মে মাসের প্রথম সাতদিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৭৩৫ মিলিয়ন ডলার

প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে চলতি মে মাসেও। এই মাসের প্রথম সাতদিনেই দেশে ৭৩৫ মিলিয়ন বা ৭৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ প্রায় ৯ হাজার কোটি (৮ হাজার ৯৬৭ কোটি) টাকা। আর প্রতিদিন আসছে ১০ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা ১২৮১ কোটি টাকা। রেমিট্যান্সের এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসে আবারও রেকর্ড তিন বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করতে পারে। সোমবার (১২ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানিয়েছে। সূত্র জানায়, মে মাসের প্রথম সাতদিনে ৭৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের ছেয়ে সাড়ে ১৩ কোটি ডলার বেশি। ২০২৪ সালের মে মাসের প্রথম সাতদিনে এসেছিল ৬০ কোটি ১০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে মে মাসের ৭ দিন পর্যন্ত দেশে মোট ২ হাজার ৫২৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছ, যা গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে মাসের ৭ দিন পর্যন্ত এসেছিল এক হাজার ৯৭২ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরের তুলনায় এখন পর্যন্ত সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার বেশি এসেছে। অর্থবছরের হিসাবে চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত রেমিট্যান্স আসার প্রবৃদ্ধি ২৮.২ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার এবং সবশেষ এপ্রিলে আসে ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।

বাণিজ্য উপদেষ্টার সাথে জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের (METI) প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক

বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এর সাথে জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের (METI) প্রতিমন্ত্রী ও গুশি মাসাকি বৈঠক করেছেন। আজ রবিবার (১১ মে ) দুপুরে ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২৫ এর ভেন্যুর জাপান প্যাভিলিয়নে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা এবং সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন,বাংলাদেশ জাপানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও গভীর ও সুদৃঢ় করতে আগ্রহী। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষরের জন্য পঞ্চম রাউন্ডের আলোচনা ফলপ্রসূ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। জাপানের প্রতিমন্ত্রী বলেন , বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক দৃঢ় করতে জাপান সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ। অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি বাস্তবায়নে দুদেশের মধ্যে যে সকল মতপার্থক্য রয়েছে আলোচনার মাধ্যমে দূর করে দ্রুত সময়ের মধ্যেই তা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শেখ বশিরউদ্দীন বলেন , বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার বৃহৎ অংশ তরুণ শ্রেণির- যাদের বয়স ১৬- ৩০ বছরের মধ্যে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষ ও যোগ্য জনশক্তিতে রুপান্তর করে জাপানের শ্রম বাজারে পাঠাতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।তার অংশ হিসেবে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে জাপানী ভাষা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসময় তিনি বাংলাদেশে আরো কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তৈরি ও আন্তর্জাতিকমানের প্রশিক্ষণ দানের সুযোগ তৈরিতে জাপান সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন , জাপানের মিতসুবিশি করপোরেশন ইতোমধ্যে বাংলাদেশে সার কারখানায় বিনিয়োগ করেছে যা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এসময় তিনি বাংলাদেশে আরো বেশি জাপানি বিনিয়োগের জন্য জাপান সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। জাপানের প্রতিমন্ত্রী ওগুশি মাসাকি বলেন ,জাপানে দক্ষ শ্রমিকের খুব প্রয়োজন। বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তি এদেশের শ্রমবাজারে আসলে বাণিজ্যের একটি নতুন দিক উন্মোচন হতে পারে যা দুদেশের জন্যই সুখকর হবে।এসময় তিনি দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে জাপানের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। বৈঠকে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী, জাপানের ট্রেড পলিসি ব্যুরোর দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক পরিচালক শিমানো তোশিয়ুকি, ট্রেড পলিসি ব্যুরোর ইকোনমিক পার্টনারশিপ ডিভিশনের পরিচালক উচিনো হিরুতো এবং জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর মোরারজী দেশাই বর্মনসহ বাংলাদেশ দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

