
ডাকসুর রূপরেখা প্রণয়নে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শিক্ষার্থীদের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সভা সিন্ডিকেটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) বিষয়ে আলোচনা না করতে উপাচার্যের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার অভিযোগ উঠে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভের ডাক দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ডাকসুর রূপরেখা প্রণয়নের আল্টিমেটাম দেন তারা। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তারা এমন আল্টিমেটাম দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা- ‘ডাকসু আমার অধিকার, বাধা দেয় সাধ্য কার’; ‘মধুর ক্যান্টিন/চাঁদাবাজি/টেম্পু/ গণরুম/গেস্টরুম না ডাকসু, ডাকসু ডাকসু’; ‘ডাকসু যারা চায় না, শিক্ষার্থীদের শত্রু তারা’; ‘১,২,৩,৪ ডাকসু আমার অধিকার’: ‘দিতে হবে দিতে হবে, ডাকসু দিতে হবে’: ‘লেজুড়বৃত্তির ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান নিতে থাকেন। বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা বলেন, যারা ডাকসু বন্ধের চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা রাস্তায় আছি। আমরা লীগকে বিতাড়িত করেছি, কোনো ছাত্রসংগঠনের ভয়ে ডাকসু থেকে পিছু হটব না। যারা ডাকসুর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, কবরস্থান, টেম্পুস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি করে তাদের আমরা ১৭ জুলাই লাল কার্ড দেখিয়েছি। প্রশাসনের কাছে বলব, আপনারা তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবি জোবায়ের বলেন, ঢাবি শিক্ষার্থীরা হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছে। সুতরাং নতুন করে যদি দানব তৈরি হয় শিক্ষার্থীরা তাদের পালাতে বাধ্য করবে। ঢাবি শিক্ষার্থীরা আর কোনো দানবকে দেখতে চায় না। ছাত্রদল যখন দেখেছে তারা ডাকসুতে জিততে পারবে না, তখন তারা ভিসি স্যারের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করার সাহস দেখিয়েছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা এই প্রশাসনের সঙ্গেই আছি। অনতিবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন দিয়ে ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মাহিন সরকার বক্তব্যের শুরুতেই ছাত্রদল কর্তৃক হেনস্তার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। তিনি বলেন, উপাচার্যকে অপমান করার মাধ্যমে ছাত্রদল পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কেই অপমান করেছে। উপাচার্যকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। আমরা শিক্ষার্থী নির্যাতনের আর পুনরাবৃত্তি চাই না।

ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফরহাদ,সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ২০২৫ সেশনের জন্য নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটিতে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন এস এম ফরহাদ এবং সেক্রেটারি ও সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন যথাক্রমে মহিউদ্দিন খান ও কাজী আশিক। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাত ৯টায় ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যদের উপস্থিতিতে শহীদ মাহবুবুর রহমান অডিটোরিয়ামে সদস্য সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক সিবগাতুল্লাহর সঞ্চালনায় কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্যরা এতে উপস্থিত ছিলেন। নবনির্বাচিত সভাপতি ফরহাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে সেক্রেটারি মহিউদ্দিন খান লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের বিজয় একাত্তর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আশিক শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থী। ২০২৫ সেশনের জন্য সভাপতি নির্বাচন উপলক্ষ্যে সমাবেশে কেন্দ্রীয় সভাপতি স্বাক্ষরিত ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট গণনা শেষে কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্ত এস এম ফরহাদের নাম সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেন এবং পরে নবনির্বাচিত সভাপতিকে শপথবাক্য পাঠ করান। পরবর্তীতে, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম শাখা সেক্রেটারি ও সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনয়নের জন্য সদস্যদের থেকে লিখিত পরামর্শ গ্রহণ করেন। সেই পরামর্শের ভিত্তিতে মহিউদ্দিন খানকে সেক্রেটারি ও কাজী আশিককে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে মনোনয়ন দেন। নবনির্বাচিত সভাপতি এস এম ফরহাদ সেক্রেটারি ও সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন। সমাপনী সেশনে জাহিদুল ইসলাম সদস্যদের উদ্দেশ্যে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন, যেখানে ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও দায়িত্ব সম্পর্কে গুরুত্বারোপ করা হয়। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদ্য সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

ডাকসু নিয়ে ছাত্রদল-সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতবিরোধ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সিন্ডিকেট সভায় আওয়ামীপন্থিদের ডাকা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে প্রতিবাদ করেছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় হট্টগোল হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের সামনে শুরুতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবং পরে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা জড়ো হলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। একদিকে শিক্ষার্থীরা ডাকসু চেয়ে স্লোগান দেয়। অন্যদিকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এখনই ডাকসুর বিষয়ে আলোচনা না করার দাবি তোলেন। সিন্ডিকেটে আওয়ামীপন্থিদের অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা দ্রুত ডাকসু নিশ্চিতের দাবিতে স্লোগান দেয়। একই সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও সিন্ডিকেটে আওয়ামীপন্থিদের ডাকা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে সিনেটের সামনে আসেন। তারা ডাকসু নিয়ে যেন সিন্ডিকেটে কোনও আলোচনা না হয় সেই দাবি জানান। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের সাথে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে সূর্য সেন হল ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক আবিদুর রহমান মিশু বলেন, ক্যাম্পাসে ছাত্রদল এখনও রাজনীতি শুরুই করতে পারেনি। অস্থিতিশীল এক পরিবেশে বিভিন্ন জন বিভিন্ন ব্যানারে রাজনীতি করছে। এমন পরিস্থিতিতে কোনও পক্ষের চাপের মুখে অনির্বাচিত সিন্ডিকেট সদস্যদের সভায় এখনই ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। সিন্ডিকেটে আওয়ামীপন্থিদের নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আজকের সিন্ডিকেটে আওয়ামীপন্থিদের রাখা হয়নি। নিয়ম মেনে সিন্ডিকেট থেকে আওয়ামীপন্থিদের অনেককেই বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক কার্যক্রমের অগ্রগতির জন্য সিন্ডিকেট সভা করতে হচ্ছে। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের সহায়তা কামনা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নিয়ে উপাচার্য বলেন, আজকের সিন্ডিকেট সভার এজেন্ডার মধ্যেই ডাকসু সংক্রান্ত কিছু নেই। ডাকসুর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সবার ঐকমত্য না হলেও বৃহত্তর অংশের সমর্থন নিয়েই আমরা এগিয়ে যাবো। প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী বৈঠক সিন্ডিকেট সভা হয়। এতে আওয়ামীপন্থি তিন সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সাবেক নেতা অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও নীল দল নেতা অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভুঁইয়া এবং আওয়ামী লীগ নেতা এস এম বাহালুল মজনুন চুন্নু আমন্ত্রণ পেয়েছেন। তবে শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ক্ষোভের মুখে তাদের সভা থেকে দূরে রাখা হয়।

ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে পূবালী ব্যাংকের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি
সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ সাইন্স ক্লাব ও পূবালী ব্যাংক পিএলসির উদ্যোগে কলেজের প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন পূবালী ব্যাংকের ঢাকা উত্তর অঞ্চল প্রধান ও মহাব্যবস্থাপক একেএম আব্দুর রকীব। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের প্রিন্সিপাল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাবের হোসেন। অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সমাজের উন্নয়নের পাশাপাশি নিজেদের বাঁচাতে পরিবেশ সংরক্ষণে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। এক্ষেত্রে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ও স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে এবং বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।’ তিনি বিদেশি গাছ বর্জন ও দেশীয় গাছ রোপণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া বৃক্ষরোপণের পাশাপাশি যথাযথ পরিচর্যা ও সংরক্ষণের উপর জোর দেন।

