
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় জামায়াত আমিরের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ
ইরানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ ও নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। সোমবার (২৩ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জামায়াত আমির বলেন, ‘গত ১৩ জুন ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র ২১ জুন রাতে ইরানে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে। একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের ওপর এ জাতীয় হামলা আন্তর্জাতিক আইন, রীতি-নীতি ও জাতিসঙ্ঘ সনদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ হামলা অযৌক্তিক ও অবৈধ। এই হামলার ফলে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আমরা এই অন্যায় ও আগ্রাসী হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি ও নিন্দা জানাচ্ছি।’ বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি মার্কিন সিনেটের ইন্টেলিজেন্স কমিটির শুনানিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড বলেছেন, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখনো বিশ্বাস করে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না। অথচ ইরানের পরমাণু অস্ত্র বানানোর মিথ্যা অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর হামলা করেছে। মিথ্যা ও অনুমান নির্ভর তথ্যের উপর ভিত্তি করে ইরানের মত একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের ওপর এই আগ্রাসী হামলা বিশ্ববাসীকে হতবাক করেছে। এই হামলা বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি। এর ফলে গোটা মধ্যেপ্রাচ্যে সঙ্ঘাত-সংঘর্ষ আরও বাড়বে।’ মধ্যপ্রাচ্যের এই সংঘাত নিরসনে জাতিসংঘকে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ইরানের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে অবিলম্বে মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের বেপরোয়া, অন্যায়, অযৌক্তিক ও আগ্রাসী হামলা বন্ধ করার লক্ষ্যে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমরা জাতিসঙ্ঘসহ বিশ্ববাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’ প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন থেকে লাগাতার ইরানের সামরিক-বেসামরিক বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা শুরু করেছে ইসরাইল। ইরানও পালটা জবাব দিতে ইসরাইলের জুড়ে প্রায় পাঁচশর কাছাকাছি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এর মধ্যে ২১ জুন রাতে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বাংকার বাস্টার বোমা নিক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বোমারু বিমান। ইসরাইল এবং যুক্তরাষ্ট্রের এমন আগ্রাসী আচরণে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ব্যাপকভাবে ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

গুলশানের ঠিকানায় স্মার্টকার্ড পেলেন জুবাইদা রহমান
ভোটার হওয়ার তথ্য দিয়ে স্মার্টকার্ড সংগ্রহ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাকে স্মার্টকার্ড সরবরাহ করা হয়েছে। ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, চলমান বাড়ি বাড়ি ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে তাকে ভোটার করতে তথ্য নেওয়া হয়। এরই মধ্যে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবং নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। তবে ভোটার তালিকায় নাম উঠবে হালনাগাদ কার্যক্রম শেষ হলে। এদিকে ইসি সূত্রগুলো জানিয়েছে, তিনি ভোটার হচ্ছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসার ঠিকানায়। ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা স্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ করা হলেও তিনি ভোটার হচ্ছেন গুলশান-২ নম্বরের ওই ঠিকানায়। ২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা কার্যক্রম শুরু হলেও সে সময় তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে ছিলেন তিনি। গত ৬ মে বিএনপির চেযারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফিরলেও ৫ জুন ফের লন্ডরে ফিরে যান জুবাইদা রহমান। সম্প্রতি ইসি কর্মকর্তারা তার তথ্য সংগ্রহ করেন।

নুরুল হুদার হেনস্তায় দলের কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা: সালাহউদ্দিন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার ‘মব’ ঘটনার সঙ্গে দলের কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে গণমাধ্যমকে এ কথা জানান তিনি। সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা মব কালচারে বিশ্বাস করি না, আমরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য অবিরাম সংগ্রাম করে যাচ্ছি। আমরা চাই দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং আদালতের রায় বাস্তবায়ন হবে,বিচার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা থাকবে। সুতরাং সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া এবং তার বিচার প্রক্রিয়ায় আইনগতভাবে যথাযথভাবে পরিচালিত হবে এটা আমরা প্রত্যাশা করি। তিনি বলেন, তবে তার ওপরে যে অবমাননাকর ব্যবহার করা হয়েছে এটা আমরা সমর্থন করি না। এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। যদি বিএনপির কোনো নেতাকর্মী এই ঘটনায় জড়িত থাকে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আমরা নেব, এটা আমাদের অবস্থান। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা চাই, কোনো ব্যক্তি যতবড় অপরাধীই হোন না কেন, তার আইনি এবং সাংবিধানিক অধিকার যেন ভোগ করার অধিকার অক্ষুণ্ন থাকে; যতবড় অপরাধীই হোন না কেন, তার আইনি ও সাংবিধানিক অধিকার যেন ক্ষুণ্ন না হয়। সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদার দলীয়করণের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য এবং নির্বাচনী ব্যবস্থাকে পুরোপুরি বিনষ্ট করে দেওয়ার জন্য যে কজন ব্যক্তি দায়ী তার মধ্যে নূরুল হুদা অন্যতম। শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনকে দীর্ঘায়িত করার জন্য কয়েকটি রাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে পুরোপুরি কলুষিত এবং ধ্বংস করার জন্য আরও কয়েকজন ব্যক্তি দায়ী। যেমন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। তবে আমরা কখনই সেই অপসংস্কৃতিতে বিশ্বাস করি না, আমরা মব কালচারে বিশ্বাস করি না। এর আগে, ২২ জুন রাতে উত্তরার বাসা থেকে সাবেক সিইসি কেএম নূরুল হুদাকে জনতা ঘেরাও করে তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়। তাকে অবমাননা করার এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ঢাকা-১৫ ছাড়াও আরেক আসনে প্রার্থী হতে পারেন জামায়াত আমির
আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা হিসাব-নিকাশ চলছে। এরই অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময় ধরেই সব আসনে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে অন্তত ২৯৬ আসনে প্রাথমিকভাবে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা ‘চূড়ান্ত’ করেছে দলটি। ধাপে ধাপে আসনভিত্তিক সম্ভাব্য এসব প্রার্থীর নাম অনানুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করছে জামায়াত। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যে ঘোষিত প্রার্থীরা নিজ নিজ আসনে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিয়ে নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। এদিকে দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান ঢাকা-১৫ আসন থেকে আগামী নির্বাচনে লড়তে পারেন বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে এই আসনে নির্বাচনি প্রচারণা চালিয়েছেন জামায়াত আমির। চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল রিকশায় করে নির্বাচনি গণসংযোগ করতে দেখা গেছে ডা. শফিকুর রহমানকে। এর আগে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনেও এই আসনটিতে প্রার্থী হয়েছিলেন ডা. শফিকুর রহমান। অন্যদিকে ঢাকা-১৫ ছাড়াও জন্মস্থান মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে প্রার্থী হতে পারেন জামায়াত আমির। দলীয় বিশ্বস্ত সূত্রে এমনটি জানা গেছে। তবে এ আসনটিতে জামায়াতে ইসলামী ইতোমধ্যে মৌলভীবাজার জেলা আমির ইঞ্জিনিয়ার সাহেদ আলীকে প্রার্থী ঘোষণা করলেও দলটির কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমানের বাড়ি কুলাউড়া উপজেলায় হওয়ায় কয়েক দফা সফর করছেন তিনি। হিন্দু সম্প্রদায় ও চা শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন জামায়াত আমির। এ ছাড়াও তৃণমূল পর্যায়ের বিভিন্ন সমাবেশে ও পথসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়েছেন। এতে ধারণা করা হচ্ছে, এ আসনেও প্রার্থী হতে পারেন ডা. শফিকুর রহমান। মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যক্ষ ইয়ামির আলী জানান, ‘কে কোথায় প্রার্থী হবেন এ সিদ্ধান্ত নেবে দলের নির্বাচনি মনিটরিং বোর্ড। তবে মৌলভীবাজার-২ কুলাউড়া আসনটি কেন্দ্রীয় জামায়াত আমিরের জন্মস্থান হওয়ায় এলাকার মানুষের দাবি এই আসন থেকে যেন জামায়াত আমির নির্বাচনে অংশ নেন।’

