কুয়েটে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার পর পাঁচ দফা দাবিতে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিও রয়েছে এই পাঁচ দফার মধ্যে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে ক্যাম্পাসের মেডিকেল সেন্টারে প্রেস ব্রিফিং করে এসব দাবি তুলে ধরেন একদল শিক্ষার্থী। তবে তারা তাদের নাম বলতে চাননি। তারা অভিযোগ করে ছাত্রদল ও স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুর থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়; তাতে আহত হন অর্ধ শতাধিক। প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, মঙ্গলবার সকালে ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা প্রচার কার্যক্রম চালায়। এর প্রতিবাদে একদল শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। তারা ‘ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস চাই’ বলে স্লোগান দেন। বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে পৌঁছালে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। এ সময় রেলিগেট, তেলিগাতিসহ আশপাশের বিএনপি নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের সঙ্গে এবং সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। পরে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।আহতদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুয়েট মেডিকেল সেন্টারসহ আশপাশের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। রাতে ক্যাম্পাসের মেডিকেল সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে আসেন একদল শিক্ষার্থী। হামলার জন্য ছাত্রদলকে দায়ী করে তারা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অধীন কেউ কোনো রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকতে পারবেন না- এই মর্মে অধ্যাদেশ জারি করতে হবে এবং এর ব্যতয় ঘটলে শিক্ষক–কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আজীবন বহিষ্কার এবং শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব বাতিলের বিষয়টি স্পষ্টভাবে অধ্যাদেশে লেখা থাকতে হবে; মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত শিক্ষার্থী এবং তাদের প্রশ্রয়দাতা শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে হত্যাচেষ্টা ও নাশকতার মামলা করতে হবে এবং জড়িত সবাইকে বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। জড়িতদের তালিকা শিক্ষার্থীরাই দেবে; শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ক্যাম্পাসের বাইরে সামরিক বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন করতে হবে; হামলার ঘটনায় আহত সবার চিকিৎসা ব্যয় প্রশাসন থেকে বহন করতে হবে। আহতদের তালিকা শিক্ষার্থীরা দেবে এবং এসব দাবি পূরণ করে ঘটনার ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা এবং পদত্যাগ করতে হবে। এসব দাবি পূরণের জন্য বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয় প্রেস ব্রিফিংয়ে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস- পরীক্ষাসহ সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করার কথা বলা হয়। তবে কোনোভাবেই হল বন্ধ না করতে কর্তৃপক্ষকে হুঁশিয়ার করেন শিক্ষার্থীরা। গত ১১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সভায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে কিছু গোষ্ঠী তা চালু করার চেষ্টা করছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। মঙ্গলবার সংঘর্ষের পর কুয়েট ছাত্রদলের কয়েকজন দাবি করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে ছাত্রশিবিরের অংশ এবং পতিত সরকারের ছাত্রসংগঠনের পক্ষের দুয়েকজন মিলে ক্যাম্পাস থেকে এবং ক্যাম্পাসের আশপাশে ছাত্রদলের রাজনীতি বাধাগ্রস্ত করতে চায়। এর জের ধরেই ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে তাদের অভিযোগ। খুলনা বিএনপির পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ছাত্রশিবির খুলনাকে উত্তাপ্ত করার জন্য ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের অতর্কিত হামলা চালিয়ে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের মারাত্মক আহত করেছে। ছাত্রশিবির নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার না করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যানারে তারা নগরীতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে, যা মোটেও সর্মথনযোগ্য নয়। ছাত্রশিবির শান্তিপূর্ণ খুলনাকে অশান্ত করতে চায়। অবিলম্বে হামলাকারী শিবির ক্যাডারদের গ্রেপ্তার করতে হবে। অন্যথায় যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রশাসন দায়ী থাকবে।’ অন্যদিকে খুলনা মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসাইন মিলন বলেন, ‘কুয়েটের ঘটনার সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোনো সম্পর্ক নেই। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদল ও বিএনপি নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে অনেককে আহত করেছে বলে শুনেছি। আমরা হামলার নিন্দা ও জড়িতদের বিচার চাই।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ ফেইসবুকে পোস্টে লেখেন, ‘কুয়েটে ছাত্রদল নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ স্টাইলে যে নৃশংস হামলা চালাচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রদল নিজেদের রাজনৈতিক কবর রচনার পথেই অগ্রসর হলো।’

আজ প্রতিটি ক্যাম্পাসে কুয়েটে হামলার ভিডিও প্রদর্শন করবে বৈষম্যবিরোধীরা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) হামলার সব ভিডিও দেশের প্রতিটি ক্যাম্পাসে আজ বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) প্রদশর্ন করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেইসঙ্গে জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতিকে তাজা রাখতে সারা দেশে ভিডিওচিত্র প্রদর্শনী করবে বৈষম্যবিরোধীরা। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে কুয়েটে ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতিকে তাজা রাখতে চাই। আমরা চাই না আপামর ছাত্র-জনতা এই অভ্যুত্থানকে ভুলে যাক। তারা কোনো নব্য ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটাক। তাই বুধবার সারা দেশে জুলাই অভ্যুত্থানের ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী করা হবে। একইসঙ্গে কুয়েটে হামলার যত ভিডিও আছে সবগুলো প্রদর্শন করা হবে।’ এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে যে নির্মম নিপীড়নের মধ্য দিয়ে আমাদের লড়াই করতে হয়েছে সেই নির্মম নির্যাতন ও নিপীড়ন আবার ফেরত এসেছে। ছাত্রলীগের স্টাইলে হামলাকে জায়েজ করছে অনেকে। ৫ আগস্টের পরে আমরা আর জাহেলি আমলে ফেরত যেতে চাই না। যারা আবার ছাত্রলীগের মতো হতে চাইবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা দাঁড়াব। এ দেশে স্ট্যাম্প ও লাঠির, রামদার রাজনীতি চলবে না। প্রয়োজনে আমরা আবার একটি জুলাই বরণ করতে প্রস্তুত আছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা বলে দিতে চাই, কারও জান ও মালের ক্ষতি করার অধিকার কারও নেই। আমরা পাঁচ আগস্টের পূর্বের বাংলাদেশে ফেরত যাব না। জুলাই-আগস্টে আমাদের ভাইবোনেরা অহেতুক শহীদ হন নাই। তাদের রক্তের দায় আমাদের ‍ওপরে। যে কেউ ছাত্রলীগের মতো বিভিন্ন পন্থায় হামলা করে তা জায়েজ করার চেষ্টা করবে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াব। আমরা কারও সঙ্গে আপস করব না।’ প্রসঙ্গত, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

