
মেসে ঝুলছিল জবি ছাত্রীর নিথর দেহ
রাজধানীর পুরান ঢাকার কাঠেরপুলের তনুগঞ্জ লেনের একটি ছাত্রী মেস থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার নাম সাবরিনা রহমান শাম্মী। রোববার (২৬ জানুয়ারি) ভোর সাড়ে চারটার দিকে ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শাম্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি যশোরে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। সূত্রাপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম মরদেহ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী সাবরিনা রহমান শাম্মী কাঠেরপুলের তনুগঞ্জ লেনের একটি ছাত্রী মেসে থাকতেন। মেসের একটি রুমে একাই থাকতেন তিনি। খবর পেয়ে ভোরে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর মিডফোর্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, ভোরে ঘটনা শোনামাত্রই সূত্রাপুর থানায় যাই। বুয়েটের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ দ্রুত গ্রামের বাড়ি যশোরে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান প্রক্টর।

যবিপ্রবিতে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন
বর্ণিল পথ আল্পনা, কেক কাটা, পিঠা উৎসব, গবেষণা ও প্রজেক্ট পোস্টার প্রদর্শনী, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ১৯তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে জাতীয় পতাকা ও যবিপ্রবির পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর সকাল ১০.৩০ মিনিটে প্রধান ফটক থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রা শেষে বেলুন উড়িয়ে পিঠা উৎসব ও গবেষণা পোস্টার প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল মজিদ। উদ্বোধন শেষে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদসহ আগত অতিথিরা পিঠা উৎসবের স্টল ও পথ আল্পনাসমূহ এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও প্রজেক্ট পোস্টার প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ তাদের পাঠ্যক্রমের থিম অনুযায়ী পিঠা স্টলের বাহারী নামকরণ করে। এছাড়াও বিশেষ স্টল হিসেবে বিভিন্ন উদ্যোক্তাদের, এলামনাই এসোসিয়েশন,জুলাই বিপ্লব স্মৃতি প্রদর্শনী, বিভিন্ন ক্লাব ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের স্টলগুলো গুলো সেজেছিল আকর্ষণীয় রুপে। স্টলগুলোতে নানা ধরণের বাহারী আকৃতি ও ঋতু বৈচিত্র অনুযায়ী সুস্বাদু পিঠার পসরা দেখে সবাই চমৎকৃত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়ামে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা গবেষণা পোস্টার প্রদর্শন করেন। এরপরে স্টেজ প্রাঙ্গনে অতিথিদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কেক কাটেন যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল মজিদ। দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল মজিদ। এ সময় তিনি বলেন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছে । এছাড়াও বিভিন্ন র্যাঙ্কিংয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান দেশের প্রথম সারিতে রয়েছে। আমাদের পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ হলে গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখতে পারব। ছাত্র-শিক্ষক একীভূত হয়ে একসাথে কাজ করলে আমরা যবিপ্রবিকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো। এরপরে দুপুর আড়াইটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিত ব্যান্ড দলের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এ সময় কয়েক দফায় ছাত্রলীগ ও সমন্বয়কদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ হামলায় দুই সমন্বয়কসহ তিনজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে । এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গেলে দুই সাংবাদিক আক্রমণের শিকার হন। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এ হামলার ঘটনা ঘটে। গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান ও বশেমুরবিপ্রবির প্রক্টর আরিফুজ্জামান রাজিব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বশেমুরবিপ্রবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক জসিম উদ্দীন বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম সোহাগ পরীক্ষা শেষে হল থেকে বের হলে সমন্বয়ক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে পুলিশের কাছে তুলে দিচ্ছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে সোহাগকে ছাড়িয়ে নেয় এবং নিষিদ্ধ সংগঠনের পক্ষে স্লোগান দেয়া হয়। এতে সমন্বয়ক জসিম উদ্দীন ও ওমর শরীফ আহত হন। এ ছাড়া, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে বশেমুরবিপ্রবি আমার দেশ পত্রিকার প্রতিনিধি রাসেল হোসেন ও সাংবাদিক আতিক ফয়সালসহ কয়েকজনের ওপর হামলা চালায় হামলাকারীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনার পর সমন্বয়করা ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী সোহাগ ৫ আগস্টের পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয় দিয়ে আধিপত্য দেখাতে থাকে। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিচারের দাবি জানাই। আমরা প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলছি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রক্টরিয়াল বডির এক সদস্যের উপস্থিতিতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে।’ হামলায় আহত ওমর শরীফ জানান, ছাত্রলীগের নেতা সোহাগকে আটক করে পুলিশের কাছে তুলে দেয়ার সময় আমার ওপর হামলা হয়েছে।’ আরিফুজ্জামান রাজিব বলেন, ‘আমি বন্ধের দিন ছুটিতে বাড়িতে আছি। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফোনে ঘটনা শুনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি দেখব।’ মির মো. সাজেদুর রহমান বলেন, ‘ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ক্যাম্পাসের ভেতর না গেলেও পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে।’ প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত ছাত্রলীগের কর্মী সোহাগের বিরুদ্ধে এর আগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতনসহ একাধিক অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় সাংবাদিকদের একাধিক বার হেনস্তা করার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৪ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের ওপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৮৪ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণে আয়োজিত স্মরণসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ৭৩ জনকে বহিষ্কারের কথা জানান উপ-উপাচার্য। পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মোট ৮৪ জনের বহিষ্কারাদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের হামলা ও আহত করা এবং শাটল ট্রেনে আটকে রাখার অভিযোগে ৭৩ জনকে এবং সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগে ১১ জনকে প্রাথমিক বহিষ্কার আদেশ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক সমিতির অভিযোগের ভিত্তিতে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি এই ৮৪ জনের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। তাদের বিভাগ ও স্থায়ী ঠিকানায় চিঠি পাঠানো হবে। তিনি আরও বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাখ্যা করার জন্য তাদের ১৫ দিন সময় দেওয়া হবে। কেউ নির্দোষ প্রমাণিত হলে বহিষ্কারাদেশ বাতিল করা হবে।’ এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণে আয়োজিত স্মরণসভায় শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের মুখে উপ-উপাচার্য ৭৩ জনের বহিষ্কারাদেশের কথা জানান। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলগুলোর প্রভোস্ট, বিভিন্ন পর্ষদের পরিচালক ও প্রশাসকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাস ভাঙচুরে বাধা দেয়ায় শিক্ষার্থীদের সাথে সমন্বয়কদের হাতাহাতি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের সাথে এসবি পরিবহনের একটি বাসের সুপারভাইজারের বাজে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে বাসটি আটক করেন শিক্ষার্থীরা। পরে আটক থাকা অবস্থায় উত্তেজিত হয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী বাসে ভাঙচুর চালায়। বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাত ১২ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবির সমন্বয়করা ভাঙচুরে বাধা দিলে ভাঙচুরকারীরা সমন্বয়কদের ওপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ভাঙচুর করা ওই বাস ছেড়ে দেয়া হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের ১৩ জন শিক্ষার্থী কুষ্টিয়া শহরের কাউন্টার থেকে কথা বলে এসবি পরিবহনের বাসে উঠেন। পরে তাদের পেছনে কাউন্টারে কথা বলা ব্যতীত বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫ জনের মতো শিক্ষার্থীও বাসে উঠেন। তারা বাসে ওঠার প্রায় ১০ মিনিট পর বাসের সুপারভাইজার কাউন্টারে কথা বলা ১৩ জনের বাইরে অন্য শিক্ষার্থীদের নেমে যাওয়ার কথা বলেন। বিষয়টি নিয়ে সুপারভাইজার ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তাদের অন্য বন্ধুদের খবর দিলে তারা প্রধান ফটকের সামনে থেকে বাসটি আটক করেন। ওই বাস ছাড়াও এসবি পরিবহনের আরও একটি বাস আটক করেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু বাসে অসুস্থ ও বিদেশগামী যাত্রী থাকায় কিছুক্ষণ আটকে রাখার পর ছেড়ে দেয়া হয়। এদিকে, বাস আটক করার সময় মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থী আহত হয়। তখন বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে কুষ্টিয়া পাঠানো হয়। আহত শিক্ষার্থী ও তার বন্ধুদের দাবি বাস আটক করার সময় অজ্ঞাত ব্যক্তির ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার পা কেটে যায়। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ‘বাস আটক করার সময় মোস্তাফিজ বাসের গাড়ির দরজার গ্লাসে লাথি দেয়ার ফলে তার পা কেটে যায়।’ আহতের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাক্তার রবিউল ইসলাম জানান, তেমন সিরিয়াস ইনজুরি না। সার্প কাটিং হয়েছে। এমন আঘাত গ্লাস বা ধারালো কিছুতে হয়। এদিকে, মোস্তাফিজ আহত হওয়ায় তার বিভাগের কয়েকজন বন্ধু প্রধান ফটকে আটকে রাখা বাসটিতে ভাঙচুর চালায়। আচানক তারা ফটকের সামনে উপস্থিত হয়ে বাসের দিকে অনবরত ইট ছুঁড়তে থাকে। এতে বাসের সামনের গ্লাসটি ভেঙে যায়। এ সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা গাড়ি ভাঙচুরে বাধা দিলে ভাঙচুরকারীরা তাদের ওপর চড়াও হন। তখন দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে রাত দেড়টার দিকে বাসটি ছেড়ে দেয়া হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়কটি ইয়াশিরুল কবির সৌরভ বলেন, আচানক একদল শিক্ষার্থী এসে এলোপাতাড়ি বাসে ইট ছুঁড়তে থাকে। এ সময় আমরা তাদের বাধা দিলে তারা উল্টো আমাদের ওপর চড়াও হয়। পরে নিরাপত্তাকর্মীরা পরিবেশ শান্ত করেন।’ এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহিনুজ্জামান জানান, ঘটনা শোনার পরপরই তারা ঘটনাস্থলে আসেন। কে বা কারা বাস ভাংচুর করেছে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