যোগ্যতার শর্ত পূরণ না করেই নিয়োগের পরীক্ষায় ডাক পেলেন শিবিরের সাবেক সভাপতি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগে প্রভাষক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষিত ফলাফলের শর্ত পূরণ না করেই ডাক পেয়েছেন এক প্রার্থী। মোবারক হোসাইন নামের ওই প্রার্থী বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি। কুবির ওয়েবসাইটে গত অক্টোবর মাসে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুযায়ী, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের এই পদের ক্ষেত্রে প্রার্থীর এসএসসি/সমমান এবং এইচএসসি/সমমান উভয় পরীক্ষায় প্রথম বিভাগ অথবা ন্যূনতম জিপিএ ৪.০০ থাকতে হবে। এই বিজ্ঞপ্তির অধীনে নিয়োগ পরীক্ষায় ডাক পাওয়া মোবারক হোসাইনের এইচএসসির জিপিএ ৪.০০-এর কম। তিনি ২০০৩ সালে কুমিল্লা বোর্ড থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫-এর মধ্যে জিপিএ-৩.৯০ পেয়ে পাস করেছিলেন। ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগে প্রভাষক পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। সেখানে অন্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকলে যে কোন একটি শর্ত শিথিলের বিষয় উল্লেখ ছিল। তবে মোবারক হোসাইনের আবেদন করা এ বছরের ২৩ অক্টোবরের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে যোগ্যতার শর্ত শিথিলতার কোন বিষয় উল্লেখ নেই। ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্ল্যানিং বা বাছাই কমিটিতে রয়েছেন বিভাগটির প্রধান অধ্যাপক শেখ মকছেদুর রহমান, মুহম্মদ আসহান উল্লাহ, সহযোগী অধ্যাপক মাহবুব আলম, জিএম আজমল আলী কাওসার ও মোহাম্মদ মাকসুদুল করিম। যোগ্যতার শর্ত পূরণ না করে প্রার্থী পরীক্ষায় ডাক পাওয়ার বিষয়ে শেখ মকছেদুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্ল্যানিং কমিটি বসে মিটিং করেছি। এটি আসলে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল। আমরা রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি পাঠিয়েছি। এখন এটি প্রশাসন দেখবে।’ প্ল্যানিং কমিটিতে থাকা ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন মুহম্মদ আসহান উল্লাহ বলেন, ‘এটা তো চেয়ারম্যান বা রেজিস্ট্রার বলতে পারবে। ক্রাইটেরিয়া (মানদণ্ড) ব্যতীত এইখানে এলে কাউকেই নেওয়া যাবে না। এখন দেখার বিষয় এটি কি প্রিন্টিংয়ে ভুল হয়েছে না কি অন্যকিছু। তাছাড়া ক্রাইটেরিয়া সম্পূর্ণ না হলে প্ল্যানিং কমিটিও কাউকে নিতে পারে না। ক্রাইটেরিয়া হচ্ছে এসএসসি, এইচএসসি জিপিএ-৪। সেখানে এর নিচে আসবে কীভাবে? এটা চেয়ারম্যান অনুসন্ধান করে ভুল হয়ে থাকলে শুদ্ধ করে দিতে পারে। এটায় কারও ওপরই দোষারোপ করে লাভ নেই। হায়ার অথরিটি ইচ্ছে করলে এটা বাতিল করতে পারে।’ এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘সে পরীক্ষাতে বসবে কি বসবে না, এটা তার এখতিয়ার। যখন সিলেকশন বোর্ডে আসবে, সিলেকশন বোর্ডের মেম্বাররা অ্যানালাইসিস করবে। যদি সে আসে সিলেকশন বোর্ড সবকিছু দেখেশুনে তখন তারা সিদ্ধান্ত নেবে।’ যোগ্যতাই যদি না থাকে তাহলে সে কীভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে? এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ভুলে একজনের কাছে কার্ড চলে গেছে। তার কার্ডটা তো আমি রহিত করতে পারি না। বাতিল করার জন্য তিনটা ধাপ রয়েছে। বাছাই বোর্ড, প্ল্যানিং ও সিন্ডিকেট- যে কোন একটা ধাপে আটকে যেতে পারে। তাকে আটকানোর আইন আমার হাতে নাই।’ রেজিস্ট্রার আরও বলেন, ‘যারা ভুল করেছে, তাদের আমি কোয়ারি করতে পারি। আপনারা কেন ভুল করলেন। ওই লোককে আমরা কোয়ারি করতে পারি না।’ এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. হায়দার আলী বলেন, ‘এটি আমাদের সিলেকশন বোর্ড দেখবে। বোর্ড যদি দেখে সে (প্রার্থী) কোয়ালিফাই করে না তাহলে বাদ যাবে। প্রত্যেক সময়ই আমরা বোর্ডে চেক করি। তবে, প্ল্যানিং কমিটিকে অবশ্যই আমরা শোকজ করব।’ প্রসঙ্গত, মোবারক হোসাইন ২০০৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ পাস করেন। এরপর ২০১২ সালে নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন। ২০১৪-১৫ সেশনে ভারতের রাজস্থানের একটি ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি শুরু করেন। যা শেষ হয় ২০১৭ সালে। এর ফাঁকে সিটি ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলবি পাস করেন। আইসিএমএবিতে সিএমএর প্রথম সেমিস্টার শেষ করেন। সর্বশেষ জুলাই ২০১৯-এ তিনি দাওরায়ে হাদিস ডিগ্রি লাভ করেন। তার পিএইচডি থিসিসে আপত্তিকর শব্দের ব্যবহার, উইকিপিডিয়া থেকে সরাসরি কপি-পেস্ট করা ও ইংরেজি ভুল শব্দ ও বাক্যের ব্যবহার নিয়ে রয়েছে সমালোচনা। তিনি ছাত্র শিবিরের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি, কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক, কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক, কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক, কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।

জাবিতে নারী প্রক্টরের পোশাক নিয়ে ছাত্রদল নেতার কটূক্তি
থার্টি ফার্স্ট নাইটে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাতভর অভিযান চলাকালীন সহকারী প্রক্টর শামীমা নাসরিন জলির বোরকা ও পোশাক নিয়ে কটূক্তি করেছে শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি নবীনুর রহমান নবীন। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সূত্র জানায়, থার্টি ফার্স্ট নাইটে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে প্রক্টরিয়াল বডি টহল দেওয়ার সময় ৮-১০ জনের একটি প্রাইভেট কার যাচ্ছিল। তাদের থামিয়ে জিজ্ঞেসাবাদ করা হলে একজন মেয়ে নিজেকে ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসাবে পরিচয় দেন। এ সময় জাবি ছাত্রদলের নেতা নবীনুর রহমান নবীন এসে মেয়েটিকে চলে যেতে বলেন। তখন সহকারী নারী প্রক্টর তার পরিচয় জিজ্ঞেস করলে তিনি সহকারী প্রক্টরের কাছে তেড়ে এসে দুর্ব্যবহার করেন এবং রূঢ় ভাষায় কথা বলেন। এ সময় নবীন সহকারী প্রক্টরের পোশাক নিয়ে কটূক্তি করে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। নবীন সহকারী প্রক্টর শামীমা নাসরিন জলির বোরকা, হাত মোজাসহ পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। অভিযোগের বিষয়ে নবীনুর রহমান নবীন বলেন, ‘থার্টি ফাস্ট নাইটে সেখানে অনেকেই ছিল। আমি সেখানে ক্যাম্পাসের সাবেক একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে কথা বলেছিলাম। আমরা কি থার্টিফার্স্ট নাইটে নিজেদের মত ঘুরতে পারি না? আমরা কী ঘরে মোজা পরে জুতা পরে বসে থাকব? আমরা তো ক্যাম্পাসে কোন অপকর্ম করতে আসিনি, আমাদের গাড়ির কাগজপত্র দেখিয়েছিলাম সেখানে।’ এ নিয়ে শামীমা নাসরিন জলি বলেন, ‘আমি তার সাথে খুবই নমনীয় ভাষায় কথা বললেও তিনি আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে আমার সাথে কথা বলেন। আমার পোশাক নিয়ে কটূক্তি করেন। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে কেন পোশাক নিয়ে হেনস্তার স্বীকার হতে হবে? নতুন স্বাধীনতার পর এমন ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত।’ জাবির প্রক্টর একেএম রাশিদুল আলম বলেন, ‘আমার সহকর্মী (ভুক্তভোগী নারী সহকারী প্রক্টর) যদি লিখিতভাবে অভিযোগ জানান তাহলে এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

