষ কিছু করা যায় কিনা সে বিষয়ে আলোচনা হবে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এর বাইরে আমি সেখানকার বিজনেস কাউন্সিলের সঙ্গে আলাপ করবো। সেটা আমাদের এফবিসিসিআইয়ের মতো একটা সংগঠন। সেখানে বিশ্বের শীর্ষ ৭০টি কোম্পানি রয়েছে। তাদের কাছে এফডিআর ও আমাদের অর্থনীতির বিষয়ে শুনবো। একইসঙ্গে বেসরকারি বিনিয়োগকারী আটলান্টিক কাউন্সিলের সঙ্গেও যোগাযোগ করবো। জিএসপি সুবিধা একদিনে ইমপোজ করা হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, জিএসপির সঙ্গে লেবার ল’ ট্রেড ইউনিয়নের বিষয় রয়েছে। বাংলাদেশের গার্মেন্টেসের কোয়ালিটি ভালো। তবে মোটকথা হলো জিএসপি ইস্যুতে তাদের সিনেটে বিরাট একটা ইমপ্রেশন কাজ করে। ওরা বাংলাদেশ সম্পর্কে কে কী কাজ করছে, কী রিফর্ম করছি এগুলো দেখে।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ২৯৩তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের বোর্ড রুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান। ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান, এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুল কুদ্দুছ, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. সাইফুল আলম পিএইচডি, এফসিএমএ, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. রাগিব আহসান এফসিএ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া সভায় উপস্থিত ছিলেন।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম উদ্বোধন

ইসলামী ব্যাংক ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ একাডেমি (আইবিটিআরএ) আয়োজিত ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এ প্রোগ্রামের উদ্বোধন করা হয়। ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (চলতি দায়িত্ব) মো. ওমর ফারুক খান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও আইবিটিআরএর মহাপরিচালক কেএম মুনিরুল আলম আল-মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মিজানুর রহমান মিজি, এনএসএম রেজাউর রহমান, মো. রেজাউল ইসলাম ও মুহাম্মদ নুরুল হোসাইন কাউসার। বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১২ জন শিক্ষার্থী ৬০ দিনব্যাপী এ প্রোগ্রামে অংশ নিচ্ছেন।

সোনার দামে নতুন রেকর্ড

দেশের বাজারে সোনার দাম বেড়ে নতুন রেকর্ড করেছে। এবার প্রতি ভরিতে ভালো মানের সোনার (২২ ক্যারেট) দাম বেড়েছে তিন হাজার ৩৩ টাকা। এখন থেকে দেশের বাজারে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের সোনা বিক্রি হবে এক লাখ ৬৫ হাজার ২০৯ টাকায়। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে সোনার নতুন এ দর কার্যকর হবে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার এ দাম বৃদ্ধির তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী (পিওর গোল্ড) সোনার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সে কারণে সোনার দাম সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাজুস। নতুন মূল্য অনুযায়ী, ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম বেড়ে এক লাখ ৫৭ হাজার ৬৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ৩৫ হাজার ১৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ১১ হাজার ৬৫৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অপরিবর্তিত আছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী, বর্তমানে ২২ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি দুই হাজার ৫৭৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি দুই হাজার ৪৪৯ টাকা এবং ১৮ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি দুই হাজার ১১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম এক হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আসছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট, উপস্থাপন ২ জুন

চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম নির্ধারণ করে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আগামী ২ জুন নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সাহেলউদ্দিন আহমেদ। সম্প্রতি কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল ও বাজেট ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। সূত্রে জানা গেছে, সংসদ না থাকায় এবার সংসদে বাজেট প্রস্তাব উপস্থান করা হবে না। অর্থ উপদেষ্টা টেলিভিশনে নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করবেন। ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগেই বাজেট দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ কারণে ২ জুন বাজেট ঘোষণার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাধারণত আগের অর্থবছরগুলোতে বৃহস্পতিবার বাজেট দেওয়া হতো, এবার সোমবার ঘোষণা হবে। বাজেট ঘোষণার পর আগের রীতি অনুযায়ী অর্থ উপদেষ্টা বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন। সূত্রটি জানিয়েছে, সাধারণত প্রতি অর্থবছরেই বাজেটের আকার আগের অর্থবছরের তুলনায় বড় রাখা হয়। তবে এবার বাজেট ঘাটতি কমিয়ে রেখে বাজেট ছোট করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নতুন অর্থবছরের বাজেটে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে। বাজেটের আকার কমানো হলেও সমাজে বৈষম্য কমানোর পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির চাপে নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বস্তি দিতে সামাজিকীকরণ সুরক্ষা কর্মসূচিতে উপকারভোগী ও কিছু ক্ষেত্রে ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ থাকছে নতুন অর্থবছরের বাজেটে। একই সঙ্গে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। আগামী অর্থবছরের জন্য সরকার জিডিপির প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৫ শতাংশ ধরতে পারে। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগামী অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায় সরকার। চলতি অর্থবছরেও একই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। তবে গত মার্চ মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে ২ হাজার কোটি টাকা খরচ বেড়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করায় বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা খরচ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। বুধবার (১৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চড়া শুল্ক আরোপের চ্যালেঞ্জ ও সরকারের করণীয় বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।উপদেষ্টা বলেন, ‘ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করায় বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশের খরচ বেড়েছে। টাকার হিসাবে যেটি প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। এটি কমিয়ে আনতে নানা ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার।’ভারত, পাকিস্তান বা চীন কোনো বিষয় নয়, সব দেশের সঙ্গেই সরকার বাণিজ্য বাড়াতে চায় জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যে একপেশে শুল্ক আরোপ করেছে, সেটি অবশ্যই দুশ্চিন্তার বিষয়। তবে তিন মাসের জন্য এই শুল্ক আরোপ স্থগিত রেখেছে। এ সময়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।’শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি দ্রুত কমার কোনো সুযোগ নেই। তবে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সরকার কাজ করছে। অর্থনৈতিক সক্ষমতা এবং বাণিজ্যিক সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে এই সমস্যার সমাধান করা হবে।’সরকারি গুদামে চালের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘বাজারে নতুন ধানের চাল আসতেই আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে চালের দাম কমে আসবে।’

ঈদের পরও ইতিবাচক রেমিট্যান্স, ১২ দিনে এল ১২ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা

ঈদুল ফিতরের পরও রেমিট্যান্সের ইতিবাচক প্রবাহ অব্যাহত। চলতি মাস এপ্রিলের প্রথম ১২ দিনেই এসেছে ১০৫ কোটি ২৩ লাখ ৬০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ১২ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকার বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, হুন্ডির দৌরাত্ম্য কমেছে, বন্ধ হয়েছে অর্থপাচার। এছাড়া খোলাবাজার এবং ব্যাংকে রেমিট্যান্সের ডলারে একই রকম দাম পাচ্ছেন প্রবাসীরা। আর এসব কারণে বৈধপথে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন। এতে বাড়ছে দেশের রেমিট্যান্সের পরিমাণ, একইভাবে বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, চলতি মাস এপ্রিলের প্রথম ১২ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৯ কোটি ৬৮ লাখ ৪০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে একটির মাধ্যমে (কৃষি ব্যাংক) এসেছে ৬ কোটি ২৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫৯ কোটি ৩ লাখ ডলার। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৩ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। আলোচিত সময়ে ১০ ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে সিটিজেন ব্যাংক, আইসিটি ইসলামী ব্যাংক এবং পদ্মা ব্যাংক। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে সিটি ব্যাংক এনএ, হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক। এর আগে মার্চের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন (৩২৯ কোটি ডলার)। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৪০ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে প্রতিদিন এসেছে প্রায় ১০ দশমিক ৬১ কোটি ডলার বা ১ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছরের মার্চের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১.৭১ বিলিয়ন বা ১৭১ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২০২৫ সালের মার্চে ১৫৮ কোটি ডলার বেশি এসেছে। আর চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৭৮ কোটি ডলার। যা গত অর্থবছরে একই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ৭০৮ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৭০ কোটি ডলার বেশি এসেছে। গত ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে। সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়লো মার্চ মাসে। আর এ নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা ৮ মাস দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আর সবশেষ মার্চে এসেছে ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়।

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ব্যবসা পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত

দেশের অন্যতম প্রধান শরীয়াহ্ভিত্তিক আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসির শাখাসমূহের ব্যবসা পর্যালোচনা সভা মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের পর্ষদ চেয়ারম্যান খাজা শাহরিয়ার প্রধান অতিথি হিসেবে সভায় উপস্থিত ছিলেন।সভায় পর্ষদ পরিচালক মোঃ শাহীন উল ইসলাম, মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ, অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ, মোহাম্মদ আশরাফুল হাছান এফসিএ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মোঃ রাফাত উল্লা খান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন, মোঃ ফজলুর রহমান চৌধুরী, মোঃ আসাদুজ্জামান ভূঞা, মোহাম্মদ হোসেন এবং এস.এম আবু জাফর সহ ব্যাংকের কর্পোরেট ও এডি শাখাসমূহের ব্যবস্থাপকবৃন্দ, জোনাল হেডগণ এবং শীর্ষ নির্বাহীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে ব্যাংকের চেয়ারম্যান খাজা শাহরিয়ার কর্পোরেট সুশাসনের উপর জোর দিয়ে শাখা ব্যবস্থাপকগণকে ব্যবসার বিভিন্ন ক্ষেত্রে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রতি মনোযোগী হওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, আমানত ও মান সম্পন্ন বিনিয়োগ বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। এছাড়া তিনি শ্রেণীকৃত বিনিয়োগ কমিয়ে আনার মাধ্যমে কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতকরণের বিষয়ে সকলকে আরও সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানান। শরীয়াহ্ পরিপালনে একাগ্র নিষ্ঠা এবং গ্রাহকসেবায় সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে উন্নত ও দ্রুততর সেবা প্রদানের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

ভারতসহ তিন দেশ থেকে যেসব পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা এনবিআরের

প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে বেশ কিছু পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এ তথ্য নিশ্চিত এনবিআর।গত রোববার (১৩ এপ্রিল) প্রকাশিত গেজেটের মাধ্যমে এই নির্দেশনা জারি করে এনবিআরের কাস্টমস উইং।এছাড়া সুতা, গুঁড়া দুধ, টোব্যাকো, নিউজপ্রিন্ট, পেপারসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে সীমাবদ্ধতা জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। কাস্টমস আইন, ২০২৩-এর ধারা ৮ এর উপ-ধারা (১) এর ক্ষমতাবলে এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নেপাল ও ভুটানে উৎপাদিত এবং প্রক্রিয়াজাত সুতা ও আলু ছাড়া অন্য সব পণ্য আমদানি করা যাবে। তবে ভারতের ক্ষেত্রে আরও বেশি নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ডুপ্লেক্স বোর্ড, নিউজপ্রিন্ট, ক্রাফট পেপার, সিগারেট পেপার, মাছ, সুতা, আলু, গুঁড়া দুধ, টোব্যাকো, রেডিও-টিভি পার্টস, সাইকেল ও মোটরপার্টস, ফরমিকা শিট, সিরামিকওয়্যার, স্যানিটারিওয়্যার, স্টেইনলেস স্টিলওয়্যার, মার্বেল স্ল্যাব ও টাইলস এবং মিক্সড ফেব্রিক্স-এসব পণ্য ভারত থেকে আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা এবং অবৈধ রি-এক্সপোর্ট বা রিরাউটিং রোধ করতেই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে টেক্সটাইল, কাগজ ও সিরামিক পণ্যখাতে দেশীয় শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা রক্ষা করাই মূল উদ্দেশ্য। তবে মূসক নিবন্ধিত বিড়ি উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো কাঁচামাল হিসেবে তামাক ডাটা আমদানি করতে পারবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে।

