
২৯ দিনে এলো পৌনে ৩২ হাজার কোটি টাকার প্রবাসী আয়
ঈদুল ফিতরের আগে দেশের ইতিহাসে এক মাসে রেকর্ড ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছিল দেশে। ঈদের পরেও রেমিট্যান্সের গতিধারা অব্যাহত রয়েছে। চলতি মাস এপ্রিলের ২৯ দিনে এসেছে ২.৬১ বিলিয়ন (২৬১ কোটি ৭০ লাখ) ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৩১ হাজার ৮০৫ কোটি টাকার বেশি। এ মাসে প্রতিদিন গড়ে এসেছে প্রায় ৯ কোটি ডলার বা এক হাজার ৯৭ কোটি টাকা। বুধবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারায় বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভও বাড়ছে। চলতি এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশের মোট রিজার্ভ বেড়ে প্রায় পৌনে ২৭ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছায়। এখন সেই রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। আজ বুধবার দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৭ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার। এর আগে সদ্য বিদায়ী মাস মার্চের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন (৩২৯ কোটি) ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৪০ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে প্রতিদিন গড়ে আসে প্রায় ১০ দশমিক ৬১ কোটি ডলার বা এক হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। তথ্য বলছে, গত বছরের মার্চের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল এক দশমিক ৭১ বিলিয়ন বা ১৭১ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে সদ্য বিদায়ী মার্চে ১৫৮ কোটি ডলার বেশি এসেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৭৮ কোটি ডলার। যা গত অর্থবছরে একই সময়ে এসেছিল এক হাজার ৭০৮ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরে একই সময়ের চেয়ে ৪৭০ কোটি ডলার বেশি এসেছে। গত ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে। সে রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়লো চলতি বছরের মার্চ মাস। এছাড়া এ নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা ৯ মাস দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে রেমিট্যান্স। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। এরপর সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। পরের মাস নভেম্বরে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। সবশেষ মার্চে এসেছে ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। এছাড়া এপ্রিলের ২৯ দিনে এসেছে ২৬১ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।

সিকদার গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নুল হক ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ২০৩ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আর্থিক অনিয়ম ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ থাকায় সিকদার গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদার, তার স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার, তাদের সন্তান, নাতি -নাতনি ও সিকদার গ্রুপের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ১৮৯টি দেশি ও ১৪টি বিদেশি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে অনুসন্ধানী দলের সদস্য কামিয়াব আফতাহি উন নবী অবরুদ্ধের আবেদন করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। অবরুদ্ধ হওয়া দেশি হিসাবগুলোর অন্য মালিকরা হলেন, জয়নুল হকের ছেলে রন হক সিকদার, মমতাজুল হক, নাতি মোহতাসিম বিল্লাহ খান, নাসিম সিকদার, শন হক সিকদার নাতনি মেন্ডি খান সিকদার, লিসা ফাতেমা হক, পারভীন হক সিকদার, মনিকা সিকদার খান, জেফরি খান সিকদার, নাতিন জামাই সালাহউদ্দিন খান ও সিকদার গ্রুপের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এসব হিসাবে ১ কোটি ১১ লাখ ১৬ হাজার ৪৮৬ টাকা রয়েছে। বিদেশি হিসাবগুলোর মধ্য ১২টি ন্যাশনাল ব্যাংকে আর দুটি কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনে। এসব হিসাবের মালিক, জয়নুল হকের স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার, ছেলে দীপু হক, জন হক সিকদার, নাতি নাসিম সিকদার, শন হক সিকদার, নাতনি জেফরি খান সিকদার, জোনাস খান সিকদার, লিসা ফাতেমা হক, মনিকা সিকদার, পারভীন হক সিকদার, নাতিন জামাই সালাউদ্দিন খান। এসব হিসাবে ২৭ লাখ ১৮ হাজার ৯২৭ ডলার রয়েছে। দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, সিকদার গ্রুপ এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও মানিলন্ডারিং অপরাধের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক ৭ সদস্য বিশিষ্ট টিম গঠনের মাধ্যমে অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সিকদার গ্রুপ এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ও প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের অবৈধ উপায়ে অর্জিত অস্থাবর সম্পদ অন্যত্র বিক্রয়/বন্ধক/বেহাত করার প্রচেষ্টা করছেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে অবিলম্বে এখন পর্যন্ত হদিস পাওয়া অস্থাবর সম্পদ তথা ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা আবশ্যক। অনুসন্ধানকালে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সিকদার পরিবারের সদস্য এবং তাদের নিকট আত্মীয়দের মালিকানাধীন/স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সাসপেন্ডেড ১৮৯টি দেশীয় মুদ্রায় পরিচালিত হিসাব এবং ১৪টি বৈদেশিক মুদ্রায় পরিচালিত হিসাব মিলিয়ে মোট ২০৩টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া যায়। প্রাপ্ত তথ্য মতে বর্তমানে সিকদার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য বিদেশে অবস্থান করছেন। বিদেশে থেকে তারা তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অস্থাবর সম্পদগুলো বিক্রি ও স্থানান্তরের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মর্মে তথ্য পাওয়া যায়। যেহেতু সিকদার পরিবারের সদস্য এবং তাদের নিকট আত্মীয়দের নামে অর্জিত ওই অস্থাবর সম্পদগুলো ও শেয়ারগুলো বিক্রি/স্থানান্তর হয়ে গেলে রাষ্ট্রেরসমূহ ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে, সেহেতু ব্যাংক হিসাবগুলো অবিলম্বে আদালত কর্তৃক অবরুদ্ধ করা একান্ত আবশ্যক। এর আগে, গত ৯ মার্চ জয়নুল হক ও তার পরিবারের ৪২টি বিও একাউন্ট জব্দের আদেশ দেয় আদালত। দুদিন পর ১১ মার্চ জয়নুল হক সিকদার পরিবারের ১৪ সদস্যর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ২১ এপ্রিল সিকদার গ্রুপের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ১৯ নং সেক্টরে ১০০ একর জমি জব্দের আদেশ হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি জয়নুল হক সিকদার মারা যান। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি মালিক তার সন্তানরা।

বাণিজ্য উপদেষ্টার সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এর সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলি আল হামুদি বৈঠক করেছেন। আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকালে সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার অফিস কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তাঁরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়ন, দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি, ভিসা চালু, বাণিজ্য-বিনিয়োগ ও সহযোগিতা বৃদ্ধি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন,সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের আর্থসামাজিক বিকাশে ভূমিকা রাখছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশীদের বিনিয়োগ রয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশেও বর্তমানে বিনিয়োগ পরিবেশ ভালো। সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার ও সেদেশের ব্যবসায়ীগণ এদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে বিনিয়োগ সুবিধা গ্রহণ করে লাভবান হতে পারে। এসময় তিনি বাংলাদেশী শ্রমিকদের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা সুবিধা পূনরায় চালু করার আহবান জানান। সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮০ হাজার বাংলাদেশী রয়েছে। দক্ষ শ্রমিক কোটায় এখনও বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদেশে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে সংযুক্ত আরব আমিরাত সেমি গভর্নমেন্ট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করতে চায়। বৈঠকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: আব্দুর রহিম খান উপস্থিত ছিলেন।