ডুবতে থাকা পুঁজিবাজারে এসেছে সাড়ে বারোশ নতুন বিনিয়োগকারী

৫ই আগষ্টের পরে নতুন বাংলাদেশে সব খাতে লেগেছে সংস্কার ও পরিবর্তনের ছোয়া। নতুন এ সংস্কারে দেশের অর্থনীতিতে যেখানে ঘুরে দাড়াচ্ছে সেখানে পুঁজিবাজার আরও ভঙ্গুর হচ্ছে। তবে এ ডুবতে থাকা পুঁজিবাজারে এক মাসের ব্যবধানে এসেছে নতুন করে বারোশ'র বেশি নতুন বিনিয়োগকারী। তবে গত এপ্রিল মাসে নতুন বিনিয়োগকারী এলেও কমেছে বিদেশী বিনিয়োগকারী। পুঁজিবাজার সংস্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্য মতে, গত এপ্রিলের প্রথম কার্যদিবসের শুরুতে দেশের পুঁজিবাজারে ছিল ১৬ লাখ ৮৮ হাজার ১৪৪ জন বিনিয়েগকারী। চলতি মে মাসে এসে এক হাজার ২৫২ বিনিয়েগকারী বেড়ে ১৬ লাখ ৮৯ হাজার ৭৮৭ জনে। এক মাসে পুরুষ এক হাজার ২৭১ জন বেড়েছে তবে নারী বিনিয়েগকারী কমেছে ৬৫ জন। আলোচ্য সময়ে বিদেশী বিনিয়োগকারী কমেছে ১৩৪ জন। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও তা বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট্য নয়। তবে এ খারাপ সময়েও নতুন করে বিনিয়োগকারী বাজারে আসছে তা আশা জাগাচ্ছে। তবে ধারা অব্যাহত রাখতে হলে নতুন ভালো মানের কোম্পানির তালিকাভুক্তি করাতে হবে। এত বিদেশী বিনিয়োগকারীর সাথে দেশীয় বিনিয়োগকারী বাড়বে। ৫ই আগষ্টের পরে সিডিবিএলের তথ্য মতে নয় মাসে পুঁজিবাজারে এসেছে ২১ হাজার ৭২৯ বিনিয়োগকারী। তবে আলোচ্য সময়ে পুঁজিবাজার হারিয়েছে ৭২৪ বিদেশী বিনিয়োগকারী। সর্বশেষ তথ্য মতে ৬ মে পুঁজিবাজারে রয়েছে ১৬ লাখ ৮৯ হাজার ৭৪৭ জন বিনিয়েগকারী। এদের মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ৬৭ হাজার ৬৭৮ জন, নারী ৪ লাখ ৪ হাজার ৩৮৪ জন এবং বিদেশী ৪৬ হাজার ৩৭১ জন বিনিয়েগকারী রয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এ বাজার সংস্কারে নেওয়া উদ্যোগ: বিগত দিনে পুঁজিবাজারে হওয়া অনিয়ম আর দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে বিএসইসি বেশকিছু সংস্কার উদ্যোগ নেয়। এর মধ্যে গত বছরের ৭ অক্টোবর পুঁজিবাজারের উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক মানের সুশাসন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার সংস্কারের সুপারিশের জন্য পাঁচ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। পাশাপাশি পুঁজিবাজার ফোকাস গ্রুপও গঠন করে বিএসইসি। এরপর গত ২০ অক্টোবর একটি ‘অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি’ গঠন করা হয়। পুঁজিবাজারে বিগত সময়ের অনিয়ম, কারসাজি ও দুর্নীতির বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত করার জন্যই গঠন করা হয় এ কমিটি। এ ছাড়া বাজারের উন্নয়নে নেওয়া হয় একগুচ্ছ নীতি পদক্ষেপের উদ্যোগ। পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, পুঁজিবাজারে দেশীয় বিনিয়োগকারীদের আগমন কিছুটা আশার সঞ্চার করছে, তবে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার না হলে বাজার স্থিতিশীলতা পাবে না। নতুন কোম্পানির তালিকাভুক্তি ও গুণগত মান নিশ্চিত করা খুবই জরুরি, যাতে বিনিয়োগকারীরা আস্থা পান। এদিকে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষের প্রভাবে আগের দিন বড় পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। এদিন দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ হাজার ৯০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১ হাজার ৭৪ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১ হাজার ৮২০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক ৮ হাজার ৩৬৬ পয়েন্টে, সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৩ হাজার ৭০৩ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৮৮৩ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ১১ হাজার ৬৭২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

বিকেএমইএ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে

বাংলাদেশ নিটওয়্যার উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। শনিবার (১০ মে) সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। এ নির্বাচন দুটি আলাদা ভোট কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কেন্দ্র দুটি হলো- ঢাকায় বাংলামোটর বিকেএমইএ ভবন ও নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া বিকেএমইএ ভবন কেন্দ্র। এবারের নির্বাচনে চূড়ান্ত ভোটার সংখ্যা ৫৭২ জন। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জে ২৭২, ঢাকায় ২২৪ ও চট্টগ্রামে ৭৬ জন। বিকেএমইএ’র ৩৫টি পরিচালক পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভোটে নির্বাচিত ৩৫ পরিচালকের মধ্য থেকে পরে বিকেএমইএ সভাপতি, নির্বাহী সভাপতি এবং সাতজন সহসভাপতিসহ নয়জন নির্বাচিত হবেন। নির্বাচনে বিকেএমইএ’র ৩৫টি পরিচালক পদে ৩৮জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে ৩৫জনই প্রোগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স জোটের প্রার্থী। এ জোটের নেতা মোহাম্মদ হাতেম। তিনি নারায়ণগঞ্জের এমবি নিটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিকেএমইএ’র বর্তমান সভাপতি। এ জোটের বাইরে তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। তারা হলেন- বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক ও ইয়াং ফর এভার টেক্সটাইল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজিব চৌধুরী, জাহিন নিটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন মিয়া এবং জেএস স্টাইল বিডি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। নির্বাচন পরিচালনা করছেন বিকেএমইএ নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান সফিউল্লাহ চৌধুরী, সদস্য ওবায়দুর রহমান ও মোহাম্মদ শাহজাহান সিদ্দিকী।