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন

নতুন শিল্প ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বাড়ানোর সরকারি সিদ্ধান্তের প্রভাবে দেশের শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ভালো, মন্দ সব খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়েছে। ফলে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হলো। এর আগে শিল্প গ্যাসের মূল্য বাড়ানো হচ্ছে এমন গুঞ্জনে রোববার (১৩ এপ্রিল) শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হয়। শেয়ারবাজারের লেনদেন শেষ হওয়ার পর শিল্প ও ক্যাপটিভের নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিএসইসি)। এরপর মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই দরপতনের তালিকায় নাম লেখায় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। লেনদেনের শেষদিকে শেয়ারবাজারে দরপতনের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে এক প্রকার ঢালাও দরপতন হয় শেয়ারবাজারে। এতে সবকটি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলে ডিএসইতে ৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৫৫টির। আর ৪৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ১৩২টির দাম কমেছে। আর ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ১১টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৬৭টির দাম কমেছে এবং ৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৬টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর ৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ২৪টির এবং ৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সার্বিকভাবে দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৭ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৩২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৫৫ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এ পরিস্থিতি নিয়ে ডিএসইর একাধিক সদস্য বলেন, গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে এই গুঞ্জন রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার আগেই ছড়িয়ে পড়ে। এতে রোববার শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। এরপর গুঞ্জন সত্য প্রমাণিত হয়, বিকেলে বিএসইসি’র ঘোষণার মধ্য দিয়ে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর কারণে শিল্পের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে নতুন বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই আতঙ্কের কারণেই শেয়ারবাজারে দরপতন হচ্ছে। মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৪৬ কোটি ১২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪১৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৩১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ২১ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকার। ৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে শাইনপুকুর সিরামিক। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বিচ হ্যাচারি, এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, উত্তরা ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ন্যাশনাল টিউবস, রিলায়েন্স ওয়ান দ্য ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড এবং ইস্টার্ন ব্যাংক। অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১০০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৫ কোটি ২ লাখ টাকা।

ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর পরিচালনা পরিষদের বোর্ড সভা মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মোঃ আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক মোঃ আবদুল জলিল, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (চলতি দায়িত্ব) মোঃ ওমর ফারুক খান, শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ আলতাফ হুসাইন ও মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

বন্ধ করা হলো ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি

ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করা হয়েছে। বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুবিধা বাতিল করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে স্থলপথ ছাড়া সমুদ্রপথে বা অন্য কোনো পথে সুতা আমদানি করা যাবে। মঙ্গলবার এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। গত বছরের ২৭ আগস্ট জারি করা প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে নতুন এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এই আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হয়। ওই সব স্থলবন্দর দিয়ে মূলত ভারত থেকে সুতা আমদানি হতো। এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বস্ত্র খাতের অন্যতম কাঁচামাল সুতা আমদানি বন্ধের দাবি জানায় বস্ত্রশিল্পমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। এরপর গত মার্চ মাসে এক চিঠিতে পোশাকশিল্পে দেশে তৈরি সুতার ব্যবহার বাড়াতে স্থলবন্দর দিয়ে পোশাকশিল্পের সুতা আমদানি বন্ধ করার জন্য এনবিআরকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। তখন ট্যারিফ কমিশন থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে দেশীয় টেক্সটাইল শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে সব সীমান্তসংলগ্ন সড়ক ও রেলপথ এবং স্থলবন্দর ও কাস্টম হাউসের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সুতা কাউন্ট নির্ণয়ে যথাযথ অবকাঠামো প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সমুদ্রবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুপারিশ করা হয়। পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করেন। তবে স্থলপথ ছাড়া সমুদ্রপথে বা অন্য কোনো পথে সুতা আমদানি করা যাবে। জানা গেছে, চীন, তুরস্ক, উজবেকিস্তান এবং দেশে উৎপাদিত সুতার দাম প্রায় একই রকম হলেও স্থলবন্দর দিয়ে আসা ভারতীয় সুতার দাম অনেক কম থাকে। অর্থাৎ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা সুতা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ঘোষিত দামের চেয়ে অনেক কম দামে আসে। এতে দেশের সুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। জানা গেছে, ভারতের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে উৎপাদিত সুতা কলকাতায় গুদামজাত করা হয়। এরপর সেখান থেকে সুতা বাংলাদেশে পাঠানো হয়। এসব সুতা তুলনামূলক কম দামে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এ কারণে দেশি সুতার পরিবর্তে স্থলবন্দর দিয়ে আসা সুতা বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। এ কারণে দেশের বস্ত্রশিল্পকারখানাগুলো বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছে বলে দাবি করেছিল বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ)।