ঢাবির ক্যাম্পাসে গাছে ঝুলতে থাকা লাশের পরিচয় মিলেছে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণিত বিভাগের পাশের ফুটপাতে মেহগনি গাছের চূড়ায় ঝুলতে থাকা লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম আবু সালেহ (৪৫)। তিনি ঢাকা কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ। বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে এ তথ্য জানান রমনা বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম। তিনি বলেন, ‘ওই ব্যক্তির সঙ্গে একটি জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। তার আঙুলের ছাপ নিয়েও এনআইডি সার্ভারের সঙ্গে মিলিয়ে তার পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তবে, তার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে, সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। তার নাম আবু সালেহ (৪৫)। বাড়ি ঢাকা কেরানীগঞ্জে। ‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ওই ব্যক্তি মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন। তবে এটি হত্যাকাণ্ড নাকি আত্মহত্যা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’ এর আগে, বুধবার সকালে ঢাবির গণিত বিভাগের পাশের ফুটপাতে মেহগনি গাছের চূড়ায় গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় এক ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান পথচারীরা। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হলে তারা গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শাহবাগ থানার পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। তখন শিক্ষার্থীরা জানান, বুধবার সকাল ৮টার দিকে ক্লাস করতে এসে তারা মরদেহটি দেখতে পান। মরদেহটি গাছের ডালে দড়ি দিয়ে ঝুলানো ছিল। পরে প্রক্টোরিয়াল টিম এসে শাহবাগ থানায় খবর দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, রাতে বা ভোর রাতে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। রিপোর্ট আসলে ঢাবি প্রশাসনকে পুলিশ অবগত করবে।

