জোট গঠনে এনসিপির সঙ্গে আলোচনা চলছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:২৪ পিএম, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, “নির্বাচনকে সামনে রেখে জোট গঠনে আলাপ-আলোচনা চলছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত জোট কোন জায়গায় গিয়ে দাঁড়ায় সেটা দেখার জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে।”
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের প্রসঙ্গেও তিনি মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “দলটির সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক যোগাযোগ আছে। তবে জোটবদ্ধ হব কি হব না, তারা হবে, কি হবে না- রাজনীতির মাঠে কোনো কিছুই আগে থেকে বলে দেওয়া যায় না।” এই মন্তব্য তিনি শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে করেছেন।
জাতীয় সরকার নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, “আমাদের প্রতিশ্রুতি আছে, যাতে করে আমরা যুগপৎ সঙ্গী এবং অন্যান্য গণতান্ত্রিক শক্তিকে নিয়ে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন এবং সরকার গঠন করতে পারি। সেটাই হচ্ছে ঐক্যমতের জাতীয় সরকার। সাধারণ জাতীয় সরকার বলতে যেটা বোঝায় সেটা নয়।”
নির্বাচনে আসন ছাড় সংক্রান্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যুগপৎ আন্দোরনের শরিক দলের সঙ্গেও আলোচনা করে চূড়ান্ত মনোনয়ন নির্ধারণ হবে। যারা মনোনয়ন পাবেন না, তাদেরও অন্যভাবে মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে।”
ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও গণতন্ত্রপন্থি শক্তিগুলোকে সঙ্গে নিয়ে ৩১ দফা বাস্তবায়নে কাজ করবে বিএনপি। জোট ও সরকার গঠনের ক্ষেত্রেও শরিকদের যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী আসন ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে তিনি জানান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে সালাহউদ্দিন আশা প্রকাশ করেন যে, তিনি আগামী নভেম্বরের মধ্যে দেশে ফিরবেন। তিনি বলেন, “চলতি মাসের মধ্যেই ২০০ আসনে একক প্রার্থীকে সবুজ সংকেত দেবে বিএনপি। সেই প্রক্রিয়া এখন শেষের দিকে। খুব শিগগির নির্ধারিত তারিখটি জানতে পারবেন। আশা করি নভেম্বরের মধ্যেই তিনি ফিরবেন।”
জাতীয় নির্বাচনে তারেক রহমান কোন আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তো অবশ্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। তিনি তো সেটা সাক্ষাৎকারে বলেই দিয়েছেন। আসন পরে নির্ধারিত হবে। বাংলাদেশের যেকোনো আসন থেকে তিনি নির্বাচন করতে পারেন।”
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের বিষয়ে সালাহউদ্দিন জানান, “আমরা আশা করছি বেগম খালেদা জিয়া নিজের শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবেন নির্বাচন করবেন কিনা। আমরা তো চাই- তিনি নির্বাচনে অংশ নিন।”
দলীয় নেতৃত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তারেক রহমান দিনরাত নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, পরামর্শ নিচ্ছেন। এটি নেতৃত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। মনোনয়ন প্রক্রিয়াও সেই আলোচনার ভিত্তিতেই এগোচ্ছে।”
নির্বাচনী ইশতেহারের বিষয়ে তিনি জানান, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া কেউ যেন সহজে জিততে না পারে, সে নিশ্চয়তা দিতে একক প্রার্থী থাকা আসনে ‘না’ ভোটে সম্মতি দিয়েছে বিএনপি। নির্বাচনী ইশতেহারের কাজ দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে এবং তফসিল ঘোষণার পর সেটি প্রকাশ করা হবে।
জাতীয় পার্টি ও নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “জাতীয় পার্টি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ নয়। তারা নির্বাচনে অংশ নিবে কিনা সেটি তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত বলে মনে করি। জাতীয় পার্টি যদি আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন না করে সেটা তাদের স্বাধীনতা।”
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও জামায়াতের মধ্যে রাজনৈতিক মতবিনিময় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নাহিদ ইসলাম স্ট্যাটাসে জামায়াতের নীতি আদর্শ নিয়ে খোলামেলা বলেছেন। জামায়াতও জবাব দিয়েছেন। এটি রাজনৈতিক চর্চা। আমার একটি বিষয়ে তারা ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেছিলেন, এগুলো সব রাজনৈতিক চর্চা।”