থার্টি-ফার্স্ট ঘিরে জাবিতে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, শিক্ষার্থীদেরও কঠোর নির্দেশনা
ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনে যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে থার্টি-ফাস্ট উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। বহিরাগতদের প্রবেশসহ উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ড বন্ধে শিক্ষার্থীদের রাত ১০টার মধ্যে স্ব স্ব হলে ফেরা এবং বিকাল ৪টার পূর্বেই সকল বহিরাগতদেরকে ক্যাম্পাস ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. এ বি এম আজিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর বিকেল ৪টা থেকে ২ জানুয়ারি ভোর ৬টা পর্যন্ত বহিরাগত ব্যক্তি ও স্টিকারবিহীন যানবাহনের ক্যাম্পাসে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। এসময়ে প্রান্তিক গেট ব্যতীত অন্য সব গেট বন্ধ থাকবে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যও কড়া নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রাত ১০টার মধ্যে হলে প্রবেশ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। হলে বা ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মিছিল, সভা-সমাবেশ, উস্কানিমূলক বক্তব্য বা উচ্ছৃঙ্খল আচরণ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সন্ধ্যার পর উন্মুক্ত স্থানে যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠান, ক্যাম্প ফায়ার, আতশবাজি, পটকা ফোটানো, ফানুস উড়ানো, ডিজে পার্টি এবং মাদকদ্রব্য সেবনের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ ২০১৮” অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের পরিচয়পত্র বহনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং ক্যাম্পাসের দোকানপাট রাত ১০টার মধ্যে বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ধরনের পদক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছে প্রশাসন।।

শিক্ষার্থীকে পেটালো সমন্বয়ক, উত্তাপ ছড়াল বিশ্ববিদ্যালয়ে
চট্টগ্রামে বেসরকারি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে মারধরের পর তোপের মুখে পড়েছেন প্রান্ত বড়ুয়া নামে এক সমন্বয়ক। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে হামলার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেন তিনি। তবে ওই মীমাংসা বৈঠকের সময় সমন্বয়ক গ্রুপের এক শিক্ষার্থী একজন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের গায়ে হাত তুলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও এটিকে উদ্দেশ্যমূলক মনে করছেন না ওই প্রফেসর। তবে শিক্ষকের গায়ে হাত তোলাকে কেন্দ্র করে শেষ বিকালে ফের উত্তাপ ছড়িয়েছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে দশটার দিকে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারী গলি ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার সকালে প্রান্ত বড়ুয়া নামে একজন সমন্বয়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসইর ৪৪তম ব্যাচের তানভীর নামে একজন শিক্ষার্থীকে ফটকের সামনে মারধর করেন। ওই সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তানভীরকে ছাড়িয়ে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ফের তার ওপর হামলার চেষ্টা করেন প্রান্ত বড়ুয়া। প্রান্ত বড়ুয়া আইন বিভাগের শিক্ষার্থী। আট তলা ওই ভবনের দুই ও তিন তলায় আইন বিভাগ ও চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ তলা পর্যন্ত সিএসই বিভাগ। বাকিগুলোতে ইকোনমিক্স ও ট্রিপল ই বিভাগ। সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীর ওপর দফায় দফায় হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে এটি নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায় বিভাগটির শিক্ষার্থীর মধ্যে। এক পর্যায়ে সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক হয়ে আইন বিভাগ ঘেরাও করে। এর মধ্যে পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে মারধরের বিষয়ে প্রান্ত বড়ুয়া ক্ষমা চাইলে বিষয়টি মীমাংসা হয়। তবে, বিকালের দিকে খবর ছড়িয়ে পড়ে মীমাংসা বৈঠকের সময় ফরহাদ পাটোয়ারি নামে বিবিএর এক শিক্ষার্থী সিএসসি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিনহাজ হোসাইনের গায়ে হাত তুলেছে। ফরহাদ জিইসি মোড়ের মেইন ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী। সমন্বয়ক প্রান্ত বড়ুয়ার পক্ষ নিয়ে তিনি হাজারীগলি ক্যাম্পাসে এসেছিলেন। এটি নিয়ে ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। জানতে চাইলে মিনহাজ হোসেন বলেন, ‘প্রান্ত বড়ুয়া নামে একজন শিক্ষার্থী তানভীর নামে আরেকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে, এটি নিয়ে কিছু উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পরে প্রান্ত এ জন্য ক্ষমাও চেয়েছে। উত্তেজনার সময়ে কেউ একজন আমাকে ধাক্কা দিয়েছে। এটাকে ঠিক গায়ে হাত দেয়া আমি বলব না। দুই পক্ষ মুখোমুখি ছিল। তাদের উত্তেজনার সময়ে আমরা মাঝখানে দাঁড়িয়েছি। এর মধ্যে ভুলবশত আমার গায়েও হাত লেগেছে। তাছাড়া ভিন্ন ক্যাম্পাসের হলেও ওই শিক্ষার্থীও আমাদের ছাত্র।’ এই বিষয়ে কথা বলতে প্রান্ত বড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভীড়ের মধ্যে আছে উল্লেখ করে হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দিতে বলেন। পরে হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দিলেও তার কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল করিম বলেন, ‘এক শিক্ষার্থীকে মারধরের জের ধরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। এখন শিক্ষকেরা বসে সমাধান করছেন। যিনি মারধর করেছেন তিনি ক্ষমা চেয়েছেন।’ এ দিকে, শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ তুলে সোমবার বিকালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে জড়ো হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ গ্রুপে ধ্রুব দে নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘আজকে আইন বিভাগের একজন শিক্ষার্থী প্রান্ত বড়ুয়া আমাদের ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী তানভীরের ওপর হামলা করে। সেখানে বিবিএ ডিপার্টমেন্টের ছাত্র ফরহাদ পাটোয়ারী আইন বিভাগের রুমে আমাদের ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকের সঙ্গে বেয়াদবি করেছে। যেটা কখনোই মেনে নেয়ার মত নয়। এই মুহূর্তে বিচারের জন্য জিইসি ক্যাম্পাসে যাওয়া জরুরি। সবাইকে অনুরোধ করছি জিইসি ক্যাম্পাসে আসার জন্য।’