সংঘর্ষে উত্তাল কুয়েট, আহতের সংখ্যা বেড়ে ৩০

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুয়েট ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসের ভেতরে ও বাইরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর থেকে কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ আছে। কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি যাতে আবার শুরু হতে পারে, সে জন্য ছাত্রদলের কর্মীরা গতকাল সোমবার ক্যাম্পাসে লিফলেট বিতরণ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুপুরে শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্র রাজনীতি ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘দাবি মোদের একটায়, রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস চাই’, ‘এই ক্যাম্পাসে হবে না, ছাত্র রাজনীতির ঠিকানা’-সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হলগুলো প্রদক্ষিণ করে। পরে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া কুয়েটের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পকেট গেট থেকে বহিরাগতরা একটি গ্রুপের পক্ষ নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে আহতদের কুয়েটের অ্যাম্বুলেন্সে করে একের পর এক হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এ পর্যন্ত চারটি অ্যাম্বুলেন্সে করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেছে। দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে কুয়েট পকেট গেটের বাইরে বিএনপি সমর্থিত বহিরাগতরা একজন ছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ক্যাম্পাসের ভেতর ফেলে রাখে। এরপর থেকে সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রশিবির ও বহিরাগতদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ রূপ নিয়েছে। বহিরাগতরা কুয়েটের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে। কুয়েট প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালায়। খানজাহান আলী থানা পুলিশের ওসি কবির হোসেন বলেন, কুয়েটে ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। পরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি।

কুয়েটে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপে সংঘর্ষে আহত ১৫

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হন। আজ মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে এ সংঘর্ষ হয়। শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার দাবিতে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ মঙ্গলবার সকালে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। পরে তারা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেন। এ নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এর জেরে আজ বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হন। এ সময় শিক্ষার্থীরা হামলার জন্য ১৮ জনকে দায়ী করে তাদের আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল, ছাত্র রাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করাসহ ৪ দফা দাবি জানিয়েছেন। খানজাহান আলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‌'কুয়েটে ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। পরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ।'

পাবিপ্রবি ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্বে মুজাহিদ-তরিকুল

প্রায় চার বছর পর পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সভাপতি করা হয়েছে ইলেকট্রিক্যাল ইলেকট্রনিক অ্যান্ড কমিউনিকেশন (ইইসিই) বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুজাহিদ হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী কে এম তরিকুল ইসলামকে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অন্যরা হলেন– সিনিয়র সহ-সভাপতি ফসিউল হক ইমন, সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম আবির, ময়েন উদ্দিন, মাসুম বিল্লাহ। সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান তাফহিমুল হাসান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন কাদের, মিরাজুল ইসলাম মিরাজ, সিরাজুম মনির, শরিফুল ইসলাম, সৌমিক উদ্দিন আহমেদ, ওলী উল্লাহ, সালমান সাদিক শুভ। সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মইন অলীভ, দপ্তর সম্পাদক ইনজামামুল হক সজল, প্রচার সম্পাদক রোমেল হোসেন, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক সজীব প্রামাণিক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মেহেদি হাসান, ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ফাইরুজ আনিকা, ক্রীড়া সম্পাদক জাকির আল হাসান। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। এক প্রতিক্রিয়ায় নবগঠিত কমিটির সভাপতি মুজাহিদ হোসেন ও তরিকুল ইসলাম বলেন, 'যে আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে আমাদেরকে নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আমরা তার সম্মান রাখার চেষ্টা করবো। আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পালনের মাধ্যমে পাবিপ্রবি ছাত্রদলকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবো।'

চবির প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে মশাল মিছিল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদে প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ আরিফ হায়দারের পদত্যাগ ও ৯ নারী শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার দাবিতে মশাল মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি পূরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তিন দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন তারা। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে মশাল মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস হয়ে শেখ হাসিনা হলে গিয়ে শেষ হয়। এতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন, ‘নারী মানে হানি না, এই প্রশাসন মানি না’, ‘ছাত্রী হলে হামলা কেন? প্রশাসন জবাব চাই’, ‘লুকিয়ে করা বহিষ্কার, প্রহসন তা পরিষ্কার’ ইত্যাদি। মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা ছাত্রী হলের সামনের সড়কে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এতে বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ধ্রুব বড়ুয়ার সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা, সুমাইয়া শিকদার, জান্নাতুল মাওয়া প্রমুখ। প্রক্টরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করে ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা জানতে চাই, কেন প্রক্টর ছাত্রী হলে নিরাপত্তা দিতে পারেনি। কেন ২ জানুয়ারি এক শিক্ষার্থী ছাত্রী হলে ঢুকে ভাঙচুর করার পরও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই ব্যর্থতার দায় প্রশাসনকে নিতে হবে। ছাত্রীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যর জন্য প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে।’ এ ব্যাপারে তানভীর মোহাম্মদ আরিফ হায়দার বলেন, ‘বোর্ড অব রেসিডেন্স শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের প্রস্তাব করেছে, যা এখনও তদন্তাধীন। কাজ শেষে নোটিশ পাঠানো হবে।’ গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনা হলের নামফলক ও হলের সামনে কংক্রিট নির্মিত নৌকা ভাঙতে গেলে হল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। ছাত্রীদের অভিযোগ, একদল শিক্ষার্থী নামফলক ভাঙতে গিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। ওই দিন রাতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে প্রতিবাদ জানাতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের সঙ্গেও শিক্ষার্থীদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে অশোভন আচরণ করেন এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গত বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এ ঘটনায় ১০ জনকে বহিষ্কারের তথ্য প্রকাশের পর সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সদস্য ফরম বিতরণ শুরু

