
শিক্ষকদের প্রতিবাদের মুখে ভিসি বাসভবনে তালা না দিয়ে ফিরে গেল কুয়েট শিক্ষার্থীরা
শিক্ষকদের প্রতিবাদের মুখে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যের বাসভবনে তালা না দিয়ে ফিরে গেছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় ১৮ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনে তালা দিতে গেলে শিক্ষকরা প্রতিবাদ জানান। কুয়েটের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ১৮ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে যান। এ সময় তারা হ্যান্ডমাইকে উপাচার্যের বাসভবনে যারা রয়েছে তাদের ৫ মিনিটের মধ্যে বেরিয়ে বাসা খালি করার আহ্বান জানান। ভেতরে তখন উপাচার্য শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠক করছিলেন। একপর্যায়ে শিক্ষকরা গেটের কাছে এসে শিক্ষার্থীদের তালা লাগানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান। তালা লাগানো হলে শিক্ষকরা গণপদত্যাগের হুঁশিয়ারি দেন। তখন শিক্ষার্থীরা তালা না দিয়ে ফিরে যান। পরে শিক্ষার্থীরা জানান, তারা নিজেরা বসে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করবেন।

মধ্যরাতে বুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমির জেল থেকে পালানোর ঘটনায় বুয়েট ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১১টায় বুয়েট শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিল থেকে তারা দ্রুত বিচার কার্যকর ও পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের দাবি, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। জেল পলাতক মুনতাসির আল জেমিসহ তিন আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, কারা কর্তৃপক্ষ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জেল পলায়নের দায় এড়াতে পারে না। এ ঘটনায় কোনো গড়িমসি হলে আরও বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা। এর আগে আবরার ফাহাদের ছোট ভাই ও বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজ ফেসবুকে এক পোস্টে দাবি করেছেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে মুনতাসির আল জেমি কারাগার থেকে পলাতক রয়েছেন। তবে ছয় মাস পর বিষয়টি জানানো হলো বলে অভিযোগ তার। প্রসঙ্গত, আসামির নাম-ঠিকানা হচ্ছে— মুনতাসির আল জেমি, পিতা- আব্দুল মজিদ, মাতা- জোসনা বেগম, ঠিকানা: ৫/১ বাউন্ডারি রোড, নতুন বাজার, কোতোয়ালি, ময়মনসিংহ।

রাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ‘প্রতীকী জানাজা’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর প্রতীকী জানাজা পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এর আগে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ‘দালালি না রাজপথ? রাজপথ, রাজপথ’, ‘সন্ত্রাসীদের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘সুশাসন চাই, জীবনের নিরাপত্তা চাই’, ‘আমার মাটি আমার মা, ধর্ষকদের দেব না’, ‘ধর্ষকদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ধর্ষক ও খুনিদের ফাঁসি চাই’, ‘এক দুই তিন চার, জাহাঙ্গীর গদি ছাড়’, ‘আইনশৃঙ্খলার বেহাল দশা, ইন্টেরিম করে রং তামাশা’ প্রভৃতি স্লোগান ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। সমাবেশে ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মেহেদী মারুফ বলেন, ‘বিগত কয়েক দিন দেশে ধর্ষণ, খুন, ছিনতাই, রাহাজানি, চাঁদাবাজি থেকে এহেন কোনো কাজ নেই, যা হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সরকারকে বলতে চাই, আপনারা যদি নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন তাহলে পদত্যাগ করুন।’ ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মতো অযোগ্য উপদেষ্টা এ দেশের মানুষের প্রয়োজন নেই।’ সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আজাদ বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে দেশে নির্যাতন-নিপীড়ন বেড়েই চলছে। এর মূল কারণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নতজানু নীতি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, দয়া করে এই নতজানু নীতি এ দেশে আর চালাবেন না। এই দেশ নতুন করে যেমন বিপ্লবী গতিতে স্বাধীন হয়েছে, তেমনই বিপ্লবী গতিতেই চলবে। ২৪-এর অভ্যুত্থানে হাজারো শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে নতুন বাংলায় আর কারও ঠিকাদারি আমরা মেনে নেব না।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ
দেশের আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি ও পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থতার অভিযোগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা ৫ মিনিট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে আরিচাগামী লেনে ২০ মিনিট অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে সড়কে আসেন। এসময় শিক্ষার্থীদের ‘দফা এক দাবি এক , জাহাঙ্গীরের পদত্যাগ’, ‘সারাদেশে ছিনতাই কেনো, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘রক্তের দাম চাই, নিরাপদ দেশ চাই’, ‘মা বোনদের নিরাপত্তা দে, নইলে গদি ছাইড়াদে’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে দেখা যায়। অবরোধে মার্কেটিং বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামন উজ্জ্বল বলেন, সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে, কিন্তু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাইনি। অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় জুলাই আন্দোলন কারীদের ওপর যখন বর্বর হামলা চলছিল, তখন তিনি ডেভিল হান্টের নামে বিপ্লবীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করেছেন। আপনি যদি জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হন, তাহলে দ্রুত পদত্যাগ করুন। আমরা বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজে নেব। তিনি আরও বলেন আমরা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই, প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে এখনো আওয়ামী দোসররা বহাল রয়েছে। তাদের দ্রুত চাকরিচ্যুত করতে হবে। সারাদেশে খুন, ধর্ষণ ও ছিনতাইকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। আজকের মধ্যে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নিলে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে । অবরোধে ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্র অধিকার সম্পাদক রাকিব হোসেন বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল এখানে সুশাসন, মানবাধিকার ও তার নৈতিক অধিকার ফিরে পাবে। কিন্তু হচ্ছে তার বিপরীত। মানুষ প্রতিনিয়ত ধর্ষণ, ছিনতাই ও হত্যার শিকার হচ্ছে। এর দায়ভার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকেই নিতে হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যদি তার দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবে। অন্যথায় ছাত্র-জনতা গদি থেকে নামাতে বাধ্য হব। জিয়া উদ্দীন আয়ানের সঞ্চালনায় সমাপনী বক্তব্যে তুলনানামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর জনগণের আকাঙ্ক্ষার সরকার দায়িত্বগ্রহণ করে। কিন্তু জনগণ যে আকাঙ্ক্ষা থেকে এই সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছে তারা সে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সরকারের কাছে বলবো, যথাযথ পদক্ষেপ নিতে যদি কোনো নির্দিষ্ট মহল বাঁধা দেয় তাহলে আপনারা জনগণের কাছে তা পরিষ্কার করুন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার যথাযথ পদক্ষেপ নিন।

চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রশিবিরের হামলা
চট্টগ্রাম কলেজ প্রাঙ্গণে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠেছে ছাত্রশিবির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ছাত্রদলের চারজন আহত হয়েছেন। যদিও হামলার ঘটনা অস্বীকার করেছে ছাত্রশিবির। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শেরেবাংলা হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় আহতরা হলেন- ওমর ফারুক সাগর, রেদোয়ান ইসলাম, জাহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ কাইফ ও মোরশেদুল ইসলাম। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ওমর ফারুক সাগর বলেন, চট্টগ্রাম কলেজে আজ রোববার ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছিল। আমন্ত্রণ পেয়ে আমরা গিয়েছিলাম। শেরেবাংলা হলের সামনে যাওয়ার পর শিবিরের নেতাকর্মীরা আচমকা এসে আমাদের ওপর হামলা করে। তারা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ছাত্রদল নেতা ফারুক চট্টগ্রাম কলেজে থাকতে পারবে না। এ ছাড়া আমাদের ছাত্রদল নেতা রিজওয়ান জাহিদুল ইসলাম, কাইফ ও মোরশেদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। আমি ২৪-এর জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন যোদ্ধা ও গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম। তারপরও তারা আমার ওপর হামলা চালায়। যারা হামলা চালিয়েছে তাদের কথা হলো, চট্টগ্রাম কলেজে শিবির থাকবে, কিন্তু ছাত্রদল থাকতে পারবে না।চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রশিবিরের হামলাআদালত প্রাঙ্গণে বাদীর ওপর হামলা তিনি বলেন, শিবির নেতা শামীম আব্দুল্লাহসহ ৩০-৩৫ জন কর্মী হামলায় অংশ নেয়। এ সময় আমিসহ চট্টগ্রাম কলেজের পলিটেকনিক সায়েন্সের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম, মোরশেদুল ইসলাম, রেদোয়ান ইসলাম, মোহাম্মদ কাইফসহ অনেকে আহত হয়েছেন। আহতরা বর্তমানে চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিষয়টি আমরা চকবাজার থানার ওসি এবং বিএনপির সিনিয়র নেতাকর্মীদের জানিয়েছি। তারা যেভাবে পরামর্শ দেবেন, আমরা পরে সেভাবে ব্যবস্থা নেব। আমরা তাদের দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছি। হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি তানভীর হোসেন জুয়েল বলেন, আপনারা জানেন চট্টগ্রাম কলেজছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়েছে। কমিটিতে যারা ছিল তাদের কোনো সক্রিয়তা নেই। ওখানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী ও সমন্বয়করা আছেন। তারাও চাচ্ছে না যে, ছাত্র রাজনীতি সক্রিয় হোক। পাশাপাশি ছাত্র সংগঠনগুলোও চান না ছাত্র রাজনীতি সক্রিয় হোক। যার কারণে আমরাও ওখানে গিয়ে গ্যাদারিং করিনি। কলেজের বাইরে বাইরে সংগঠন করতেছি। তিনি বলেন, আজকের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি, যেখানে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ সেখানে ওরা বহিরাগত নিয়ে ছাত্রদের মাঝে ফরম বিতরণ করতেছিল। তাদের পরনে ড্রেস, আইডি কার্ড ছিল না। তখন কিছু সাধারণ শিক্ষার্থী এসে তাদের বাধা দিয়েছে। তারা বলেছে, এখানে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ। আপনারা দলীয় পরিচয়ে এখানে আসছেন, বাইরে গিয়ে ফরম বিতরণ করেন। এ সময় তাদের কয়েকজনকে মারমুখী অবস্থায় তেড়ে আসছে। তখর উভয়পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি হয়। এ ঘটনা তিলকে তাল করে তারা শিবির হামলা করেছে বলে প্রচার করছে। আর শিবির যদি হামলা করে থাকে তাহলে তার নাম, পদ-পদবি প্রকাশ করুক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ছাত্রদলের ছেলেরা আমাকে বিচার দিয়েছে তারা লিফলেট বিতরণ করার সময় কিছু ছেলে এসে টানাহেঁচড়া করেছে। যাদের নামে অভিযোগ দিয়েছে আমি তাদের ডেকে জিজ্ঞেস করেছি। তারা বলেছে তাদের বার্ষিক ক্রীড়ায় ওরা (ছাত্রদল) এসে জটলা করছে এবং অভিযুক্তরা বহিরাগত। আমি তাদের কিছুক্ষণ কাউন্সিলিং করেছি।