রাবির সমন্বয়কের ওপর হামলা, শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ারি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদের ওপর দুর্বৃত্তদের অতর্কিত হামলার প্রতিবাদ ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন হয়েছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ‘স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনে’র ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘যারা চেয়ারে বসে আছেন, তারা যদি দ্রুত সময়ে হামলাকারীদের আইনের আওতায় না আনতে পারেন, তাহলে তাদের চেয়ার থাকবে না।’ স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদ রাজন বলেন, ‘আমি মনে করি, এটা একটা পরিকল্পিত হামলা। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা দেখছি, সমন্বয়কদের ওপরে হামলার হুমকি দেয়া হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং দ্রুত সময়ে হামলাকারীদের বিচার আওতায় আনার দাবি জানাই।’ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী সজীব বলেন, ‘যখন জুলাই আন্দোলনে আমরা কাউকে পাচ্ছিলাম না, তখন আমরা শহীদকে পেয়েছিলাম। তখন কেউ নাম দেয়ার মত ছিল না, কিন্তু ১৭ সমন্বয়কের ভেতরে তিনি একজন ছিলেন। শহীদ জুলাই আন্দোলনে আমাদের সহযোদ্ধা। যারা চেয়ারে বসে আছেন, তারা যদি দ্রুত সময়ে হামলাকারীদের আইনের আওতায় না আনতে পারেন, তাহলে আপনাদের চেয়ার থাকবে না।’ মানববন্ধনে অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম রেজার সঞ্চালনায় সংগঠনটির সদস্য ও বিভিন্ন বিভাগের প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে মহিলা কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে নুরুল ইসলাম শহীদ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এমন সময় ১০-১৫ জন দুর্বৃত্ত এসে তাকে লাঠি-রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে চলে যায়। পরবর্তী আশেপাশের লোকজন মিলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। শহীদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলোজি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

আবু সাঈদ হত্যা: বেরোবির ৫৬ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার, ১৫ জনের বিরুদ্ধে হবে মামলা
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও শহীদ আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত ৭১ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। এদের মধ্যে ১৫ জনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাকিদের মধ্যে ৩৩ জনকে দুই সেমিস্টার ও ২৩ জনকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। তালিকায় মোট ৭২ জনের নাম রয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের রায়হান মিয়া নামের একজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগকারীরা অভিযোগ প্রত্যাহার করলে বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা বোর্ড তাকে মওকুফ করে দেয়। ১৫ জনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারা হলেন পমেল বড়ুয়া, শামীম মাহফুজ, ধনঞ্জয় কুমার টগর, গ্লোরিয়াস (ফজলে রাব্বি), বাবুল, বিধান, তানভীর, আদুল্লাহ আল নোমান খান, রিফাত, ফারহাদ হোসেন এলিট, মোমিনুল, আরিফুজ্জামান ইমন, গাজীউর, শাহিদ হাসান ও মামুন। যাদের দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে, তারা হলেন সেজান আহমেদ (ওরফে আরিফ), আরাফাত রহমান আবির, আবু সালেহ নাহিদ, ইমরান চৌধুরী আকাশ, কফি আনান মান্নান, মাসুদুল হাসান, উজ্জ্বল মিয়া, হাবিবুর রহমান, সাখাওয়াত হোসেন, শোয়াইবুল (সাল্লু), আব্দুল্লাহ আল রায়হান, বায়েজিদ মোস্তাফী, রাসেল, সিয়াম আল নাহিদ, অমিত, আখতার হোসেন, তানজিল, মুন্না হাসান লিওন, জিহান আলী, সাব্বির হোসেন (রিয়ান), গালিব হাসান, মাহমুদুর রহমান হৃদয়, মোশারফ হোসেন, পিপাস আলী, মোজাম্মেল হক, মৃত্যুঞ্জয় রায়, সাজ্জাদ হোসেন, মানিক চন্দ্র সেন, রবীন্দ্র রায়, সিয়াম আরাফাত, সাব্বির আহমেদ, মুসান্না-বিন-আহমেদ ও শাহীন ইসলাম। হাসানুজ্জামান সৌমিক, সুদিপ্ত সরকার বাঁধন, জুবায়ের মাহমুদ, কোমল দেবনাথ, রিজন মণ্ডল, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, ফিলিপ রায়, জিহাদ উল্লাহ, এস এম লাবু ইসলাম, জয়ন্ত চন্দ্র রায়, সবুজ কুমার, সবুজ মহস্ত, মেহেদী হাসান মিরাজ, জামাল মিয়া, তৌফিক কিবরিয়া, মেজবাহুল সরকার জয়, দেবাশীষ কুমার রায়, আতেফ আসহাব দিল মণ্ডল, নাফিউল ইসলাম, তপন চৌধুরী, সাজেদুর রহমান, আমিরুল ইসলাম শুভ ও শফিউল আযমকে (সম্রাট) এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে শওকাত আলী বলেন, ‘তথ্য অনুসন্ধান কমিটি ৭২ জন শিক্ষার্থীর তালিকা দিয়েছিল। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা বোর্ড ২৩ জনকে এক সেমিস্টার, ৩৩ জনকে দুই সেমিস্টার এবং ১৫ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা (মামলা) নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ গত ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হন। গুলি লাগার মুহূর্তে রাজপথে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকা আবু সাঈদের ছবি গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে মানুষ শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসেন। সেই আন্দোলনই রূপ নেয় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে।

চবিকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারাকারীদের শাস্তির দাবী ছাত্রদলের
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে (চবি) অস্থিতিশীল করার চেষ্টা এবং ছাত্রদলের প্রীতিভোজে হামলাকারীদের শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। রোববার (১৯ জানুয়ারি) চবি ছাত্রদলের পূর্বঘোষিত ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম শেষে চবি শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে; যা চাকসু ভবন অতিক্রম করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী চবির প্রক্টরের সাথে সাক্ষাৎ করে লিখিত অভিযোগ দেয় চবি ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ। প্রক্টরের সাথে মতবিনিময় করেন চবি ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহশিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন উর রশিদ, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো ইয়াছিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়। প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার আশ্বাস দেন।