১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে দেখতে চাই: আশিক চৌধুরী

আগামী ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে দেখতে চান জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। পাশাপাশি কাঙ্ক্ষিত হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি ৭ পয়েন্ট ৮ মিলিয়ন টিইইউস করতে ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের বন্দরগুলোতে পুরোদমে কার্যকর করার বিষয়েও নিজের মত ব্যক্ত করেন তিনি। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম, ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া চর, বে-টার্মিনাল এবং বন্দরের এনসিটির অপারেশনাল কার্যক্রম পরিদর্শন করেন বিডার চেয়ারম্যান। দুপুরে তিনি রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউতে ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন। ব্রিফিংয়ে আশিক চৌধুরী বলেন, আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে একটা ম্যানুফ্যাকচারিং হাবের মতো গড়তে চাই, ফ্যাক্টরি বানাতে চাই। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, আমাদের দেশের জনসংখ্যার বড় অংশ তরুণ। তারা অর্থনীতির জন্য সম্পদ। তাদের ব্যবসায়ী বানানোর জন্য বিনিয়োগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে। ঢাকাকে নিয়ে অনেক কথাবার্তা হয়। ঢাকা হচ্ছে বাংলালাদেশের অফিসিয়াল রাজধানী। কিন্তু ঐতিহাসিকভাবে চট্টগ্রাম অনেক বেশি প্রসিদ্ধ। পর্তুগিজরা, তার আগে বৃটিশরা এসেছিলেন। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে চট্টগ্রাম সবসময় গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বপ্নকে সাকসেস করতে হলে চট্টগ্রামকে সাকসেস করতে হবে। শিল্পের ৩০-৪০ শতাংশ চট্টগ্রাম থেকে আসে। আমাদের বড় ইকোনমিক জোনগুলো চট্টগ্রামে। বিশেষ করে বড় বড় ইনিশিয়েটিভস, চায়না স্পেশাল ইকোনোমিক জোন হচ্ছে, মীরসরাই ইকোনোমিক জোন রয়েছে। আমরা একটি ফ্রি ট্রেড জোনের কথা বলছি, সেটাও চট্টগ্রামকে ঘিরে। সবগুলোর নেপথ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের বন্দরগুলো। বন্দরগুলোকে সাকসেস করতে না পারলে সবগুলো বিনিয়োগই লক্ষ্যভ্রষ্ট হবে। বিনিয়োগকারীদের লজিস্টিক নিশ্চিত করতে হলে বন্দরের সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়াতে হবে। আশিক চৌধুরী বলেন, বিশ্বে বন্দর অপারেশনও একটি বড় ইন্ডাস্ট্রি। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত আমাদের লোকজন দিয়ে বৈশ্বিক বন্দর অপারেশন করা। বিশ্বের বন্দরগুলো টেকনোলজিতে অনেক এগিয়ে গেছে। আমাদের বন্দর সংশ্লিষ্টদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। আমাদের বন্দরে যে অপারেটর রয়েছেন, শ্রমিক রয়েছেন, তাদের দক্ষ করতে হবে। তারাও যেন বিদেশি পোর্ট অপারেটরদের সঙ্গে কাজ করতে পারেন। ভিয়েতনামের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, সক্ষমতার দিক থেকে আমরা ভিয়েতনামের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবো না। ভিয়েতনামে ৪৪টি বন্দর রয়েছে। তাদের হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি বছরে ৪৭ মিলিয়ন টিইইউস। কিন্তু আমাদের এখন হচ্ছে ১ পয়েন্ট ২৯ মিলিয়ন টিইইউস। সেগুলো আমাদের নির্মাণাধীন সবগুলো পোর্টকে অ্যাকটিভ করলেও হবে ৭ দশমিক ৮ মিলিয়ন টিইইউস। এজন্য আমাদের বন্দরকে ইফিসিয়েন্ট করার বিকল্প নেই। বন্দরে দুর্নীতির বিষয়ে সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবার সহযোগিতা ছাড়া দেশের দুর্নীতি দূর করা সম্ভব নয়। এজন্য দেশের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

দেশের বাজারে কমল সোনার দাম

দেশের বাজারে কিছুটা কমেছে সোনার দাম। এবার প্রতি ভরিতে ভালো মানের সোনা (২২ ক্যারেট) দাম কমেছে তিন হাজার ১৩৭ টাকা। এখন থেকে দেশের বাজারে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের সোনা বিক্রি হবে এক লাখ ৭১ হাজার ৮১১ টাকায়। শুক্রবার (৯ মে) থেকে সারা দেশে সোনার নতুন এ দর কার্যকর হবে। আজ বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার এ দাম হ্রাসের তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী (পিওর গোল্ড) সোনার মূল্য হ্রাস পেয়েছে। সে কারণে সোনার দাম সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাজুস।নতুন মূল্য অনুযায়ী, ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম কমিয়ে এক লাখ ৬৩ হাজার ৯৯৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ৪০ হাজার ৫৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ১৬ হাজার ২৬৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অপরিবর্তিত আছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী দাম ২২ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি দুই হাজার ৮৪৬ টাকা।২১ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি দুই হাজার ৭১৮ টাকা এবং ১৮ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি দুই হাজার ৩৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম এক হাজার ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গ্যাসের বাধাহীন সরবরাহ নিশ্চিতের দাবি আইটিইটি’র