পাবিপ্রিবিতে দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, দপ্তর প্রধান ও কর্মকর্তাদের নিয়ে দুইদিনব্যাপী ‘ফাইল অ্যান্ড ফিনানসিয়াল ম্যানেজমেন্ট অব ডিফরেন্ট অফিসেস’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. শামীম আহসান। শনি ও রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল ক্লাস রুমে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল। রিসোর্স পার্সন হিসেবে কর্মশালা পরিচালনা করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক স্কুলের উপ-রেজিস্ট্রার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং অর্থ ও হিসাব অফিসের অবসরপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক জি. এম. আনিসুর রহমান। শনিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, অফিস ব্যবস্থাপনায় আইন ও প্র্যাকটিস গুরুত্বপূর্ণ। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে অফিস ব্যবস্থাপনা উন্নত হচ্ছে। সরকারি আইন তথা পিপি আর-৮ মেনে কেনাকাটা করতে হবে। ফাইলের আধুনিক কৌশল ও স্বচ্ছতার জন্য ডি নথি চালু হতে যাচ্ছে। রোববার সমাপনী দিনে উপ-উপাচার্য বলেন, চেয়ারের দায়িত্ব হল আইন দিয়ে সবকিছু পরিচালনা করা। আইন মেনে অফিস পরিচালনা করতে হবে। সরকারি দায়িত্ব পালনে ব্যক্তিগত ইচ্ছা, অনিচ্ছা, রাগ-বিরাগের কোন সুযোগ নেই। ফাইল তৈরি করতে হবে ডকুমেন্টসসহ। একটা ফাইলে ইতিহাস থাকতে হবে। কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. শামীম আহসান বলেন, সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখতে হবে সরকারি অর্থ পাওয়ার চেয়ে ব্যয় করা কঠিন। আইন-কানুন জানলে অফিস পরিচালনা ও অর্থ ব্যয় করা কঠিন কিছু নয়। আইন জানার জন্য প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। ই নথি চালু হলে অফিস ব্যবস্থাপনা উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বচ্ছতা বাড়বে, সময় কমবে। প্রথম দিনের কর্মশালায় ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও দপ্তর প্রধানরা এবং দ্বিতীয় দিনে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। দুইদিনের অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. শামীম রেজা। রোববার সমাপনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইকিউএসি’র অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো. আসফাকুর রহমান।

পদ-পদবি দিয়ে শিক্ষকতা পেশায় টিকে থাকা সম্ভব নয়: ঢাবি ভিসি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, শুধুমাত্র চাকরির অভিজ্ঞতা, পদবি বা পেশাগত অবস্থান দিয়ে এই পেশায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। একাডেমিক পরিচয়ের পাশাপাশি আমাদের মধ্যে প্রকৃত শিক্ষকসুলভ গুণাবলি বিকাশ করতে হবে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স সেল (আইকিউএসি) আয়োজিত নবনিযুক্ত শিক্ষকদের পাঠদানের গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এ কথা বলেন তিনি। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথি ও রিসোর্স পার্সন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলাইমান। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. হায়দার আলী বলেন, ‘আমাদের এখানে নতুন কিছু শিক্ষক যোগ দিয়েছেন, যারা নিজেদের যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এসেছেন। তারা কোনো রাজনৈতিক দলের আশ্রয়ে বা সুপারিশের মাধ্যমে আসেননি। আমি আশা করি, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানোন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন। অতীতে আমরা দেখেছি, নিজেদের যোগ্যতা আমরা অনেক সময় অবমূল্যায়ন করেছি। কিন্তু আপনারা তরুণ, আর তরুণরাই সমাজ পরিবর্তনের অগ্রদূত। ঐক্যবদ্ধ হলে আপনারাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারবেন। শিক্ষকরা ছাত্রদের আদর্শ, তাই আপনাদের অবশ্যই গুণী ও দক্ষ শিক্ষক হয়ে উঠতে হবে।’ প্রধান অতিথি অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘শিক্ষকতা পেশার একটি বিশেষ দায়বদ্ধতা রয়েছে। এটি অন্যান্য পেশার মতো শুধু দায়িত্ব পালন করে শেষ হয়ে যায় না; বরং সমাজের প্রতি এক গভীর দায়িত্ববোধও বহন করতে হয়। এজন্য আমাদের যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে।’ এ ছাড়াও তিনি নবীন শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে শ্রেণিকক্ষে কার্যকর পাঠদানের কৌশল, নীতি-নৈতিকতা এবং একাডেমিক উৎকর্ষতা অর্জনের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। উল্লেখ্য, নবীন শিক্ষকদের পাঠদানের মানোন্নয়নে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়ার ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী।

উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৬ দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কুয়েট শিক্ষার্থীরা
৬ দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা৬ দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৬ দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকেই শহীদ মিনারে অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা সমাবেশের মাধ্যমে দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, উপাচার্য আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। কুয়েট ক্যাম্পাস থেকে আর্মি ক্যাম্প মাত্র ১০ মিনিটের দূরত্ব। সেই আর্মি আসতে ৪ ঘণ্টা লেগেছিল। ফলে রক্তাক্ত হয়েছে আমাদের ভাইয়েরা। তাদের অনেকে ঢাকায় ভর্তি আছে। মাথায় ২৬টি সেলাই লেগেছে এমন অবস্থায় আছে। হাতের হাড় তিন ভাগ হয়েছে। ডাক্তার বলছে, হাত কেটে ফেলতে হবে বা ওপরওয়ালার ওপর আস্থা রাখতে হবে। আর কোনও কিছু করার নেই। কুয়েটের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর একটা মানুষ কুয়েট ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে বহিরাগত ছাত্রদল, যুবদল সন্ত্রাসীরা আমাদের জখম করেছে। ৬ দফা দাবি কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে, ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সংযুক্ত থাকলে তাকে বহিষ্কার এবং ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। ছাত্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, যারা আহত হয়েছে তাদের সহায়তা দিতে হবে এবং কুয়েটের প্রশাসনকে স্বীকার করতে হবে যে ছাত্রদল দ্বারা সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে এবং যারা এই সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে সংযুক্ত ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং মামলা করতে হবে। ৬ নং দাবি হলো, উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তারা বলেন, যে সরকার ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে তার কাছ থেকে কোনও উত্তর না পেয়ে আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। আমরা কাউকে কষ্ট দিতে আসিনি। আমরা জানাতে এসেছি, আমরা নিরাপদ একটা ক্যাম্পাস চাই। এ সময় তারা জানান, একটি দল এখন প্রধান উপদেষ্টার কাছে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেবে এবং ফিরে এসে পরবর্তী প্রেস ব্রিফিং করবে।

পবিপ্রবিতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ঘে আহত ২
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুজন আহত হয়েছেন। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্ত বাংলা চত্বরে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান, সাবেক স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরীর আগমনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইব্রাহিম ও সদস্য মতিউর রহমান দিপু আহত হন। আহতদের দুমকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের সঙ্গে প্রস্তুতিমূলক মতবিনিময় সভায় অংশ নিতে পবিপ্রবি ক্যাম্পাসে যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী। তবে তার আগমনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। উপজেলা বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন হাওলাদার গ্রুপকে না জানিয়ে বিএনপির অন্য গ্রুপের নেতাকর্মীদের দাওয়াত দেওয়ায় আনোয়ার গ্রুপ ক্ষুব্ধ হয়ে তারা মুক্ত বাংলা চত্বরে জড়ো হন। এসময় মতিউর রহমান দিপু ও তাদের অনুসারীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে উত্তেজনার এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা থেকে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এদিকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. খলিলুর রহমান বলেন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী দলের ভাইস-চেয়ারম্যান হওয়া সত্ত্বেও তার দুমকি তথা পবিপ্রবি ক্যাম্পাসে আগমনের বিষয়ে আমরা উপজেলা বিএনপি কিছুই জানতাম না। দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন বলেন, বিএনপি নেতা মতিউর রহমান দিপুসহ তাদের সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মামলার তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। দোষীদের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করতে ঢাকার পথে কুয়েটের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দল
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য, উপ-উপাচার্যকে অপসারণ ও নতুন নিয়োগসহ ৬ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় দুটি বাসে ৮০ শিক্ষার্থী ঢাকায় রওনা দিয়েছে। এ সময় শিক্ষার্থীদের মাথা ও চোখে লাল কাপড় বাঁধা ছিল। যাত্রা শুরুর আগে প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাসে তারা নিরাপত্তাহীন। এজন্য তাদের দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে করে স্মারকলিপি জমা দিয়ে নিরাপদ জায়গায় চলে যাবেন। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে ফিরবেন না তারা। অনলাইনে কার্যক্রম চলবে। এক প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষার্থীরা জানান, ভিসিসহ কিছু শিক্ষক বলার চেষ্টা করছেন আমাদের দাবি মেনে নেয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বক্তব্য। হামলাকারীরা স্পষ্ট এবং চিহ্নিত কিন্তু তাদের বাদ দিয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। রক্তাক্ত কুয়েট প্রদর্শনীতে অস্ত্রধারীদের নাম পরিচয়, ছবি বিস্তারিত দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। উল্লেখ্য, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয় অর্ধশতাধিক।

কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা: বিএনপি-যুবদলের ৪ নেতা গ্রেপ্তার
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় বিএনপি ও যুবদলের ৪ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। শনিবার রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বিএনপি নেতা আবদুল করিম মোল্লা, যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন, ইব্রাহিম হাওলাদার ও বিএনপির সমর্থক শফিকুল। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও খানজাহান আলী থানার এসআই রিকাবুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রিকাবুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের দিন ৫ জনকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছিলেন সেনাসদস্যরা। তাদের প্রিজন সেলে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। শুক্রবার তাদের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এদিকে কুয়েটের মামলায় বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে অভিযোগ করে এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে খুলনা মহানগর বিএনপি। তারা বলেছে, ইতিমধ্যে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন ও ছবি, ভিডিও ফুটেজে পাওয়া প্রমাণের ভিত্তিতে দেশবাসী জানতে পেরেছে, কুয়েটে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তার সূত্রপাত গুপ্ত একটি ছাত্রসংগঠন ঘটিয়েছে। বিএনপির বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঘটনার সূত্রপাত রাহুল জাবেদ, ইফাজ ও ইউসুফ নামের তিনজন ছাত্রদল সমর্থকের ওপর অতর্কিত হামলার মধ্য দিয়ে। সেই ঘটনায় কুয়েট কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাতনামা ৫ শতাধিক আসামি করে থানায় মামলা করলে পুলিশ কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করছেন। ইতিমধ্যে গুপ্ত ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীদের হামলায় মারাত্মক আহত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির নেতা আব্দুল করিম মোল্লা, যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন, ইব্রাহিম হাওলাদার ও বিএনপির সমর্থক শফিকুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে অসুস্থ অবস্থায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে, যা রীতিমতো নিন্দনীয় ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিবৃতিদাতারা হলেন বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা, সদস্যসচিব শফিকুল আলম তুহিন প্রমুখ। উল্লেখ্য, ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা পরিদর্শক মনিরুজ্জামান লিটন বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে ১৯ ফেব্রুয়ারি নগরীর খানজাহান আলী থানায় মামলা করেন। এর আগে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের খানজাহান আলী থানায় এ ব্যাপারে মামলা দায়ের করা হয়। কুয়েট প্রশাসনের পক্ষে নিরাপত্তা পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান লিটন বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ধারী ৪০০/৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর-১৭। মামলার পরদিনই শুক্রবার চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পাঁচ দফা দাবিতে রংপুরের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা
ম্যাটস, ডিএমএফ ইস্যুতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গৃহীত সিদ্ধান্তকে হঠকারী আখ্যা দিয়ে, এর বিরুদ্ধে ও ৫ দফা দাবিতে রংপুরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি সড়ক অবরোধ করে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেছেন সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ফলে রংপুর-দিনাজপুরের মহাসড়কে যানবাহন চলাচল ব্যহত হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। একই দাবিতে কর্মবিরতি করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে রংপুর মেডিকেল মোড়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এতে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কর্মসূচিতে রংপুর মেডিকেল কলেজ, প্রাইম মেডিকেল কলেজ, কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও আর্মি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অংশ নেন। ৫ দফা দাবি হলো―এমবিবিএস ও বিডিএস ব্যতীত কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবেন না। উক্ত আইনের বিরুদ্ধে বিএমডিসির বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার ও বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন শুধু এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। বিএমডিসি থেকে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন অবিলম্বে বন্ধ, উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট এবং এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওষুধ লিখতে পারবেন না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি লিস্টের বাইরে কোনো ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না। স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে দ্রুত ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে সব শূন্য পদ পূরণ করতে হবে। আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে পূর্বের মতো ষষ্ঠ গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে। প্রতিবছর চার থেকে পাঁচ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্যখাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে এবং ডাক্তারদের বিসিএসের বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে। সব মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট স্কুল-ম্যাটস ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজসমূহ বন্ধ করে দিতে হবে। তাদের দাবি, এরই মধ্যে পাস করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের স্যাকমো পদবী রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। নতুনভাবে ম্যাটসে ভর্তি বন্ধ করতে হবে। ম্যাটস শিক্ষার্থীদের প্যারামেডিকসে প্রবেশ দিয়ে সম্পূর্ণভাবে ম্যাটস বন্ধ করতে হবে। চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।

হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে কুয়েটে বিক্ষোভ মিছিল
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে ও হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি )দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে ডক্টর এস এম রশিদ হল, শহীদ স্মৃতি হল, ফজলুল হক হল, একুশে হল, খান জাহান আলী হলসহ বিভিন্ন হলের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়াল সেন্টারে এসে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ছাত্র রাজনীতির কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও, ছাত্র রাজনীতির দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান, বিএনপির দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান, শিক্ষা-সন্ত্রাস একসাথে চলে নাসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘হামলার ঘটনার চার দিন অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছেন। উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে এখনো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি।’ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০তম ব্যাচের একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘হামলার ঘটনায় যারা জড়িত ছিল তাদের চিহ্নিত করে আমরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছি। আলোকচিত্র প্রদর্শনী করে হামলার দৃশ্যগুলো তুলে ধরেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হলো না। আমরা আমাদের স্বাভাবিক শিক্ষাক্রমে ফিরে যেতে চাই। প্রধান উপদেষ্টা যেন আমাদের এই সমস্যাটা সমাধান করে দেন।’ গত মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) কুয়েটে ছাত্রদলের সদস্য ফরম বিতরণকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পরে স্থানীয় কিছু বহিরাগত এই হামলায় অংশ নেয়। ওই রাতে রাতে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর একটার মধ্যে দাবি পূরণের সময় বেঁধে দেন তারা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কুয়েটের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে বুধবার রাতে খান জাহান আলী থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবি 'পুরোপুরি মেনে না নেওয়ার' কথা বলে উপাচার্যকে বর্জনের ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালককেও বর্জনের ঘোষণা দেন তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভের এক পর্যায়ে তালা ঝুলিয়ে দেন।

ছাত্রাবাস থেকে রাবি শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
ছাত্রাবাস থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী মেহেরচন্ডী এলাকার তুহিন ছাত্রাবাস থেকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত সিফাতুল্লাহ সিফাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি বরগুনা জেলার বামনা উপজেলায়।বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, সিফাতের সহপাঠী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি সে বেশ কিছুদিন ধরে হতাশাগ্রস্থ ছিল। এছাড়া কিছু দিন আগেই তার মারা যায়। হতাশা থেকেই আত্মহত্যা করেছে বলে আমরা ধারণা করছি।

চুয়েটে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫ উদযাপিত হয়েছে। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) চুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়েটের ভারপ্রাপ্ত ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সুদীপ কুমার পাল। সভাপতিত্ব করেন চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ মাহবুবুল আলম। অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন সিএসই বিভাগের ছাত্র সাদমান রহমান অনন্ত, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র তানভীর আহমেদ চৌধুরী ও ইউআরপি বিভাগের ছাত্রী রিয়া ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ ফজলুর রহমান ও ইটিই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব প্রিয়ন্তি পাল টুম্পা। শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন চুয়েট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ ক্বারী মাওলানা নুরুল্লাহ। এর আগে শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকণের মাধ্যমে দিনব্যাপী কর্মসূচীর শুরু হয়। সকালে ক্যাম্পাসের উত্তর গোল চত্বর হতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত ভাষা আন্দোলনের অমর সংগীত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ পরিবেশন সহকারে প্রভাত ফেরী অনুষ্ঠিত হয়। পরে চুয়েট পরিবারের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এছাড়া শহীদ মিনারে প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পোস্টার গ্রাফিতি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রচনা প্রতিযোগিতা, শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সুন্দর হাতের লিখা প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা, দেশাত্মবোধক গান ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাদে আছর কেন্দ্রীয় মসজিদে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