ঢাবি শিক্ষক সঞ্চিতা গুহের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষক সঞ্চিতা গুহের বিরুদ্ধে ইসলাম বিরোধিতা, জুলাই আন্দোলনে হামলার উসকানি ও বিভাগের শিক্ষার্থীদের হেনস্তার অভিযোগ এনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই শিক্ষককে যেন বিভাগের চেয়ারম্যান না করা হয় সে দাবিও জানান শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এই বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ‘এক দুই তিন চার, সঞ্চিতা তুই বিভাগ ছাড়’, ‘স্বৈরাচারের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন তারা। একইসঙ্গে দুই দফা দাবিও জানান শিক্ষার্থীরা। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এই শিক্ষকের ভূমিকা নিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, জুলাইয়ের এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যার মদদ দিয়ে গেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সঞ্চিতা গুহ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর থাকাকালীন সময়ে তার প্রত্যক্ষ মদদে ক্যাম্পাসে ছাত্রদের ওপর হামলা চালানো হয়। তাছাড়াও তিনি বিভাগীয় ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবেও তখন দায়িত্ব পালন করা সত্ত্বেও আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করেছেন। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজারুল রহমান বাবুর ফেইসবুক পোস্টে কমেন্ট করে ছাত্রদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হামলার উসকানি দেন। তবুও বর্তমানে তাকে বিভাগের চেয়ারম্যান পদে পদায়ন করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে, যা ছাত্রজনতার রক্তের সঙ্গে বেইমানির শামিল। সম্ভাব্য নিয়োগকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে দুই দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা ১. আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর ও সন্ত্রাসীদের ইন্ধনদাতা ড. সঞ্চিতা গুহকে সংস্কৃত বিভাগের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া যাবে না। ২. শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য অদম্য-১৪, প্রত্যয়ী-১৫, সংকল্প-১৬, সুশ্চম-১৭ এবং সৌরচান্দ্রিক- ১৮ ব্যাচের কোনো ক্লাস তাকে দেওয়া যাবে না। সাদমান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, তিনি সহকারী প্রক্টর ছিলেন, তার কাজ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিস্টেম অনুসারে ছাত্রদেরকে আগলে রাখা। অথচ তার প্রতক্ষ মদদে হামলা হয়েছে৷ উল্টো তিনি হামলাকারীদের পক্ষে ছিলেন। আমরা দৃঢ় কণ্ঠে বলতে চাই হাসিনা গেছে যে পথে তিনিও যাবেন সে পথে৷ আরফিনা আক্তার নামে বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা জানতে পেরেছি তিনি ৫ তারিখ চেয়ারম্যান হিসাবে বিভাগে জয়েন করার চেষ্টা করছেন। অথচ তিনি সেই শিক্ষক যিনি হিজাব নিয়ে হেনস্তা করেন। পর্দা করায় তিনি আমাকে কটূক্তি করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কখনো আফগানিস্তান হবে না। আমি তাকে বলতে চাই বাংলাদেশ কখনো ভারত হবে না। এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, এই শিক্ষক আমাকে প্রতিটা কোর্সে হেনস্তা করেন। আমি অনেক ভালো প্রিপারেশন নেয়ার পরও আমাকে তিনি বি গ্রেডের ওপরে কিছুই দেননি৷ তিনি যদি চেয়ারম্যান হয়ে ফিরে আসেন তাহলে আমাদের কী হবে। আমাদের নিরাপত্তা কে দেবে? বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, তিনি তার ভাইয়ের ক্ষমতা ব্যবহার করে যত্রতত্র তা প্রদর্শন করতেন। তিনি বিভাগীয় ছাত্র উপদেষ্টা হয়েও কখনো আমাদের খোঁজ নেননি৷ উল্টো আন্দোলনের সময় তিনি আমাদেরকে নির্যাতনের পক্ষে ছিলেন। তিনি আমাদেরকে নিজেও হুমকি দিয়েছেন। একটি মহল তাকে পদায়ন করার চেষ্টা করছে। আমরা বলতে চাই, শেষ অবধি আমরা তার এই স্বৈরাচার মনোভাবের বিরুদ্ধে লড়ে যাব।

কোন সাহসে শেখ হাসিনার গ্রাফিতি মোছে, প্রশ্ন উমামা ফাতেমার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যঙ্গ গ্রাফিতি মুছে ফেলার চেষ্টা করে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। পরে বিষয়টি জানতে পেরে শিক্ষার্থীরা এসে বাধা দেয়। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) মধ্যরাতের এ ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, প্রক্টররে পদত্যাগ করতে হবে। এনএসআই এর প্রেসক্রিপশন নাকি র এর প্রেসক্রিপশন এসব আমি চিনি না। এ সময় প্রশ্ন রেখে তিনি আরও লিখেছেন, কোন সাহসে হাসিনার গ্রাফিতি মোছে? এর আগে, সিটি করপোরেশনের কিছু লোক শনিবার মধ্যরাতে রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে শেখ মুজিব ও হাসিনার ব্যঙ্গাত্মক গ্রাফিতি মুছতে ক্রেন নিয়ে আসে। সে সময় হাসিনার গ্রাফিতির মাথা পর্যন্ত মুছে ফেললেও মুজিবের পুরোটাই মুছে ফেলা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা এসে বাধা দিলে তারা এটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়। শিক্ষার্থীরা জানান, শেখ হাসিনার গ্রাফিতিটা ছিল মূলত ঘৃণা স্তম্ভ। এটি জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি। আমরা এটি দেখে প্রক্টরকে কল করলে প্রক্টর এসে জানান যে, তাকে গোয়েন্দা সংস্থা কল করেছেন শেখ মুজিব এবং শেখ হাসিনার ছবি মুছে দেওয়ার জন্য। পরে প্রক্টর স্যার এস্টেট অফিসকে জানালে অফিস সিটি করপোরেশন ও মেট্রো কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এটি মুছে ফেলার উদ্যোগ নেয়। যা শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে সম্ভব হয়নি।

ঢাকা কলেজে ছাত্রদলের বিক্ষোভ, রাকিব-নাছিরের কুশপুতুল দাহ
ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের কুশপুতুল দাহ করা হয়। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা থেকে ঢাকা কলেজের বিজয় চত্বরের সামনে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। এ সময় সদ্য ঘোষিত কমিটিকে অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়ে ক্যাম্পাসে শোডাউন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা না করা পর্যন্ত বর্তমান কমিটি ক্যাম্পাসে অবস্থান নিতে পারবে না বলে জানান বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে ‘রাকিব-নাছিরের কমিটি মানি না মানব না, রাকিব-নাছিরের দুই গালে জুতা মার তালে তালে, ছাত্রলীগের কমিটি মানি না মানব না, আমাদের ক্যাম্পাস আমরাই থাকব, ভাই মানার কমিটিরা হুঁশিয়ার সাবধান, ছাত্রলীগের দালালেরা মানি না মানব না, অবৈধ কমিটি মানি না মানব না, ভাই মানা কমিটি মানি না মানব না, ককটেল দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’ স্লোগান দেন। ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমি ঢাকা কলেজে ভর্তির পর থেকে ছাত্রদল করি। এ পর্যন্ত যত প্রোগ্রাম ছিল সব জায়গায় অংশগ্রহণ করেছি। ২০১৭ সালে যে কমিটি হয়েছিল, সেখানে সদস্য ছিলাম এবং তার পরের কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। গত ২৮ অক্টোবরের পরে আমরা জীবনবাজি রেখে রাজপথে ছিলাম। রাজপথে থাকার পরে দলীয় যে নির্দেশনা দিয়েছে, সব যথাযথভাবে পালন করেছি। জুলাই গণ অভ্যুত্থানে তারেক রহমানের নির্দেশে সাধারণ ছাত্রদের পাশে থেকে আমরা সায়েন্সল্যাব, জিগাতলা ও ঢাকা কলেজ এলাকায় আন্দোলন চালিয়ে যাই।’ তিনি আরো বলেন, ‘একটি খারাপ চক্র দলের ভেতর দ্বিধা-দ্বন্দ্ব সৃষ্টির জন্য অনেক পাঁয়তারা করে এবং দেখা যাচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল একটা কমিটি হয়েছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী ছাত্রলীগের একটি চক্র সক্রিয় ছিল। সেই চক্র ঢাকা কলেজের যে কমিটি হয়েছে, সেই কমিটিতে জায়গা পেয়েছে।’ এ সময় ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি তাজবি উল, সহ-সভাপতি আবির ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসানসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এর আগে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে কলেজের বাংলা বিভাগের (২০০৯-১০) সেশনের পিয়াল হাসান এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের (২০১২-১৩) সেশনের মো. মিল্লাদ হোসেনকে সদস্য সচিব করে ৩৬ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। কমিটিতে অযোগ্যদের স্থান দেওয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে পদবঞ্চিত আনুমানিক ৪০-৫০ জন নেতাকর্মী নায়েমের গলি থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি মিরপুর সড়ক হয়ে ঢাকা কলেজের মূল ফটকের সামনের সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন নেতাকর্মীরা। পরে মঙ্গলবার রাত দশটা থেকে ১১টার মধ্যে ঢাকা কলেজে মূল ফটক, কলেজ সংলগ্ন মিরপুর রোডের একাধিক স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

