সরকারি সেবায় হয়রানি বন্ধ করতে হবে: অর্থ উপদেষ্টা

সরকারি সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের হয়রানি বন্ধ করতে কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার প্রয়োজনীয়তা জোরদার করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। রবিবার আগারগাঁওয়ের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভবনে উদ্বোধিত ‘ট্যাক্স রিপ্রেজেনটেটিভ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ নামের নতুন সফটওয়্যার অ্যাপের অনুষ্ঠান চলাকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “হয়রানিমুক্ত সেবা দিতে সদিচ্ছারও ব্যাপার আছে। নিজেরা স্বেচ্ছায় কাজ না করলে পরে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক তাদেরও সব ঠিকঠাক করতে সময় লাগবে।”

এনবিআরের উদ্ভাবিত এই সফটওয়্যার অ্যাপের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “এটি একটি যুগান্তকারী সফটওয়্যার অ্যাপ, যা দেশের রাজস্ব আদায় ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ, কার্যকর ও জনবান্ধব করে তুলবে। অর্থনৈতিক সংস্কারে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।”

অর্থ উপদেষ্টা আরও উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশে অনেক সময় গঠনমূলক উদ্যোগের চেয়ে তুচ্ছ বা ‘ননসেন্স’ বিষয় বেশি প্রচার পায়। আজকের এই সফটওয়্যার অ্যাপটি সত্যিকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্ভাবন, যা দেশের অর্থনীতির জন্য বড় একটি ধাপ। এটি শুধু রাজস্ব আদায়ের প্রক্রিয়াকে সহজ করবে না, বরং সাধারণ জনগণের ভোগান্তিও কমাবে।”

দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই সফটওয়্যারটির জন্য এনবিআর চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “বিদেশি সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টে আমাদের নির্ভরতা অনেক বেড়ে গেছে। আজকের এই অ্যাপটি দেশীয় দক্ষতায় তৈরি হওয়ায় এটি একটি বড় অর্জন।”

তাঁর মতে, “এই ধরনের প্রযুক্তি নির্ভর প্ল্যাটফর্ম রাজস্ব কর্মকর্তা, করদাতা এবং ট্যাক্স আইনজীবী; তিন পক্ষের জন্যই লাভজনক হবে।”

সাথে ট্যাক্স আইনজীবীদের প্রতি বিশেষ আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা (ট্যাক্স আইনজীবী) যদি পেশাগত দক্ষতা দিয়ে সেবা দেন, করদাতারা খুশি মনে আপনাদের সম্মানী দেবেন। ঘুষ বা অনৈতিক লেনদেন থেকে বিরত থাকা সম্ভব হবে, যদি আমরা সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করি।”

সেবার মান বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়ে তিনি বিদেশের অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করান, “আমি একবার প্যারিসে রেল টিকিট ফেরত দিতে গিয়ে দেখেছি, কাস্টমার সার্ভিস কতটা সুন্দর হতে পারে। এমন সেবা আমাদের দেশেও আশা করি বাস্তবায়ন হবে।”

ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই সফটওয়্যারের সুফল সাধারণ জনগণের জন্য দৃশ্যমান হওয়ার আশায় তিনি বলেন, “আমরা চাই মানুষ সরকারি সেবায় আস্থা রাখুক। আজকের এই পদক্ষেপ হয়তো সেই আস্থার সূচনা হতে পারে।”

এনবিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই অ্যাপের মাধ্যমে কর রিটার্ন জমাদান, কর নির্ধারণ, আপিল, রিফান্ডসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ অনলাইনে করা যাবে, যা দীর্ঘদিনের হয়রানি ও জটিলতা দূর করবে।