বাহাত্তরের সংবিধানের ৪ মূলনীতি বাতিল চায় এনসিপি
সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার যে চারটি মূলনীতি রয়েছে সেগুলো বাদ দেওয়ার পক্ষে নিজেদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।দলটি বলছে, ৭২-এর ‘মুজিববাদী’ মূলনীতি তারা রাখার পক্ষে না। এ চারটি মূলনীতি বাদ দিতে হবে। এগুলো বাদ দিয়ে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত চার মূলনীতি রাখার ক্ষেত্রে তাদের কোনো আপত্তি নেই। রোববার (২২ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন এনসিপি নেতারা। রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতির মধ্যে তিনটি বাদ দেওয়ার সুপারিশ করে গত ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুপারিশ-সম্বলিত প্রতিবেদন জমা দেয় সংবিধান সংস্কার কমিশন। যেখানে ‘গণতন্ত্র’ বহাল রেখে রাষ্ট্র পরিচালনার নতুন আরও চারটি মূলনীতির সুপারিশ করে কমিশন। বর্তমানে সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার যে চার মূলনীতি রয়েছে সেগুলো হলো- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাহাত্তরে যে সংবিধান প্রণীত হয়েছিল, তাতে রাষ্ট্র পরিচালনার এ চারটি মূলনীতি গৃহীত হয়। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জাবেদ রাসেল সাংবাদিকদের বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনের একটা প্রস্তাব ছিল যে, আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের যে মূলনীতি সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার, এর সঙ্গে গণতন্ত্রকে যুক্ত করে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ ছিল, চারটি মূলনীতি যুক্ত থাকবে। সেটা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা মতানৈক্য দেখা গেল। বর্তমানের চার মূলনীতির মধ্যে শুধু গণতন্ত্র রাখা হয়েছে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত নতুন পাঁচ মূলনীতির মধ্যে। সুপারিশ করা নতুন পাঁচটি মূলনীতি হলো- সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র। জাবেদ রাসেল বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছি, ৭২-এর মুজিববাদী মূলনীতি আমরা রাখার পক্ষে না। এ চারটি মূলনীতি বাদ দিতে হবে। এটি বাদ দিয়ে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত মূলনীতিগুলো রাখার ক্ষেত্রে আমাদের আপত্তি নেই। তিনি বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল তাদের আদর্শিক জায়গা থেকে এ ব্যাপারে একমত হতে পারেনি। আমরা সেক্ষেত্রে বলেছি, আমাদের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান-পরবর্তী যে স্পিরিট তার বিপরীতে গিয়ে আলোচনা করার কোনো মানে হয় না। এনসিপির এই নেতা বলেন, আমাদের অবস্থান স্পষ্ট- ১৯৭২ সালের মূলনীতি আমরা বাতিল চাই। তবে ধর্মনিরপেক্ষতার পরিবর্তে যদি অন্য কোনো শব্দ এখানে আনা হয় অথবা অন্য কোনো মূলনীতির বিষয়েও আমরা ওপেন আছি। কিন্তু আমাদের মূল পয়েন্ট হচ্ছে ৭২-এর চার মূলনীতি বাদ দিতে হবে। এসময় প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে ঐক্য কমিশনের সংলাপে মতানৈক্যের প্রসঙ্গ টেনে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা সাংবাদিকদের জানান, জাতীয় ঐকমত্যের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সংক্রান্ত বিষয়ে ছাড় দিতেও রাজি আছে তাদের দল।