বোরকা পরেও রক্ষা পেল না ছাত্রলীগ কর্মী, আটক করল শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মী আফিয়া আনজুম সুপ্তি রোরকা পরে সনদ তুলতে ক্যাম্পাসে এলেও তাকে আটক করে প্রক্টর অফিসে সোপর্দ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আটক হওয়া ছাত্রলীগ কর্মী আফিয়া বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের (১৪তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী। রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে তাকে আটক করেন শিক্ষার্থীরা। তবে তার নামে কোনো মামলা না থাকায় অঙ্গীকারনামা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। জানা যায়, অভিযুক্ত আফিয়া আনজুম জবিতে তার স্নাতক পরীক্ষার সনদ তুলতে এসেছিলেন। তারপর সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে লক্ষ্য করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়। এ সময় প্রক্টর অফিসে না যেতে শিক্ষার্থীদের সাথে ধ্বস্তাধস্তিও করেন তিনি। প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হলে পুলিশকে অবগত করে প্রশাসন। শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, আফিয়াকে চিনতে পেরে শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে পুলিশকে কল দিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন এবং ব্যবস্থা নিতে বলেন। পরে তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন তারা। শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আফিয়া জুলাই গণহত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। ছাত্রী হলে ছাত্রলীগ নেত্রী পরিচয়ে দেখাতেন দাপট।’ শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হেনস্তা করতেন বলেও জানিয়েছে হলের শিক্ষার্থীরা। কিছু দিন আগেও তার ফেসবুক আইডি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি পেজে আওয়ামী অপকর্ম সংক্রান্ত পোস্টে নানা বাজে মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছিল আফিয়াকে। আটক হয়ে ছাত্রলীগ কর্মী আফিয়া বলেন, ‘আমি জগন্নাথের কাউকেই কোনো প্রকার আঘাত করিনি, কোনো বিরোধীতা করিনি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা কারণ আমি জুলাই আন্দোলনে এমন কোনো বিরোধিতা করিনি, আমি তখন বাড়িতে ছিলাম। আমি ছাত্রলীগ করতাম। শেখ মুজিবের আদর্শকে ধারণ করি। কিন্তু আমাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। আমি জগন্নাথের রাজনীতিতে সক্রিয় না, ৭১’-এর আদর্শকে লালন করি। আমি বঙ্গবন্ধুর পক্ষের লোক।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছাত্রলীগের কমিটিতে কোনো পদও ছিল না। আমার কারও সাথে কোনো ঝামেলা ছিল না।’ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’ প্রসঙ্গত, জুলাই আন্দোলনে বিরোধিতার কারণে গত ৭ সেপ্টেম্বর জবির বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলের আফিয়াসহ নয়জন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ছাত্রীহলের সামনে নাম, ব্যাচ ও ছবিসহ ব্যানার ঝুলিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।

চবির দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন হয়েছেন। চবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে এ উৎসব উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ক্রীড়া ক্ষেত্রে বেশ উন্নতি হচ্ছে। ক্রীড়া চর্চা অব্যাহত রাখতে ক্রীড়াবিদদের নিয়মিত খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে হবে।’ উপাচার্য আরও বলেন, ‘খেলাধুলায় জয়-পরাজয় বড় কথা নয়, অংশগ্রহণই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সীমিত সম্পদকে কাজে লাগিয়ে এর সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।’ উপাচার্য নান্দনিক ক্যাম্পাসে, সুন্দর পরিবেশে একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি শিক্ষাসহায়ক কার্যক্রমকেও গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান। তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সফলতা কামনা করেন। পরে উপাচার্য ১০০ মিটার স্প্রিন্ট প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চবির বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আল-আমীন এবং অতিথি ছিলেন চবির ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক ড. মো. আনোয়ার হোসেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. সোনিয়া হক । অনুষ্ঠানে চবির শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আনিসুল আলমও বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীতের সুরের মূর্ছনায় উপাচার্য জাতীয় পতাকা, বিশেষ অতিথি ও অতিথিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট হল পতাকা ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক অলিম্পিক পতাকা উত্তোলন করেন। মশাল হাতে মাঠ প্রদক্ষিণ করেন হলের কৃতী ক্রীড়াবিদ তামান্ন মাহবুব ও স্বর্ণালী আক্তার ইমা। বিচারকদের পক্ষে প্রধান বিচারক চবির পরিসংখ্যান প্রফেসর মো. ইমাম হোসেনকে ও ক্রীড়াবিদদের পক্ষে হলের কৃতী ক্রীড়াবিদ সুপ্তা দাসকে উপাচার্য শপথ বাক্য পড়ান। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষক ফাতেমা আক্তার হিরামনির নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় ক্রীড়াবিদদের মার্চপাস্ট। হলের পতাকা বহন করেন হলের কৃতী ক্রীড়াবিদ সুপ্তা দাশ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন চবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ হোসেন।