২০২৫-২০২৬ বাজেটে টেক্সটাইল খাতকে ধ্বংসের হাত হতে রক্ষা করে এই শিল্পের প্রসারের মাধ্যমে বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আসন্ন বাজেটে পেট্রোবাংলাকে প্রয়োজনীয় ভতুর্কী প্রদানের ব্যবস্থা ও গ্যাসের বাধাহীন সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য সময়মতো প্রয়োজনীয় এলএমজি আমদানি করে সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য দাবি জানিয়েছে দি ইন্সটিটিউশন অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড টেকনোলজিস্টস (আইটিইটি), বাংলাদেশ। আজ বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল ২০২৫) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে সংগঠনের প্রাক বাজেট সাংবাদিক সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। এ সময় আইটিইটি আহ্বায়ক ইঞ্জিঃ এহসানুল করিম কায়সার, যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জি. এটিএম সামসুদ্দীন খান, সদস্য ইঞ্জি. সহিদুর রহমান, অজীবন সদস্য ইঞ্জি. রওশন জামিল টিপু, সদস্য ইঞ্জি সুমায়েল মো. মল্লিক, ইঞ্জি. এ এসএম হাফিজুর রহমান নিস্ক্রন, ইঞ্জি. খালেদুল ইসলাম মিথুন, ইঞ্জি এস এম মিজানুর রহমান, ইঞ্জি. নজরুল ইসলাম, ইঞ্জি. আহসান হাবিব, ইঞ্জি. শেখর চন্দ্র দাস, ইঞ্জি. আশিক ইসতিয়াক লিখন, ইঞ্জি. আরফান আলী পি কে উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. এনায়েত হোসেন বলেন, শিল্প অঞ্চলে ধারাবাহিক গ্যাস সরবরাহ এবং চাপের মাত্রা নিশ্চিত করনের লক্ষ্যে গ্যাস বিতরণ ব্যবস্থা আপগ্রেড, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন নতুন কূপের সন্ধানে খননপ্রক্রিয়া চালু রাখার জন্য বিশেষ বরাদ্দ প্রদান করার দাবি জানাচ্ছি। নতুন শিল্পে গ্যাস সংযোগের এর মূল্য পুরাতন শিল্পের ন্যায় একই মূল্য নির্ধারন করা বাঞ্ছনীয়। বর্তমানে প্রচলিত রপ্তানির উপর শুল্ক হিসেবে ১% হিসেবে অওঞ প্রদান করতে হয়, পূর্বে যা ০.৩০% বিদ্যমান ছিল। বর্তমানে রপ্তানিতে মন্দাভাব ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রতিযোগিতায় বাণিজ্যে টিকে থাকার জন্য এই হার ০.২৫% নির্ধারণ করা হউক। বর্তমানে দেশে প্রচুর পরিমাণে অপ্রদর্শিত টাকা বিদ্যমান। এছাড়া ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়েও এই অপ্রদর্শিত টাকা রয়েছে। টাকা পাচার রোধ এবং দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষে রপ্তানীমুখী শিল্পে বিনা বাধায় অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ করে দেওয়ার প্রস্তাব করছি। এই পদক্ষেপের ফলে দেশের শিল্পে ব্যাপক বিনিয়োগ হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। দেশের টেক্সটাইল শিল্পে বিশেষজ্ঞ নিয়োগের নামে বিদেশী নিয়োগ দিয়ে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ক্লোর লেভেলের কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। বৈদেশিক মূদ্রায় তাদের বেতন-ভাতা দেওয়ার ফলে দেশ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকারও কর থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনতিবিলম্বে সকল অপ্রয়োজনীয় বিদেশি নিয়োগ বাতিল, ওয়ার্ক পারমিট ব্যতীত বিদেশি নিয়োগ বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। রপ্তানিমুখী বস্ত্র শিল্পখাতের জন্য ব্যাংক সুদের হার সর্বোচ্চ ১০% করে অন্যান্য ব্যাংকিং চার্জ কমিয়ে সহনীয় মাত্রায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের প্রস্তাব করছি। তিনি আরো বলেন, রপ্তানিমুখী বস্ত্র শিল্পে খুচরা যন্ত্রাংশ ও ডাইস- ক্যামিক্যালস আমদানিতে বিভিন্নপ্রকার কর, ভ্যাট ইত্যাদি বিদ্যমান যা সম্পূর্র্ণ রহিত করার প্রস্তাব করছি। পাট ও বস্ত্রখাতে গবেষনা, উচ্চশিক্ষিত প্রকৌশলী সরবরাহ করার লক্ষ্যে গঠিত একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ক্যাম্পাস খুবই ছোট এবং এখানে শিক্ষার্থীদের আবাসিক সমস্যা প্রবলভাবে বিদ্যমান। এই সমস্যা সমাধানকল্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পূর্বাচল প্রকল্পে বা তার আশেপাশে ৫০ একর জমি বরাদ্দের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সরকারের নিকট আবেদন করেছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া টেক্সটাইল শিক্ষা ও গবেষণার কাজে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানাচ্ছি। বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পে সূতা এবং কাপড় উৎপাদনের জন্য আমদানিকৃত তুলার উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। তবে তুলা সংগ্রহের বর্তমান প্রচলিত পদ্ধতিতে উল্লেখযোগ্য বিলম্ব, কাস্টসম হয়রানি এড়ানোর নিমিত্তে তুলা ডাম্পিংয়ের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে ফ্রি জোন করে গুদামজাত করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে রপ্তানীমুখী টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস খাতকে টিকিয়ে রাখার জন্য বর্তমান প্রচলিত প্রনোদনা পণ্যভেদে শতকরা ১০-২০ ভাগে উন্নতি করার দাবি জানাচ্ছি। ১০০% রপ্তানিমুখী টেক্সটাইল সেক্টরে কাষ্টমস্ এবং বন্ডের ওয়্যার হাউজের মধ্যে বিরাট গ্যাপ আছে। রপ্তানিমুখী বিশেষ করে ডাইং ফিনিশিং কোম্পানীগুলো সঠিক নিয়মে কাজ করার জন্য বন্ডের ওয়্যার হাউজের নীতিমালার পরিবর্তন করার দাবি জানাচ্ছি। সরকার রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলোতে সোলার প্যানেল এর ট্যাক্স হলিডে ফ্যাসিলিটিজ প্রদান করছে। কিন্তু বর্তমানে দেশীয় চাহিদা পূরণের জন্য অসংখ্য টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস কারখানা গড়ে উঠেছে। ২০৩০ সনের মধ্যে কার্বনের মাত্রা ৪২% নামিয়ে আনতে হলে সকল কারখানাকেই সোলার সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্পের মধ্যে কার্যকর এবং উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন কারখানা যেমন রয়েছে তেমনি অনেক দুর্বল ও অকার্যকর কারখানা রয়েছে যেগুলো অপেশাদার, অদক্ষ, পুরোনো ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে। এই কারখানাগুলোর আর্থিক স্বাস্থ্য, উৎপাদন দক্ষতা, পরিবেশগত সামঞ্জস্য এবং শ্রমিকের কল্যাণের প্রয়াসে কার্যকর ও দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য উপযুক্ত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার, আর্থিক বিশ্লেষক, অপরেশনাল বিশেষজ্ঞ, সরকারের প্রতিনিধি এবং আইনি উপদেষ্টার সমন্বয়ে শিল্প মূল্যায়নের টাস্কফোর্স গঠনের দাবি জনাচ্ছি। বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসগুলোতে কমার্শিয়াল উইং এ ন্যূনতম একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি যাতে করে বাইরের দেশ থেকে রপ্তানির অর্ডার নিশ্চিতের জন্য টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেওয়া যায়। বর্তমানে বাংলাদেশ-এর টেক্সটাইল সেক্টরের চাহিদা মোতাবেক প্রচুর পরিমাণে ডাইস-ক্যামিক্যাল এবং মেশিনারিজ আমদানি করতে হয় । সরকারি উদ্যোগে ডাইস-ক্যামিক্যাল ও মেশিন ম্যানুফেকচারিং প্ল্যান্ট স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা হলে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় এবং নতুন কর্মস্থানের সৃষ্টি হবে। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