চট্টগ্রাম মহানগর আওতাধীন কলেজ ও সমমান মাদ্রাসাগুলোতে ছাত্রদলের কমিটি গঠনের লক্ষ্যে প্রাথমিক সদস্য ফরম বিতরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সিটির কাজীর দেউড়ীর চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি এবিএম ইজাজুল কবির রুয়েল বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর পর জুলাই বিপ্লবের আন্দোলনে দুই সহস্রাধিক ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়ের মাধ্যমে আজকের স্বাধীন পরিবেশ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ছাত্রদলের আগামীর নেতৃত্ব অবশ্যই মেধাবী, ত্যাগী ও যোগ্যদের দিয়ে গঠিত হবে।’ প্রধান বক্তা কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন বলেন, ‘দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ছাত্রদলের ভূমিকা অপরিসীম। সামাজিক মাধ্যম ও অনলাইন মিডিয়াতে ছাত্রদলকে আরো সরব হতে হবে। নিষিদ্ধ সংগঠন ও গুপ্ত সংগঠনের কেউ যেন অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।’ বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. বায়েজিদ হুসাইন বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন আর গণতন্ত্রের ইতিহাসে জিয়া পরিবারের অবদান সব সময় উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। ছাত্রদল স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রাজপথে সন্মুখ সারিতে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন। সাম্য- মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্রদল সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সামিয়াত আমিন চৌধুরী জিসান, জিএম সালাউদ্দিন কাদের আসাদ, জহির উদ্দিন বাবর, আরিফুর রহমান মিঠু, শহিদুল ইসলাম সুমন, সাব্বির আহমেদ, এম‌এ হাসান বাপ্পা, খন্দকার রাজীবুল হক বাপ্পী, মাহমুদুর রহমান বাবু, ইসমাইল হোসেন, নুর জাফর নাঈম রাহুল, সদস্য শামসুদ্দিন শামসু, ইমরান হোসেন বাপ্পী, আবু কাউছার, শাহরিয়ার আহমেদ, আল মামুন সাদ্দাম, দেলোয়ার হোসেন শিশির, কামরুল হাসান আকাশ, এনামুল হক এনাম, আব্বাস উদ্দিন।

কানেকশনস থ্রু কালচার গ্রান্ট প্রোগ্রামের জয়ীদের নাম ঘোষণা ব্রিটিশ কাউন্সিলের

২০২৪ সালের কানেকশনস থ্রু কালচার (সিটিসি) গ্রান্ট প্রোগ্রামের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। এ বছর এ প্রোগ্রামের অধীনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের চারটি যৌথ প্রকল্পে অনুদান (গ্র্যান্ট) দেয়া হবে। সবমিলিয়ে, মোট ৮৪টি উদ্ভাবনী উদ্যোগকে এই কর্মসূচির আওতায় সহায়তা দেয়া হবে। উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্য ও এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের শিল্পীদের মধ্যে দৃঢ় অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার ভিত্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে সিটিসি। এ বছর অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, চীন, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার শিল্পীদের এই গ্র্যান্ট প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে একটি মাইলফলক প্রতিষ্ঠিত হল। সিটিসি গ্রান্ট প্রোগ্রামের আওতায় এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে মোট ১১ কোটি টাকার বেশি অনুদান দেয়া হবে, যার মধ্যে বিজয়ী বাংলাদেশী অংশগ্রহণকারীদের প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ থাকবে ৬০ লক্ষ টাকার বেশি। এই অনুদান শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে তাদের সৃজনশীল ভাবনা বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। এই গ্রান্ট প্রদানের লক্ষ্য উদ্ভাবন ও পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধির মাধ্যমে যুক্তরাজ্য ও এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী টেকসই সাংস্কৃতিক সহযোগিতার ক্ষেত্র গড়ে তোলা। শিল্পসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি, সৃজনশীলতার আদান-প্রদান ও নতুন ধারণা বিকাশকে উৎসাহিত করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। কানেকশনস থ্রু কালচার গ্রান্ট প্রোগ্রাম সংস্থাটির এ অঙ্গীকারেরই প্রতিফলন। ২০২৪ সালের অনুদান লাভ করা প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে চলচ্চিত্র, সৃষ্টিশীল প্রযুক্তি, সাহিত্য, দৃশ্যকলা, মঞ্চ, নৃত্যকলা, ডিজাইন, ফ্যাশন, হস্তশিল্প ও সংগীতের মতো নানা ক্ষেত্রের উদ্যোগ। বৈচিত্র্যময় ও বহুমুখী এ প্রকল্পগুলো নতুন ভাবনার তৈরি করবে, যা বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ, যেমন বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এ বিষয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের হেড অব আর্টস সাদিয়া রহমান বলেন, ‘আমরা ২০২৪ সালের গ্রান্ট প্রোগ্রামের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত। তাদের প্রকল্পগুলো আন্তঃসাংস্কৃতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই অংশীদারিত্ব শিল্প ও সৃষ্টিশীল মানুষদের আদান-প্রদানের ক্ষেত্রকে সমৃদ্ধ করবে। একইসাথে, বর্তমান সময়ের গুরুত্বপূর্ণ সঙ্কট মোকাবিলায়ও ভূমিকা রাখবে। আমরা আশাবাদী, এ প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।’ বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীদের যেসব প্রকল্পে তহবিল দেয়া হবে: এরগন থিয়েটার (ইংল্যান্ড) ও ইয়ুথনেট গ্লোবালের (বাংলাদেশ) ‘টাইগার উইডো’; সাম্পাদ (ইংল্যান্ড) ও আনন্দিতা খানের (বাংলাদেশ) ‘নীল আকাশ (ব্লু স্কাই); অ্যাডাম লুইস জেকব (স্কটল্যান্ড) ও দৃকের (বাংলাদেশ) ‘ইদরিস,’ এবং বার্মিংহাম কন্টেম্পোরারি মিউজিক গ্রুপ (ইংল্যান্ড) ও নীল কমরুলের (বাংলাদেশ) ‘দ্য স্টোরি অব মায়া: জেনেসিস (দ্য মেকিং অব দ্য স্টোরি অব মায়া)’।