এভাবে চললে কিয়ামত পর্যন্ত শতভাগ ঐকমত্য হবে না: নুর
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে কোনোভাবেই শতভাগ ঐক্যের জায়গা তৈরি হবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, ঐকমত্যের বিষয়ে যেভাবে আলোচনা চলছে, তাতে কিয়ামত পর্যন্তও শতভাগ ঐকমত্য হবে না। মূল বিষয়গুলো গত তিনদিনের মতো আজকেও অমীমাংসিত। রোববার (২২ জুন) বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার বিরতিতে ভিপি নুর এসব কথা বলেন। ঐকমত্যের স্বার্থে নিজেদের অনেক প্রস্তাব থেকে সরে এসেছেন বলে জানান গণঅধিকার পরিষদের এই সভাপতি। তিনি বলেন, অনেকগুলো বিষয়ে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসে একমত হচ্ছি আমরা। কিন্তু এখানে কিছু কিছু দল একেবারে নিজেদের অবস্থানে অনড়। দুই থেকে ৩টি দলকে তাদের পার্টির কনফার্মেশন নিতে হচ্ছে, দল থেকে ক্লিয়ারেন্স নিতে হচ্ছে। যদি এভাবে চলতে থাকে, কেয়ামত পর্যন্ত কোনো ঐক্যের সম্ভাবনা দেখি না। নুরুল হক নুর বলেন, কোনোভাবেই শতভাগ ঐক্যের জায়গা তৈরি হবে না। এ জন্য আমরা বারবার বলেছি, কতটুকু পর্যন্ত আলোচনায় একমত হলে তাকে ঐকমত্য বলবেন কিংবা কতটি দল একমত থাকলে সেটাকে ঐক্য বলবেন- এটার একটা মাপকাঠি ঐকমত্য কমিশনকে নির্ধারণ করা দরকার। আমরা ঐকমত্য কমিশনকে বলেছি, আপনারা এখানে রেফারির ভূমিকায় আছেন, সবার আলাপ-আলোচনা শুনে আপনাদের একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে।

শাপলা পেতে আইনগত সমস্যা দেখি না: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, শাপলা পেতে আইনে কোনো ধরনের সমস্যা নাই আমরা দেখেছি। তাই আমরা আবেদন করেছি। কোনো ধরনের আইনগত জটিলতা আমরা দেখি না। রোববার (২২ জুন) নিবন্ধন আবেদনের সকল কাগজপত্র জমা দেওয়া শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিনসহ একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিল। নাহিদ ইসলাম বলেন, আজকে ইসিতে দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য সকল শর্ত পূরণ করে কাগজপত্র দাখিল করেছি। গঠনতন্ত্রসহ আমরা আবেদন জমা দিয়েছি। আমরা তিনটি মার্কার জন্য আবেদন করেছি শাপলা, কলম ও মোবাইল। আমরা আশাবাদী শাপলা মার্কা পাব এবং তা নিয়ে জনগণের মাঝে কাজ করব। জাতীয় প্রতীক আপনারা মার্কা হিসেবে চাইলেন; এটা কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের যেসব আইন রয়েছে; সেই আইনগুলো আমরা পর্যালোচনা করেছি। আইনে কোনো ধরনের সমস্যা নাই। জাতীয় ফল কাঁঠাল একটি দলের মার্কা হিসেবে আছে। সেক্ষেত্রে কোনো সমস্যা দেখিনি বলে আমরা এই প্রতীকে আবেদন করেছি। জাতীয় প্রতীক কিন্তু কেবল শাপলা নয়, শাপলা, ধানের শীষ, তারকা এগুলো মিলে জাতীয় প্রতীক। সেক্ষেত্রে তারকা ও ধানের শীষ দুটি দলের মার্কা হিসেবে রয়েছে। কোনো ধরনের আইনগত সমস্যা আমরা দেখি না। তিনি আরও বলেন, আমরা শাপলাকে মার্কা হিসেবে নিয়েছি। আমাদের গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষ, আমাদের খেটে খাওয়া মানুষ সকলের কাছে শাপলা পরিচিত। সেই জায়গা থেকে এনসিপি মনে করেছে যে আমাদের দল যেহেতু সাধারণ মানুষের দল এবং সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করবে এবং রাজনীতি করবে সেই জায়গা থেকে শাপলাকে সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি দিয়ে আমরা আবেদন করেছি। সিইসি’র সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সকল শর্ত পূরণ করে আবেদন করেছি। আইন অনুযায়ী আপনারা ব্যবস্থা নেবেন। এছাড়া প্রবাসী ভোটারদের বিষয়ে কথা হয়েছে। এনসিপি এর আগে প্রবাসীদের জন্য যে প্রস্তাব দিয়েছে তার ওপর জোরালো দাবি জানিয়েছি। যাতে প্রবাসীদের ভোটাধিকার যেকোনো মূল্যে রক্ষা করা হয়। তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে প্রথম প্রায়োরিটি সংস্কার আর সংস্কারের ওপর নির্ভর করে আমরা নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। এর আগে বিকেলে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন,পার্লামেন্ট এখন খালি রয়েছে। ঐকমত্য কমিশন অনুযায়ী জাতীয় সংসদের ৪০০ আসনের মধ্যে ৩০০ আসন পেয়ে এনসিপি জাতীয় সরকার গঠন করবে। জনগণের ম্যান্ডেন্ট নিয়ে ব্যালট বিপ্লব সম্পন্ন করবে এনসিপি। তিনি আরও বলেন, আমরা সারাদেশে কথা বলেছি। অনেক জায়গায় অফিস নিতে গিয়েছি বাধা দেওয়া হয়েছে। কমিটি গঠন করতে গিয়েছি ছলচাতুরির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। এই হলো দেশের রাজনৈতিক কালচার। সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আজ এই অবস্থায় এসেছি। ৫ তারিখের গণঅভ্যুত্থানে যেভাবে মানুষের জয় হয়েছিল, সেভাবে আগামী নির্বাচনে ভোট ব্যাংকে এনসিপির শাপলা প্রতীকে পুরো দেশের মানুষ জয়জয়কার করে দেবে। এনসিপির নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠন করা হবে। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা দ্বিতীয় প্রতীক হিসেবে রেখেছি কলম, তৃতীয় প্রতীক হিসেবে রেখেছি মোবাইল। তবে আমরা প্রত্যাশা করব, আমাদের যাতে শাপলাই দেওয়া হয়। আমরা পাঁচ লাখ মানুষের ডাটা এনেছি। অধিকাংশ মানুষ এনসিপিকে চায় শাপলা প্রতীকে। তিনি আরও বলেন, আমরা ১০০টি উপজেলা, ২৫টি জেলা কমিটির শর্ত পূরণ করেছি। ট্রাকে করে আমরা ডকুমেন্ট এনেছি। দিনরাত পরিশ্রম করে সকল শর্ত পূরণ করেছি। আশাকরি অতিদ্রুত নিবন্ধন পাব এবং আগামী সরকার গঠন করতে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ। ইসি পুনর্গঠন না হলে এই কমিশনের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠানের সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দেশের মানুষ চায় পুনর্গঠন। পুনর্গঠন না হওয়ার কোনো উপায় নেই। যেহেতু এটা জনগণের দাবি, ইসি পুনর্গঠন হতেই হবে। পুনর্গঠন হবে। আমরা বিকল্প বি অপশনে যাচ্ছি না। এনসিপির এই নেতা বলেন, ইসি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু গত ১৫ বছরে এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। ইসির যেমন পুনর্গঠন করতে হবে, তেমনি নিয়মনীতিরও পরিবর্তন করতে হবে। এই কমিশনকে আমরা পুনর্গঠন করতে চাই, শক্তিশালী করতে চাই। আমরা এখনও বলছি ইসি পুনর্গঠন করা প্রয়োজন।