৩০ হাজার টাকার শুল্ক দিতে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ: শওকত আজিজ
বস্ত্র খাতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং ঘুষের অভিযোগ তুলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) গঠনমূলকভাবে সম্পদ ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ। বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এনবিআর ও এফবিসিসিআই আয়োজিত বাজেট– সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির ৪৫তম সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে শওকত আজিজ বলেন, আমাদের আগে যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক দেওয়ার পর বিটিএমএ নিজেই ছাড়পত্র দিতো। তখন কোনও জটিলতা ছিল না। কিন্তু এখন এনবিআর পুরো বিষয়টি নিজের হাতে নেওয়ার পর প্রতিটি ধাপে ছাড়পত্র নিতে হয়, আর সেখানে ঘুষের কালচার গড়ে উঠেছে। ৩০ হাজার টাকার শুল্ক জমা দিতে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। তিনি আরও বলেন, এনবিআরের উচিত তার নিজস্ব সম্পদ গঠনমূলক কাজে ব্যবহার করা এবং ব্যবসা পরিবেশ সহজ করা। এইচএস কোড জটিলতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিটিএমএ সভাপতি। তিনি বলেন, একই পণ্যের একাধিক এইচএস কোড থাকায় ব্যবসায়ীদের বিভ্রান্ত হতে হয়। এক পণ্যের জন্য একটি নির্দিষ্ট এইচএস কোড নির্ধারণ করে দিলে এই জটিলতা কমবে। করপোরেট কর বিষয়ে বিটিএমএ’র প্রস্তাব তুলে ধরে শওকত আজিজ বলেন, যেভাবে তৈরি পোশাক খাতে ১২ শতাংশ কর নির্ধারণ করা হয়েছে, একই হারে বস্ত্র খাতেও কর আরোপ করা উচিত। কারণ বস্ত্র ও পোশাক খাত একে অপরের পরিপূরক। শিল্পবান্ধব ও স্বচ্ছ নীতিমালার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, শুধু নীতির কথা বললেই হবে না, প্রয়োগেও স্বচ্ছতা ও সহজীকরণ নিশ্চিত করতে হবে।

বাস্তবসম্মত ও ব্যবসাবান্ধব বাজেট প্রণয়নের আশ্বাস অর্থ উপদেষ্টার
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট বাস্তবসম্মত ও ব্যবসাবান্ধব হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এনবিআর এবং এফবিসিসিআইয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরামর্শক কমিটির ৪৫তম সভায় তিনি এ কথা জানান। সভায় সভাপতিত্ব করেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এবারের বাজেট হবে বাস্তবসস্মত। বাজেটে চেষ্টা করবো ব্যবসায়-বাণিজ্যের পরিবেশ আরও সহজ করার।’ অর্থ উপদেষ্টা জানান, দেশে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) বৃদ্ধির লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বেশকিছু বিনিয়োগকারীর সঙ্গে আলোচনা চলছে। পাশাপাশি, আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংকের সঙ্গেও আলোচনা হচ্ছে। শুধু সরকারি খাত নয়, বেসরকারি খাতের টেকসই উন্নয়নে সরকার কাজ করছে। ‘আমাদের ভুল-ত্রুটি হতে পারে, তবে আমরা আপনাদের জন্যই কাজ করছি।’ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বর্তমান সরকারের লক্ষ্য হলো ব্যয় নির্ধারনের ক্ষেত্রে ন্যায্যতা ভিত্তিক এবং লক্ষ্যভিত্তিক বাজেট প্রণয়ন করা।’ ব্যবসায়, বাণিজ্যের পরিবেশ উন্নয়নে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানান বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। এ সময় বেসকারি খাতের কাছে আরও সুনির্দিষ্ট এবং গঠনমূলক বাজেট প্রস্তাবনা আহ্বান করেন তিনি। সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান। এ সময়, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানকে দৃঢ় করতে ব্যবসায়িক খরচ (কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস) কমিয়ে আনা, বিনিয়োগ আকর্ষণ ও সুরক্ষা, বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, সুষম বিনিয়োগ সহায়ক মূদ্রা ও শুল্ক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা, শিপিং ও পরিবহন ব্যয় হ্রাস, সাশ্রয়ী ও গুণগত জ্বালানী নিশ্চিতকরণ, স্বচ্ছতা ও সুশাসন বাস্তবায়নের পাশাপাশি কর আদায়ের ক্ষেত্রে হয়রানি ও জটিলতা দূরীকরণের মাধ্যমে ব্যবসায়-বান্ধব কর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে আগামী বাজেটে বিশেষ আগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান জানান এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক। সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর চেয়ারম্যান মোঃ আবদুর রহমান খান বলেন, এনবিআর এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে দূরত্ব কমাতে কর ব্যবস্থাপনার ডিজিটাইজেশন একটি বড় ভূমিকা রাখবে। ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সেবা ও অভিযোগ নিয়ে কাজ করার লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন ডিজিটাইজেশন প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে জানান তিনি। সভায় উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে দেশের ব্যবাসার পরিবেশ উন্নয়নে খাতভিত্তিক প্রস্তাবনা তুলে ধরেন বিভিন্ন চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান, এফবিসিসিআই’র মহাসচিব মোঃ আলমগীর, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষ ঘেরাও কাস্টমস-ট্যাক্সের কয়েক শত কর্মকর্তার
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তর ঘেরাও করেছেন সহস্রাধিক কাস্টমস ও ট্যাক্স কর্মকর্তা। রাজস্ব নীতি ও বাস্তবায়ন বিভাগ গঠনে গোপন অধ্যাদেশ ঠেকাতে তীব্র আন্দোলনের ডাক দেন তারা। কাস্টমস হাউস, কর দপ্তর, বন্দর, বন্ড, আমদানি-রপ্তানি, সামগ্রিক অর্থনীতি অচল হয়ে যাওয়ার আশংকাও করছেন অনেকে। বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল থেকে রাজস্ব ভবনে এনবিআরের চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে অবস্থান নেন তারা। যদিও এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান এখনো এনবিআরে আসেননি। এর আগে, মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাজস্ব নীতি পৃথককরণ অধ্যাদেশ ইস্যুতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে অবস্থান নেন কাস্টমস ও ট্যাক্স ক্যাডারের শতাধিক কর্মকর্তারা। উল্লেখ্য, রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা পৃথক করার খসড়া অধ্যাদেশ নিয়ে অসন্তোষ শুরু হয় আগেই। ট্যাক্স ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের অভিযোগ, যেভাবে খসড়া তৈরি করা হয়েছে, তাতে রাজস্ব নীতির নিয়ন্ত্রণ কার্যত প্রশাসন ক্যাডারদের হাতেই চলে যাচ্ছে। রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনাকে আলাদা করার লক্ষ্য ছিল রাজস্ব ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির আধুনিকীকরণ, কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা এবং স্বাধীন পরিচালনার মাধ্যমে একে আরও টেকসই করা। গেজেট জারি হওয়ার পর এই অধ্যাদেশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে দুটি নতুন সংস্থা প্রতিষ্ঠা করবে-রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ। তবে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, খসড়াটি মূল উদ্দেশ্য থেকে সরে যেতে পারে। ফলে দুর্বল হয়ে যেতে পারে সংস্কার প্রক্রিয়া। রাজস্ব সংস্কার কমিটি পৃথকীকরণের বিষয়ে যে সুপারিশ করেছে, তা খসড়ায় ব্যাপকভাবে উপেক্ষিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কিছু কয়েকজন কর্মকর্তা ও কমিটি সদস্য। কর ও কাস্টমস ক্যাডারের পাশাপাশি ব্যবসায়ী, অর্থনীতি ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিংয়ের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রের পেশাদারদের নীতিনির্ধারণে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছিল সংস্কার কমিটি। কিন্তু খসড়ায় এই সুপারিশকে উপেক্ষা করায় নীতি ও ব্যবস্থাপনার ক্ষমতা প্রশাসন ক্যাডারদের হাতেই থেকে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তারা।
.jpeg)
হঠাৎ বিএসইসিতে ড. আনিসুজ্জামান ও এফআইডি সচিব
পুঁজিবাজারের টালমাটাল অবস্থায় হুট করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) গেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (এফআইডি) সচিব নাজমা মোবারেক। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে তারা বিএসইসিতে যান।সূত্র জানায়, তারা এখন কমিশনেরর সাথে মিটিং করছেন। এসময় কয়েকজন নির্বাহী পরিচালক এবং পরিচালক বিএসইসিতে অপেক্ষায় আছেন। তাদের সাথেও হয়তো মিটিং করবেন ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী ও নাজমা মোবারেক।