শিক্ষকের বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবীতে উত্তাল সিটেক
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) অধিভুক্ত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, জোরারগঞ্জ, চট্টগ্রামের (সিটেক) ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক মো. সাইফুল ইসলাম (কারিগরি)-কে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বদলির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে ওই শিক্ষকের বদলির আদেশ বাতিলের জন্য ২৪ ঘণ্টা আল্টিমেটাম দেন তারা। ২৪ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) রাত ১১ টায় চট্টগ্রাম টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এই বিক্ষোভ মিছিল করেন। এইসময় তারা ক্যাম্পাসের মূল প্রশাসনিক ভবন থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে মূল ফটকের সামনে আগুন জ্বালিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে বিক্ষোভ মিছিলটি শেষ করেন। সমাবেশে ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফজলুর রহমান বলেন, সাইফুল স্যারের বদলি আদেশে বর্তমান শিক্ষার্থীরা অনেক ক্ষুব্ধ এবং তারা এই সিধান্তের তীব্র নিন্দা জানায়। সাইফুল স্যার এর মতো এমন যোগ্য এবং সৎ শিক্ষককে শিক্ষার্থীরা হারাতে চায় না। তাছাড়াও ফ্রেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে শিক্ষকের ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও উনাকে বদলি করা হয়েছে। এই আদেশ প্রত্যাহার না হলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম বয়কট করবো এবং প্রয়োজনে বস্ত্র অধিদপ্তর ঘেরাও করবো। একই বিভাগের ১৪ তম ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী আবু নাসের সাগর বলেন, সাইফুল স্যার আমাদের বিভাগ থেকে চলে গেলে আমাদের বিভাগ শিক্ষক শূন্য হয়ে পড়বে, তাই আমরা চাই না উনার মতো যোগ্য শিক্ষককে হারাতে।এছাড়াও উনি আমাদের বর্তমান শিক্ষার্থীদের একটি আস্থার জায়গা। আমরা চাই এই বদলি আদেশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে তা না হলে আমরা ক্যাম্পাসের সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিবো। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, চট্টগ্রামের অধ্যক্ষ জামিরুল ওসমান বলেন, উনি আমাদের একজন সৎ ও শিক্ষার্থী বান্ধব শিক্ষক। উনি যদি ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে চলে যায় তাহলে বিভাগে কোন স্থায়ী শিক্ষক থাকবে না। তাছাড়াও বর্তমানে বদলি হয়ে যে শিক্ষক আসার কথা রয়েছে তিনি অন্য বিভাগের। উল্লেখ্য, ২৪ ডিসেম্বর বস্ত্র অধিদপ্তর উপপরিচালক (প্রশাসন) মোঃ সাইফুর রহমান সাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, জোরারগঞ্জ, চট্টগ্রামের ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক মোঃ সাইফুল ইসলাম (কারিগরি)-কে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বেগমগঞ্জ, নোয়াখালীতে বদলির আদেশ দেওয়া হয় এবং বদলিকৃত কর্মস্থলে আগামী ৩০ ডিসেম্বর মধ্যে যোগদান করতে বলা হয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে মেহেদী হাসান হিমেলকে আহ্বায়ক ও সামসুল আরেফিনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সম্মেলনের মাধ্যমে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে আংশিক আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করা হল।’ আহ্বায়কের দায়িত্ব পাওয়া মেহেদী হাসান হিমেল ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী। কমিটিতে জাফর আহম্মেদ, সুমন সরদার, মোস্তাফিজুর রহমান রুমি, মো. শাহরিয়ার হোসেন, মাহমুদুল হাসান খান মাহমুদ, কাজী রফিকুল ইসলাম, নাহিদ চৌধুরী, নাহিয়ান বিন অনিক, রবিউল আউয়াল, সাখাওয়াত ইসলাম খান পরাগ, রাশেদ বিন হাসিম, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, মাইনউদ্দিন চৌধুরী মাইন, মেহেদী হাসান রুদ্র, মো. মোজাম্মেল মামুন ডেনি, হাসিবুল ইসলাম হাসিব, রবিন মিয়া শাওন ও শামিম মিয়াকে যুগ্ম-আহবায়ক করা হয়েছে। আহ্বায়ক কমিটিতে মো. রিয়াসাল রাকিব, মুবাইদুর রহমান, এম তানভীর রহমান, আবু হেনা মুরসালিন, ইমরান হাসান ইমন, মাহিদ হোসেন ও মাশফিকুল রাইনকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের পদ বঞ্চিতদের বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলেই ঘোষণা করা হয়েছে ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রদলের ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি। এরপরই কমিটিতে স্থান না পাওয়া অন্যান্য নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। এমনকি তারা দাবি করছেন, ঘোষিত এই আহ্বায়ক কমিটিতে ৩-৪ জন ছাত্রলীগের কর্মীও রয়েছেন। অথচ যোগ্যরা স্থান পায়নি। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা কলেজ থেকে মিছিল নিয়ে মিরপুর সড়কে এসে অবরোধ করেন। এ সময় তাদের আগুন জ্বেলে বিভিন্ন স্লোগান দিতেও দেখা গেছে। এর ফলে সন্ধ্যার পর বেশকিছু সময় সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাপারটি নিয়ে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারেক জামিল বলেন, ‘গত এক মাস আগে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সেক্রেটারি নাছিরের এলাকার উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে সায়েন্সল্যাব থেকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করছিলাম। পরে সে নিজে এসে থানা থেকে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। সেই ক্ষোভের কারণে আমাকে ও আমার সহযোদ্ধাদের কমিটি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ঢাকা কলেজের ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট যে কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, সেখানে ৩-৪ জন ছাত্রলীগের কর্মী আছে।’ ব্যাপারটি নিয়ে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি তাসবিরুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু আমি নয় দীর্ঘ দিন যারা রাজপথে ছিল, আন্দোলন করেছে, কারা নির্যাতিত হয়েছে তাদের এই কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি-সেক্রেটারি নিজস্ব লোকদের নেতা বানানোর জন্য এবং সেই কমিটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য তারা তাদের অনুগতদের দিয়ে কমিটি করেছে। এ কমিটি আমরা মানি না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা গত ১৬ বছর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। সেই আন্দোলন আমরা আমাদের জীবনের সবকিছু দিয়ে আন্দোলন করেছি। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। আমরা এই অবৈধ কমিটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে ন্যায্য অধিকার না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালবে।’ এর আগে, মঙ্গলবার বিকালে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসিরের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদল ঢাকা কলেজ শাখার ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে কলেজের বাংলা বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পিয়াল হাসানকে আহ্বায়ক ও ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মিল্লাদ হোসেনকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। এছাড়া আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্যও এতে নির্দেশে দেওয়া হয়েছে।