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

জুলাই অভ্যুত্থানের পর নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়া জানাতে সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আজ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে বিকেল ৪টায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদারের পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানা গেছে। বার্তায় বলা হয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে নতুন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন গঠনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার লক্ষ্যে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে সোমবার বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে। প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হলো বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। গত ১ জুলাই সংগঠনটি সৃষ্টি হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে একাধিক সমন্বয়ককে এই সংগঠনের নেতৃত্বে দেখা গেছে। যাদের মধ্যে অন্যতম হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত রশিদ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী সারজিস আলম, ইংরেজি বিভাগের হাসনাত আবদুল্লাহ, ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের আসিফ মাহমুদ ও ভূগোল বিভাগের আবু বাকের মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল ও অন্যরা।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুর: ৩২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীদের ‘ফ্যাসিস্ট’ বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুচিতা শরমিন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট ভাঙার অভিযোগে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সানোয়ার পারভেজ। এর প্রতিবাদে রাতে মশাল মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া উপাচার্যের এ মন্তব্যের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ শিক্ষক। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে একদল শিক্ষার্থী উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন, তিনি ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন’ করছেন। এ নিয়ে তিন দিন ধরে অস্থিরতা চলছে। এ পরিস্থিতিতে উপাচার্য রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘সহ-উপাচার্য, ট্রেজারারসহ কয়েকজন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইন্ধন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। ২০১১ সাল থেকে সৃষ্ট ববির শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এমনকি শিক্ষার্থীরাও সবাই ফ্যাসিস্ট আমলের। কেউ যদি বলে আমি ফ্যাসিস্টের কেউ নই, তারা তা দাবি করতে পারবে না। তারা ফ্যাসিস্টের আমলেই রিক্রুটেড। আমরা জানি কীভাবে রিক্রুটমেন্ট হয়েছে।’ ভিসি আরও বলেন, ‘বন্দর থানায় একটা মামলা দেওয়া হয়েছে। জুলাই আন্দোলনে যা হয়নি, তার চেয়েও বড় ঘটনা ঘটে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভিসির বাংলোর গেট ভাঙা হয়েছে।’ উপাচার্যের এমন বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের করা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা ৬ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া রাতে ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। এ প্রসঙ্গে সহ-উপাচার্য গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘ভিসি কীভাবে এখানকার সব ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীকে ফ্যাসিস্ট বলেন? ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ববিতে প্রায় ১ লাখ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করেছে। এই ছাত্ররা কি ফ্যাসিস্ট হতে পারে? তিনি যে মামলা দিয়েছেন, সেই মামলায় আমাদেরও অভিযুক্ত করেছেন। সরকারকে অবহিত না করে কীভাবে তিনি ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা করেন?’ এদিকে উপাচার্যের ‘ফ্যাসিস্ট’-সংবলিত বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ৫০ শিক্ষক বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসমাজ হিসেবে অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি অনাকাঙ্ক্ষিত ও নিন্দনীয় কিছু ঘটনার উদ্ভব হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও শিক্ষার সুষ্ঠু-স্বাভাবিক পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে প্রশাসনের উচ্চপর্যায় থেকে এমন কার্যক্রম বন্ধ হওয়া জরুরি।’

চবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বরণ, বিদায় ও সাধারণ শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বরণ, বিদায় ও সাধারণ শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত হয়েছে। চবির উদ্ভিববিজ্ঞান উদ্যানে বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ বখতিয়ার উদ্দীন, জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, চবির জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. গোলাম কিবরিয়া, চবির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। বক্তব্য দেন চবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর (অবসরপ্রাপ্ত) ড. এম. আবদুল গফুর ও প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হারুন-উর-রশীদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. কাজী মোহাম্মদ মেজবাউল আলম। অনুষ্ঠানে ইয়াহইয়া আখতার বলেন, ‘চবির ক্যাম্পাসে বর্তমানে চমৎকার পরিবেশ বিরাজ করছে। শিক্ষর্থীরা বিভিন্ন উৎসব পালনের মাধ্যমে ক্যাম্পাসকে মুখরিত করে রেখেছে। এটা সকলের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন, একাডেমিক ও গবেষণা প্রকল্প স্থাপনসহ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’ ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীরা এর সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে এবং অন্যান্য কার্যক্রম অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে দৃশ্যমান হবে মর্মে উপাচার্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বিদায়ী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বিদায়ীরা আজ থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের এলামনাই। এলামনাইরা হচ্ছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ। দেশ-বিদেশে তাদের যোগ্যতর অবস্থান এ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করে; এটা সকলের জন্য অত্যন্ত আনন্দের ও গৌরবের।’ ইয়াহইয়া আখতার আরও বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরষ্কার অর্জন করে কী হবে, সে অর্জিত ‍পুরষ্কারের জ্ঞান যদি শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রতিফলিত না হয়? শিক্ষকদের কাজ শুধু পুঁথিগত বিদ্যা নয়, শিক্ষার্থীদেরকে সংস্পর্শে রেখে পঠন-পাঠনে উদ্যমী করে গড়ে তুলতে হবে।’ উপাচার্য নবীণ শিক্ষার্থীদের প্রকৃতির সবুজ ক্যাম্পাসে স্বাগত জানান এবং বিদায়ী শিক্ষার্থীদের সফল কর্মময় জীবন কামনা করেন। অনুষ্ঠানে বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রফেসর ড. এম. আবদুল গফুর বিভাগের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও গবেষণা বৃত্তির জন্য ইতোপূর্বে পাঁচ লক্ষ টাকা অনুদান দেন। অনুষ্ঠানে বিভাগের প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় বর্ষ, তৃতীয় বর্ষ ও চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য তাদের এ শিক্ষা বৃত্তির অর্থ দেয়া0 হয়। বিভাগের শিক্ষার্থী মিরাজ খান ও নওশীল নাবিলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে নবীন শিক্ষার্থীদের পক্ষে জেনিফা ও বিদায়ীদের পক্ষে মাহবুব বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান শেষে বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