আরও দুই হাজার কোটি টাকার শরিয়াহ বন্ড ছাড়ছে সরকার
রাজশাহী বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতকরণ প্রকল্পে অর্থায়নের লক্ষ্যে সরকার দুই হাজার কোটি টাকার ইসলামি বন্ড (সুকুক) ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাত বছর মেয়াদী সুকুক বন্ডের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটি।মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেট ম্যানেজমেন্ট বিভাগ জানায়, আগামী ১৯ মে ইসলামি সিকিউরিটিজ সেকেন্ডারি মার্কেটে এই বন্ডের তালিকাভুক্তি কার্যক্রম শুরু হবে। বন্ড ইস্যুর আনুষ্ঠানিকতা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজন করা হবে।বন্ডটির অভিহিত মূল্য দুই হাজার কোটি টাকা। এ বন্ডে বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফা নির্ধারিত সময় অনুযায়ী পরিশোধ করা হবে। ইজারা পদ্ধতিতে সুকুক ইস্যু করা হবে যার মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ২০৩২ সালের ২০ মে।এ সুকুকে বিনিয়োগের বিপরীতে বিনিয়োগকারীদেরকে বার্ষিক ১০.৫০% হারে ভাড়া ষান্মাষিক ভিত্তিতে পরিশোধ করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে চলতি বা আল-ওয়াদিয়াহ্ চলতি হিসাব রয়েছে এরূপ সকল ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানি সরাসরি নিলামে অংশগ্রহণ করতে পারবে। এছাড়া, দেশি-বিদেশি ব্যক্তিপর্যায়ের বিনিয়োগকারীসহ বিমা কোম্পানি, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স ফান্ড বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে চলতি/আল-ওয়াদিয়াহ্ চলতি হিসাব রয়েছে এমন ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিলামে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।দেশি-বিদেশি ব্যক্তি, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা কোম্পানি, পেনশন ও প্রভিডেন্ট ফান্ডসহ সব ধরনের প্রতিষ্ঠান এই সুকুকে বিনিয়োগ করতে পারবে। এছাড়া বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে এই বন্ড হস্তান্তর ও লেনদেন করতে পারবেন।বন্ডটির দরপত্র গ্রহণ শুরু হবে আগামি ১৮ মে, সকাল ১০টায় এবং শেষ হবে ১৯ মে, দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে। ২০২৫ সালের ২০ মে নির্ধারণ করা হবে বন্ড ইস্যুর মুনাফার হার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সিকিউরিটিজ হিসাবে লেনদেন সম্পন্ন করা হবে।নিলামে অংশগ্রহণকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে রক্ষিত চলতি বা আল-ওয়াদিয়াহ্ চলতি হিসাব বিকলন এবং সিকিউরিটিজ হিসাব আকলন করে এ লেনদেন সম্পন্ন করা হবে