বাধার মুখে বন্ধ কনসার্ট, জঙ্গলে লুকালেন ব্যান্ড ‘কৃষ্ণপক্ষ’র সদস্যরা
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক সংগঠন চারুকলা সংসদ (ববিচাস) আয়োজিত কনসার্টে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে ব্যান্ড কৃষ্ণপক্ষকে অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে ‘বাসন্তিক’ উৎসবের অংশ হিসেবে কনসার্ট চলছিল। রাত সাড়ে ১২টার দিকে কিছু শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে চেয়ার ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় ব্যান্ডটি তাদের ‘ভাঙা সাইকেল’ গানটি দ্রুত শেষ করে মঞ্চ থেকে নেমে যায়। বিক্ষোভ বাড়তে থাকলে তারা তাদের গাড়িতে করে পাশের জঙ্গলের রাস্তায় অবস্থান নেয়। সেখানেই প্রায় দুই ঘণ্টা লুকিয়ে থাকে ব্যান্ডটির ৭ সদস্য। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন দলটির গায়ক তারেক হোসেন। তিনি জানান, রাত ১২টা ৫০ থেকে ৩টা ২০ মিনিট পর্যন্ত তারা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের একটি ঘন জঙ্গলে লুকিয়ে থাকতে বাধ্য হন তারা। এ সময় গাড়ির সব লাইট বন্ধ রেখে নীরবে অপেক্ষা করেন। তিনি বলেন, ‘ববিচাসের আয়োজকদের প্রাণভরা আমন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা সবই ভীষণ সুন্দর ও অমায়িক ছিল। সমস্যা যা কিছু তা শুরু স্টেজ এ নামার কিছুক্ষণ আগ থেকে। স্টেজের বিপরীত প্রান্ত থেকে উন্মত্ত চিৎকার চেঁচামেচি ও গালাগালি শোনা যায়। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা সংসদের আয়োজকদের চোখে মুখে আমি মূর্তিমান আতংক দেখি। পেশী শক্তির প্রদর্শনও তখন স্পষ্ট ছিল।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা শুরুতে ব্যান্ড সদস্যদের কোনো নিরাপদ স্থানে রাখার ব্যবস্থা করেননি বলে কৃষ্ণপক্ষের সদস্যরা অভিযোগ করেন। ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক সংগঠন চারুকলা সংসদ (ববিচাস) কনসার্টের আয়োজন করে, যা চলছিল রাত প্রায় ১টা পর্যন্ত। হঠাৎ শেরেবাংলা হল ও বিজয়-২৪ হলের কয়েকজন ছাত্র পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটার কথা বলে হইচই শুরু করেন। একপর্যায়ে দুই হলের শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মুক্তমঞ্চের দিকে আসেন। সেসময় বেশ কিছু চেয়ার, মনিটর ও বাশের বেড়া ভেঙে ফেলা হয়। রাত দেড়টার পর নতুন ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সনি ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন। পরে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সিদ্ধান্ত দেন, এখন থেকে রাত ৯টার পর ক্যাম্পাসে আর কোনো অনুষ্ঠান হবে না।

পবিপ্রবি থেকে মুছে ফেলা হল শেখ পরিবারের নাম
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) থেকে শেখ পরিবারের নামে থাকা সব আবাসিক হলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট আটটি হলের নতুন নামকরণের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলামের অনুমোদনক্রমে এবং রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ইকতিয়ার উদ্দিন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ও নাম পরিবর্তন কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে উপাচার্যের সিদ্ধান্তে শের-ই-বাংলা হল-১’-এর নাম পরিবর্তন করে শহীদ জিয়াউর রহমান হল-১, শের-ই-বাংলা হল-২’-এর নাম শহীদ জিয়াউর রহমান হল-২, কবি বেগম সুফিয়া কামাল হলের নাম চাঁদ সুলতানা হল, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম কবি বেগম সুফিয়া কামাল হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম বিজয় ২৪ হল, বরিশাল ক্যাম্পাসের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম জুলাই ৩৬ হল, নির্মাণাধীন নতুন ছাত্র হলের নাম শের-ই-বাংলা হল এবং নির্মাণাধীন নতুন ছাত্রী হলের নাম তাপসী রাবেয়া হল রাখা হয়েছে। তবে এম. কেরামত আলী হলের নাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, পরবর্তী রিজেন্ট বোর্ড সভায় আনুষ্ঠানিক অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত এই নামগুলো বহাল থাকবে।

সিভাসুতে শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
যথাযোগ্য মর্যাদায় শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫ উদযাপন করা হয়েছে।শুক্রবার সকাল ৭ টা ১৫ মিনিটে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো ব্যাজ ধারণের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো ব্যাজ ধারণের পর শুরু হয় প্রভাতফেরি। উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমানের নেতৃত্বে প্রভাতফেরিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান। এ সময় শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। উপাচার্যের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, আবাসিক হল, জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষকদের অরাজনৈতিক সংগঠন ‘সোনালী দল’, অফিসার সমিতি, কর্মচারী ইউনিয়ন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। শহিদ দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিলো মুখ গহ্বর ও দন্ত পরীক্ষা, শহিদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কর্মসূচিগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদীয় ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান, হল প্রভোস্ট, বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক, প্রক্টর, শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।

অছাত্ররা ফুল দিতে পারবেন না জাবির শহীদ মিনারে
শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন না অছাত্ররা। শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার এ বি এম আজিজুর রহমান সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়, ছাত্র সংগঠনগুলোর ব্যানারে (যাদের ছাত্রত্ব আছে) শিক্ষার্থীরা (আইডি কার্ড সঙ্গে রাখা সাপেক্ষে) শহীদ মিনারে ফুল নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে এলে প্রক্টরিয়াল বডি ও শৃঙ্খলা কমিটি তাদের সার্বিক সহযোগিতা করবে। তবে কোনো ছাত্রসংগঠন বা রাজনৈতিক সংগঠন কোনো প্রকার উস্কানিমূলক স্লোগান দিতে পারবেন না বলে জানানো হয়।

