ইউনিয়ন রাজি, সময় চায় এক্সিম: পাঁচ ইসলামী ব্যাংক একীভূতকরণের পথে
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৫:২৪ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পর এবার একীভূতকরণের প্রস্তাবে সম্মতি দিল ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। তবে একই প্রক্রিয়ায় নিজেদের অন্তর্ভুক্ত না করে ঘুরে দাঁড়াতে অতিরিক্ত সময় চাইছে এক্সিম ব্যাংক। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে পাঁচটি ইসলামী ব্যাংককে একীভূত করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ এগিয়ে নিচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বুধবার আলাদা বৈঠক করেছে ইউনিয়ন ও এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং বিকেলে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
বুধবারের বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। চারজন ডেপুটি গভর্নর ও রেজল্যুশন বিভাগের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ব্যাংক দুটির আর্থিক সূচক তুলে ধরে একটি উপস্থাপনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ইউনিয়ন ব্যাংকের প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকার ঋণের ৯৮ শতাংশই খেলাপি। অন্যদিকে এক্সিম ব্যাংকের ৫২ হাজার কোটি টাকার প্রায় অর্ধেক ঋণ খেলাপি।
ইউনিয়ন ব্যাংকের বৈঠকে অংশ নেন চেয়ারম্যান এম ফরিদ উদ্দীন ও এমডি হুমায়ুন কবির। আর এক্সিম ব্যাংকের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন ও ভারপ্রাপ্ত এমডি আব্দুল আজিজ। বৈঠকে ইউনিয়ন ব্যাংক একীভূতকরণের বিষয়ে ইতিবাচক মত জানালেও এক্সিম ব্যাংক সময় চায়। এ সময় গভর্নর তাদের সহায়তার আশ্বাস দেন। জবাবে এক্সিম চেয়ারম্যান বলেন, “স্যার, আপনি দোয়া করেন। আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব।”
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইউনিয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দীন বলেন, “আমানতকারীরা প্রতিনিয়ত টাকা নিতে এসে পাচ্ছেন না। তাই যত দ্রুত এসব ব্যাংক নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে ততই ভালো। একীভূত, পুনর্গঠন বা অন্য যেকোনো সিদ্ধান্ত জরুরি।” তিনি আরও দাবি করেন, ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপ প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে, যার বেশিরভাগ ঋণগ্রহীতার হদিস মিলছে না।
অন্যদিকে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন জানান, তারা সূচক উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তের দিকেই এখন তাদের দৃষ্টি।
সূত্র জানায়, এক্সিম ব্যাংক পুনরুদ্ধারের জন্য যে পরিকল্পনা দিয়েছে তা সংশোধন করে আরও সুনির্দিষ্টভাবে উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে, আমানতকারীর অর্থ ফেরত, খেলাপি ঋণ আদায়, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নেওয়া ৮,৫০০ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ এবং মূলধনের ঘাটতি পূরণের পরিষ্কার রূপরেখা দিতে হবে।
এক্সিম ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, “ব্যাংককে ভালো অবস্থায় আনতে অন্তত দুই বছর লাগবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সময় দেবে কিনা সেটিই এখন মূল প্রশ্ন।”
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, দুর্বল পাঁচ ইসলামী ব্যাংককে একীভূত করে একটি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের মাধ্যমে আমানতকারীর অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফেরানোই মূল লক্ষ্য।