দেশে মূল্যস্ফীতি কমছে: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দেশের মূল্যস্ফীতি কমছে এবং সরকারের ধারাবাহিক নীতি ও প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে তা ৪ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা অসম্ভব হবে না। বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত ‘ব্যাংকার-এসএমই নারী উদ্যোক্তা সমাবেশ, পণ্য প্রদর্শনী ও মেলার’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। গভর্নর বলেন, ‘আমরা যদি একদিকে টাকা ছাপাই, আর অপরদিকে বলি মূল্যস্ফীতি কমছে না— তাহলে চলবে না। আমাদের এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে। ইতোমধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১৪ শতাংশ থেকে সাড়ে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে এবং খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতিও সাড়ে ১২ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশের আশেপাশে এসেছে। ধাপে ধাপে আরও কমে আসবে বলেই আমি আশাবাদী।’ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা গেছে, এপ্রিল মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯.১৭ শতাংশ, যা আগের মাসে ছিল ৯.৩৫ শতাংশ। নারী উদ্যোক্তাদের প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, ‘নারীদের সাংবিধানিক অধিকার থাকলেও বাস্তবে তারা সেটি পাচ্ছেন না। ঋণ প্রাপ্তিতে এখনও নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।’ বর্তমানে ব্যাংক খাতে মোট ঋণের মাত্র ৬ শতাংশ নারীদের মধ্যে বিতরণ হচ্ছে— যা অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘নারীদের ঋণ দিতে হবে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিলের ওপর নির্ভর না করে। কারণ, সেখান থেকে ঋণ দিলে নতুন টাকা তৈরি করতে হয়, যা মূল্যস্ফীতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।’ চার দিনব্যাপী এ মেলায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ৬৮ জন নারী উদ্যোক্তা অংশ নিয়েছেন। ১১ মে পর্যন্ত মেলা চলবে। সমাপনী দিনে ৬ জন উদ্যোক্তাকে সম্মাননা প্রদান করা হবে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার, নির্বাহী পরিচালক মো. খসরু পারভেজ, সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন এবং এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগের পরিচালক নওশাদ মোস্তফা। সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এসএমই কার্যক্রম বিস্তারে ব্যাংকগুলোর শীর্ষ পর্যায়ে উদ্যোগ বাড়ানো জরুরি।’ উল্লেখ্য, ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক এই মেলার আয়োজন করলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে তা বন্ধ ছিল। চার বছর পর আবারও এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে নারী উদ্যোক্তাদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হলো।

ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড (আইবিএসএল)-এর পরিচালনা পরিষদের এক সভা বুধবার (৭ মে) অনুষ্ঠিত হয়েছে। আইবিএসএল-এর চেয়ারম্যান মোঃ আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় কোম্পানির পরিচালক মোঃ আবদুল জলিল, মোঃ ওমর ফারুক খান, মোহাম্মদ আলী এবং আইবিএসএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মশিউর রহমান, এফসিএ, সিআইপিএ সহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক সফলতাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

শেয়ারবাজার ইস্যুতে ১১ মে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

শেয়ারবাজারের ব্যাপক পতনের প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস সঠিক অবস্থা পর্যালোচনার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক আহ্বান করেছেন। আগামী ১১ মে (রোববার) দুপুর ১২টায় প্রধান উপদেষ্টার বাস ভবন যমুনায় এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল মঙ্গলবার এই বৈঠকটি ডাকা হয়। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক এবং শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আয়োজিত একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণের জন্য বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। নয় মে প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষে ১০ মে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। এরপর ১২ মে বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা গুলো সংগঠন আইসকোর বার্ষিক সভায় যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। বিএসইসির চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব মো. জাহাঙ্গীর নিশ্চিত করেছেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে শেয়ার বাজার ইস্যুতে আলোচনার জন্য ১১ মে একটি বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে।