ওয়ালটনের তৈরি এসি কিনে ১০ লাখ টাকা পেলেন খুলনার মিঠুন
এসি কিনে পাওয়া ১০ লাখ টাকার চেক মিঠুন দত্তের হাতে তুলে দেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আমিন খান, ওয়ালটনের সিএমও জোহেব আহমেদ এবং ওয়ালটন প্লাজার চিফ সেলস এক্সিকিউটিভ অফিসার ওয়াহিদুজ্জামান তানভির। এবার বাংলাদেশের টেক জায়ান্ট ওয়ালটনের তৈরি ইউরোপের ঐতিহ্যবাহী এসিসি ব্র্যান্ডের এসি কিনে মিলিয়নিয়ার হয়েছেন খুলনার খালিশপুরের জুয়েলারি ব্যবসায়ি মিঠুন দত্ত। পেলেন ১০ লাখ টাকা। দেশব্যাপী চলমান ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২২ এর আওতায় কিস্তিতে এসি কিনে ১০ লাখ টাকা পাওয়ায় আনন্দের জোয়ারে ভাসছে মিঠুন দত্তের পরিবার। এর আগে চলতি সিজনে ওয়ালটনের ফ্রিজ কিনে মিলিয়নিয়ার হয়েছেন ফরিদপুরের কলেজ শিক্ষার্থী রাসেল ফকির, নেত্রকোণার খোকন মিয়া, রাজধানীর শনির আখড়ার আলী মর্তুজা ও সিলেটের কানাইঘাটের কাওসার আহমেদ। শনিবার (২৬ এপ্রিল, ২০২৫) বিকেলে খুলনার খালিশপুরে চিত্রালী শ্রমিক ময়দানে আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে মিঠুন দত্তের হাতে ১০ লাখ টাকার চেক তুলে দেন ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আমিন খান, চিফ মার্কেটিং অফিসার জোহেব আহমেদ এবং ওয়ালটন প্লাজার চিফ সেলস এক্সিকিউটিভ অফিসার ওয়াহিদুজ্জামান তানভির। আসন্ন ঈদ উৎসবকে সামনে রেখে ‘দেশজুড়ে তোলপাড়, ওয়ালটন পণ্য কিনে হতে পারেন আবারো মিলিয়নিয়ার’ স্লোগানে সারা দেশে চলছে ওয়ালটনের ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২২। এর আওতায় চলতি বছরের ঈদুল আজহা পর্যন্ত দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা ও পরিবেশক শোরুম থেকে ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিন অথবা বিএলডিসি ফ্যান কিনে ক্রেতারা পাচ্ছেন ১০ লাখ টাকা পাওয়ার সুযোগ। এছাড়া রয়েছে লাখ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচারসহ নিশ্চিত উপহার। ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২২ এর আওতায় মিঠুন দত্ত গত ১৬ এপ্রিল খালিশপুর ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তি সুবিধায় ৯৫ হাজার ৯৯০ টাকা মূল্যের দুই টনের এসিসি ব্রান্ডের একটি এসি কেনেন। এসি কেনার পর তার নাম, মোবাইল নম্বর এবং ক্রয়কৃত এসির মডেল নম্বর ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করা হয়। এরপর তার মোবাইলে ওয়ালটন থেকে ১০ লাখ টাকা পাওয়ার একটি মেসেজ যায়। চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে মিঠুন দত্ত জানান, মেসেজ পেয়ে প্রথমে বিশ্বাস হচ্ছিল না। পরে ওয়ালটন থেকে ফোন করে জানালে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত হন। তিনি বলেন, “ওয়ালটন এসি কিনে ১০ লাখ টাকা পাবো এটা কোনোদিন কল্পনাও করিনি। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। সাধারণ ক্রেতাদের এমন বিশাল সুবিধা দেওয়া ওয়ালটনের সেবামুলক ও মহৎ এক উদ্যোগ। এতে ক্রেতাদের মধ্যে দেশি পণ্যের প্রতি আগ্রহ ও বিশ্বাস সৃষ্টি হয়। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে আমার হাতে ১০ লাখ টাকা তুলে দিলো ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ। এই টাকা দিয়ে জমি কিনবো।” ওয়ালটনের সিএমও জোহেব আহমেদ বলেন, ওয়ালটন শুধু ব্যবসা করে না। মানুষের মুখে হাসিও ফোটাতে চায়। ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধশত গ্রাহক মিলিয়নিয়ার হয়েছেন। পুরস্কারের এসব অর্থে ইতোমধ্যেই অনেক সাধারণ মানুষের জীবন আমূল বদলে গেছে। এভাবেই ওয়ালটন দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখে চলছে। অনুষ্ঠানে আমিন খান বলেন, গ্রাহকদের বাড়তি সুবিধা দেয়ার পাশাপাশি দেশীয় পণ্য কেনায় আগ্রহী করে তুলতে ওয়ালটন দেশব্যাপী ডিজিটাল ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছে। ওয়ালটন এখন বাংলাদেশের একটি গর্বের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ ও আস্থা অর্জনের পাশাপাশি বিশ্বের অর্ধ-শতাধিক দেশে ইলেকট্রনিক্স পণ্য রপ্তানি করছে ওয়ালটন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন প্লাজার চিফ ডিভিশনাল অফিসার নুরুল ইসলাম ও আল মাহফুজ খান, রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার আব্দুল হান্নান, রিজিওনাল ক্রেডিট ম্যানেজার রাজীব ফেরদৌস, এসির ব্র্যান্ড ম্যানেজার খলিলুর রহমান, এসি সেলস মনিটরিংয়ের শাহরিয়ার আলম ও খালিশপুর ওয়ালটন প্লাজা ম্যানেজার রবিন মিয়াসহ ওয়ালটনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ।

ইসলামী ব্যাংক-ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের ঈদ রেমিট্যান্স ক্যাম্পেইন শুরু
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি ও ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের "স্পেশাল ঈদ রেমিট্যান্স ক্যাম্পেইন” শীর্ষক মাসব্যাপী ক্যাম্পেইন মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে উদ্বোধন করা হয়েছে। ক্যাম্পেইন চলাকালীন সময়ে ওয়ের্স্টান ইউনিয়নের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকে রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদেরকে ডিজিটাল ড্রয়ের মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে ৩টি করে মোট ১২টি ফ্রিজার উপহার প্রদান করা হবে। এছাড়া শাখা, উপশাখা ও এজেন্ট আউটলেট থেকে ৫০ হাজার রেমিট্যান্স সুবিধাভোগীকে ব্যাকপ্যাক প্রদান করা হবে। অনুষ্ঠানে ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (চলতি দায়িত্ব) মোঃ ওমর ফারুক খান প্রধান অতিথি হিসেবে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেব বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ আলতাফ হুসাইন। ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার, ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ মাহবুব আলম, মাহমুদুর রহমান, মুহাম্মদ সাঈদ উল্লাহ ও মোঃ মাকসুদুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ওভারসীস ব্যাংকিং ডিভিশন প্রধান মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন। ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ব্যাংকের সকল জোনপ্রধান, শাখাপ্রধান ও উপশাখা ইনচার্জগণ ভার্চুয়াল প্লাটফর্মের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত ছিলেন। মোঃ ওমর ফারুক খান তার বক্তব্যে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামী ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থা আরো বেড়ে গেছে এবং ইসলামী ব্যাংক তার আগের অবস্থানে ফিরে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, দেশের আহরিত রেমিট্যান্সের এক চতুর্থাংশ আসে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। এ সফলতায় ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নও অংশীদার। ২০১২ সাল থেকে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন ইসলামী ব্যাংকের সাথে রেমিট্যান্স সংগ্রহে কাজ করে আসছে। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। এ বছর ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মাধ্যমে ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স সংগ্রহের লক্ষ্য রেখে সকল শাখা, উপশাখা ও এজেন্ট আউটলেটকে সর্বোত্তম সেবা দেয়ার আহবান জানান।

টিসিবি'র সম্মাননা স্মারক পেল রূপালী ব্যাংক
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) কার্যক্রমে অন্যতম সহায়তাকারী হিসেবে সেবা প্রদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকারি মালিকানাধীন অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যিক ব্যাংক রূপালী ব্যাংক পিএলসিকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়েছে। গত বুধবার রাজধানীর আর্মি গলফ ক্লাবের গলফ গার্ডেনে আয়োজিত ' ট্রেড উইথ টিসিবি ' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ সম্মাননা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের কাছ থেকে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পক্ষে সম্মাননা স্মারক গ্রহন করেন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক মো. মঈনউদ্দিন মাসুদ এবং টিসিবি ভবন কর্পোরেট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. আবুল হোসেন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাওসার চৌধুরী এবং টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফয়সল আজাদ।

