কানাডায় দেড় কোটি টাকা পাচার করলেন শাহীনুল ইসলাম
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ১০:৫১ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর প্রধান হিসেবে সদ্য নিয়োগ বাতিল হওয়া এএফএম শাহীনুল ইসলাম-এর বিরুদ্ধে কানাডায় অর্থ পাচারের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের অনুসন্ধানে জানা গেছে, শাহীনুল ইসলাম তার মেয়ের কাছে একটি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ৮০ হাজার ৯৩৫ টাকা পাঠিয়েছেন, যা তিনি আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করেননি।
তদন্তে প্রকাশ, শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থপাচার, করফাঁকি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। আয়কর গোয়েন্দা সূত্র জানায়, তিনি কানাডায় মেয়েকে বিপুল অঙ্কের টাকা পাঠিয়েছেন, তবে বড় অংশের উল্লেখ তার ফাইলে নেই।
শাহীনুল ইসলামের নামে একাধিক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে, যেগুলোতে বিপুল লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। একইভাবে বিকাশ ও রকেট অ্যাকাউন্টেও বড় অঙ্কের লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
অবৈধ আয়ের তথ্য গোপন করতে তিনি স্ত্রীর নামে সিদ্ধেশ্বরী ও রমনায় ১,১০৫ বর্গফুটের ফ্ল্যাট কিনেছেন। আয়কর ফাইলে ফ্ল্যাটের দলিলমূল্য দেখানো হয়েছে ৩১ লাখ ৩০ হাজার টাকা, কিন্তু প্রকৃত মূল্য প্রায় ৭১ লাখ টাকার বেশি। স্ত্রী সুমা ইসলাম এবং শ্বশুর কখনো আয়কর রিটার্ন দাখিল করেননি।
তদন্তে দেখা গেছে, শাহীনুল ইসলামের এফডিআর সম্পর্কিত তথ্যও আয়কর ফাইলে নেই, যদিও ব্যাংকে একাধিক এফডিআর পাওয়া গেছে। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, অবৈধ অর্থ বৈধ করার জন্যই তিনি স্ত্রী ও শ্বশুরের নামে সম্পদ লুকিয়েছেন।
গত ৯ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বিএফআইইউ প্রধান শাহীনুল ইসলামের নিয়োগ বাতিল করে। তার বিরুদ্ধে ওঠা ভিডিও কেলেঙ্কারি ও অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছিল।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিতর্কিত ব্যবসায়ী খন্দকার এনায়েত উল্লাহর ফ্রিজ করা অ্যাকাউন্ট থেকে ১৯ কোটি টাকা উত্তোলনের সুযোগ দিয়েছেন শাহীনুল ইসলাম। এছাড়া তার নিজস্ব ও স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবেও অস্বাভাবিক নগদ জমার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আপত্তিকর ভিডিওর ফরেনসিক পরীক্ষায়ও এর সত্যতা নিশ্চিত হয়েছে।