মধ্যরাতে ঢাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু কর্তৃক ‘লাল সন্ত্রাস’ এর ঘোষণার প্রতিবাদে মধ্যরাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। শিক্ষার্থীরা ‘লাল সন্ত্রাস’ ঘোষণাকারী মেঘমল্লার বসুকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, লাল সন্ত্রাসী অপতৎপরতা চালিয়ে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ডাকসু নির্বাচনকে বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে। ‘লাল সন্ত্রাসই একমাত্র উপায়’ বলে নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মেঘমল্লার বসু। একইসঙ্গে ইঙ্গিত দিয়েছেন সশস্ত্র যুদ্ধের। নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করা এক ইংরেজি বার্তায় মেঘমল্লার বসু বলেন, একমাত্র বিকল্প লাল সন্ত্রাস। প্রান্তিক মানুষের স্বার্থে প্রতিরক্ষামূলক সহিংসতা। আমরা জাগরণ এবং মিছিল করি যার সহিংস হওয়ার ক্ষমতা নেই। তা দ্বারা আপনি কখনই আপনার কমরেডদের রক্ষা করতে পারবেন না। মানুষ আপনাকে পছন্দ করবেন ঠিকই, কিন্তু কেউ অনুপ্রাণিত হবে না। কারোরই আর ‘মুক্তমনা’ পার্টির দরকার নেই। শহীদদের কেউ পরোয়া করে না। ফ্যাসিবাদ তখনই ভালো যখন সে মৃত। ডানপন্থাকে ইঙ্গিত করে তিনি লিখেন, এই ডানপন্থীদের পাগলামিতে আপনাকে সার্বভৌমত্বের নামে হত্যা করা হবে এবং আপনার চরিত্রকে হত্যা করা হবে। মুক্তমনা এবং ‘কেন্দ্রবাদী’ যারা তাদের হৃদয় তারা ডানপন্থার কাছে বিক্রি করেছে। তারা দাবি করবে এটি একটি সাংস্কৃতিক যুদ্ধ এবং উভয়পক্ষই কতটা খারাপ। আপনাদের খুব কম বন্ধুই আছে। এমনকি একজনকেও হারানোর সামর্থ্য আপনাদের আর নাই। আর মানুষ ভেড়ার মত। আপনি কি আজীবন মেষপালক হতে ইচ্ছুক? গুপ্তরাজনীতির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, প্রকাশ্য বিক্ষোভ করা বন্ধ করুন। প্রকাশ্যে কমিটি দেয়া বন্ধ করুন। আমরা সতর্ক না হলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব। দাঁত ও নখর বেরিয়ে আসছে। এভাবেই আপনার পথকে আপনি ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ থেকে বাঁচাতে পারবেন। আসুন এটিকে আমাদের গুপ্ত বন্ধুদের কাছে নিয়ে যাই। আমাদের সাথেই থাকুন। পরে ওই পোস্ট ডিলিট করলেও তার স্ক্রিনশট নিয়ে চলছে তুমুল সমালোচনা। সরাসরি যুদ্ধ ও নিরাপত্তার জন নিরাপত্তার ওপর আঘাত বলে মনে করছেন সকলেই। ফেসবুকে মেঘমল্লার বসুর এমন পোস্টের প্রতিবাদে গতকাল মধ্যরাতে বিক্ষোভ হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। হল পাড়া থেকে মিছিল নিয়ে তারা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমবেত হয়। এ সময় ‘লাল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট একশন’, ‘উদ্যানের গাঁজাখোর উদ্যানে ফিরে যা’, ‘সন্ত্রাসীদের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা। সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, এরা ৮০ ও ৯০ এর দশকের মতো আবারও সন্ত্রাসবাদ কায়েম করতে চায়, তারা ডাকসুকে এভাবেই ভন্ডুল করেছিল ৯০ এর দশকে। আজ ওই সন্ত্রাসীরা আবারও সন্ত্রাসবাদের ঘোষণা দিচ্ছে। এই সন্ত্রাসীকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করতেই হবে। এবি জুবায়ের বলেন, আমরা আজকের এই প্রতিবাদ মিছিল ও বিক্ষোভ থেকে বলতে চাই এটি সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত। তাদেরকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। আজিজুল হক নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এই সংগঠন আওয়ামী লীগের বি টিম হিসাবে কাজ করেছে। ছাত্রলীগ সকল সংগঠনকে দমন করেছে কিন্তু এদেরকে জায়গা দিয়েছে। নতুন এই বাংলাদেশে বলতে চাই নতুন করে কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে দেয়া হবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, আমরা যখন ক্যাম্পাসে এসেছি সন্ত্রাসীরা একমাত্র এইসকল বামদেরকে জায়গা করে দিয়েছে। জুলাইয়ের মতো একটি বিপ্লবের পর এখনো দেখছি তারা আওয়ামী ন্যারেটিভকে শক্তিশালী করতে চায়। আমরা দেখি উদ্যানের গেট বন্ধের পর কারা মব করেছে। কারা প্রক্টরের সঙ্গে বাজে ব্যাবহার করেছে। এদেরকে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এদেরকে গ্রেফতার করতে হবে।

চবিতে দেশীয় মদসহ আটক ২
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পুরাতন কলা ভবনের ক্যান্টিনে অভিযান চালিয়ে দেশীয় মদসহ দুই শিক্ষার্থীকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় পালিয়ে যান এক শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ অভিযান চালানো হয়। আটক শিক্ষার্থীরা হলেন- ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের নুর মোহাম্মদ ইমন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের মোহাম্মদ আশিকুর রহমান। তবে এসময় সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রিমন পালিয়ে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নাজমুল হোসাইন গণমাধ্যমকে বলেন, অভিযানের সময় তারা গাঁজা সেবনরত অবস্থায় আটক হন। তাদের কাছ থেকে প্রায় এক লিটারের দেশীয় মদ এবং গাঁজার বড় চালান উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এটি স্বাভাবিক মাদকসেবন নয় বরং বড় ধরনের মাদকের চালান। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাবিতে তোফাজ্জল হত্যা মামলায় ২১ শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তোফাজ্জলকে নির্যাতন করে হত্যা মামলায় ২১ শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এই মামলার প্রধান ছয় আসামি জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, মো. মোত্তাকিন সাকিন, আল হোসেন সাজ্জাদ, আহসান উল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম কারাগারে আছেন। আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। বাকি ১৫ আসামি ফিরোজ কবির, আবদুস সামাদ, সাকিব রায়হানসহ বাকিরা পলাতক রয়েছেন। এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত। এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর এ ঘটনায় মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। মামলার এজাহারে লেখা হয়েছে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটের দিকে একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্টরুমে নিয়ে সে মোবাইল চুরি করেছে বলে এলোপাতাড়ি চর-থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারে। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসা করলে তার নাম তোফাজ্জল বলে জানায়। এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, পরবর্তী সময়ে সে মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যানটিনে নিয়ে খাবার খাইয়ে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের দক্ষিণ ভবনে গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে পিছনে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠিদ্বারা উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে সে অচেতন হয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানালে তাদের সহায়তায় অচেতন যুবককে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে ডাক্তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে ১২টা ৪৫ মিনিটের সময় তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের মতবিনিময় সভায় হাতাহাতি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের পদধারী ও পদবঞ্চিত দুই গ্রুপের উত্তেজনায় পণ্ড হয়েছে প্রথম মতবিনিময় সভা। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে সভা শুরু হলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিকেল ৪টায় সভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শুরু হয় ৫টায়। সভা শুরু হলে পদবঞ্চিতরা ‘ছাত্রলীগের কমিটি মানি না মানব না’, ‘শিবিরের কমিটি মানি না মানব না’ বলে স্লোগান দিলে উত্তেজনা তৈরি হয়। এরপর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হলে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি হয় ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে নবঠিত কমিটির আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর সভা স্থগিত ঘোষণা করেন। এ নিয়ে পদবঞ্চিত নেতা ইকবাল হোসাইন বলেন, ‘আমি এক যুগের বেশি রাজনীতি করি। সব আন্দোলন-সংগ্রামে প্রথম সারিতে থেকে মামলা-হামলা- নির্যাতনের শিকার হয়েছি। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় কমিটিতে আমার মতো অনেক ত্যাগীদের জায়গা হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেক ত্যাগী কর্মীকে বাদ দিয়ে ছাত্রলীগ ও বির্তকিত লোকজন এমনকি ৫ তারিখের পর রাজনীতিতে এসেছে, এমন শতাধিক ব্যক্তি পদ পেলেও আমরা বঞ্চিত হলাম।’ এ ব্যাপারে কমিটির আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন কমিটির পরিচয় পর্বের জন্য আজকের সভা আহ্বান করা হয়েছিল। শুধু আহ্বায়ক কমিটিতে আছেন সেসব নেতাকর্মী, তাদের ডাকা হয়েছিল। কিন্তু পদ পাননি এরকম কিছু লোক ‘গুপ্ত সংগঠনের’ ইন্ধনে সভাটি বানচাল করার চেষ্টা করে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর একেএম রাশিদুল আলম বলেন, ‘যা ঘটেছে তা কখনোই কাম্য নয়। আমরা চাই, সবাই সহাবস্থানে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাক।’

