জুলাইযোদ্ধা সেই ফাইয়াজের বড় ভাই জাকসুর জিএস
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ১১:৩৫ এম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
 
                                জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে জেনারেল সেক্রেটারি (জিএস) পদে বিজয়ী হয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের মাজহারুল ইসলাম ফাহিম। তিনি জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার জন্য ব্যাপক পরিচিত ছিলেন। আন্দোলনের সময় মাজহারুলের অবস্থান শনাক্ত করতে তার ছোট ভাই ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়।
ফাইয়াজকে আটক করার তিন দিন পর তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয় এবং পরে আদালতে হস্তান্তর করা হয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সি পরা অবস্থায়, দুই হাত মোটা সাদা দড়ি দিয়ে বাঁধা ও হাতে একটি কাপড়ের ব্যাগ নিয়ে প্রিজন ভ্যান থেকে আদালতে আনা ফাইয়াজের ছবি তখন সারা দেশকে শোকাহত করেছিল। এ ঘটনায় জাতিসংঘও বিবৃতি দিয়েছিল। ওই সময়ে ফাইয়াজ ঢাকা কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে ফাইয়াজ মেজো। বড় ভাই মাজহারুল ইসলাম ফাহিম জাকসুর জিএস নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন।
মাজহারুল ও ফাইয়াজ লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার এলাকার বাসিন্দা। তাদের বাবা ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম মঞ্জুর। মাজহারুল ছোটবেলা থেকেই মেধাবী এবং ভদ্র স্বভাবের। ২০১৬ সালে নোয়াখালী জেলা স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি এবং ঢাকার সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেন। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।
আমিরুল ইসলাম বলেন, “জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় মাজহারুল অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তার সন্ধান জানতেই ২৪ জুলাই আমার ছোট ছেলেকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। তিন দিন পর তাকে ডিবি কার্যালয়ে পাঠানো হয়। মিথ্যা সাক্ষ্য না দেওয়ায় তাকে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছিল। ১৭ বছর বয়সী ফাইয়াজকে হাতে দড়ি বেঁধে আদালতে আনা হলে দেশবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়ে। ফাইয়াজ তখন কিশোর জুলাইযোদ্ধা হিসেবে পরিচিতি পান। এই ঘটনায় জাতিসংঘও বিবৃতি দিয়েছিল।”
ফলাফল ঘোষণার পর জাকসুর নবনির্বাচিত জিএস মাজহারুল ইসলাম বলেন, “যেদিন শিক্ষার্থীরা আমাদের স্বীকৃতি দেবে যে, আমরা আমাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পেরেছি, সেই দিন আমরা বলতে পারব আমরা বিজয় অর্জন করতে পেরেছি।”
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এবং কমিশনের সদস্যসচিব একেএম রশিদুল আলম আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন। জাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্যানেলের আব্দুর রশিদ জিতু। এজিএস (ছাত্র) পদে বিজয়ী হয়েছেন ফেরদৌস আল হাসান এবং এজিএস (ছাত্রী) পদে জয়ী হয়েছেন আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা। দুজনেই ছাত্রশিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী।
 
                        
                     
                             
                             
                             
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    