বিএনপি ক্ষমতায় এলে শিক্ষা ও গবেষণায় অবহেলা করবে না : সালাহউদ্দিন আহমেদ
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে শিক্ষা ও গবেষণায় কোনও অবহেলা করা হবে না। তিনি বলেন, দেশে উন্নত শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি হলেই বন্ধ হবে মেধা পাচার। মেধাহীন করে জাতিকে শাসন করার প্রবণতা থেকেই এ দেশে মেধা পাচারের ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টটিউটে অর্পণ আলোক সংঘের আয়োজনে ‘শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন’ শীর্ষক তারুণ্যের রাষ্ট্র সংলাপে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ইতিবাচক পরিবর্তন করতে হবে। ইতিহাসকে ভিত্তি করে ভবিষ্যতের পথে এগুতে হবে। রাষ্ট্র থেকে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন বিএনপি’র এই নেতা। তবে সে ক্ষেত্রে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে শিক্ষাঙ্গনের সহযোগিতা অব্যহত থাকতে হবে বলেও মনে করেন তিনি। অর্পণ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বিথীকা বিনতে হোসাইনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)’র উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান ও বিএনপি’র মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ড. মওদুদ আলমগীর পাভেল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার।

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল নিয়ে ভিন্নমত বিএনপিসহ তিন দলের : আলী রীয়াজ
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল ১০ বছর নির্ধারণের বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হলেও বিএনপি এবং আরও দুটি দল এতে দ্বিমত পোষণ করেছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। রোববার (২২ জুন) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান। অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সারাদিন আলোচনায় আমরা দুটি বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলেছি। এর একটি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, আরেকটি- সংবিধানের রাষ্ট্রের মূলনীতি নিয়ে। দীর্ঘ আলোচনা শেষে আমরা সুস্পষ্ট এক জায়গায় এসেছি। একজন ব্যক্তি ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। এরকম একটি জায়গায় আসার পরে আমরা এখনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারিনি। আলোচনার পরে তিনটি দল বিন্নমত পোষণ করে তারা বিষয়টি পুনর্বিবেচনার কথা বলেছে। তারা তাদের নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করে আবার আলোচনার কথা বলেছে। তারা মনে করে এই বিষয়ের সাথে অন্যান্য বিষয় যুক্ত। বিশেষ করে এনসিসি গঠন ও উচ্চকক্ষ কীভাবে গঠন হবে। ওইসব সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার সময় তারা বিষয়টি উপস্থাপন করবে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আলোচনা করে যে জায়গায় দাঁড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল নিয়ে তিনটি দল বাদে সবাই এক জায়গায় পৌঁছেছে। আমরা আশা করি এ বিষয়ে সবাই একমত হতে পারবে। আমরা আশা করি সকলে এই বিষয়ে একমত পোষণ করতে পারব। তিনটি দল হলো- বিএনপি, এনডিএম ও বিএলডিপি। এই বিষয়ে তাদের ভিন্ন ভিন্ন কারণে মতপার্থক্য আছে। দ্বিতীয় আলোচনার বিষয় উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, দ্বিতীয় যে বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে- সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি সংবিধান সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন দলের সেন্টিমেন্ট ও অবস্থান বিবেচনা করে ঐকমত্য কমিশন থেকে একটি প্রস্তাব হাজির করা হবে। কি আলোচনা হয়েছে তার প্রতিফলন একটি প্রস্তাব হাজির করা হবে। যাতে করে সাম্য ও মানবিক মর্যাদা সামাজিক সুবিচার ও গণতন্ত্র সংবিধানে উল্লেখ করা বা অন্যভাবে যুক্ত করা তখন বিবেচনা করা। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অনুরোধ করেছে আগামী দুই দিন বৈঠক মুলতবি করার জন্য। দলগুলো তাদের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা আলোচনা করতে চায়। আমরা আশা করছি এর মাধ্যমে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর মীমাংসা করতে পারব।

আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসন পাবে এনসিপি: পাটওয়ারী
নতুন দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদনের শেষ দিন ছিল রোববার। শেষদিনেই ইসিতে তাদের নিবন্ধনের আবেদন জমা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আবেদন জমা শেষে বের হয়ে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দলটির নেতারা। রোববার (২২ জুন) ইসিতে আবেদন জমা দিতে আসা নেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, নিবন্ধনের জন্য করণীয় সবকিছু করেই পূর্ণাঙ্গ ফর্ম ইসিতে জমা দিয়েছে এনসিপি। আখতার হোসেন জানান, তারা তিনটি প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছেন। এর মধ্যে তারা ‘শাপলা’ প্রতীকই চান বলে জানিয়েছেন। দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বাকি দুই প্রতীকের বিষয়ে জানান, বাকি প্রতীক দুটি হলো কলম ও মোবাইল। বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে মতামত নেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগই শাপলা প্রতীকের পক্ষে। তাই দলও সেটাই চায়। এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, সংস্কার কমিশন যে ৪০০ আসন করার প্রস্তাব করেছে, তার মধ্যে ৩০০ আসন এনসিপির ঘরে থাকবে। সব চ্যালেঞ্জ মাড়িয়ে এগিয়ে যাবে দল। এনসিপির আবেদন দিতে দেরি হলো কেন সে বিষয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানান, বিভিন্ন জায়গায় অফিস নিতে গিয়ে প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছি। ছলচাতুরী করে অন্য দলগুলো তাদের কর্মীদের এনসিপির মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে আবার পদত্যাগ করিয়েছে। পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে দেশের মানুষ ‘শাপলা’ প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়জয়কার করে দেবে উল্লেখ করে পাটওয়ারী বলেন, আগামীতে সরকার গঠন করবে এনসিপি।

অবশ্যই ইসি পুনর্গঠন হবে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) অবশ্যই পুনর্গঠন হবে। রোববার (২২ জুন) নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের আবেদন জমা দিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। যদি ইসি পুনর্গঠন না হয়, তবে এই ইসির অধীনে ভোটে আসবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, দেশে অনেক সংস্কার শুরু হয়েছে। জনগণের দাবি ইসি পুনর্গঠন হবে, আমরা বি অপশনে যাচ্ছি না। অবশ্যই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন হবে।

শাপলা, কলম ও মোবাইল প্রতীক চাইল এনসিপি
দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন জমা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এসময় দলটি প্রতীক হিসেবে শাপলা, কলম ও মোবাইল চেয়েছে দলটি। রোববার (২২ জুন) বিকেলে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ইসিতে আবেদন জমা দেয়। এছাড়া ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে নানা শর্ত জুড়ে দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তার মধ্যে অন্যতম হলো নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন। এই কমিশন গঠনের আইন, ‘পক্ষপাতমূলক আচরণ’ ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে দলটি। এমনকি বর্তমান কমিশনের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ারও কথা বলছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকেও আনুষ্ঠানিকভাবে এই কমিশনের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে এনসিপি। এ ছাড়া মৌলিক সংস্কার, বিচার, জুলাই ঘোষণাপত্র এবং জুলাই সনদ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে নিজেদের দ্বিধার কথাও জানিয়েছেন তারা। এদিকে তরুণদের নবগঠিত রাজনৈতিক দল এনসিপির সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত না হলেও নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ হিসেবে দেখছে জামায়াতে ইসলামী। অন্যদিকে কমিশন পুনর্গঠনের দাবিকে নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে বিএনপি। ইসিও বলছে, তারা পুরোপুরি নিরপেক্ষভাবেই কাজ করে যাচ্ছে। ইসি পুনর্গঠনের দাবিটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। এনসিপি নেতারা বলছেন, ২০২২-এর আইনের অধীনে এই ইসি গঠন করা হয়। তাদের দাবি, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী নতুন ইসি গঠন করতে হবে। কমিশনের সদস্যরা নিরপেক্ষ নয় বলে মনে করেন তারা। নির্বাচনের আগে এই কমিশন পুনর্গঠন করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেতারা। এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন কালবেলাকে বলেন, এই নির্বাচন কমিশন একটি দলের প্রতি আজ্ঞাবহ। এরই মধ্যে তারা আস্থা হারিয়েছে। কমিশনের বিষয়ে প্রধান বিচারপতিও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আমরা মনে করি, এই কমিশন আগের হাসিনার আমলের কমিশনের মতোই আচরণ করছে। তাই তারা একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে অক্ষম। এজন্য অবশ্যই বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন আইন পরিবর্তন করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নতুন আইন করতে হবে এবং কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।

মির্জা ফখরুলের সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন। আজ রোববার সকাল ১০টায় গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এই সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাতকালে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন। আমীর খসরু পরে সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন ও তার টিমের সাথে আলোচনা হয়েছে। এ সময়ে দুই দেশের মধ্যকার নানা বিষয় বিশেষ করে ট্যারিফ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়।’ তিনি আরো বলেন, 'তারা ট্যারিফের ব্যাপারে আমাদের মতামত জানতে চেয়েছে। আমরা এই ব্যাপারে সরকারের সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে একটা সমাধান করা দরকার বলে মনে করি। কারণ বাংলাদেশের পণ্যের ট্যারিফে যদি উচ্চ মূল্য বাড়িয়ে দেয়া হয় তাহলে আমাদের গার্মেন্টেসের রপ্তানি চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিএনপি এই বিষয়ে সরকারের সাথে কাজ ও সহযোগিতা করবে, যাতে ট্যারিফ বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান হয়।' এছাড়া দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশে কিভাবে আরও বিনিয়োগ বাড়ানো যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান আমীর খসরু। নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, 'নির্বাচন নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই আলোচনা হয়েছে । নির্বাচনের বিষয় এবং বিএনপির প্রস্তুতিসহ আমাদের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে বলেছি।' বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘এ সাক্ষাতে লন্ডনে তারেক রহমানের সাথে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের প্রশংসা করা হয়েছে। সেই মিটিংয়ের গুরুত্ব তারা অনুধাবন করতে পেরেছেন। ওই মিটিংয়ের ফলে দেশের মধ্যে যে একটা বড় ধরনের স্বস্তি এসেছে এবং দেশ নির্বাচনমুখী হয়েছে তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।' ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয়টা তো মোটামুটি একটা জায়গায় এসেছে, এটা তো স্বস্তির ব্যাপার... সবাই জানে যে, ডেমোক্রেটিক ট্রান্সফরমেশনের দিকে আমরা যাচ্ছি। সেটার মোটামুটি একটা দিনক্ষণের সিদ্ধান্ত সবার মধ্যে স্বস্তি এনেছে।’ তিনি বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশের মানুষ নয়, বাংলাদেশের যারা পার্টনার আছে তারাও একটা জায়গায় উপনীত হয়েছে যে বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক প্রসেস বা অর্ডারের দিকে যাচ্ছে। কারণ এতে তাদের ভবিষ্যৎ কর্ম পরিকল্পনা কি হবে সেই সিদ্ধান্ত নেয়াটা সহজ হযে যায়।'

