রাকসুর তিন হলে ভিপি-এজিএস পদে এগিয়ে শিবির, জিএসে ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১২:৪৬ এম, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে তিনটি ছাত্রাবাসের ফলাফল প্রকাশের পর প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলগুলোর মধ্যে পরিষ্কার ব্যবধান দেখা গেছে। মুন্নুজান, রোকেয়া ও তাপসী রাবেয়া হলে ভিপি ও এজিএস পদে বড় ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে ছাত্রশিবির সমর্থিত 'সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট'। অন্যদিকে জিএস পদের তিনটিতেই এগিয়ে আছে ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলের প্রার্থী সালাউদ্দিন আম্মার, যিনি সাবেক সমন্বয়কারীদের নেতৃত্বাধীন প্যানেলের মনোনীত প্রার্থী।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভোট গণনার কক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
মুন্নুজান হলে ভিপি পদে ৯৭২ ভোট পেয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের শেখ নুর উদ্দিন আবীর পেয়েছেন ২৩৬ ভোট। জিএস পদে ৮৪১ ভোট পেয়ে ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলের সালাউদ্দিন আম্মার এগিয়ে রয়েছেন। তার পরে আছেন শিবিরপন্থী প্রার্থী ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা, যিনি পেয়েছেন ৪৯৫ ভোট। ছাত্রদলপন্থী প্রার্থী নাফিউল ইসলাম জীবন পেয়েছেন ৮৯ ভোট।
এজিএস পদে সবচেয়ে বেশি ৫৫৩ ভোট পেয়েছেন শিবির সমর্থিত এসএম সালমান সাব্বির। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল-সমর্থিত জাহিন বিশ্বাস এষা পেয়েছেন ৩৭৮ ভোট।
রোকেয়া হলে ভিপি পদেও শীর্ষে রয়েছেন মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। সেখানে তিনি ৭৫২ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন, যেখানে শেখ নুর উদ্দিন আবীর পেয়েছেন ২১১ ভোট। জিএস পদে এখানেও ৬৬১ ভোট পেয়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন সালাউদ্দিন আম্মার। শিবির সমর্থিত প্রার্থী ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা পেয়েছেন ৩৭৭ ভোট এবং ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী নাফিউল ইসলাম জীবন কোনো ভোট পাননি।
রোকেয়া হলে এজিএস পদের ফলাফলেও শিবির-সমর্থিত প্রার্থী এগিয়ে। এসএম সালমান সাব্বির পেয়েছেন ৩৪৬ ভোট, তার বিপরীতে জাহিন বিশ্বাস এষা পেয়েছেন ২৯৯ ভোট।
তাপসী রাবেয়া হলে ভিপি পদে ৪৭৩ ভোট পেয়েছেন মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ নুর উদ্দিন আবীর পেয়েছেন ১৩৬ ভোট। জিএস পদে সালাউদ্দিন আম্মার পেয়েছেন ৪০৮ ভোট, যেখানে শিবির সমর্থিত ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজার প্রাপ্ত ভোট ২৫৪।
এই হলে এজিএস পদেও শীর্ষে রয়েছেন শিবির সমর্থিত এসএম সালমান সাব্বির, যিনি পেয়েছেন ২৪৫ ভোট। ছাত্রদল সমর্থিত জাহিন বিশ্বাস এষা পেয়েছেন ১৯৭ ভোট।
সকাল ৯টায় শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এরপর ভোট বাক্সগুলো মিলনায়তনে আনা হয় বিকেল পৌনে ৫টার মধ্যে। সন্ধ্যা পৌনে ৮টায় পোলিং কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সেগুলো খোলা হয় এবং রাত ৮টায় কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ভোট গণনা শুরু হয়।
এবারের রাকসু নির্বাচনে মোট ২৮ হাজার ৯০১ জন শিক্ষার্থী ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন। রাকসু, হল সংসদ ও সিনেট প্রতিনিধি পদে প্রার্থী হয়েছেন ৮৬০ জন। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় দুই হাজার পুলিশ সদস্য, ৬ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ১২ প্লাটুন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
নির্বাচনে অংশ নিয়েছে ১১টি প্যানেল। আলোচনায় রয়েছে যেগুলোর মধ্যে রয়েছে ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’, শিবির-সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্র ফেডারেশনের সম্মিলিত ‘রাকসু ফর র্যাডিক্যাল চেঞ্জ’, সাবেক সমন্বয়কারীদের ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’, বাম ঘরানার ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’, ছাত্র ইউনিয়নের ‘অপরাজেয় ৭১, অপ্রতিরোধ্য ২৪’, সাবেক নারী সমন্বয়কের নেতৃত্বে ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ এবং ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের মনোনীত ‘সচেতন শিক্ষার্থী পরিষদ’।
তিন হলের প্রাথমিক ফলাফলে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে, বড় দুইটি পদে শক্ত অবস্থানে রয়েছে শিবিরপন্থী প্যানেল, তবে জিএস পদের দখল রেখেছে আধিপত্যবিরোধী ঐক্য।