রেমিট্যান্স প্রবাহে কিছুটা কমেছে ডলারের দাম
বেড়েছে প্রবাসী আয়। গত কয়েক মাস ধরে দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসছে দেশে। এর সঙ্গে রপ্তানিতে বড় প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোর ওপর বকেয়া আমদানি বিল পরিশোধের চাপ ও ডলারের চাহিদা কমেছে। এতে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম কিছুটা কমেছে। রেমিট্যান্সের ডলার কিনতে ব্যাংকগুলো ১২২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ৬০ পয়সা রেট দিচ্ছে। এটা চলতি মাস এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহেও রেমিট্যান্সের ডলার সংগ্রহে ১২৩ টাকা থেকে ১২৩ টাকা ২০ পয়সা পর্যন্ত টাকা পর্যন্ত রেট দিতে হতো। সে হিসাবে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ডলারের দাম কমেছে ৫০ পয়সা থেকে ৭০ পয়সা পর্যন্ত। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকগুলোর ওভারডিউ পেমেন্টের পরিমাণ কমে এসেছে। এ কারণে এক্সচেঞ্জ রেটের ওপর আগে যে চাপটা ছিল, সেটাও কমে এসেছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার আগের তুলনায় এখন বেশি সহজ হয়েছে। আগামীতে ডলারের দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের একটা অংশ নতুন বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আগামী নির্বাচনের অপেক্ষা করছেন। বিনিয়োগ সংক্রান্ত আমদানিও বাড়ার সম্ভাবনা নেই। কয়েক মাসে ডলারের চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনাও নেই। তাছাড়া বিগত সরকারের সময়ে জ্বালানি খাতের যে ওভারডিউ পেমেন্টের চাপ ছিল সেটাও কমে এসেছে। বৃহস্পতিবার এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময়ে বাংলাদেশের শুধু বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে বকেয়া, এলএনজি ও তেলের পাওনা (বকেয়া) ছিল ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। গত আট মাসে সেটা কমিয়ে ৬০০ মিলিয়ন ডলারে নিয়ে আসা হয়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ রেমিট্যান্স পেয়েছে ২৩.৭৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮.৬ শতাংশ বেশি। অবশ্য টাকার বিপরীতে ডলার দর কিছুটা কমে আসার পেছনে মুদ্রাটির দাম ১২৩ টাকার নিচে রাখার নির্দেশনার প্রভাবও কিছুটা কাজ করছে বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা। ব্যাংকগুলোও খুব প্রয়োজন না হলে ১২৩ টাকার বেশি দরে ডলার কিনছে না। বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি শাখার এক কর্মকর্তা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, আমরা ডলারপ্রতি সর্বোচ্চ ১ টাকা মুনাফা করছি। ডলারের দাম মূলত সরবরাহ বাড়ার কারণে কমছে। গত দুই বছরের মধ্যে ডলারের সরবরাহ এখন ভালো অবস্থানে আছে।

বিশ্বব্যাংকের খাদ্য মূল্যস্ফীতির লাল তালিকায় বাংলাদেশ
বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত খাদ্য মূল্যস্ফীতি ঝুঁকিতে লাল শ্রেণিতে আছে বাংলাদেশ। প্রায় দুই বছর ধরে বাংলাদেশ এই শ্রেণিতে অবস্থান করছে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খাদ্যনিরাপত্তার হালনাগাদ পরিস্থিতি তুলে ধরে তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করেছে। প্রতি ছয় মাস পরপর এই চিত্র প্রকাশ করে থাকে সংস্থাটি। সেই অনুসারে, প্রায় দুই বছর ধরেই বাংলাদেশ লাল তালিকায় অর্থাৎ অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি। বিশ্বব্যাংক ১০ থেকে ১২ মাসের খাদ্য মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে খাদ্যনিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে থাকে। বাংলাদেশের পাশাপাশি আরো ১৪টি দেশ লাল শ্রেণিতে আছে। দেশগুলো হলো-কঙ্গো, অ্যাঙ্গোলা, ইথিওপিয়া, গাম্বিয়া, গিনি, মাদাগাস্কার, ঘানা, ভারত, লাওস, লেসেথো, তিউনিসিয়া, জাম্বিয়া, বেলারুশ ও রাশিয়া। খাদ্য মূল্যস্ফীতি কোন দেশে কত বেশি, তা বোঝাতে বিভিন্ন দেশকে চার শ্রেণিতে ভাগ করেছে বিশ্বব্যাংক। যেসব দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৩০ শতাংশ বা তার বেশি, সেসব দেশকে বেগুনি শ্রেণিতে, ৫ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে যেসব দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি, তাদের লাল শ্রেণিতে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ২ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে মূল্যস্ফীতির দেশগুলোকে হলুদ ও ২ শতাংশের কম মূল্যস্ফীতির দেশগুলোকে সবুজ শ্রেণিতে রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৭২টি দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে সংস্থাটির প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারির পর থেকে বিশ্ববাজারে কৃষি, শস্য পণ্য ৪ থেকে ৮ শতাংশ পর্যন্ত কমতে দেখা গেছে। কিন্তু সামনের দিনগুলোতে এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধির শঙ্কা রয়েছে। সরবরাহের সীমাবদ্ধতা ও আবহাওয়ার কারণে ভুট্টার দাম ১৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। তবে বিশ্ববাজারে চাহিদা কমে আসায় চালের দাম দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। খাবারের দাম নিয়ে সবচেয়ে ভালো আছে আটটি দেশ। সবুজ শ্রেণিভুক্ত দেশগুলো হলো-সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, সৌদি আরব, ম্যাকাও, চীন, ফ্রান্স, ফিনল্যান্ড ও বেনিন। উচ্চ খাদ্য মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় বিশ্বব্যাংকের তালিকায় টানা এক বছর ধরে সবচেয়ে খারাপ শ্রেণি বেগুনিতে আছে ছয়টি দেশ। এই দেশগুলো হলো মালাওয়ি, দক্ষিণ সুদান, হাইতি, মিয়ানমার, আর্জেন্টিনা ও তুরস্ক। উল্লেখ্য, প্রায় তিন বছর ধরে বাংলাদেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। তবে এক বছর ধরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেশি ছিল। টানা ১০ মাস খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ শতাংশের বেশি। ১০ মাস পর গত ফেব্রুয়ারিতে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের নিচে নামে। মার্চেও তা এক অঙ্কের ঘরেই ছিল। গত বছরের মার্চের পর খাদ্য মূল্যস্ফীতি আর এক অঙ্কের ঘরে নামেনি। এর মধ্যে গত জুলাইয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ১০ শতাংশে ওঠে, যা গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের পর থেকে এ বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত অর্থাৎ গত এক বছরে গড় খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