সাবেক তিন সিইসি ও শেখ হাসিনাসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বিএনপির মামলা
আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আসামি করে মামলা করেছে বিএনপি। মামলার মোট আসামি ২৪ জন। এর মধ্যে আছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক ৪ আইজিপি। রোববার (২২ জুন) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন খান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলা নম্বর-১১। মামলার আসামিরা হলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ, তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার মো. আব্দুল মোবারক, আবু হানিফ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী, শাহ নেওয়াজ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে. এম. নুরুল হুদা, তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, তৎকালীন পুলিশের আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী, তৎকালীন ঢাকা মহানগরের পুলিশ কমিশনার, সাবেক ডিজি র্যাব ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক এসবি প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম, সাবেক ডিজিএফআই প্রধান (নাম অজ্ঞাত), সাবেক এনএসআই প্রধান ও সাবেক ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল আলম, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব, আলমগীর হোসেন, আনিছুর রহমান ও তৎকালীন নির্বাচন সচিব (নাম অজ্ঞাত)। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমাউল হক বলেন, আগে নির্বাচন কমিশনে যেসব কর্মকর্তা ছিলেন, অভিযোগকারীর দৃষ্টিতে তারা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান থাকার পরও ভয়-ভীতি দেখিয়ে ভোট সম্পন্ন করেন এবং জনগণের ভোট ছাড়াই প্রার্থীদের বিজয়ী করেন। এই কাজগুলো দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করে ২৪ জনকে আসামি করে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মামলার বাদী বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন খান বলেন, ২০১৪,২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোট পরিচালনাকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্য, বিভিন্ন সংস্থার এন এস আই, ডিজিএফআই, এসবি প্রধানসহ তারা সম্মিলিতভাবে প্রশাসনিক নির্বাচন করেছেন। দিনের ভোট রাতে করে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন শেখ হাসিনা। তাই তিনিসহ ২৪ জনকে আসামি ও অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনারদের সংবিধান লঙ্ঘনের দায় এবং অপরাধ করার দায়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি পত্রের মাধ্যমে ২০১৮ সালেও নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছিলাম। সে অভিযোগের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ছায়া লিপি ও আলামতসহ আজ অভিযোগ জমা দিয়েছি শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে।

শহিদদের দলীয়করণ করলে তাদের অবমূল্যায়ন করা হবে: ডা. জাহিদ
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগ যেমন মুক্তিযোদ্ধাকে দলীয়করণ করেছিল তেমনি জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের যদি দলীয়করণ করেন তাহলে তাদের অবমূল্যায়ন করা হবে। এই শহিদ জাতির জন্য, গণতন্ত্রের জন্য। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (এনআরএফ) উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সরকারের উদ্দেশ্যে ডা. জাহিদ বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর জনগণ আপনাদের দায়িত্বে বসিয়েছে দেশে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ একটি জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করার জন্য এবং যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন, বিচারালয়, প্রসাশন, নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিবেন। জনগণের ক্ষমতা, জনগণের মালিকানা জনগণকে ফিরিয়ে দিবেন। জনগণ তার ইচ্ছায় অভিপ্রায় ভোটাধিকারের মাধ্যমে প্রকাশ করবেন। শহিদদের দলীয়করণ করা হলে তাদের অপমান করা হবে মন্তব্য করে সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ৮ ই আগস্ট আপনাদের দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকে আজ ২১ জুন প্রায় ১০ মাস হতে চললো। কয়েকদিন পর বর্ষপূর্তি হবে। এই অবস্থার মধ্যে দাঁড়িয়ে আমাদের জানতে ইচ্ছা হয়, আপনারা আবু সাঈদ, মুগ্ধ অসীমের কথা বলেন। কিন্তু আমাদের সব শহিদদের কথা বার বার বলতে হবে। কিন্তু শহিদদের যদি আপনারা আওয়ামী লীগের মতো দলীয়করণ করেন তাহলে শহিদদের অবমূল্যায়ন করা হবে। এই শহিদ জাতীর জন্য গণতন্ত্রের জন্য শহিদ। কিন্তু, ইলিয়াস আলী, কমিশনার চৌধুরী আলমসহ ১৭ বছরের ইতিহাসকে ভুলে গেলে কোনো অবস্থাতে জুলাই আগস্টে পৌঁছাতে পারবেন না। কারণ ’৪৭ না হলে ’৬৯ হতো না ’৬৯ নাহলে ’৭১ হতো না। ’৭১ নাহলে ’৯০ হতো না। ’৯০ না হলে ’২৪ হতো কিনা বিরাট বড় প্রশ্ন থেকে যেতো। যার যা অবদান অবশ্যই আমাদের স্বীকার করতে হবে। এবং তাদের যথাযথ সম্মান দিতে হবে। এটা আমাদের দায়িত্ব। গত ১৩ তারিখ ড. ইউনূস-তারেক রহমান বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এই নেতা বলেন, আয়নায় আপনারা চেহারা দেখবেন। তারেক রহমান শুধু একজন মানুষ নয়। তারেক রহমান এদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রতীক। তারেক রহমান নিজের যোগ্যতা বলে শুধু বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করে তাদের কে না, বিএনপিকে না, গণতন্ত্রকামী মানুষকে ঐক্যবদ্ধের করে নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই তারেক রহমানকে নিয়ে কথা বললে মানুষ হাসে। তিনি বলেন, তারেক রহমানের সঙ্গে প্রদান উপদেষ্টা কথা বলবেন কী বলবেন না সেটা নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল বিব্রত করে তারা বলছে জাতি বিব্রত। আমার প্রশ্ন জাতির দায়িত্ব কি আপনারা নিয়েছেন? জাতির ১৮ কোটি মানুষের দায়িত্ব কি আপনারা নিয়েছেন? বলেন আপনাদের দল বিব্রত হয়েছে। মনে রাখবেন সবসময় জাতিকে নিয়ে টান দিবেন না। তাহলে হিসাব নিকাশ অন্য হতে পারে।