শেখ পরিবারের নামে থাকা ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন
শেখ পরিবারের নামে থাকা ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ভেরিফায়েড অফিশিয়াল ফেসবুক থেকে এ তথ্য জানানো হয়। ওই পোস্ট থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়, নওগাঁর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করেন গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিনেইম ইউনিভার্সিটির নাম মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করেছে সরকার। এছাড়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কিশোরগঞ্জ থেকে পরির্তন করে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়, মেহেরপুরের মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শরীয়রতপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ’-এর নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’ দেওয়া হয়েছে। এদিকে, জামালপুরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে করা হয়েছে জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

চবির বার্ষিক ক্রীড়া উৎসব শুরু
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রথম আবাসিক হল ‘আলাওল হল’-এর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০২৫ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে উদ্বোধনের মাধ্যমে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া উৎসব-২০২৫’ শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে নয়টায় বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে উৎসব উদ্বোধন করেন চবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি চবির উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন ও চবির সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিন মজুমদার। সভাপতিত্ব করেন আলাওল হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মুহাম্মদ এনামুল হক। অনুষ্ঠানে চবির শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আনিসুল আলম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, ‘উচ্চতর বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞানচর্চার পাশাপাশি খেলাধুলা ও শরীরচর্চা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীরা তত্ত্বীয় জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি খেলাধুলার মাধ্যমে মানসিকভাবে সুস্থ থাকেন এবং শৃঙ্খলার মাধ্যমে প্রতিযোগীদের সঙ্গে বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হন।’ তিনি আরও বলেন, ‘শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে খেলাধুলার বিকল্প নেই। সুস্থ শরীর ও প্রফুল্ল মনের জন্য খেলাধুলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি লেখাপড়ায় সাফল্য লাভের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা খেলাধুলায় সুকৃতি রেখে জীবনে নবতর অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করবে মর্মে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। পরে উপাচার্য ১০০ মিটার স্প্রিন্ট প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীতের সুরের মূর্ছনায় উপাচার্য জাতীয় পতাকা, উপ-উপাচার্যদ্বয় ও সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা, আলাওল হলের প্রভোস্ট হল পতাকা ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক অলিম্পিক পতাকা উত্তোলন করেন। মশাল হাতে মাঠ প্রদক্ষিণ করেন হলের কৃতী ক্রীড়াবিদ বিশ্বজিৎ রায়। বিচারকদের পক্ষে প্রধান বিচারক চবির প্রফেসর ড. শাহাদাত হোসাইনকে এবং ক্রীড়াবিদদের পক্ষে হলের কৃতী ক্রীড়াবিদ মো. বায়েজিত ইসলামকে উপাচার্য শপথ বাক্য পড়ান। আলাওল হলের আবাসিক শিক্ষক দলের টিম ম্যানেজার মিঠু রঞ্জন সরকারের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় ক্রীড়াবিদদের মার্চপাস্ট। হলের পতাকা বহন করেন হলের কৃতী ক্রীড়াবিদ মো. আবদুল বেলাল। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন হলের আবাসিক শিক্ষক ড. মোজাম্মেল হক।