তিন দিন ধরে নিখোঁজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আরবি বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী খালিদ হাসানের গেল তিন দিন ধরে খোঁজ মিলছে না। ফলে, তার সন্ধান চেয়ে মানববন্ধন করেছে আরবি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানবন্ধনে খালিদের বাবা লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমার ছেলে বেঁচে আছে কি না, জানি না। আমি জানি না তার বন্ধু আছে, না শত্রু আছে। আপনারা যেভাবে পারেন, আমার ছেলেকে উদ্ধার করে দিন।’ তিনি বলেন, ‘খালিদের ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশকে স্বাধীন করার, সেটা সফল হয়েছে। তার কি হয়েছে জানি না। আমার দিন নাই, রাত নাই। আজ এই অফিস, কাল ওই অফিস দৌড়াদৌড়ি করছি, কাজ হচ্ছে না। সে যে অবস্থায় থাকুক, তাকে উদ্ধার করে দিন।’ আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘যারা জুলাই আন্দোলনে সক্রিয়, তাদের নানাভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে। খালেদ কয়েক দিন থেকে নিখোঁজ। আমরা তার সন্ধান চাই।’ সহ-সমন্বয়ক সরদার নাদিম শুভ বলেন, ‘খালেদ ৭২ ঘণ্টা থেকে নিখোঁজ। অথচ পুলিশ কোন খোঁজ নিচ্ছে না।’ সরকারে গোয়েন্দা সংস্থা কি করছে প্রশ্ন করে বিষয়টিকে ‘লজ্জা’ বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এ দিকে, নানা তথ্য অনুসন্ধান করেও গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এখনো খালিদের বিষয়ে কোন তথ্য পায়নি বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ। সিসিটিভি ফুটেজে সর্বশেষ তাকে গত শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ছয়টা ১৭ মিনিটে ঢাবির দোয়েল চত্বরে দেখা গেছে। এরপর গত তিন দিন ধরে তার কোন খোঁজ নেই। খালিদের বাড়ি কুমিল্লা জেলার ব্রাক্ষণপাড়ায়।

ইবি’তে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশের সময় নির্ধারণ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলে প্রবেশসীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে হল প্রভোস্ট কাউন্সিল। ছাত্র হলে রাত ১১টার মধ্যে এবং ছাত্রী হলে মাগরিব আজান হওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যে প্রবেশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. শেখ এ.বি.এম জাকির হোসেন এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, প্রভোস্ট কাউন্সিলের সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।শনিবার অনুষ্ঠিত ১৪০তম প্রভোস্ট কাউন্সিলের সাধারণ সভায় উঠে আসা তিন নম্বর প্রস্তাবে ছাত্র ও ছাত্রীদের হলে রাতে প্রবেশের সময় নির্ধারণ প্রসঙ্গে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে বলা হয়, ছাত্রদের প্রতিটি হলে রাত ১১টার মধ্যে শিক্ষার্থী প্রবেশ বাধ্যতামূলক। আর ছাত্রীদের হলে মাগরিবের আজান হওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যে প্রবেশ বাধ্যতামূলক। শিক্ষার্থীদের স্ব-স্ব হল ব্যতিরেকে অন্য হলে অবস্থান নিষিদ্ধ।এছাড়াও শীতকালীন ছুটির সময় প্রতিটি হলের চারিদিকে নিরাপত্তা টহল বাড়ানো, যেমন- রাত্রিবেলায় অতিরিক্ত ২ জন এবং দিনের বেলায় অতিরিক্ত ১ জন নিরাপত্তা প্রহরী প্রতিটি হলের চারিদিকে পাহারারত থাকা, গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর মোট ছয় মাসের বকেয়া ভর্তুকি (সাবসিডি) দ্রুত হল ফান্ডে জমাদানের অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।এদিকে শীতকালীন ছুটিতে আবাসিক হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের জন্য ডাইনিং খোলা রাখা প্রসঙ্গে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি। একাধিক হল ডাইনিং ম্যানেজার চালু রাখার ক্ষেত্রে অপারগতা দেখাচ্ছে বলে জানা যায়। তবে এ বিষয়ে রাতে জরুরি মিটিং করবে বলে প্রভোস্ট কাউন্সিল বরাত জানানো হয়।
.jpg)
দুই দিন ধরে নিখোঁজ ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক খালেদ হাসান
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খালেদ হাসানকে গত দুইদিন ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তার সহপাঠীরা। পরিবারের সঙ্গেও খালেদের যোগাযোগ নেই বলে জানান তারা।রোববার (২২ ডিসেম্বর) তার বন্ধু ও সহপাঠীরা জানান, শুক্রবার বিকেল থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তাকে।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মোহাম্মদ মাহিন বলেন, শুক্রবার বিকেল থেকে খালেদকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ওর বাসায় কেউ ওর ব্যাপারে জানেন না। আন্দোলনে সক্রিয় থাকার কারণে নানা হুমকি ছিল ওর জীবনে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাকে দ্রুত খোঁজে বের করার অনুরোধ জানান তিনি।এদিকে খালেদ হাসানের নিখোঁজের বিষয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদন এসেছে এই প্রতিবেদকের কাছে। এতে বলা হয়, খালিদ হাসান এর ব্যবহৃত মোবাইলের রেকর্ড ও তার ছোটবেলার বন্ধু ওমর ফারুকের দেওয়া তথ্যমতে গত ১৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে তিনি তার বন্ধু ওমর ফারুকসহ বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশ এলাকায় ঘোরাফেরা করেন। পরবর্তীতে গত ২০ ডিসেম্বর ভোর ৫টার দিকে তিনি পূর্বাচল জলসিঁড়ি আবাসিক এলাকায় অনুষ্ঠিত ২১ কিলোমিটার ম্যারাথন দৌড়ে অংশগ্রহণ করেন। ম্যারাথন শেষে তার বন্ধুকে ফার্মগেট এলাকায় নামিয়ে দিয়ে তিনি সকাল ১০টা ৪৩ মিনিটে তার মোটরসাইকেলে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার কক্ষে ফিরে আসেন। হলে থাকা সিসি ক্যামেরায় তা দেখা গেছে। তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি এখনো হলে রয়েছে। সিডিআর পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তিনি গত শুক্রবার সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে সর্বশেষ তার এক বন্ধুর সাথে কথা বলেন, যিনি ঢাকার বাইরে আছেন। তার রুমের দরজা বাহির থেকে তালা দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়।গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তাকে খুঁজে না পেয়ে বন্ধুরা তার তালাবদ্ধ রুম খুলে তার ব্যবহৃত একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল পায়। ওই মোবাইল তার বন্ধুদের মাধ্যমে ডিভি অফিসে নিয়ে আসা হয়েছে। মোবাইল পর্যালোচনা করে দেখা যায় হোয়াটসঅ্যাপ আনইন্সটল করা। যাতে ভিকটিম নিজে আনইন্সটল করার ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। তার হোয়াটসঅ্যাপ ডাটা রিস্টোর করার চেষ্টা করা হচ্ছে।ক্যাম্পাসে তাকে বিকেল তিনটায় জিহাদ নামের একজন ছেলে দেখেছে বলে জানা যায়। তার ছোটবেলার বন্ধু ওমর ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে পূর্বেও তার পিতার সাথে ঝগড়া করে মোবাইল বন্ধ করে অন্যত্র আত্মগোপন করে ছিল। বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।তার সহপাঠী আল মাহমুদ জানান, শেষবার গত বৃহস্পতিবার রাতে আমাকে বলেছিলো যে ও ম্যারাথনে যাবে, তারপর শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে দুইবার কল দিয়ে ওয়েটিং পাই এবং আমার কল সাধারণত ও ইগনোর করে না বা পরে কল করে। কিন্তু পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে কল দিয়ে ফোন বন্ধ পাই। ওর নিখোঁজ হওয়াটা বিস্ময়ের। অন্তত আমাকে জানাত। কিন্তু আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। ওর বাসায় কেউ এ ব্যাপারে জানেন না, ওর আব্বু, ওর চাচার সাথে একাধিকবার কথা হয়েছে তারাও জানেন না কিছু। আমি চাই অতি দ্রুত আমাদের বন্ধু আমাদের কাছে ফিরুক।প্রসঙ্গত, আন্দোলনে সক্রিয় ছাত্রদের ধরে টার্গেট কিলিং করছে বলে অভিযোগ করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির দুই শিক্ষার্থী শিহান ও সীমান্ত হত্যাকাণ্ড দিয়ে এর সূত্রপাত। এতদিন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ আক্রান্ত হলেও এবার খোদ ঢাবি শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রেই এমনটা হওয়ার আশঙ্কা করছেন সকলে।