শেষ হলো ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে পরীক্ষা শেষ হয়। এর আগে বেলা ১১টায় দেশের সব বিভাগীয় শহরে একযোগে এই ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। ভর্তি পরীক্ষা কমিটি সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে বিজ্ঞান ইউনিটে সর্বাধিক আবেদন জমা পড়েছে। এবার এক হাজার ৮৯৬টি আসনের বিপরীতে এক লাখ ৪৬ হাজার ৬৯৪ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। প্রতি আসনের বিপরীতে লড়বেন ৭৭ জন শিক্ষার্থী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ভর্তি পরীক্ষার মোট সময় এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট। পরীক্ষা এমসিকিউ এবং লিখিত (বর্ণনামূলক) প্রশ্নে অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষার মোট নম্বর ১০০। এর মধ্যে ৬০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ৪০ নম্বরের লিখিত (বর্ণনামূলক) প্রশ্ন থাকবে। এমসিকিউ পরীক্ষা ৪৫ মিনিট এবং লিখিত (বর্ণনামূলক প্রশ্ন) পরীক্ষা ৪৫ মিনিটের হবে। ভর্তি পরীক্ষায় কোনো প্রকার ক্যালকুলেটর বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করা যাবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ইউনিটের অধীন বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, ফার্মেসি, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের বিভাগসমূহ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট, পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট রয়েছে। এর আগে কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে, চারুকলা ইউনিট, ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (আইবিএ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

রাবিতে উদযাপন হয়নি বসন্তবরণ উৎসব, প্রেমবঞ্চিত সংঘের বিক্ষোভ

প্রতি বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ এবং চারুকলা বিভাগ বসন্তবরণ উদযাপন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেও এ বছর কোনো বিভাগের আয়োজনে বসন্ত বরণ উদযাপন অনুষ্ঠিত হয়নি। এদিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন প্রেমবঞ্চিত সংঘের সদস্যরা। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই বিক্ষোভ হয়। পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ‘তুমি কে, আমি কে বঞ্চিত, বঞ্চিত’, এমন নানা স্লোগান দেন অংশগ্রহণকারীরা। সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সংগঠনটির সদস্যরা বলেন, এই কর্মসূচি ৯ বছর ধরে পালিত আসছে। সমাজে প্রেম ও ভালোবাসার অভাব পরিলক্ষিত। অবশ্যই আমরা প্রেমের বিরুদ্ধে না, তবে পবিত্র প্রেমের নামে এই বৈষম্য চাই না। আমরা চাই সমতা। এজন্য ভালোবাসা দিবসে এই কর্মসূচি। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন প্রেমবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি পরিবহন মার্কেট থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম পাড়া এলাকায় মেয়েদের সকল হল ঘুরে সেন্টার লাইব্রেরি ও পারিস রোড হয়ে বুদ্ধিজীবী চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

রাবিতে বৈষম্যবিরোধী প্রেমযাত্রা, বঞ্চিতদের বিক্ষোভ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বিক্ষোভ মিছিল করেছেন প্রেমবঞ্চিত সংঘের সদস্যরা। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভের আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ‘তুমি কে, আমি কে, ‘বঞ্চিত, বঞ্চিত’, এমন নানা স্লোগান দেন অংশগ্রহণকারীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এবং মেয়েদের হলের সামনে গিয়ে দুই মিনিট নিরবতা পালন করে। মিছিল শেষে বৃক্ষরোপণ, ক্যাম্পাসের দোকানদারদের মধ্যে ফুল বিতরণ, গণস্বাক্ষরসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ও পালন করা হয়। সমাবেশে সংগঠনটির সদস্যরা বলেন, ‘এই কর্মসূচি ৯ বছর ধরে পালিত আসছে। সমাজে প্রেম ও ভালোবাসার অভাব পরিলক্ষিত। অবশ্যই আমরা প্রেমের বিরুদ্ধে না, তবে পবিত্র প্রেমের নামে এই বৈষম্য চাই না। আমরা চাই সমতা। এজন্য ভালোবাসা দিবসে এই কর্মসূচি।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ১৭২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ছাত্রদল নেতার মামলা

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ১৭২ নেতাকর্মীর নামে মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ইংরেজি বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফেরদৌস রহমান বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় মামলাটি করেন। ফেরদৌস রহমান টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থানার রাউৎবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলের আাবাসিক শিক্ষার্থী। মামলায় জাবি শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের ৪২ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী আখতারুজ্জামান সোহেলকে প্রধান এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দর্শন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান লিটনকে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে। বাদী ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালানোর ছয় মাস পার হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। আইনের মাধ্যমে ছাত্রলীগকে বিচারের আওতায় আনার দাবি সাধারণ শিক্ষার্থীরাও করে আসছেন। সেই জায়গা থেকে জাবি ছাত্রদল এই উদ্যোগ নিয়েছে।’ এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নুর আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘তদন্তসাপেক্ষে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দশ ছাত্রীকে বহিস্কার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) দায়িত্ব পালনরত সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কোরবান আলীকে লাঞ্ছনা এবং সাংবাদিক হেনস্থা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় একজন ছাত্রীর সনদ বাতিলসহ স্থায়ী বহিস্কার এবং এ ঘটনায় আরও ৯ ছাত্রীকে দুই বছর মেয়াদে সাময়িক বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় চবির উপাচার্যের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন। সনদ বাতিলসহ স্থায়ী বহিস্কৃত ওই নারী শিক্ষার্থীর নাম আফসানা এনায়েত এমি। তিনি আইন বিভাগের (১৮-১৯) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে। বহিস্কৃতদের বাকি তালিকা রাতে প্রকাশ করা হবে।’ এর আগে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে, শেখ হাসিনা হলে কিছু শিক্ষার্থী নৌকা ভাঙতে গেলে নারী শিক্ষার্থীরা সেই নৌকা ভাঙতে বাধা দেয়। একপর্যায়ে মেয়েরা পাটকেল নিক্ষেপ করে তাদের হল থেকে বের করে দেয়। এই ঘটনায় সাংবাদিকদের সংবাদ সংগ্রহে বাঁধা প্রদানসহ সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ কোরবান আলীকে লাঞ্ছিত করা হয়। এই ঘটনায় একজন নারী শিক্ষার্থীর সনদ বাতিলসহ স্থায়ী বহিস্কার এবং ৯ জনকে দুই বছরের জন্য সাময়িক বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই ঘটনায় ৩ সদস্যের এক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির বেঁধে দেওয়া মেয়াদ বৃহস্পতিবার শেষ হওয়া সাপেক্ষে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দুপুর ১২টায় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনসহ হলের নাম পরিবর্তন