ঢাকা কলেজ-সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারি
রাজধানীর ধানমন্ডিতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ৪টার পর এ ঘটনা ঘটে। রমনা বিভাগের সহকারি পুলিশ কমিশার (ধানমন্ডি জোন) শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান জানান, আজ বিকাল ৪টার দিকে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। এদিকে শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সড়াতে পুলিশ সদস্যদের ধাওয়া দিতে গেছে। তবে পরিস্থতি এখনও শান্ত হয়নি। সায়েন্স ল্যাব এলাকায় দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত ১৯ জানুয়ারি সায়েন্সল্যাবে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আমার শার্ট ধরে টানাহেঁচড়ার পর মাটিতে ফেলে দেয়া হয়: কুয়েট ভিসি
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ছাত্রদলের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে। এদিকে, ঘটনার পর মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে ক্যাম্পাসকে অবরুদ্ধ করে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলেন। জবাবে তিনি বলেন, আমার কোনো ব্যর্থতা নেই। আমি কেন পদত্যাগ করব? এমন মারামারি টুকটাক হয়েই থাকে। এ বক্তব্যে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাকে হেনস্তা করেন এবং একপর্যায়ে তার ওপর হামলা হয়। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কুয়েটের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার পর আজ বুধবার (১৯ জানুয়ারি) রাতে এক সাক্ষাৎকারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ বলেন, আমি আমার ক্যাম্পাসকে খুব ভালোবাসি। কিন্তু গতকাল আমার শিক্ষার্থীরা আমাকে যেভাবে হেনস্তা করেছে, এতে আমি খুব মর্মাহত। তারা প্রথমে আমার শার্ট ধরে টানাহেঁচড়া করে, এরপর আমাকে মাটিতে ফেলে দেয়। তখন আমার হাত কেটে যায়। জড়িতদের নাম প্রকাশে অপরাগতা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, 'আমাকে যারা আক্রমণ করেছে, তারা কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত কি না, আমি জানি না।'

কুয়েটে রাজনীতি করলে আজীবন বহিষ্কার
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকবে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার সম্পৃক্ততা পেলে শিক্ষার্থীদের আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও কোনও ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৯৩তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শেখ শরীফুল আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি সিন্ডিকেটের সভায় মঙ্গলবার ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়েছে। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এম এম এ হাসেমকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, মঙ্গলবারের ঘটনায় জড়িত বহিরাগতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আর জড়িত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করবে। আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে। ক্যাম্পাস এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। সাত একাডেমিক ভবনে তালা এদিকে কুয়েটের প্রশাসনিক ভবনসহ সাত একাডেমিক ভবন তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবিতে বুধবার সকাল থেকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন তারা। এর ফলে হয়নি কোনও ক্লাস-পরীক্ষা। দুপুর ১টার মধ্যে দাবি পূরণ না হওয়ায় তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়নি এখনও। রাতে ক্যাম্পাসের মেডিক্যাল সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না এবং থাকলে আজীবন বহিষ্কারের বিধান রেখে অধ্যাদেশ জারি; গতকালের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা, বহিষ্কারসহ ব্যবস্থা নেওয়া; ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ক্যাম্পাসের বাইরে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের রাখা; আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয় প্রশাসন থেকে বহন করা এবং ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ।

কুয়েট বন্ধ ঘোষণা
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহাদুজ্জামান শেখ। ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে; এতে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে। এসব ঘটনায় ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে ক্যাম্পাসের ফটকের চারপাশে অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। টহল দিতে দেখা গেছে সেনাবাহিনীকেও। তবে কোনও ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি। দুপুরে প্রশাসনিক, অ্যাকাডেমিকসহ সব ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে কিছু শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল ছাড়তে দেখা গেছে।

জাককানইবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি কামরুল, সম্পাদক জান্নাতী
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (জাককানইবি) সাংবাদিক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতি হিসেবে মো. কামরুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মোছা. জান্নাতী বেগম নির্বাচিত হয়েছেন। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, কোষাধ্যক্ষ মোমিন ইসলাম সবুজ, দপ্তর সম্পাদক মুতাসিম বিল্লাহ এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আখলাকুল হাসান অনিক। নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আইন অনুষদের ডিন ও সহযোগী অধ্যাপক মো. ইরফান আজিজ। সহকারী নির্বাচন কমিশনার ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. তরিকুল ইসলাম জনি এবং সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি রাশেদুজ্জামান রনি। নির্বাচন শেষে নব-নির্বাচিত কমিটিকে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন সংগঠনটির সদ্য সাবেক সভাপতি ফাহাদ বিন সাঈদ এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসলাম বেগ। দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো. মিজানুর রহমান। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।