‘দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে ১৮ কোটি জনগণ’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান ছিল বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি সুস্পষ্ট না। এই দেশ কোনো পরিবারের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয় যে, তারা ইচ্ছেমতো শাসন ও শোষণ করবে। এখন থেকে দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে ১৮ কোটি জনগণ, কোনো বিশেষ পরিবার নয়। শনিবার (২১ জুন) বিকেলে সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। দলের সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করা ও তৃণমূলে জনগণের রাজনৈতিক প্রত্যাশা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তারা এখন পর্যন্ত মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। বরং বারবার নিপীড়নকারীদের কাছে আত্মসমর্পণ করছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেখানে পরিকল্পিতভাবে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব কায়েম করে রাখা হয়েছে। এখনই যদি জনগণ প্রতিবাদ না করে, তাহলে আগামী নির্বাচনে ভোটাধিকারও হারাতে হতে পারে। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে হয়তো আর কাউকে ভোট দিতেই দেওয়া হবে না। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব মাহিন সরকার। আরও উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিরাজগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক সজিব সরকার, জাতীয় নাগরিক পার্টির স্থানীয় প্রতিনিধি মোছাব্বির হোসেন এবং জাতীয় যুবশক্তির সংগঠক ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।

আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে চাঁদাবাজদের উৎখাত করবো: চরমোনাই পীর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, দখলদারদের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন। খুনিদের বিরুদ্ধে আন্দোলন, মানুষের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার আন্দোলন চলবে। শনিবার (২১ জুন) বিকেলে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে এক গণসমাবেশ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। চরমোনাই পীর বলেন, আমরা যে রকম ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিস্টকে এদেশ থেকে তাড়াতে বাধ্য করেছিলাম। ঠিক তেমনি সবাই মিলে যদি ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নামি, তাহলে চাঁদাবাজদের উৎখাত করতে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বুকে যারা ভারতের দালালি করবেন, তাদের সঙ্গে যারা হাত এক করে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখবেন, বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিক ঐক্যবদ্ধভাবে সেই দালালদের উৎখাত করবে। গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি মুহাম্মদ শাহজাহান মিয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, কুড়িগ্রাম-২ আসনের ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক মাও. নুর বখত মিয়া প্রমুখ।

৩ নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে মামলা করবে বিএনপি
দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনারদের নামে মামলা করবে বিএনপি। আগামীকাল রোববার (২২ জুন) সকালে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলাটি করবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির তিন সদস্য উপস্থিত থাকবেন। শনিবার (২১ জুন) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনারদের বিরুদ্ধে মামলা করবে বিএনপি। সকাল ১০টা নির্বাচন কমিশন অফিসে কপি জমা দিয়ে তারপর শেরেবাংলা থানা মামলার আবেদন করা হবে। এর আগে সোমবার (১৬ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

হাসপাতালে এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। শনিবার (২১ জুন) জাতীয় নাগরিক পার্টি যুগ্ম সদস্যসচিব আলাউদ্দিন মোহাম্মদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী একটি ছবি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে সবার কাছে দোয়া চান। তিনি ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমাদের প্রিয় সহযোদ্ধা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অসুস্থ হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যপাতবিরোধী সংগ্রামে নাসীরের ভূমিকা সব সময়ই ছিল সাহস ও নেতৃত্বের প্রতীক। তিনি আরো লেখেন, ‘এই কঠিন সময়ে আমরা সবাই তার পাশে আছি এবং আপনাদের সবার কাছে তার দ্রুত আরোগ্য কামনায় আন্তরিক দোয়ার আবেদন জানাচ্ছি। আল্লাহ যেন তাকে দ্রুত সুস্থতা দান করেন।’

অন্তর্বর্তী সরকার ভালো কাজ করছে, ঐক্যবদ্ধভাবে পাশে থাকব: ফখরুল
ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার কিছু ভালো কাজ করছে বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এজন্য ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারকে সহযোগিতা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। শনিবার (২১ জুন) বিকেলে রাজধানীর ডিআরইউতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার অনেক কাজ করছে। আমরা সবাই এক জোট হয়ে সাহায্য করব এবং আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব। ফখরুল বলেন, অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ থাকলে সেই সুযোগ বাস্তবায়ন হবে। নির্বাচন নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষের আশা পূরণ হবে। আওয়ামী লীগ প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে দিয়েছে। এগুলো সংস্কার করতে হবে। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, সুইস ব্যাংকে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ জমা হওয়ার খবর পড়ে মনটা খুব খারাপ হয়েছে। ফ্যাসিস্টরা সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। এ সময় তিনি ছাত্রদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রসঙ্গে কথা বলেন। ফখরুল বলেন, এনসিপি আগামীকাল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করবে। তাদের প্রতি প্রত্যাশা অনেক বেশি। নিঃসন্দেহে তাদের লক্ষ্য অর্জনে সবাই সাহায্য করবে।