দেশে মোট রিজার্ভ ২৭.৪৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

দেশে বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিমাণ। এখন দেশে মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব অনুযায়ী, এখন দেশে রিজার্ভ বিপিএম-৬ হিসেবে দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক শূন্য ছয় বিলিয়ন ডলার। মঙ্গলবার (৬ মে) রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন। আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী, দেশে এখন রিজার্ভ বিপিএম-৬ হিসেবে দুই হাজার ২০৬ কোটি ১৯ লাখ ডলার। তবে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ এক হাজার ৭০০ কোটি ডলারের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, দেশের মোট রিজার্ভ দুই হাজার ৭৪৪ কোটি ৩৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার। গত ৪ মে দেশে রিজার্ভ বিপিএম-৬ হিসেবে হয়েছিল দুই হাজার ১৯৭ কোটি ২১ লাখ ৬০ হাজার ডলার। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেশের মোট রিজার্ভ হয়েছিল দুই হাজার ৭৩৫ কোটি ৪৮ লাখ ৩০ হাজার ডলার। গত ৩০ এপ্রিল দেশে রিজার্ভ বিপিএম-৬ হিসেবে হয়েছিল দুই হাজার ২০৪ কোটি ৭৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেশের মোট রিজার্ভ হয়েছিল দুই হাজার ৭৪১ কোটি ১৫ লাখ ৭০ হাজার ডলার। গত ২৭ এপ্রিল দেশে রিজার্ভ বিপিএম-৬ হিসেবে ছিল দুই হাজার ১৪২ কোটি ৮৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেশের মোট রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৬৭৮ কোটি ৯২ লাখ ১০ হাজার ডলার। এর আগে, ২০ এপ্রিল দেশে রিজার্ভ ছিল বিপিএম-৬ হিসেবে দুই হাজার ১৩৪ কোটি পাঁচ লাখ ৫০ হাজার ডলার। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, দেশের মোট রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৬৭০ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার ডলার। গত ১৫ এপ্রিল বিপিএম-৬ হিসেবে রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ১১৭ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, দেশের মোট রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৬৫১ কোটি ৫৯ লাখ ৯০ হাজার ডলার।

সেন্ট্রাল শরিয়াহ বোর্ডের নির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

সেন্ট্রাল শরিয়াহ বোর্ড ফর ইসলামিক ব্যাংকস অব বাংলাদেশের নির্বাহী কমিটির ৭০তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৫ মে) ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসির প্রধান কার্যালয়ের বোর্ডরুমে এই সভা আয়োজন করা হয়।সেন্ট্রাল শরীয়াহ বোর্ডের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সেন্ট্রাল শরীয়াহ বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন তালুকদার, বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মো. আনোয়ার হোসাইন মোল্লা, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ও ঢাকা ব্যাংক পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজারি কমিটির চেয়ারম্যান মু. ফরিদ উদ্দিন আহমাদ, অগ্রণী ব্যাংক ও দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজারি কমিটির চেয়ারম্যান মুফতি মোহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহিল বাকি আন-নাদাবি।এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজারি কমিটির চেয়ারম্যান ও ব্যাংক এশিয়া পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজারি কমিটির সদস্যসচিব মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ ওয়ালী উল্লাহ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. ওমর ফারুক খান, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া এবং এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. আখতার হোসেন।সভা পরিচালনা করেন নির্বাহী কমিটির সদস্যসচিব ও বোর্ডের সেক্রেটারি জেনারেল জনাব মো. আবদুল্লাহ শরীফ। সভায় বোর্ডের নীতিনির্ধারণী বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে খাদ্য সম্পর্কিত জাতীয় নীতি বাস্তবায়ন জরুরি : বাণিজ্য উপদেষ্টা

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে খাদ্য সম্পর্কিত সকল ইস্যুতে সামগ্রিকভাবে জাতীয় নীতি বাস্তবায়ন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

কমানোর দুই দিন পর ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনা দুই হাজার ৩০৯ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম এক লাখ ৭১ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। যা এতদিন এক লাখ ৬৮ হাজার ৯৭৬ টাকা নির্ধারণ করা ছিল।সোমবার (৫ মে) বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।এর আগে গত শনিববার প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯৭৬ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৬১ হাজার ৩০১ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৮ হাজার ২৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১৪ হাজার ২৯৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।স্বর্ণের দাম কমলেও অপরিবর্তিত আছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী, ২২ ক্যারেটে প্রতি ভরি রুপার দাম দুই হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ৫৮৬ টাকা।

১০ মাসের মধ্যে এপ্রিলে রফতানি আয় সর্বনিম্ন, ধাক্কা গার্মেন্টস খাতেও

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) দেশের সামগ্রিক রফতানি খাতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি থাকলেও এপ্রিল মাসে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, এপ্রিল মাসে দেশের পণ্য রফতানি থেকে আয় হয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ০১ বিলিয়ন ডলার, যা চলতি অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

এবার বাধ্যতামূলক ছুটিতে সাউথইস্ট ব্যাংকের এমডি

এবার তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নুরুদ্দিন মো. ছাদেক হোসেনকে। আজ সোমবার থেকে আগামী ৪ আগস্ট পর্যন্ত তাকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। এ সময় এমডির চলতি দায়িত্বে পালন করবেন ডিএমডি আব্দুর রহমান চৌধুরী। গতকাল রোববার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। জানা গেছে, ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের সময়ে সাউথইস্ট ব্যাংকে নানা অনিয়ম হয়েছে। এসব অনিয়মের সাথে নুরুদ্দিন মো. ছাদেক হোসেনেরর সম্পৃক্ততা তদন্তের জন্য তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে এর আগে আরও ৬টি ব্যাংকের এমডিকে ছুটিতে পাঠিয়েছে ব্যাংকগুলোর পর্ষদ। সবশেষ গত মাসে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে তিন মাসের ছুটি দেওয়া হয়েছে।