সোনালী ব্যাংকের নতুন ডিএমডি হলেন নূরুন নবী

সোনালী ব্যাংক পিএলসির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) হিসেবে যোগদান করেছেন মো. নূরুন নবী। ১০ এপ্রিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তিনি একই ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজার থেকে ডিএমডি পদে পদোন্নতি লাভ করেন। মো. নূরুন নবী ১৯৯৫ সালে সোনালী ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরুকরেন। দীর্ঘ তিন দশকের কর্মজীবনে তিনি বিভিন্ন শাখার ব্যবস্থাপক ও প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন ডিভিশন প্রধান হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতা ও সাফল্যের সাথে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি সোনালী ব্যাংক পিএলসির ইন্ডিয়া অপারেশন এবং সোনালী ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে সফলতা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। মো. নূরুন নবী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি দি ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ হতে ডিএআইবিবি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি দেশ-বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও কর্মশালায়অংশ নেন। মো. নূরুন নবী ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা এ, বি এম খলিলুর রহমান ঠাকুরগাঁও জেলার একজন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ছিলেন।

সয়াবিন তেলের দাম বাড়ল লিটারে ১৪ টাকা

তিন দফা বৈঠকের পর প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা বাড়াল সরকার। এতে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৭৫ থেকে বেড়ে হয় ১৮৯ টাকা। মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভোজ্যতেলের আমদানি ও সরবরাহসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এতে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, ভোজ্যতেল উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারাসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। নতুন সিদ্ধান্ত বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল কিনতে খরচ হবে ১৮৯ টাকা। এর আগে যা ছিল ১৭৫ টাকা। পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২২ টাকা, যা ছিল ৮৫২ টাকা। বোতলজাত তেলের পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি লিটার ১৬৯ টাকা, যা ছিল ১৫৭ টাকা। এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর সর্বশেষ বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৮ টাকা এবং খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ১৩ টাকা বাড়াতে চেয়ে ভোজ্যতেল পরিশোধন কারখানাগুলোর সমিতি গত ২৭ মার্চ বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনে চিঠি দেয়। চিঠিতে বলা হয়, ভোজ্যতেলের আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৩১ মার্চ। দাম বাড়াতে চাওয়ার কারণ এটাই। দাম বাড়ানো নিয়ে গত সপ্তাহে সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি সরকার। অবশেষে আজ সে সিদ্ধান্ত আসলো।

চীনের বিনিয়োগকারীদের এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে

চীনের দুইটি কোম্পানির সাথে বাংলাদেশের দুইটি কোম্পানির বিনিয়োগ সমোঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ উপলক্ষে সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে এফবিসিসিআইএর সভা কক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ইউনান পিংউই সোলার কোম্পানি লিমিটেড ও বাংলাদেশের ইয়াং বাংলা ম‍্যানুফাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড যৌথভাবে বাংলাদেশে সোলার ভিত্তিক বিদ‍্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প স্থাপন করবে। এ প্রকল্পে চীনা বিনিয়োগ কারীরা প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এছাড়া যৌথ উদ‍্যোগে কালি উৎপাদন শিল্প স্থাপনের জন‍্য সিনোগ্লোবাল কর্পোরেশন ও সাংহাই এক্সইউএন কোম্পানি লিমিটেডের মধ‍্যে বিনিয়োগ সমোঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। আমদানি বিকল্প কালি উৎপাদন প্রকল্প স্থাপনে প্রায় ৫ মিলিয়ন ডলার খরচ হবে। সভায় চীনের সংশ্লিষ্ট কোম্পানির প্রতিনিধি এক্সইউ ওয়াং, লীন জিন শীন, ফান জং, হ’সহ অন‍্যান‍্য চায়নীজ ব‍্যবসায়িরা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশী উদ‍্যোক্তাদের মধ‍্যে আতিকুর রহমান, আবুল কালাম আজাদ উপস্থিতি ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এফবিসিসিআইএর প্রশাসক হাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মো. আলমগীর হোসেন, সাবেক পরিচালক ও এফবিসিসিআইএর সহায়ক কমিটির সদস‍্য গিয়াসউদ্দীন চৌধুরী খোকন, এমএসসি শিপিং লাইন্সের কান্ট্রি হেড ইঞ্জিনিয়ার হারুনুর রশিদসভায় আলোচকরা চীনের বিনিয়োগ কারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন‍্য ধন্যবাদ জানান এবং চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক স্মরণকালের সবচেয়ে ভালো সময় পার করছে। পাশাপাশি বর্তমান সরকার বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে বিভিন্ন নীতি সহায়তা ও উদ‍্যোগ গ্রহণ করেছে। হাফিজুর রহমান বলেন, ‘চীনের বিনিয়োগকারীদের এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।’