ইশরাক ইস্যুতে দলের অবস্থান পরিষ্কার করবে বিএনপি: আবদুস সালাম
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম বলেছেন, ইশরাক ইস্যুতে সরকারের বার্তা নিয়ে বিএনপি অবশ্যই তার বক্তব্য স্পষ্ট করবে। এখন বিএনপি এ বিষয়ে চিন্তা করবে, অবস্থান পরিষ্কার করবে। তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনোভাবেই স্থানীয় নির্বাচনের সুযোগ নেই। শুক্রবার (২০ জুন) বেলা ১১টার দিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলি গৌরাঙ্গবাড়ি পরিদর্শন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। আবদুস সালাম বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার বিষয়ে কথা হয়েছে। এর বাইরে আর কোনো চিন্তা নেই। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনকে জাতীয় নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার কথা বলা হয়েছে। এ অবস্থায় জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনোভাবেই স্থানীয় নির্বাচনের সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবহার যাতে না হয়- সেদিকটা যেমন দেখতে হবে, তেমনি প্রচারণা যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেটিও বিবেচনায় রাখতে হবে। সীমান্ত দিয়ে ভারতের মানুষ ঠেলে পাঠানো (পুশ ইন) নিয়ে আবদুস সালাম বলেন, ভারত কেন পুশ ইন করবে- সেটা আমাদের প্রশ্ন। যদি কাউকে ফেরত পাঠাতেই হয়, তাহলে তারা সরকারকে বলবে, তা না করে পুশ ইন করা ঠিক নয়। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বেশি হিন্দুদের জমি দখল করেছে। কোনো বিএনপি নেতা তাদের জমি দখল করেননি। কে হিন্দু, কে মুসলিম, কে খ্রিষ্টান, কে বৌদ্ধ এসব রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি বিবেচনা করে না। বিএনপি সব ধর্মের ও মতাদর্শের দল। মতবিনিময় সভায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরীফ উদ্দীন, রাজশাহী নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা, মাটিকাটা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এহসানুল হক টুকু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টা মুমিনের ওপর ফরজ, ঐচ্ছিক নয়: জামায়াত আমির
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টা ঐচ্ছিক নয়, বরং প্রত্যেক মুমিনের ওপর ফরজ। ইসলাম শুধু নামাজ, রোজা, হজ ও যাকাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামের বিধান অনুসরণ করা অপরিহার্য।’ শুক্রবার (২০ জুন) বিকেলে রাজধানীর মিরপুর-১৩ এর ৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে মিরপুর, পল্লবী ও কাফরুল জোন জামায়াত আয়োজিত যৌথ রুকন শিক্ষাশিবির ২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। জামায়াত আমির বলেন, দুনিয়ায় শান্তি এবং আখেরাতে মুক্তি লাভের জন্য আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি অর্জন ও জান্নাত হাসিলের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ ত্যাগ ও প্রচেষ্টা চালাতে হবে। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত প্রতিটি পদক্ষেপে সবাইকে ইসলামী জীবনব্যবস্থা অনুসরণ করতে হবে। ইসলাম একটি পরিপূর্ণ ও শাশ্বত জীবন বিধান যেখানে মানবজীবনের সব সমস্যার ইনসাফপূর্ণ সমাধান বিদ্যমান। রাসূল (সা.)-এর জীবনদর্শনই হলো সর্বোচ্চ আদর্শ, যার অনুসরণেই রয়েছে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি।’ তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক মুমিনের জীবন উদ্দেশ্যই হওয়া উচিত দ্বীন প্রতিষ্ঠা। এ দায়িত্ব নবি-রাসুলদের মাধ্যমে এসেছে, সাহাবায়ে কেরাম তা পালন করেছেন এবং সেই ধারাবাহিকতায় তা এখন আমাদের ওপর বর্তায়। ইসলামী আন্দোলনের ইতিহাসে জুলুম-নির্যাতন ছিল স্বাভাবিক বাস্তবতা। তাই বাতিলের রক্তচক্ষুকে ভয় না করে দ্বীন বিজয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।’ তিনি রুকন ও ইসলামী আন্দোলনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের দেশে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। জামায়াত নেতা মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমানের পরিচালনায় রুকন শিক্ষাশিবির বিষয়ের ওপর আলোচনা করেন সদ্য কারামুক্ত সদ্য কারামুক্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ইয়াছিন আরাফাত ও মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য মুফতি ড. মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বাশার।

তারেক রহমান দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন: আমীর খসরু
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বিএনপিসহ দেশের সব মানুষ তারেক রহমানের ফেরার জন্য উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করছে। শুক্রবার (২০ জুন) বাদ আসর রাজধানীর কাটাবনের একটি মসজিদে গণফোরাম সভাপতি প্রয়াত মোস্তফা মহসীন মন্টুর মিলাদ মাহফিলে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। তারেক রহমান দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, যে কোনো সময় একটি দিনক্ষণ সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে চলে আসবেন তিনি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারে পোস্টার বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন- এ বিষয়ে জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, পোস্টার বাতিল এবং নির্বাচন সংক্রান্ত আরপিও সংশোধনের বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সিদ্ধান্ত নেবে। সুতরাং এ বিষয়ে এখন আমার মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

আগামী নির্বাচনে ইসলামী দলগুলো একসঙ্গে থাকবে: গোলাম পরওয়ার
আগামী নির্বাচনে ইসলামী দলগুলোর মধ্যে একসঙ্গে ভোটে অংশ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ইসলামী দলগুলোর মাঝে এক ধরনের সমঝোতা হয়েছে। ইসলামী দলগুলো একসঙ্গে থাকবে। শুক্রবার খুলনা মহানগরী জামায়াতে থানা মজলিসে শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্যদের শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সকালে খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার আল ফারুক মিলনায়তনে এ শিক্ষাশিবির অনুষ্ঠিত হয়। পরওয়ার বলেন, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় আগামী নির্বাচনে দেশপ্রেমিক শক্তিকে বিজয়ী করতে হবে। কোনো বিদেশি প্রভুর কথায় আর দেশ চলবে না। আগামী নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে দেশে ইসলামী বিপ্লব করতে নেতাকর্মীকে প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, দেশে যদি নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাহলে অধিকাংশ মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটবে। তিনি জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীকে গণমুখী কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে সমাজে মানুষের সেবা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। খুলনা মহানগর জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমানের সভাপতিতে শিক্ষাশিবিরে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, খুলনা অঞ্চল টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম ও মুহাদ্দিস রবিউল বাশার। খুলনা মহানগর সেক্রেটারি শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন খুলনা মহানগর নায়েবে আমির নজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ শাহ আলম, শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও আজিজুল ইসলাম ফারাজি, মীম মিরাজ হোসাইন, মুকাররম বিল্লাহ আনসারী প্রমুখ।