আরও বাড়লো রিজার্ভ
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনরুদ্ধারে ধীরে ধীরে ফিরছে স্থিতিশীলতা। রেমিট্যান্স প্রবাহের ধারা ইতিবাচক থাকায় রিজার্ভের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি। রবিবার (২৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, শনিবার (২৬ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশের মোট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ২১ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার। তবে বাস্তবে যে রিজার্ভ ব্যবহারযোগ্য, সেই ‘নিট রিজার্ভ’-এর হিসাব আরও ভিন্ন। আইএমএফকে জানানো হিসাবে- এসডিআর খাত, ব্যাংকগুলোর ফরেক্স ক্লিয়ারিং ব্যালেন্স এবং আকুর পাওনা বাদ দিয়ে বাংলাদেশের প্রকৃত ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘রিজার্ভে এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পেছনে মূল অবদান রাখছে প্রবাসী আয়। চলতি এপ্রিলের প্রথম ২৬ দিনেই রেমিট্যান্স এসেছে ২২৭ কোটি ১০ লাখ ডলার। শুধু গত মার্চ মাসেই রেমিট্যান্সের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ— এ মাসজুড়ে এসেছে ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স।’ বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস থেকে ধারাবাহিকভাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ দুই বিলিয়ন ডলারের ওপরে রয়েছে। জুলাইয়ে এসেছে ১.৯১ বিলিয়ন, আগস্টে ২.২২ বিলিয়ন, সেপ্টেম্বরে ২.৪০ বিলিয়ন, অক্টোবরে ২.৩৯ বিলিয়ন, নভেম্বরে ২.২০ বিলিয়ন, ডিসেম্বরে ২.৬৪ বিলিয়ন, জানুয়ারিতে ২.১৯ বিলিয়ন এবং ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ২.৫৩ বিলিয়ন ডলার। ধারাবাহিকভাবে টানা সাত মাস দুই বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স প্রবাহ অব্যাহত থাকার ফলেই রিজার্ভে এসেছে গতি। সাধারণত একটি দেশের রিজার্ভ অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় নির্বাহের জন্য পর্যাপ্ত হওয়া প্রয়োজন। বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে বাংলাদেশের তিন মাসের বেশি সময়ের আমদানি দায় মেটানো সম্ভব, যা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক বার্তা দেয়। অর্থনীতিবিদদের মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ এবং বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক ও প্রবাসী প্রণোদনার কার্যকর উদ্যোগ রিজার্ভে এই গতি ফেরাতে সহায়ক হয়েছে।

লিথিয়াম ব্যাটারির প্রকল্প করবে ওয়ালটন
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি উন্নতমানের লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি উৎপাদনের প্রকল্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রোববার (২৭ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। সূত্র অনুসারে, আলোচিত প্রকল্পের উদ্দেশ্য লিথিয়াম ব্যাটারির জন্য আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে বাজারে দেশের স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ও সাশ্রয়ী মূল্যের উন্নতমানের লিথিয়াম ব্যাটারি সরবরাহ করা। আলোচিত প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগামী বছরের মাঝামাঝি এই প্রকল্প বাণিজ্যিক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করতে পারবে বলে কোম্পানিটি আশা করছে। প্রকল্পটির বার্ষিক পণ্য বিক্রির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১৪৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এছাড়াও রোববার অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে গত ৩১ মার্চ, ২০২৫ তারিখে সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদন করা হয়।হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটি ৬৯৬ কোটি টাকা নীট মুনাফা করেছে। আলোচিত সময়ে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২২ টাকা ৯৯ পয়সা।

২৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২২৭ কোটি ১০ লাখ ডলার
২০২৫ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম ২৬ দিনে বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ে নতুন এক মাইলফলক অর্জিত হয়েছে। এই সময়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২২৭ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার (দুই দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার)। অবশ্য গত মার্চ মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে এসেছিল ২৯৪ কোটি ডলার, যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এপ্রিলের এই রেমিট্যান্স প্রবাহ গত বছরের এপ্রিল মাসের তুলনায় ৩৫ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের এপ্রিলের প্রথম ২৬ দিনে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৬৮ কোটি ৯ লাখ মার্কিন ডলার। ব্যাংকারদের ধারণা, এ ধারা অব্যাহত থাকলে পুরো এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্স তিন বিলিয়ন বা তিন হাজার কোটি ডলারের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী- এপ্রিল মাসের ২৬ দিনে বেসরকারি খাতে ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৯ কোটি ডলার। আর রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৮৫ কোটি ডলার। বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১১ কোটি ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘হুন্ডির দূরত্ব কমেছে, বন্ধ হয়েছে অর্থপাচার। তা ছাড়া খোলাবাজার ও ব্যাংকে রেমিট্যান্সের ডলারে একই রকম দাম পাচ্ছেন প্রবাসীরা। এসব কারণে বৈধ পথে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন। এতে বাড়ছে দেশের রেমিট্যান্সের পরিমাণ, একইভাবে বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।’ গত মার্চে মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়ে ছিলেন রেকর্ড ৩ হাজার ২৯০ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ।

ইসলামী ব্যাংকের শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৭ এপ্রিল) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু বকর রফীক এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (চলতি দায়িত্ব) মো. ওমর ফারুক খান এবং শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদসহ কমিটির অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