২০ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি বেড়েছে

দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ খেলাপি ঋণের রেকর্ড গড়েছে গত ডিসেম্বর প্রান্তিকে। বর্তমানে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। যা মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় ২০.২ শতাংশ। একই সময়ে ব্যাংক খাতের ঋণস্থিতি ছিল ১৭ লাখ ১১ হাজার ৪০২ কোটি টাকা। অন্যদিকে, খেলাপি ঋণ ব্যাপক পরিমাণে বাড়ায় এক তৃতীয়াংশ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি বেড়েছে। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে ২০ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি বেড়ে ১ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত ডিসেম্বর প্রান্তিকে এ চিত্র উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন মতে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি ছিল ৫৩ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা। ডিসেম্বর প্রান্তিকে মোট ২০ ব্যাংকের সার্বিক ঘাটতি বেড়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে ১০ সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩৯ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে ব্যাংকখাতের সম্মিলিত মূলধন ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের অনুপাত (সিআরএআর) কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। যা তার আগের প্রান্তিক সেপ্টেম্বর শেষে ছিল ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ব্যাসেল-৩ নীতিমালা অনুযায়ী, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম মাত্রায় মূলধন সংরক্ষণ করতে হবে। ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রতিটি ব্যাংককে তাদের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ বা ৫০০ কোটি টাকার মধ্যে যেটি বেশি সে পরিমাণ মূলধন সংরক্ষণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই শর্ত কোন ব্যাংক মানতে ব্যর্থ হলে, সেটি মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে বলে গণ্য হয়। আর মূলধনের এ অর্থ উদ্যোক্তাদের প্রাথমিক বিনিয়োগ এবং মুনাফা থেকে সংরক্ষিত হয়। মূলধন ঘাটতিতে থাকা ব্যাংক তাদের শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদান করতে পারে না।

২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এলো এপ্রিলে

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। আগের বছরের একই মাসের তুলনায় যা প্রায় ৭১ কোটি ডলার বা ৩৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গত এপ্রিল মাসের এ রেমিট্যান্স একক মাস হিসেবে এ যাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এখনও পর্যন্ত কোনো এক মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে গত মার্চ মাসে। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৬৪ কোটি ডলার এসেছে গত ডিসেম্বর মাসে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৪৫৪ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল এক হাজার ৯১২ কোটি ডলার। এই হিসেবে দশ মাসে বেশি এসেছে ৫৪২ কোটি ডলার, যা ২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের পুরো সময়ে যেখানে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ৩৯১ কোটি ডলার। এর মানে আগের অর্থবছরের পুরো সময়ের তুলনায়ও ১০ মাসেই বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি রপ্তানি আয়েও ১১ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি রয়েছে। টানা ২০ মাস পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে আবার ২২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। গত ৩০ এপ্রিল রিজার্ভ উঠেছে ২২ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলারে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের আগস্টে রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। পরের মাসে কমে ২১ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলারে নেমেছিল। এর পর আর ২২ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেনি। দেশের ইতিহাসে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল ২০২২ সালের আগস্টে। সেখান থেকে প্রতি মাসে কমতে কমতে সরকার পতনের আগে গত জুলাই শেষে ২০ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারে নেমেছিল। ব্যাংকাররা জানান, রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে ভালো প্রবৃদ্ধির কারণে এখন ডলার নিয়ে হাহাকার নেই। বিগত সরকারের সময়ে সর্বোচ্চ ১২৭ টাকায় উঠে যাওয়া ডলার অনেকদিন ধরে ১২২ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে। যে কারণে আমদানি, ভ্রমণসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে সরকার। গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমদানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। সরকার পরিবর্তনের পর থেকে আইএমএফের ঋণের কোনো কিস্তি আসেনি। এরপরও রিজার্ভ বাড়ছে।

রূপালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় এখন ইউনুস ট্রেড সেন্টারে

রূপালী ব্যাংক পিএলসি’র প্রধান কার্যালয়ের কার্যক্রম নতুন ঠিকানায় শুরু করেছে। রবিবার (০৪.০৫.২০২৫) রাজধানীর ৫২-৫৩, দিলকুশাস্থ ইউনুস ট্রেড সেন্টারে স্থানান্তরকৃত ঠিকানায় প্রধান কার্যালয়ের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলাম। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ’রূপালী ভবন’ ৩৪ দিলকুশায় নিজস্ব ভবনে কার্যাক্রম পরিচালনা করে আসছিল। কিন্তু ভবনটিতে রেট্টোফিটিং এবং অত্যাধুনিকভাবে গড়ে তোলার জন্য সংস্কার কার্যক্রম চলমান থাকায় প্রধান কার্যালয় ইউনুস ট্রেড সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়েছে। সংস্কার কার্যক্রম শেষে ব্যাংক পুনরায় নিজস্ব ভবনে কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানানো হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক ইয়াছমিন বেগম, মোহাম্মদ শাহেদুর রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী, মোহাম্মদ সাফায়েত হোসেন, মো. মঈন উদ্দিন মাসুদ, মো. নোমান মিয়া, সালামুন নেছা, তানভীর হাসনাইন মঈন, শেখ মুনজুর করিম ও মো. মনিরুল হকসহ ব্যাংকের উর্ধতন কর্মকতরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক পারসুমা আলম, হাসান তানভীর ও মো. হারুনুর রশীদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এবি ব্যাংক চেয়ারম্যানের পদত্যাগ