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনসহ কয়েকটি হলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এর মধ্যে সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের নাম পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠানটির প্রথম উপাচার্য গোলাম রহমানের নামে এর নামকরণ করেছে। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় ‘প্রফেসর ড. গোলাম রহমান প্রশাসনিক ভবন’ এর নামফলক উন্মোচন করা হয়। নামফলক উন্মোচন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম রহমান। এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রারম্ভিক পথচলার নানা উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিন খোলা, আবাসিক হল ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা স্মরণ করেন। নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘তোমাদের আন্দোলনে মহাবিপ্লবের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত হতে হবে। দেশ ও জাতির উন্নয়নে নিজেদের ভূমিকা রাখতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আমি কখনও কিছু চাইনি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবন শেষে দেশ-বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হোক- এটাই ছিল প্রত্যাশা। আজ শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে সম্মান আমাকে দিয়েছে তাতে আমি গর্বিত ও কৃতজ্ঞ।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আমাদের নতুনভাবে পথচলা সুগম হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনের নামে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রারম্ভিক পথচলা ও উৎকর্ষ সাধনে প্রফেসর ড. গোলাম রহমানের অবদান চিরস্মরণীয়। এ জন্য তার প্রতি সম্মান জানিয়ে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের নামকরণ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকে এই ভবন থেকেই সবকিছু পরিচালিত হতো। প্রথম উপাচার্য এখানেই অফিস করতেন। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধকালীন এই ভবনটি ছিল রেডিও সেন্টার। অনেক স্মৃতিময় ভবনটি। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সিন্ডিকেটে নতুন নাম অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ভবন ও হলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। সেগুলো হলো- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন হল, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম বিজয় ২৪ হল, সত্যেন্দ্র নাথ বসু একাডেমিক ভবনের নাম একাডেমিক ভবন ১, জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের নাম একাডেমিক ভবন ২, কবি জীবনানন্দ দাস একাডেমিক ভবনের নাম একাডেমিক ভবনের নাম ৩, জয় বাংলা ভবনের নাম একাডেমিক ভবন ৪, শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ প্রশাসনিক ভবনের নাম প্রশাসনিক, শহঈদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরী চিকিৎসা কেন্দ্রের নাম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টার, সুলতানা কামাল জিমনেসিয়ামের নাম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় জিমনেসিয়াম, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের নাম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গবেষণাগার করা হয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষকদের তিনটি কোয়ার্টারের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

কাল ঢাবিতে গাইবেন জেমস, সঙ্গে আর্টসেল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘তারুণ্যের উৎসব’। ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ প্রতিপাদ্য নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এই উৎসব আয়োজন করেছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসবের উদ্বোধন করেন। আয়োজনের শেষদিন আগামীকাল অনুষ্ঠিত হবে কনসার্ট। এতে অংশ নেবেন উপমহাদেশের বিখ্যাত রকস্টার মাহফুজ আনাম জেমস ও তার দল নগরবাউল। তাদের সঙ্গে কনসার্টে গাইবে জনপ্রিয় ব্যান্ড আর্টসেল। আয়োজকরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, পুরো কনসার্টটি থাকবে উন্মুক্ত। কোনো টিকিট লাগবে না। ঢাবির কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে কনসার্টটি অনুষ্ঠিত হবে সন্ধ্যার পর থেকে। সাড়ে ৬টায় মঞ্চে আসবেন শিল্পীরা। চলবে মধ্যরাত পর্যন্ত। এই আয়োজন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ‘সকলের মধ্যে ঐক্য থাকলেই সমাজ পরিবর্তন সম্ভব। দেশকে ঘিরে অনেকবার ষড়যন্ত্র হয়েছে। তারুণ্যের শক্তিকে ব্যবহার করে প্রতিবারই এদেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দেশের ডাকে সাড়া দিয়ে তারুণ্যের সর্বজনীন শক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতিকে নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে। আমাদের আর পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। দেশের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এখনই সময়।’ তিনি তরুণদের এই আয়োজনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান।

পাবিপ্রবিতে বাস চালাচ্ছিলেন হেলপার, প্রাণ গেলো পথচারীর

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) বাসের চাপায় এক পথচারী নিহত হয়েছেন। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে আটটার দিকে পাবনা শহরের অনন্ত বাজার সংলগ্ন দক্ষিণ রঘবপুর মসজিদ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত পথচারীর নাম ও পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে তার বয়স আনুমানিক ৫০ বছর বলে নিশ্চিত করেছে পাবনা সদর থানা পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে আটটার দিকে পাবনা শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাস অনন্ত বাজারের দিকে আসছিল। মসজিদের সামনে এক পথচারী রাস্তা অতিক্রম করতে গেলে বাসটি ওই পথচারীকে ধাক্কা দেয়। বাসটি পথচারীরকে চাপা দিয়ে ১৫-২০ ফিট ছেঁচড়ে নিয়ে যায়। এরপর গাড়িটি থামানোর ২-৩ মিনিটের মধ্যেই ওই পথচারীর মৃত্যু হয়। তবে গাড়িতে থাকা যাত্রীরা জানান, সকালের স্টাফ বাসটি লাইব্রেরি বাজার দিয়ে অন্তত হয়ে ক্যাম্পাসে যাচ্ছিল। অনন্ত এলাকায় এলে গাড়ির গতি কমানো হয়। কিন্তু হুট করেই রাস্তা পার হতে এক পথচারী বাসের সামনে চলে আসেন। চালক গাড়ি থামানোর আগেই তিনি বাসের চাকার নিচে পড়ে যান। এরপর গাড়ি থামানোর ২-৩ মিনিটের মধ্যে ওই পথচারীর মৃত্যু হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জালাল নামের একজন বাসটি চালালেও তিনি মূলত হেলপার। বাসের চালকরা অনুপস্থিত থাকলে তিনিই গাড়ি চালান। শুধু জালালই না, তিনজন হেলপার নিয়মিতই চালকদের অনুপস্থিতিতে গাড়ি চালান। গাড়িতে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক স্টাফ বলেন, ‘নিয়মিত চালক হলে এই দুর্ঘটনাটা নাও হতে পারতো। ওই পথচারী কখন গাড়ির সামনে চলে আসেন সেটা চালক খেয়াল করেননি। গাড়ির যাত্রীরা বলার পর তিনি গাড়ি থামিয়েছেন।’ পাবনা সদর থানার এসআই জাকির হোসেন বলেন, ‘রাস্তা পারাপারের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসটি তাকে ধাক্কা দেয়। খুব জোরে ধাক্কা লাগার কারণে লোকটি সেখানেই মারা যায়। আমরা প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছি। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু মরদেহের নাম পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলের প্রশাসক অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান বলেন, ‘স্টাফ বাসের বাসটি ভার্সিটি থেকে বের হয়ে লাইব্রেরি বাজার হয়ে আবার ক্যাম্পাসে ফেরত আসে। ফেরত আসার সময় এ ঘটনা ঘটে। আমি নিজে গিয়ে মরদেহ দেখে এসেছি। যদি তদন্তে ড্রাইভারের কোনো ভুল উঠে আসে, আমরা ব্যবস্থা নেবো।’