‘সহিংসতা যখন সমাজের ভাষা হয়, সেখানে মানবউন্নয়ন হয় না’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি সমাজজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ড. সেলিম জাহান। তিনি বলেছেন, কথা ও আলোচনার পরিবর্তে সব সংকট সব সমস্যার সমাধান করতে চাচ্ছি সহিংসতা বা সন্ত্রাসের মাধ্যমে। বাংলাদেশে সন্ত্রাস সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সহিংসতা আমাদের ভাষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সহিংসতা যখন একটা সমাজে ভাষা হয়, সেখানে মানবউন্নয়ন হয় না। রোববার (২৭ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর গ্রিন রোডে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রা: অর্জন, চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। ডিস্টিংগুইশড লেকচার সিরিজের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ (ডিবিএ) ও ক্লাব অব ফাইন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিং (সিএফএ) এ আলোচনার আয়োজন করে। দেশে ভৌত অবকাঠামোর অগ্রগতি হলেও কাঙিক্ষত উন্নয়ন হয়নি। বৈষম্যের কারণে একটি গোষ্ঠী রাষ্ট্রীয় কোষাগারকে নিজস্ব কোষাগারের মতো ব্যবহার করেছে বলেও অভিমত এই অর্থনীতিবিদের। বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি ক্রান্তিকাল পার করছে জানিয়ে তিনি বলেন, অর্থনীতিবিদরা প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে অনেক মাতামাতি করছেন। প্রবৃদ্ধি ৬.৪ শতাংশ না ৫.৯ শতাংশ। এই ফারাকে কিছু যায়-আসে না। অর্থনীতির অবস্থা যেটা আছে তা মানুষের জীবনে কতখানি উপকার দিচ্ছে। মূল্যস্ফীতির ফলে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমেছিল, তা আবারও বেড়েছে। ইউএনডিপির হিউমান ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট অফিসের সাবেক এই পরিচালক বলেন, অর্থনীতিতে বড় স্লথগতি এসেছে। বলা হচ্ছে আমাদের প্রবৃদ্ধি কমে যাবে। অর্থনীতি স্লথ থাকলে আমাদের যা অর্জন তা নষ্ট হবে। আইনশৃঙ্খলার অনুপস্থিতি ও আমরা একে অন্যের সঙ্গে যে ব্যবহার করছি- তা সমাজে একধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আজকের বাংলাদেশের সমাজজীবনে মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ- এই ব্যাপারগুলো বিস্মৃত প্রায়। সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের তাৎক্ষণিক কিছু সংস্কার দরকার। কিছু স্বল্পমেয়াদি ও কিছু দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রয়োজন আছে। অবস্থাভেদে আপনাকে নির্ভর করতে হবে কোন সংস্কার তাৎক্ষণিক করতে হবে। মানুষের পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকে গেছে তখন তাৎক্ষণিক সংস্কার করতে হবে, যাতে মানুষ স্বস্তি পায়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন স্থপতি মাহবুবা হক এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান। তারা তাদের বক্তব্যে জাতীয় উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে অ্যাকাডেমিক সংলাপের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব বিজনেসের ডিন অধ্যাপক ড. এম. এ. বাকি খালিলি, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান সারওয়ার আর. চৌধুরী, বিভিন্ন অনুষদের সদস্য, শিক্ষার্থী ও অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথি।

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে ‘সার্টিফাইড ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড প্রফেশনাল’ ট্রেনিং কোর্স অনুষ্ঠিত
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে ‘প্রথম সার্টিফাইড ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড প্রফেশনাল’ (সিআইটিপি) শীর্ষক তিন মাসব্যাপীবিশেষ ট্রেনিং কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠান গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. রাফাত উল্লা খান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন। সাভাপতিত্ব করেন আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (এআইবিটিআই) প্রিন্সিপাল আব্দুর রহিম। স্বাগত বক্তব্য দেন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তৗহি সিদ্দিকী। এআইবিটিআই আয়োজিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন সংক্রান্ত দক্ষতা বৃদ্ধির এ ট্রেনিং কোর্সে ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা ও প্রধান কার্যালয়ের মোট ৬১ জন নির্বাহী ও কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে মো. রাফাত উল্লা খান বলেন, ‘আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক সিআইটিপি সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম চালু করে ব্যাংকিং খাতে একটি মাইলফলক স্থাপন করেছে, যা প্রচলিত সিডিসিএস মানদণ্ডের চেয়েও অধিক উত্তম। এই উদ্যোগ আমাদের পেশাদারদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অত্যাধুনিক দক্ষতা দেবে, যা কমপ্লায়েন্স নিশ্চিতকরণ, ঝুঁকি প্রশমন এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।’ এআইবি-সিআইটিপি প্রোগ্রামটি ব্যাংকের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও বাণিজ্য উৎকর্ষেও প্রতীক, যা ব্যাংকারদের ট্রেড ফাইন্যান্স, এলসি অপারেশন, আইসিসি প্রকাশনা, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সব নিয়ম-কানুন, প্রথা ও ক্রস-বর্ডার লেনদেন সম্পর্কে গভীর জ্ঞান দিয়েছে। বাংলাদেশের বৈশ্বিক বাণিজ্যের সম্প্রসারণের সাথে সাথে এ ধরনের উদ্যোগ জটিল আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে গতিশীলতা নেভিগেট করার জন্য দক্ষ কর্মীবাহিনী গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক উদ্ভাবন, পেশাদার উন্নয়ন এবং ইসলামী ব্যাংকিংয়ে নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের বাণিজ্য অর্থায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।

এনআরবি ব্যাংকের ইয়ার টুডেট বিজনেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত
এনআরবি ব্যাংক পিএলসির ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহী জোনের জন্য ইয়ার টুডেট বিজনেস কনফারেন্স ২০২৫ (প্রথম ত্রৈমাসিক) অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) কর্পোরেট প্রধান কার্যালয়ে এ কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং বর্তমান চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ, পরিচালক একেএম মিজানুর রহমান, শেখ মো. সেলিম, মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী, শেখ মতিউর রহমান, প্রফেসর শরীফ নুরুল আহকাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধাননির্বাহী কর্মকর্তা তারেক রিয়াজ খান। উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচলক মো. শাহীন হাওলাদার, মো. আলী আকবর ফরাজী ও আনোয়ার উদ্দিনসহ করপোরেট হেড অফিসের বিভাগীয় প্রধানরা এবং ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহী জোনের সব শাখা ব্যবস্থাপক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সভায় চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে বিভিন্ন শাখা ও বিভাগসমূহের অর্জিত ব্যবসায়ের অগ্রগতি নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয় এবং লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সাথে প্রয়োজনীয় পরিপালন বিধিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করাহয়।

রূপালী ব্যাংকের দিয়াবাড়ী মেট্রোরেল উপশাখা উদ্বোধন
আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা নিয়ে রাজধানীর উত্তরায় দিয়াবাড়ীতে রূপালী ব্যাংক পিএলসির ৩৫তম উপশাখা হিসেবে দিয়াবাড়ী মেট্রোরেল উপশাখা উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) প্রধান অতিথি হিসেবে উত্তরা মডেল টাউন কর্পোরেট শাখার নিয়ন্ত্রণাধীন উপশাখাটির উদ্বোধন করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলাম। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের জিএম মো. কামাল আনোয়ার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রূপালী ব্যাংক বিভাগীয় কার্যালয় ঢাকা উত্তরের মহাব্যবস্থাপক শেখ মুনজুর করিম। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী ও এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