আরব বাংলাদেশে (এবি) ব্যাংকের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার খায়রুল আলম চৌধুরী পদত্যাগ করেছেন। গত বৃহস্পতিবারের পরিচালরা পর্ষদের সভায় তিনি পদত্যাগ করেন। নতুন করে ব্যাংকটির সাবেক একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চেয়ারম্যান করা হবে বলে আলোচনা রয়েছে। বেসরকারি খাতের এবি ব্যাংক নানা সমস্যায় জর্জরিত। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির ৩২ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা ঋণের ৮ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা বা ২৬ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার খায়রুল আলম চৌধুরী ইউনিভার্সিটি অফ উলভার হ্যাম্পটন থেকে স্নাতক ডিগ্রি র্অজন করেন। পরবর্তীতে সিটি ইউনিভার্সিটি স্নাতকোত্তর এবং লন্ডনের লিঙ্কনস্ ইন থেকে বার-অ্যাট-ল’ ডিগ্রি অর্জন করেন।

ন্যাশনাল ব্যাংকের ক্যাশ অফিসারদের প্রশিক্ষণ কোর্স শুরু

রবিবার (৪ মে) ন্যাশনাল ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে শুরু হলো ৫ দিনব্যাপী ‘বেসিক কোর্স ফর ক্যাশ অফিসার্স (৩৪তম ব্যাচ)’। এতে ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে ২৭ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করছেন। ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) শেখ আকতার উদ্দীন আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কোর্সের উদ্বোধন করেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ শাহ্‌ সৈয়দ রাফিউল বারী।

দেশের বাজারে স্বর্ণের দামে বড় পতন

রেকর্ড বৃদ্ধির পরের দিনই দেশের বাজারে কমতে শুরু করেছে স্বর্ণের দামে। এবার ভরিতে তিন হাজার ৫৭০ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ৬৮ হাজার ৯৭৬ টাকা নির্ধারণ করেছে সংগঠনটি। যা এর আগে এক লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা নির্ধারণ করা ছিল।শনিবার (৩ মে) বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। রোববার থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম পড়বে এক লাখ ৬৮ হাজার ৯৭৬ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৬১ হাজার ৩০১ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৩৮ হাজার ২৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ১৪ হাজার ২৯৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যেখানে এতদিন ২২ ক্যারেটের সোনার দাম পড়বে এক লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৬৪ হাজার ৬৯৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৪১ হাজার ১৬৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ১৬ হাজার ৭৮০ টাকা নির্ধারণ করা ছিল। আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।স্বর্ণের দাম কমলেও অপরিবর্তিত আছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী, ২২ ক্যারেটে প্রতি ভরি রুপার দাম দুই হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম দুই হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম দুই হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম এক হাজার ৫৮৬ টাকা।

এপ্রিলে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩৭ শতাংশ

এপ্রিল মাসের প্রথম ২৯ দিনে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২৬০ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩১ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে)। দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ৯ কোটি ডলার বা এক হাজার ৯৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া চলতি বছরের এপ্রিল মাসের ২৯ দিনে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশ রেমিট্যান্সে প্রবৃ‌দ্ধি হয়েছে। গত বছর এপ্রিল মাসের একই সময় রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯০ কোটি ৮৩ লাখ ডলার।বুধবার (৩০ এপ্রিল) রা‌তে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এসব তথ‌্য জা‌নি‌য়ে‌ছেন।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৪৩৯ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরে একই সময় রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৮৯৮ কোটি মার্কিন ডলার।এর আগে চলতি বছরের মার্চ মাসে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়। একক মাসে এত বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স আগে কখনো আসেনি বাংলাদেশে।এর আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রবাসীরা ২৬৪ কোটি ডলার পাঠিয়েছিল, এটা ছিল একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। তার আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে ২৬০ কোটি ডলারের রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, অর্থপাচার রোধে বর্তমান সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ফলে হুন্ডিসহ বিভিন্ন অবৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানো কমে গেছে। ফলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আহরণ বেড়েছে।চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে এবং আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার এবং নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়া‌রি‌তে ২১৯ কোটি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার এবং মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পা‌ঠি‌য়েছেন প্রবাসীরা। অর্থাৎ বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার দা‌য়িত্ব নেওয়ার পর টানা ৭ মাস দুই বিলিয়ন এবং মার্চে তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে।

লিটারে এক টাকা কমলো জ্বালানি তেলের দাম

ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম কমিয়েছে সরকার। সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারে এক টাকা কমিয়ে বুধবার (৩০ এপ্রিল) জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নতুন এ দাম আজ বুধবার দিনগত মধ্যরাত থেকে কার্যকর হবে। নতুন মূল্য অনুযায়ী, মে মাসে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটার ১০৫ টাকা থেকে এক টাকা কমে হয়েছে ১০৪ টাকা। এছাড়া প্রতি লিটার অকটেন ১২৬ টাকা থেকে কমে ১২৫ টাকা এবং পেট্রল ১২২ টাকা থেকে কমে ১২১ টাকা হয়েছে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমা-বাড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে দেশে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি মাসে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। এ জন্য ‘জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ নির্দেশিকা’র আলোকে মে মাসের জন্য তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিতে জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে বলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে। সর্বশেষ গত ১ ফেব্রুয়ারি সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারে এক টাকা বাড়িয়ে বর্তমান দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ মূল্য মার্চ ও এপ্রিল মাসেও বহাল ছিল।