ছাত্রদলের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ফুচকার দোকানে চাঁদা দাবির অভিযোগ

চলমান ভর্তি পরীক্ষার সময়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভ্রাম্যমাণ ফুচকা-চটপটির দোকানে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে বটতলা এলাকায় কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিভিন্ন হারে চাঁদা দাবি করেন তারা। এবারের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ও নিরাপত্তার স্বার্থে যে কোন ধরনের ভ্রাম্যমাণ দোকান বসানোর অনুমতি দেয়া হবে না বলে বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রশাসন। ফুচকার দোকান বসানোর ফলে প্রশাসনের ঝামেলা তারা দেখবে শর্তে চা-পানির টাকা দাবি করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী ও ভুক্তভোগী দোকানদার সূত্রে জানা যায়, রোববার ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী এসব দোকানদারদের কাছে যান। সেখানে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে ভ্রাম্যমাণ দোকান চালানো করা বন্ধ আছে বলে জানান। তবে তাদের প্রতিদিন এক হাজার ৫০০ টাকা করে টাকা দিলে নির্বিঘ্নে ব্যবসায় করতে পারবেন এবং কোনো ধরনের সমস্যা হলে তারা (নেতারা) দেখবেন বলে আশ্বাস দেন। তবে দোকানদাররা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে, অভিযুক্তরা পরে যে কোনো সময় টাকা নিতে আসবেন বলে জানান। বিষয়টি ছাত্রদলের অভ্যন্তরে জানাজানি হলে কয়েকজন নেতাকর্মী এসব দোকানদারদের কাছে যান এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছবি দেখান। এর মধ্যে অর্থনীতি বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের সদস্য গোলাম রাব্বানী অর্নবকে শনাক্ত করেন দোকানদাররা। অর্নবের সঙ্গে আরও দুইজন ছিলেন বলে জানান তারা, তবে বাকিদের শনাক্ত করতে পারেননি ওই দোকানিরা। চাঁদা দাবির বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ একটি ফুচকার দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‌‘কয়েকজন শিক্ষার্থী তার দোকানে যান। একপাশে ডেকে নিয়ে অর্নব (ছবি দেখে শনাক্ত) তার কাছে দৈনিক এক হাজার টাকা দাবি করেন।’ এ সময় আরও কয়েকজন দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে তিনি জানান। আরেক দোকানদার বলেন, ‘আমার দোকানে কয়েকজন এসে চা-পানি খাওয়ার জন্য টাকা দাবি করেন।’ তারা বলেন, ব্যবসায় করছেন আমাদের কিছু টাকা-পয়সা দেন চা-পানি খাওয়ার জন্য। আমি তখন বলি টাকা পয়সা এখন নেই। তারা পরে যে কোনো সময় টাকা নিতে আসবেন বলে জানান ‘ অর্নব বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম কামালউদ্দিন হলে থাকেন। চাঁদা দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা। এখন যদি কেউ আমার নাম করে এমন কাজ করে থাকে তাহলে কি বলব। আমি এমন কোনকিছু করিনি। সবকিছু তো আপনারা জানেন একজনের নাম বলে অন্যজন এমন কাজ করে।’ আপনার ছবি দেখালে দোকানদাররা আপনাকে শনাক্ত করেছে জানালে তিনি বলেন, ‘যদি তারা বলে আমার কি করার আছে। আমি ছিলাম না এসব মিথ্যা।’ তবে জাবি শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনীক বলেছেন, ‘বিষয়টি আমি গুরুত্ব সহকারে দেখব। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’