কারখানায় গ্যাস সরবরাহে স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করবে সরকার: প্রেস সচিব
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের কারখানাগুলোতে স্বচ্ছন্দে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দোহায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেছেন, ‘অনেকে বলেছেন, গ্যাসের অভাবে তারা কারখানা স্থাপন করতে পারছেন না। তাই, আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করতে চাই যাতে পর্যাপ্ত গ্যাস (বিদেশ থেকে) আনা যায়।’ শফিকুল আলম বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দোহা সফরের সময় কাতার এনার্জির সঙ্গে একটি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে মিগগির স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনালটি স্থাপন করা হবে।’ প্রধান উপদেষ্টার দোহা সফর সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘এই সফর অত্যন্ত সফল এবং ফলপ্রসূ হয়েছে। আমি বলব এটি সবচেয়ে সফল এবং অত্যন্ত আকর্ষণীয় সফরগুলোর মধ্যে একটি।’ শফিকুল আলম আশা প্রকাশ করেছেন, এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুনাম বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে এবং অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে আসবেন। দেশের অর্থনীতির উত্থান-পতনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সময় ৩২০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ ছিল, কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তা কমিয়ে ৬০ কোটি মার্কিন ডলারে নিয়ে এসেছে। প্রেস সচিব বলেছেন, ‘অবশিষ্ট ঋণ কয়েক মাসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘এটি বিশ্বের বাইরে ইতিবাচক সংকেতের অনুভূতি যে আমরা ব্যবসার জন্য প্রস্তুত।’ চার দিনের সফর শেষে প্রফেসর ইউনূস আজ শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে যোগদানের জন্য দোহা থেকে ইতালির রোমের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।

স্বস্তি ফেরেনি চালের বাজারে, আরও বাড়তে পারে দাম!
চালের বাজারের অস্থিরতা কাটছেই না। বরং আরও বেড়েছে। এর মধ্যেই খাদ্য উপদেষ্টার ‘বাজারে চালের দাম কিছুটা বাড়বে’-এমন আভাসের পর নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও বাজার বিশ্লেষকরা। গত কয়েক মাস ধরেই অস্থির দেশের চালের বাজার। বিভিন্ন সময় সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে দাম কমানোর কথা বলা হলেও হয়নি কোনো লাভ। কাজে আসেনি চাল আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের ঘোষণাও।সবশেষ গত ১৩ এপ্রিল বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছিলেন, ‘দুই সপ্তাহের মধ্যে বাজারে বোরো ধানের চাল আসবে। নতুন ধান উঠলে চালের বাজার আরও সহনীয় হয়ে উঠবে।’ তবে বাণিজ্য উপদেষ্টার আশ্বাসের ঠিক উল্টো কথা জানালেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে ধান সংগ্রহ অভিযান উদ্বোধন অনুষ্ঠানে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ধান-চাল ক্রয় নিয়ে কোনো সিন্ডিকেট আর হবে না, হতে দেবে না সরকার। কৃষকের স্বার্থে বিগত বছরের চেয়ে কেজিতে চার টাকা বেশি দামে ধান-চাল ক্রয় করছে সরকার। সরকারের বেশি দামে কেনার কারণে বাজারে চালের দাম কিছুটা বাড়বে।’এতে কৃষক লাভবান হবেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘কৃষক পরিশ্রম করে ধান উৎপাদন করে তাদের উপযুক্ত মূল্য দিতে না পারলে কৃষক ধান চাষের আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। সরকারিভাবে ধান চালের দাম নির্ধারণ না করা হলে মধ্যস্বত্বভোগী ভোগী ব্যবসায়ীরা কম দামে কৃষকের ধান কিনে নেবে তাই সরকারিভাবে ধান চালের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।’এই যখন অবস্থা তখন বাজার পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কায় ভোক্তারা। জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘এক উপদেষ্টা বলছেন চালের দাম কমবে, আরেক উপদেষ্টা বলছেন দাম বাড়বে। বাজার আসলে কোন দিকে যাবে?’এদিকে চড়া চালের বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট ৮৬-৯০ টাকা, আটাইশ ৬০-৬২ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১১৬-১১৮ টাকায়।দেশের প্রধান এই খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়ে সাধারণ মানুষ বলছেন, ‘বাজার কাঠামো ঠিক রাখতে সরকার ব্যর্থ হলে বেকায়দায় পড়বেন ভোক্তারা।’মাসুম আহমেদ নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘চালের দাম দিনে দিনে বাড়ছেই। এরমধ্যে সরকার বলছে চালের দাম আরও বাড়তে পারে। যা ব্যবসায়ীদের দাম বাড়ানোর সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। যার প্রভাব সব শ্রেণির ভোক্তার ওপরই পড়ছে। সরকারের উচিত বাজারে তদারকি বাড়ানোর পাশাপাশি মজুতদারদের সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া।’ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘নতুন ধান ওঠা শুরু হয়েছে। চালের দাম বাড়ানোর কোনো কারণ নেই এই মুহূর্তে।’ রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বরিশাল রাইছ এজেন্সির বিক্রেতা জানান, বোরো মৌসুমের ধান ওঠা শুরু হয়ে গেছে। এখনও নতুন চাল বাজারে আসেনি। আসলে দাম কিছুটা কমতে পারে।চালের বাজারে স্বস্তি ফেরাতে মিল পর্যায়ে অভিযান চালানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘মিল মালিকদের কারসাজিতে চালের দাম কমছে না। সরকার মিলে অভিযান পরিচালনা করে না। মিলে অভিযান করলে চালের দাম কমতে বাধ্য।’আর মনিটরিং না বাড়ালে চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা। কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, ‘সরকারিভাবে চালের দাম চার টাকা বাড়ানো হোক আর না হোক ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াবেই। কারণ তারা দাম বাড়িয়ে সুবিধা করতে পারছেন। দাম বাড়ানোর পর তাদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়নি কখনও। তাই উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ার চেয়ে ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফার মানসিকতাই মূল কারণ।’বাজারে নিয়মিত তদারকি করা হয় না অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘অনিয়ন্ত্রিত ও তদারকিহীন বাজার এভাবেই চলবে। ভোক্তাদের নাভিশ্বাস হলেও সরকারি দফতর নীরব থাকে, এটাই প্রচলিত হয়ে আসছে।’

২৫ এপ্রিল, ২০২৫: দেশের বাজারে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ?
টানা ৪ দফা বাড়ানোর পর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। সবশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দেশের বাজারে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে নতুন দামে। তবে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে রুপা। সবশেষ বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণের দাম কমিয়েছে বাজুস। এবার স্বর্ণের ২২ ক্যারেটের এক ভরিতে ৫ হাজার ৩৪২ টাকা কমিয়েছে সংগঠনটি।নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়ছে ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৯৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৪১ হাজার ১৬৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৮০ টাকায়।বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে। এর আগে, সবশেষ গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে একলাফে ৫ হাজার ৩৪২ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৬৯ হাজার ৮০৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ২০ হাজার ৫১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছিল গত ২৩ এপ্রিল থেকে। এ নিয়ে চলতি বছর ২৬ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হয়েছে স্বর্ণের দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ১৯ বার, আর কমেছে মাত্র ৭ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার। স্বর্ণের দাম কমলেও দেশের বাজারে আগের রেকর্ড দামেই বিক্রি হচ্ছে রুপা। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮৪৬ টাকায়। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৭১৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৩৩৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৫০ টাকায়।