হাসিনা পরিবারের সদস্যদের নামে ১৫ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
দেশে ৫৫টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৫টির নাম ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারের সদস্যদের নামে। এর মধ্যে দুইটি তার নিজের নামে। পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ১১টি, আর মা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের নামে আছে দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) বলছে, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিলে ভবিষ্যতে নাম পরিবর্তন হতে পারে। শিক্ষা কিংবা গবেষণার মান বাড়ুক বা না বাড়ুক, সংখ্যার খাতিরে বেড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। স্বাধীনতার পর গত ৫৩ বছরে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ই হয়েছে ৫৫টি। যার প্রায় তিন ভাগের এক ভাগের নামকরণ হয় শেখ পরিবারের নামেই। যা প্রতিষ্ঠা হয় বিগত সরকারের সময়ে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ধরণে আছে রকমফের। যেমন- সাধারণ, মেডিকেল, মেরিটাইম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, এভিয়েশন ও অ্যারোস্পেস, কৃষি, ডিজিটাল- এই সাত ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়। এর ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে। তার স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের নামে জামালপুর ও সিলেটে আছে আরও দুইটি। আর কন্যা শেখ হাসিনার নামে নেত্রকোণা ও খুলনায় আছে দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়। গেল ৫ আগস্টের পর বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়েই দেখা যায় নামফলক থেকে মুছে ফেলা হয়েছে শেখ পরিবারের চিহ্ন। গাজীপুরের দুইটি, গোপালগঞ্জ, নওগাঁ, সিলেটে একই চিত্র। তবে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামফলক থেকে শব্দ মুছে ফেললেই নাম পরিবর্তন হয় না। সাধারণত ইউজিসিতে আবেদনের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে সংসদে বিল আকারে পাশ হতে হয়। কিশোরগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নায়লা ইয়াসমিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি সরকারির সিদ্ধান্তের বিষয়। সরকারের সব সিদ্ধান্তই আমরা অনুসরণ করে থাকি। নাম পরিবর্তনে সরকার কোন সিদ্ধান্ত নিলে আমরা তা অনুসরণ করব।’ ইউজিসি বলছে, ‘সব অংশীজন উদ্যোগ নিলে ভবিষ্যতে হতে পারে নাম পরিবর্তন।’ ইউজিসির চেয়ারম্যান এসএমএ ফায়েজ বলেন, ‘অনেকই আমাদের কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন। সরকার যদি আমাদের কাছে মতামত চায়, আমরা তখন অবশ্যই মতামত দেব। এটি বিশেষ করে সরকারি পর্যায়ে যেহেতু হয়েছে, তাই সরকারই এটি দেখাশোনা করবে। সরকার সঠিক সময় সিদ্ধান্ত নেয় বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে মারধর, আবাসিক এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ
ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) আবাসিক এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষকদের মাঝে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে দশটার দিকে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রিজওয়ানুল হককে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আবাসিক এলাকা সংলগ্ন সড়কে মারধর করে দুর্বৃত্তরা। পরে ওই শিক্ষক ও ফিজিওলজি বিভাগের অধ্যাপক আফরিনা মুস্তারীর বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। মঙ্গলবার রাতে কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মো. শহীদুল আলমের বাসায়ও ভাঙচুর চালানো হয় বলে জানিয়েছেন আফরিনা মুস্তারী। ঘটনার সময় নিরাপত্তা কর্মীদের অনুপস্থিতি ও ঘটনা পরবর্তী প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরেই শিক্ষকদের ওপর এ রকম হামলা এবং সেটির বিরুদ্ধে প্রশাসনের কোন সক্রিয় পদক্ষেপ না নেওয়াকে প্রশাসনের চরম ব্যর্থতা হিসেবেই উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা। ভুক্তভোগী মো. রিজওয়ানুল হক বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) রাত সাড়ে দশটার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাব থেকে বাসায় ফিরছিলাম। ঠিক সেই সময় একটি মোটরসাইকেলে তিনজন দুর্বৃত্ত আমার পিছু নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে তারা আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। মোটরসাইকেল থেকে নেমে দৌঁড়ানোর চেষ্টা করলেও তারা আমাকে ফের আক্রমণ করে। তারা আমাকে এলোপাথাড়ি লাথি দেয় এবং হাতের মুঠিতে কিছু একটা রেখে ঘুষি দিতে থাকে। মাথায় হাত দিয়ে ঢেকে রাখার কারণে বড় কোন বিপদ হয়নি। হামলার পর তারা আমার বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। সেসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি আমার বাসাতেই উপস্থিত ছিল।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে ঘটনা সম্পর্কে জানানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরেই একজন শিক্ষককে এভাবে মারধর করা হল, অথচ নিরাপত্তা কর্মীদের দেখা মেলেনি। প্রক্টরিয়াল বডিকে জানালেও তদন্ত বা বিচার নিয়ে কোন আশ্বাস আমাকে তারা দেয়নি। প্রক্টরিয়াল বডি আমার বাসায় এসে শুধু বলেছে, যে বিষয়টি দুঃখজনক। গতকাল যদি আমাকে গুলি করত, তাহলেও কেউ নিরাপত্তা দিতে আসত না। আমি মনে করছি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আমাদেরকে নিরাপত্তা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।’ ভুক্তভোগী আফরিনা মুস্তারী বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত একটার দিকে আমার বাসার সামনে তিনটি ককটেল বিস্কোরণ করা হয়েছে। দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলে করে এসে ককটেল বিস্ফোরণ করে চলে যায়। গভীর রাতে মোটরসাইকেল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার ভেতরে ককটেল নিয়ে কেউ কিভাবে অবাধে চলে আসতে পারে, সেটাই আমার বোধগম্য হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীদের তাহলে কাজটা কি? এত রাতে আবাসিক এলাকার তেতরে কেউ আসলে, তাকে অবশ্যই তল্লাশী করে তারপরে অনুমতি দিতে হবে।’ ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রক্টর অধ্যাপক মো. আব্দুল আলীমের সঙ্গে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার চূড়ান্ত আবেদন শুরু
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার জন্য চূড়ান্ত আবেদন শুরু হয়েছে। ১৭ ডিসেম্বর থেকে আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই আবেদন প্রক্রিয়া।মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার শেখ মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, ১ ডিসেম্বর থেকে প্রাথমিক আবেদন নেয়া শুরু হয়, যা ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলমান ছিল। প্রাথমিকভাবে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৬৩৪ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। পাঁচটি ইউনিটে ২ হাজার ৮১৫টি আসনের বিপরীতে চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রতি ইউনিটে ৪০ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন এ বছর। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৪০ হাজার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী বাছাই করার জন্য এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ এবং এইচএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত মোট নম্বরকে (চতুর্থ বিষয়সহ) ভিত্তি করে যোগ্য পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করা হবে। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত আবেদনকারীর করণীয়: ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত আবেদনকারীকে বহুনির্বাচনী ও লিখিত ভর্তি পরীক্ষা ফি বাবদ ৭০০ টাকা সার্ভিস চার্জসহ জমা দিতে হবে। ১৭ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা থেকে ৩০ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত আবেদন জমা দেওয়া যাবে। JnU Admission ওয়েবসাইটে ‘Applicant Login’ লিংকে ক্লিক করে এইচএসসি ও এসএসসির রোল, মোবাইল নম্বর এবং মোবাইল নম্বরে প্রদত্ত পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। আবেদনকারীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে/ইউনিট ভিত্তিক বিষয় পছন্দ দিতে হবে। ওয়েব সাইটে প্রদর্শিত তালিকার সব বিষয়কেই অগ্রাধিকার অনুযায়ী পছন্দ করতে হবে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিষয় পছন্দ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরবর্তী সময়ে আবেদনকারীর প্রদত্ত বিষয় পছন্দক্রম কোনো অবস্থাতেই পরিবর্তন করা যাবে না। তাই ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভেবেচিন্তে বিষয় পছন্দক্রম সাজাতে হবে। ফাইনাল সাবমিট বাটনে ক্লিক করার পর পূরণ করা ফরমের কোন তথ্য পরিবর্তন করা যাবে না। তাই ফাইনাল সাবমিট বাটনে ক্লিক করার আগেই নিশ্চিত হতে হবে যে ফরমটি যথাযথভাবে পূরণ করা হয়েছে। চেক করার পর সকল তথ্য যথাযথ হলে ফাইনাল সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে। উল্লেখ্য, চার বছর পর গুচ্ছ প্রক্রিয়া থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। এবার ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি থেকে। এবার দ্বিতীয়বার কেউ ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। আগামী ৩১ জানুয়ারি ‘ই’ ইউনিট চারুকলা অনুষদের পরীক্ষার মাধ্যমে এবারের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে। এছাড়া ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ডি’ ইউনিট সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ১৫ ফেব্রুয়ারি ‘বি’ ইউনিট কলা অনুষদ, ২২ ফেব্রুয়ারি ‘এ’ ইউনিট বিজ্ঞান অনুষদ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি ‘সি’ ইউনিট ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের পরীক্ষার মাধ্যমে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা শেষ হবে। ভর্তিসংক্রান্ত তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিষয়ক ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে ফুল দিতে গিয়ে শ্রমিক দলের হামলায় প্রক্টরসহ আহত পাঁচ
পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের মূল নাম খচিত ব্যানার শহিদ বেদিতে ফুল দিতে গিয়ে শ্রমিক দলের হামলার শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় শ্রমিক দলের চার নেতাকে বহিষ্কার করেছে জেলা কমিটি। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে পিরোজপুর শহরের নিরব হোটেলে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত চারজন পিরোজপুর জেলা হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেও এখনো পর্যবেক্ষণে রয়েছেন আহত প্রক্টর মো. মুসা খান। এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়সহ হাসপাতালে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে পিরোজপুর শহরের বলেশ্বর নদীর পাড়ে শহিদে বেদীতে ব্যানার সহকারে ফুল দিতে যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের ব্যানারটি সরিয়ে ফেলতে বলে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যানারটি সরিয়ে ফেলে। এরপর ফুল দেয়া শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুসা খানসহ শিক্ষার্থীরা শহরের নিরব হোটেলে নাস্তা করার সময় শ্রমিক দলের ১৫-২০ জন তাদের উপর হামলা করে। এ সময় হাতাহাতিতে প্রক্টরসহ উভয় পক্ষের পাঁচজন আহত হয়। পরবর্তী আহতদের উদ্ধার করে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে দুই শিক্ষার্থী ও শ্রমিক দলের দুইজন প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. শহীদুল ইসলাম জানান, শ্রমিক দলের লোকজন হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় তারা থানায় মামলা দায়ের করবেন। এ নিয়ে ফিরোজপুর জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন টিপু জানান, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের স্লোগান দিয়ে শিক্ষার্থীরা শহিদ বেদিতে ঢুকেছিল। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেখে নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হন। জেলার পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ আবু নাসের জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়ের হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ ছাত্রদলের পুষ্পস্তবক অর্পণ ও বিজয় র্যালি অনুষ্ঠিত
বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও বিজয় র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে কলেজের প্রাঙ্গণে এসব কর্মসূচি পালন করা হয় কমার্স কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান রায়হানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ফয়সাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুর রহমান মিঠু। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক নূর জাফর নাঈম রাহুল, সদস্য ইমরান হোসেন বাপ্পি, ডিএইচ শিশির। উপস্থিত ছিলেন কমার্স কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, সদস্য আরাফাত হোসেন, রবিউল, মারুফ, নাইমুল, জীন্নাহ ওয়াবেদ রাফি, শরিফ, মহিউদ্দিন প্রমুখ।