রাবিতে ইউনিস্যাবের উদ্যোগে ‘ন্যাশনাল ইয়ুথ লিডারশিপ সামিট’ অনুষ্ঠিত
জাতিসংঘ যুব ও ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ (ইউনিস্যাব) রাজশাহী বিভাগের উদ্যোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের প্রায় দুই শতাধিক তরুণ শিক্ষার্থীকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী ‘ন্যাশনাল ইউুথ লিডারশিপ সামিট-২০২৫। ইভেন্টটির এ বছরের থিম ছিল ‘Leadership in the Face of Global Challenges: Sustainability and Innovation’. শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকাল ৫টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে বিজয়ীদের মাঝে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদানের মাধ্যমে সমাপনী প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান, ছাত্র উপদেষ্টা আমীরুল ইসলাম কনক, রাবির অফিস অব দ্যা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অধ্যাপক ড. সাজ্জাদুর রহিম ও বাংলাদেশের করপোরেট প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৫জন সদস্য। এর আগে গতকাল (শুক্রবার) প্রোগ্রামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব। দুই দিনব্যাপী এ প্রোগ্রামে দু’টি ওয়ার্কশপ, দু’টি প্যানেল ডিসকাশন, একটি প্রবলেম সলভিং সেশন ও একটি প্রেজেন্টশন অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি প্যানেল থেকে একজন ইমার্জিন লিডার নির্বাচন করে তাদের ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এছাড়াও সব অংশগ্রহণকারীকে সনদপত্র প্রদান করা হয়। তরুণ শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে রাবির উপ-উপাচার্য মাঈন উদ্দিন খান বলেন, ‘সংগঠনটি তরুণ শিক্ষার্থীদেরকে বর্তমান চাকরি বাজারের চাহিদা অনুযায়ী যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষামূলক ওয়ার্কশপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পারদর্শী হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে ইউনিসেফ। দুই দিনব্যাপী ওয়ার্কশপে যারা অংশগ্রহণ করেছেন তারা অন্যদের থেকে একধাপ এগিয়ে আছেন’। উল্লেখ্য, রাজশাহী বিভাগে জাতিসংঘ যুব ও ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ (ইউনিস্যাব) এর সিগনেচার ইভেন্ট হচ্ছে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য নেতৃত্বদানের দক্ষতা বিকাশ এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত করার এক অনন্য সুযোগ তৈরি করা।

ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েটের) এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছেন পুলিশ। রাজশাহী নগরীর ফুদকিপাড়া এলাকার এবেলা ছাত্রাবাস থেকে গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত শিক্ষার্থীর নাম মেহেদী হাসান। তিনি রুয়েটে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা (ইউআরপি) বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, উদ্ধারকৃত মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। তাঁর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এসে যে সিদ্ধান্ত নেবে সেই অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। ওসি আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে আত্মহত্যার সঠিক কারণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।

চবিতে পোষ্যকোটা বাতিলসহ ৯ দফা দাবিতে ৮ শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পোষ্যকোটা বাতিল ও জুলাই আন্দোলনে হত্যাকারীদের বিচারসহ ৯ দফা দাবিতে ১০ ঘণ্টা ধরে আমরণ অনশন করছেন ৮ শিক্ষার্থী। বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা এই অনশন শুরু করেছেন। অনশনরত ৮ শিক্ষার্থী হলেন— বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ডানচোখ হারানো বাংলা বিভাগের মো. শুভ হোসেন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তানিম মুশফিক, ইতিহাস বিভাগের রশীদুল হক দিনার, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের মো. ইসমাইল, আইন বিভাগের সাইরিব রহমান সুপ্ত। তারা সবাই ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এছাড়াও বাকি তিনজন হলেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আশিকুর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও একই শিক্ষাবর্ষের নাট্যকলা বিভাগের খান তালাত মাহমুদ রাফি এবং বাংলা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের সৌরভ সরকার পূর্ণ। অনশনকারী শিক্ষার্থী তানিম মুশফিক বলেন, ‘চবিতে পোষ্যকোটা বাতিলের দাবিতে আমরা আমরণ অনশন শুরু করেছি। যতক্ষণ প্রশাসন পোষ্যকোটা বাতিল করবে না, ততক্ষণ আমরা অনশন ভাঙবো না।’ আরেক অনশনকারী শিক্ষার্থী রশীদুল হক দিনার বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম দাবি ছিলো পোষ্যকোটা বাতিল। সেই আন্দোলনে আমাদের চবির দুইজন ভাই শহীদ হয়েছেন। আমরা চাই না চবিতে পোষ্যকোটা থাকুক।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ডানচোখ হারানো আমরণ অনশনকারী শিক্ষার্থী মো. শুভ হোসেন বলেন, ‘আমরা চবিতে পোষ্যকোটা বাতিল চাই। বাতিল না করা পর্যন্ত আমরা অনশন ভাঙবো না।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকবার প্রশাসন আমাদের সাথে কথা বলে গেছে। কিন্তু পোষ্যকোটা বাতিলের আগ পর্যন্ত আমরা কোনরকম নেগোসিয়েশনে যাচ্ছি না। ভিসি স্যার আমাদের জন্য কলা নিয়ে এসেছেন। কিন্তু পোষ্যকোটা বাতিলের আগে আমরা কোন কিছুই মুখে তুলবো না।’ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রবিবার পর্যন্ত সময় চেয়েছি। তারা আমাদেরকে সময় দিতে চাচ্ছে না।’ শিক্ষার্থীদের অনশনস্থানে এসে তাদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘তাদেরকে বলেছি যে, আগামী রোববার তোমাদের নিয়ে আমরা মিটিং করবো। সেই সিদ্ধান্ত যদি তোমাদের পছন্দ না হয়, তখন তোমরা আবারও অনশন করো। আপাতত আগামী রবিবার পর্যন্ত আমাদের সময় দাও। তোমরা কিছু খেয়ে নাও। কিন্তু তারা আমাদের কথা শুনছে না।’ এছাড়াও রাত ১০টার দিকে ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার নিজে এসে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের কলা খাওয়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। উল্লেখ্য, এবার ভর্তি পরীক্ষায় ১০ ধরনের কোটা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২১২টি আসন রাখা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কোটায়। শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা এই কোটা পাবেন। দ্বিতীয়ত, ১৬৬টি আসন রাখা হয়েছে ওয়ার্ড কোটায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানেরা এই কোটা পাবেন। এটি পোষ্য কোটা নামেও পরিচিত। তৃতীয়ত, ১১১টি আসন রাখা হয়েছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য। অন্যদিকে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের জন্য ৯৪টি, অনগ্রসর ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের ৬টি, অ-উপজাতি কোটা (পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালি) ৫১টি, শারীরিক প্রতিবন্ধী কোটা ২০টি, বিকেএসপি কোটা ১১টি, পেশাদার খেলোয়াড় কোটা ৫টি ও দলিত জনগোষ্ঠী কোটা ৯টি।

‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের বাপ-দাদাদের জমি রয়েছে, যে কোন মূল্যে কোটা ফেরত চাই’
রফিকুল ইসলাম সদর নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক কর্মচারী বলেছেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যলয়ে আমরা উড়ে আসি নাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের বাপ-দাদাদের জমি রয়েছে, আমরা আমাদের পাঁচ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা যে কোন মূল্যে ফেরত চাই।’ সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, সহায়ক কর্মচারী, সাধারণ কর্মচারী, পরিবহন কর্মচারী সমিতির ব্যানারে আয়োজিত পোষ্য কোটা বাতিলের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি সব কথা বলেন। মানববন্ধনে কর্মচারী রফিকুল ইসলাম সদর বলেন, ‘ভিসি-প্রোভিসি নিজেরাই কোটার সুবাদে চেয়ারে বসে আছেন। তারা নির্বাচিত নয়। আমাদের অধিকার বাতিলের দাবিতে মানববন্ধনে দাঁড়াতে হবে, এটা কখনই ভাবিনি। এই প্রশাসন নিজেদের চেয়ারকে টিকিয়ে রাখতে যৌক্তিক পাওনা থেকে আমাদের বঞ্চিত করেছে। প্রশাসনকে বলে দিতে চাই, এটা আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা।’ অধিকার ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া কথা জানিয়ে অফিসার সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, ‘আমরা আজকে প্যারিস রোডে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেছি। কাল প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরা দুই ঘণ্টার ধর্মঘট থাকবে। এ ছাড়া, আগামী ৮ জানুয়ারি আমরা দিনব্যাপী কর্মবিরতি পালন করব। যত দিন পর্যন্ত না আমরা আমাদের অধিকার ফেরত না পাব, তত দিন আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’ মানববন্ধনে অফিসার্স সমিতির দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিনের সঞ্চালনায় সংগঠনটির কোষাধ্যক্ষ মাসুদ রানাসহ অন্য বক্তারা বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধনে চার শতাধিক কর্মকর্তা, কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, গেল ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সালেহ হাসান নকীব। এরপর শনিবার (৪ জানুয়ারি) চলতি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম সাময়িক স্তগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আবু সাঈদ হত্যায় সংশ্লিষ্টতায় ৭১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা থাকায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ৫৬ শিক্ষার্থীকে এক ও দুই সেমিস্টার করে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ১৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোববার ১০৯তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান ভিসিঅধ্যাপক ড. শওকাত আলী। তিনি বলেন, দুই সেমিস্টারের জন্য ৩৩ শিক্ষার্থী এবং এক সেমিস্টারের জন্য ২৩ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি সাবেক ১৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাদের বেশির ভাগই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। তিনি আরও বলেন, হামলার সঙ্গে জড়িত ৯ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার সাবেক প্রক্টরকে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এর জবাব না দিলে অভিযুক্তদের পূর্ণাঙ্গ বহিষ্কার করা হবে। ভিসি জানান, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে বেরোবিতে কোনো ধরনের অভ্যন্তরীণ নির্বাচন হবে না। এ নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরির জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলে জানান তিনি। তবে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ক্যাম্পাসে শোডাউন দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের শোডাউনের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল আমিন ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা শোডাউন দেইনি। ভিসিস্যারের সঙ্গে আজকের (গতকাল) বিষয় নিয়ে দেখা করে বের হওয়ার সময়ের ভিডিও এটি। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমানকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে আমরা বিষয়টি দেখব।

আবু সাঈদ হত্যা: রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ শিক্ষার্থীকে শাস্তি
জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে নিপীড়নের ঘটনায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ৭১ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৯তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিন্ডিকেট সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের সময় উপাচার্য অধ্যাপক শওকাত আলী এ তথ্য জানান। উপাচার্য জানান, জুলাই-আগস্ট বিপ্লব চলাকালে শিক্ষার্থী নিপীড়নের ঘটনা ও আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তথ্য অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২ শিক্ষার্থী অভিযুক্ত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৯তম সিন্ডিকেট মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৩ শিক্ষার্থীকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার, ৩৩ শিক্ষার্থীকে দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার ও ১৫ জন শিক্ষার্থীর পড়াশোনা শেষ হয়ে যাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর একজন শিক্ষার্থী নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তার অভিযোগ তুলে নেওয়া হয়। এ ছাড়া সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমিতি বা ইউনিয়নের নির্বাচন হবে না। আর ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় কোন ছাত্রসংগঠনের ব্যানারে কর্মসূচি দিলে ব্যবস্থা গ্রহণের নীতিমালা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে তালা দিল শিক্ষার্থীরা, আটকা পড়লেন উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষসহ অন্যরা
গুচ্ছ থেকে বের হয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কুষ্টিয়ার শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রশাসনিক ভবনে আটকে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা। পরে উপ-উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন এবং কাল রোববার (৫ জানুয়ারি) উপাচার্যের সাথে আলোচনার আশ্বাসে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর তালা খুলে দেন তারা। শনিবার (৪ জানুয়ারি) ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১’-এর উভয় গেইটে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিভিন্ন স্লোগানে দাবি জানান তারা। শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় ভর্তি নেয়ার ফলে দীর্ঘ সেশনজট সহ বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমাদের। আমরা ইতিমধ্যে দেখেছি জগন্নাথ, খুলনা এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে গেছে। আমরা চাই, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ভর্তি নেয়ার মাধ্যমে তার স্বকীয়তা বজায় রাখবে। আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন বন্ধ করব না।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি যা আমাদের দাবিও তা। আমরা বিষয়টি নিয়ে অবগত আছি। উপাচার্য আসার পর কথা বলে সমাধান করা হবে।’ এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এম. এয়াকুব আলী বলেন, ‘ভাইস চ্যান্সেলর এখন ক্যাম্পাসে নেই। তিনি আজকে আসবেন এবং কাল বিকাল তিনটায় ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে বসে সিদ্ধান্ত নিব গুচ্ছের বিষয়ে।’