ঢাকা সিটি কলেজের ‘সিটি’ তুলে নিয়েছে আইডিয়াল কলেজ শিক্ষার্থীরা

তুচ্ছ ঘটনা এবং আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ভরদুপুরে কথা কাটাকাটিতে জড়ান রাজধানীর ঢাকা সিটি কলেজ ও ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে তা পৌঁছে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায়। পরে পুলিশ ও কলেজ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সেদিনের মতো ঘটনার ইতি ঘটে। তবে সেই ঘটনার জের ধরে রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) ফের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিকেল ৪টা নাগাদ ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে ঢাকা সিটি কলেজের নাম ফলক থেকে ‘সিটি’ খুলে নিয়ে গেছেন। পরে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরাও পাল্টা ধাওয়া দিলে বাঁধে সংঘর্ষ। যা পরে ২ ঘণ্টা ধরে দফায় দফায় চলতে থাকে। হামলার বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল ৪টার দিকে আইডিয়াল কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী লাঠিসোঁটা নিয়ে একসঙ্গে ঢাকা সিটি কলেজের সামনে এসে অবস্থান নেন। পরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং লাঠি দিয়ে আঘাত করে ঢাকা সিটি কলেজের নামফলক খুলে ফেলে। এতে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষুব্ধ হয়ে পাল্টা আক্রমণ করে এবং সংঘর্ষ শুরু হয়। ফলে পুরো এলাকায় তৈরি হয় আতঙ্ক। তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হয়ে যায় মিরপুর সড়কের যান চলাচল। দেখা গেছে, ঢাকা সিটি কলেজের দুটি গেটের একটির ‘ঢাকা’ এবং আরেকটি গেটের ‘সিটি’ খুলে নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নাম ফলকের অংশ সম্বলিত বিভিন্ন ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। যা নিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই পরস্পরবিরোধী লেখালেখি করে যাচ্ছেন। সংঘর্ষের বিষয়ে আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, সকালে সিটি কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী আইডিয়াল কলেজের একজন শিক্ষার্থীকে স্লেজিং এবং মারধর করেছে। যার জের ধরেই প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সবশেষ সংঘর্ষ চলাকালীন সমঝোতা হওয়ার পর আবারও এক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের হামলা প্রতিহত করা হয়েছে। অবশ্য জানা গেছে, এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরেও এ দুটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা কাটাকাটির জেরে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে ওইদিন দুপুরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটান তারা। বিষয়টি নিয়ে ধানমন্ডি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহমেদ মাসুদ বলেন, ‘গত ৫ তারিখ দুপুরে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছিল। ওইদিনের ঘটনার জেরেই আজ ঢাকা সিটি কলেজ ও ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুই কলেজের দুজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সংঘর্ষের কারণে গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল। এখন আবার গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে পরবর্তী সময়ে যেন ফের সংঘর্ষ না বাঁধে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সতর্ক উপস্থিতি রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।’

সায়েন্সল্যাবে সিটি ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ

পূর্বশত্রুতার জের ধরে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার সায়েন্সল্যাবরেটরি মোড়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন ঢাকা সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সোয়া ৪টার পর এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে। যা এখনও থেমে থেমে চলছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল চারটার দিকে আইডিয়াল কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী লাঠি নিয়ে ঢাকা সিটি কলেজের সামনে এসে অবস্থান নেন। পরে তারা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং লাঠি দিয়ে আঘাত করে ঢাকা সিটি কলেজের নামফলক খুলে ফেলেন। এ ঘটনায় সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষুব্ধ হয়ে পাল্টা নিক্ষেপ করে এবং সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে পুরো এলাকাজুড়ে তৈরি হয় আতঙ্ক। তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হয়ে যায় মিরপুর সড়কের যান চলাচল। ঘটনার শুরু থেকেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে স্থানীয় থানা পুলিশ। পরে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ সায়েন্সল্যাব এলাকায় অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। তবে এখনো দুই পক্ষকে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া থেকে নিবৃত করা যায়নি। এছাড়া ঠিক কোন ঘটনার জের ধরে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্য কোনো পক্ষের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পাওয়া যায়নি। ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় উভয় পক্ষেরই বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আহত হতে দেখা গেছে।

ঢাবির ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় একই প্রশ্ন বারবার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষার বহুনির্বাচনি (এমসিকিউ) প্রশ্নে পর পর ৪টি প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। শনিবার দেশব্যাপী ৮টি বিভাগীয় শহরে এই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ভর্তি পরীক্ষার সেট-বি এর প্রশ্নপত্রের অ্যাকাউন্টিং অংশে দেখা যায়, এই বিভাগের ১২টি প্রশ্নের মধ্যে ৪টি প্রশ্নের হুবহু পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। অর্থাৎ প্রশ্নপত্রের ২৮-৩১ এবং ৩২-৩৫ নম্বর প্রশ্ন একই। পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪টি প্রশ্ন হলো- ‘রুপান্তর খরচের সমষ্টি?’, ‘আরডি ফুড কোম্পানির বিক্রিত পণ্যের ব্যয় ৫,৫০,০০০ টাকা। প্রারম্ভিক মজুদ পণ্য ২,০০,০০০ টাকা এবং সমাপণী মজুদ পণ্য ২,৫০,০০০ টাকা হলে পণ্যের মূল্য কত?’, ‘একটি খরচ যা পূর্বে সম্পদ হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল, এখন খরচ হিসেবে স্বীকৃত করা হয়। তাহলে নিট মুনাফার ওপর কী প্রভাব পড়বে?’, ‘সমাপনী জাবেদার মাধ্যমে কেন হিসাব বন্ধ করা হয়?’ তবে এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির কোনো বক্তব্য এখনো জানা যায়নি। পরীক্ষা চলাকালে এদিন দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ভবনের পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। ভর্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, প্রায় ৪১ হাজার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ঢাবিতে প্রথম বর্ষে ভর্তির আসন রয়েছে ৬,০১০টি। এর মধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ১,০৫০টি আসন রয়েছে। এছাড়া কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে ২,৯৩৪, বিজ্ঞান ইউনিটে ১,৮৯৬ এবং চারুকলা ইউনিটে কোটাসহ ১৩০টি আসন রয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী কমিটি গঠন নিয়ে যবিপ্রবিতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, শিক্ষকসহ আহত পাঁচ

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে একটি চায়ের দোকানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শিক্ষার্থীদের কথা-কাটাকাটির জেরে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। এতে প্রক্টর ড. আমজাদ হোসেনসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। তারা সবাই যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের ক্যাম্পাস কমিটি দেয়ার প্রস্তুতি চলছিল। তবে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ কমিটি চায়নি। এ নিয়ে গত দুদিন ধরে ক্যাম্পাসে এক ধরনের চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। শুক্রবার রাতে প্রধান ফটকের সামনে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে প্রক্টর অফিসে মীমাংসার জন্য গেলে সিএসই বিভাগের উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ও ক্যাম্পাসে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। প্রত্যক্ষদর্শী সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা অনেক চেষ্টার পরও ব্যর্থ হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আব্দুল মজিদ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে আসলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এখন পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। প্রসঙ্গত, এর আগে বৃহস্পতিবার (ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই আওয়ামীপন্থী শিক্ষক যথাক্রমে অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইকবাল কবির জাহিদ ও সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিবকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ড. গালিবের বরখাস্ত আদেশকে অবৈধ দাবি করে শুক্রবার জুমার নামাজের পর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। রাতে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পেছনে এ ঘটনারও সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানা গেছে।