প্রেমিকের সাথে ভিডিও কলে কথা বলতে বলতে গলায় ফাঁস তরুণীর
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) একটি আবাসিক হল থেকে তাকিয়া তাসনিম নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি জাবির ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৫৩ ব্যাচের (২০২৩-২৪) শিক্ষার্থী ছিলেন। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরপ্রতীক তারামন বিবি হলের সপ্তম তলায় ৭০০৫ নম্বর কক্ষ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।তাকিয়ার সহপাঠীরা জানিয়েছেন, প্রেমিক সাব্বিরের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে তাকে ভিডিও কলে রেখেই এমন মর্মান্তিক সিদ্ধান্ত নেন তাকিয়া। তৎক্ষণাৎ তাকিয়ার বান্ধবীদের ফোন করে দ্রুত রুমে গিয়ে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করতে বলেন সাব্বির। তবে, তারা সময়মত দরজা ভাঙতে ব্যর্থ হন। দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাকিয়াকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তার বান্ধবীরা।পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলের দায়িত্বরত চিকিৎসক হলে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এবং ওই ছাত্রীর মামা হলে উপস্থিত হয়ে আশুলিয়া থানার পুলিশকে খবর দেন।জানা যায়, তাকিয়া ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হলেও নিয়মিত তিনি হলে থাকতেন না। সাভারে তার মামার বাসায় থাকতেন। শনিবারই (১৪ ডিসেম্বর) তিনি হলে এসেছেন বলে জানিয়েছেন পাশের কক্ষের শিক্ষার্থীরা।

জাবির হল থেকে ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) হল থেকে এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে তার কক্ষ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাকিয়ার গ্রামের বাড়ি মাগুরা শহরের পারনান্দুয়ালীতে। তার বাবার নাম আরিফ হোসেন। তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। নিহত শিক্ষার্থীর নাম তাকিয়া তাসনিম বিভা (১৯)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরপ্রতীক তারামন বিবি হলের ৭০০৫ নম্বর কক্ষে থাকতেন। ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী হলের শিক্ষার্থী শিউলি আক্তার বলেন, ভোর ৪টা ৪৬ মিনিটে একটি অজানা নম্বর থেকে তার ফোনে কল আসে। অপর প্রান্ত থেকে এক যুবক তাকে বলেন,‘আপনি কি তাকিয়ার পাশের রুমের?’ আমি বলি, আমার থেকে একটু দূরে ওর রুম।সে বলে ‘তাকিয়া সুইসাইড করতে পারে, দ্রুত তার রুমে যান।’ এরপর শিউলি দৌড়ে গিয়ে দরজা ধাক্কা দেন এবং অন্য শিক্ষার্থীদের সহায়তায় দরজা ভেঙে ফ্যানের সঙ্গে তাকিয়াকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে তাকে ফ্যান থেকে নামিয়ে খাটে শুইয়ে দেওয়া হয়। আরেক শিক্ষার্থী উম্মে মারিয়াম বলেন, আমরা ভোর ৫টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি, তাকিয়া ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে ছিল। আমরা একটি বটি দিয়ে ওড়না কেটে তাকে নামাই। তখন তার শরীর কিছুটা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। তাৎক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসককে হলে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। তাকিয়ার স্থানীয় অভিভাবক ও মামা মনির হোসেন বলেন, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে হল থেকে আমাকে ফোন করে জানানো হয় তাকিয়া আত্মহত্যা করেছে। আমি সাভার থেকে ঘটনাস্থলে এসে দেখি তাকে ফ্যান থেকে নামিয়ে খাটে শুইয়ে রাখা হয়েছে। আমি এরপর তার বাবা-মাকে ফোন করে ঘটনা জানাই। পুলিশের ডিউটি অফিসার মাসুদ জানান,আমরা প্রাথমিকভাবে নিহত শিক্ষার্থীর তথ্য সংগ্রহ করেছি। তার রুম থেকে একটি ডায়েরি, ল্যাপটপ এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য পরিবার ও হল কর্তৃপক্ষের অনুমতির অপেক্ষা করা হচ্ছে।